Ajker Patrika

বহু নাটকীয়তার পর মুক্তি পেলেন দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট

অনলাইন ডেস্ক    
আপডেট : ০৯ মার্চ ২০২৫, ১৪: ৩৭
দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত নেতা ইউন সুক ইওল। ছবি: এএফপি
দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত নেতা ইউন সুক ইওল। ছবি: এএফপি

নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার মুক্তি পান তিনি।

দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদ সংস্থা ইয়োনহাপের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত শুক্রবার সুক ইওলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিলের আদেশ দেন দেশটির আদালত। তবে মুক্তি পেলেও, তাঁর বিরুদ্ধে অভিশংসন ও ফৌজদারি বিচার চলমান।

সুক ইওলের আইনজীবীরা আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, ইউন সুক ইওলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে যে প্রেসিডেন্টের আটকের বিষয়টি আইনগত ও প্রক্রিয়াগত—দুই দিক থেকেই ত্রুটিপূর্ণ ছিল। তাঁরা এই আদেশকে ‘আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথে প্রথম পদক্ষেপ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

ইউন সুক ইওলও আদালতের আদেশকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘বেআইনি প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন আদালত।’

গত মাসে, অভিশংসিত প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে অবৈধ দাবি করে বাতিলের জন্য সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে আবেদন করেন সুক ইওলের আইনজীবীরা। এরই ভিত্তিতে শুক্রবার বাতিল করা হয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। পাশাপাশি সুক ইওলের বিরুদ্ধে তদন্তের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে আদেশে।

ইউন সুক ইওলের মুক্তিকে ঘিরে রাজধানী সিউল ও আশপাশের এলাকাগুলোতে সমাবেশ করেছে তাঁর অর্ধলক্ষ সমর্থক। অন্যদিকে, তাঁর মুক্তির বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ করেছেন কয়েক হাজার দক্ষিণ কোরীয়। ইয়োনহাপের তথ্যমতে, সাংবিধানিক আদালতের কাছে ইউন সুক ইওলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে ৩২ হাজারের বেশি নাগরিক। গত শুক্রবার, ইউন সুক ইওলের প্রেসিডেন্সি নিয়ে করা এক জরিপ প্রকাশ করেছে গ্যালাপ কোরিয়া। এতে উঠে এসেছে, দেশটির ৬০ শতাংশ মানুষ তাঁকে আর প্রেসিডেন্ট হিসেবে চান না।

এদিকে, আদালতের এমন সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে দেশটির প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি। তারা বলেছে, আদালতের এই সিদ্ধান্ত দেশ ও জাতিকে চরম সংকটে ফেলছে। শিগগিরই ইউনকে অপসারণের জন্য সাংবিধানিক আদালতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দলটি।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদিও আদালতের সিদ্ধান্ত ইউনকে নির্দোষ ঘোষণার সমান নয়, তবে এটি অভিযোগপত্রের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে এবং কিছু আইনগত জটিলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। সিউল সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তদন্ত প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে প্রশ্নগুলো মীমাংসিত না হলে, উচ্চ আদালতে তা বিচারিক রায়ের বৈধতা খর্ব করতে পারে।

ইউন সুক ইওলকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনর্বহাল করা হবে কিনা—সে বিষয়ে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেবে সাংবিধানিক আদালত। যদি ইউনকে চূড়ান্তভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়, তবে ৬০ দিনের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

গত বছর ৩ ডিসেম্বর নিরাপত্তা ও সাংবিধানিক শৃঙ্খলা রক্ষার কথা বলে দক্ষিণ কোরিয়ায় আকস্মিকভাবে সামরিক আইন জারি করেন ইউন সুক ইওল। সেদিন মধ্যরাতে এক ভাষণে তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট শক্তির হুমকি ও রাষ্ট্রবিরোধী উপাদানগুলোর কার্যক্রম দক্ষিণ কোরিয়ার নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি তৈরি করেছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের সাংবিধানিক শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সামরিক আইন জারি করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প ছিল না।

এরপরই দেশটিতে শুরু হয় ব্যাপক রাজনৈতিক উত্তেজনা। সামরিক আইন জারির ঘোষণাকে দেশদ্রোহ আখ্যা দিয়ে সুক ইওলের পদত্যাগ দাবি করেন ডেমোক্র্যাট। এ নিয়ে নাটকীয়তা গড়া আদালত পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হন ইউন সুক ইওল। অভিশংসিত প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য প্রমাণিত হলে মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে তাঁর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চূড়ান্ত হচ্ছে সাত কলেজের নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম, শিগগির ঘোষণা

প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে ধরা পড়া সেই নেতাকে বহিষ্কার করল ছাত্রশিবির

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ডিজির অপসারণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

ফ্রিতে নৌকা না পেয়ে ভূমি অফিস সহকারীকে মারধর এসপির

এশিয়ার ১০টিসহ ৪৩ দেশের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছেন ট্রাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত