Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে ব্যর্থ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ মে ২০২৫, ২১: ৩৭
হুতি বিদ্রোহীদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রে ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে প্রায় ২৫ মিটার গভীর গর্ত হয়েছে। ছবি: এপির সৌজন্যে
হুতি বিদ্রোহীদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রে ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে প্রায় ২৫ মিটার গভীর গর্ত হয়েছে। ছবি: এপির সৌজন্যে

ইয়েমেন থেকে হুতি বিদ্রোহীদের ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে আঘাত হানার পর দেশটির নিরাপত্তা দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আজ রোববার সকালে (স্থানীয় সময়) এই ঘটনার পর প্রায় আধা ঘণ্টা বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর বন্ধ রাখা হয়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রতিহত করার ‘সর্বাত্মক চেষ্টা’ চালালেও সফল হয়নি।

ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) জানায়, তারা দূরপাল্লার অ্যারো-৩ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার সাহায্যে ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রতিহত করার চেষ্টা করে। এ ছাড়া দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের উন্নত থাড (THAAD) অ্যান্টি-মিসাইল সিস্টেমও রয়েছে। কিন্তু এত সব প্রতিরক্ষাব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও হুতি বিদ্রোহীদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে পারেনি ইসরায়েল।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। এক বিবৃতিতে তারা জানায়, গাজায় ইসরায়েলের ‘গণহত্যার’ জবাবে এই হামলা চালানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এবারই প্রথম হুতিরা ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লক্ষ্য করে সফলভাবে হামলা চালাল। তবে এর আগে বিভিন্ন সময়ে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী দাবি করে, তাদের দিকে ছোড়া সব ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করার ক্ষমতা তাদের আছে। কিন্তু এবার শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও হুতি বিদ্রোহীদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে ইসরায়েল।

হুতি মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমেরিকান ও ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাব্যবস্থা বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরের দিকে লক্ষ্য করে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র আটকাতে ব্যর্থ হয়েছে।’ তিনি জানান, লক্ষ্যবস্তুতে ‘হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র’ ব্যবহার করা হয়।

ইসরায়েলের অন্যতম সুরক্ষিত স্থানে এমন সফল হামলা বড় ধরনের নিরাপত্তা ঘাটতির ইঙ্গিত দেয় এবং প্রশ্ন তোলে— এত উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পরও ইসরায়েল এ হামলা ঠেকাতে পারল না কেন। ছবি: এপির সৌজন্যে
ইসরায়েলের অন্যতম সুরক্ষিত স্থানে এমন সফল হামলা বড় ধরনের নিরাপত্তা ঘাটতির ইঙ্গিত দেয় এবং প্রশ্ন তোলে— এত উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পরও ইসরায়েল এ হামলা ঠেকাতে পারল না কেন। ছবি: এপির সৌজন্যে

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হুতিদের বিরুদ্ধে আরও ভয়াবহ অভিযানের হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আগেও ব্যবস্থা নিয়েছি, ভবিষ্যতেও নেব। সবকিছু বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের (হুতিদের) বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে। এটা এবারই শেষ না, আবার পাল্টা হামলা হবে।’

প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, হুতিদের হামলার জবাবে ‘সাত গুণ’ পাল্টা হামলা চালানো হবে।

এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই হামলা নিয়ে আলোচনা করতে রোববার বিকেলে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা বৈঠকে বসবে।

ইসরায়েলের অন্যতম সুরক্ষিত স্থানে এমন সফল হামলা বড় ধরনের নিরাপত্তা ঘাটতির ইঙ্গিত দেয় এবং প্রশ্ন তোলে, এত উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থার পরও ইসরায়েল এ হামলা ঠেকাতে পারল না কেন।

বিমানবন্দরের দিকে যাওয়া ট্রেন চলাচলও সাময়িক বন্ধ রাখা হয় এবং সাধারণ জনগণকে ওই এলাকায় না যেতে অনুরোধ জানায় পুলিশ। ঘটনাস্থলের ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সৃষ্ট ধ্বংসাবশেষ প্রধান টার্মিনালের দিকে যাওয়া সড়কে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো একটি ভিডিওতে দেখা যায়, আঘাতের পর কালো ধোঁয়া ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা।

জার্মানির বৃহত্তম বিমান সংস্থা লুফথানসার একজন মুখপাত্র সিএনএনকে জানিয়েছেন, লুফথানসা, সুইস, অস্ট্রিয়ান এয়ারলাইনস, ব্রাসেলস এয়ারলাইনস ও ইউরো উইংস সোমবার ৬ মে পর্যন্ত তেল আবিবে ফ্লাইট স্থগিত করেছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর রেডিওর সামরিক বিশ্লেষক আমির বার শালোম সিএনএনকে বলেন, ‘এই ক্ষেপণাস্ত্র খুবই সুনির্দিষ্টভাবে লক্ষ্যভেদ করেছে। প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার দূর থেকে এ রকম নির্ভুলভাবে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া অত্যন্ত চমকপ্রদ। আমাদের এই হুমকিকে গুরুত্বসহকারে নিতে হবে। এটা আমাদের ভুল না অন্য কোনো নতুন হুমকি, তা যাচাই করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ইরান এমন দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে, যেগুলো বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে পারে। তবে হুতিদের কাছে এই প্রযুক্তি সরবরাহ করা হয়েছে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।

লুফথানসা, সুইস, অস্ট্রিয়ান এয়ারলাইনস, ব্রাসেলস এয়ারলাইনস ও ইউরো উইংস সোমবার ৬ মে পর্যন্ত তেল আবিবে ফ্লাইট স্থগিত করেছে। ছবি: এপির সৌজন্যে
লুফথানসা, সুইস, অস্ট্রিয়ান এয়ারলাইনস, ব্রাসেলস এয়ারলাইনস ও ইউরো উইংস সোমবার ৬ মে পর্যন্ত তেল আবিবে ফ্লাইট স্থগিত করেছে। ছবি: এপির সৌজন্যে

বার শালোম বলেন, ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করা থেকে শুরু করে প্রতিরোধ প্রক্রিয়া—সবকিছু বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে। তিনি বলেন, ‘এখানে অনেকগুলো বিষয় একসঙ্গে কাজ করে, যেগুলোর ভিত্তিতে ফল নির্ধারিত হয়। তাই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিশ্লেষণ করতে হবে।’

এদিকে হামাস এই হামলার প্রশংসা করে হুতিদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এক বিবৃতিতে তারা ইয়েমেনকে ফিলিস্তিনের ‘যমজ ভাই’ হিসেবে অভিহিত করে বলেছে, ‘সবচেয়ে নৃশংস দমননীতি সত্ত্বেও তারা পরাভূত হয়নি, মাথা নত করেনি।’

হুতিরা দাবি করেছে, তাদের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রে স্টেলথ প্রযুক্তি রয়েছে, যার পাল্লা ২ হাজার ১৫০ কিলোমিটার (১ হাজার ৩৩৫ মাইল)। এটি উচ্চগতিসম্পন্ন এবং ম্যাক ১৬ গতিতে ছুটতে পারে।

২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই হুতিরা ইয়েমেন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের দাবি, এই হামলাগুলো ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশের অংশ। তবে ইসরায়েলের দাবি, বেশির ভাগ হামলাই তারা প্রতিহত করে। এর মধ্যে কিছু ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যভেদ করেছে।

গত ডিসেম্বরেও একটি হুতি ক্ষেপণাস্ত্র তেল আবিবে আঘাত হানে। সেই হামলায় অন্তত ডজনখানেক মানুষ আহত হয়। হুতিরা জানিয়েছিল, তারা ‘প্যালেস্টাইন-২’ নামের একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র জাফা এলাকার ইসরায়েলি সামরিক স্থাপনার দিকে ছোড়ে।

এ ছাড়া জুলাই মাসে তারা তেল আবিবে একটি ড্রোন হামলার দায় স্বীকার করে, যা ছিল শহরটিতে হুতিদের প্রথম প্রাণঘাতী ড্রোন হামলা।

এদিকে ইসরায়েল হুতি নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্র ও সমুদ্রবন্দর রয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র আরও ব্যাপকভাবে ইয়েমেনে হুতি স্থাপনাগুলোতে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। মূলত, লোহিত সাগরে হুতিদের হামলায় বৈশ্বিক বাণিজ্য চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র এই সামরিক অভিযান জোরদার করেছে। পাশাপাশি হুতিদের ইসরায়েল, বাণিজ্যিক জাহাজ ও মার্কিন নৌবাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা ঠেকানোও এর উদ্দেশ্য।

সিএনএন জানিয়েছে, এই অভিযান চালাতে মাত্র তিন সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্রের খরচ এক বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। এর মধ্যে বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমান মোতায়েন এবং উচ্চ মূল্যের গোলাবারুদ ব্যবহারের খরচও অন্তর্ভুক্ত। তবু এত কিছুর পরেও হুতিদের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহতে কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্রের চলমান এই অভিযান। সেই সঙ্গে ইসরায়েলের নিজস্ব উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা অ্যারো-৩ (তাদের দাবি বেশির ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করছে) সত্ত্বেও আটকানো যায়নি হুতি ক্ষেপণাস্ত্র।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বাজপেয়ির ‘সেই বক্তব্য’ সামনে আনলেন শশী থারুর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
কংগ্রেস সাংসদ ও ভারতের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির (পররাষ্ট্রবিষয়ক) প্রধান শশী থারুর। ছবি: পিটিআই
কংগ্রেস সাংসদ ও ভারতের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির (পররাষ্ট্রবিষয়ক) প্রধান শশী থারুর। ছবি: পিটিআই

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম যোদ্ধা শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। গতকাল বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ, সংবাদমাধ্যমের ভবনে অগ্নিসংযোগ এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস সাংসদ ও ভারতের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির (পররাষ্ট্রবিষয়ক) প্রধান শশী থারুর।

শশী থারুর সতর্ক করে বলেছেন, বাংলাদেশে চলমান এই সহিংসতা সাধারণ বাংলাদেশিদের সহায়তা করার ক্ষেত্রে ভারতের সক্ষমতাকে সংকুচিত করে দিচ্ছে। তিনি ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির সেই বিখ্যাত উক্তি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘ভূগোল পরিবর্তন করা যায় না। আমরা যেখানে আছি সেখানেই থাকব, তারাও সেখানেই থাকবে। তাদের উচিত আমাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে শেখা।’

বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলা এবং ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে থারুর বলেছেন, ‘সহিংসতার কারণে আমাদের দুটি ভিসা সেন্টার বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এটি অত্যন্ত হতাশাজনক। কারণ, যেসব বাংলাদেশি ভারতে আসতে চান, তাঁরাই এখন অভিযোগ করছেন যে আগে যেভাবে সহজে ভিসা পাওয়া যেত, এখন তা পাওয়া যাচ্ছে না।’

থারুর উল্লেখ করেন, বর্তমান পরিস্থিতি ভারত সরকারের পক্ষে সাধারণ বাংলাদেশিদের সাহায্য করা কঠিন করে তুলছে।

বাংলাদেশ সরকারকে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে থারুর বলেন, ‘আমি আশা করি পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে। আমি বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারকে বলব যেন তারা প্রতিবেশীর সঙ্গে এই ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের গুরুত্ব বোঝে। বাজপেয়ি সাহেব পাকিস্তানের ক্ষেত্রে যেমনটি বলেছিলেন—আমরা আমাদের ভূগোল পরিবর্তন করতে পারি না। আমরা যেখানে আছি সেখানেই থাকব, তারাও সেখানেই থাকবে। তাদের উচিত আমাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে শেখা।’

শশী থারুর জানান, নয়াদিল্লি পুরো পরিস্থিতি খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় কর্মকর্তারা সরাসরি বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তিনি বলেন, ‘ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করবে এবং পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য যা যা করা প্রয়োজন তা করতে অনুরোধ জানাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতে তেল দিয়ে ফেরার পথে বিধ্বস্ত রুশ জাহাজ—প্রতিশোধের হুমকি পুতিনের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৫৩
ছবি: সিএনএন
ছবি: সিএনএন

ভূমধ্যসাগরের নিরপেক্ষ জলসীমায় ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় একটি রুশ তেলবাহী ট্যাংকার ধ্বংসের ঘটনায় উত্তেজনা আরও বেড়েছে। হামলার পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। ইউক্রেন একে ‘অভূতপূর্ব বিশেষ অভিযান’ হিসেবে দাবি করলেও, রাশিয়া এটিকে আন্তর্জাতিক নৌ নিরাপত্তার জন্য নতুন হুমকি বলে আখ্যা দিয়েছে।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা গেছে—ইউক্রেনীয় ড্রোনের আঘাতে রাশিয়ার ‘শ্যাডো ফ্লিট’ বা গোপন নৌবহরের অন্তর্ভুক্ত তেলবাহী ট্যাংকার ‘কেনডিল’-এ ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে।

ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থা এসবিইউ জানিয়েছে, হামলাটি ইউক্রেন থেকে প্রায় ১ হাজার ২০০ মাইল দূরে সংঘটিত হয়। কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি প্রথমবারের মতো কৃষ্ণসাগরের বাইরে এবং নিরপেক্ষ জলসীমায় ইউক্রেনের কোনো ড্রোন হামলা।

ইউক্রেন দাবি করেছে, হামলার সময় ট্যাংকারটি খালি ছিল এবং এতে কোনো তেল বা জ্বালানি বহন করা হচ্ছিল না। ফলে পরিবেশগত কোনো ঝুঁকি তৈরি হয়নি। তবে বিস্ফোরণে জাহাজটি ‘গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে বলে তারা দাবি করেছেন।

ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, ট্যাংকারটি চলতি মাসের শুরুর দিকে ভারতের গুজরাট রাজ্যের সিক্কা বন্দরে তেল খালাস করে ফিরে যাচ্ছিল।

এই ঘটনার পর মস্কো কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। বছরের শেষ প্রান্তিকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ভূমধ্যসাগরে রুশ ট্যাংকারে হামলার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এই ধরনের হামলা কিছু বাস্তব লক্ষ্যকে সামনে রেখে করা হয়—যেমন বিমা প্রিমিয়াম বাড়ানো। কিন্তু এতে সরবরাহ ব্যাহত হবে না এবং প্রত্যাশিত ফলও পাওয়া যাবে না। বরং এটি অতিরিক্ত হুমকি তৈরি করবে। আমাদের দেশ এর জবাব দেবে।’

পুতিন আরও বলেন—বেসামরিক অবকাঠামোর ওপর আঘাতের বিষয়েও রাশিয়া চুপ করে থাকবে না। তাঁর ভাষায়, ‘আমাদের পক্ষ থেকে সব সময়ই একটি পাল্টা আঘাত ঘটবে।’

বিশ্লেষকদের মতে, নিরপেক্ষ জলসীমায় ইউক্রেনের এই হামলা যুদ্ধের পরিধিকে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। একই সঙ্গে পুতিনের পাল্টা জবাবের ঘোষণা ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতকে আরও বিস্তৃত ও অনিশ্চিত করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতে তেল দিয়ে ফেরার পথে রুশ জাহাজে আঘাত হানল ইউক্রেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ২৪
রুশ গোপন বহরের অন্তর্ভুক্ত ওই জাহাজটির নাম ‘কেনডিল’। ছবি: সংগৃহীত
রুশ গোপন বহরের অন্তর্ভুক্ত ওই জাহাজটির নাম ‘কেনডিল’। ছবি: সংগৃহীত

ভূমধ্যসাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমায় ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় একটি রুশ তেলবাহী ট্যাংকার ধ্বংস হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। এই হামলাকে ‘অভূতপূর্ব বিশেষ অভিযান’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে কিয়েভ। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক নাটকীয় ভিডিওতে দেখা গেছে, ইউক্রেনীয় ড্রোনের আঘাতে ট্যাংকারটি ভয়াবহ বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থা এসবিইউ জানিয়েছে, হামলাটি ইউক্রেন থেকে প্রায় ১ হাজার ২০০ মাইল দূরে সংঘটিত হয়। কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, নিরপেক্ষ জলসীমায় এটি প্রথমবারের মতো ইউক্রেনের সরাসরি সামরিক আঘাত। এর আগে ইউক্রেন শুধু কৃষ্ণসাগরে রুশ জাহাজের ওপর ড্রোন হামলার দায় স্বীকার করেছিল।

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস জানিয়েছে, আক্রান্ত জাহাজটির নাম ‘কেনডিল’। এটি রাশিয়ার তথাকথিত ‘শ্যাডো ফ্লিট’ বা গোপন নৌবহরের অংশ বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। এসব জাহাজ সাধারণত নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে রুশ তেল পরিবহনে ব্যবহৃত হয় বলে অভিযোগ পশ্চিমা দেশগুলোর। হামলার সময় ট্যাংকারটি খালি ছিল এবং এতে কোনো তেল বা জ্বালানি বহন করা হচ্ছিল না বলে ইউক্রেন দাবি করেছে। এর ফলে পরিবেশগত কোনো ঝুঁকি তৈরি হয়নি। তবে বিস্ফোরণে ট্যাংকারটি ‘গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে বলে দাবি করা হয়।

কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, ট্যাংকারটি চলতি মাসের শুরুতে ভারতের গুজরাট রাজ্যের সিক্কা বন্দরে তেল খালাস করে ফিরে যাচ্ছিল। ফেরার পথেই ভূমধ্যসাগরে হামলার চালানো হয়।

এই হামলাকে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের একটি নতুন ও তাৎপর্যপূর্ণ মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিরপেক্ষ জলসীমায় এমন অভিযান ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক আইন, নৌ নিরাপত্তা এবং বৈশ্বিক জ্বালানি পরিবহন নিয়ে নতুন উদ্বেগ তৈরি করতে পারে। যদিও রাশিয়ার পক্ষ থেকে এই ঘটনায় তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি, তবু হামলার ভিডিও প্রকাশ যুদ্ধের পরিধি ও কৌশল নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ২৫
আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সামনে যুব টিপরা ফেডারেশনের কর্মীরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সামনে যুব টিপরা ফেডারেশনের কর্মীরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ করেছে টিপরা মথা পার্টির যুব সংগঠন যুব টিপরা ফেডারেশন (ওয়াইটিএফ)। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর একটি বক্তব্যের প্রতিবাদে ওয়াইটিএফ আজ শুক্রবার এই বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে।

সম্প্রতি এক সমাবেশে বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টিকারীদের ভারতে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ‘সেভেন সিস্টার্স’ হিসেবে পরিচিত পূর্বাঞ্চলকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করার হুমকি দেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ নাউয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শত শত ওয়াইটিএফ কর্মী রাজপথে নেমে হাসনাত আবদুল্লাহর ওই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান। এ সময় তাঁরা বিভিন্ন স্লোগান দেন। তাঁরা সতর্ক করে বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ওপর যেন বাংলাদেশ ‘কুদৃষ্টি’ না দেয়।

বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশ সরকারকে মনে করিয়ে দেন, ১৯৭১ সালে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও ভারতের অবদান কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

যুব টিপরা ফেডারেশনের সভাপতি সুরজ দেববর্মা সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে সংকটের সময়ে আমাদের দেশ তাদের পাশে পাহাড়ের মতো দাঁড়িয়েছিল। ভারতের অমূল্য অবদানেই আজকের বাংলাদেশের অস্তিত্ব তৈরি হয়েছে।’

বিক্ষোভ সমাবেশে সুরজ দেববর্মা আক্রমণাত্মক মন্তব্য করে বলেন, ‘বাংলাদেশ যদি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে তাদের ভূখণ্ডে অন্তর্ভুক্ত করার স্বপ্ন দেখে, তবে এই অঞ্চলের মানুষও সমুদ্রে যাওয়ার পথ চায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে অনেক মানুষ বসবাস করেন, যাদের জাতিগত ও সাংস্কৃতিক পরিচয় ত্রিপুরার মানুষের সঙ্গে মিলে যায়। বাংলাদেশ যদি উত্তর-পূর্ব ভারতকে বিচ্ছিন্ন করার হুমকি দেয়, তবে আমরাও ভারতের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রামকে যুক্ত করার দাবি তুলতে পারি।’

আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে গত বছরের ডিসেম্বরে অনাকাঙ্ক্ষিত হামলার বিষয়টি মাথায় রেখে আজকে বিক্ষোভ চলাকালে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছিল। পশ্চিম ত্রিপুরার পুলিশ সুপার নমিত পাঠক জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলস (টিএসআর) এবং সিআরপিএফ মোতায়েন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) ঢাকায় এক সমাবেশে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছিলেন, ভারত যদি বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চায়, তবে বাংলাদেশও ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীদের আশ্রয় দিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে (সেভেন সিস্টার্স) ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত