ডা. কাকলী হালদার

চীনের উহান শহরে প্রায় তিন বছর আগে এমনই এক শীতে শোনা গিয়েছিল করোনাভাইরাসের আগমনের অশনিসংকেত। অজানা জ্বরে মৃত্যুর মিছিল থামাতে রাতারাতি লকডাউন করে দেওয়া হয়েছিল সারা শহর। ক্রমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে এবং সৃষ্টি হয় বিশ্বব্যাপী অতিমারির।
সংক্রমণের শীর্ষে পৌঁছে যায় ব্রিটেন, আমেরিকা, ইতালির মতো অনেক উন্নত দেশও। কোভিডের ভয়াল থাবা বাংলাদেশকে আক্রমণ করলেও অনেক উন্নত দেশের তুলনায় অনেকটা সফলভাবেই আমরা প্রতিটা ঢেউ মোকাবিলা করতে পেরেছি। ভ্যাকসিনেশন, ন্যাচারাল ইনফেকশন এবং অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ দিয়ে চিকিৎসা করায় অতিমারির সেই ধাক্কা বিশ্ববাসী কাটিয়ে উঠেছিল অনেকটাই।
কিন্তু আবারও এ বছরের ডিসেম্বরের শুরু থেকে দ্রুতগতিতে বাড়ছে কোভিড সংক্রমণের হার। নতুন করে চোখ রাঙাচ্ছে ওমিক্রন বিএফ–৭।
এ বছরের শেষে অতিমারি পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এলেও বিশেষজ্ঞেরা কিন্তু আগেই জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস কখনোই একেবারে নিঃশেষ হয়ে যাবে না। সুতরাং, সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই ভাইরাসকে সঙ্গে নিয়েই আমাদের বাঁচতে হবে।
বিএফ–৭ কি নতুন ভাইরাস
সংক্রমণের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের অনেকগুলো ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ পাওয়া গেছে। করোনাভাইরাস ক্রমাগত জেনেটিক মিউটেশন করার ফলে অনেকগুলো ভ্যারিয়েন্ট এবং সাব-ভ্যারিয়েন্ট তৈরি করেছে। বিএফ–৭, ওমিক্রন বিএ.৫ ভ্যারিয়েন্টের একটি সাব-ভ্যারিয়েন্ট। স্ক্রিপস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকেই ৯১টি দেশে প্রাপ্ত বিএফ–৭-এর জেনেটিক মেক-আপ এবং মিউটেশন প্রোফাইলের সঙ্গে মিলে যায়। অবশেষে ২০২২ সালের মে মাসে এটির নামকরণ করা হয় বিএফ–৭ (বিএ.৫.২.১.৭–এর সংক্ষিপ্ত রূপ)। বিএফ–৭–এর স্পাইক প্রোটিনে একটি নির্দিষ্ট মিউটেশনের (আর ৩৪৬ টি) ফলে মানুষের শরীরে প্রবেশ এবং রোগ প্রতিরোধকারী অ্যান্টিবডিকে ফাঁকি দেওয়ার সক্ষমতা বাড়িয়ে দিয়ে এটিকে আরও বেশি সংক্রামক এবং বিপজ্জনক করে তুলেছে, এমনকি যাঁরা সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত তাঁদের জন্যও।
গবেষণায় দেখা গেছে, ওমিক্রন সাব-ভ্যারিয়েন্টগুলোর মধ্যে বিএফ-৭-এর সবচেয়ে শক্তিশালী সংক্রমণক্ষমতা রয়েছে (একজন সংক্রামিত ব্যক্তি গড়ে ১০ থেকে ১৮ জনকে সংক্রমিত করতে পারে), কম ইনকিউবেশন পিরিয়ড (ভাইরাসের সংস্পর্শে আসা এবং প্রথম লক্ষণগুলোর উপস্থিতির মধ্যবর্তী সময়) এবং যাদের পূর্বে কোভিড সংক্রমণ হয়েছে বা যারা পূর্বেই কোভিডের টিকা পেয়েছে বা উভয়কেই সংক্রামিত করার ক্ষমতা অন্য ভ্যারিয়েন্টগুলোর থেকে বেশি।
উপসর্গবিহীন বাহকের সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া বিএফ-৭ দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন রোগী, বয়স্ক, করোনা সম্মুখযোদ্ধা এবং জটিল রোগে আক্রান্ত (ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্ট, ট্রান্সপ্ল্যান্ট ইত্যাদি) রোগীদের জন্য আরও গুরুতর অসুস্থতার কারণ হতে পারে।
লক্ষণসমূহ
বিএফ-৭-এর সংক্রমণের লক্ষণগুলো ওমিক্রনের অন্য সাব-ভেরিয়েন্টগুলোর মতোই এবং প্রাথমিকভাবে রোগীদের ওপরের শ্বাসযন্ত্র আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ দেখা যায়। উপসর্গের মধ্যে জ্বর, কাশি, গলাব্যথা, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং ক্লান্তি থাকতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে বমি এবং ডায়রিয়ার মতো লক্ষণগুলোও দেখা যায়।
যদিও বিএফ-৭ আক্রান্তদের রোগের ভয়াবহতা বা মৃত্যুঝুঁকি অন্য ভ্যারিয়েন্টদের তুলনায় কম।
বিশ্বের বর্তমান অবস্থা
চীন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের অনেক দেশে (ডেনমার্ক, বেলজিয়াম, জার্মানি) এরই মধ্যে খোঁজ মিলেছে এই বিএফ.৭-এর। তবে এরই মধ্যে সংক্রমণের বিস্ফোরণ ঘটেছে চীনে। এক দিনে ৩ কোটির বেশি আক্রান্ত হওয়ার খবরও মিলেছে।
বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে কোভিডের টিকাদান কর্মসূচি এবং বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্ট ও সাব-ভ্যারিয়েন্ট দিয়ে সংক্রমণের কারণে মানুষের শরীরে ‘Neutralizing Antibody’ সৃষ্টির ফলে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হয়েছে। তাই ধীরে ধীরে বিভিন্ন সময়ে সংক্রমণ প্রতিরোধের কঠোর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পরও সব দেশেই সংক্রমণের হার এবং মৃত্যু হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছিল। গত তিন বছরে তাই করোনার গ্রাফ কখনো ঊর্ধ্বমুখী আবার কখনো নিম্নমুখী হয়েছে।
কিন্তু করোনা মহামারির শুরু থেকেই চীনে জারি করা হয়েছিল ‘জিরো কোভিড’ নীতি। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, চীনের মানুষজন কঠোর বিধিনিষেধের ভেতরে থাকার দরুন কোভিডের বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্ট, সাব-ভ্যারিয়েন্ট দিয়ে অপেক্ষাকৃত কম ন্যাচারাল ইনফেকশন হয়েছে। ফলে হাইব্রিড ইমিউনিটি (Hybrid Immunity) বা মিশ্র রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম তৈরি হয়েছে। টিকার কারণেই মূলত তাদের শরীরে নির্দিষ্ট কিছু ভ্যারিয়েন্টের বিপক্ষে অ্যান্টিবডি তৈরি হলেও বিভিন্ন রকম ভ্যারিয়েন্টের বিপক্ষে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম তৈরি হয়েছে। তাই ডিসেম্বরে বিধিনিষেধ শিথিল করায় চীনে সংক্রমণের হার এবং মৃত্যুর সংখ্যা অবিশ্বাস্য গতিতে বেড়ে চলছে।
চীন ও প্রতিবেশী ভারতে বিএফ-৭ শনাক্ত হওয়ায় বাংলাদেশেও সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। যখন দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ক্রমাগত হ্রাস পেয়ে জীবন অনেকটাই স্বাভাবিক, তখন প্রতিবেশী ভারত এবং অন্যান্য দেশে করোনাভাইরাসের নতুন সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি নির্দেশ করে পঞ্চম করোনাভাইরাস তরঙ্গ। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের দেশে বিএফ-৭-এর তাণ্ডবলীলা হয়তো কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মৃদু উপসর্গ বা উপসর্গহীনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। কারণ, বাংলাদেশের মানুষের শরীরে এরই মধ্যে হাইব্রিড ইমিউনিটি বা মিশ্র রোগ প্রতিরোধ তৈরি হয়েছে, যা করোনার যেকোনো ভ্যারিয়েন্টকে রুখে দিতে অনেকটাই সক্ষম।
একদিকে যেমন ভ্যাকসিনেশন অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, তেমনি করোনার নানা ভ্যারিয়েন্টের ন্যাচারাল ইনফেকশন থেকেও অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, যা হয়তো আমাদের বিএফ-৭-এর ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে পারবে।
গবেষণা বলছে, এখন পর্যন্ত টিকা এবং সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে উত্তম প্রতিরোধ ব্যবস্থা। সরকারের দেওয়া তথ্যমতে, এরই মধ্যে দেশের ১৫ কোটি মানুষকে প্রথম ডোজ, সাড়ে ১২ কোটি মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ এবং সাড়ে ৬ কোটি মানুষকে তৃতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। চতুর্থ ডোজ টিকা করোনার সম্মুখসারির যোদ্ধা, ষাটোর্ধ্ব জনগণ, নানা জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং অন্তঃসত্ত্বা নারীরা পাবেন। তৃতীয় ডোজ নেওয়ার চার মাস পর নেওয়া যাবে চতুর্থ ডোজ।
কোভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও আমাদের সবাইকে অতি অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে—
১. জনাকীর্ণ জায়গায় মাস্ক পরতে হবে।
২. যথাসম্ভব জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে।
৩. ঘন ঘন সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুতে হবে।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

চীনের উহান শহরে প্রায় তিন বছর আগে এমনই এক শীতে শোনা গিয়েছিল করোনাভাইরাসের আগমনের অশনিসংকেত। অজানা জ্বরে মৃত্যুর মিছিল থামাতে রাতারাতি লকডাউন করে দেওয়া হয়েছিল সারা শহর। ক্রমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে এবং সৃষ্টি হয় বিশ্বব্যাপী অতিমারির।
সংক্রমণের শীর্ষে পৌঁছে যায় ব্রিটেন, আমেরিকা, ইতালির মতো অনেক উন্নত দেশও। কোভিডের ভয়াল থাবা বাংলাদেশকে আক্রমণ করলেও অনেক উন্নত দেশের তুলনায় অনেকটা সফলভাবেই আমরা প্রতিটা ঢেউ মোকাবিলা করতে পেরেছি। ভ্যাকসিনেশন, ন্যাচারাল ইনফেকশন এবং অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ দিয়ে চিকিৎসা করায় অতিমারির সেই ধাক্কা বিশ্ববাসী কাটিয়ে উঠেছিল অনেকটাই।
কিন্তু আবারও এ বছরের ডিসেম্বরের শুরু থেকে দ্রুতগতিতে বাড়ছে কোভিড সংক্রমণের হার। নতুন করে চোখ রাঙাচ্ছে ওমিক্রন বিএফ–৭।
এ বছরের শেষে অতিমারি পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এলেও বিশেষজ্ঞেরা কিন্তু আগেই জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস কখনোই একেবারে নিঃশেষ হয়ে যাবে না। সুতরাং, সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই ভাইরাসকে সঙ্গে নিয়েই আমাদের বাঁচতে হবে।
বিএফ–৭ কি নতুন ভাইরাস
সংক্রমণের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের অনেকগুলো ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ পাওয়া গেছে। করোনাভাইরাস ক্রমাগত জেনেটিক মিউটেশন করার ফলে অনেকগুলো ভ্যারিয়েন্ট এবং সাব-ভ্যারিয়েন্ট তৈরি করেছে। বিএফ–৭, ওমিক্রন বিএ.৫ ভ্যারিয়েন্টের একটি সাব-ভ্যারিয়েন্ট। স্ক্রিপস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকেই ৯১টি দেশে প্রাপ্ত বিএফ–৭-এর জেনেটিক মেক-আপ এবং মিউটেশন প্রোফাইলের সঙ্গে মিলে যায়। অবশেষে ২০২২ সালের মে মাসে এটির নামকরণ করা হয় বিএফ–৭ (বিএ.৫.২.১.৭–এর সংক্ষিপ্ত রূপ)। বিএফ–৭–এর স্পাইক প্রোটিনে একটি নির্দিষ্ট মিউটেশনের (আর ৩৪৬ টি) ফলে মানুষের শরীরে প্রবেশ এবং রোগ প্রতিরোধকারী অ্যান্টিবডিকে ফাঁকি দেওয়ার সক্ষমতা বাড়িয়ে দিয়ে এটিকে আরও বেশি সংক্রামক এবং বিপজ্জনক করে তুলেছে, এমনকি যাঁরা সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত তাঁদের জন্যও।
গবেষণায় দেখা গেছে, ওমিক্রন সাব-ভ্যারিয়েন্টগুলোর মধ্যে বিএফ-৭-এর সবচেয়ে শক্তিশালী সংক্রমণক্ষমতা রয়েছে (একজন সংক্রামিত ব্যক্তি গড়ে ১০ থেকে ১৮ জনকে সংক্রমিত করতে পারে), কম ইনকিউবেশন পিরিয়ড (ভাইরাসের সংস্পর্শে আসা এবং প্রথম লক্ষণগুলোর উপস্থিতির মধ্যবর্তী সময়) এবং যাদের পূর্বে কোভিড সংক্রমণ হয়েছে বা যারা পূর্বেই কোভিডের টিকা পেয়েছে বা উভয়কেই সংক্রামিত করার ক্ষমতা অন্য ভ্যারিয়েন্টগুলোর থেকে বেশি।
উপসর্গবিহীন বাহকের সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া বিএফ-৭ দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন রোগী, বয়স্ক, করোনা সম্মুখযোদ্ধা এবং জটিল রোগে আক্রান্ত (ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্ট, ট্রান্সপ্ল্যান্ট ইত্যাদি) রোগীদের জন্য আরও গুরুতর অসুস্থতার কারণ হতে পারে।
লক্ষণসমূহ
বিএফ-৭-এর সংক্রমণের লক্ষণগুলো ওমিক্রনের অন্য সাব-ভেরিয়েন্টগুলোর মতোই এবং প্রাথমিকভাবে রোগীদের ওপরের শ্বাসযন্ত্র আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ দেখা যায়। উপসর্গের মধ্যে জ্বর, কাশি, গলাব্যথা, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং ক্লান্তি থাকতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে বমি এবং ডায়রিয়ার মতো লক্ষণগুলোও দেখা যায়।
যদিও বিএফ-৭ আক্রান্তদের রোগের ভয়াবহতা বা মৃত্যুঝুঁকি অন্য ভ্যারিয়েন্টদের তুলনায় কম।
বিশ্বের বর্তমান অবস্থা
চীন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের অনেক দেশে (ডেনমার্ক, বেলজিয়াম, জার্মানি) এরই মধ্যে খোঁজ মিলেছে এই বিএফ.৭-এর। তবে এরই মধ্যে সংক্রমণের বিস্ফোরণ ঘটেছে চীনে। এক দিনে ৩ কোটির বেশি আক্রান্ত হওয়ার খবরও মিলেছে।
বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে কোভিডের টিকাদান কর্মসূচি এবং বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্ট ও সাব-ভ্যারিয়েন্ট দিয়ে সংক্রমণের কারণে মানুষের শরীরে ‘Neutralizing Antibody’ সৃষ্টির ফলে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হয়েছে। তাই ধীরে ধীরে বিভিন্ন সময়ে সংক্রমণ প্রতিরোধের কঠোর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পরও সব দেশেই সংক্রমণের হার এবং মৃত্যু হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছিল। গত তিন বছরে তাই করোনার গ্রাফ কখনো ঊর্ধ্বমুখী আবার কখনো নিম্নমুখী হয়েছে।
কিন্তু করোনা মহামারির শুরু থেকেই চীনে জারি করা হয়েছিল ‘জিরো কোভিড’ নীতি। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, চীনের মানুষজন কঠোর বিধিনিষেধের ভেতরে থাকার দরুন কোভিডের বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্ট, সাব-ভ্যারিয়েন্ট দিয়ে অপেক্ষাকৃত কম ন্যাচারাল ইনফেকশন হয়েছে। ফলে হাইব্রিড ইমিউনিটি (Hybrid Immunity) বা মিশ্র রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম তৈরি হয়েছে। টিকার কারণেই মূলত তাদের শরীরে নির্দিষ্ট কিছু ভ্যারিয়েন্টের বিপক্ষে অ্যান্টিবডি তৈরি হলেও বিভিন্ন রকম ভ্যারিয়েন্টের বিপক্ষে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম তৈরি হয়েছে। তাই ডিসেম্বরে বিধিনিষেধ শিথিল করায় চীনে সংক্রমণের হার এবং মৃত্যুর সংখ্যা অবিশ্বাস্য গতিতে বেড়ে চলছে।
চীন ও প্রতিবেশী ভারতে বিএফ-৭ শনাক্ত হওয়ায় বাংলাদেশেও সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। যখন দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ক্রমাগত হ্রাস পেয়ে জীবন অনেকটাই স্বাভাবিক, তখন প্রতিবেশী ভারত এবং অন্যান্য দেশে করোনাভাইরাসের নতুন সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি নির্দেশ করে পঞ্চম করোনাভাইরাস তরঙ্গ। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের দেশে বিএফ-৭-এর তাণ্ডবলীলা হয়তো কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মৃদু উপসর্গ বা উপসর্গহীনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। কারণ, বাংলাদেশের মানুষের শরীরে এরই মধ্যে হাইব্রিড ইমিউনিটি বা মিশ্র রোগ প্রতিরোধ তৈরি হয়েছে, যা করোনার যেকোনো ভ্যারিয়েন্টকে রুখে দিতে অনেকটাই সক্ষম।
একদিকে যেমন ভ্যাকসিনেশন অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, তেমনি করোনার নানা ভ্যারিয়েন্টের ন্যাচারাল ইনফেকশন থেকেও অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, যা হয়তো আমাদের বিএফ-৭-এর ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে পারবে।
গবেষণা বলছে, এখন পর্যন্ত টিকা এবং সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে উত্তম প্রতিরোধ ব্যবস্থা। সরকারের দেওয়া তথ্যমতে, এরই মধ্যে দেশের ১৫ কোটি মানুষকে প্রথম ডোজ, সাড়ে ১২ কোটি মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ এবং সাড়ে ৬ কোটি মানুষকে তৃতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। চতুর্থ ডোজ টিকা করোনার সম্মুখসারির যোদ্ধা, ষাটোর্ধ্ব জনগণ, নানা জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং অন্তঃসত্ত্বা নারীরা পাবেন। তৃতীয় ডোজ নেওয়ার চার মাস পর নেওয়া যাবে চতুর্থ ডোজ।
কোভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও আমাদের সবাইকে অতি অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে—
১. জনাকীর্ণ জায়গায় মাস্ক পরতে হবে।
২. যথাসম্ভব জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে।
৩. ঘন ঘন সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুতে হবে।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
১ দিন আগে
থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
১ দিন আগে
সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়।
১ দিন আগে
ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো...
১ দিন আগেফিচার ডেস্ক

ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
নিজেকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি না ভাঙা
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া বেশ ভূমিকা রাখতে পারে। কেউ কেউ লিখিত পরিকল্পনা বা অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিদিনের লক্ষ্য ঠিক করেন। আবার কেউ জিমের সদস্যপদ বা ব্যায়াম ক্লাসে ভর্তি হয়ে নিজেকে দায়বদ্ধ করে তোলেন। এতে মাঝপথে হাল ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা কমে।
জীবনযাপনের সঙ্গে মানানসই পরিকল্পনা বেছে নেওয়া
যে ডায়েট বা ব্যায়াম পরিকল্পনা দীর্ঘদিন মেনে চলা সম্ভব নয়, তা এড়িয়ে চলা ভালো। অতিরিক্ত কঠোর নিয়ম অথবা সবকিছু একেবারে বাদ দেওয়ার মানসিকতা অনেক সময় উল্টো ফল বয়ে আনে। বরং ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ, খাবারের পরিমাণ কমানো, অতি প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খাওয়া এবং বেশি করে ফল ও সবজি অন্তর্ভুক্ত করার মতো অভ্যাসগুলো দীর্ঘ মেয়াদে উপকারী।
পছন্দের ব্যায়াম খোঁজা
ওজন কমাতে শারীরিক কার্যকলাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে যে ব্যায়াম আপনার ভালো লাগে না, তা বেশি দিন চালিয়ে যাওয়া কঠিন। হাঁটা, সাঁতার, নাচ, সাইক্লিং কিংবা জিম—যে ধরনের ব্যায়াম উপভোগ করেন, সেটিই বেছে নেওয়া ভালো।
যে বিষয়গুলো অনুপ্রেরণা জোগায়
ওজন কমানোর পুরো যাত্রায় শুধু শেষ লক্ষ্যের দিকে তাকিয়ে থাকলে হতাশা আসতে পারে। তাই ছোট ছোট প্রক্রিয়াগত লক্ষ্য ঠিক করা জরুরি। যেমন সপ্তাহে নির্দিষ্ট কয়েক দিন ব্যায়াম করা বা প্রতিটি খাবারে সবজি রাখা। এসব লক্ষ্য পূরণ হলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। নিজের অগ্রগতি লিখে রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। খাবার ও দৈনন্দিন অভ্যাসের হিসাব রাখলে কোথায় ভুল হচ্ছে কিংবা কোন অভ্যাস ওজন বাড়াচ্ছে, তা সহজে ধরা পড়ে।
সামাজিক সহায়তা এবং ইতিবাচক মনোভাব
পরিবার ও বন্ধুদের নিজের লক্ষ্য জানালে তারা মানসিক সমর্থন দিতে পারে। কেউ কেউ ওজন কমানোর সঙ্গী পেলে আরও অনুপ্রাণিত বোধ করে। পাশাপাশি নিজের সঙ্গে ইতিবাচকভাবে কথা বলা এবং পরিবর্তনের প্রতি দৃঢ় মনোভাব রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
বাধা এলে যা করতে হবে
জীবনে নানা ধরনের চাপ এবং সামাজিক অনুষ্ঠানের কারণে পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য আগেই মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকলে আবার সঠিক পথে ফেরা সহজ হয়। নিখুঁত হওয়ার চেষ্টা না করে নিজের ভুল মেনে নেওয়া এবং নিজেকে ক্ষমা করাও অনুপ্রেরণা ধরে রাখতে সহায়ক।
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণাই সবচেয়ে বড় শক্তি। সবার অনুপ্রেরণার উৎস এক নয়। তাই নিজের জন্য কার্যকর পদ্ধতি খুঁজে নেওয়াই হলো মূল চাবিকাঠি।
তবে ধৈর্য ধরুন, ছোট ছোট সাফল্য উদ্যাপন করুন
এবং প্রয়োজনে সাহায্য চাইতে সংকোচ করবেন না। সঠিক পরিকল্পনা ও সমর্থন থাকলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।
সূত্র: হেলথ লাইন

ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
নিজেকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি না ভাঙা
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া বেশ ভূমিকা রাখতে পারে। কেউ কেউ লিখিত পরিকল্পনা বা অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিদিনের লক্ষ্য ঠিক করেন। আবার কেউ জিমের সদস্যপদ বা ব্যায়াম ক্লাসে ভর্তি হয়ে নিজেকে দায়বদ্ধ করে তোলেন। এতে মাঝপথে হাল ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা কমে।
জীবনযাপনের সঙ্গে মানানসই পরিকল্পনা বেছে নেওয়া
যে ডায়েট বা ব্যায়াম পরিকল্পনা দীর্ঘদিন মেনে চলা সম্ভব নয়, তা এড়িয়ে চলা ভালো। অতিরিক্ত কঠোর নিয়ম অথবা সবকিছু একেবারে বাদ দেওয়ার মানসিকতা অনেক সময় উল্টো ফল বয়ে আনে। বরং ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ, খাবারের পরিমাণ কমানো, অতি প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খাওয়া এবং বেশি করে ফল ও সবজি অন্তর্ভুক্ত করার মতো অভ্যাসগুলো দীর্ঘ মেয়াদে উপকারী।
পছন্দের ব্যায়াম খোঁজা
ওজন কমাতে শারীরিক কার্যকলাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে যে ব্যায়াম আপনার ভালো লাগে না, তা বেশি দিন চালিয়ে যাওয়া কঠিন। হাঁটা, সাঁতার, নাচ, সাইক্লিং কিংবা জিম—যে ধরনের ব্যায়াম উপভোগ করেন, সেটিই বেছে নেওয়া ভালো।
যে বিষয়গুলো অনুপ্রেরণা জোগায়
ওজন কমানোর পুরো যাত্রায় শুধু শেষ লক্ষ্যের দিকে তাকিয়ে থাকলে হতাশা আসতে পারে। তাই ছোট ছোট প্রক্রিয়াগত লক্ষ্য ঠিক করা জরুরি। যেমন সপ্তাহে নির্দিষ্ট কয়েক দিন ব্যায়াম করা বা প্রতিটি খাবারে সবজি রাখা। এসব লক্ষ্য পূরণ হলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। নিজের অগ্রগতি লিখে রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। খাবার ও দৈনন্দিন অভ্যাসের হিসাব রাখলে কোথায় ভুল হচ্ছে কিংবা কোন অভ্যাস ওজন বাড়াচ্ছে, তা সহজে ধরা পড়ে।
সামাজিক সহায়তা এবং ইতিবাচক মনোভাব
পরিবার ও বন্ধুদের নিজের লক্ষ্য জানালে তারা মানসিক সমর্থন দিতে পারে। কেউ কেউ ওজন কমানোর সঙ্গী পেলে আরও অনুপ্রাণিত বোধ করে। পাশাপাশি নিজের সঙ্গে ইতিবাচকভাবে কথা বলা এবং পরিবর্তনের প্রতি দৃঢ় মনোভাব রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
বাধা এলে যা করতে হবে
জীবনে নানা ধরনের চাপ এবং সামাজিক অনুষ্ঠানের কারণে পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য আগেই মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকলে আবার সঠিক পথে ফেরা সহজ হয়। নিখুঁত হওয়ার চেষ্টা না করে নিজের ভুল মেনে নেওয়া এবং নিজেকে ক্ষমা করাও অনুপ্রেরণা ধরে রাখতে সহায়ক।
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণাই সবচেয়ে বড় শক্তি। সবার অনুপ্রেরণার উৎস এক নয়। তাই নিজের জন্য কার্যকর পদ্ধতি খুঁজে নেওয়াই হলো মূল চাবিকাঠি।
তবে ধৈর্য ধরুন, ছোট ছোট সাফল্য উদ্যাপন করুন
এবং প্রয়োজনে সাহায্য চাইতে সংকোচ করবেন না। সঠিক পরিকল্পনা ও সমর্থন থাকলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।
সূত্র: হেলথ লাইন

চীনের উহান শহরে প্রায় তিন বছর আগে এমনই এক শীতে শোনা গিয়েছিল করোনাভাইরাসের আগমনের অশনিসংকেত। অজানা জ্বরে মৃত্যুর মিছিল থামাতে রাতারাতি লকডাউন করে দেওয়া হয়েছিল সারা শহর। ক্রমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে এবং সৃষ্টি হয় বিশ্বব্যাপী অতিমারীর।
০১ জানুয়ারি ২০২৩
থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
১ দিন আগে
সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়।
১ দিন আগে
ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো...
১ দিন আগেডা. মো. মাজহারুল হক তানিম

থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
হাইপোথাইরয়েডিজমের লক্ষণ
শীতকালীন সবজি খাওয়ায় সতর্কতা
কাবেজ জাতীয় সবজি; যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, লেটুসপাতায় থাকে গয়ট্রোজেন নামে একধরনের উপাদান। এটি থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে বাধা দিয়ে থাকে। তাই যাঁদের হাইপোথাইরয়েড আছে, তাঁদের এসব সবজি কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যাবে না। কিন্তু রান্না করে অল্প খাওয়া যাবে।
শীতকালে থাইরয়েড রোগীদের হরমোনের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই অতিরিক্ত দুর্বল লাগে, ঠান্ডা ভাব এবং কাজের গতি ধীর হতে পারে।
শীতকালে থাইরয়েড রোগীদের করণীয়
গরম থাকার চেষ্টা করুন: জ্যাকেট কিংবা কম্বল ইত্যাদির মতো গরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে। গরম খাবার বেশি খেতে হবে; যেমন স্যুপ কিংবা চা।
ভিটামিন ‘ডি’ বাড়ান: সকাল ৯ থেকে ১০টার দিকে রোদে থাকার চেষ্টা করুন। ভিটামিন ‘ডি’ লেভেল বেশি কম থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন ‘ডি’ সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন।
খাদ্যাভ্যাস: পর্যাপ্ত পানি পান করুন। ভিটামিন ‘সি ও বি’ সমৃদ্ধ এবং প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খান।
মন নিয়ন্ত্রণ করুন: মুড সুইং খুবই সাধারণ বিষয় থাইরয়েড রোগীদের জন্য। তাই নিজের মন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ ছাড়া প্রফুল্ল থাকার চেষ্টা করুন, কর্মঠ থাকুন, দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন। প্রয়োজনে লাইট থেরাপি নিতে পারেন।
শীতে থাইরয়েড রোগীদের ত্বকের যত্ন
থাইরয়েড রোগীদের ত্বক স্বভাবতই শুষ্ক থাকে। শীতকালে তা আরও শুষ্ক হয়ে ওঠে। তাই শীতকালে গোসলের পর ময়শ্চারাইজার, লোশন কিংবা ক্রিম নিয়মিত ব্যবহার করুন। ত্বকে চুলকানি অথবা র্যাশ থাকলে চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন।
নিয়মিত ফলোআপ
৩ থেকে ৬ মাস পরপর আপনার হরমোন ও থাইরয়েড, বিশেষত এন্ডোক্রাইনোলজিস্টের পরামর্শ নিন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধের মাত্রা কম কিংবা বেশি করা যাবে না।
এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল, কাকরাইল, ঢাকা

থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
হাইপোথাইরয়েডিজমের লক্ষণ
শীতকালীন সবজি খাওয়ায় সতর্কতা
কাবেজ জাতীয় সবজি; যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, লেটুসপাতায় থাকে গয়ট্রোজেন নামে একধরনের উপাদান। এটি থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে বাধা দিয়ে থাকে। তাই যাঁদের হাইপোথাইরয়েড আছে, তাঁদের এসব সবজি কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যাবে না। কিন্তু রান্না করে অল্প খাওয়া যাবে।
শীতকালে থাইরয়েড রোগীদের হরমোনের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই অতিরিক্ত দুর্বল লাগে, ঠান্ডা ভাব এবং কাজের গতি ধীর হতে পারে।
শীতকালে থাইরয়েড রোগীদের করণীয়
গরম থাকার চেষ্টা করুন: জ্যাকেট কিংবা কম্বল ইত্যাদির মতো গরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে। গরম খাবার বেশি খেতে হবে; যেমন স্যুপ কিংবা চা।
ভিটামিন ‘ডি’ বাড়ান: সকাল ৯ থেকে ১০টার দিকে রোদে থাকার চেষ্টা করুন। ভিটামিন ‘ডি’ লেভেল বেশি কম থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন ‘ডি’ সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন।
খাদ্যাভ্যাস: পর্যাপ্ত পানি পান করুন। ভিটামিন ‘সি ও বি’ সমৃদ্ধ এবং প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খান।
মন নিয়ন্ত্রণ করুন: মুড সুইং খুবই সাধারণ বিষয় থাইরয়েড রোগীদের জন্য। তাই নিজের মন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ ছাড়া প্রফুল্ল থাকার চেষ্টা করুন, কর্মঠ থাকুন, দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন। প্রয়োজনে লাইট থেরাপি নিতে পারেন।
শীতে থাইরয়েড রোগীদের ত্বকের যত্ন
থাইরয়েড রোগীদের ত্বক স্বভাবতই শুষ্ক থাকে। শীতকালে তা আরও শুষ্ক হয়ে ওঠে। তাই শীতকালে গোসলের পর ময়শ্চারাইজার, লোশন কিংবা ক্রিম নিয়মিত ব্যবহার করুন। ত্বকে চুলকানি অথবা র্যাশ থাকলে চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন।
নিয়মিত ফলোআপ
৩ থেকে ৬ মাস পরপর আপনার হরমোন ও থাইরয়েড, বিশেষত এন্ডোক্রাইনোলজিস্টের পরামর্শ নিন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধের মাত্রা কম কিংবা বেশি করা যাবে না।
এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল, কাকরাইল, ঢাকা

চীনের উহান শহরে প্রায় তিন বছর আগে এমনই এক শীতে শোনা গিয়েছিল করোনাভাইরাসের আগমনের অশনিসংকেত। অজানা জ্বরে মৃত্যুর মিছিল থামাতে রাতারাতি লকডাউন করে দেওয়া হয়েছিল সারা শহর। ক্রমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে এবং সৃষ্টি হয় বিশ্বব্যাপী অতিমারীর।
০১ জানুয়ারি ২০২৩
ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
১ দিন আগে
সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়।
১ দিন আগে
ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো...
১ দিন আগেমো. ইকবাল হোসেন

সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়। আবার ত্বক, চুল ও প্রজননতন্ত্রের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ই’-এর ভূমিকা অনেক বেশি। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন রকমের পেশি এবং স্নায়ুতন্ত্রের সুরক্ষায় খনিজ লবণের ভূমিকা অনেক বেশি।
এই ভিটামিন ও খনিজ লবণগুলো আমরা প্রধানত শাকসবজি ও ফলমূল থেকে পেয়ে থাকি। কিন্তু কিছু অসাবধানতার ফলে শাকসবজি ও ফলমূলের পুষ্টির একটা বড় অংশ হারিয়ে যায়।
আমরা ঐতিহ্যগতভাবে শাকসবজি কাটার পর পানি দিয়ে কয়েকবার ধুয়ে থাকি। এতে পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন ‘বি ও সি’ পানির সঙ্গে মিশে শাকসবজির বাইরে চলে যায়। ফলে আমরা ওই শাকসবজি থেকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ লবণ পাই না। তাই সেগুলো কাটা বা খোসা ছাড়ানোর আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এতে ময়লা পরিষ্কারের পাশাপাশি সব পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ন থাকবে। শাকসবজি কাটার আগে বঁটি, ছুরি বা গ্রেটারও খুব ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
শাকসবজি রান্নার নামে দীর্ঘ সময় আগুনের তাপে রাখা যাবে না। অল্প তাপেই শাকসবজিতে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু মারা যায়। এগুলো যত কম সময় সেদ্ধ করা হবে, তত বেশি পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ থাকবে। যেমন দীর্ঘ সময় ধরে রান্না করলে শাকসবজির প্রায় ৫০ শতাংশ পটাশিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এটি শরীরের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় খনিজ। ফলে অল্প আঁচে ভাপানো শাকসবজি খাওয়া ভালো।
প্রতিটি শাকসবজির নিজস্ব রং বজায় রেখে রান্না করলে তার পুষ্টিগুণ বেশি বজায় থাকবে। যেমন গাজর রান্নার পর লাল রং, শিম রান্নার পর সবুজ রং কিংবা ফুলকপির সাদা রং বজায় থাকতে হবে। রান্না করতে গিয়ে শাকসবজির রং যত নষ্ট হবে, তার পুষ্টিগুণ তত বেশি নষ্ট হবে।
অনেক সময় রাতে শাকসবজি কেটে রেখে দেওয়া হয় সকালে রান্না করার জন্য। অথবা সকালে কেটে রাখি দুপুরে রান্না করার জন্য। এভাবে দীর্ঘ সময় কেটে রেখে দিলে শাকসবজির কাটা অংশ বাতাসের সংস্পর্শে এসে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ার মাধ্যমে পুষ্টিগুণ নষ্ট করে। এভাবে কেটে রাখা শাকসবজিতে বিষক্রিয়াও হতে পারে। তাই এর সঠিক পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে রাতে কেটে না রেখে রান্নার আগে কেটে দ্রুত রান্না করুন।
শাকসবজি কাটার কাজে ধারালো বঁটি অথবা ছুরি ব্যবহার করতে হবে। ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে এগুলো কাটার পর অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান নষ্ট হতে পারে। এ ছাড়া ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে কেটে রাখা শাকসবজিতে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া কিংবা ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে।
সবজি ছোট টুকরা করে না কেটে যথাসম্ভব বড় টুকরা করে কাটবেন। ছোট টুকরা করে কাটলে তাপে বেশি পরিমাণে পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে পারে। কিন্তু টুকরা বড় রাখলে বেশি তাপে রান্নায়ও ভেতরের পুষ্টিগুণ সহজে নষ্ট হয় না।
গাজর, পটোল, লাউ, শসা, মিষ্টিকুমড়ার মতো সবজিগুলো খোসাসহ রান্না করতে হবে। এসব সবজির খোসায়ও অনেক ভিটামিন ও মিনারেল থাকে।
শাকসবজি ভাজা ভাজা না করে রান্না করে খেলে বেশি পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়। প্রথমত ভাজা করতে হলে খুব ছোট টুকরা করে কাটতে হয়। দ্বিতীয়ত ভাজি করতে হলে দীর্ঘ সময় তাপে রাখতে হয়। এই দুটি বিষয় শাকসবজির পুষ্টিগুণ অনেক কমিয়ে দেয়। তাই এগুলো ঝোল করে রান্না করে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়। আবার ত্বক, চুল ও প্রজননতন্ত্রের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ই’-এর ভূমিকা অনেক বেশি। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন রকমের পেশি এবং স্নায়ুতন্ত্রের সুরক্ষায় খনিজ লবণের ভূমিকা অনেক বেশি।
এই ভিটামিন ও খনিজ লবণগুলো আমরা প্রধানত শাকসবজি ও ফলমূল থেকে পেয়ে থাকি। কিন্তু কিছু অসাবধানতার ফলে শাকসবজি ও ফলমূলের পুষ্টির একটা বড় অংশ হারিয়ে যায়।
আমরা ঐতিহ্যগতভাবে শাকসবজি কাটার পর পানি দিয়ে কয়েকবার ধুয়ে থাকি। এতে পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন ‘বি ও সি’ পানির সঙ্গে মিশে শাকসবজির বাইরে চলে যায়। ফলে আমরা ওই শাকসবজি থেকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ লবণ পাই না। তাই সেগুলো কাটা বা খোসা ছাড়ানোর আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এতে ময়লা পরিষ্কারের পাশাপাশি সব পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ন থাকবে। শাকসবজি কাটার আগে বঁটি, ছুরি বা গ্রেটারও খুব ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
শাকসবজি রান্নার নামে দীর্ঘ সময় আগুনের তাপে রাখা যাবে না। অল্প তাপেই শাকসবজিতে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু মারা যায়। এগুলো যত কম সময় সেদ্ধ করা হবে, তত বেশি পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ থাকবে। যেমন দীর্ঘ সময় ধরে রান্না করলে শাকসবজির প্রায় ৫০ শতাংশ পটাশিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এটি শরীরের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় খনিজ। ফলে অল্প আঁচে ভাপানো শাকসবজি খাওয়া ভালো।
প্রতিটি শাকসবজির নিজস্ব রং বজায় রেখে রান্না করলে তার পুষ্টিগুণ বেশি বজায় থাকবে। যেমন গাজর রান্নার পর লাল রং, শিম রান্নার পর সবুজ রং কিংবা ফুলকপির সাদা রং বজায় থাকতে হবে। রান্না করতে গিয়ে শাকসবজির রং যত নষ্ট হবে, তার পুষ্টিগুণ তত বেশি নষ্ট হবে।
অনেক সময় রাতে শাকসবজি কেটে রেখে দেওয়া হয় সকালে রান্না করার জন্য। অথবা সকালে কেটে রাখি দুপুরে রান্না করার জন্য। এভাবে দীর্ঘ সময় কেটে রেখে দিলে শাকসবজির কাটা অংশ বাতাসের সংস্পর্শে এসে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ার মাধ্যমে পুষ্টিগুণ নষ্ট করে। এভাবে কেটে রাখা শাকসবজিতে বিষক্রিয়াও হতে পারে। তাই এর সঠিক পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে রাতে কেটে না রেখে রান্নার আগে কেটে দ্রুত রান্না করুন।
শাকসবজি কাটার কাজে ধারালো বঁটি অথবা ছুরি ব্যবহার করতে হবে। ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে এগুলো কাটার পর অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান নষ্ট হতে পারে। এ ছাড়া ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে কেটে রাখা শাকসবজিতে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া কিংবা ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে।
সবজি ছোট টুকরা করে না কেটে যথাসম্ভব বড় টুকরা করে কাটবেন। ছোট টুকরা করে কাটলে তাপে বেশি পরিমাণে পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে পারে। কিন্তু টুকরা বড় রাখলে বেশি তাপে রান্নায়ও ভেতরের পুষ্টিগুণ সহজে নষ্ট হয় না।
গাজর, পটোল, লাউ, শসা, মিষ্টিকুমড়ার মতো সবজিগুলো খোসাসহ রান্না করতে হবে। এসব সবজির খোসায়ও অনেক ভিটামিন ও মিনারেল থাকে।
শাকসবজি ভাজা ভাজা না করে রান্না করে খেলে বেশি পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়। প্রথমত ভাজা করতে হলে খুব ছোট টুকরা করে কাটতে হয়। দ্বিতীয়ত ভাজি করতে হলে দীর্ঘ সময় তাপে রাখতে হয়। এই দুটি বিষয় শাকসবজির পুষ্টিগুণ অনেক কমিয়ে দেয়। তাই এগুলো ঝোল করে রান্না করে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

চীনের উহান শহরে প্রায় তিন বছর আগে এমনই এক শীতে শোনা গিয়েছিল করোনাভাইরাসের আগমনের অশনিসংকেত। অজানা জ্বরে মৃত্যুর মিছিল থামাতে রাতারাতি লকডাউন করে দেওয়া হয়েছিল সারা শহর। ক্রমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে এবং সৃষ্টি হয় বিশ্বব্যাপী অতিমারীর।
০১ জানুয়ারি ২০২৩
ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
১ দিন আগে
থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
১ দিন আগে
ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো...
১ দিন আগেডা. মো. আরমান হোসেন রনি

ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো আঘাতের চিহ্ন না-ও থাকতে পারে।
কারণ
শিশুর অতিরিক্ত কান্না, বিরক্তি কিংবা অস্থিরতার কারণে অভিভাবক বা পরিচর্যাকারীর রাগ এ ঘটনার জন্য বিশেষভাবে দায়ী। এই অবস্থায় শিশুকে ঝাঁকালে তাদের ঘাড়ের পেশি দুর্বল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
এ ছাড়া মাথা শরীরের তুলনায় বড় হওয়ায় ঝাঁকানোর সময় তা সামনে-পেছনে দ্রুত নড়াচড়া করে। ফলে মস্তিষ্ক খুলির ভেতরে আঘাতপ্রাপ্ত হয় এবং রক্তনালিগুলো ছিঁড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
কী ঘটে
শিশুকে জোরে ঝাঁকানোর ফলে তিনটি প্রধান ক্ষতি হয়—
মস্তিষ্কে আঘাত: মস্তিষ্ক ও খুলির মাঝখানে থাকা রক্তনালি ছিঁড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয়।
চোখে আঘাত: ভিট্রিওরেটিনাল ট্র্যাকশনের কারণে মাল্টিলেয়ার্ড রেটিনায় রক্তক্ষরণ হয়, যা শেকেন বেবি সিনড্রোমের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।
ঘাড় ও স্পাইনাল ইনজুরি: সার্ভাইক্যাল স্পাইনের ক্ষতি ও মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
লক্ষণ
শেকেন বেবি সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশুর লক্ষণগুলো হালকা থেকে গুরুতর হতে পারে। সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:
অতিরিক্ত কান্না বা অস্বাভাবিক নিস্তেজ হয়ে যাওয়া
চোখের পরীক্ষায় দেখা যায়—
রোগনির্ণয়
শেকেন বেবি সিনড্রোম মূলত ক্লিনিক্যাল ডায়াগনোসিস। তবে নিশ্চিত করার জন্য—
চিকিৎসা
এর চিকিৎসা একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি অ্যাপ্রোচের মাধ্যমে করা হয়—
চিকিৎসকের আইনগত ও নৈতিক দায়িত্ব
শেকেন বেবি সিনড্রোম একটি শিশু নির্যাতনজনিত অপরাধ। তাই চিকিৎসকের দায়িত্ব শুধু চিকিৎসা করা নয়, বরং—
চক্ষুবিশেষজ্ঞ ও সার্জন, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা।

ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো আঘাতের চিহ্ন না-ও থাকতে পারে।
কারণ
শিশুর অতিরিক্ত কান্না, বিরক্তি কিংবা অস্থিরতার কারণে অভিভাবক বা পরিচর্যাকারীর রাগ এ ঘটনার জন্য বিশেষভাবে দায়ী। এই অবস্থায় শিশুকে ঝাঁকালে তাদের ঘাড়ের পেশি দুর্বল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
এ ছাড়া মাথা শরীরের তুলনায় বড় হওয়ায় ঝাঁকানোর সময় তা সামনে-পেছনে দ্রুত নড়াচড়া করে। ফলে মস্তিষ্ক খুলির ভেতরে আঘাতপ্রাপ্ত হয় এবং রক্তনালিগুলো ছিঁড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
কী ঘটে
শিশুকে জোরে ঝাঁকানোর ফলে তিনটি প্রধান ক্ষতি হয়—
মস্তিষ্কে আঘাত: মস্তিষ্ক ও খুলির মাঝখানে থাকা রক্তনালি ছিঁড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয়।
চোখে আঘাত: ভিট্রিওরেটিনাল ট্র্যাকশনের কারণে মাল্টিলেয়ার্ড রেটিনায় রক্তক্ষরণ হয়, যা শেকেন বেবি সিনড্রোমের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।
ঘাড় ও স্পাইনাল ইনজুরি: সার্ভাইক্যাল স্পাইনের ক্ষতি ও মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
লক্ষণ
শেকেন বেবি সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশুর লক্ষণগুলো হালকা থেকে গুরুতর হতে পারে। সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:
অতিরিক্ত কান্না বা অস্বাভাবিক নিস্তেজ হয়ে যাওয়া
চোখের পরীক্ষায় দেখা যায়—
রোগনির্ণয়
শেকেন বেবি সিনড্রোম মূলত ক্লিনিক্যাল ডায়াগনোসিস। তবে নিশ্চিত করার জন্য—
চিকিৎসা
এর চিকিৎসা একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি অ্যাপ্রোচের মাধ্যমে করা হয়—
চিকিৎসকের আইনগত ও নৈতিক দায়িত্ব
শেকেন বেবি সিনড্রোম একটি শিশু নির্যাতনজনিত অপরাধ। তাই চিকিৎসকের দায়িত্ব শুধু চিকিৎসা করা নয়, বরং—
চক্ষুবিশেষজ্ঞ ও সার্জন, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা।

চীনের উহান শহরে প্রায় তিন বছর আগে এমনই এক শীতে শোনা গিয়েছিল করোনাভাইরাসের আগমনের অশনিসংকেত। অজানা জ্বরে মৃত্যুর মিছিল থামাতে রাতারাতি লকডাউন করে দেওয়া হয়েছিল সারা শহর। ক্রমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে এবং সৃষ্টি হয় বিশ্বব্যাপী অতিমারীর।
০১ জানুয়ারি ২০২৩
ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
১ দিন আগে
থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
১ দিন আগে
সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়।
১ দিন আগে