Ajker Patrika

দেশে করোনার নতুন ঢেউ, সুরক্ষায় করণীয়

ডা. কাকলী হালদার
আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২৩, ২৩: ৩৫
দেশে করোনার নতুন ঢেউ, সুরক্ষায় করণীয়

চীনের উহান শহরে প্রায় তিন বছর আগে এমনই এক শীতে শোনা গিয়েছিল করোনাভাইরাসের আগমনের অশনিসংকেত। অজানা জ্বরে মৃত্যুর মিছিল থামাতে রাতারাতি লকডাউন করে দেওয়া হয়েছিল সারা শহর। ক্রমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে এবং সৃষ্টি হয় বিশ্বব্যাপী অতিমারির।

সংক্রমণের শীর্ষে পৌঁছে যায় ব্রিটেন, আমেরিকা, ইতালির মতো অনেক উন্নত দেশও। কোভিডের ভয়াল থাবা বাংলাদেশকে আক্রমণ করলেও অনেক উন্নত দেশের তুলনায় অনেকটা সফলভাবেই আমরা প্রতিটা ঢেউ মোকাবিলা করতে পেরেছি। ভ্যাকসিনেশন, ন্যাচারাল ইনফেকশন এবং অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ দিয়ে চিকিৎসা করায় অতিমারির সেই ধাক্কা বিশ্ববাসী কাটিয়ে উঠেছিল অনেকটাই।

কিন্তু আবারও এ বছরের ডিসেম্বরের শুরু থেকে দ্রুতগতিতে বাড়ছে কোভিড সংক্রমণের হার। নতুন করে চোখ রাঙাচ্ছে ওমিক্রন বিএফ–৭।

এ বছরের শেষে অতিমারি পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এলেও বিশেষজ্ঞেরা কিন্তু আগেই জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস কখনোই একেবারে নিঃশেষ হয়ে যাবে না। সুতরাং, সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই ভাইরাসকে সঙ্গে নিয়েই আমাদের বাঁচতে হবে। 

বিএফ–৭ কি নতুন ভাইরাস
সংক্রমণের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের অনেকগুলো ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ পাওয়া গেছে। করোনাভাইরাস ক্রমাগত জেনেটিক মিউটেশন করার ফলে অনেকগুলো ভ্যারিয়েন্ট এবং সাব-ভ্যারিয়েন্ট তৈরি করেছে। বিএফ–৭, ওমিক্রন বিএ.৫ ভ্যারিয়েন্টের একটি সাব-ভ্যারিয়েন্ট। স্ক্রিপস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকেই ৯১টি দেশে প্রাপ্ত বিএফ–৭-এর জেনেটিক মেক-আপ এবং মিউটেশন প্রোফাইলের সঙ্গে মিলে যায়। অবশেষে ২০২২ সালের মে মাসে এটির নামকরণ করা হয় বিএফ–৭ (বিএ.৫.২.১.৭–এর সংক্ষিপ্ত রূপ)। বিএফ–৭–এর স্পাইক প্রোটিনে একটি নির্দিষ্ট মিউটেশনের (আর ৩৪৬ টি) ফলে মানুষের শরীরে প্রবেশ এবং রোগ প্রতিরোধকারী অ্যান্টিবডিকে ফাঁকি দেওয়ার সক্ষমতা বাড়িয়ে দিয়ে এটিকে আরও বেশি সংক্রামক এবং বিপজ্জনক করে তুলেছে, এমনকি যাঁরা সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত তাঁদের জন্যও। 

গবেষণায় দেখা গেছে, ওমিক্রন সাব-ভ্যারিয়েন্টগুলোর মধ্যে বিএফ-৭-এর সবচেয়ে শক্তিশালী সংক্রমণক্ষমতা রয়েছে (একজন সংক্রামিত ব্যক্তি গড়ে ১০ থেকে ১৮ জনকে সংক্রমিত করতে পারে), কম ইনকিউবেশন পিরিয়ড (ভাইরাসের সংস্পর্শে আসা এবং প্রথম লক্ষণগুলোর উপস্থিতির মধ্যবর্তী সময়) এবং যাদের পূর্বে কোভিড সংক্রমণ হয়েছে বা যারা পূর্বেই কোভিডের টিকা পেয়েছে বা উভয়কেই সংক্রামিত করার ক্ষমতা অন্য ভ্যারিয়েন্টগুলোর থেকে বেশি। 

উপসর্গবিহীন বাহকের সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া বিএফ-৭ দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন রোগী, বয়স্ক, করোনা সম্মুখযোদ্ধা এবং জটিল রোগে আক্রান্ত (ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্ট, ট্রান্সপ্ল্যান্ট ইত্যাদি) রোগীদের জন্য আরও গুরুতর অসুস্থতার কারণ হতে পারে।

লক্ষণসমূহ
বিএফ-৭-এর সংক্রমণের লক্ষণগুলো ওমিক্রনের অন্য সাব-ভেরিয়েন্টগুলোর মতোই এবং প্রাথমিকভাবে রোগীদের ওপরের শ্বাসযন্ত্র আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ দেখা যায়। উপসর্গের মধ্যে জ্বর, কাশি, গলাব্যথা, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং ক্লান্তি থাকতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে বমি এবং ডায়রিয়ার মতো লক্ষণগুলোও দেখা যায়।

যদিও বিএফ-৭ আক্রান্তদের রোগের ভয়াবহতা বা মৃত্যুঝুঁকি অন্য ভ্যারিয়েন্টদের তুলনায় কম। 

বিশ্বের বর্তমান অবস্থা
চীন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের অনেক দেশে (ডেনমার্ক, বেলজিয়াম, জার্মানি) এরই মধ্যে খোঁজ মিলেছে এই বিএফ.৭-এর। তবে এরই মধ্যে সংক্রমণের বিস্ফোরণ ঘটেছে চীনে। এক দিনে ৩ কোটির বেশি আক্রান্ত হওয়ার খবরও মিলেছে।

বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে কোভিডের টিকাদান কর্মসূচি এবং বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্ট ও সাব-ভ্যারিয়েন্ট দিয়ে সংক্রমণের কারণে মানুষের শরীরে ‘Neutralizing Antibody’ সৃষ্টির ফলে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হয়েছে। তাই ধীরে ধীরে বিভিন্ন সময়ে সংক্রমণ প্রতিরোধের কঠোর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পরও সব দেশেই সংক্রমণের হার এবং মৃত্যু হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছিল। গত তিন বছরে তাই করোনার গ্রাফ কখনো ঊর্ধ্বমুখী আবার কখনো নিম্নমুখী হয়েছে।

কিন্তু করোনা মহামারির শুরু থেকেই চীনে জারি করা হয়েছিল ‘জিরো কোভিড’ নীতি। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, চীনের মানুষজন কঠোর বিধিনিষেধের ভেতরে থাকার দরুন কোভিডের বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্ট, সাব-ভ্যারিয়েন্ট দিয়ে অপেক্ষাকৃত কম ন্যাচারাল ইনফেকশন হয়েছে। ফলে হাইব্রিড ইমিউনিটি (Hybrid Immunity) বা মিশ্র রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম তৈরি হয়েছে। টিকার কারণেই মূলত তাদের শরীরে নির্দিষ্ট কিছু ভ্যারিয়েন্টের বিপক্ষে অ্যান্টিবডি তৈরি হলেও বিভিন্ন রকম ভ্যারিয়েন্টের বিপক্ষে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম তৈরি হয়েছে। তাই ডিসেম্বরে বিধিনিষেধ শিথিল করায় চীনে সংক্রমণের হার এবং মৃত্যুর সংখ্যা অবিশ্বাস্য গতিতে বেড়ে চলছে।

চীন ও প্রতিবেশী ভারতে বিএফ-৭ শনাক্ত হওয়ায় বাংলাদেশেও সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। যখন দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ক্রমাগত হ্রাস পেয়ে জীবন অনেকটাই স্বাভাবিক, তখন প্রতিবেশী ভারত এবং অন্যান্য দেশে করোনাভাইরাসের নতুন সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি নির্দেশ করে পঞ্চম করোনাভাইরাস তরঙ্গ। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের দেশে বিএফ-৭-এর তাণ্ডবলীলা হয়তো কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মৃদু উপসর্গ বা উপসর্গহীনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। কারণ, বাংলাদেশের মানুষের শরীরে এরই মধ্যে হাইব্রিড ইমিউনিটি বা মিশ্র রোগ প্রতিরোধ তৈরি হয়েছে, যা করোনার যেকোনো ভ্যারিয়েন্টকে রুখে দিতে অনেকটাই সক্ষম।

একদিকে যেমন ভ্যাকসিনেশন অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, তেমনি করোনার নানা ভ্যারিয়েন্টের ন্যাচারাল ইনফেকশন থেকেও অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, যা হয়তো আমাদের বিএফ-৭-এর ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে পারবে।

গবেষণা বলছে, এখন পর্যন্ত টিকা এবং সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে উত্তম প্রতিরোধ ব্যবস্থা। সরকারের দেওয়া তথ্যমতে, এরই মধ্যে দেশের ১৫ কোটি মানুষকে প্রথম ডোজ, সাড়ে ১২ কোটি মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ এবং সাড়ে ৬ কোটি মানুষকে তৃতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। চতুর্থ ডোজ টিকা করোনার সম্মুখসারির যোদ্ধা, ষাটোর্ধ্ব জনগণ, নানা জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং অন্তঃসত্ত্বা নারীরা পাবেন। তৃতীয় ডোজ নেওয়ার চার মাস পর নেওয়া যাবে চতুর্থ ডোজ।

কোভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও আমাদের সবাইকে অতি অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে—

১. জনাকীর্ণ জায়গায় মাস্ক পরতে হবে। 
২. যথাসম্ভব জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। 
৩. ঘন ঘন সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুতে হবে। 

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

জমিয়তে উলামাকে যে ৪টি আসন ছেড়ে দিল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কবিরাজিসহ প্রথাগত চিকিৎসার কার্যকারিতা খতিয়ে দেখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আফ্রিকায় ভেষজ চিকিৎসকেরা ক্ষত বা ব্যথা উপশমে গাছগাছড়া সংগ্রহ করছেন; চীনে আকুপাংচার বিশেষজ্ঞরা সুচ ব্যবহার করে মাইগ্রেন সারাচ্ছেন; আবার ভারতে যোগীরা ধ্যানচর্চা করছেন—এ ধরনের প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো ক্রমেই কার্যকর প্রমাণিত হচ্ছে এবং এগুলো আরও বেশি মনোযোগ ও গবেষণার দাবি রাখে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক কর্মকর্তা।

ডব্লিউএইচওর গ্লোবাল ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন সেন্টারের প্রধান ডা. শ্যামা কুরুবিল্লার মতে, ঐতিহাসিকভাবে পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণের অভাবের কারণে যেসব প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিকে অনেক সময় অবহেলা করা হয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ বাড়লে সেই ধারণা বদলাতে পারে।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের শুরুতে বিভিন্ন দেশ সম্মত হয়েছে যে আগামী এক দশকের জন্য ডব্লিউএইচও একটি নতুন বৈশ্বিক প্রথাগত চিকিৎসা কৌশল গ্রহণ করবে।

এই কৌশলের লক্ষ্য—প্রমাণভিত্তিকভাবে স্বাস্থ্য ও কল্যাণে প্রথাগত, পরিপূরক ও সমন্বিত চিকিৎসার সম্ভাবনাময় অবদানকে কাজে লাগানো।

এই কৌশলের আওতায় প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতির জন্য শক্তিশালী প্রমাণভিত্তি তৈরি, চিকিৎসা ও চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রণ কাঠামো গড়ে তোলা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী এসব পদ্ধতিকে আধুনিক জৈব-চিকিৎসাভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

কুরুবিল্লা বলেন, ‘এটা ভীষণ রোমাঞ্চকর। আমি বলছি না, আমরা এখনই জানি—কোনটা কাজ করে আর কোনটা করে না। তবে এ মুহূর্তে বিষয়টি জানার বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।’

প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।

কুরুবিল্লা বলেন, শত শত বছর ধরে চলে আসা এসব পদ্ধতির মধ্যে অনেকগুলোরই বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জিনোমিক্স ও মস্তিষ্ক স্ক্যানসহ আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন সেগুলো নতুনভাবে অনুসন্ধান করা সম্ভব।

তাঁর মতে, প্রথাগত চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রে থাইল্যান্ড ভালো উদাহরণ। দেশটিতে গবেষকেরা প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতি পর্যবেক্ষণ ও নথিবদ্ধ করছেন এবং ভেষজ চিকিৎসাকে প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। গত মে মাসে থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পেশির ব্যথা ও কোষ্ঠকাঠিন্যসহ কিছু রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের আধুনিক ওষুধের বদলে প্রথাগত চিকিৎসা ব্যবহারের সুপারিশ করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

জমিয়তে উলামাকে যে ৪টি আসন ছেড়ে দিল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতে খিচুড়ি কেন খাবেন

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১৮
শীতে খিচুড়ি কেন খাবেন

শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি শরীরে বিভিন্ন উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সহায়ক। শীতকালীন ক্লান্তি দূর করতে এবং ঋতু পরিবর্তনের অসুস্থতা থেকে বাঁচতে খিচুড়ি একটি আদর্শ খাবার। এটি সহজে হজম হয়।

কেন খাবেন খিচুড়ি

পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, খিচুড়ির প্রতিটি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এতে থাকা চাল থেকে পাওয়া যায় পর্যাপ্ত শর্করা ও শক্তি। ডাল জোগায় প্রোটিন ও আঁশ, যা হজমে বিশেষভাবে সাহায্য করে। ঘি শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে এবং পুষ্টি শোষণে সহায়ক। হলুদে থাকা কারকিউমিন ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে এবং আদা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীর উষ্ণ রাখে। খিচুড়িতে সবজি যোগ করলে আঁশের মাত্রা বাড়ে। গোলমরিচ ও জিরার মতো মসলা বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে। এ ছাড়া সাবুদানার খিচুড়ি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া এটি তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাতে কার্যকর।

mog-dal

মুগ ডালের খিচুড়ি

চাল ও মুগ ডালের মিশেলে তৈরি এই খিচুড়ি যেমন সহজপাচ্য, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এর বিশেষত্বের চাবিকাঠি লুকিয়ে রয়েছে মসলায়। একেবারে হলুদ, লবণ, জিরা অথবা ধনেগুঁড়ার মতো সাধারণ কিছু মসলা দিয়ে এটি রান্না করা হয়। এটা রান্নার সময় মুগ ডালের সঙ্গে চালও ভেজে নিতে পারেন। এতে মুগ ডালের একটা ভিন্ন গন্ধ পাওয়া যাবে। হলুদের পরিবর্তে এতে ব্যবহার করতে পারেন সবুজ মুগডাল।

উপকারিতা: শরীর উষ্ণ রাখে এবং দীর্ঘক্ষণ শক্তি জোগায়।

khichuri

সবজি খিচুড়ি

গাজর, মটরশুঁটি, ফুলকপি, আলু, টমেটো ইত্যাদি শীতের সবজি দিয়ে তৈরি রান্না করা সবজি খিচুড়ি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এর সঙ্গে শীতে পাওয়া যায় এমন প্রায় সব শাক ও সবজি যোগ করতে হবে। সবজিগুলো ছোট টুকরা করে কেটে নিতে হবে।

যে সবজিগুলো সেদ্ধ হতে বেশি সময় নেয়, সেগুলো আগে ভেজে নিন অথবা প্রেশার কুকারে দিন। এরপর তেল বা ঘিতে জিরা, তেজপাতা ও অন্যান্য মসলা দিয়ে পেঁয়াজ, আদা, রসুন ভাজার পর সবজিগুলো হালকা ভেজে নিন। ভেজে রাখা সবজি, চাল, ডাল ও পানি দিয়ে প্রেশার কুকারে বা হাঁড়িতে রান্না করুন। নরম খিচুড়ি চাইলে পানি বেশি দিতে পারেন। শেষ মুহূর্তে পালংসহ অন্য নরম শাক এতে যোগ করতে পারেন।

উপকারিতা: এটি অন্যান্য উপকারের সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং দ্রুত শক্তি পুনরুদ্ধার করে।

তিল-খিচুড়ি

তিল খিচুড়ি

ঠান্ডা পাহাড়ি অঞ্চলে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে এই খিচুড়ি অত্যন্ত জনপ্রিয়। চাল, মাষকলাইয়ের ডাল এবং তিল এর প্রধান উপকরণ। রান্নার আগে চাল ও ডাল ভিজিয়ে রাখা হয়। তিল হালকা ভেজে গুঁড়া করে নেওয়া হয়। তিল থেকে পাওয়া স্বাস্থ্যকর চর্বি ও খনিজ উপাদান শীতের দিনে শরীরের জন্য খুবই উপকারী। জিরা, হিং, হলুদ এবং লাল মরিচ গুঁড়ার সুগন্ধি মিশ্রণ এতে অনন্য স্বাদ যোগ করে। খাঁটি ঘি অথবা তেল-মসলার ফোড়ন দিয়ে এটি রান্না করা হয়। প্রোটিন, চর্বি এবং মিনারেলসমৃদ্ধ এই খাবার শীত জয়ের এক অমোঘ হাতিয়ার হতে পারে।

উপকারিতা: এটি শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগানোর পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।

আমলকীর-খিচুড়ি

আমলকী খিচুড়ি

সচরাচর খাওয়া হয় এমন কোনো খিচুড়ি খেতে না চাইলে রান্না করতে পারেন আমলকী খিচুড়ি। এটি কোনো সাধারণ খাবার নয়। এ খিচুড়ি রান্না করা হয় চাল, খোসা ছাড়ানো কালো মাষকলাইয়ের ডাল এবং তাজা আমলকী দিয়ে। নরম ধরনের এ খিচুড়ির স্বাদ ও সুগন্ধ বাড়াতে রান্নায় জিরা, হিং, হলুদ ও লাল মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো এতে রাজকীয় স্বাদ যোগ করবে। সবশেষে ঘি বা তেলের সুগন্ধি ফোড়ন এই খিচুড়িকে করে তোলে আরও সুস্বাদু। কেউ চাইলে এই খিচুড়ির পুষ্টিমান আরও বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের ঋতুভিত্তিক সবজি যোগ করতে পারেন। শীতের এই উৎসবের দিনগুলোতে শরীর সতেজ রাখতে এবং রসনা তৃপ্তিতে আমলকী খিচুড়ি হতে পারে আপনার সেরা পছন্দ।

উপকারিতা: এটি শরীরে শক্তি জোগানোর পাশাপাশি হজমশক্তি এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া শরীর ডিটক্সে সহায়তা করে, হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, গ্যাস্ট্রিক কমায়, কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ওজন কমাতে সহায়ক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

জমিয়তে উলামাকে যে ৪টি আসন ছেড়ে দিল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এই শীতে কেন খাবেন তেজপাতা ও লবঙ্গ চা

আলমগীর আলম
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০৪
এই শীতে কেন খাবেন তেজপাতা ও লবঙ্গ চা

তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।

১. হজমশক্তি বৃদ্ধিতে: বদহজমের সমস্যায় ভুগলে তেজপাতা দারুণ মুক্তি দিতে পারে। অন্যদিকে, লবঙ্গ এনজাইম নিঃসরণ বাড়িয়ে হজমপ্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত এবং পেটের অস্বস্তি দূর করে।

২. ব্যথা ও প্রদাহ উপশমে: আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে যাঁরা ভোগেন, তাঁদের জন্য এই চা অত্যন্ত উপকারী। ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা কমাতে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রদাহ বা ফোলা ভাব রোধে তেজপাতা ও লবঙ্গ লড়তে সাহায্য করে।

৩. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে: লবঙ্গে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া

ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। এর সঙ্গে তেজপাতা যুক্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যায়, যা বিশেষ করে ঠান্ডা ও ফ্লু মৌসুমে সুরক্ষা দেয়।

৪. দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে: এই চা শরীরে ক্ষতিকর ফ্রি র‍্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। ফলে হৃদ্‌রোগ এবং নির্দিষ্ট কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি কমে পায়।

৫. দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়: লবঙ্গ তেল দাঁতের জন্য উপকারী হিসেবে স্বীকৃত। নিয়মিত লবঙ্গ চা পান করলে মাড়ি ও দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।

তেজপাতা ও লবঙ্গ চা তৈরি করবেন যেভাবে

উপকরণ সংগ্রহ করা এবং এই চা তৈরি করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ—

উপকরণ: ৩-৪টি শুকনো তেজপাতা, ৫-৬টি আস্ত লবঙ্গ এবং ৪ কাপ পানি। স্বাদ বাড়াতে মধু বা লেবু ব্যবহার করতে পারেন।

প্রণালি: প্রথমে একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। তাতে তেজপাতা ও লবঙ্গ দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। ১৫ মিনিট মিশ্রণটি সেদ্ধ করার পর চুলা নিভিয়ে আরও ৫ মিনিট পাত্রটি ঢেকে রেখে দিন। এরপর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে তেজপাতা ও লবঙ্গ ফেলে দিয়ে পানি আলাদা করে নিন। স্বাদ অনুযায়ী মধু কিংবা লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।

সেবনবিধি ও সতর্কতা

ভালো ফল পেতে প্রতিদিন এক কাপ এই চা-পান করা ভালো; বিশেষ করে খাবারের পর এটি পান করলে হজমশক্তি বাড়াতে সবচেয়ে ভালো কাজ করে।

লেখক: খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

জমিয়তে উলামাকে যে ৪টি আসন ছেড়ে দিল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘুমের ঘোরে খাওয়া রহস্যময় ও জটিল এক স্বাস্থ্য সমস্যা

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২৩
ঘুমের ঘোরে খাওয়া রহস্যময় ও জটিল এক স্বাস্থ্য সমস্যা

ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার এমন এক সমস্যা, যেখানে আক্রান্ত ব্যক্তি ঘুমের মধ্যে অবচেতন অবস্থায় রান্নাঘরে চলে যায় এবং খাবার খেতে শুরু করে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, পরদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর তার এই ঘটনা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র স্মৃতি থাকে না। সাধারণত এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায় প্রতি রাতেই এমনটা করে। এক রাতে একাধিকবারও ঘুমের ঘোরে খাওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে।

খাদ্যাভ্যাসের বিচিত্র রূপ

এই অবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তির খাওয়ার ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণত ঘুমের ঘোরে খাওয়ার সময় তিন ধরনের ঘটনা ঘটে।

উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া: আক্রান্ত হওয়া মানুষ সাধারণত ক্যান্ডি, চিপস অথবা কেকের মতো প্রক্রিয়াজাত খাবারের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ে।

অস্বাভাবিক সংমিশ্রণের খাবার খাওয়া: অনেক সময় তারা অত্যন্ত অদ্ভুত ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের সংমিশ্রণ তৈরি করে। যেমন সিগারেটে মাখন মাখিয়ে খাওয়া কিংবা অন্য কোনো অখাদ্য বস্তু খাওয়া।

দ্রুততম সময়ে খাবার খাওয়া: বিছানা থেকে রান্নাঘর হয়ে পুনরায় বিছানায় ফিরে আসার পুরো প্রক্রিয়াটি মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে শেষ হতে পারে। ফলে তারা খুব দ্রুত খাবার খেয়ে ফেলে।

ঝুঁকি ও স্বাস্থ্যগত প্রভাব

এসআরইডির প্রভাব কেবল ঘুমের ব্যাঘাতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি দীর্ঘ মেয়াদে শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করতে পারে। এসব প্রভাবের মধ্যে আছে—

  • অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার ফলে স্থূলতা, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে।
  • না জেনে অ্যালার্জিযুক্ত খাবার খেয়ে ফেলায় মারাত্মক শারীরিক প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
  • অবচেতন অবস্থায় গরম খাবার নাড়াচাড়া করা বা ধারালো ছুরি ব্যবহারের সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।
  • অন্ধকারে চলাফেরা করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
  • নিয়মিত এমন ঘটনায় ব্যক্তি লজ্জিত এবং বিষণ্ন বোধ করতে পারে।
  • শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়ায় আত্মবিশ্বাসের অভাব এবং দুশ্চিন্তা দেখা দিতে পারে।

কেন এমন হয়

এসআরইডির নির্দিষ্ট কোনো একক কারণ না থাকলেও বেশ কিছু বিষয় লক্ষণীয়। যেমন—

ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: বিষণ্নতা বা ঘুমের সমস্যার জন্য ব্যবহৃত কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের প্রভাবে এটি হতে পারে।

অন্যান্য রোগ: রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম বা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো সমস্যা এর পেছনে থাকতে পারে।

জীবনযাত্রা: অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অনিয়মিত ঘুম এবং অ্যালকোহল অথবা মাদক ত্যাগের পরবর্তী সময়ে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

প্রতিকার ও ব্যবস্থাপনা

এই রহস্যময় সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সচেতনতা এবং সঠিক চিকিৎসা জরুরি। এর প্রতিকারে যা করা যেতে পারে—

  • যদি পরিবারে কেউ এই সমস্যায় আক্রান্ত থাকে, তবে রাতে রান্নাঘর তালাবদ্ধ রাখা, ধারালো সরঞ্জাম লুকিয়ে রাখা এবং বিপজ্জনক বস্তু সরিয়ে ফেলা জরুরি।
  • অন্তত দুই সপ্তাহ আক্রান্ত ব্যক্তির ঘুমের ধরন, মানসিক অবস্থা এবং পরবর্তী দিনের শক্তি বা ক্লান্তি নিয়ে একটি ডায়েরি লিখতে বলুন। এটি চিকিৎসকের রোগনির্ণয়ে সহায়তা করবে।
  • দিনের বেলা খাবার গ্রহণে অতিরিক্ত কড়াকড়ি বা ক্যালরি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করবেন না। কারণ, এটি মাঝরাতে খাবারের তীব্র আকাঙ্ক্ষা তৈরি করতে পারে।
  • পরিস্থিতি জটিল হলে চিকিৎসকের পরামর্শে পলিসমনোগ্রাফি বা স্লিপ স্টাডি করা যেতে পারে।

সূত্র: সিএনএন হেলথ, এএসএসএম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

জমিয়তে উলামাকে যে ৪টি আসন ছেড়ে দিল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত