ড. মইনুল ইসলাম

বর্তমান বাস্তবতায় দেশের উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে দুর্নীতি ও পুঁজি লুণ্ঠন। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছিল, কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তাণ্ডবে এরপর দুই বছর প্রবৃদ্ধির হার কমে গিয়েছিল।
অবশ্য ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার আবার ৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে পারলে এক-দুই বছরেই এই হার আবার ৮ শতাংশ অতিক্রম করবে ইনশা আল্লাহ। এর মানে, বাংলাদেশ তিন দশক ধরে একটি ‘উচ্চ প্রবৃদ্ধির দেশে’ পরিণত হয়েছে। কিন্তু দুর্নীতি এখনো দেশের উন্নয়নের পথে ‘এক নম্বর বাধা’ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।
এই পর্যায়ে স্মরণ করছি, ২০০৭-০৮ সালের সামরিক বাহিনী-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় লে. জেনারেল হাসান মশহুদ চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন যে প্রবল গতিশীলতা অর্জন করেছিল, সে জন্য স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দুর্নীতিবাজ, পুঁজি-লুটেরা রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে ত্রাহি ত্রাহি রব উঠেছিল। দুদকের পাশাপাশি মেজর জেনারেল মতিনের নেতৃত্বাধীন দুর্নীতিবিরোধী শক্তিশালী কমিটিও রাজনীতিবিদ ও রাঘববোয়াল ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রবল ত্রাসের সঞ্চার করেছিল।
ডিজিএফআই এর তদন্ত পরিচালনা করার কারণে রাঘববোয়ালেরা ভয়ে তটস্থ থাকত। দুই বছরে এই দুই ধরনের দুর্নীতিবাজদের যে প্রবল ঝাঁকি দেওয়া সম্ভব হয়েছিল, সেটা দুদকের পরবর্তী চেয়ারম্যান ড. গোলাম রহমান প্রকাশ্যে স্বীকার করেছিলেন। স্বাধীনতার পর ওই সময়টায় দেশে প্রথমবারের মতো কোনো সরকারকে দুর্নীতি দমনে সত্যিকার নিষ্ঠাবান মনে হয়েছিল আমার কাছে। আমার বেশ কয়েকটি লেখায় নির্দ্বিধায় তা স্বীকার করেছি।
দুঃখজনক হলো, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দুদককে অকার্যকর করার যাবতীয় প্রয়াস জোরদার করা হয়েছে। প্রথমেই চরম অসহযোগিতার মাধ্যমে লে. জেনারেল হাসান মশহুদ চৌধুরীকে দুদকের চেয়ারম্যান পদে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। ২০০৭-০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার কর্তৃক জারি করা দুর্নীতি দমন কমিশন অধ্যাদেশটি যথাসময়ে সংসদে অনুসমর্থনের জন্য উত্থাপন না করে তাকে তামাদি হওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এরপর বহুদিন অতিবাহিত করে দুর্নীতি দমন কমিশনের জন্য যে বিলটি সংসদে উত্থাপন করে আইন হিসেবে পাস করা হয়, সেটা যে ওই আগের অধ্যাদেশের তুলনায় অতিদুর্বল একটি আইন, সেটা বুঝতে কারও বাকি রইল না। বোঝা গেল, মহাজোটের শাসনামলে দুদককে ড. গোলাম রহমানের ভাষায় ‘নখ-দন্তহীন ব্যাঘ্রে’র ভূমিকায় ফিরিয়ে নেওয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রজীবন থেকেই ড. গোলাম রহমানের সঙ্গে আমার পরিচয়, অর্থনীতি বিভাগে তিনি আমার শিক্ষক ছিলেন। স্বল্পবাক ও সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে তাঁর ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে।
সিভিল সার্ভিসে চাকরিজীবনের একেবারে শেষ পর্যায়ে তিনি ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির দায়িত্বও পালন করেছেন। এমন একজন বিশ্বস্ত ব্যক্তি দুদকের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পাওয়া সত্ত্বেও তাঁর পুরো মেয়াদেই দুদককে ‘সার্কাসের পোষা বাঘ’ করেই রাখা হয়; বরং সরকারি প্রশাসনের উচ্চতর পদের আমলাদের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত শুরুর আগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হবে বলে বিধানও পাস করা হয়েছে শাসক জোটের পৃষ্ঠপোষকতাপ্রাপ্ত আমলাদের প্রবল লবির কারণে। বিভিন্ন সভা-সেমিনারে ড. গোলাম রহমানের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হলে দুদকের ক্ষমতাহীনতা এবং অকার্যকারিতা সম্পর্কে আমি অনুযোগ করেছি বেশ কয়েকবার। স্বল্পবাক এই ব্যক্তি নিজের ব্যর্থতায় বেদনাহত হলেও জনসমক্ষে কারও বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেননি, বেশির ভাগ সময় নীরবতা পালনই শ্রেয় মনে করেছেন তিনি।
অবশ্য কয়েকটি বিরল মুহূর্তে দুদকের ব্যর্থতার জন্য যে সরকারের ‘ইচ্ছাশক্তির অভাব’কে প্রধানত দায়ী করে বিভিন্ন বক্তব্য তিনি মিডিয়ার সামনে প্রকাশ করেছেন, তাতে তাঁর সততার পরিচয় পাওয়া গেছে। তবু বলব, একজন সৎ ও মেধাবী সিএসপি অফিসার হিসেবে তাঁর সারা জীবনের অর্জিত সুনাম অনেকখানি ম্লান হয়ে গেছে দুদকে তাঁর চেয়ারম্যান পদকে তিনি যথাযথভাবে ব্যবহার করতে না পারায়।
এরপর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা বদিউজ্জামানও ব্যর্থ হয়েছেন দুদককে কার্যকর করতে। তাঁরও অভিযোগ: বিদ্যমান আইনের কারণে দুদক নখ-দন্তহীন ব্যাঘ্রই থেকে যাবে। (ওই সময়ের দুদক কমিশনার এবং বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন অবশ্য সাধ্যমতো চেষ্টা করেছিলেন দুদকের কাজে গতি আনতে)। আমি মনে করি, বর্তমান আইনের পরিবর্তে ২০০৭-০৮ সালের দুদক অধ্যাদেশকে সংসদে বিল আনার মাধ্যমে নতুন দুদক আইনে পরিণত করা গেলে আবার দুদক শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে সমর্থ হবে, শুধু দুদকের চেয়ারম্যান কিংবা কমিশনার পরিবর্তন যথেষ্ট হবে না। দুদকের জনবল নিয়োগের ও আর্থিক স্বাধীনতাও অপরিহার্য মনে করি। ইকবাল মাহমুদের মতো অবসরপ্রাপ্ত দক্ষ আমলাকে দুদকের চেয়ারম্যান নিয়োগ করা সত্ত্বেও দুর্বল আইনের কারণে তা অকার্যকর রয়ে যাওয়ায় প্রমাণিত হয়েছে যে আইনকে শক্তিশালী না করলে দুদক ‘নখ-দন্তহীন ব্যাঘ্র’ই থেকে যাবে। মুনীর চৌধুরীর মতো সৎ ও সাহসী কর্মকর্তাকে দুদক থেকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ায় মনে হচ্ছে, সরকারও দুদককে শক্তিশালী করতে চায় না!
অনুযোগটি বলার মূল কারণ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সত্যিকার নিষ্ঠার সঙ্গে প্রতিরোধের সূচনা না করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের হারানো জনপ্রিয়তা পুনরুদ্ধার করতে পারবেন না। বর্তমানে সরকার যেভাবে জনগণের সমর্থন হারিয়ে ফেলেছে, তার পেছনে প্রধান কারণ দুর্নীতি। ২০১৩ সালে কয়েকটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন জোটের প্রার্থীরা ধরাশায়ী হওয়ায় খোদ মহাজোটেরই ২০১৪ সালের পরবর্তী সংসদ নির্বাচনে গোহারা হেরে যাওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিলুপ্তির ইস্যুকে কেন্দ্র করে যে চাণক্য-কৌশলের খেলা শুরু করা হয়েছিল, তাতে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান শেখ হাসিনা এবং তাঁর পরামর্শকদের কাছে ধরাশায়ী হওয়ায়ই ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বয়কটের বোকামি করেছিল বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট। ওই একতরফা নির্বাচনে আবারও পুনর্নির্বাচিত হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছিল মহাজোট। দ্বিতীয়বারের এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে শেখ হাসিনার সরকারের জন্য ক্ষমতাসীনদের হারানো জনপ্রিয়তা ফিরিয়ে আনাই ছিল যৌক্তিক। কিন্তু ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া হলো না; বরং ২০১৮ সালের নির্বাচনে আগের রাতে পুলিশ ও প্রশাসনের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে ব্যালট বাক্স ভরে ফেলার জালিয়াতির মাধ্যমে সংসদ নির্বাচনব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে।
গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামই এই জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের পথে ঠেলে দিয়েছিল, এটা কারও ভুলে যাওয়া ঠিক নয়। গণতন্ত্রের পথে রাষ্ট্রক্ষমতা পরিবর্তনের ব্যবস্থা বিঘ্নিত করার পরিণতিতেই ১৯৭৫ সালের আগস্টের নারকীয় হত্যাযজ্ঞের কুশীলবরা জাতির পিতাকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র হয়তো সফল করতে সমর্থ হয়েছিল, সেটাও অস্বীকার করা উচিত নয়। দুঃখজনকভাবে ২০২৪ সালের জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনও অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। জনগণের রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য জালিয়াতির নির্বাচন চালিয়ে যেতে হবে, এর চেয়ে অবমাননাকর আর কিছুই হতে পারে না। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের অনেক সুকৃতি জনগণের সুবিবেচনা পাবে, যদি দুর্নীতির বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সত্যিকারের কঠোর অভিযান পরিচালনা করেন। এর ফলে জনগণের মধ্যে ক্ষমতাসীনদের বিরোধিতার (এন্টি-ইনকাম্বেন্সি) যে মনোভাব গেড়ে বসেছে, তা ক্রমেই কমে আসবে বলে আমার দৃঢ়বিশ্বাস। এ-পথেই ২০২৪ সালে অনুষ্ঠেয় সংসদ নির্বাচনে বিজয় অর্জনের লক্ষ্যে প্রয়াস চালাতে হবে ১৪-দলীয় জোটকে, ‘ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং’য়ের পথে নয়।
দুদকের বর্তমান টিমকে সব ধরনের সাহায্য-সহায়তা দিয়ে কার্যকরভাবে দুর্নীতি দমনের অভিযানে সফল করে তুলতে পারলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে এখনো আওয়ামী লীগ তথা ১৪-দলীয় জোটের বিজয় অসম্ভব নয়। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের অর্থনীতি অত্যন্ত বিপর্যস্ত অবস্থায় যাওয়ার আলামতগুলো জোরালোভাবে ফুটে উঠছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতন কোনোমতেই থামানো যাচ্ছে না। ডলার-সংকট ক্রমেই অসহনীয় পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম ১২০ টাকা অতিক্রম করেছে। ব্যাংকের খেলাপি ঋণ সমস্যাকে লুকিয়ে ফেলার অপপ্রয়াস মুখ থুবড়ে পড়েছে, খেলাপি ঋণ বিপজ্জনকভাবে বাড়ছেই। ফরমাল চ্যানেলে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স প্রবাহে বিপজ্জনক ধস নেমেছে। এর পেছনে ক্রিয়াশীল হুন্ডি ব্যবসা আর হুন্ডি ডলারের প্রধান চাহিদা আসছে দুর্নীতিবাজ আমলা, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে। অতএব, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিকে বাত্ কা বাত্ বানিয়ে রাখলে এই সংকট থেকে নিষ্কৃতি মিলবে না।
ড. মইনুল ইসলাম, ইউজিসি অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

বর্তমান বাস্তবতায় দেশের উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে দুর্নীতি ও পুঁজি লুণ্ঠন। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছিল, কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তাণ্ডবে এরপর দুই বছর প্রবৃদ্ধির হার কমে গিয়েছিল।
অবশ্য ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার আবার ৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে পারলে এক-দুই বছরেই এই হার আবার ৮ শতাংশ অতিক্রম করবে ইনশা আল্লাহ। এর মানে, বাংলাদেশ তিন দশক ধরে একটি ‘উচ্চ প্রবৃদ্ধির দেশে’ পরিণত হয়েছে। কিন্তু দুর্নীতি এখনো দেশের উন্নয়নের পথে ‘এক নম্বর বাধা’ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।
এই পর্যায়ে স্মরণ করছি, ২০০৭-০৮ সালের সামরিক বাহিনী-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় লে. জেনারেল হাসান মশহুদ চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন যে প্রবল গতিশীলতা অর্জন করেছিল, সে জন্য স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দুর্নীতিবাজ, পুঁজি-লুটেরা রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে ত্রাহি ত্রাহি রব উঠেছিল। দুদকের পাশাপাশি মেজর জেনারেল মতিনের নেতৃত্বাধীন দুর্নীতিবিরোধী শক্তিশালী কমিটিও রাজনীতিবিদ ও রাঘববোয়াল ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রবল ত্রাসের সঞ্চার করেছিল।
ডিজিএফআই এর তদন্ত পরিচালনা করার কারণে রাঘববোয়ালেরা ভয়ে তটস্থ থাকত। দুই বছরে এই দুই ধরনের দুর্নীতিবাজদের যে প্রবল ঝাঁকি দেওয়া সম্ভব হয়েছিল, সেটা দুদকের পরবর্তী চেয়ারম্যান ড. গোলাম রহমান প্রকাশ্যে স্বীকার করেছিলেন। স্বাধীনতার পর ওই সময়টায় দেশে প্রথমবারের মতো কোনো সরকারকে দুর্নীতি দমনে সত্যিকার নিষ্ঠাবান মনে হয়েছিল আমার কাছে। আমার বেশ কয়েকটি লেখায় নির্দ্বিধায় তা স্বীকার করেছি।
দুঃখজনক হলো, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দুদককে অকার্যকর করার যাবতীয় প্রয়াস জোরদার করা হয়েছে। প্রথমেই চরম অসহযোগিতার মাধ্যমে লে. জেনারেল হাসান মশহুদ চৌধুরীকে দুদকের চেয়ারম্যান পদে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। ২০০৭-০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার কর্তৃক জারি করা দুর্নীতি দমন কমিশন অধ্যাদেশটি যথাসময়ে সংসদে অনুসমর্থনের জন্য উত্থাপন না করে তাকে তামাদি হওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এরপর বহুদিন অতিবাহিত করে দুর্নীতি দমন কমিশনের জন্য যে বিলটি সংসদে উত্থাপন করে আইন হিসেবে পাস করা হয়, সেটা যে ওই আগের অধ্যাদেশের তুলনায় অতিদুর্বল একটি আইন, সেটা বুঝতে কারও বাকি রইল না। বোঝা গেল, মহাজোটের শাসনামলে দুদককে ড. গোলাম রহমানের ভাষায় ‘নখ-দন্তহীন ব্যাঘ্রে’র ভূমিকায় ফিরিয়ে নেওয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রজীবন থেকেই ড. গোলাম রহমানের সঙ্গে আমার পরিচয়, অর্থনীতি বিভাগে তিনি আমার শিক্ষক ছিলেন। স্বল্পবাক ও সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে তাঁর ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে।
সিভিল সার্ভিসে চাকরিজীবনের একেবারে শেষ পর্যায়ে তিনি ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির দায়িত্বও পালন করেছেন। এমন একজন বিশ্বস্ত ব্যক্তি দুদকের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পাওয়া সত্ত্বেও তাঁর পুরো মেয়াদেই দুদককে ‘সার্কাসের পোষা বাঘ’ করেই রাখা হয়; বরং সরকারি প্রশাসনের উচ্চতর পদের আমলাদের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত শুরুর আগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হবে বলে বিধানও পাস করা হয়েছে শাসক জোটের পৃষ্ঠপোষকতাপ্রাপ্ত আমলাদের প্রবল লবির কারণে। বিভিন্ন সভা-সেমিনারে ড. গোলাম রহমানের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হলে দুদকের ক্ষমতাহীনতা এবং অকার্যকারিতা সম্পর্কে আমি অনুযোগ করেছি বেশ কয়েকবার। স্বল্পবাক এই ব্যক্তি নিজের ব্যর্থতায় বেদনাহত হলেও জনসমক্ষে কারও বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেননি, বেশির ভাগ সময় নীরবতা পালনই শ্রেয় মনে করেছেন তিনি।
অবশ্য কয়েকটি বিরল মুহূর্তে দুদকের ব্যর্থতার জন্য যে সরকারের ‘ইচ্ছাশক্তির অভাব’কে প্রধানত দায়ী করে বিভিন্ন বক্তব্য তিনি মিডিয়ার সামনে প্রকাশ করেছেন, তাতে তাঁর সততার পরিচয় পাওয়া গেছে। তবু বলব, একজন সৎ ও মেধাবী সিএসপি অফিসার হিসেবে তাঁর সারা জীবনের অর্জিত সুনাম অনেকখানি ম্লান হয়ে গেছে দুদকে তাঁর চেয়ারম্যান পদকে তিনি যথাযথভাবে ব্যবহার করতে না পারায়।
এরপর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা বদিউজ্জামানও ব্যর্থ হয়েছেন দুদককে কার্যকর করতে। তাঁরও অভিযোগ: বিদ্যমান আইনের কারণে দুদক নখ-দন্তহীন ব্যাঘ্রই থেকে যাবে। (ওই সময়ের দুদক কমিশনার এবং বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন অবশ্য সাধ্যমতো চেষ্টা করেছিলেন দুদকের কাজে গতি আনতে)। আমি মনে করি, বর্তমান আইনের পরিবর্তে ২০০৭-০৮ সালের দুদক অধ্যাদেশকে সংসদে বিল আনার মাধ্যমে নতুন দুদক আইনে পরিণত করা গেলে আবার দুদক শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে সমর্থ হবে, শুধু দুদকের চেয়ারম্যান কিংবা কমিশনার পরিবর্তন যথেষ্ট হবে না। দুদকের জনবল নিয়োগের ও আর্থিক স্বাধীনতাও অপরিহার্য মনে করি। ইকবাল মাহমুদের মতো অবসরপ্রাপ্ত দক্ষ আমলাকে দুদকের চেয়ারম্যান নিয়োগ করা সত্ত্বেও দুর্বল আইনের কারণে তা অকার্যকর রয়ে যাওয়ায় প্রমাণিত হয়েছে যে আইনকে শক্তিশালী না করলে দুদক ‘নখ-দন্তহীন ব্যাঘ্র’ই থেকে যাবে। মুনীর চৌধুরীর মতো সৎ ও সাহসী কর্মকর্তাকে দুদক থেকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ায় মনে হচ্ছে, সরকারও দুদককে শক্তিশালী করতে চায় না!
অনুযোগটি বলার মূল কারণ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সত্যিকার নিষ্ঠার সঙ্গে প্রতিরোধের সূচনা না করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের হারানো জনপ্রিয়তা পুনরুদ্ধার করতে পারবেন না। বর্তমানে সরকার যেভাবে জনগণের সমর্থন হারিয়ে ফেলেছে, তার পেছনে প্রধান কারণ দুর্নীতি। ২০১৩ সালে কয়েকটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন জোটের প্রার্থীরা ধরাশায়ী হওয়ায় খোদ মহাজোটেরই ২০১৪ সালের পরবর্তী সংসদ নির্বাচনে গোহারা হেরে যাওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিলুপ্তির ইস্যুকে কেন্দ্র করে যে চাণক্য-কৌশলের খেলা শুরু করা হয়েছিল, তাতে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান শেখ হাসিনা এবং তাঁর পরামর্শকদের কাছে ধরাশায়ী হওয়ায়ই ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বয়কটের বোকামি করেছিল বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট। ওই একতরফা নির্বাচনে আবারও পুনর্নির্বাচিত হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছিল মহাজোট। দ্বিতীয়বারের এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে শেখ হাসিনার সরকারের জন্য ক্ষমতাসীনদের হারানো জনপ্রিয়তা ফিরিয়ে আনাই ছিল যৌক্তিক। কিন্তু ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া হলো না; বরং ২০১৮ সালের নির্বাচনে আগের রাতে পুলিশ ও প্রশাসনের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে ব্যালট বাক্স ভরে ফেলার জালিয়াতির মাধ্যমে সংসদ নির্বাচনব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে।
গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামই এই জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের পথে ঠেলে দিয়েছিল, এটা কারও ভুলে যাওয়া ঠিক নয়। গণতন্ত্রের পথে রাষ্ট্রক্ষমতা পরিবর্তনের ব্যবস্থা বিঘ্নিত করার পরিণতিতেই ১৯৭৫ সালের আগস্টের নারকীয় হত্যাযজ্ঞের কুশীলবরা জাতির পিতাকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র হয়তো সফল করতে সমর্থ হয়েছিল, সেটাও অস্বীকার করা উচিত নয়। দুঃখজনকভাবে ২০২৪ সালের জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনও অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। জনগণের রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য জালিয়াতির নির্বাচন চালিয়ে যেতে হবে, এর চেয়ে অবমাননাকর আর কিছুই হতে পারে না। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের অনেক সুকৃতি জনগণের সুবিবেচনা পাবে, যদি দুর্নীতির বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সত্যিকারের কঠোর অভিযান পরিচালনা করেন। এর ফলে জনগণের মধ্যে ক্ষমতাসীনদের বিরোধিতার (এন্টি-ইনকাম্বেন্সি) যে মনোভাব গেড়ে বসেছে, তা ক্রমেই কমে আসবে বলে আমার দৃঢ়বিশ্বাস। এ-পথেই ২০২৪ সালে অনুষ্ঠেয় সংসদ নির্বাচনে বিজয় অর্জনের লক্ষ্যে প্রয়াস চালাতে হবে ১৪-দলীয় জোটকে, ‘ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং’য়ের পথে নয়।
দুদকের বর্তমান টিমকে সব ধরনের সাহায্য-সহায়তা দিয়ে কার্যকরভাবে দুর্নীতি দমনের অভিযানে সফল করে তুলতে পারলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে এখনো আওয়ামী লীগ তথা ১৪-দলীয় জোটের বিজয় অসম্ভব নয়। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের অর্থনীতি অত্যন্ত বিপর্যস্ত অবস্থায় যাওয়ার আলামতগুলো জোরালোভাবে ফুটে উঠছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতন কোনোমতেই থামানো যাচ্ছে না। ডলার-সংকট ক্রমেই অসহনীয় পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম ১২০ টাকা অতিক্রম করেছে। ব্যাংকের খেলাপি ঋণ সমস্যাকে লুকিয়ে ফেলার অপপ্রয়াস মুখ থুবড়ে পড়েছে, খেলাপি ঋণ বিপজ্জনকভাবে বাড়ছেই। ফরমাল চ্যানেলে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স প্রবাহে বিপজ্জনক ধস নেমেছে। এর পেছনে ক্রিয়াশীল হুন্ডি ব্যবসা আর হুন্ডি ডলারের প্রধান চাহিদা আসছে দুর্নীতিবাজ আমলা, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে। অতএব, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিকে বাত্ কা বাত্ বানিয়ে রাখলে এই সংকট থেকে নিষ্কৃতি মিলবে না।
ড. মইনুল ইসলাম, ইউজিসি অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

বর্তমান বাস্তবতায় দেশের উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে দুর্নীতি ও পুঁজি লুণ্ঠন। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছিল, কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তাণ্ডবে এরপর দুই বছর প্রবৃদ্ধির হার কমে গিয়েছিল।
০৭ অক্টোবর ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

বর্তমান বাস্তবতায় দেশের উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে দুর্নীতি ও পুঁজি লুণ্ঠন। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছিল, কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তাণ্ডবে এরপর দুই বছর প্রবৃদ্ধির হার কমে গিয়েছিল।
০৭ অক্টোবর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

বর্তমান বাস্তবতায় দেশের উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে দুর্নীতি ও পুঁজি লুণ্ঠন। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছিল, কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তাণ্ডবে এরপর দুই বছর প্রবৃদ্ধির হার কমে গিয়েছিল।
০৭ অক্টোবর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

বর্তমান বাস্তবতায় দেশের উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে দুর্নীতি ও পুঁজি লুণ্ঠন। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছিল, কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তাণ্ডবে এরপর দুই বছর প্রবৃদ্ধির হার কমে গিয়েছিল।
০৭ অক্টোবর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫