মোনায়েম সরকার

আমি মূলত রাজনীতির মানুষ। গত শতকের ষাটের দশকে ছাত্র আন্দোলনের একজন কর্মী হিসেবে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ি। পাকিস্তানি সামরিক একনায়ক আইয়ুব-ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার যে লড়াই-সংগ্রাম, তার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবেই ছিলাম। ছিলাম গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধেও। দেশে বাম-প্রগতিশীল ধারার যে রাজনীতি তা খুব কাছে থেকেই দেখেছি। স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনীতির উত্থান-পতনের আমি একজন প্রত্যক্ষদর্শী। একসময় যাঁরা ছিলেন দেশের রাজনীতির গতিপ্রকৃতির নিয়ন্ত্রক, তাঁদের প্রায় সবার সঙ্গেই আমার ব্যক্তিগত পরিচয় ছিল, একসঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাও আছে। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে রাজনীতির পথ নির্ধারণের প্রাথমিককালে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনকালে ভেতর-বাইরে কত ধরনের খেলা চলছিল, তার সবটা না হলেও অনেকটাই দেখা বা বোঝার সুযোগ আমার হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে কেমন রাজনীতি চলছিল, একদিকে দেশ পুনর্গঠনের কঠিন সংগ্রাম, বঙ্গবন্ধুর তিন বছর কিছু দিতে না-পারার আহ্বান, অন্যদিকে চাটার দলের উত্থান, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা, মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর বৈরিতা, ভারত-সোভিয়েতের মনোভাব—সবই আমি দেখেছি। দেখেছি বঙ্গবন্ধু-হত্যা-পরবর্তী রাজনীতির পালাবদলও।
সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান কীভাবে সমন্বয়ের রাজনীতির নামে পাকিস্তানমুখী হয়ে মুক্তিযুদ্ধের ধারা থেকে দেশকে সরিয়ে নিয়েছেন, পরাজিত রাজাকার-আলবদরদের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন, রাজনীতিকে কেনাবেচার পণ্যে পরিণত করেছেন—এর সবই আমার দেখা। এক চরম প্রতিকূল পরিবেশে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যে আওয়ামী লীগের হাল ধরলেন, তার পূর্বাপর ঘটনাধারার আমি একজন অংশীজন। আমি এখন সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় না হলেও রাজনীতিই আমার সারাক্ষণের ধ্যানজ্ঞান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমি একজন হিতার্থী। ব্যক্তিগতভাবে কিছু পাওয়ার প্রত্যাশা থেকে নয়, দেশ ও দেশের মানুষের ভালোর জন্যই আমি আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে, শেখ হাসিনার পক্ষে। অনেকেই এটা জানেন, শেখ হাসিনার সঙ্গে আমার ভাই-বোন সম্পর্ক। তাঁকে আমি ‘গুড সিস্টার’ বলে সম্বোধন করি, তিনি আমাকে ‘ব্রাদার’ বলেন। এখন আমাদের খুব দেখা হয়, কথা হয়, তা নয়। কিন্তু তার মানে এটা নয় যে আমরা একে অপরের খোঁজখবর রাখি না।
শেখ হাসিনার সঙ্গে আমার এই প্রীতিময় সম্পর্কের কথা যাঁরা জানেন, তাঁরা আমার সঙ্গে এখন যোগাযোগ করেন কিছুটা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সঙ্গে। প্রায় সবাই জানতে চান, দেশে কী ঘটছে? শেখ হাসিনা ঠিক পথে আছেন তো? তিনি কি পারবেন ঘরে-বাইরে এত শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে? এসব প্রশ্নের উত্তর সব আমার জানা, তা নয়। তবে কিছু কিছু ঘটনায় আমি পীড়িত বোধ করি, ব্যাখ্যা খুঁজে পাই না, আবার আস্থাও হারাই না। শেখ হাসিনা যখন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব নেন, তখনো কারও কারও মনে সংশয় ছিল, তিনি পারবেন তো? তিনি প্রমাণ করেছেন, তিনি পারেন। আওয়ামী লীগ আর কোনো দিন ক্ষমতায় আসতে পারবে না বলে যারা আস্ফালন করত, তারা এখন ক্ষমতা থেকে দূরে, আর আওয়ামী লীগ টানা চার মেয়াদে সরকার গঠন করে নতুন ইতিহাস তৈরি করেছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা সফল হবেন কি না, সে প্রশ্নও তো ছিল। কী প্রমাণ হয়েছে? শেখ হাসিনার চেয়ে দক্ষ ও সফল শাসক শুধু বাংলাদেশে কেন, পৃথিবীতেই খুব বেশি নেই। আমি শেখ হাসিনার সাফল্যে গর্ব অনুভব করি। কিন্তু তার মানে কি এই যে দেশে যা ঘটছে, তার সবকিছু ঠিক? ভুল হচ্ছে না, অন্যায় কিছু হচ্ছে না? আমি অন্ধ নই, স্তাবক নই। তাই আমি মনে করি, দেশ এখন পুরোপুরি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ধারায় চলছে না। বঙ্গবন্ধুর নাম ব্যবহার করে কোথাও কোথাও এমন কিছু ঘটছে, যা বঙ্গবন্ধুর মুখ উজ্জ্বল না করে উল্টোটা করছে। তাই এখনই সতর্ক হতে হবে। শেখ হাসিনাকেও সবাইকে প্রশ্রয় দেওয়ার মনোভাব দূর করে কারও কারও প্রতি কঠোর হতে হবে। কিছু কিছু ঘটনা ঘটছে, যেগুলো সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করছে। ব্যক্তিগতভাবে শেখ হাসিনার সততাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। যেহেতু সবাই মিলে এটাই বলা হয় যে শেখ হাসিনার নির্দেশ বা পরামর্শ ছাড়া কিছু হয় না, সেহেতু খারাপ কিছু হলে তার দায়ও স্বাভাবিকভাবেই শেখ হাসিনার ওপরও বর্তায়। ভালোটার জন্য প্রশংসিত হলে মন্দটার জন্য নিন্দিত কেন নয়?
সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ ও পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ সম্প্রতি যেভাবে গণমাধ্যমে নিয়মিত খবর হচ্ছেন, তার জন্য সরকার বিব্রত নয় বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যে মন্তব্য করেছেন, সেটাও যথার্থ নয় বলে আমি মনে করি। আজিজ আহমেদ ও বেনজীর আহমেদের ঘটনাগুলো থেকে এ প্রশ্ন সামনে আসছে, এমন আখের গোছানোয় পারদর্শী আরও কতজন কত দায়িত্বে আছে? শেখ হাসিনা নিজেই একবার বলেছিলেন, তাঁকে ছাড়া আর সবাইকে কেনা যায়। আবার ওবায়দুল কাদের একাধিকবার বলেছেন, কে কী করেন সব তথ্য শেখ হাসিনার কাছে আছে। সরকারপ্রধান হিসেবে সব তথ্য তাঁর কাছে থাকাটাই স্বাভাবিক। তাহলে সংগতভাবেই প্রশ্ন আসে, আজিজ-বেনজীরের তথ্যও তাঁর কাছে ছিল বা আছে। তাহলে এই দুই ব্যক্তি সেনা ও পুলিশের মতো দুটি বাহিনীর প্রধানের দায়িত্ব পেয়েছিলেন কীভাবে?
দুদকের মামলায় সম্প্রতি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের সম্পত্তি জব্দ করার নির্দেশনা দেন আদালত। আর সম্প্রতি সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি যত প্রভাবশালীই হোক—অপরাধ করতে পারে। তবে প্রশ্ন থেকে যায়, অপরাধের শাস্তি নিশ্চিতের ব্যাপারে সরকার সৎসাহস দেখিয়েছে কি না। শেখ হাসিনা সরকারের সেই সৎসাহস আছে। কেউ পার পাবে না। বিচার বিভাগ, দুদক স্বাধীন। সেখানে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে আমরা তাকে প্রটেক্ট করতে যাব না। সেখানে কোনো সাবেক আইজিপি বা কোনো সাবেক সেনাপ্রধান যে-ই হোক না কেন, সরকারের কাউকে প্রটেকশন দেওয়ার বিষয় নেই।’
দায়িত্ব পালনকালে অবাধে ‘অপরাধ’ করতে দিয়ে অবসরে যাওয়ার পর ‘প্রটেকশন’ না দেওয়ার কথা বললে সেটা কি মানুষ ভালোভাবে নেয়? নানা কারণে মানুষের মধ্যে এখন অনেক প্রশ্ন। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, সাধারণ মানুষ আন্দোলন-সংগ্রামে নেই। শেখ হাসিনার শাসনামলে দেশের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। যোগাযোগব্যবস্থা থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও কম নয়। মানুষের জীবনযাত্রায় এসেছে লক্ষণীয় পরিবর্তন। উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় প্রতিবছর যে মঙ্গা লেগে থাকত, তা এখন অতীতের বিষয়। কিন্তু জিনিসপত্রের দাম লাগামছাড়া, এখানেই মানুষের চরম অসন্তোষ। আয় বাড়ে না, ব্যয় বাড়ে। ফলে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বাড়ে। আবার কোটিপতির সংখ্যাও বাড়ে। এই বৈষম্যের বিষয়টি উপেক্ষা করার মতো নয়। সাধারণ মানুষ মনে করে, যে পাকিস্তানি বৈষম্যের নীতির বিরোধিতা করে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হলো, সেই বৈষম্যের নীতি কেন আওয়ামী লীগের নীতি হয়ে দাঁড়াল? আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়া মানেই সম্পদ বৃদ্ধি। রাজনীতি মানে লাভজনক ব্যবসা। একবার কোনোভাবে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়া মানেই আঙুল ফুলে কলাগাছ। দেশের রাজনীতি কেন এমন অসৎ হওয়ার প্রতিযোগিতার বিষয় হয়ে দাঁড়াল, তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার সময় এসেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্য উদ্ধৃত করে লেখাটি শেষ করতে চাই। তিনি সম্প্রতি বলেছেন, ‘সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক আর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি যাঁরা বিদেশে পলাতক রয়েছেন, তাঁদের ফিরিয়ে এনে সাজা কার্যকর করা হবে। দেশের মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক মুক্তি ও দেশের অগ্রগতি অব্যাহত রাখা—এটাই আমার লক্ষ্য।’
লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার আশঙ্কা যেন মানুষকে পেয়ে না বসে, সেদিকেও প্রধানমন্ত্রীকেই লক্ষ রাখতে হবে। কারণ, তাঁর কাছেই এখনো মানুষের সব প্রত্যাশা।
লেখক: রাজনীতিবিদ, লেখক; চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ

আমি মূলত রাজনীতির মানুষ। গত শতকের ষাটের দশকে ছাত্র আন্দোলনের একজন কর্মী হিসেবে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ি। পাকিস্তানি সামরিক একনায়ক আইয়ুব-ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার যে লড়াই-সংগ্রাম, তার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবেই ছিলাম। ছিলাম গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধেও। দেশে বাম-প্রগতিশীল ধারার যে রাজনীতি তা খুব কাছে থেকেই দেখেছি। স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনীতির উত্থান-পতনের আমি একজন প্রত্যক্ষদর্শী। একসময় যাঁরা ছিলেন দেশের রাজনীতির গতিপ্রকৃতির নিয়ন্ত্রক, তাঁদের প্রায় সবার সঙ্গেই আমার ব্যক্তিগত পরিচয় ছিল, একসঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাও আছে। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে রাজনীতির পথ নির্ধারণের প্রাথমিককালে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনকালে ভেতর-বাইরে কত ধরনের খেলা চলছিল, তার সবটা না হলেও অনেকটাই দেখা বা বোঝার সুযোগ আমার হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে কেমন রাজনীতি চলছিল, একদিকে দেশ পুনর্গঠনের কঠিন সংগ্রাম, বঙ্গবন্ধুর তিন বছর কিছু দিতে না-পারার আহ্বান, অন্যদিকে চাটার দলের উত্থান, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা, মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর বৈরিতা, ভারত-সোভিয়েতের মনোভাব—সবই আমি দেখেছি। দেখেছি বঙ্গবন্ধু-হত্যা-পরবর্তী রাজনীতির পালাবদলও।
সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান কীভাবে সমন্বয়ের রাজনীতির নামে পাকিস্তানমুখী হয়ে মুক্তিযুদ্ধের ধারা থেকে দেশকে সরিয়ে নিয়েছেন, পরাজিত রাজাকার-আলবদরদের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন, রাজনীতিকে কেনাবেচার পণ্যে পরিণত করেছেন—এর সবই আমার দেখা। এক চরম প্রতিকূল পরিবেশে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যে আওয়ামী লীগের হাল ধরলেন, তার পূর্বাপর ঘটনাধারার আমি একজন অংশীজন। আমি এখন সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় না হলেও রাজনীতিই আমার সারাক্ষণের ধ্যানজ্ঞান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমি একজন হিতার্থী। ব্যক্তিগতভাবে কিছু পাওয়ার প্রত্যাশা থেকে নয়, দেশ ও দেশের মানুষের ভালোর জন্যই আমি আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে, শেখ হাসিনার পক্ষে। অনেকেই এটা জানেন, শেখ হাসিনার সঙ্গে আমার ভাই-বোন সম্পর্ক। তাঁকে আমি ‘গুড সিস্টার’ বলে সম্বোধন করি, তিনি আমাকে ‘ব্রাদার’ বলেন। এখন আমাদের খুব দেখা হয়, কথা হয়, তা নয়। কিন্তু তার মানে এটা নয় যে আমরা একে অপরের খোঁজখবর রাখি না।
শেখ হাসিনার সঙ্গে আমার এই প্রীতিময় সম্পর্কের কথা যাঁরা জানেন, তাঁরা আমার সঙ্গে এখন যোগাযোগ করেন কিছুটা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সঙ্গে। প্রায় সবাই জানতে চান, দেশে কী ঘটছে? শেখ হাসিনা ঠিক পথে আছেন তো? তিনি কি পারবেন ঘরে-বাইরে এত শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে? এসব প্রশ্নের উত্তর সব আমার জানা, তা নয়। তবে কিছু কিছু ঘটনায় আমি পীড়িত বোধ করি, ব্যাখ্যা খুঁজে পাই না, আবার আস্থাও হারাই না। শেখ হাসিনা যখন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব নেন, তখনো কারও কারও মনে সংশয় ছিল, তিনি পারবেন তো? তিনি প্রমাণ করেছেন, তিনি পারেন। আওয়ামী লীগ আর কোনো দিন ক্ষমতায় আসতে পারবে না বলে যারা আস্ফালন করত, তারা এখন ক্ষমতা থেকে দূরে, আর আওয়ামী লীগ টানা চার মেয়াদে সরকার গঠন করে নতুন ইতিহাস তৈরি করেছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা সফল হবেন কি না, সে প্রশ্নও তো ছিল। কী প্রমাণ হয়েছে? শেখ হাসিনার চেয়ে দক্ষ ও সফল শাসক শুধু বাংলাদেশে কেন, পৃথিবীতেই খুব বেশি নেই। আমি শেখ হাসিনার সাফল্যে গর্ব অনুভব করি। কিন্তু তার মানে কি এই যে দেশে যা ঘটছে, তার সবকিছু ঠিক? ভুল হচ্ছে না, অন্যায় কিছু হচ্ছে না? আমি অন্ধ নই, স্তাবক নই। তাই আমি মনে করি, দেশ এখন পুরোপুরি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ধারায় চলছে না। বঙ্গবন্ধুর নাম ব্যবহার করে কোথাও কোথাও এমন কিছু ঘটছে, যা বঙ্গবন্ধুর মুখ উজ্জ্বল না করে উল্টোটা করছে। তাই এখনই সতর্ক হতে হবে। শেখ হাসিনাকেও সবাইকে প্রশ্রয় দেওয়ার মনোভাব দূর করে কারও কারও প্রতি কঠোর হতে হবে। কিছু কিছু ঘটনা ঘটছে, যেগুলো সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করছে। ব্যক্তিগতভাবে শেখ হাসিনার সততাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। যেহেতু সবাই মিলে এটাই বলা হয় যে শেখ হাসিনার নির্দেশ বা পরামর্শ ছাড়া কিছু হয় না, সেহেতু খারাপ কিছু হলে তার দায়ও স্বাভাবিকভাবেই শেখ হাসিনার ওপরও বর্তায়। ভালোটার জন্য প্রশংসিত হলে মন্দটার জন্য নিন্দিত কেন নয়?
সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ ও পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ সম্প্রতি যেভাবে গণমাধ্যমে নিয়মিত খবর হচ্ছেন, তার জন্য সরকার বিব্রত নয় বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যে মন্তব্য করেছেন, সেটাও যথার্থ নয় বলে আমি মনে করি। আজিজ আহমেদ ও বেনজীর আহমেদের ঘটনাগুলো থেকে এ প্রশ্ন সামনে আসছে, এমন আখের গোছানোয় পারদর্শী আরও কতজন কত দায়িত্বে আছে? শেখ হাসিনা নিজেই একবার বলেছিলেন, তাঁকে ছাড়া আর সবাইকে কেনা যায়। আবার ওবায়দুল কাদের একাধিকবার বলেছেন, কে কী করেন সব তথ্য শেখ হাসিনার কাছে আছে। সরকারপ্রধান হিসেবে সব তথ্য তাঁর কাছে থাকাটাই স্বাভাবিক। তাহলে সংগতভাবেই প্রশ্ন আসে, আজিজ-বেনজীরের তথ্যও তাঁর কাছে ছিল বা আছে। তাহলে এই দুই ব্যক্তি সেনা ও পুলিশের মতো দুটি বাহিনীর প্রধানের দায়িত্ব পেয়েছিলেন কীভাবে?
দুদকের মামলায় সম্প্রতি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের সম্পত্তি জব্দ করার নির্দেশনা দেন আদালত। আর সম্প্রতি সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি যত প্রভাবশালীই হোক—অপরাধ করতে পারে। তবে প্রশ্ন থেকে যায়, অপরাধের শাস্তি নিশ্চিতের ব্যাপারে সরকার সৎসাহস দেখিয়েছে কি না। শেখ হাসিনা সরকারের সেই সৎসাহস আছে। কেউ পার পাবে না। বিচার বিভাগ, দুদক স্বাধীন। সেখানে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে আমরা তাকে প্রটেক্ট করতে যাব না। সেখানে কোনো সাবেক আইজিপি বা কোনো সাবেক সেনাপ্রধান যে-ই হোক না কেন, সরকারের কাউকে প্রটেকশন দেওয়ার বিষয় নেই।’
দায়িত্ব পালনকালে অবাধে ‘অপরাধ’ করতে দিয়ে অবসরে যাওয়ার পর ‘প্রটেকশন’ না দেওয়ার কথা বললে সেটা কি মানুষ ভালোভাবে নেয়? নানা কারণে মানুষের মধ্যে এখন অনেক প্রশ্ন। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, সাধারণ মানুষ আন্দোলন-সংগ্রামে নেই। শেখ হাসিনার শাসনামলে দেশের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। যোগাযোগব্যবস্থা থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও কম নয়। মানুষের জীবনযাত্রায় এসেছে লক্ষণীয় পরিবর্তন। উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় প্রতিবছর যে মঙ্গা লেগে থাকত, তা এখন অতীতের বিষয়। কিন্তু জিনিসপত্রের দাম লাগামছাড়া, এখানেই মানুষের চরম অসন্তোষ। আয় বাড়ে না, ব্যয় বাড়ে। ফলে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বাড়ে। আবার কোটিপতির সংখ্যাও বাড়ে। এই বৈষম্যের বিষয়টি উপেক্ষা করার মতো নয়। সাধারণ মানুষ মনে করে, যে পাকিস্তানি বৈষম্যের নীতির বিরোধিতা করে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হলো, সেই বৈষম্যের নীতি কেন আওয়ামী লীগের নীতি হয়ে দাঁড়াল? আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়া মানেই সম্পদ বৃদ্ধি। রাজনীতি মানে লাভজনক ব্যবসা। একবার কোনোভাবে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়া মানেই আঙুল ফুলে কলাগাছ। দেশের রাজনীতি কেন এমন অসৎ হওয়ার প্রতিযোগিতার বিষয় হয়ে দাঁড়াল, তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার সময় এসেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্য উদ্ধৃত করে লেখাটি শেষ করতে চাই। তিনি সম্প্রতি বলেছেন, ‘সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক আর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি যাঁরা বিদেশে পলাতক রয়েছেন, তাঁদের ফিরিয়ে এনে সাজা কার্যকর করা হবে। দেশের মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক মুক্তি ও দেশের অগ্রগতি অব্যাহত রাখা—এটাই আমার লক্ষ্য।’
লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার আশঙ্কা যেন মানুষকে পেয়ে না বসে, সেদিকেও প্রধানমন্ত্রীকেই লক্ষ রাখতে হবে। কারণ, তাঁর কাছেই এখনো মানুষের সব প্রত্যাশা।
লেখক: রাজনীতিবিদ, লেখক; চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

আমি মূলত রাজনীতির মানুষ। গত শতকের ষাটের দশকে ছাত্র আন্দোলনের একজন কর্মী হিসেবে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ি। পাকিস্তানি সামরিক একনায়ক আইয়ুব-ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার যে লড়াই-সংগ্রাম, তার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবেই ছিলাম। ছিলাম গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধেও। দেশে বাম-প্রগতিশীল ধারার যে রাজনীতি তা খুব কাছে থেকেই
৩১ মে ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

আমি মূলত রাজনীতির মানুষ। গত শতকের ষাটের দশকে ছাত্র আন্দোলনের একজন কর্মী হিসেবে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ি। পাকিস্তানি সামরিক একনায়ক আইয়ুব-ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার যে লড়াই-সংগ্রাম, তার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবেই ছিলাম। ছিলাম গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধেও। দেশে বাম-প্রগতিশীল ধারার যে রাজনীতি তা খুব কাছে থেকেই
৩১ মে ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

আমি মূলত রাজনীতির মানুষ। গত শতকের ষাটের দশকে ছাত্র আন্দোলনের একজন কর্মী হিসেবে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ি। পাকিস্তানি সামরিক একনায়ক আইয়ুব-ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার যে লড়াই-সংগ্রাম, তার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবেই ছিলাম। ছিলাম গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধেও। দেশে বাম-প্রগতিশীল ধারার যে রাজনীতি তা খুব কাছে থেকেই
৩১ মে ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আমি মূলত রাজনীতির মানুষ। গত শতকের ষাটের দশকে ছাত্র আন্দোলনের একজন কর্মী হিসেবে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ি। পাকিস্তানি সামরিক একনায়ক আইয়ুব-ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার যে লড়াই-সংগ্রাম, তার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবেই ছিলাম। ছিলাম গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধেও। দেশে বাম-প্রগতিশীল ধারার যে রাজনীতি তা খুব কাছে থেকেই
৩১ মে ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫