Ajker Patrika

মতপার্থক্য থাকাটা স্বাভাবিক ব্যাপার

মতপার্থক্য থাকাটা স্বাভাবিক ব্যাপার

রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দপ্তর সম্পাদক এবং মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্বে আছেন। ১৯৮৯ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে তিনি ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিএনপির সরকার পতনের আন্দোলন, ভিসা নীতি এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটির অংশগ্রহণ বিষয়ে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার মাসুদ রানার সঙ্গে।

আজকের পত্রিকা: আন্দোলনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করা কি সম্ভব? 
রুহুল কবির রিজভী আহমেদ: সম্ভব। যৌক্তিক ও ন্যায়সংগত কোনো দাবি কখনো ব্যর্থ হয় না। পৃথিবীর ইতিহাসে এ রকম কোনো দৃষ্টান্ত নেই। ন্যায়সংগত দাবি সব সময়ই আদায় হয়। একটু সময় লাগতে পারে। তবে নিঃসন্দেহে এ দাবি আদায় হবে।

আজকের পত্রিকা: দাবি না মেনে সরকার যদি নির্বাচনে যায়, তখন বিএনপি কী করবে?
রুহুল কবির রিজভী: সরকার দাবি না মানা পর্যন্ত বিএনপি আন্দোলন অব্যাহত রাখবে এবং সমমনাদের সঙ্গে নিয়ে মিছিল-মিটিংয়ে ঢাকাসহ সারা দেশ উত্তাল করে তুলবে।

আজকের পত্রিকা: অতীতে বিএনপির আন্দোলনে সাফল্যের নজির আছে কি? 
রুহুল কবির রিজভী: আন্দোলন সব সময় একই ধারায় এগিয়ে যায় না। যেকোনো ধরনের আন্দোলনের উত্থান ও পতন থাকে। এভাবে আন্দোলন করতে করতেই একসময় স্বৈরশাসনের অবসান হয়। স্বৈরশাসক বাধ্য হন জনগণের দাবির কাছে মাথা নত করতে।

আজকের পত্রিকা: নির্বাচন প্রতিহত করার আন্দোলন কি বিএনপি করতে পারবে? ভিসা নীতি তো একধরনের বাধা? 
রুহুল কবির রিজভী: ভিসা নীতি বাধা হিসেবে দাঁড়াবে তাদের জন্য, যারা গণতন্ত্রকে অবরুদ্ধ এবং বন্দী করে রেখেছে। সেই বন্দী গণতন্ত্রকে উদ্ধার করার জন্য আমরা আন্দোলন করছি। এটা আমাদের জন্য বাধা হিসেবে দাঁড়ানোর কোনো কারণ দেখি না। বড় বিষয় হচ্ছে, গোটা জাতি আজ সব ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত। অবৈধ সরকার, বিনা ভোটে এবং নিশিরাতে ভোট করে ক্ষমতা জোর করে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। সুতরাং ভিসা নীতি হোক আর অন্য যেকোনো বিষয় হোক না কেন, সবচেয়ে বড় বিষয়টা হচ্ছে, মানুষের অধিকার এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। এটা কোনো দেশ হতে পারে কি যে দেশে অনেক বছর ধরে কারও মুখ থেকে প্রতিবাদের ভাষা উচ্চারিত হচ্ছে না? আবার নির্বিচারে গুলি করে, গুম করে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে। বিচারবহির্ভূত হত্যা করা হচ্ছে আন্দোলনকামী ছাত্র-যুবক ও সাধারণ মানুষকে। এটা তো কোনো স্বাভাবিক দেশ হতে পারে না। এটা কোনো আধুনিক, সভ্য দেশ হতে পারে না। যারা ক্ষমতায় মদমত্ত হয়ে ধরাকে সরা জ্ঞান করছে তাদের প্রতিহত, পরাজিত করাই হচ্ছে গণতন্ত্রকামী মানুষের মুখ্য উদ্দেশ্য।

আজকের পত্রিকা: অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিদেশিদের নাক গলানো বিএনপি কেন পছন্দ করছে?
রুহুল কবির রিজভী: পৃথিবীর দেশে দেশে স্বাধীনতার জন্য, গণতন্ত্রের জন্য যখন জনগণ আন্দোলন করে, তখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের সমর্থন দেয়, পক্ষে দাঁড়ায়। ইতিহাস বলে, যারাই যখনই স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছে, তখন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ তাদের প্রতি সংহতি জানিয়েছে এবং নৈতিক সমর্থন দিয়েছে। যেকোনো ন্যায়সংগত আন্দোলন, সংগ্রামের প্রতি সহানুভূতি জানানো এবং পাশে থাকা, এটা তো একটা আন্তর্জাতিক রীতিনীতির বিষয়।

আজ দেশের মানুষ গণতন্ত্রহারা, মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা নেই এবং তারা ভয়ংকর আতঙ্কের মধ্যে দিন যাপন করছে। দেশের মানুষ একটা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির মধ্যে বাস করছে, সেখান থেকে উত্তরণের জন্য তাদের সংগ্রাম করতে হচ্ছে। পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের মানুষ যদি আমাদের এই সংগ্রামের প্রতি সংহতি জানায়, তাতে তো অসুবিধার কিছু নেই। এটা তো স্বাভাবিক ব্যাপার।

আজকের পত্রিকা: জনগণের দৈনন্দিন সমস্যা নিয়ে বিএনপিকে তেমন কোনো আন্দোলন করতে দেখা যায় না বলে অভিযোগ আছে। আপনি কী বলবেন? 
রুহুল কবির রিজভী: এই অভিযোগ অবচেতন মানুষেরা করতে পারে। কোনো রাজনৈতিক সচেতন মানুষ এ কথা বলতে পারে না। কারণ সম্প্রতি আমাদের যে কর্মসূচিগুলো পালিত হলো, সম্পূর্ণ গণদাবির ওপর ভিত্তি করে। জনগণ যেসব কারণে দুঃখ-কষ্ট পাচ্ছে, সেই দাবিগুলো নিয়েই আমরা আন্দোলনে আছি। দাবিগুলো হচ্ছে—অসহনীয় লোডশেডিং, বিদ্যুৎ খাতে যে সীমাহীন দুর্নীতি হয়েছে এবং তা বৈধতা দেওয়ার জন্য ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছে, এসবের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলছে। সারা দেশে পুলিশের বাধার মুখে, আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সহিংস বাধার মুখেও আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত আছে। এসব তো হচ্ছে গণদাবি। এগুলো নিয়েই ইতিমধ্যে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছি।

আমাদের দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে বন্দী করে রাখা হয়েছে। তিনি তো জনগণের জনপ্রিয় নেত্রী। তাঁর মুক্তির দাবিতে আন্দোলন করাও তো জনগণের পক্ষেরই কাজ। এটা জনগণের বিরুদ্ধের কোনো কাজ না। জনগণের দাবির পক্ষে এবং জনগণের দুঃখ-কষ্ট নিবারণের জন্য সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের যে সংগ্রাম-দাবি, সেসব আমরা অব্যাহত রেখেছি। 

আজকের পত্রিকা: সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সঙ্গে জামায়াতের একটা সমঝোতার কথা শোনা যাচ্ছে। এ নিয়ে আপনার বক্তব্য কী?
রুহুল কবির রিজভী: এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। বিষয়টা আমরা আরও সামনের দিকে দেখব, শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। তারপর এ বিষয়ে আমরা কথা বলতে পারব।

আজকের পত্রিকা: বিএনপির সঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চের যৌথ কর্মসূচি পালনের কথা ছিল। কিন্তু মাঝপথে সেটার একটা টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। কী কারণ?
রুহুল কবির রিজভী: কে থমকে গেল আর কার অগ্রযাত্রা হলো, সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পথে যে রাজনৈতিক দলগুলো সমর্থন, সংহতি জানিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে যুক্ত হবে, তারা সবাই আমাদের বন্ধু হিসেবে বিবেচিত হবে।

আজকের পত্রিকা: আন্দোলনের পাশাপাশি বিএনপির নির্বাচনের প্রস্তুতি আছে কি?
রুহুল কবির রিজভী: এ কথা তো ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে অংশ না নিতে অনড়, অবিচল সিদ্ধান্তে আছি আমরা। শুধু জাতীয় সংসদ নির্বাচন নয়, কেউ যদি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেয়, তার বিরুদ্ধেও দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, দল থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় যেমন রাজশাহী, গাজীপুর, বরিশাল, সিলেট, যেখানে নির্বাচন হয়েছে এবং হচ্ছে, সবখানে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি।

আজকের পত্রিকা: ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রীর মুখ সামনে না দেখালে বিএনপি আন্দোলনে সাফল্য পাবে কি?
রুহুল কবির রিজভী: ভবিষ্যতে বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াই প্রধানমন্ত্রী হবেন। তিনি বর্তমানে অসুস্থ ও 
বন্দী। তিনি যখন মুক্ত হয়ে চিকিৎসা করাবেন, তখন তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। তিনিই হলেন আমাদের দলের প্রধান। নেতৃত্বের যে সিরিয়াল ও ধারাবাহিকতা তাঁর অবর্তমানে পরবর্তী নেতা হবেন দেশনায়ক তারেক রহমান। খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে তারেক রহমানই যে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সেটাও কারও অজানা নয়। এটাই তো আমাদের দলের জন্য স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। 

আজকের পত্রিকা: বিভিন্ন সময় আপনাদের জোটবদ্ধ আন্দোলনে দ্বন্দ্ব-বিরোধ দেখা যায়। এর কারণ কী?
রুহুল কবির রিজভী: দ্বন্দ্ব-বিরোধ কোন দলে নেই, আওয়ামী লীগের মধ্যেও কি নেই? রাশেদ খান মেনন বলেছেন, দিনের ভোট রাতের বেলা হয়েছে। মানুষ ভোট দিতেই যায়নি। তার বিপরীতে শেখ হাসিনা বলেছেন, পরিপূর্ণভাবে দেশে গণতন্ত্র চলছে। আসল ব্যাপার হলো, মতপার্থক্য থাকতেই পারে। আর মতপার্থক্য যে দলে বা জোটে থাকে না, সেটা তো বদ্ধ দল। তাহলে সেটা তো ভয়ংকর অটোক্রেটিক দল। আর বিএনপি তো একটা গণতান্ত্রিক দল। সেখানে অনেক মতপার্থক্য থাকাটা স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু প্রত্যেকেই আবার নিজের মত প্রকাশ করার পরেও দলের নীতি, আদর্শ ও শৃঙ্খলার প্রতি তারা অবিচল, সেটাকে তারা দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে থাকে।

আজকের পত্রিকা: বাংলাদেশের রাজনীতি ভবিষ্যতে কোন দিকে অগ্রসর হচ্ছে? 
রুহুল কবির রিজভী: বাংলাদেশের রাজনীতি সেদিকেই যাবে, যেদিকে গণতন্ত্রের বিজয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। মুক্ত বাতাস গ্রহণের জন্য অন্ধকার রাতের শেষে ভোরের দিকেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এ দেশের ত্রিশ লাখ মানুষ একাত্তর সালে জীবন দিয়েছেন এবং অসংখ্য মা-বোন তাঁদের সম্ভ্রম হারিয়েছেন, তাঁদের ঋণ পরিশোধের জন্য দেশের মানুষ সংগঠিত হয়ে আজকের এই গণবিরোধী, ধিক্কৃত, ফ্যাসিস্ট ও জুলুমবাজ সরকারের কাছ থেকে অধিকার ফিরিয়ে নিয়ে আনার জন্য সংগ্রাম করছে। এই ধারায়ই এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের রাজনীতি।

আজকের পত্রিকা: আপনাকে ধন্যবাদ। 
রুহুল কবির রিজভী: আজকের পত্রিকাকেও ধন্যবাদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

৫ ফুট উচ্চতার সুড়ঙ্গ খুঁড়ে বেলারুশ থেকে পোল্যান্ডে ১৮০ অভিবাসী, চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

বাসস, ঢাকা  
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।

আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।

এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।

পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্‌ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।

মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

৫ ফুট উচ্চতার সুড়ঙ্গ খুঁড়ে বেলারুশ থেকে পোল্যান্ডে ১৮০ অভিবাসী, চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

  • এবার ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
  • গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলে পল্লিগুলোতে ব্যস্ততা।
মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার রাতে। এর আগে দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন জেলেরা। অনেকে দেখে নেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না। কেউ আবার জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করেন। ছবিটি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের খুরেরমুখ এলাকার। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার রাতে। এর আগে দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন জেলেরা। অনেকে দেখে নেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না। কেউ আবার জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করেন। ছবিটি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের খুরেরমুখ এলাকার। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।

মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।

বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’

জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’

নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’

সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।

কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।

একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।

কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।

[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

৫ ফুট উচ্চতার সুড়ঙ্গ খুঁড়ে বেলারুশ থেকে পোল্যান্ডে ১৮০ অভিবাসী, চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

  • ক্রয়াদেশের চালান নিয়ে বাড়ছে দুশ্চিন্তা
  • সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা
  • আজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডেকেছে জরুরি বৈঠক
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ মে ২০২৫, ০২: ৪৪
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।

ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।

গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।

বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।

জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’

বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।

এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।

স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।

এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

৫ ফুট উচ্চতার সুড়ঙ্গ খুঁড়ে বেলারুশ থেকে পোল্যান্ডে ১৮০ অভিবাসী, চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।

গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।

সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?

১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।

ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

৫ ফুট উচ্চতার সুড়ঙ্গ খুঁড়ে বেলারুশ থেকে পোল্যান্ডে ১৮০ অভিবাসী, চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত