মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী

বিএনপি যদি বর্তমান সরকার কর্তৃক গৃহীত নির্বাচনসংক্রান্ত যেকোনো উদ্যোগের শুধু সমালোচনা না করে ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরিয়ে দিয়ে করণীয় বিষয় সম্পর্কে তাদের দলীয় মতামত তুলে ধরত, তাহলে তাদের মনোভাব কতটা যুক্তিসংগত, বাস্তবসম্মত এবং রাজনৈতিকভাবে অর্জনযোগ্য, সেটি বোঝা যেত। কিন্তু বিএনপি যেহেতু সরকারের গৃহীত সব বিষয়ই প্রত্যাখ্যান করছে, নিজেরাও কোনোভাবে অংশ নিতে সম্মত নয়, তখন রাজনীতি বিশ্লেষকদেরও বুঝতে সমস্যা হচ্ছে যে বিএনপি শেষ পর্যন্ত এর মাধ্যমে কী অর্জন করতে চায়? বাস্তব পরিস্থিতি বিচার-বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় কৌশল বা লক্ষ্য নির্ধারণ করে এগিয়ে চলাই যেকোনো রাজনৈতিক দলের কাজ হওয়ার কথা। বিরোধী দলের জন্যও এটা প্রযোজ্য। তাদের কৌশলের মারপ্যাঁচ যেমন নিতে হয়, দিতেও হয়।
সরকারকে বাগে আনতে বিরোধী দলকে কৌশলে গ্রহণযোগ্য পথে সব সুযোগ নিতে হয়। সরকার যদি বিরোধী দলকে উপেক্ষা করে সবকিছু একতরফা করতে চায়, তাহলে জনগণ সরকারকেই দায়ী করবে। তাতে বিরোধী দলেরই লাভ, সরকারের ক্ষতি। বাস্তবতাকে ঢালাওভাবে উপেক্ষা করে নিজস্ব অবস্থান অভ্রান্ত মনে করে যদি সরলরেখার ওপর দিয়ে পার হওয়ার চেষ্টা করা হয়, তাহলে বিরোধী দলের পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। তা ছাড়া, লড়াইটি যখন সরকারি দল ও প্রধান বিরোধী দলের মধ্যে সমানে সমানে হয়—তখন যুক্তি, বাস্তবতাবোধ, কৌশলের কিছু নিপুণ খেলা উভয় পক্ষেই থাকতে হয়। সেখানে যে পক্ষেরই ঘাটতি থাকবে তাদের জন্য বিপদ ছাড়া সুখকর কিছু না-ও হতে পারে।
রাজনীতির এই কৌশলের বিষয়টি উল্লেখ করেছি বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচি, বক্তব্য, সিদ্ধান্ত এবং কার্যক্রম দেখে। মনে হচ্ছে, বিএনপি আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারের গৃহীত সব উদ্যোগ একের পর এক যেভাবে প্রত্যাখ্যান করছে, তাতে দলটি সাধারণ মানুষের কাছে তাদের অবস্থান কতটা যৌক্তিকভাবে পরিষ্কার করতে পারছে, তা নিয়ে সচেতন মহলে সন্দেহ কমবেশি দানা বাঁধতে শুরু করেছে। বিষয়টি একটু ব্যাখ্যা করা যেতে পারে।
আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি দাবি করেছিল সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনী আইন প্রণয়ন করার। দাবিটি যৌক্তিক ছিল। সব রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজসহ বিদেশি সংস্থাগুলোও তা-ই চেয়েছিল। তবে বিএনপি দাবিটি রাষ্ট্রপতির কাছে উত্থাপনের সুযোগ গ্রহণ করেনি। বিএনপির যদি সে রকম হোমওয়ার্ক থাকত, তাহলে তেমন একটি আইনের রূপরেখা রাষ্ট্রপতির কাছে দিয়ে আসতে পারত। কিন্তু বিএনপি তার কোনোটিই করেনি। সম্ভবত বিএনপির ধারণা ছিল, সরকার সে রকম কোনো আইন এবার প্রণয়ন করবে না। আগের মতো সার্চ কমিটি গঠন করে বৈতরণি পার হওয়ার চেষ্টা করবে। তেমনটি ঘটলে সরকার পতনের আন্দোলনের পথে হাঁটার পরিকল্পনা ছিল বিএনপির। কিন্তু আওয়ামী লীগ সংবিধানের ১১৮(১) ধারায় আইনের বর্ণিত দুই স্তরবিশিষ্ট কাঠামোর খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের মাধ্যমে সংসদে প্রেরণ করে। বিএনপি তাতে হকচকিত হয়ে যায়। এখানেই বিএনপি পিছিয়ে পড়ে, সরকারি দল এগিয়ে যায়। খসড়া আইনটি সংসদে আলোচনা এবং বিরোধী দলের বেশ কিছু প্রস্তাব গ্রহণের মাধ্যমে গৃহীত হয়। কিন্তু বিএনপি আইনের অনুসন্ধান কমিটির অংশটিকে যেভাবে আগের দুই মেয়াদের গঠিত কমিটির মতো একই রকম লক্ষ্য নিয়ে গঠিত হয়েছিল, তার সঙ্গে এক করে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। অনুসন্ধান কমিটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বড় দায়িত্বপ্রাপ্ত বিষয়ে কার্য সম্পাদন করে অল্পসময়ের মধ্যে বিদায় নেওয়ার বিষয়। সেটি নিয়ে খুব বেশি হইচই করার অর্থ হয় না। যদি যোগ্য ব্যক্তিদের নামের তালিকা এই কমিটির কাছে দিয়ে ভালো একটি নির্বাচন কমিশন গঠনের ব্যবস্থা করা যায়, সেটি একধরনের বিষয় হতে পারে। কিন্তু যদি চাপ সৃষ্টির পরও কমিটি সিইসি ও ইসি গঠনে যোগ্য ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করতে ব্যর্থ হয়, তাহলেই কেবল কমিটির বিরুদ্ধে সমালোচনা জনগণের কাছে সমাদৃত হতে পারে। কিন্তু সার্চ কমিটিকেই নানাভাবে বিতর্কিত করা এবং নানা বিশেষণে বিভিন্ন সদস্যকে অভিযুক্ত করার কাজে বিএনপিকে বেশি মনোযোগী হতে দেখা গেছে। বিএনপি সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তারা এই আইন মানে না। সার্চ কমিটিও তাদের বিবেচনায় সরকারের আজ্ঞাবাহী এবং তাদের প্রস্তাবিত সিইসি ও ইসিরা হবেন সরকারদলীয় আজ্ঞাবাহী ব্যক্তি। বাস্তবে সিইসি এবং ইসি গঠিত হওয়ার পরই কেবল বোঝা যাবে সার্চ কমিটি কতটা দক্ষতা কিংবা অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। যদি অদক্ষতার পরিচয় দেয় তাহলে তাদের ভাগ্যে সমালোচনা শুধু বিএনপির দিক থেকেই নয়, সবদিক থেকেই হবে, সেটি নিশ্চিত করে বলা যায়।
এমনও হতে পারে, সার্চ কমিটি একটি ভালো সিইসি ও ইসির নামের তালিকা রাষ্ট্রপতিকে দিতে পারে এবং তেমন একটি নির্বাচন কমিশন গঠিত হতে পারে। কিন্তু বিএনপি সেই কমিশনকে যদি প্রত্যাখ্যান করে তাহলে কি সবাই তা মেনে নেবে?
বিএনপি এখন যেভাবে বলছে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে দুই নির্বাচন কমিশনই সরকারের ইচ্ছায় সবকিছু করেছে। একটু স্মরণ করলে দেখা যাবে, কাজী রকিবউদ্দীন কমিশন ২০১৩ সাল পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানে যথেষ্ট কার্যকর ভূমিকা রেখেছিল। ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত সবকটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীরাই জয়লাভ করেছিলেন, আরও অন্য বেশ কিছু নির্বাচনেরও অবস্থা প্রায় একই রকম ছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ইস্যুতে সরকারকে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করতে গিয়ে বিএনপি তালগোল পাকিয়ে ফেলে। জামায়াত-হেফাজতসহ নানা গোষ্ঠীকে নিয়ে বিএনপি রাজনীতিতে যে মেরুকরণটি ঘটাতে পেরেছিল, তা থেকে তাদের ধারণা হয়েছিল যে সরকারকে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করাই তাদের পক্ষে সম্ভব। সে কারণেই নির্বাচন বর্জন এবং প্রতিহত করার পরিকল্পনা নিয়ে যেভাবে ২০১৩ সালের অক্টোবর, নভেম্বর, ডিসেম্বর দেশব্যাপী অগ্নিসংযোগ, থানা আক্রমণ, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ওপর হামলা, রাস্তাঘাট অবরোধ, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা ইত্যাদি করেছিল। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ভন্ডুল করাই ছিল তাদের পরিকল্পনা। তাতে সফল হলে ৫ জানুয়ারির পর দেশে সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির সুযোগ নিয়ে তৃতীয় কোনো শক্তি ক্ষমতা গ্রহণ করত কিংবা দেশে একটি নৈরাজ্য অবস্থা তৈরি হতো বলে জামায়াত-বিএনপির রাজনৈতিক হিসাব ছিল। তাহলে সরকার বৈধতার সংকট থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হতো। তাতে অন্তত শেখ হাসিনাকে একটা ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়া যেত!
অথচ নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা বিএনপিকে ছাড় দিতে যথেষ্ট চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু জামায়াত-বিএনপি এককাট্টা ছিল নির্বাচন প্রতিহত করতে।
পরিস্থিতির কারণেই শেখ হাসিনা বাধ্য হয়েছিলেন যেনতেনভাবে নির্বাচনটি পার করতে। তাতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার লক্ষ্যে সরকার উৎখাতের গোপন রাজনৈতিক কৌশলও ব্যর্থ হয়। নির্বাচন কমিশনের জন্য সে ক্ষেত্রে ছিল উভয়সংকট। বিরোধী দলের এক রকম কৌশল, সরকারের ভিন্ন রকম।
এখন বিএনপি যখন রকিবউদ্দীন এবং হুদা কমিশনকে সম্পূর্ণরূপে দায়ী করে তখন অনেক কিছুই তাতে স্বচ্ছতার প্রকাশ পায় না। কিন্তু ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে যদি বিরোধী দল অংশগ্রহণ করত, তাহলে রাজনীতির গতিপথ স্বাভাবিক পথেই হাঁটার সুযোগ পেত। এখন তো বিএনপি সেই সময়ের বাস্তবতাকেই অন্যভাবে ঘুরিয়ে দিচ্ছে, অনেকে তা গভীরভাবে তলিয়েও দেখছে না।
দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার বিরোধ, দ্বন্দ্ব ও সংঘাত কখন কোন লক্ষ্য-উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়, সেটি বিবেচনায় নেওয়ার বিষয়টি রাজনীতিসচেতন মহলের ভুলে গেলে চলবে না। ২০০৬ সালের বাস্তবতা যে সংকটের জন্ম দিয়েছিল, তা থেকে এক-এগারো সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি-জামায়াত তখন কেমন নির্বাচন কমিশন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করেছিল, সেটি অবশ্যই ভুলে যাওয়ার বিষয় নয়। সুতরাং এখন বিএনপি নির্দলীয় সরকার ফিরিয়ে আনার যে দাবি করছে, সেটি কতটা বাস্তবসম্মত কিংবা আদায়যোগ্য, তা ভেবে দেখার বিষয়। আওয়ামী লীগ যেমন একটি বড় দল, একই সঙ্গে ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকার কারণে আওয়ামী লীগের একটি সংহত অবস্থান যেমন তৈরি হয়েছে, তেমনি টানা ক্ষমতায় থাকায় কিছু নেতিবাচক প্রভাবও দল এবং সরকারের ওপর পড়েছে। অন্যদিকে বিএনপি বড় দল হওয়া সত্ত্বেও জামায়াত এবং সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সমর্থন থাকার কারণে তাদের অবস্থানও সুবিধাজনক নেই। বিএনপি-জামায়তের পক্ষে ২০০৬ সালে মহাজোটের মতো কিছু গঠন করা সম্ভব কি না, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। এই বাস্তবতায় বিএনপি আগের মতোই নির্বাচন বর্জন ও প্রতিহতের চিন্তা নিয়ে এগিয়ে গেলে কতটা সফল হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়। সে ক্ষেত্রে বিএনপির ভবিষ্যৎ পরিণতি কী হতে পারে, তা-ও ভেবে দেখার বিষয়। কেননা, আগের আর বর্তমান বিএনপির নেতৃত্বও এক অবস্থানে নেই।
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী: অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট

বিএনপি যদি বর্তমান সরকার কর্তৃক গৃহীত নির্বাচনসংক্রান্ত যেকোনো উদ্যোগের শুধু সমালোচনা না করে ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরিয়ে দিয়ে করণীয় বিষয় সম্পর্কে তাদের দলীয় মতামত তুলে ধরত, তাহলে তাদের মনোভাব কতটা যুক্তিসংগত, বাস্তবসম্মত এবং রাজনৈতিকভাবে অর্জনযোগ্য, সেটি বোঝা যেত। কিন্তু বিএনপি যেহেতু সরকারের গৃহীত সব বিষয়ই প্রত্যাখ্যান করছে, নিজেরাও কোনোভাবে অংশ নিতে সম্মত নয়, তখন রাজনীতি বিশ্লেষকদেরও বুঝতে সমস্যা হচ্ছে যে বিএনপি শেষ পর্যন্ত এর মাধ্যমে কী অর্জন করতে চায়? বাস্তব পরিস্থিতি বিচার-বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় কৌশল বা লক্ষ্য নির্ধারণ করে এগিয়ে চলাই যেকোনো রাজনৈতিক দলের কাজ হওয়ার কথা। বিরোধী দলের জন্যও এটা প্রযোজ্য। তাদের কৌশলের মারপ্যাঁচ যেমন নিতে হয়, দিতেও হয়।
সরকারকে বাগে আনতে বিরোধী দলকে কৌশলে গ্রহণযোগ্য পথে সব সুযোগ নিতে হয়। সরকার যদি বিরোধী দলকে উপেক্ষা করে সবকিছু একতরফা করতে চায়, তাহলে জনগণ সরকারকেই দায়ী করবে। তাতে বিরোধী দলেরই লাভ, সরকারের ক্ষতি। বাস্তবতাকে ঢালাওভাবে উপেক্ষা করে নিজস্ব অবস্থান অভ্রান্ত মনে করে যদি সরলরেখার ওপর দিয়ে পার হওয়ার চেষ্টা করা হয়, তাহলে বিরোধী দলের পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। তা ছাড়া, লড়াইটি যখন সরকারি দল ও প্রধান বিরোধী দলের মধ্যে সমানে সমানে হয়—তখন যুক্তি, বাস্তবতাবোধ, কৌশলের কিছু নিপুণ খেলা উভয় পক্ষেই থাকতে হয়। সেখানে যে পক্ষেরই ঘাটতি থাকবে তাদের জন্য বিপদ ছাড়া সুখকর কিছু না-ও হতে পারে।
রাজনীতির এই কৌশলের বিষয়টি উল্লেখ করেছি বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচি, বক্তব্য, সিদ্ধান্ত এবং কার্যক্রম দেখে। মনে হচ্ছে, বিএনপি আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারের গৃহীত সব উদ্যোগ একের পর এক যেভাবে প্রত্যাখ্যান করছে, তাতে দলটি সাধারণ মানুষের কাছে তাদের অবস্থান কতটা যৌক্তিকভাবে পরিষ্কার করতে পারছে, তা নিয়ে সচেতন মহলে সন্দেহ কমবেশি দানা বাঁধতে শুরু করেছে। বিষয়টি একটু ব্যাখ্যা করা যেতে পারে।
আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি দাবি করেছিল সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনী আইন প্রণয়ন করার। দাবিটি যৌক্তিক ছিল। সব রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজসহ বিদেশি সংস্থাগুলোও তা-ই চেয়েছিল। তবে বিএনপি দাবিটি রাষ্ট্রপতির কাছে উত্থাপনের সুযোগ গ্রহণ করেনি। বিএনপির যদি সে রকম হোমওয়ার্ক থাকত, তাহলে তেমন একটি আইনের রূপরেখা রাষ্ট্রপতির কাছে দিয়ে আসতে পারত। কিন্তু বিএনপি তার কোনোটিই করেনি। সম্ভবত বিএনপির ধারণা ছিল, সরকার সে রকম কোনো আইন এবার প্রণয়ন করবে না। আগের মতো সার্চ কমিটি গঠন করে বৈতরণি পার হওয়ার চেষ্টা করবে। তেমনটি ঘটলে সরকার পতনের আন্দোলনের পথে হাঁটার পরিকল্পনা ছিল বিএনপির। কিন্তু আওয়ামী লীগ সংবিধানের ১১৮(১) ধারায় আইনের বর্ণিত দুই স্তরবিশিষ্ট কাঠামোর খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের মাধ্যমে সংসদে প্রেরণ করে। বিএনপি তাতে হকচকিত হয়ে যায়। এখানেই বিএনপি পিছিয়ে পড়ে, সরকারি দল এগিয়ে যায়। খসড়া আইনটি সংসদে আলোচনা এবং বিরোধী দলের বেশ কিছু প্রস্তাব গ্রহণের মাধ্যমে গৃহীত হয়। কিন্তু বিএনপি আইনের অনুসন্ধান কমিটির অংশটিকে যেভাবে আগের দুই মেয়াদের গঠিত কমিটির মতো একই রকম লক্ষ্য নিয়ে গঠিত হয়েছিল, তার সঙ্গে এক করে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। অনুসন্ধান কমিটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বড় দায়িত্বপ্রাপ্ত বিষয়ে কার্য সম্পাদন করে অল্পসময়ের মধ্যে বিদায় নেওয়ার বিষয়। সেটি নিয়ে খুব বেশি হইচই করার অর্থ হয় না। যদি যোগ্য ব্যক্তিদের নামের তালিকা এই কমিটির কাছে দিয়ে ভালো একটি নির্বাচন কমিশন গঠনের ব্যবস্থা করা যায়, সেটি একধরনের বিষয় হতে পারে। কিন্তু যদি চাপ সৃষ্টির পরও কমিটি সিইসি ও ইসি গঠনে যোগ্য ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করতে ব্যর্থ হয়, তাহলেই কেবল কমিটির বিরুদ্ধে সমালোচনা জনগণের কাছে সমাদৃত হতে পারে। কিন্তু সার্চ কমিটিকেই নানাভাবে বিতর্কিত করা এবং নানা বিশেষণে বিভিন্ন সদস্যকে অভিযুক্ত করার কাজে বিএনপিকে বেশি মনোযোগী হতে দেখা গেছে। বিএনপি সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তারা এই আইন মানে না। সার্চ কমিটিও তাদের বিবেচনায় সরকারের আজ্ঞাবাহী এবং তাদের প্রস্তাবিত সিইসি ও ইসিরা হবেন সরকারদলীয় আজ্ঞাবাহী ব্যক্তি। বাস্তবে সিইসি এবং ইসি গঠিত হওয়ার পরই কেবল বোঝা যাবে সার্চ কমিটি কতটা দক্ষতা কিংবা অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। যদি অদক্ষতার পরিচয় দেয় তাহলে তাদের ভাগ্যে সমালোচনা শুধু বিএনপির দিক থেকেই নয়, সবদিক থেকেই হবে, সেটি নিশ্চিত করে বলা যায়।
এমনও হতে পারে, সার্চ কমিটি একটি ভালো সিইসি ও ইসির নামের তালিকা রাষ্ট্রপতিকে দিতে পারে এবং তেমন একটি নির্বাচন কমিশন গঠিত হতে পারে। কিন্তু বিএনপি সেই কমিশনকে যদি প্রত্যাখ্যান করে তাহলে কি সবাই তা মেনে নেবে?
বিএনপি এখন যেভাবে বলছে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে দুই নির্বাচন কমিশনই সরকারের ইচ্ছায় সবকিছু করেছে। একটু স্মরণ করলে দেখা যাবে, কাজী রকিবউদ্দীন কমিশন ২০১৩ সাল পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানে যথেষ্ট কার্যকর ভূমিকা রেখেছিল। ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত সবকটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীরাই জয়লাভ করেছিলেন, আরও অন্য বেশ কিছু নির্বাচনেরও অবস্থা প্রায় একই রকম ছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ইস্যুতে সরকারকে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করতে গিয়ে বিএনপি তালগোল পাকিয়ে ফেলে। জামায়াত-হেফাজতসহ নানা গোষ্ঠীকে নিয়ে বিএনপি রাজনীতিতে যে মেরুকরণটি ঘটাতে পেরেছিল, তা থেকে তাদের ধারণা হয়েছিল যে সরকারকে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করাই তাদের পক্ষে সম্ভব। সে কারণেই নির্বাচন বর্জন এবং প্রতিহত করার পরিকল্পনা নিয়ে যেভাবে ২০১৩ সালের অক্টোবর, নভেম্বর, ডিসেম্বর দেশব্যাপী অগ্নিসংযোগ, থানা আক্রমণ, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ওপর হামলা, রাস্তাঘাট অবরোধ, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা ইত্যাদি করেছিল। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ভন্ডুল করাই ছিল তাদের পরিকল্পনা। তাতে সফল হলে ৫ জানুয়ারির পর দেশে সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির সুযোগ নিয়ে তৃতীয় কোনো শক্তি ক্ষমতা গ্রহণ করত কিংবা দেশে একটি নৈরাজ্য অবস্থা তৈরি হতো বলে জামায়াত-বিএনপির রাজনৈতিক হিসাব ছিল। তাহলে সরকার বৈধতার সংকট থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হতো। তাতে অন্তত শেখ হাসিনাকে একটা ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়া যেত!
অথচ নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা বিএনপিকে ছাড় দিতে যথেষ্ট চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু জামায়াত-বিএনপি এককাট্টা ছিল নির্বাচন প্রতিহত করতে।
পরিস্থিতির কারণেই শেখ হাসিনা বাধ্য হয়েছিলেন যেনতেনভাবে নির্বাচনটি পার করতে। তাতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার লক্ষ্যে সরকার উৎখাতের গোপন রাজনৈতিক কৌশলও ব্যর্থ হয়। নির্বাচন কমিশনের জন্য সে ক্ষেত্রে ছিল উভয়সংকট। বিরোধী দলের এক রকম কৌশল, সরকারের ভিন্ন রকম।
এখন বিএনপি যখন রকিবউদ্দীন এবং হুদা কমিশনকে সম্পূর্ণরূপে দায়ী করে তখন অনেক কিছুই তাতে স্বচ্ছতার প্রকাশ পায় না। কিন্তু ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে যদি বিরোধী দল অংশগ্রহণ করত, তাহলে রাজনীতির গতিপথ স্বাভাবিক পথেই হাঁটার সুযোগ পেত। এখন তো বিএনপি সেই সময়ের বাস্তবতাকেই অন্যভাবে ঘুরিয়ে দিচ্ছে, অনেকে তা গভীরভাবে তলিয়েও দেখছে না।
দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার বিরোধ, দ্বন্দ্ব ও সংঘাত কখন কোন লক্ষ্য-উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়, সেটি বিবেচনায় নেওয়ার বিষয়টি রাজনীতিসচেতন মহলের ভুলে গেলে চলবে না। ২০০৬ সালের বাস্তবতা যে সংকটের জন্ম দিয়েছিল, তা থেকে এক-এগারো সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি-জামায়াত তখন কেমন নির্বাচন কমিশন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করেছিল, সেটি অবশ্যই ভুলে যাওয়ার বিষয় নয়। সুতরাং এখন বিএনপি নির্দলীয় সরকার ফিরিয়ে আনার যে দাবি করছে, সেটি কতটা বাস্তবসম্মত কিংবা আদায়যোগ্য, তা ভেবে দেখার বিষয়। আওয়ামী লীগ যেমন একটি বড় দল, একই সঙ্গে ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকার কারণে আওয়ামী লীগের একটি সংহত অবস্থান যেমন তৈরি হয়েছে, তেমনি টানা ক্ষমতায় থাকায় কিছু নেতিবাচক প্রভাবও দল এবং সরকারের ওপর পড়েছে। অন্যদিকে বিএনপি বড় দল হওয়া সত্ত্বেও জামায়াত এবং সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সমর্থন থাকার কারণে তাদের অবস্থানও সুবিধাজনক নেই। বিএনপি-জামায়তের পক্ষে ২০০৬ সালে মহাজোটের মতো কিছু গঠন করা সম্ভব কি না, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। এই বাস্তবতায় বিএনপি আগের মতোই নির্বাচন বর্জন ও প্রতিহতের চিন্তা নিয়ে এগিয়ে গেলে কতটা সফল হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়। সে ক্ষেত্রে বিএনপির ভবিষ্যৎ পরিণতি কী হতে পারে, তা-ও ভেবে দেখার বিষয়। কেননা, আগের আর বর্তমান বিএনপির নেতৃত্বও এক অবস্থানে নেই।
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী: অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

বিএনপি যদি বর্তমান সরকার কর্তৃক গৃহীত নির্বাচনসংক্রান্ত যেকোনো উদ্যোগের শুধু সমালোচনা না করে ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরিয়ে দিয়ে করণীয় বিষয় সম্পর্কে তাদের দলীয় মতামত তুলে ধরত, তাহলে তাদের মনোভাব কতটা যুক্তিসংগত, বাস্তবসম্মত এবং রাজনৈতিকভাবে অর্জনযোগ্য, সেটি বোঝা যেত।
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

বিএনপি যদি বর্তমান সরকার কর্তৃক গৃহীত নির্বাচনসংক্রান্ত যেকোনো উদ্যোগের শুধু সমালোচনা না করে ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরিয়ে দিয়ে করণীয় বিষয় সম্পর্কে তাদের দলীয় মতামত তুলে ধরত, তাহলে তাদের মনোভাব কতটা যুক্তিসংগত, বাস্তবসম্মত এবং রাজনৈতিকভাবে অর্জনযোগ্য, সেটি বোঝা যেত।
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

বিএনপি যদি বর্তমান সরকার কর্তৃক গৃহীত নির্বাচনসংক্রান্ত যেকোনো উদ্যোগের শুধু সমালোচনা না করে ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরিয়ে দিয়ে করণীয় বিষয় সম্পর্কে তাদের দলীয় মতামত তুলে ধরত, তাহলে তাদের মনোভাব কতটা যুক্তিসংগত, বাস্তবসম্মত এবং রাজনৈতিকভাবে অর্জনযোগ্য, সেটি বোঝা যেত।
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

বিএনপি যদি বর্তমান সরকার কর্তৃক গৃহীত নির্বাচনসংক্রান্ত যেকোনো উদ্যোগের শুধু সমালোচনা না করে ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরিয়ে দিয়ে করণীয় বিষয় সম্পর্কে তাদের দলীয় মতামত তুলে ধরত, তাহলে তাদের মনোভাব কতটা যুক্তিসংগত, বাস্তবসম্মত এবং রাজনৈতিকভাবে অর্জনযোগ্য, সেটি বোঝা যেত।
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫