Ajker Patrika

আটার দাম পাইকারিতে কমলেও খুচরা বাজারে বেশি

আয়নাল হোসেন, ঢাকা
আপডেট : ১৬ জুন ২০২২, ১০: ৫৬
আটার দাম পাইকারিতে কমলেও খুচরা বাজারে বেশি

আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার খবর পাওয়ামাত্রই বেশি দামে পণ্য বিক্রি শুরু করেন আমদানিকারক, পরিবেশক, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার ছোট মুদিদোকানিরাও। কিন্তু বিশ্ববাজারে দাম কমার পরও বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তাঁরা বাড়তি দাম আদায় করেন। এ ক্ষেত্রে বেশির ভাগ ব্যবসায়ী যে অজুহাত দেখান; তা হচ্ছে আগে বেশি দামে কেনা পণ্য রয়ে গেছে। এমন অজুহাত দেখিয়েই বাড়তি দামে আটা বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা।

অথচ গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মিল, পরিবেশক ও পাইকারি পর্যায়ে আটার দাম কেজিতে সর্বোচ্চ ৮ টাকা কমেছে। কিন্তু খুচরা বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। খোলা আটার দাম কয়েকটি স্থানে কমলেও প্যাকেটজাত আটা এখনো বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। কারওয়ান বাজার, নয়াবাজার, নিউমার্কেটসহ রাজধানীর একাধিক বড় বাজারে খোঁজ নিয়ে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

দোকানিরা বলছেন, খোলা আটার দাম গত তিন-চার দিনে কেজিতে ৩ টাকার মতো কমেছে। কিন্তু কম দামের আটা বাজারে সরবরাহ না করায় অনেকেই আগের দামে বিক্রি করছেন। আর প্যাকেটজাত আটার দাম অপরিবর্তিত থাকায় এখনো আগের মতো বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে।

রামপুরা এলাকার মেসার্স সূচনা এন্টারপ্রাইজের মালিক মোজাম্মেল হোসেন জানান, পাইকারি পর্যায়ে আটার দাম কমার বিষয়টি তিনি শুনেছেন। কিন্তু কম দামের আটা কোম্পানিগুলো তাঁদের সরবরাহ না করায় তাঁরা বাড়তি দামেই বিক্রি করছেন। তাঁর দোকানে প্রতি দুই কেজি আটার প্যাকেট ১০০-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী ভুট্টো বলেন, মাসখানেক আগেও প্রতি ৫০ কেজি ওজনের এক বস্তা আটার দাম ছিল ২ হাজার ২০০ টাকা। গতকাল বুধবার তা বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৭৫৪ টাকায়। আর একই পরিমাণ ময়দার বস্তার দাম ছিল ৩ হাজার ২৫০ টাকা। বর্তমানে দাম কমে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬৫০ টাকা। যাঁরা বেশি মুনাফার লোভে আটা-ময়দা কিনে রেখেছিলেন, তাঁদের এখন মাথায় হাত।

মৌলভীবাজারের আরেক ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, দেশের বাজারে আটা-ময়দার কোনো সংকট নেই। এক বছর কোনো গম আমদানি না হলেও দেশে আটা-ময়দার সংকট হবে না। তবে হুজুগে অনেকেই আগাম আটা-ময়দা কোম্পানিদের কাছ থেকে কিনে রেখেছিলেন। এখন দাম কমায় তাঁদের লোকসান গুনতে হবে।

আন্তর্জাতিক বাজারে বর্তমানে প্রতি মেট্রিক টন গম বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৩৭৫ থেকে ৪২১ মার্কিন ডলারে। আন্তর্জাতিক নিউজ পোর্টাল ইনডেক্স মুডি ডটকম সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারিতে প্রতি মেট্রিক টন গমের দাম ছিল ৩৭৪ মার্কিন ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ৩৯০ ডলার, মার্চে বেড়ে হয় ৪৮৬ ডলার ও এপ্রিলে ৪৯৫ মার্কিন ডলার।

দাম কমার কারণ জানতে চাইলে বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক (বিপণন) মো. রেদোয়ানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের খবরে আটা-ময়দার দাম অনেকটা বেড়েছিল। অনেকেই তখন মজুত করেছিলেন। বাজারে চাহিদা কমায় গত কয়েক দিনে কেজিতে দাম কমেছে ৫-৭ টাকা। তবে প্যাকেটজাত আটা প্রসেস ও সরবরাহে দেরি হওয়ায় ভোক্তা পর্যায়ে প্রভাব পড়েনি। তবে খোলা আটায় পড়েছে। আগে প্রতি কেজি আটার দাম ছিল মিলে ৪৭ টাকা। বর্তমানে তা ৪২ টাকা করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বাজারে আটা-ময়দার দাম কমে যাওয়ার অপর একটি কারণ হচ্ছে সামনে কোরবানির ঈদ। এ ঈদকে সামনে রেখে সারা দেশে বিপুল পরিমাণ গরু পালন হচ্ছে। এসব গরুর খাবারের অন্যতম উৎস ভুসি। চাহিদা বাড়ায় অনেকেই ইচ্ছা না থাকলেও ভুসি তৈরি করছে। তবে ঈদের পর ভুসির চাহিদা কমে যাবে। তখন আটা-ময়দার দাম আবার বাড়বে।

রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাব অনুযায়ী, গতকাল বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪৫-৫০ টাকায়। আর প্যাকেট আটা বিক্রি হয়েছে ৪৫-৫০ টাকা, যা আগে ছিল ৪৮-৫২ টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপিসহ ১০ দলের জোট ঘোষণা করলেন জামায়াতের আমির

দিনাজপুরে খালেদা জিয়ার আসনে মনোনয়নপত্র নিলেন বিএনপির আরেক নেতা

সমঝোতায় পৌঁছেছি, আমরা জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেব: নাহিদ ইসলাম

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

‘তোর পুরস্কার গুলিতে মৃত্যু, দাফন-কাফনের জন্য তৈরি হ’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ