মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী

কোনো মাসকে এভাবে অভিহিত না করতে চাইলেও আগস্ট মাসের অভিজ্ঞতা আমাদের জাতীয় জীবনে অন্তত ৭৫ বছর কলঙ্কের তিলকই একে একে পরিয়ে দিয়েছে। প্রথম দিকের তিলক কলঙ্ক ঘোচাতে সক্ষম হলেও পঁচাত্তর-উত্তরকালে দগ্ধ ক্ষত যেন একেবারে নিরাময়যোগ্য নয় বলে মনে হচ্ছে।
সে জন্য মাস হিসেবে আগস্টকে দায়ী না করলেও ঘটনাচক্রে এ মাসেই এমন সব তিলক আর কলঙ্ক জাতীয় ইতিহাসে ঘটেছে, যা থেকে মুক্তির কামনাই শুধু মুক্ত করবে বলে মনে করি না। রাজনীতি ও ইতিহাস সচেতনতা যত দিন নির্মিত না হবে, তত দিন এই ক্ষত কিছুতেই শুকাবে না।
১৯৪৭ সালে আমাদের জাতীয় জীবনে যখন আগস্ট মাস উপনীত হয়েছিল, তখন অনেকে এটিকে ‘স্বাধীনতা’ এবং ‘মুক্তির’ সঙ্গে একাকার করে ভেবেছিলেন। ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তিলাভ করলেও সেদিন থেকেই আমাদের জাতি পাকিস্তানের খাঁচায় আবদ্ধ হয়ে গেল। ১৯৪৭ সালের ১৮ জুলাই ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভারত স্বাধীনতা আইন ১৫ আগস্ট, ১৯৪৭ পাস হয়।
সেভাবেই ১৫ আগস্ট ভারত এবং পাকিস্তান ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হয়। পাকিস্তান লাভের এক বছর পূর্তিতে তরুণ ছাত্রনেতা শেখ মুজিব ইত্তেহাদ পত্রিকায় দেওয়া এক বিবৃতিতে লিখেছিলেন, ‘১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট আমরা যে “আজাদী” লাভ করিয়াছি, সেটা যে গণ আজাদী নয়, তা গত একটি বছরে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হইয়াছে।’ ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্টই তিনি উপলব্ধি করেছিলেন যে ‘আমরা শেষ হয়ে গেছি। নতুন করে সংগ্রাম শুরু করতে হবে।’
তবে পূর্ব বাংলার সব মানুষই যে পাকিস্তান সৃষ্টির ঘটনাকে যথাযথভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন, তা নয়। সেই উপলব্ধি ঘটতে সময়ের হেরফের হলেও একসময় বেশির ভাগ মানুষই বুঝতে পেরেছিল যে পাকিস্তান অন্তত আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র হয়ে ওঠেনি।
পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ১৫ আগস্টের পরিবর্তে ১৪ আগস্টকে ‘পাকিস্তান দিবস’ হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ১৯৪৮ সালে। সেই থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত এই ভূখণ্ডে ১৪ আগস্ট পাকিস্তান দিবস হিসেবে সরকারি ছুটি ভোগ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উদ্যাপন, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হতো।
পাকিস্তান ক্রমেই পূর্ব বাংলার মানুষের কাছে এক দানবীয় শক্তিরূপে আবির্ভূত হতে থাকে। এ কারণে ১৪ আগস্ট ধীরে ধীরে ফিকে হতে থাকে। একসময় পাকিস্তান রাষ্ট্রকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য যখন গণ-অভ্যুত্থান এবং মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়, তখন ১৪ আগস্ট আমাদের জাতীয় জীবন থেকে অপসারিত হয়ে যায়। ইতিহাসের বোঝা ইতিহাসের ঘাড় থেকে ফেলে দিয়ে ঝেড়েমুছে মুক্ত হয়ে যায়। জাতীয় ইতিহাস থেকে তখন আমাদের কলঙ্কের তিলক মুছে যায়। ভাবতে পারিনি আগস্টের ভূত আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থার মধ্যে কতখানি অদৃশ্যভাবে চেপে ছিল।
পাকিস্তান থেকে মুক্ত হয়ে আমরা ধরেই নিয়েছিলাম আর কোনো দিন কলঙ্কজনক আগস্টের মুখোমুখি আমাদের হতে হবে না। এর জন্য ৩০ লাখ মানুষ প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে। এই বিসর্জন নিশ্চয়ই বৃথা যাবে না। কিন্তু সাতচল্লিশের আগস্ট ছিল এক সাম্প্রদায়িক পাকিস্তানের আগস্ট। এর ভয়াবহ নিগূঢ় ক্ষমতা আমরা খুব কমই উপলব্ধি করতে পেরেছি।
এটি আমাদের জাতীয়তার বোধকে ভেঙে তছনছ করে দিয়েছিল, ভাষা-সংস্কৃতির ইতিহাস-ঐতিহ্য ভুলিয়ে দিয়েছিল। এক অন্ধ ইউটোপীয় কাল্পনিক রাষ্ট্রের মোহে সাতচল্লিশের আগের রাজনৈতিক নেতৃত্ব আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিল। মাত্র ১০ বছরেই সেই নেতৃত্ব জনসাধারণকে বাঙালি জাতীয়তাবাদের আদর্শের স্থান থেকে বিচ্যুত করে মুসলিম লীগের সাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে মোহাচ্ছন্ন করেছিল।
সেই মোহভঙ্গ ২৩ বছরে সবার ঘটেছে–এমনটি বলা যাবে না, অন্তত ২৫ শতাংশ মানুষের তখন যে ঘটেনি, সেটি নির্দ্বিধায় বলা চলে। এত রক্ত, হত্যাযজ্ঞ, ধ্বংসলীলা পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী তাদের সেনাবাহিনী এবং তাদের এ দেশীয় দোসরেরা বাঙালি জাতির ওপর সংঘটিত করতে পেরেছিল। তার নিষ্ঠুর অভিজ্ঞতাও যেন স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রে একচ্ছত্র হয়ে উঠতে পারেনি।
যদি উঠত তাহলে ১৯৭৫ সালে ঠিক ১৫ আগস্ট ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে এমন নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করতে পারত না কুলাঙ্গার কিছু পাকিস্তান-মনস্ক বাঙালি সেনাসদস্য, যারা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধেও অংশ নিয়েছিল। তাদেরই হাতে সপরিবারে নিহত হলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ও শেখ ফজলুল হক মণির পরিবারের সদস্যরা।
সেবার ১৫ আগস্ট ভয়ংকর আক্রমণাত্মক ও প্রতিশোধপরায়ণমূলক চরিত্র নিয়েই আবির্ভূত হয়েছিল। শুধু রাষ্ট্রের পিতা, তাঁর পরিবারের সদস্য, নিকটবর্তী আত্মীয়স্বজন এবং ৩ নভেম্বর জেলের প্রকোষ্ঠে তাঁর ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহকর্মীদেরই তারা হত্যা করেনি, গোটা রাষ্ট্রব্যবস্থাকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ থেকেই সরিয়ে নিয়েছিল এবং ১৫ আগস্টের পাকিস্তানি ধারার কাছে ফিরিয়ে নিয়েছিল।
রাজনীতি, প্রশাসন, পাকিস্তানসহ আন্তর্জাতিক বহু পক্ষ এই হত্যাকাণ্ড ও রাষ্ট্র পরিবর্তনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল। হত্যা-পরবর্তী সময়ে গোটা সেনাবাহিনীকে ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের রাজনীতি, প্রশাসন, সমাজ ও সংস্কৃতি থেকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের বিনাশ ঘটিয়ে সাম্প্রদায়িক পাকিস্তানের ভাবাদর্শকে পুনরুজ্জীবিত করা হয়। সুকৌশলে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের জাতীয়তাবাদী চিন্তাকে দ্বিখণ্ডিত করা হয়। রাষ্ট্র বিনির্মাণের সব উদ্যোগ ধ্বংস করে দেওয়া হয়।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট যেন সাতচল্লিশের ১৫ আগস্টের আদর্শের ভয়ংকর রূপ নিয়ে আবির্ভূত হয়। ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের বিচার রাষ্ট্রীয়ভাবে বাধাগ্রস্ত করা হয়, সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়। ১৯৯৬ সালে যখন ১৫ আগস্টকে শেখ হাসিনার সরকার জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করার উদ্যোগ নেয়, তখনই সাতচল্লিশের ১৫ আগস্টের পরাজিত শক্তিরা নতুনভাবে ১৫ আগস্টকে রাজনৈতিকভাবে তুলে ধরার আয়োজন করে। খালেদা জিয়ার জন্মদিন ১৫ আগস্ট বলে দাবি করা হয়, পালনও করা হয়। অথচ ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় আসার পর পত্রিকায় প্রকাশিত জীবনীতে তাঁর জন্মদিন ১৯৪৫ সালের ১৯ আগস্ট দেখানো হয়।
এভাবে ঘটা করে তাঁর জন্মদিন ১৫ আগস্টে নামিয়ে আনার উদ্দেশ্য কী? ১৫ আগস্টকে বিএনপির দলীয় প্রধানের জন্মদিন পালনের মাধ্যমে তাদের দলীয় আদর্শের নতুনভাবে জন্মেরও কোনো ইঙ্গিত দিতে চেয়েছিল কি? পরবর্তীকালে ক্ষমতায় এসে তারা কেক কেটে ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন সাড়ম্বরে পালন করেছে।
আগস্টের বিয়োগান্ত ঘটনার এমন বিভাজিত রাজনৈতিক অবস্থান অনেকটা বলপ্রয়োগের মাধ্যমেই তৈরি করা হলো। সেটিকে বিএনপি কখনোই রাষ্ট্রের বিয়োগান্ত ঘটনা হিসেবে স্বীকার করেনি। যখন ক্ষমতায় থাকে, তখন তারা এই দিনটি খালেদা জিয়ার জন্মদিন হিসেবে উৎসবমুখরভাবে পালন করে, জাতীয় শোক দিবসের ছুটি বাতিল করে সেটিকে ঢেকে দেয়। আবার যখন ক্ষমতায় থাকে না, তখনো একসময় একইভাবে পালন করত। তবে ব্যাপক সমালোচনার মুখে কয়েক বছর নীরবতা পালন করে আসছে।
কিন্তু যে আগস্ট ট্র্যাজেডি ১৯৭৫ সালে আমাদের জাতীয় জীবনে সংঘটিত হয়েছে, এর বিচার বিএনপির শাসনামলে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে। নতুন করে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের হত্যার একটি ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার।
সৌভাগ্যক্রমে শেখ হাসিনা আর্জেস গ্রেনেড হামলা থেকে রক্ষা পেলেও তাঁকে হত্যা করার জন্য প্রাণপণে গাড়িতে ওঠার মুহূর্তেও পেছন থেকে গুলি ছোড়া হয়েছিল। তাঁর দেহরক্ষী মাহবুব তাতে নিহত হন। তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা এবারও প্রাণে বেঁচে গেলেন। ২১ আগস্টে আর্জেস গ্রেনেডের অন্তত একটিও যদি ট্রাক-মঞ্চে অবস্থান নেওয়া কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপর পড়ত, তাহলে কারোরই বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ছিল না। বিএনপি-জামায়াত ২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত, এটি আদালতে প্রমাণিত।
আগস্ট মাসটি কেন বিএনপির এত পছন্দের তা বোঝা গেল না। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের প্রায় সবকটি জেলায় ৫০০-এর অধিক স্থানে জঙ্গিরা একসঙ্গে বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। তাতে বেশ কয়েকজন নিহত এবং আহত হলেন। যাঁরা নিহত এবং আহত হলেন, তাঁরা সবাই নিরীহ মানুষ। কিন্তু জঙ্গিরা রাষ্ট্রের কারও না কারও পৃষ্ঠপোষকতায় এমন বিস্ফোরণ উৎসব পালন করতে পেরেছিল। যাঁরা অন্তত আগস্টের এই চারটি ঘটনার মধ্যে পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা ও মুক্তির সঙ্গে জড়িত ছিলেন, যে রাজনৈতিক আদর্শ পূর্ব বাংলার জন্য গ্রহণযোগ্য ছিল, তার বিপক্ষ শক্তি আগস্টকে তাদের জন্য ‘শুভ’ মাস হিসেবে মনে হয় বেছে নিয়েছিল।
কারও পৌষ মাস, কারও সর্বনাশ। বাঙালি জাতির জীবনে আগস্টের সব অভিজ্ঞতা সর্বনাশই ডেকে এনেছে। কিন্তু কারও কারও জন্য যে এটি পৌষ মাস, পিঠা খাওয়ার উৎসবের মাস, সেটিও তো ইতিহাসের অভিজ্ঞতা। আমরা একাত্তরে এসে সাতচল্লিশের আগস্টের পৌষ মাসকে বিদায় করতে পারলেও সেটির ভয়ংকর হিংস্রতাকে পঁচাত্তরে এসে ঘটতে দেখে স্তম্ভিত, হতবাক এবং একাত্তরের রাষ্ট্র বিপর্যয়ের বাস্তবতাকে অনুভব করতে শুরু করেছি মাত্র। কিন্তু আগস্ট যে আমাদের পিছু ছাড়ছেই না।
এতগুলো ক্ষত জাতীয়ভাবে বাংলাদেশ যে বহন করে চলছে, সেগুলোর রাজনৈতিক মীমাংসা ও শুকানোর ব্যবস্থা যত দিন রাজনৈতিকভাবে না করা হবে, তত দিন বাংলাদেশ রাষ্ট্র আগস্ট-কলঙ্ক থেকে মুক্ত হতে পারবে না। ইতিহাসের এই অন্তর্নিহিত সত্যটি রাষ্ট্র, রাজনীতি ও সমাজজীবনে যত দিন ফুটিয়ে তোলা না হবে, বোধ ও বিবেচনায় আগস্টের এত সব কলঙ্ককে মুছে ফেলার মানসিকতা তৈরি না হবে, তত দিন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ রাষ্ট্র আগস্ট মাসকেই কলঙ্কের ও শোকাবহের মাস হিসেবে অভিহিত করবে।
লেখক: অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট

কোনো মাসকে এভাবে অভিহিত না করতে চাইলেও আগস্ট মাসের অভিজ্ঞতা আমাদের জাতীয় জীবনে অন্তত ৭৫ বছর কলঙ্কের তিলকই একে একে পরিয়ে দিয়েছে। প্রথম দিকের তিলক কলঙ্ক ঘোচাতে সক্ষম হলেও পঁচাত্তর-উত্তরকালে দগ্ধ ক্ষত যেন একেবারে নিরাময়যোগ্য নয় বলে মনে হচ্ছে।
সে জন্য মাস হিসেবে আগস্টকে দায়ী না করলেও ঘটনাচক্রে এ মাসেই এমন সব তিলক আর কলঙ্ক জাতীয় ইতিহাসে ঘটেছে, যা থেকে মুক্তির কামনাই শুধু মুক্ত করবে বলে মনে করি না। রাজনীতি ও ইতিহাস সচেতনতা যত দিন নির্মিত না হবে, তত দিন এই ক্ষত কিছুতেই শুকাবে না।
১৯৪৭ সালে আমাদের জাতীয় জীবনে যখন আগস্ট মাস উপনীত হয়েছিল, তখন অনেকে এটিকে ‘স্বাধীনতা’ এবং ‘মুক্তির’ সঙ্গে একাকার করে ভেবেছিলেন। ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তিলাভ করলেও সেদিন থেকেই আমাদের জাতি পাকিস্তানের খাঁচায় আবদ্ধ হয়ে গেল। ১৯৪৭ সালের ১৮ জুলাই ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভারত স্বাধীনতা আইন ১৫ আগস্ট, ১৯৪৭ পাস হয়।
সেভাবেই ১৫ আগস্ট ভারত এবং পাকিস্তান ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হয়। পাকিস্তান লাভের এক বছর পূর্তিতে তরুণ ছাত্রনেতা শেখ মুজিব ইত্তেহাদ পত্রিকায় দেওয়া এক বিবৃতিতে লিখেছিলেন, ‘১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট আমরা যে “আজাদী” লাভ করিয়াছি, সেটা যে গণ আজাদী নয়, তা গত একটি বছরে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হইয়াছে।’ ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্টই তিনি উপলব্ধি করেছিলেন যে ‘আমরা শেষ হয়ে গেছি। নতুন করে সংগ্রাম শুরু করতে হবে।’
তবে পূর্ব বাংলার সব মানুষই যে পাকিস্তান সৃষ্টির ঘটনাকে যথাযথভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন, তা নয়। সেই উপলব্ধি ঘটতে সময়ের হেরফের হলেও একসময় বেশির ভাগ মানুষই বুঝতে পেরেছিল যে পাকিস্তান অন্তত আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র হয়ে ওঠেনি।
পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ১৫ আগস্টের পরিবর্তে ১৪ আগস্টকে ‘পাকিস্তান দিবস’ হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ১৯৪৮ সালে। সেই থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত এই ভূখণ্ডে ১৪ আগস্ট পাকিস্তান দিবস হিসেবে সরকারি ছুটি ভোগ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উদ্যাপন, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হতো।
পাকিস্তান ক্রমেই পূর্ব বাংলার মানুষের কাছে এক দানবীয় শক্তিরূপে আবির্ভূত হতে থাকে। এ কারণে ১৪ আগস্ট ধীরে ধীরে ফিকে হতে থাকে। একসময় পাকিস্তান রাষ্ট্রকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য যখন গণ-অভ্যুত্থান এবং মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়, তখন ১৪ আগস্ট আমাদের জাতীয় জীবন থেকে অপসারিত হয়ে যায়। ইতিহাসের বোঝা ইতিহাসের ঘাড় থেকে ফেলে দিয়ে ঝেড়েমুছে মুক্ত হয়ে যায়। জাতীয় ইতিহাস থেকে তখন আমাদের কলঙ্কের তিলক মুছে যায়। ভাবতে পারিনি আগস্টের ভূত আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থার মধ্যে কতখানি অদৃশ্যভাবে চেপে ছিল।
পাকিস্তান থেকে মুক্ত হয়ে আমরা ধরেই নিয়েছিলাম আর কোনো দিন কলঙ্কজনক আগস্টের মুখোমুখি আমাদের হতে হবে না। এর জন্য ৩০ লাখ মানুষ প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে। এই বিসর্জন নিশ্চয়ই বৃথা যাবে না। কিন্তু সাতচল্লিশের আগস্ট ছিল এক সাম্প্রদায়িক পাকিস্তানের আগস্ট। এর ভয়াবহ নিগূঢ় ক্ষমতা আমরা খুব কমই উপলব্ধি করতে পেরেছি।
এটি আমাদের জাতীয়তার বোধকে ভেঙে তছনছ করে দিয়েছিল, ভাষা-সংস্কৃতির ইতিহাস-ঐতিহ্য ভুলিয়ে দিয়েছিল। এক অন্ধ ইউটোপীয় কাল্পনিক রাষ্ট্রের মোহে সাতচল্লিশের আগের রাজনৈতিক নেতৃত্ব আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিল। মাত্র ১০ বছরেই সেই নেতৃত্ব জনসাধারণকে বাঙালি জাতীয়তাবাদের আদর্শের স্থান থেকে বিচ্যুত করে মুসলিম লীগের সাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে মোহাচ্ছন্ন করেছিল।
সেই মোহভঙ্গ ২৩ বছরে সবার ঘটেছে–এমনটি বলা যাবে না, অন্তত ২৫ শতাংশ মানুষের তখন যে ঘটেনি, সেটি নির্দ্বিধায় বলা চলে। এত রক্ত, হত্যাযজ্ঞ, ধ্বংসলীলা পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী তাদের সেনাবাহিনী এবং তাদের এ দেশীয় দোসরেরা বাঙালি জাতির ওপর সংঘটিত করতে পেরেছিল। তার নিষ্ঠুর অভিজ্ঞতাও যেন স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রে একচ্ছত্র হয়ে উঠতে পারেনি।
যদি উঠত তাহলে ১৯৭৫ সালে ঠিক ১৫ আগস্ট ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে এমন নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করতে পারত না কুলাঙ্গার কিছু পাকিস্তান-মনস্ক বাঙালি সেনাসদস্য, যারা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধেও অংশ নিয়েছিল। তাদেরই হাতে সপরিবারে নিহত হলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ও শেখ ফজলুল হক মণির পরিবারের সদস্যরা।
সেবার ১৫ আগস্ট ভয়ংকর আক্রমণাত্মক ও প্রতিশোধপরায়ণমূলক চরিত্র নিয়েই আবির্ভূত হয়েছিল। শুধু রাষ্ট্রের পিতা, তাঁর পরিবারের সদস্য, নিকটবর্তী আত্মীয়স্বজন এবং ৩ নভেম্বর জেলের প্রকোষ্ঠে তাঁর ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহকর্মীদেরই তারা হত্যা করেনি, গোটা রাষ্ট্রব্যবস্থাকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ থেকেই সরিয়ে নিয়েছিল এবং ১৫ আগস্টের পাকিস্তানি ধারার কাছে ফিরিয়ে নিয়েছিল।
রাজনীতি, প্রশাসন, পাকিস্তানসহ আন্তর্জাতিক বহু পক্ষ এই হত্যাকাণ্ড ও রাষ্ট্র পরিবর্তনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল। হত্যা-পরবর্তী সময়ে গোটা সেনাবাহিনীকে ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের রাজনীতি, প্রশাসন, সমাজ ও সংস্কৃতি থেকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের বিনাশ ঘটিয়ে সাম্প্রদায়িক পাকিস্তানের ভাবাদর্শকে পুনরুজ্জীবিত করা হয়। সুকৌশলে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের জাতীয়তাবাদী চিন্তাকে দ্বিখণ্ডিত করা হয়। রাষ্ট্র বিনির্মাণের সব উদ্যোগ ধ্বংস করে দেওয়া হয়।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট যেন সাতচল্লিশের ১৫ আগস্টের আদর্শের ভয়ংকর রূপ নিয়ে আবির্ভূত হয়। ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের বিচার রাষ্ট্রীয়ভাবে বাধাগ্রস্ত করা হয়, সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়। ১৯৯৬ সালে যখন ১৫ আগস্টকে শেখ হাসিনার সরকার জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করার উদ্যোগ নেয়, তখনই সাতচল্লিশের ১৫ আগস্টের পরাজিত শক্তিরা নতুনভাবে ১৫ আগস্টকে রাজনৈতিকভাবে তুলে ধরার আয়োজন করে। খালেদা জিয়ার জন্মদিন ১৫ আগস্ট বলে দাবি করা হয়, পালনও করা হয়। অথচ ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় আসার পর পত্রিকায় প্রকাশিত জীবনীতে তাঁর জন্মদিন ১৯৪৫ সালের ১৯ আগস্ট দেখানো হয়।
এভাবে ঘটা করে তাঁর জন্মদিন ১৫ আগস্টে নামিয়ে আনার উদ্দেশ্য কী? ১৫ আগস্টকে বিএনপির দলীয় প্রধানের জন্মদিন পালনের মাধ্যমে তাদের দলীয় আদর্শের নতুনভাবে জন্মেরও কোনো ইঙ্গিত দিতে চেয়েছিল কি? পরবর্তীকালে ক্ষমতায় এসে তারা কেক কেটে ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন সাড়ম্বরে পালন করেছে।
আগস্টের বিয়োগান্ত ঘটনার এমন বিভাজিত রাজনৈতিক অবস্থান অনেকটা বলপ্রয়োগের মাধ্যমেই তৈরি করা হলো। সেটিকে বিএনপি কখনোই রাষ্ট্রের বিয়োগান্ত ঘটনা হিসেবে স্বীকার করেনি। যখন ক্ষমতায় থাকে, তখন তারা এই দিনটি খালেদা জিয়ার জন্মদিন হিসেবে উৎসবমুখরভাবে পালন করে, জাতীয় শোক দিবসের ছুটি বাতিল করে সেটিকে ঢেকে দেয়। আবার যখন ক্ষমতায় থাকে না, তখনো একসময় একইভাবে পালন করত। তবে ব্যাপক সমালোচনার মুখে কয়েক বছর নীরবতা পালন করে আসছে।
কিন্তু যে আগস্ট ট্র্যাজেডি ১৯৭৫ সালে আমাদের জাতীয় জীবনে সংঘটিত হয়েছে, এর বিচার বিএনপির শাসনামলে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে। নতুন করে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের হত্যার একটি ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার।
সৌভাগ্যক্রমে শেখ হাসিনা আর্জেস গ্রেনেড হামলা থেকে রক্ষা পেলেও তাঁকে হত্যা করার জন্য প্রাণপণে গাড়িতে ওঠার মুহূর্তেও পেছন থেকে গুলি ছোড়া হয়েছিল। তাঁর দেহরক্ষী মাহবুব তাতে নিহত হন। তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা এবারও প্রাণে বেঁচে গেলেন। ২১ আগস্টে আর্জেস গ্রেনেডের অন্তত একটিও যদি ট্রাক-মঞ্চে অবস্থান নেওয়া কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপর পড়ত, তাহলে কারোরই বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ছিল না। বিএনপি-জামায়াত ২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত, এটি আদালতে প্রমাণিত।
আগস্ট মাসটি কেন বিএনপির এত পছন্দের তা বোঝা গেল না। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের প্রায় সবকটি জেলায় ৫০০-এর অধিক স্থানে জঙ্গিরা একসঙ্গে বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। তাতে বেশ কয়েকজন নিহত এবং আহত হলেন। যাঁরা নিহত এবং আহত হলেন, তাঁরা সবাই নিরীহ মানুষ। কিন্তু জঙ্গিরা রাষ্ট্রের কারও না কারও পৃষ্ঠপোষকতায় এমন বিস্ফোরণ উৎসব পালন করতে পেরেছিল। যাঁরা অন্তত আগস্টের এই চারটি ঘটনার মধ্যে পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা ও মুক্তির সঙ্গে জড়িত ছিলেন, যে রাজনৈতিক আদর্শ পূর্ব বাংলার জন্য গ্রহণযোগ্য ছিল, তার বিপক্ষ শক্তি আগস্টকে তাদের জন্য ‘শুভ’ মাস হিসেবে মনে হয় বেছে নিয়েছিল।
কারও পৌষ মাস, কারও সর্বনাশ। বাঙালি জাতির জীবনে আগস্টের সব অভিজ্ঞতা সর্বনাশই ডেকে এনেছে। কিন্তু কারও কারও জন্য যে এটি পৌষ মাস, পিঠা খাওয়ার উৎসবের মাস, সেটিও তো ইতিহাসের অভিজ্ঞতা। আমরা একাত্তরে এসে সাতচল্লিশের আগস্টের পৌষ মাসকে বিদায় করতে পারলেও সেটির ভয়ংকর হিংস্রতাকে পঁচাত্তরে এসে ঘটতে দেখে স্তম্ভিত, হতবাক এবং একাত্তরের রাষ্ট্র বিপর্যয়ের বাস্তবতাকে অনুভব করতে শুরু করেছি মাত্র। কিন্তু আগস্ট যে আমাদের পিছু ছাড়ছেই না।
এতগুলো ক্ষত জাতীয়ভাবে বাংলাদেশ যে বহন করে চলছে, সেগুলোর রাজনৈতিক মীমাংসা ও শুকানোর ব্যবস্থা যত দিন রাজনৈতিকভাবে না করা হবে, তত দিন বাংলাদেশ রাষ্ট্র আগস্ট-কলঙ্ক থেকে মুক্ত হতে পারবে না। ইতিহাসের এই অন্তর্নিহিত সত্যটি রাষ্ট্র, রাজনীতি ও সমাজজীবনে যত দিন ফুটিয়ে তোলা না হবে, বোধ ও বিবেচনায় আগস্টের এত সব কলঙ্ককে মুছে ফেলার মানসিকতা তৈরি না হবে, তত দিন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ রাষ্ট্র আগস্ট মাসকেই কলঙ্কের ও শোকাবহের মাস হিসেবে অভিহিত করবে।
লেখক: অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

কোনো মাসকে এভাবে অভিহিত না করতে চাইলেও আগস্ট মাসের অভিজ্ঞতা আমাদের জাতীয় জীবনে অন্তত ৭৫ বছর কলঙ্কের তিলকই একে একে পরিয়ে দিয়েছে। প্রথম দিকের তিলক কলঙ্ক ঘোচাতে সক্ষম হলেও পঁচাত্তর-উত্তরকালে দগ্ধ ক্ষত যেন একেবারে নিরাময়যোগ্য নয় বলে মনে হচ্ছে।
০৭ আগস্ট ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

কোনো মাসকে এভাবে অভিহিত না করতে চাইলেও আগস্ট মাসের অভিজ্ঞতা আমাদের জাতীয় জীবনে অন্তত ৭৫ বছর কলঙ্কের তিলকই একে একে পরিয়ে দিয়েছে। প্রথম দিকের তিলক কলঙ্ক ঘোচাতে সক্ষম হলেও পঁচাত্তর-উত্তরকালে দগ্ধ ক্ষত যেন একেবারে নিরাময়যোগ্য নয় বলে মনে হচ্ছে।
০৭ আগস্ট ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

কোনো মাসকে এভাবে অভিহিত না করতে চাইলেও আগস্ট মাসের অভিজ্ঞতা আমাদের জাতীয় জীবনে অন্তত ৭৫ বছর কলঙ্কের তিলকই একে একে পরিয়ে দিয়েছে। প্রথম দিকের তিলক কলঙ্ক ঘোচাতে সক্ষম হলেও পঁচাত্তর-উত্তরকালে দগ্ধ ক্ষত যেন একেবারে নিরাময়যোগ্য নয় বলে মনে হচ্ছে।
০৭ আগস্ট ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

কোনো মাসকে এভাবে অভিহিত না করতে চাইলেও আগস্ট মাসের অভিজ্ঞতা আমাদের জাতীয় জীবনে অন্তত ৭৫ বছর কলঙ্কের তিলকই একে একে পরিয়ে দিয়েছে। প্রথম দিকের তিলক কলঙ্ক ঘোচাতে সক্ষম হলেও পঁচাত্তর-উত্তরকালে দগ্ধ ক্ষত যেন একেবারে নিরাময়যোগ্য নয় বলে মনে হচ্ছে।
০৭ আগস্ট ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫