Ajker Patrika

তাপপ্রবাহ: মানবদেহে কতটুকু তাপ সহনীয়

তাপপ্রবাহ: মানবদেহে কতটুকু তাপ সহনীয়

বিশ্ব উষ্ণায়নের এই সময়ে তাপমাত্রা এতটাই বেড়েছে যে মনে হয় চারপাশে আগুন লেগেছে। গরমে সেদ্ধপ্রায় ইউরোপ চলমান তাপপ্রবাহের নাম দিয়েছে ‘সেত্তিমানা ইনফার্নেল’ বা নারকীয় সপ্তাহ। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রোগীর শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে হাসপাতালে বরফভর্তি বডিব্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে। 

জুনকে যুক্তরাজ্যের উষ্ণতম মাস হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যে প্রথমবারের মতো ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। গত বছরের তাপদাহে ইউরোপজুড়ে ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। জাতিসংঘ বলছে, বিশ্ব উষ্ণতার যুগ থেকে ফুটন্ত যুগে প্রবেশ করেছে।

মানুষের শরীর কতটুকু তাপ সইতে পারে তা যাচাইয়ে এক গবেষণায় অংশ নেন বিবিসি রেডিওর উপস্থাপক জেমস গালাঘার। সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেমিয়েন বেইলির নেতৃত্বে এই গবেষণায় অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা তিনি তুলে ধরেছেন বিবিসির এক প্রতিবেদনে।

জেমস বলেন, ‘গরম বেড়ে গেলে আমি ঘামের সাগরে ঢলে পড়ি। আর আমাকেই তাপপ্রবাহ পরীক্ষায় অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়। অধ্যাপক বেইলি সতর্ক করেন, ‘তোমার শরীরে ঘাম হবে, আর তোমার শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গেও বেশ পরিবর্তন হবে।’ 

অধ্যাপক বেইলি তাকে এক পরিবেশগত চেম্বারে নিয়ে যান। এটি সাধারণ কক্ষের আকারে বায়ুরোধী এক বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থা যাতে তাপমাত্রা, আর্দ্রতা ও অক্সিজেনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। 

জেমস এর আগেও ঠাণ্ডার প্রভাব পরীক্ষা করতে সেখানে গিয়েছিলেন। তবে এই চকচকে স্টিলের দেয়াল, ভারী দরজা এবং ছোট ছোট পোর্টহোল উষ্ণতা বাড়ার প্রতীক্ষায় নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছিল, আমি আমার ওভেন থেকে বেরিয়ে আসছি।’

২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তাপমাত্রা একদম ঠিকঠাক মনে হয়। তখনই অধ্যাপক বেইলি ‘শরীরের সবকিছু খুলে ফেলার’ প্রথম নির্দশনা দেন। এতে দেখা হবে জেমসের কতটা ঘাম হয় ও তার ওজনের কেমন পরিবর্তন হয়। 

এরপর তার ত্বক ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গের তাপমাত্রা, রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দন ট্র্যাক করা হয়। এক বিশাল মাউথপিস দিয়ে তার নিঃশ্বাস বিশ্লেষণ করা হয়। আল্ট্রাসাউন্ডে গলার ক্যারোটিড ধমনী দিয়ে মস্তিস্কে রক্ত প্রবাহ নিরীক্ষণ করা হয়েছে। তখন রক্তচাপ, হৃদস্পন্দন ও অন্যান্য সব শারীরবৃত্তীয় সব স্বাভাবিক চলছিল। এরপর ৩০ শব্দ মনে রাখার মতো ছোট পরীক্ষার পর তাপমাত্রা বাড়ানো হয়। 

জেমসের দেহের তখন একটাই লক্ষ্য- হৃদপিণ্ড, ফুসফুস, যকৃৎ এবং অন্যান্য অঙ্গের তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখা। মস্তিষ্কের বা হাইপোথ্যালামাসের থার্মোস্ট্যাট এই তাপমাত্রা একই রাখার সংকেত পাঠাতে থাকে।

৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তাপমাত্রা বৃদ্ধি সাময়িক বন্ধ রেখে কিছু পরীক্ষা করা হয়। তখন জেমসের উষ্ণতা অনুভব হয়। চেয়ারে বসে থাকায় তা অস্বস্তিকর না হলেও এই তাপমাত্রায় কাজ বা কসরত করতে ইচ্ছা করবে না।

জেমসের দেহে তখন কিছু স্পষ্ট পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। তাকে তুলনামূলক লাল দেখাচ্ছিলো। কারণ তার ত্বকের উপরিভাগের রক্তনালী উষ্ণ রক্তের তাপমাত্রা বাতাসে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য উন্মুক্ত হচ্ছিলো। 

জেমসের ঘাম হচ্ছিলো কিন্তু ঘাম ঝরছিল না। এই ঘাম বাষ্পীভূত হয়ে তাকে আবার শীতল করছিল। এরপর তাপমাত্রা বাড়িয়ে ৪০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস করা হয়। জেমস বলেন,‘তখন আমার মনে হচ্ছিলো গরম আমাকে পিষে ফেলছে।’

অধ্যাপক বেইলি বলেন, ‘পাঁচ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড শুনতে খুব কম শোনায়। কিন্তু শারিরীকভাবে এটি বেশ চ্যালেঞ্জিং।’

এই তাপমাত্রায় জেমস শরীরের এক লিটারের এক তৃতীয়াংশের মতো পানি হারান। ত্বকের উপরের রক্তনালী উন্মুক্ত করার প্রভাবও বেশ দৃশ্যমান। হৃদস্পন্দন বেড়ে গিয়েছিলো। ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে হৃদপিণ্ড তুলনামূলক বেশি রক্ত তৈরি করছিলো।

হৃদপিণ্ডের উপর এই বাড়তি চাপের কারণেই তাপমাত্রা বাড়লে হৃদরোগে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে স্মৃতি ক্ষণস্থায়ী হচ্ছে।

তবে জেমসের দেহের কেন্দ্রীয় তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখার লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। 

অধ্যাপক বেইলি বলেন, ‘জেমসের শরীর তার কেন্দ্রীয় তাপমাত্রা রক্ষা করতে বেশ ভালো কাজ করেছে। তবে পরীক্ষাগুলো বলছে  এই এক ঘণ্টাতেই সে ২১ ডিগ্রিতে যত সক্রিয় ছিলো, ৪০ ডিগ্রিতে তত সক্রিয় নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমার এই গবেষণায় শুধু তাপমাত্রা বদলানো হয়েছিলো। কিন্তু পরিবেশের অন্যান্য উপাদানগুলো ঠিক ছিলো। পরিবেশের জলীয়বাষ্পের পরিমাণ তথা আর্দ্রতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কুয়াশাচ্ছন্ন রাতে যদি কারোও অস্বস্তি লাগে তবে তা আর্দ্রতার কারণে। শুধু ঘামানো যথেষ্ট না। এটি তখনই কার্যকর হয় যখন তা বাষ্পীভূত হয়ে, শীতল অনুভূতি দেয়।’

বাতাসে আগে থেকেই জলীয়বাস্প উপস্থিত থাকলে ঘাম সহজে বাষ্পীভূত হয় না। ডেমিয়েন ৫০ শতাংশে জলীয়বাষ্প স্থির রেখেছিলেন।

গবেষক র‍্যাচেল কটেল বলেন, ‘শরীরের কেন্দ্রীয় তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে থাকলে তা আমাদের জন্য ক্ষতিকর। এর ফলে আমাদের দেহের অঙ্গ বিকল হয়ে যেতে পারে।’ এই ক্ষতি নিম্ন তাপমাত্রায়ও হতে পারে, যদি আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকে।

তিনি আরও বলেন, ‘চিন্তার বিষয় হলো, তাপদাহ যে কেবল ঘনঘন, দীর্ঘতর ও আরও তীব্র হচ্ছে তাই নয়, এটি আরও আর্দ্রও হচ্ছে। 

র‍্যাচেল বলেন, ‘গত বছর ভারত ও পাকিস্তানে তীব্র তাপদাহ হয়। এতে তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা ছিলো অনেক বেশি। এটি অবশ্যই বর্তমানের সমস্যা, ভবিষ্যতের নয়।’

মানবদেহ ৩৭ ডিগ্রি পর্যন্ত কাজ করতে সক্ষম। ৪০ ডিগ্রিতে আমাদের চৈতন্য লোপ পায় ও জ্ঞান হারানোর আশংকা বৃদ্ধি পায়। উচ্চ কেন্দ্রীয় তাপমাত্রার ফলে দেহের টিস্যু ক্ষতিগ্রস্থ হয়। যেমন-হৃদ পেশি ও মস্তিষ্ক।

অধ্যাপক বেইলি বলেন, ‘একবার কেন্দ্রীয় তাপমাত্রা ৪১-৪২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে উঠে গেলে আমরা মারাত্মক সমস্যাগুলো দেখতে পাই। তখন কাউকে জরুরী চিকিৎসা না দেয়া হলে হাইপারথার্মিয়াতে তার মৃত্যু হতে পারে।’

প্রত্যেক মানুষের তাপ সহ্য করার ক্ষমতা ভিন্ন। বয়স ও স্বাস্থ্য আমাদের আরও দুর্বল করে দিতে পারে। যে তাপমাত্রা আমরা একসময় ছুটিতে উপভোগ করতাম, সে তাপমাত্রা জীবনের বিভিন্ন ধাপে আমাদের জন্য ভয়াবহ হতে পারে।

এই গরমের সাথে মানিয়ে চলতে হলে
ক্রম বৃদ্ধিমান এই তাপমাত্রার সাথে মানিয়ে চলতে হলে কিছু সাধারণ পরামর্শ হলো- ছায়ায় থাকা, ঢিলেঢালা পোশাক পরা, অ্যালকোহল পরিহার করা, ঘর ঠাণ্ডা রাখা, দিনের উষ্ণতম সময়ে ব্যায়াম না করা এবং পর্যাপ্ত পানি পান করা।

অধ্যাপক বেইলি এর সাথে আরও একটি পরামর্শ যুক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘রোদে পোড়া থেকে সচেতন থাকতে হবে। মৃদু রোদে পোড়ার কারণেও আমাদের শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ বা ঘামানোর ক্ষমতা অন্তত দুই সপ্তাহের জন্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে।’

অধ্যাপক লিজি কেনডন বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নেওয়া হলে যুক্তরাজ্যের তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে। শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত এটি এক বিশাল বৃদ্ধি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সকালে সূর্যের দেখা নেই, কুয়াশাচ্ছন্ন ঢাকার আকাশ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৫২
তাপমাত্রা খুব বেশি কমলেও আজ রোববার সকাল থেকে রাজধানী ঢাকার আকাশ কুয়াশাচ্ছন্ন। দেখা মেলেনি সূর্যের আলো। ছবি: আজকের পত্রিকা
তাপমাত্রা খুব বেশি কমলেও আজ রোববার সকাল থেকে রাজধানী ঢাকার আকাশ কুয়াশাচ্ছন্ন। দেখা মেলেনি সূর্যের আলো। ছবি: আজকের পত্রিকা

তাপমাত্রা খুব বেশি কমলেও আজ রোববার সকাল থেকে রাজধানী ঢাকার আকাশ কুয়াশাচ্ছন্ন। দেখা মেলেনি সূর্যের আলো। পাশাপাশি বইছিল হালকা হিমেল বাতাস।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকালে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৩ শতাংশ।

পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। আকাশ পরিষ্কার থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা কমতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৬ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৭ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকায় বেড়েছে বায়ুদূষণ, দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় কাবুল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

শীতের মৌসুমে বাতাস থাকে শুষ্ক। বেড়ে যায় ধূলিকণার পরিমাণ। আর এ কারণে বায়ুদূষণও বাড়তে থাকে। আজ শনিবার ঢাকার বায়ুমানের অবনতি হয়ে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় আছে।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তালিকায় দেখা যায়, বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ ঢাকা ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে। আর শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে আফগানিস্তানের রাজধানী শহর কাবুল।

আইকিউএয়ারের সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ২০২, খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক। আর শীর্ষে থাকা কাবুলের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেস্ক স্কোর ৪৯৫, যা দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের নির্দেশক।

শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো ভারতের দিল্লি (৩৯৩), বাহরাইনের মানামা (২৬৪), ভারতের কলকাতা (২২৬) ও পাকিস্তানের করাচি (২০৩)।

আজ ঢাকার যেসব এলাকায় বায়ুদূষণ সবচেয়ে বেশি— দক্ষিণ পল্লবী, কল্যাণপুর, পেয়ারাবাগ রেল লাইন, বেজ এজওয়াটার আউটডোর, গোড়ান, শান্তা ফোরাম, গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোকাররম বিল্ডিং।

ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্‌রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্‌যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।

শীতকালীন আবহাওয়ার ধরন, যানবাহন ও শিল্প থেকে অনিয়ন্ত্রিত নির্গমন, চলমান নির্মাণকাজ থেকে সৃষ্ট ধুলো এবং আশপাশের ইটভাটাগুলো এই দূষণ সংকটের জন্য দায়ী।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১ থেকে ২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়

অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্‌রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।

সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।

যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।

ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পৌষ মাসে নেই শীতের দেখা, বেড়েছে ঢাকার তাপমাত্রা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৩০
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পৌষ মাসের ৫ তারিখ আজ। শীতের দেখা নেই; বরং বেড়ে চলেছে তাপমাত্রা। আজ শনিবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুলেটিনে দেখা যায়, আজ সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল শুক্রবার একই সময়ে তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আজ সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এসব কথা বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুলেটিনে আরও বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে আর্দ্রতা পরিমাপ করা হয়েছে ৭৬ শতাংশ। আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। আকাশে কিছুটা মেঘের আনাগোনা দেখা যেতে পারে।

অধিদপ্তর আরও বলছে, আজ দিনের তাপমাত্রায় তেমন কোনো পরিবর্তন দেখা যাবে না।

এ ছাড়া বুলেটিনে আরও বলা হয়েছে, এ সময় উত্তর বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।

এদিকে গতকাল শুক্রবার ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজ ঢাকার আবহাওয়া কেমন থাকবে জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানী ঢাকায় আজ শুক্রবার সকালে তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।

আজ সকাল ৭টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে এ কথা বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৬ শতাংশ।

পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। তবে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৬ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত