নাকিব বাপ্পি
সোনা জঙ্ঘা, রঙ্গিলা, চিত্রা বক কিংবা রঙ্গিলা সারস। নামেই দারুণ রঙিন একটা বিষয় আছে এর। আবার যদি জানেন যে এর নাম রাঙা মানিকজোড়, তাহলে আপনার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুটির কথা মনে হতে পারে, অন্য বন্ধুরা যাকে আপনার মানিকজোড় বলত। এর ইংরেজি নাম পেইন্টেড স্টর্ক। এটি সাঁওতাল সম্প্রদায়ের কাছে পরিচিত জাংগিল নামে। এত কথা বললাম যে পাখির নামে, সেটি এখন মহাবিপন্ন শ্রেণির পাখি। আমাদের দেশের বন্যপ্রাণী আইনে এখন এ পাখি সংরক্ষিত।
শুধু আমাদের দেশ নয়। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আবাসিক পাখি রাঙা মানিকজোড় বর্তমানে প্রায় পুরো বিশ্বে আছে বিলুপ্তির আশঙ্কায়। দেশে এদের রাজশাহী ও বরিশাল বিভাগেই সচরাচর দেখা যায়। পাখিপ্রেমী কিংবা আলোকচিত্রী হিসেবে এই পাখির ব্যাপারে জানাশোনা ছিল আগে থেকে। আর ছবি তোলার আগ্রহ তো বলাই বাহুল্য।
কিন্তু আগ্রহ আর আকাঙ্ক্ষা একটা পর্যায়ে গিয়ে যখন এদের দেখা না পাওয়ার আক্ষেপে রূপ নেওয়ার দ্বারপ্রান্তে, তখনই অনেকটা ধূমকেতুর মতো ঢাকায় এর দেখা মিলেছে বলে খবর পেলাম। সে খবর জানালেন এক অগ্রজ আলোকচিত্রী।
রাজধানী ঢাকার কোল ঘেঁষা কেরানীগঞ্জ। এ বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের শুক্রবারের ঘটনা। তড়িঘড়ি করে বন্ধুপ্রতিম আলোকচিত্রী ডা. অমি ভাইকে সঙ্গে নিয়ে ছুটলাম ছবি তোলার উদ্দেশে। মুঠোফোনে এর অবস্থান সম্পর্কে যৎসামান্য যা তথ্য পেয়েছি, সেখানে পৌঁছে আমাদের মরুভূমিতে সুচ খোঁজা প্রবাদের সার্থকতা উপলব্ধি হলো। ঘণ্টাখানেক হন্য হয়ে কয়েক মাইল এলোপাতাড়ি উঁচুনিচু মাটির রাস্তা আর ফসলি জমির আল মাড়িয়ে হেঁটে, দৌড়ে গলদঘর্ম হয়েও এর দেখা না পেয়ে যখন একরাশ হতাশা নিয়ে ফিরে আসার পরিকল্পনা করছি, তখন সন্ধ্যা প্রায় ঘনিয়ে আসছে। শেষ দাওয়াই হিসেবে অগ্রজ আলোকচিত্রী নাদিম ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলাম। ফেসবুকের কল্যাণে ইতিমধ্যে এটা জেনেছি, তিনি দুপুর নাগাদ সেখানে গিয়ে এই মহা সুন্দর মহাশয়ের ছবি তুলেছেন।
এবার ভাগ্য কিছুটা সহায় হলো। নাদিম ভাই ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হলেন। ভিডিও কলে সংযোগ স্থাপন করে ভদ্রলোক আমাদের পথ নির্দেশনা দিতে লাগলেন। এভাবে মিনিট বিশেক হাঁটার পর এল সেই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত। এক ছোট জলাশয়ের স্বল্প পানিতে বিশাল শরীর নিয়ে রাজকীয় ভঙ্গিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে পাখিটি। মিনিট দু-এক আমি আর আমার আলোকচিত্রী সঙ্গী সবকিছু ভুলে মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাকিয়ে রইলাম এই রঙিন মেজাজের পাখিটির দিকে। যেন অপার্থিব সৌন্দর্যের দূত তার দ্যুতি ছড়াচ্ছে দিগ্বিদিক।
তারপর স্বভাবসুলভ চরিত্রে ফেরত গিয়ে দুজনেই ক্যামেরায় হাত দিলাম। পরের কয়েক মিনিট বিরামহীনভাবে ক্যামেরার শাটারের শব্দ ছাড়া আশপাশে আর কোনো শব্দ আমাদের কর্ণগোচর হয়নি। উপকূল বা চরাঞ্চলের পাখিটিকে রাজধানীর কাছে ফ্রেমবন্দী করে চক্ষু-মনের বিবাদ ভঞ্জন শেষে ফিরতি পথ ধরেছি। ভাবছিলাম, এই পাখিকে চর্মচক্ষুতে দেখার, ছবি তোলার অপেক্ষার নটে গাছটি তো অবশেষে মুড়াল। একে খুঁজে পেতে আদ্যোপান্ত যা করেছি, তা এক রোমাঞ্চকর অভিযানের চেয়ে কম নয়।
রাঙা মানিকজোড় বা পেইন্টেড স্টর্ক বেশ বড় আকারের জলচর পাখি। এর বৈজ্ঞানিক নাম মাইক্টেরিয়া লিউকোসেফালা। এ শব্দ দুটির আক্ষরিক অর্থ ‘সাদা মাথাওয়ালা ঠোঁট বিশিষ্ট পাখি’। পাখিটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৯৩ সেন্টিমিটার, ওজন ৩ কেজির কাছাকাছি। এর লম্বা হলুদ ঠোঁট বাঁকানো, মাথা ও মুখ পালকহীন এবং হলুদ-কমলা রঙের। দেহ, গলা ও পিঠ সাদা; ডানায় ও বুকে কালো ডোরা; লেজ গোলাপি। পা লালচে বা গোলাপি রঙের। স্ত্রী ও পুরুষ দেখতে প্রায় একরকম। এরা অল্প পানিতে হেঁটে মাছ, ব্যাঙ, চিংড়ি, কাঁকড়া, পোকামাকড় ও ছোট সরীসৃপ খায়। বিশ্রামের সময় এক পা ভাঁজ করে দাঁড়িয়ে থাকে। এরা জলাশয়ের ধারের গাছে শুকনো ডাল দিয়ে বড় বাসা তৈরি করে। প্রজনন মৌসুমে স্ত্রী পাখি ৩ থেকে ৫টি ডিম দেয়। সেসব ডিম ফুটে বাচ্চা হয় ২৮ থেকে ৩২ দিনে।
সোনা জঙ্ঘা, রঙ্গিলা, চিত্রা বক কিংবা রঙ্গিলা সারস। নামেই দারুণ রঙিন একটা বিষয় আছে এর। আবার যদি জানেন যে এর নাম রাঙা মানিকজোড়, তাহলে আপনার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুটির কথা মনে হতে পারে, অন্য বন্ধুরা যাকে আপনার মানিকজোড় বলত। এর ইংরেজি নাম পেইন্টেড স্টর্ক। এটি সাঁওতাল সম্প্রদায়ের কাছে পরিচিত জাংগিল নামে। এত কথা বললাম যে পাখির নামে, সেটি এখন মহাবিপন্ন শ্রেণির পাখি। আমাদের দেশের বন্যপ্রাণী আইনে এখন এ পাখি সংরক্ষিত।
শুধু আমাদের দেশ নয়। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আবাসিক পাখি রাঙা মানিকজোড় বর্তমানে প্রায় পুরো বিশ্বে আছে বিলুপ্তির আশঙ্কায়। দেশে এদের রাজশাহী ও বরিশাল বিভাগেই সচরাচর দেখা যায়। পাখিপ্রেমী কিংবা আলোকচিত্রী হিসেবে এই পাখির ব্যাপারে জানাশোনা ছিল আগে থেকে। আর ছবি তোলার আগ্রহ তো বলাই বাহুল্য।
কিন্তু আগ্রহ আর আকাঙ্ক্ষা একটা পর্যায়ে গিয়ে যখন এদের দেখা না পাওয়ার আক্ষেপে রূপ নেওয়ার দ্বারপ্রান্তে, তখনই অনেকটা ধূমকেতুর মতো ঢাকায় এর দেখা মিলেছে বলে খবর পেলাম। সে খবর জানালেন এক অগ্রজ আলোকচিত্রী।
রাজধানী ঢাকার কোল ঘেঁষা কেরানীগঞ্জ। এ বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের শুক্রবারের ঘটনা। তড়িঘড়ি করে বন্ধুপ্রতিম আলোকচিত্রী ডা. অমি ভাইকে সঙ্গে নিয়ে ছুটলাম ছবি তোলার উদ্দেশে। মুঠোফোনে এর অবস্থান সম্পর্কে যৎসামান্য যা তথ্য পেয়েছি, সেখানে পৌঁছে আমাদের মরুভূমিতে সুচ খোঁজা প্রবাদের সার্থকতা উপলব্ধি হলো। ঘণ্টাখানেক হন্য হয়ে কয়েক মাইল এলোপাতাড়ি উঁচুনিচু মাটির রাস্তা আর ফসলি জমির আল মাড়িয়ে হেঁটে, দৌড়ে গলদঘর্ম হয়েও এর দেখা না পেয়ে যখন একরাশ হতাশা নিয়ে ফিরে আসার পরিকল্পনা করছি, তখন সন্ধ্যা প্রায় ঘনিয়ে আসছে। শেষ দাওয়াই হিসেবে অগ্রজ আলোকচিত্রী নাদিম ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলাম। ফেসবুকের কল্যাণে ইতিমধ্যে এটা জেনেছি, তিনি দুপুর নাগাদ সেখানে গিয়ে এই মহা সুন্দর মহাশয়ের ছবি তুলেছেন।
এবার ভাগ্য কিছুটা সহায় হলো। নাদিম ভাই ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হলেন। ভিডিও কলে সংযোগ স্থাপন করে ভদ্রলোক আমাদের পথ নির্দেশনা দিতে লাগলেন। এভাবে মিনিট বিশেক হাঁটার পর এল সেই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত। এক ছোট জলাশয়ের স্বল্প পানিতে বিশাল শরীর নিয়ে রাজকীয় ভঙ্গিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে পাখিটি। মিনিট দু-এক আমি আর আমার আলোকচিত্রী সঙ্গী সবকিছু ভুলে মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাকিয়ে রইলাম এই রঙিন মেজাজের পাখিটির দিকে। যেন অপার্থিব সৌন্দর্যের দূত তার দ্যুতি ছড়াচ্ছে দিগ্বিদিক।
তারপর স্বভাবসুলভ চরিত্রে ফেরত গিয়ে দুজনেই ক্যামেরায় হাত দিলাম। পরের কয়েক মিনিট বিরামহীনভাবে ক্যামেরার শাটারের শব্দ ছাড়া আশপাশে আর কোনো শব্দ আমাদের কর্ণগোচর হয়নি। উপকূল বা চরাঞ্চলের পাখিটিকে রাজধানীর কাছে ফ্রেমবন্দী করে চক্ষু-মনের বিবাদ ভঞ্জন শেষে ফিরতি পথ ধরেছি। ভাবছিলাম, এই পাখিকে চর্মচক্ষুতে দেখার, ছবি তোলার অপেক্ষার নটে গাছটি তো অবশেষে মুড়াল। একে খুঁজে পেতে আদ্যোপান্ত যা করেছি, তা এক রোমাঞ্চকর অভিযানের চেয়ে কম নয়।
রাঙা মানিকজোড় বা পেইন্টেড স্টর্ক বেশ বড় আকারের জলচর পাখি। এর বৈজ্ঞানিক নাম মাইক্টেরিয়া লিউকোসেফালা। এ শব্দ দুটির আক্ষরিক অর্থ ‘সাদা মাথাওয়ালা ঠোঁট বিশিষ্ট পাখি’। পাখিটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৯৩ সেন্টিমিটার, ওজন ৩ কেজির কাছাকাছি। এর লম্বা হলুদ ঠোঁট বাঁকানো, মাথা ও মুখ পালকহীন এবং হলুদ-কমলা রঙের। দেহ, গলা ও পিঠ সাদা; ডানায় ও বুকে কালো ডোরা; লেজ গোলাপি। পা লালচে বা গোলাপি রঙের। স্ত্রী ও পুরুষ দেখতে প্রায় একরকম। এরা অল্প পানিতে হেঁটে মাছ, ব্যাঙ, চিংড়ি, কাঁকড়া, পোকামাকড় ও ছোট সরীসৃপ খায়। বিশ্রামের সময় এক পা ভাঁজ করে দাঁড়িয়ে থাকে। এরা জলাশয়ের ধারের গাছে শুকনো ডাল দিয়ে বড় বাসা তৈরি করে। প্রজনন মৌসুমে স্ত্রী পাখি ৩ থেকে ৫টি ডিম দেয়। সেসব ডিম ফুটে বাচ্চা হয় ২৮ থেকে ৩২ দিনে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার অনুপস্থিতির কারণে সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে আর ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। ফলে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা এবং পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত নামিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে।
৯ ঘণ্টা আগেবৈরী আবহাওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ মে) থেকে বঙ্গোপসাগর বেশ উত্তাল রয়েছে। এরই মধ্যে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে আবহাওয়া অফিস থেকে। তা ছাড়া চলতি মাসের শেষ দিকে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ বা দুর্বল ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে পারে।
১২ ঘণ্টা আগেআজ ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, বৃষ্টি হলেও দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। আজ শুক্রবার, সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত ঢাকা ও আশপাশের এলাকার জন্য পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
১ দিন আগেবাতাসের গুণমান সূচক বা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে (একিউআই) আজ শুক্রবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার বায়ুমান ১৫৭। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ১৫ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ১৪৬ বায়ুমান নিয়ে ৪র্থ স্থানে ছিল ঢাকা।
১ দিন আগে