Ajker Patrika

হাতি শরীরে কাদা মাখে কেন?

আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২৩, ১৬: ৫৪
হাতি শরীরে কাদা মাখে কেন?

বিশালদেহী প্রাণী হাতির সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত হলেও এদের সম্পর্কে খুব বেশি কিছু আমাদের অধিকাংশেরই জানা নেই। এরা যে চমৎকার স্মৃতিশক্তির অধিকারী, প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন ব্যবহার করে কিংবা লবণ সংগ্রহ করে খায় জঙ্গল থেকে এসব তথ্যের কয়টাই বা আমাদের জানা আছে বলুন? বিশ্ব হাতি দিবসে তাই থাকছে হাতি নিয়ে মজার কিছু তথ্য। 

১. হাতিদের তিনটি আলাদা প্রজাতি আছে। আমাদের চিড়িয়াখানায় বা পথে মাহুতের সঙ্গে যে হাতিগুলো দেখেন সেগুলো এশীয় হাতি। বাংলাদেশের পাহাড়-জঙ্গলে এখনো কিছু বুনো এশীয় হাতি টিকে আছে। এ ছাড়া আফ্রিকান হাতি আছে দুই প্রজাতির। একটি আফ্রিকান সাভানা হাতি আরেকটি আফ্রিকান ফরেস্ট হাতি। আফ্রিকান ও এশীয় হাতিদের কান দেখে সহজেই আলাদা করতে পারবেন। আফ্রিকান হাতিদের কান আকারে বড় ও ছড়ানো। আফ্রিকান ফরেস্ট এলিফ্যান্টের বাস কঙ্গোর গহিন জঙ্গলে। সাভানা হাতিদের তুলনায় এদের দাঁত সোজা ও কান বেশি গোলাকার। 

২. আফ্রিকান হাতি তিন মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়, ওজন ৪০০০ থেকে ৭৫০০ কেজি। এশীয় হাতি আকারে একটু ছোট, উচ্চতা ২.৭ মিটার, ওজনে ৩০০০-৬০০০ কেজি। 

৩. হাতির দাঁতের দিকে তাকিয়ে অনেক কিছু বলে দিতে পারবেন। এদের দাঁত সব সময়ই বাড়তে থাকে। তার মানে দীর্ঘ দাঁত হাতিটি যে বয়স্ক সে ইঙ্গিত দেয়। আফ্রিকান হাতি পুরুষ হোক কী স্ত্রী তাদের দাঁত থাকে। তবে এশিয়া হাতিদের বেলায় কেবল পুরুষ বা মদ্দা হাতিদের দাঁত থাকে। 

৪. দিনে ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা ঘাস, লতা-পাতা আর ফল খেয়ে কাটে হাতিদের। লম্বা শুঁড় তাদের খাবারের গন্ধ নিতে সাহায্য করে। তারপর এটার সাহায্যে মজাদার খাবারটা মুখে পুরে নেয়। বেশি খাওয়া মানে বেশি মল ত্যাগ করা। এক সপ্তাহে একটা হাতি মোটামুটি এক টনের মতো মল ত্যাগ করে। এই মল বা নাদি মাটিকে উর্বর করে। এই নাদির মাধ্যমে বিভিন্ন বৃক্ষের বীজও ছড়িয়ে দেয় হাতিরা। হাতিরা মাটি খুঁড়ে পানির উৎস তৈরি করে। তেমনি চলার পথ তৈরি করে। তার মানে একটা হাতি তার আশপাশের এলাকার ভূ-প্রকৃতি পাল্টে দিতে ভূমিকা রাখে। 

৫. হাতিদের শরীরের খনিজের চাহিদা পূরণের জন্য লবণ দরকার হয়। তারা জঙ্গল থেকে নিজেদের জন্য লবণ সংগ্রহ করে নেয়। যেমন কেনিয়ার মাউন্ট এলগনের হাতিদের একটি দল দাঁত দিয়ে মাটির তলের গুহার সল্টলিক থেকে খুঁচিয়ে লবণের চাঁই তুলে আনে। তারপর শুঁড় দিয়ে ভেঙে এই লবণ খায়। 

৬. হাতিদের স্মরণশক্তির কোনো তুলনা নেই। হাতিদের মগজটাও কিন্তু বিশাল। বিশেষ করে মগজের যে অংশের সঙ্গে স্মৃতিশক্তির সম্পর্ক আছে সেটি আকারে অনেক বড়। বহু বছরের ব্যবধানেও দূরবর্তী কোনো পানির উৎস, অন্য হাতি এবং যেসব মানুষের সঙ্গে দেখা হয়েছে তাদের মনে রাখতে পারে হাতিরা। দলনেত্রীর মাধ্যমে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম নিজেদের জ্ঞান সংরক্ষণ করে হাতিরা। এটা প্রাণীটিকে টিকে থাকতে সাহায্য করে। তেমনি স্মরণশক্তি ব্যবহার করে কোনো ফল কখন পাকবে তা বুঝে সময়মতো সেখানে পৌঁছে যেতে পারে হাতিরা। 

৭. হাতিদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ এদের শুঁড়। একটি হাতির শুঁড়ে প্রায় দেড় লাখ পেশি আছে। একবারে শুঁড় দিয়ে আট লিটার পানি তুলতে পারে হাতিরা। সাঁতার কাটার সময় শুঁড়ের সাহায্যে শ্বাস নিতে পারে এরা। 

৮. হাতিরা নিজেদের সানস্ক্রিন তৈরি করে নেয়। কোনো নদী বা জলাভূমিতে গোসলের পর কাদা আর বালু দিয়ে শরীরে প্রলেপের মতো দেয় তারা। এটি গনগনে সূর্যের তাপে পুড়ে যাওয়া থেকে তাদের চামড়াকে রক্ষা করে। 

৯. আশ্চর্যজনক হলেও হাতি শিশু জন্মের ২০ মিনিটের মধ্যে ওঠে দাঁড়াতে পারে এবং এক ঘণ্টার মধ্যে হাঁটা-চলা করতে পারে। 

দক্ষিণ আফ্রিকার একটি অভয়ারণ্যে বুনো হাতির পাল। ছবি: এএফপি১০. হাতিরা মৌমাছিকে ভয় পায়। কৃষকেরা এমনকি নিজেদের জমি থেকে হাতিদের দূরে সরিয়ে রাখতে মৌমাছির চাক ব্যবহার করে। নিউইয়র্ক টাইমসের এক রিপোর্টে জানা যায় এশিয়ার কোনো কোনো খামারি বিপজ্জনক বৈদ্যুতিক তারের বদলে এই কৌশল ব্যবহার করেন হাতি তাড়াতে। তেমনি স্মিথসোনিয়ান ম্যাগাজিন জানিয়েছে কেনিয়ার কৃষকেরা এই পদ্ধতি ব্যবহার করে। 

১১. হাতি হলো একমাত্র স্তন্যপায়ী প্রাণী যে লাফাতে পারে না। এমনকি দৌড়ানোর সময়ও অন্তত দুটি পা মাটিতে থাকে। 

১২. পৃথিবীতে এখন যেসব প্রাণী টিকে আছে এদের মধ্যে হাতির সবচেয়ে নিকটতম জ্ঞাতি কে শুনলে অবাক হবেন। সে মোটেই বিশালাকায় কোনো প্রাণী নয়। তার নাম রক হাইরেক্স। ছোট্ট এই স্তন্যপায়ী প্রাণীটির বাস আফ্রিকা মহাদেশের সাব-সাহারান অঞ্চল ও আরব উপদ্বীপের উপকূলীয় এলাকার পাথুরে জমিতে। 

১৩. হাতিরা চীনাবাদাম খেতে মোটেই পছন্দ করে না। বুনো অবস্থায় তাদের চীনা বাদাম খাবার কোনো খবর মেলেনি। তেমনি চিড়িয়াখানাগুলোতে পোষা হাতিকেও এটি খাওয়ানো হয় না। 

ন্যাট জিও কিডস, ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড, ট্রি হাগার ডট কম, ইনসাইডার ডট কম, স্মিথসোনিয়ান ম্যাগাজিন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন: দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণে বছরে প্রাণ হারাচ্ছে ১০ লাখ মানুষ

  • ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের মধ্যে আছে বাংলাদেশও
  • অস্বাস্থ্যকর বায়ুতে শ্বাস নিচ্ছে কোটি কোটি মানুষ
  • ক্ষতি হচ্ছে জিডিপির ১০ শতাংশের সমপরিমাণ
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দক্ষিণ এশিয়ার গাঙ্গেয় সমভূমি ও হিমালয়ের পাদদেশ (আইজিপি-এইচএফ) অঞ্চলের প্রায় ১০০ কোটি মানুষ নিয়মিত অস্বাস্থ্যকর বায়ুতে শ্বাস নিচ্ছে। এতে বছরে এই অঞ্চলের প্রায় ১০ লাখ মানুষ অকালে প্রাণ হারাচ্ছে। বায়ুদূষণের ফলে অঞ্চলটির অর্থনীতিতে বছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১০ শতাংশের সমপরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে। এই দূষণের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশও।

বিশ্বব্যাংকের ‘এ ব্রেথ অব চেঞ্জ: সলিউশনস ফর ক্লিনার এয়ার ইন দ্য ইন্দো-গেঞ্জেটিক প্লেইনস অ্যান্ড হিমালয়ান ফুটহিলস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সংস্থাটির ঢাকা অফিস থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আইজিপি-এইচএফ অঞ্চলে বায়ুদূষণ এখনো অন্যতম বড় উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। সমন্বিত ও বাস্তবভিত্তিক কিছু পদক্ষেপ নিলে দূষণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব। এতে একই সঙ্গে জনস্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দুটোরই উন্নতি হবে।

গাঙ্গেয় সমভূমি ও হিমালয়ের পাদদেশ অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও ভুটানের অংশবিশেষ। প্রতিবেদনে বলা হয়, এ অঞ্চলের বায়ুদূষণের প্রধান পাঁচটি উৎস রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রান্না ও ঘর গরম করার কাজে লাকড়িজাতীয় কঠিন বস্তু ব্যবহার, শিল্পকারখানায় জীবাশ্ম জ্বালানি (তেল, গ্যাস, কয়লা) ও বায়োম্যাসের ফিল্টার ছাড়া অদক্ষ ব্যবহার, অনুন্নত প্রযুক্তির ইঞ্জিনের যানবাহন চালানো, কৃষকদের খেতের ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো এবং রাসায়নিক সার ও গোবরের অদক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং গৃহস্থালি ও কারখানার বর্জ্য পোড়ানো।

দূষণ কমাতে কয়েকটি তুলনামূলকভাবে সহজে বাস্তবায়নযোগ্য কৌশলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে। এগুলো হলো–বৈদ্যুতিক চুলায় রান্না, শিল্পকারখানার বয়লার, ফার্নেস ও ইটভাটার আধুনিকায়ন, নন-মোটরাইজড ও বৈদ্যুতিক পরিবহনব্যবস্থার প্রসার, কৃষিবর্জ্য ও পশুবর্জ্যের উন্নত ব্যবস্থাপনা এবং বর্জ্য পৃথক্‌করণ ও পুনর্ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া।

প্রতিবেদনে নির্মল বায়ু নিশ্চিত করার কৌশলকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ১. দূষণের উৎসেই নির্গমন কমানোর ব্যবস্থা। ২. স্বাস্থ্য ও শিক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী করে শিশু ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া। ৩. কার্যকর আইন, বাজারভিত্তিক প্রণোদনা ও আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলা।

বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ পরিবেশ অর্থনীতিবিদ মার্টিন হেগার বলেন, ‘নির্মল বায়ু নিশ্চিত করার সমাধানগুলো বাস্তবসম্মত ও কার্যকর। নীতিনির্ধারকদের জন্য এটি একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ দেয়। একই সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার পরিবার, কৃষক ও উদ্যোক্তাদের জন্য পরিচ্ছন্ন প্রযুক্তি ব্যবহারে আর্থিক ও অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক সুযোগ তৈরি করে।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্মল বায়ু নিশ্চিত করতে ‘চারটি আই’ (ইংরেজি আদ্যক্ষর)—তথ্য, প্রণোদনা, প্রতিষ্ঠান এবং অবকাঠামোর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। নির্ভরযোগ্য তথ্যভিত্তিক পরিকল্পনা, পরিচ্ছন্ন বিকল্পে বিনিয়োগে প্রণোদনা, কার্যকর প্রতিষ্ঠান এবং পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ও পরিবহন অবকাঠামো গড়ে তোলাই এই রূপান্তরের মূল চাবিকাঠি।

বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিবেশবিষয়ক প্র্যাকটিস ম্যানেজার অ্যান জিনেট গ্লাউবার বলেন, স্থানীয় থেকে আঞ্চলিক পর্যায় পর্যন্ত সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া নির্মল বায়ু অর্জন সম্ভব নয়। সরকারগুলো একসঙ্গে কাজ করলেই কেবল দূষণ কমানো, লাখো মানুষের জীবন রক্ষা এবং সবার জন্য নিরাপদ বায়ু নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকার বাতাস সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর, আজও দূষণে শীর্ষে দিল্লি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ০২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বেশ কিছুদিন ধরে দিল্লির বাতাসের অবস্থা দুর্যোগপূর্ণ। আজ বৃহস্পতিবার দূষিত শহরের তালিকার শীর্ষে রয়েছে শহরটি। অন্যদিকে ঢাকার বায়ুমান আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে সপ্তম স্থানে রয়েছে ঢাকা।

আইকিউএয়ারের সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ১৯০। যা নির্দেশ করে ঢাকার বাতাসের অবস্থা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।

ঢাকার বেশ কিছু স্থানের বাতাসের অবস্থা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর থেকে খুব অস্বাস্থ্যকর। এর মধ্যে রয়েছে— কল্যাণপুর (২৬০), দক্ষিণ পল্লবী (২৫৬), বেজ এজওয়াটার আউটডোর (১৯৬), গোড়ান (১৯৬) ও বেচারাম দেউরি (১৯০)।

অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরেই দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে দিল্লি। শহরটির একিউআই স্কোর ৩১০। যা এই শহরের বাতাসকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে।

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর (২৭০, খুব অস্বাস্থ্যকর), তৃতীয় স্থানে বসনিয়া-হার্জেগোভিনার সারাজেভ (২২৭, খুব অস্বাস্থ্যকর), চতুর্থ স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের করাচি (২০১, খুব অস্বাস্থ্যকর) এবং পঞ্চম স্থানে রয়েছে মিসরের কায়রো (১৯৪, সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর)।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশিমাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বাতাসের মূল ক্ষতিকারক উপাদান হলো ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫। এটি এতই সূক্ষ্ম যে তা ফুসফুসে এমনকি রক্তপ্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বেড়েছে ঢাকার তাপমাত্রা, জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পৌষ মাসের তৃতীয় দিন আজ। শীতের মৌসুম চলে এলেও রাজধানী ঢাকায় বাড়ছে তাপমাত্রা। আজ বৃহস্পতিবার সকালের আবহাওয়া বুলেটিনে দেখা যায়, গতকালের তুলনায় আজ সকালে তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল মঙ্গলবার ছিল ১৬ দশমিক ৬। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। তবে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৬ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকায় আজ সকালে তাপমাত্রা ১৬.৬

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ২৯
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানী ঢাকায় আকাশ আজ বুধবার ভোর থেকে ছিল হালকা কুয়াশাচ্ছন্ন। তবে হাড়কাঁপানো শীত পড়েনি।

আজ সারা দিন ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলের আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল মঙ্গলবার ছিল ১৬ দশমিক ৬। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮০ শতাংশ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৪ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৫ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত