Ajker Patrika

বড্ড ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন সুমনদা

খায়রুল বাসার নির্ঝর
আপডেট : ০৯ জুলাই ২০২১, ১২: ২৪
বড্ড ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন সুমনদা

১৯৭৩ সাল। কলকাতা। গঙ্গার ধারে মশলামুড়ি খাচ্ছেন কবীর সুমন। বিকেল সম্ভবত। পাঁচ-ছয় বছরের এক ছেলে এল। খালি গা। ঢিলে হাফপ্যান্ট হাঁটুর নিচ অবধি ঝুলছে। নোংরা শরীরে যতখানি বিনয়, তার চেয়ে বেশি অসহায়ত্ব। বলল, ‘বাবু, ঠোঙাটা ফেলো না, ওটা আমি চাটব।’

কবীর সুমন লিখলেন—
‘খিদের কিন্তু সীমান্ত নেই, নেই চিতা নেই কবরটাও
যুদ্ধটাকেই চিতায় তোলো, যুদ্ধটাকেই কবর দাও
...’

দুই.

এর ঠিক বারো বছর পর ১৯৮৫ সালের ঘটনা। স্থান নিকারাগুয়া। মানাগুয়া শহরের পথে পথে হেঁটে বেড়াচ্ছেন কবীর সুমন। ‘তোমাকে চাই’ দিয়ে বাংলা গানের শরীর–মন পাল্টে দেওয়ার ঘটনা কিন্তু ঘটবে আরও সাত বছর পর। নিকারাগুয়া তখনো বয়ে বেড়াচ্ছে যুদ্ধের ক্ষত। ১০০ বছরের বঞ্চনার ক্ষত নিকারাগুয়ার শরীরে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামরিক কর্তৃত্বের ইতিহাস পাল্টে দিয়ে তরুণ বিপ্লবীরা, তথা সমগ্র কৃষক শ্রেণি স্বৈরশাসনের পতন ঘটিয়েছে এর বছর ছয়েক আগে।

কবীর সুমন যখন মানাগুয়ার গলি ধরে হাঁটছেন, তত দিনে বিগত শাসনের রেখে যাওয়া দারিদ্র্য আর ধ্বংসাবশেষ একটু একটু করে সেরে উঠছে। এক কিশোর বাতিল চাকা চালিয়ে খেলছে রাস্তায়। সুমন জিজ্ঞেস করলেন—তোমার দেশে একটা বিপ্লব হয়েছে, তুমি জানো?

‘হ্যাঁ।’
‘বিপ্লব কী?’
কিশোরটি ভাবল মুহূর্ত কয়েক। পবিত্র ভূমিতে পায়ের বুড়ো আঙুল ঘষতে ঘষতে বলল—সোই লা রেভোলুসিয়ন (আমিই বিপ্লব)।

‘আগুন দেখেছি আমি কত জানলায়
কত জানলার কাছে কাতারে কাতার
জমেছে মানুষ, দাবি গরাদ ভাঙার...’

কবীর সুমনের হাসপাতালে ভর্তির খবর সবার বুকেই একটা ধুকপুকানি তৈরি করেছিলতিন.

সাল ২০০৭। এবারের স্থান নন্দীগ্রাম। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ইচ্ছা সেখানে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার। এর জন্য জমি দরকার। যেহেতু মসনদে উঠলে সমগ্র জমিন শাসনযন্ত্রের নিজস্ব উঠোন হয়ে যায়, ফলে তারা চাইল কৃষকদের জমি অধিগ্রহণ করতে। রুখে দাঁড়াল কৃষক, নিরন্ন, অসহায় মানুষ। যারা শাসকের কাছে কেবলই ভোট, কেবলই সংখ্যা। শাসক দল জোট বেঁধে প্রকাশ্যে তাদের খুন করল, গুম করল, ধর্ষণ করল। সঙ্গে অন্য দলগুলো ঢুকে পড়ল, যে যার মতো আখের গোছাতে। প্রতিবাদে শামিল কবীর সুমন। কলকাতা থেকে ৭০ মাইল দূরে; নন্দীগ্রাম।

এক কৃষকের বাড়ির উঠোনে বসে কথা বলছেন। শ্রোতার সারি থেকে একজন প্রবীণ এলেন। সাদা টুপি। সাদা দাঁড়ি। দীর্ঘদেহী। বললেন, ‘আমায় নামাজ পড়তে যেতে হবে। বেশি সময় নেই। শুনুন, আমি বেঁচে থাকলে আপনি ভাত পাবেন। তাই চাল–ডাল পাঠাবেন না আমাদের। একখানা এসএলআর (সেলফ লোডিং রাইফেল) দিন।’

‘আমি বেঁচে থাকলে আপনি ভাত পাবেন’—এই একটি বাক্য কবীর সুমনকে ভাবিয়েছিল বহু দিন, এখনো ভাবায়। এমন কত মুহূর্ত, কত মানুষ, কত হাহাকার তাঁর মাথার ভেতর খোদাই হয়ে আছে! তারপর ওই উত্তাল সময়ে একটি টিভি অনুষ্ঠানে তিনি বলছেন, ‘মাননীয় বন্ধুরা, আমি দীর্ঘকাল সাংবাদিকতা করেছিলাম। মাঝে বছর দশেক ভুল করে, পথ ভুল করে গানটাকে পেশা করেছিলাম। তার জন্য পচতেছি, পচতেছি, পচতেছি...’

কবীর সুমনের এই আক্ষেপের শানেনুজুল আমরা জানি। এসব লিখতে, মগজে রাখতে আমাদের ঘেন্না হয়। যে সমাজে সুমন জন্ম নিচ্ছেন এবং বেড়ে উঠছেন; সেখানেই তিনি দিনের পর দিন হয়েছেন অপমানিত-অপদস্ত। পরপর গানের শো বন্ধ হয়ে যায়। বাড়িতে টেলিফোনে আসে হুমকি ও গালাগাল। কথিত প্রগতিশীল পত্রিকাগুলো তার নামে ছাপায় ব্যঙ্গচিত্র ও মিথ্যের ফুলঝুরি।

অপরাধ?

তিনি খবরের কাগজ থেকে গান পেড়ে আনেন। চিকিৎসকের অবহেলায় যখন হাসপাতালে ছোট্ট পাপড়ি মারা যায়, তখন লেখেন—

‘পাপড়িটা বড় বোকা, হাসপাতালের যন্ত্র
খারাপ হয়েছে হোক না, দেখবি বাঁচবেই গণতন্ত্র’

যখন অনীতা দেওয়ানকে দিনে দুপুরে গণধর্ষণ করা হয় এবং বিচার নিয়ে চলে প্রহসন, কেবল কবীর সুমনই লেখেন তখন—

‘অনীতা দেওয়ান ক্ষমা করো, বড় বেকুবের মতো
গান গাইছি আমি আর কিছু পারি না বলে

কানোরিয়া শ্রমিক আন্দোলনে তাঁকে দেখা যায়। তাঁকে দেখা যায় সিঙ্গুরে; বিদ্রোহী জনতার মাঝখানে।

চার.

অপরাধই বটে!

শিল্পী কেন হিপোক্রেট হবেন না? কেন হবেন তিনি ‘রাজনৈতিক’? কেন ঠান্ডা ঘরে বসে মদের গ্লাসে চুমুক দিয়ে বাজাবেন না ততধিক ঠান্ডা কোনো সুর, নিটোল প্রেমের? মহা অপরাধ!

ফলে আমরা, যারা নব্বইজুড়ে বেঁচে ছিলাম, এখনো আছি—তারা কতিপয়, এবং দেখা যায়, এই ‘কতিপয়’ও নেহাত কম নয়; তারা এই ‘অপরাধী’কে ভালোবাসি। এবং এই দুঃসময়ে, চরম আদর্শিক দীনতার দিনে, একটা গর্ব অন্তত করতে পারি—‘আমরা বেঁচে আছি কবীর সুমনের সময়ে’।

বাহাত্তর পেরিয়ে তিনি মাস তিনেক আগেই পা রেখেছেন তিয়াত্তরে। এখনো তিনি একই, অবিকল। অথচ কতজনই তো চোখের সামনে পাল্টে নিল নিজস্ব রং; শিবির; এককালে যারা মানুষের ছিলেন।

তিন মাস আগে তিয়াত্তরে পা রাখা কবীর সুমন এখনো প্রাণপ্রাচুর্যে অবিকলপাঁচ.

এবারের লড়াইটাও খুব ভালোভাবে লড়লেন কবীর সুমন।

দুই বাংলায় যাঁরা সুমনের গান শোনেন, ঘুণাক্ষরেও পছন্দ করেন বা করতেন কোনো এক সময়ে; দিন কয়েক আগে তাঁরা খানিকটা দুলে উঠেছিলেন। ২৮ জুন রাতে হঠাৎ খবর আসে—কবীর সুমন হাসপাতালে ভর্তি। ৭২ বছরের একটা মানুষ, এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে, চারদিক থেকে যখন কেবল নিখোঁজ সংবাদ ভেসে আসছে; কবীর সুমনের হাসপাতাল ভর্তির খবরটা তাই অনেকগুণ উদ্বেগের হয়ে ধরা দিয়েছিল।

তবে হাসপাতালের বেড তাঁকে বেশিক্ষণ শুইয়ে রাখতে পারেনি। এক দিনের মাথায় সুমন মেরুদণ্ড তুলে উঠে বসেছেন। সবার সঙ্গে গলা মিলিয়ে হেসেছেন। একটা প্রসঙ্গ টেনে অনেকক্ষণ ধরে গল্প করেছেন। ব্যবস্থাপত্রের সব জটিল টার্মকে থোড়াই কেয়ার করে গানওয়ালা কণ্ঠে তুলেছেন রাগ হংসধ্বনি।

ভক্তদের তাবৎ উৎকণ্ঠায় জল ছিটিয়ে হাসপাতাল থেকে এরই মধ্যে ছাড়া পেয়েছেন গানওয়ালা। তারপর ফিরেছেন কাজে, নিজের মতো করে। আগেই সে ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন ফেসবুক স্ট্যাটাসে—‘ছেড়ে দিলেই বাড়ি চলে যাব। ফিরে যাব বাংলা খেয়াল অনুশীলন, রচনা ও শেখানোয়। সেটাই আমার বাকি জীবনের কাজ, ব্রত।’

সেটাই হোক। বাংলা গান আরও বহুদিন পাশে পাক তাঁকে। তবে এবার কিন্তু বড্ড ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন সুমনদা!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাপ্পা মজুমদারের নতুন গান ‘এই ব্যথা’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
বাপ্পা মজুমদার
বাপ্পা মজুমদার

অসংখ্য জনপ্রিয় গানের গায়ক বাপ্পা মজুমদার। গানের সঙ্গেই তাঁর সতত বসবাস। বাংলা গানের এই খরার সময়েও ইউটিউবে নিজের চ্যানেলে নিয়মিত গান প্রকাশ করে যাচ্ছেন বাপ্পা মজুমদার। নিজে যেমন গাইছেন, অন্যদের জন্যেও নতুন গান বাঁধছেন নিয়মিত। এবার তিনি অন্যের কথা ও সুরে গাইলেন ভিন্ন ধাঁচের একটি গান। গানের শিরোনাম ‘এই ব্যথা’।

‘এই ব্যথা কি তোমার অনুগত/ চাইলেই রোদে এসে পেতে দেয় গা/ এই ব্যথা কি দিনান্তে কোনো হাওয়া/ স্বপ্নের মতো সারা রাত্রি জেগে থাকা’—এমন কথায় গানটি লিখেছেন মাহি ফ্লোরা। সুর করেছেন এহসান রাহি, সংগীতায়োজনে আমজাদ হোসেন। গানটির ভিডিও নির্মাণ করেছেন শুভব্রত সরকার। ১৮ ডিসেম্বর ধ্রুব মিউজিক স্টেশনের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ পেয়েছে এই ব্যথা শিরোনামের গানের ভিডিও। পাশাপাশি শোনা যাচ্ছে দেশি ও আন্তর্জাতিক মিউজিক প্ল্যাটফর্মগুলোয়।

এই ব্যথা গানটি প্রসঙ্গে বাপ্পা মজুমদার বলেন, ‘অনেক দিন পর আয়োজন করে একটা গান করা হলো। আমি আনন্দিত। এই টিমে যারা কাজ করেছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই ট্যালেন্টেড। সবাই তাঁদের সেরাটা দিয়েছেন এই গানে। আরও আনন্দের ব্যাপার হলো, আমার বড় কন্যার জন্মদিনে গানটির প্রকাশ আমাকে মুগ্ধতার অন্য জগতে নিয়ে গেছে। গানটির ভিডিও নিয়ে একটু বলতে চাই, এই ধরনের মিউজিক ভিডিও আমাদের দেশে একেবারেই নতুন। দেশের মিউজিক ভিডিওর অঙ্গনে এই ভিডিও ভিন্নমাত্রা এনে দেবে বলে বিশ্বাস করি।’

ধ্রুব মিউজিক স্টেশনের কর্ণধার ধ্রুব গুহ বলেন, ‘বাপ্পাদার এই ব্যথা গানটি প্রকাশ করতে পেরে ধ্রুব মিউজিক স্টেশন আনন্দিত। আমি আশা করছি, গানটি শ্রোতাদের অনেক ভালো লাগবে।’

সম্প্রতি ধ্রুব মিউজিক স্টেশনের কার্যালয়ে গানটির প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করা হয়। নতুন গান প্রকাশ উপলক্ষে বাপ্পা মজুমদারকে শুভেচ্ছা জানাতে উপস্থিত ছিলেন গীতিকার তরুণ মুন্সী, কণ্ঠশিল্পী জুয়েল মোর্শেদ, লুৎফর হাসান, কিশোর দাসসহ সংগীতাঙ্গনের অনেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ওসমান হাদির মৃত্যু: শিল্পী-নির্মাতাদের উদ্বেগ ও শোক প্রকাশ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
অর্ণব, চমক, সিয়াম ও পিয়া
অর্ণব, চমক, সিয়াম ও পিয়া

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের লড়াকু যোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে থমকে গেছে দেশ। শোকাহত দেশের মানুষ। শোকের ছায়া নেমেছে দেশের শোবিজ অঙ্গনেও। একই সঙ্গে তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে ছায়ানট ও গণমাধ্যম কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায়।

হাদি ও তাঁর শিশুপুত্রের একটি ছবি শেয়ার করে ঢাকাই সিনেমার নায়ক সিয়াম আহমেদ লিখেছেন, ‘নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান, ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।’

অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমক লিখেছেন একাধিক পোস্ট। একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘নামটা মনে রেখো, শহীদ-বীর শরিফ ওসমান হাদি।’ অন্য একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘সে কোনো এমপি-মন্ত্রী ছিল না, কারও হক আত্মসাৎ করেনি, সাধারণ মানুষের উপর অন্যায় করেনি। তবুও-সামান্য কথার দায়ে, একটা জীবন এভাবে শেষ হতে পারে?’ ভিন্ন একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘বিশ্ব মিডিয়ায় আলোচনায় আসবে অগ্নিসংযোগ, কিন্তু আসার কথা ছিল হাদির কথা, তাঁর বীরত্বের কথা, খুনের বিচারের কথা। এ দেশে মানুষ মরলে, শোকও নিরাপদ থাকে না। সবকিছুই ঢেকে ফেলা হয় আগুনে, ভাঙচুরে, রাজনীতিতে। এখানে রক্তের রংও রাজনৈতিক। বরাবরই এখানে বিপ্লব বেদখল হয়। বরাবরই আমরা এখানে অসহায়।’

নির্মাতা অনন্য মামুন লিখেছেন, ‘মৃত্যুও পবিত্র সুন্দর হতে পারে, শহীদ হাদিকে না দেখলে বুঝতে পারতাম না।’

অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা ওসমান হাদির একটি ছবি প্রকাশ করে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘শহীদ ওসমান বিন হাদি আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক হয়ে থাকবেন।’

মডেল ও অভিনেত্রী পিয়া জান্নাতুল হাদির পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে লিখেছেন, ‘এটা সত্যিই খুব কষ্টের আর একেবারেই মেনে নেওয়ার মতো না। আল্লাহ যেন তাঁকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করেন, আর তাঁর শোকাহত পরিবারকে, বিশেষ করে তাঁর ছোট্ট বাচ্চাকে ধৈর্য, শক্তি আর সান্ত্বনা দেন।’ গণমাধ্যম কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শোক জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘এটি আমার হৃদয় ভেঙে দিচ্ছে। আগুন ভবন ধ্বংস করতে পারে, সাহস নয়।’

সংগীতশিল্পীদের অস্তিত্ব রক্ষা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে রাজনৈতিক সচেতনতার আহ্বান জানিয়ে অর্ণব লিখেছেন, ‘আমাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকতে হবে এবং ভোট দিতে হবে... নয়তো সংগীতশিল্পীরা বিপদে পড়ব। দেখুন ছায়ানটের সাথে কী করেছে! আমাদের পাল্টা লড়াইয়ের একমাত্র উপায় ভোট দেওয়া এবং অন্যদের ভোট দিতে উৎসাহিত করা।’

অভিনেতা নাসির উদ্দিন খান লিখেছেন, ‘ওসমান হাদির আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। তাঁর পরিবার, তাঁর ছোট্ট বাবুটা এই শোক কাটিয়ে উঠুক। রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, রাজনৈতিক অস্থিরতা দূর হোক। দেশে শান্তি ফিরে আসুক হে দয়াময়।’

নির্মাতা আশফাক নিপুন লিখেছেন, ‘ওসমান হাদি, শান্তিতে ঘুমান। আল্লাহ আপনাকে জান্নাত দান করুন এবং আপনার পরিবার ও সন্তানকে শক্তি দিন। তারা হয়তো আপনাকে হত্যা করেছে কিন্তু আপনার শুরু করা লড়াই তারা থামাতে পারবে না।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘শহীদ ওসমান হাদির অকালমৃত্যুর প্রতিবাদের ভাষা ভাঙচুর, নৈরাজ্য হতে পারে না। এই মুহূর্তে সবার এক থাকা প্রয়োজন। দেশে বিশৃঙ্খলা যারা করতে চায় তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন। তাদের ফাঁদে পা দিয়ে দেশের সম্পদের আর ভবিষ্যতের বারোটা বাজায়েন না!’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিশ্বনন্দিত চীনা ধারাবাহিক এবার বাংলায়

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘রহস্যময়ী’ সিরিয়ালের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
‘রহস্যময়ী’ সিরিয়ালের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

প্রাচীন চীনের ওয়েই সাম্রাজ্যের উত্থান-পতনের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে বহুল আলোচিত চীনা ধারাবাহিক ‘প্রিন্সেস এজেন্টস’। ২০১৭ সালে চীনের হুনান টিভিতে প্রচারের পর ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় ধারাবাহিকটি। এরপর মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মেক্সিকো, পেরুসহ অনেক দেশে অনূদিত হয়ে প্রচারিত হয়েছে। প্রিন্সেস এজেন্টস এবার আসছে বাংলা ভাষায়। দীপ্ত টিভিতে ‘রহস্যময়ী’ নামে আজ ২০ ডিসেম্বর থেকে সপ্তাহের শনি থেকে বৃহস্পতিবার প্রতিদিন বিকেল ৫টা ৫০ মিনিট ও রাত ৮টা ৩০ মিনিটে দেখা যাবে ধারাবাহিকটি।

তিনটি অভিজাত বংশ ওয়েই, ইউয়েন আর ঝাওদের নিয়ে এগিয়ে গেছে ধারাবাহিকের গল্প। সঙ্গে যুক্ত হয় ইয়ান পরিবার এবং কয়েকটি সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা। প্রাদেশিক শাসনকর্তারা যেন বিদ্রোহ করতে না পারে, সে জন্য ওয়েই সম্রাট প্রাদেশিক শাসনকর্তাদের একজন করে ছেলেকে নিজের কাছে এনে রাখে। মার্কুইস ডিংবেই নামে পরিচিত উত্তর ইয়ানের শাসনকর্তা ইয়ান শিচেংয়ের ছেলে প্রিন্স ইয়ান শুন সম্রাটের কাছে বড় হতে থাকে।

ইউয়েন পরিবারের দুজন উত্তরসূরি—ইউয়েন ইউয়ে ও ইউয়েন হুয়ায়। ইউয়েন ইউয়ে অত্যন্ত ধীরস্থির, সৎ এবং কোমল মানসিকতাসম্পন্ন হলেও ইউয়েন হুয়ায় বেশ নিষ্ঠুর আর চঞ্চল। সে যেভাবেই হোক ইউয়েন ইউয়েকে পথ থেকে সরিয়ে দিতে চায়। ঘটনাক্রমে ইউয়েন পরিবারে আগমন ঘটে বিখ্যাত গুপ্তচর লুহির মেয়ে চু-চিয়াওর। অতীতের কিছুই মনে করতে পারে না সে। নিজের যোগ্যতা দিয়ে সে ইউয়েন ইউয়ের ব্যক্তিগত দাসী নির্বাচিত হয়। প্রথম দেখাতেই চু-চিয়াওর প্রেমে পড়ে যায় লর্ড ইউয়েন ইউয়ে। কিন্তু নিজের সামাজিক অবস্থানের জন্য বিষয়টাকে সে কোনোভাবেই প্রকাশ হতে দিতে চায় না।

অন্যদিকে মার্শাল আর্টে দক্ষতা দেখে চু-চিয়াওর প্রেমে পড়ে যায় প্রিন্স ইয়ান শুন। ইউয়েন, ঝাও আর ওয়েইদের মিলিত ষড়যন্ত্রে প্রিন্স ইয়ান শুনের বাবা মার্কুইস ডিংবেই এবং তার পুরো পরিবার প্রাণ হারায়। পরিবারের সঙ্গে না থাকায় প্রাণে বেঁচে যায় প্রিন্স ইয়ান শুন। কিন্তু তরুণ লর্ডরা যেভাবেই হোক ইয়ান শুনকে সরিয়ে দিতে চায়। অন্যদিকে সম্রাট চান ইয়ান শুনকে গৃহবন্দী করে উত্তর ইয়ানের ওপর নিয়ন্ত্রণ।

রহস্যময়ী ধারাবাহিকটির প্রজেক্ট ডিরেক্টর মোর্শেদ সিদ্দিকী মরু, প্রযোজনা করেছেন তসলিমা তাহরিন। ধারাবাহিকটির অনূদিত সংলাপ রচনা ও সম্পাদনায় কাজ করেছেন দীপ্ত টিভির নিজস্ব সংলাপ রচয়িতার দল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টম ক্রুজের নতুন সিনেমা ‘ডিগার’

বিনোদন ডেস্ক
টম ক্রুজ। ছবি: সংগৃহীত
টম ক্রুজ। ছবি: সংগৃহীত

দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা ইথান হান্ট হিসেবে টম ক্রুজ তাঁর যাত্রা শেষ করেছেন এ বছরের মে মাসে। ১৯৯৬ সালে ‘মিশন: ইম্পসিবল’ দিয়ে শুরু হয়েছিল এ যাত্রা। শেষ হয়েছে অষ্টম সিনেমা ‘মিশন: ইম্পসিবল—দ্য ফাইনাল রেকনিং’ দিয়ে। সর্বশেষ সিনেমাটি আয় করেছে প্রায় ছয় শ মিলিয়ন ডলার। এই সাফল্য কাঁধে নিয়েই নতুন জার্নি শুরু করেছেন টম। যুক্ত হয়েছেন মেক্সিকান নির্মাতা আলেহান্দ্রো গঞ্জালেস ইনারিতুর ‘ডিগার’ সিনেমায়।

ইনারিতুর পরিচালনায় কাজ করতে চলেছেন টম ক্রুজ, এ খবর আগেই জানানো হয়েছিল। ১৮ ডিসেম্বর প্রকাশ্যে এসেছে সিনেমার শিরোনাম, পোস্টার এবং ৫০ সেকেন্ডের একটি অ্যানাউন্সমেন্ট টিজার। ওয়ার্নার ব্রস ও লিজেন্ডারি এন্টারটেইনমেন্ট প্রযোজিত ডিগার মুক্তি পাবে ২০২৬ সালের ২ অক্টোবর। এবার আর অ্যাকশন নয়, কমেডি চরিত্রে দেখা দেবেন টম ক্রুজ। টিজারে দেখা গেল, একটি পরিত্যক্ত ভবনের নিচতলায় বেলচা হাতে নাচতে নাচতে ঢুকলেন টম। তারপর চরিত্রটিকে দেখা গেল জাহাজে। একইভাবে বেলচা হাতে নাচতে নাচতে রেলিং ধরে হাঁটছে।

জানা গেছে, ডিগার সিনেমায় রকওয়েল নামের একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন টম ক্রুজ। টিজারে আলো-আঁধারিতে যতখানি দেখা গেল, তাতে মনে হচ্ছে, সম্পূর্ণ ভিন্ন এক লুকে এ সিনেমায় হাজির হবেন তিনি। সিনেমার গল্প কী, তা জানা না গেলেও ধারণা মিলেছে, এতে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী চরিত্র হিসেবে দেখা যাবে টমকে। মানবতার ত্রাণকর্তারূপে এক ভয়ংকর মিশনে নেমেছে রকওয়েল চরিত্রটি। ‘দ্য রেভেন্যান্ট’-এর পর ডিগার দিয়ে আবার ইংরেজি ভাষার সিনেমা নির্মাণে ফিরেছেন ইনারিতু। যুক্তরাজ্যে ছয় মাস ধরে হয়েছে শুটিং। এতে শুধু অভিনয় নয়, ইনারিতুর সঙ্গে যৌথভাবে সিনেমাটি প্রযোজনাও করছেন টম ক্রুজ। তিনি ছাড়া অভিনয়ে আরও আছেন সান্ড্রা হুলার, জন গুডম্যান, মাইকেল স্টুলবার্গ, জেসি প্লেমন্স, সোফি ওয়াইল্ড, রিজ আহমেদ, এমা ডি’আর্সি প্রমুখ।

আগামী ২ অক্টোবর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির আগে ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ার হবে ডিগার সিনেমার। সেখানেই ইনারিতুর তিনটি সিনেমা ‘বারদো: ফলস ক্রনিকল অব আ হ্যান্ডফুল অব ট্রুথস’, ‘বার্ডম্যান’ এবং ‘টোয়েন্টি ওয়ান গ্রামস’ প্রদর্শিত হয়েছিল। ডিগার সিনেমাকে নির্মাতা আলেহান্দ্রো গঞ্জালেস ইনারিতু বর্ণনা করেছেন ‘বিপর্যয়কর মাত্রার একটি নিষ্ঠুর এবং বন্য কমেডি’ হিসেবে। তিনি বলেন, ‘এটি একই সঙ্গে ভয়ংকর, মজার ও সুন্দর। আমি জানি, দর্শক আমার কিংবা টমের কাছ থেকে কমেডি সিনেমা আশা করে না। তবে এর কাহিনিতে কমেডির সঙ্গে অনেকটা ভয়ের মিশেলও থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত