Ajker Patrika

বড্ড ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন সুমনদা

খায়রুল বাসার নির্ঝর
আপডেট : ০৯ জুলাই ২০২১, ১২: ২৪
বড্ড ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন সুমনদা

১৯৭৩ সাল। কলকাতা। গঙ্গার ধারে মশলামুড়ি খাচ্ছেন কবীর সুমন। বিকেল সম্ভবত। পাঁচ-ছয় বছরের এক ছেলে এল। খালি গা। ঢিলে হাফপ্যান্ট হাঁটুর নিচ অবধি ঝুলছে। নোংরা শরীরে যতখানি বিনয়, তার চেয়ে বেশি অসহায়ত্ব। বলল, ‘বাবু, ঠোঙাটা ফেলো না, ওটা আমি চাটব।’

কবীর সুমন লিখলেন—
‘খিদের কিন্তু সীমান্ত নেই, নেই চিতা নেই কবরটাও
যুদ্ধটাকেই চিতায় তোলো, যুদ্ধটাকেই কবর দাও
...’

দুই.

এর ঠিক বারো বছর পর ১৯৮৫ সালের ঘটনা। স্থান নিকারাগুয়া। মানাগুয়া শহরের পথে পথে হেঁটে বেড়াচ্ছেন কবীর সুমন। ‘তোমাকে চাই’ দিয়ে বাংলা গানের শরীর–মন পাল্টে দেওয়ার ঘটনা কিন্তু ঘটবে আরও সাত বছর পর। নিকারাগুয়া তখনো বয়ে বেড়াচ্ছে যুদ্ধের ক্ষত। ১০০ বছরের বঞ্চনার ক্ষত নিকারাগুয়ার শরীরে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামরিক কর্তৃত্বের ইতিহাস পাল্টে দিয়ে তরুণ বিপ্লবীরা, তথা সমগ্র কৃষক শ্রেণি স্বৈরশাসনের পতন ঘটিয়েছে এর বছর ছয়েক আগে।

কবীর সুমন যখন মানাগুয়ার গলি ধরে হাঁটছেন, তত দিনে বিগত শাসনের রেখে যাওয়া দারিদ্র্য আর ধ্বংসাবশেষ একটু একটু করে সেরে উঠছে। এক কিশোর বাতিল চাকা চালিয়ে খেলছে রাস্তায়। সুমন জিজ্ঞেস করলেন—তোমার দেশে একটা বিপ্লব হয়েছে, তুমি জানো?

‘হ্যাঁ।’
‘বিপ্লব কী?’
কিশোরটি ভাবল মুহূর্ত কয়েক। পবিত্র ভূমিতে পায়ের বুড়ো আঙুল ঘষতে ঘষতে বলল—সোই লা রেভোলুসিয়ন (আমিই বিপ্লব)।

‘আগুন দেখেছি আমি কত জানলায়
কত জানলার কাছে কাতারে কাতার
জমেছে মানুষ, দাবি গরাদ ভাঙার...’

কবীর সুমনের হাসপাতালে ভর্তির খবর সবার বুকেই একটা ধুকপুকানি তৈরি করেছিলতিন.

সাল ২০০৭। এবারের স্থান নন্দীগ্রাম। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ইচ্ছা সেখানে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার। এর জন্য জমি দরকার। যেহেতু মসনদে উঠলে সমগ্র জমিন শাসনযন্ত্রের নিজস্ব উঠোন হয়ে যায়, ফলে তারা চাইল কৃষকদের জমি অধিগ্রহণ করতে। রুখে দাঁড়াল কৃষক, নিরন্ন, অসহায় মানুষ। যারা শাসকের কাছে কেবলই ভোট, কেবলই সংখ্যা। শাসক দল জোট বেঁধে প্রকাশ্যে তাদের খুন করল, গুম করল, ধর্ষণ করল। সঙ্গে অন্য দলগুলো ঢুকে পড়ল, যে যার মতো আখের গোছাতে। প্রতিবাদে শামিল কবীর সুমন। কলকাতা থেকে ৭০ মাইল দূরে; নন্দীগ্রাম।

এক কৃষকের বাড়ির উঠোনে বসে কথা বলছেন। শ্রোতার সারি থেকে একজন প্রবীণ এলেন। সাদা টুপি। সাদা দাঁড়ি। দীর্ঘদেহী। বললেন, ‘আমায় নামাজ পড়তে যেতে হবে। বেশি সময় নেই। শুনুন, আমি বেঁচে থাকলে আপনি ভাত পাবেন। তাই চাল–ডাল পাঠাবেন না আমাদের। একখানা এসএলআর (সেলফ লোডিং রাইফেল) দিন।’

‘আমি বেঁচে থাকলে আপনি ভাত পাবেন’—এই একটি বাক্য কবীর সুমনকে ভাবিয়েছিল বহু দিন, এখনো ভাবায়। এমন কত মুহূর্ত, কত মানুষ, কত হাহাকার তাঁর মাথার ভেতর খোদাই হয়ে আছে! তারপর ওই উত্তাল সময়ে একটি টিভি অনুষ্ঠানে তিনি বলছেন, ‘মাননীয় বন্ধুরা, আমি দীর্ঘকাল সাংবাদিকতা করেছিলাম। মাঝে বছর দশেক ভুল করে, পথ ভুল করে গানটাকে পেশা করেছিলাম। তার জন্য পচতেছি, পচতেছি, পচতেছি...’

কবীর সুমনের এই আক্ষেপের শানেনুজুল আমরা জানি। এসব লিখতে, মগজে রাখতে আমাদের ঘেন্না হয়। যে সমাজে সুমন জন্ম নিচ্ছেন এবং বেড়ে উঠছেন; সেখানেই তিনি দিনের পর দিন হয়েছেন অপমানিত-অপদস্ত। পরপর গানের শো বন্ধ হয়ে যায়। বাড়িতে টেলিফোনে আসে হুমকি ও গালাগাল। কথিত প্রগতিশীল পত্রিকাগুলো তার নামে ছাপায় ব্যঙ্গচিত্র ও মিথ্যের ফুলঝুরি।

অপরাধ?

তিনি খবরের কাগজ থেকে গান পেড়ে আনেন। চিকিৎসকের অবহেলায় যখন হাসপাতালে ছোট্ট পাপড়ি মারা যায়, তখন লেখেন—

‘পাপড়িটা বড় বোকা, হাসপাতালের যন্ত্র
খারাপ হয়েছে হোক না, দেখবি বাঁচবেই গণতন্ত্র’

যখন অনীতা দেওয়ানকে দিনে দুপুরে গণধর্ষণ করা হয় এবং বিচার নিয়ে চলে প্রহসন, কেবল কবীর সুমনই লেখেন তখন—

‘অনীতা দেওয়ান ক্ষমা করো, বড় বেকুবের মতো
গান গাইছি আমি আর কিছু পারি না বলে

কানোরিয়া শ্রমিক আন্দোলনে তাঁকে দেখা যায়। তাঁকে দেখা যায় সিঙ্গুরে; বিদ্রোহী জনতার মাঝখানে।

চার.

অপরাধই বটে!

শিল্পী কেন হিপোক্রেট হবেন না? কেন হবেন তিনি ‘রাজনৈতিক’? কেন ঠান্ডা ঘরে বসে মদের গ্লাসে চুমুক দিয়ে বাজাবেন না ততধিক ঠান্ডা কোনো সুর, নিটোল প্রেমের? মহা অপরাধ!

ফলে আমরা, যারা নব্বইজুড়ে বেঁচে ছিলাম, এখনো আছি—তারা কতিপয়, এবং দেখা যায়, এই ‘কতিপয়’ও নেহাত কম নয়; তারা এই ‘অপরাধী’কে ভালোবাসি। এবং এই দুঃসময়ে, চরম আদর্শিক দীনতার দিনে, একটা গর্ব অন্তত করতে পারি—‘আমরা বেঁচে আছি কবীর সুমনের সময়ে’।

বাহাত্তর পেরিয়ে তিনি মাস তিনেক আগেই পা রেখেছেন তিয়াত্তরে। এখনো তিনি একই, অবিকল। অথচ কতজনই তো চোখের সামনে পাল্টে নিল নিজস্ব রং; শিবির; এককালে যারা মানুষের ছিলেন।

তিন মাস আগে তিয়াত্তরে পা রাখা কবীর সুমন এখনো প্রাণপ্রাচুর্যে অবিকলপাঁচ.

এবারের লড়াইটাও খুব ভালোভাবে লড়লেন কবীর সুমন।

দুই বাংলায় যাঁরা সুমনের গান শোনেন, ঘুণাক্ষরেও পছন্দ করেন বা করতেন কোনো এক সময়ে; দিন কয়েক আগে তাঁরা খানিকটা দুলে উঠেছিলেন। ২৮ জুন রাতে হঠাৎ খবর আসে—কবীর সুমন হাসপাতালে ভর্তি। ৭২ বছরের একটা মানুষ, এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে, চারদিক থেকে যখন কেবল নিখোঁজ সংবাদ ভেসে আসছে; কবীর সুমনের হাসপাতাল ভর্তির খবরটা তাই অনেকগুণ উদ্বেগের হয়ে ধরা দিয়েছিল।

তবে হাসপাতালের বেড তাঁকে বেশিক্ষণ শুইয়ে রাখতে পারেনি। এক দিনের মাথায় সুমন মেরুদণ্ড তুলে উঠে বসেছেন। সবার সঙ্গে গলা মিলিয়ে হেসেছেন। একটা প্রসঙ্গ টেনে অনেকক্ষণ ধরে গল্প করেছেন। ব্যবস্থাপত্রের সব জটিল টার্মকে থোড়াই কেয়ার করে গানওয়ালা কণ্ঠে তুলেছেন রাগ হংসধ্বনি।

ভক্তদের তাবৎ উৎকণ্ঠায় জল ছিটিয়ে হাসপাতাল থেকে এরই মধ্যে ছাড়া পেয়েছেন গানওয়ালা। তারপর ফিরেছেন কাজে, নিজের মতো করে। আগেই সে ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন ফেসবুক স্ট্যাটাসে—‘ছেড়ে দিলেই বাড়ি চলে যাব। ফিরে যাব বাংলা খেয়াল অনুশীলন, রচনা ও শেখানোয়। সেটাই আমার বাকি জীবনের কাজ, ব্রত।’

সেটাই হোক। বাংলা গান আরও বহুদিন পাশে পাক তাঁকে। তবে এবার কিন্তু বড্ড ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন সুমনদা!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রীর লাগেজে ৯৩ হাজার ইউরো

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কনা বললেন, মেহেদিরাঙা ছবির সঙ্গে বিয়ের কোনো সম্পর্ক নেই

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
কনা। ছবি: সংগৃহীত
কনা। ছবি: সংগৃহীত

৩ ও ৪ ডিসেম্বর সোশ্যাল মিডিয়ায় মেহেদিরাঙা হাতের দুটি ছবি শেয়ার করেন সংগীতশিল্পী কনা। এরপর গুঞ্জন ওঠে আবার বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন এই শিল্পী। গুঞ্জনের আগুনে ঘি ঢেলেছেন কনা নিজেই। ছবি পোস্ট করলেও এ নিয়ে আর কোনো কথা বলেননি তিনি। ফলে দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে কনার বিয়ের গুজব। গত শুক্রবার জানা যায়, এটি আসলে একটি গানের প্রমোশন। কারণ, ওই দিন সন্ধ্যায় প্রকাশ পায় কনার নতুন গান ‘মেহেন্দি’।

মেহেদিরাঙা হাতের ছবিটি যে বিয়ের গুঞ্জন ছড়িয়েছে তা নজরে এসেছে কনার। তবে এতটা ছড়িয়ে যাবে ভাবেননি তিনি।

আজকের পত্রিকাকে কনা বলেন, ‘মেহেন্দি শিরোনামের গানের শুটিংয়ের ছবি শেয়ার করেছিলাম ফেসবুকে। আমার হাতের মেহেদির ছবিটি দিয়ে লিখেছিলাম আমার হাতে মেহেদি। এরপর যে এমন হয়ে যাবে, সেটা বুঝতে পারিনি। অনেকেই ফোন করে জানতে চাইছিল, আসল ব্যাপারটা কী? কী বলব বুঝতে পারছিলাম না। তা ছাড়া, পরদিনই গানটা রিলিজ হওয়ার কথা। তখন এমনিতেই পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। তাই চুপ করে ছিলাম। এই ছবির সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোনো বিষয় জড়িয়ে নেই, আমার বিয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। এটা শুধু একটা গান।’

মেহেন্দি গানটি যৌথভাবে লিখেছেন বাঁধন ও জামশেদ চৌধুরী। কনার সঙ্গে এতে কণ্ঠ দিয়েছেন নিশ। গানটির সংগীত আয়োজন করেছেন সনজয়। ভিডিও নির্দেশনা দিয়েছেন চন্দন রায় চৌধুরী ও রিয়াজ আলী। মডেল হয়েছেন সুনেরাহ, মাইশা নাজিয়া, মানজিতা রায়সহ আরও কয়েকজন। ভিডিওতে দেখা গেছে কনাকেও। মেহেন্দি গানের ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে কাইনেটিক মিউজিক ইউটিউব চ্যানেলে। প্রকাশের ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ২০ লাখ ভিউ হয়েছে গানটির।

কনা জানান, গান নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। গত সপ্তাহে প্রকাশ পেয়েছে কনার গাওয়া বিকেএসপির প্রথম থিম সং। এর আগে নভেম্বরে প্রকাশ পেয়েছে ফুয়াদ আল মুক্তাদিরের সুরে কনার ‘ভিতর ও বাহিরে’ শিরোনামের গান। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সংগীতশিল্পী মুজার সঙ্গে একাধিক গান নিয়ে কাজ করছেন তিনি। গানগুলো ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ পাবে বলে জানান এই সংগীতশিল্পী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রীর লাগেজে ৯৩ হাজার ইউরো

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাবেয়া খাতুনের সখিনাকে খুঁজছেন আবুল হায়াত

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আবুল হায়াত। ছবি: সংগৃহীত
আবুল হায়াত। ছবি: সংগৃহীত

অভিনয়ের পাশাপাশি নিয়ম করে লেখালেখি ও নির্দেশনার কাজ করেন অভিনেতা আবুল হায়াত। একটা সময় পর্যন্ত অভিনয়েই সময় দিয়েছেন নিয়মিত। এখন আর আগের মতো টানা অভিনয়ে সময় দিচ্ছেন না তিনি। কাজ করছেন বেছে বেছে। গল্প এবং চরিত্র ভালো লাগলে, পরিচালকের সঙ্গে আনুষঙ্গিক বিষয়ে বনিবনা হলেই অভিনয় করেন। সম্প্রতি নির্মাতা সেলিম রেজার নির্দেশনায় একটি নাটকের কাজ শেষ করেছেন। এতে তিনি অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী কেয়া পায়েলের দাদুর চরিত্রে। আগামী দুই দিন তিনি শুটিং করবেন চয়নিকা চৌধুরীর একটি নাটকের। ১০ ডিসেম্বর শুটিং করবেন আরাফাত মোহসীন নিধির ওয়েব সিরিজ ‘আৎকা’র প্রমোশনাল ভিডিওর। অভিনয়ের পাশাপাশি আগামী ঈদের জন্য নাটক নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আবুল হায়াত। নাটকের নাম ‘সখিনা’। রাবেয়া খাতুনের গল্প অবলম্বনে সখিনার চিত্রনাট্যও রচনা করছেন তিনি।

আবুল হায়াত জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই নাটকের চিত্রনাট্যের কাজ গুছিয়ে এনেছেন। এখন খুঁজছেন নাটকের নামভূমিকার অভিনেত্রীকে। গল্পটি ঠিকভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন, এমন অভিনেত্রীর সন্ধান করছেন আবুল হায়াত। একই সঙ্গে সন্ধান করছেন সখিনার সহশিল্পীকেও। চলতি মাসেই সখিনা ও তার বিপরীতে অভিনয়ের জন্য শিল্পী নির্বাচন শেষ করতে চান বলে জানালেন তিনি। এরপরেই নামবেন শুটিংয়ে।

আবুল হায়াত বলেন, ‘এখন সখিনা নিয়েই আমার ভাবনা। সখিনা চরিত্রের জন্য শিল্পী খুঁজছি। যত দ্রুত সম্ভব শিল্পী নির্বাচন শেষ করে শুটিং শুরু করতে চাই। এই মাসের শেষ প্রান্তে কিংবা আগামী মাসেই নাটকটির শুটিং শেষ করতে চাই। আগামী রোজার ঈদে সখিনা নাটকটি প্রচার করার পরিকল্পনা ঈদের টিভি আয়োজনে।’

নিজের ব্যস্ততার কথা জানিয়ে আবুল হায়াত বলেন, ‘এরই মধ্যে কয়েকটি নাটক এবং ওয়েব সিরিজে কাজ করেছি। আগের মতো টানা কাজ করছি না। বেছে বেছে যে গল্প ও চরিত্রগুলো ভালো লাগছে, সেগুলোই করার চেষ্টা করি। বাকি যে সময়টুকু থাকে, বেশির ভাগই বাসায় থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। পরিবারও চায় আমি যেন বাসায় থাকি, বিশ্রামে থাকি। তারপরও মন মানে না। অভিনয় না করলে কেমন অসহায় লাগে। দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন আমাকে সুস্থ রাখেন, ভালো রাখেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রীর লাগেজে ৯৩ হাজার ইউরো

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবের বিচারক আফসানা মিমি

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আফসানা মিমি। ছবি: সংগৃহীত
আফসানা মিমি। ছবি: সংগৃহীত

আগামী বছর অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ২৪তম আসর। শুরু হবে ১০ জানুয়ারি। ৯ দিনব্যাপী উৎসবে প্রদর্শিত হবে ৯১টি দেশের পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য মিলিয়ে প্রায় ২৬৭টি চলচ্চিত্র। ‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদের উদ্যোগে হবে উৎসবটি। এখন প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন আয়োজকেরা। গতকাল ঘোষণা করা হলো দুটি বিভাগের জুরিবোর্ডের সদস্যদের নাম। বিচারকের তালিকায় আছেন অভিনেত্রী ও নির্মাতা আফসানা মিমি।

আফসানা মিমি দায়িত্ব পালন করবেন ওমেন ফিল্মমেকার বিভাগে। যেখানে শুধু নারী নির্মাতাদের নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, স্বল্পদৈর্ঘ্য ও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। এই বিভাগে সেরা পরিচালক, সেরা ডকুমেন্টারি ও সেরা ফিকশন নির্বাচিত হয় নারী নির্মাতা, শিল্পী ও সংস্কৃতি বিশেষজ্ঞ নিয়ে গঠিত স্বাধীন জুরিবোর্ডের মাধ্যমে। মিমি ছাড়া এই বিভাগের জুরিবোর্ডে আছেন যুক্তরাজ্যভিত্তিক ক্রোয়েশীয় ডকুমেন্টারি নির্মাতা ও শিক্ষাবিদ আলেকজান্দ্রা মার্কোভিচ, ইরানি-অস্ট্রেলীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা ও ভিজ্যুয়াল আর্টিস্ট রোনাক তাহের, ফিলিপাইনের খ্যাতনামা চলচ্চিত্র ও মঞ্চ অভিনেত্রী জেরাল্ডিন ভিলামিল এবং প্যারিসভিত্তিক মার্কিন শিক্ষক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা ম্যারিয়ন স্ট্যান্ডেফার।

উৎসবে আরও থাকছে চলচ্চিত্রে নারীর ভূমিকাবিষয়ক ‘টুয়েলভথ আন্তর্জাতিক উইমেন ফিল্ম মেকারস কনফারেন্স’। ১১ ও ১২ জানুয়ারি ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত এই সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নারী নির্মাতা ও গবেষকেরা অংশ নেবেন।

ওমেন ফিল্মমেকার ছাড়া ঘোষণা করা হয়েছে স্পিরিচুয়াল ফিল্মস বিভাগের জুরিদের নাম। এই বিভাগের দায়িত্বে আছেন বাংলাদেশের লেখক ও প্রযোজক তানভীর হোসেন, সুইজারল্যান্ডের প্রজেক্ট ম্যানেজার তেরেসা ভিনা, ব্রাজিলের অডিওভিজ্যুয়াল আর্টিস্ট ও ফটোগ্রাফার মিলিনা কোয়ারজ, জার্মানির নির্মাতা দারিয়া সিলফস্টিন এবং ইরানের প্রযোজক এহসান কাভেহ।

ওমেন ফিল্মমেকার ও স্পিরিচুয়াল ফিল্মসসহ এবারও মোট ১০টি বিভাগ থাকছে ঢাকা উৎসবে। অন্য বিভাগগুলো হলো বাংলাদেশ প্যানোরামা, এশিয়ান সিনেমা সেকশন, রেট্রোস্পেক্টিভ, ট্রিবিউট, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড, চিলড্রেন ফিল্মস ও শর্ট অ্যান্ড ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্মস। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তন ও আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ মিলনায়তনে দেখানো হবে সিনেমাগুলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রীর লাগেজে ৯৩ হাজার ইউরো

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওয়ার্নার ব্রাদার্স কিনে সমালোচনার মুখে নেটফ্লিক্স

বিনোদন ডেস্ক
ওয়ার্নার ব্রাদার্স কিনে সমালোচনার মুখে নেটফ্লিক্স

হলিউডে এখন সবচেয়ে বড় আলোচনার বিষয় নেটফ্লিক্স এবং ওয়ার্নার ব্রস। সবচেয়ে বিতর্কের বিষয়ও। হলিউডের সবচেয়ে পুরোনো ও জনপ্রিয় স্টুডিও ওয়ার্নার ব্রাদার্সের মালিক হতে চলেছে নেটফ্লিক্স। শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে, ৭২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ওয়ার্নার ব্রাদার্স ডিসকভারির টিভি, স্টুডিও ও স্ট্রিমিং ব্যবসা কিনে নিচ্ছে নেটফ্লিক্স। এর মাধ্যমে এইচবিও এবং এইচবিও ম্যাক্সের মতো জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মও নেটফ্লিক্সের কবজায় চলে যাবে। স্ট্রিমিংয়ের দুনিয়ায় এখনই নেটফ্লিক্স সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান, এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে হলিউডে ক্ষমতার ভারসাম্য আরও বেশি ঝুঁকে পড়বে এ প্ল্যাটফর্মের দিকে।

ওয়ার্নার ব্রাদার্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আগামী বছর থেকে দুটি ভাগে ভাগ হয়ে যাবে এই সংস্থা। ওয়ার্নারের একটি ভাগ অধিগ্রহণ করবে নেটফ্লিক্স। অন্য ভাগটি অর্থাৎ ডিসকভারি গ্লোবালের অধীনে থাকবে সিএনএনসহ অন্যান্য চ্যানেল।

বিনোদন দুনিয়ায় এটি নিঃসন্দেহে বড় হাতবদলের ঘটনা। এতে সিনেমা ও টেলিভিশনের জগতে যে বিরাট পরিবর্তন আসবে, তা বলাই বাহুল্য। তবে বিষয়টিকে উদ্বেগের চোখেই দেখছেন হলিউডের নির্মাতা, চিত্রনাট্যকার, অভিনয়শিল্পী, প্রযোজক ও হলমালিকেরা। রাজনীতির অঙ্গনেও জোর চর্চা চলছে।

হলমালিক, নির্মাতা, প্রযোজক ও শিল্পীদের উদ্বেগ

এই চুক্তির খবর প্রকাশ্যে আসার আগেই গত সপ্তাহে নির্মাতা জেমস ক্যামেরন বলেছিলেন, ‘এটি বিপর্যয় সৃষ্টি করবে’। সেই উদ্বেগ ধ্বনিত হলো হলমালিক, নির্মাতা, প্রযোজক ও শিল্পীদের প্রতিক্রিয়ায়। এমনিতেই ওটিটি প্ল্যাটফর্মের বাড়বাড়ন্তে অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত সিনেমা হলের ব্যবসা। তার ওপর ওয়ার্নার ব্রসের মতো বড় স্টুডিও নেটফ্লিক্সের কবজায় চলে গেলে তা মোটেই ভালো হবে না সিনেমা হলের জন্য।

হলের মালিকেরা এই চুক্তিকে তাঁদের ব্যবসার ওপর বড় আঘাত হিসেবেই দেখছেন। ফেডারেল সরকারের প্রতি তাঁরা আহ্বান জানাচ্ছেন, যেন এই চুক্তি বাতিল করা হয়। ওয়ার্নার ব্রস থেকে প্রতিবছর ১২ থেকে ১৪টি সিনেমা মুক্তি পায় প্রেক্ষাগৃহে। নেটফ্লিক্স এই প্রতিষ্ঠান কিনে নিলে তখন ওয়ার্নার ব্রসের সিনেমাগুলো সরাসরি মুক্তি পাবে নেটফ্লিক্সে, এতে প্রেক্ষাগৃহে ভালো সিনেমার সংকট দেখা দেবে।

হলিউডের প্রযোজকদের সংগঠন প্রোডিউসারস গিল্ড অব আমেরিকা এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘প্রযোজকেরা এই চুক্তি সম্পর্কে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। আমাদের ঐতিহ্যবাহী স্টুডিওগুলো শুধু কনটেন্টের লাইব্রেরি নয়। বরং প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ধরন ও সংস্কৃতি রয়েছে।’ অভিনয়শিল্পীদের সংগঠন এসএজি-আফট্রার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিনোদনশিল্পের ভবিষ্যৎ যেদিকে যাচ্ছে, তাতে অনেক গুরুতর প্রশ্ন উঠবে। বিশেষ করে যাদের ক্যারিয়ার এর ওপর নির্ভরশীল, তাদের জন্য হুমকি। ডিরেক্টরস গিল্ড অব আমেরিকাও বিবৃতি প্রকাশ করে উদ্বেগ জানিয়েছে। শিগগিরই নেটফ্লিক্সের সঙ্গে একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন নির্মাতারা।

চুক্তি বাতিল চান লেখকেরা

নেটফ্লিক্স দাবি করেছে, এই চুক্তি শ্রমিকবান্ধব হবে। তবে ভিন্নমত হলিউডের বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের। নেটফ্লিক্স-ওয়ার্নার ব্রসের একীভূতকরণের এই প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সরব রাইটার্স গিল্ড অব আমেরিকা। ২০ হাজারের বেশি লেখক-চিত্রনাট্যকার রয়েছেন এই সংগঠনে। তাঁদের দাবি, যেকোনো মূল্যে এই চুক্তি বাতিল করতে হবে। রাইটার্স গিল্ড অব আমেরিকার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশ্বের বৃহত্তম স্ট্রিমিং কোম্পানি এখন একে একে তার প্রতিযোগীদের গিলে ফেলছে। এর ফলে কাজের সুযোগ কমে যাবে, মজুরি কমবে, বিনোদনকর্মীদের অবস্থা আরও খারাপ হবে, প্রতিযোগিতা কমবে, কনটেন্টের মান ও বৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গ্রাহকেরাও উচ্চ মূল্যে সাবস্ক্রিপশন কিনতে বাধ্য হবে।

উত্তাপ রাজনীতির অঙ্গনে

বিষয়টি নিয়ে শুধু বিনোদন অঙ্গনে নয়, যথেষ্ট উত্তাপ ছড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনেও। ম্যাসাচুসেটসের সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন এই চুক্তিকে ‘দুঃস্বপ্ন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনিসহ অনেক রাজনীতিবিদ ও আইনপ্রণেতার উদ্বেগ, ওয়ার্নার ব্রস কবজায় চলে গেলে আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে নেটফ্লিক্স। বাজারে তাদের একচেটিয়া প্রভাব তৈরি হবে।

সব মিলিয়ে নেটফ্লিক্সের এই চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের প্রতিযোগিতা নিয়ন্ত্রকদের অনুমোদন মিলবে কি না। ওয়াশিংটন ডিসিতে আইনপ্রণেতারা ইতিমধ্যেই এই চুক্তির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিযোগিতা নিয়ন্ত্রকেরা এখনো কোনো মন্তব্য না করলেও সিএনবিসিকে ট্রাম্প প্রশাসনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাঁরা নেটফ্লিক্সের প্রস্তাবটিকে ‘গভীর সন্দেহের চোখে’ দেখছেন। ফলে এই চুক্তি শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়নের মুখ দেখবে কি না, তা নিয়ে বড় প্রশ্ন থাকছে। নেটফ্লিক্সের সহপ্রধান নির্বাহী সারান্ডোস অবশ্য বিশ্বাস করেন, তাঁরা অনুমোদন পাবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রীর লাগেজে ৯৩ হাজার ইউরো

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত