Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

অফিস, বাড়ি আর নিজের সন্তানের বাইরে কিছু ভাবতে মানুষ ভুলে গেছে: শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়

শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত

শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় এখন শুধু বাংলার নন, বলিউডেও তাঁর ব্যস্ততা বেড়েছে। তবু বাংলাদেশের সিরিজে অভিনয়ের প্রস্তাব পেতেই উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠেছিলেন। বাংলাদেশে আসতে পারবেন, এটাই ছিল তাঁর প্রধান আগ্রহের বিষয়। সৈয়দ আহমেদ শাওকীর পরিচালনায় ‘গুলমোহর’ সিরিজের শুটিং করতে গত বছর ঢাকায় এসেছিলেন শাশ্বত। অবশেষে ১৫ মে চরকিতে মুক্তি পাচ্ছে সিরিজটি। সে উপলক্ষে সিরিজটি নিয়ে, ক্যারিয়ারের নানা খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আড্ডায় বসলেন তিনি। শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন খায়রুল বাসার নির্ঝর

খায়রুল বাসার নির্ঝর
আপডেট : ১৫ মে ২০২৫, ০০: ৩০

প্রথমবার বাংলাদেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা কেমন হলো।

এর আগে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ফ্লাই করে গেছি, কিন্তু কখনো যাওয়া হয়নি। ছোটবেলায় অ্যান্টেনার সঙ্গে বুস্টার লাগালে কলকাতা থেকে বিটিভি দেখা যেত। সেই সূত্রে বাংলাদেশের টেলিনাটকের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। সুন্দর সুন্দর নাটক হতো, সেগুলো দেখতাম। এবার প্রথমবার যখন নামি ঢাকা এয়ারপোর্টে, অদ্ভুত এক্সপেরিয়েন্স হলো। ইমিগ্রেশনে গিয়ে দাঁড়িয়েছি, সেখানে যিনি ছিলেন তিনি ‘ক্যামেরার দিকে তাকান’ বলে আমার দিকে তাকিয়ে ফিক্সড হয়ে গেলেন। সঙ্গে একগাল হাসি। বাংলাদেশে ঢোকার একটু আগে, আপনাদের এয়ারপোর্টে আর্মির একটা বেজ আছে, ছোট অফিস গোছের। সেখানে দুজন ইউনিফর্ম পরা ভদ্রলোক এসে বললেন, ‘কোথায় যাচ্ছেন?’ আমি বললাম শুটিং করতে। বললেন, ‘দেশে তো ঢুকতে দেব না।’ আমি বললাম, মানে? আমি এত দূর থেকে আসছি। বললেন, ‘এখানে তো এক কাপ চা না খেয়ে আপনি দেশে ঢুকতে পারবেন না।’ এভাবে বাংলাদেশে আমার এন্ট্রি হলো। এরপর পুরো সময়টা স্বপ্নের মতো কেটেছে।

শারীরিকভাবে এ দেশে প্রথম এলেও এখানকার মানুষের মনে আপনি আরও আগেই জায়গা করে নিয়েছেন, আপনার কাজ দিয়ে...

এটা তো ভাগ্যের ব্যাপার। সত্যি বলতে, এত বছর ধরে কোনো ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকাটা খুবই মুশকিল। যদি না আপনি আপনার ১০০ শতাংশ দেন আপনার কাজের পেছনে। সেটা আমি করার চেষ্টা করেছি, ফাঁকি মারিনি, তার ফল আমি বুঝতে পেরেছি বাংলাদেশের মাটিতে নেমেই।

‘গুলমোহর’ সিরিজের শুটিং করে কেমন লাগল।

খুবই সুন্দর একটা সাবজেক্ট। এ ধরনের কাজ আমাদের এখানে সত্যিই খুব কম হয়। পুরোনো ফ্যামিলির ঐতিহ্য, তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড—সব মিলিয়ে চমকপ্রদ অভিজ্ঞতা। প্রথমবার অন্য দেশের এত বড় বড় শিল্পীর সঙ্গে কাজ, আমি একটু গুটিয়েই ছিলাম। কিন্তু বাকিরা এত সুন্দরভাবে আমাকে অ্যাকসেপ্ট করে নিয়েছেন, এত সহজ করে তুলেছেন যে একবারের জন্যও মনে হয়নি, আমি দেশের বাইরে কাজ করছি।

গুলমোহরে অভিনয়ের ক্ষেত্রে আপনার আগ্রহের প্রধান বিষয় কী ছিল।

আমার তো প্রথমেই লোভ লেগেছিল যে বাংলাদেশে গিয়ে এ রকম একটা গল্পে অভিনয় করব, যেটা কোনো দিন করা হয়নি। বাংলাদেশে এত পুরোনো সুন্দর সুন্দর লোকেশন দেখলাম! এত সবুজে ঘেরা জায়গা! এত ওয়ার্ম হার্টেড মানুষজন! আমরা গিয়েছিলাম মাওয়া বলে একটা জায়গায়। জ্যান্ত ইলিশ দেখে পছন্দ করে একদিন সন্ধ্যাবেলা খাওয়াদাওয়া করেও এসেছি। যে পদ্মা নদীর কথা আমরা এত দিন শুনে এসেছি, চোখের সামনে অত বড় একটা নদী! অদ্ভুত লাগছিল! যেটা টাকি শহর থেকে আমরা দেখি। আমরা যখন টাকির এপারে থাকি, ভারতবর্ষে থাকি, তখন অদ্ভুত লাগে। টাকির এদিকে দাঁড়ালে ওদিক থেকে আজানের শব্দ আসে। আর এবার দেশটার ভেতরে দাঁড়িয়ে সেসব দেখলাম, এই অভিজ্ঞতা বলে বোঝানো যাবে না।

বাংলাদেশে এত পুরোনো সুন্দর সুন্দর লোকেশন দেখলাম! এত সবুজে ঘেরা জায়গা! এত ওয়ার্ম হার্টেড মানুষজন! আমরা গিয়েছিলাম মাওয়া বলে একটা জায়গায়। জ্যান্ত ইলিশ দেখে পছন্দ করে একদিন সন্ধ্যাবেলা খাওয়াদাওয়া করেও এসেছি। যে পদ্মা নদীর কথা আমরা এত দিন শুনে এসেছি, চোখের সামনে অত বড় একটা নদী! অদ্ভুত লাগছিল!

নির্মাতা সৈয়দ আহমেদ শাওকী খুব বেশি কাজ বানাননি, সেই অর্থে তিনি নতুন। তাঁর পরিচালনায় ভরসা রাখার কারণ কী।

আমাকে আগেই বলা হয়েছিল, উনি নতুন হতে পারেন, কিন্তু কাজটা জানেন। একটা ধারা উনি নিয়ে এসেছেন, যেটা এর আগে হয়তো সেভাবে কেউ করেননি। সেটা কাজ করতে করতে বুঝতে পারলাম, উনার মাথা একদম পরিষ্কার, কী চান কী চান না, উনি জানেন। এ ধরনের ডিরেক্টর পাওয়াটা আজকের দিনে দুষ্কর।

গুলমোহরের মতো পারিবারিক ইমোশনের গল্প এখন অনেক কম হচ্ছে, এ কথা আপনি বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলেছেন। এর কারণ কী।

এখন এত নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি হয়ে গেছে! মানুষ অফিস, বাড়ি আর নিজের সন্তানের বাইরে কিছু ভাবতে ভুলে গেছে। এই যে ফ্যামিলির একটা ঐতিহ্য, এই যে আমার আজকে ঠাকুরদাদা যেমন আছেন, ঠাকুরদাদার ছোট ভাইও আমার সঙ্গে আছেন। আমার পিসিমা বিধবা হয়ে যাওয়ার পরে বাড়িতে চলে এসেছেন, তিনিও আছেন। এই যে বন্ডিংগুলো, সেগুলো তো এখন ফ্যামিলি থেকেই হারিয়ে যাচ্ছে। কাজেই ইমোশনও হারাবে।

তাহলে নতুন প্রজন্মের কাছে গুলমোহর সিরিজটি কি ততটা ইমোশনাল হয়ে উঠতে পারবে।

যাদের মন আছে, তাদের কাছে পারবে। যারা ভাবতে পারে, চিন্তা করতে পারে, যারা শুধুই টাকার পেছনে ছুটছে না, সাকসেসের পেছনে ছুটছে না। সে রকম মানুষও তো আছে। সিরিজটা তাদেরকে ছোঁবে। আমি বিশ্বাস করি, সবাইকে কোনো দিন খুশি করা যায় না। কেউ কোনো দিন পারেননি। আমি এমনও শুনেছি, উত্তমকুমারের থেকে অমুক বেটার অ্যাক্টর, অমিতাভ বচ্চন কোনো অ্যাক্টরই নন—এ রকম বলার লোকও আছেন। কাজেই সবাইকে কেউ কোনো দিন খুশি করতে পারেনি। আমিও পারব না। কাজেই যত বেশিসংখ্যক দর্শক আমরা পাব, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আমার মনে হয়, সে ধরনের মানুষ এখনো আছে বলেই পৃথিবীটা চলছে, পারস্পরিক সম্পর্ক, মূল্যবোধ যাদের কাছে খুব ইমপরট্যান্ট।

আপনি একটা সমৃদ্ধ শৈশব পেয়েছেন। আপনার বাবা বিখ্যাত অভিনেতা শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের কারণে ওই সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতাদের সান্নিধ্য পেয়েছেন। এটা আপনার জীবনকে প্রভাবিত করেছে?

বাংলায় একটা কথা আছে জানেন তো, গেয়ো যোগী ভিখ পায় না। ছোটবেলায় এদের কোনো দিন পাত্তা দিইনি, বিশ্বাস করুন। উত্তমকুমার কে, সেটা আমি চিনেছি তিনি মারা যাওয়ার পরে। তখন আপামর ভারতবাসী কান ঢাকছেন, অমিতাভ বচ্চন এসে গেছেন। কিন্তু উত্তম জেঠু চলে যাওয়ার পর আমি কলকাতার রাস্তায় যে পরিস্থিতি দেখেছিলাম, তারপর আমার জানতে ইচ্ছে করেছিল, উনি কে! এ তো উত্তম জেঠু, বাবাও শুটিং করেন, উনিও শুটিং করেন। সিনেমা করেন। উনি আলাদা কী!

ছোটবেলায় ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোলে বসা আমার একটা ছবি আছে, কিন্তু ওটা কোনো দিনই আমার কাছে ইমপরট্যান্ট ছবি বলে মনে হয়নি। ও তো ভানু জেঠু, এ তো উত্তম জেঠু, এ তো সৌমিত্র জেঠু, সাবিত্রী পিসি! পরে তো এদের দেখেই আমি যা শেখার শিখেছি। ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট সিনেমা দেখেই অভিনয় শিখেছি। এবং কোথাও না কোথাও কোনো না কোনো চরিত্রে তাঁদের কোনো না কোনো ইনফ্লুয়েন্স থেকে যাবেই। প্রভাব কিছু থাকবেই। যাঁরা খুব বড়, কোনো কোনো বিষয়ে তাঁদের থেকে বেরিয়ে গিয়ে কিছু করা যায় না। কোথাও না কোথাও একটা ছাপ থেকে যায়। উত্তম জেঠু একবার বলেছিলেন, ‘জমিদারের চরিত্র করব, অথচ ছবি বিশ্বাস ঢুকে থাকবে না মনে, এটা তো হতে পারে না।’ আমি কমেডি করব, কোথাও একটা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, রবি ঘোষ, জহর রায়, তুলসী চক্রবর্তী ঠিক বেরিয়ে যাবে। কিন্তু সেটা কখনোই অনুকরণ নয়। অনুসরণ করতে করতে কোথাও ভেতরে থেকে যায়।

আপনি বেশ কিছু বায়োপিক করেছেন। তবে ‘মেঘে ঢাকা তারা’য় নীলকণ্ঠ বাগচী, মানে ঋত্বিক ঘটকের চরিত্রে আপনার অভিনয় ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছিল। এ সিনেমার পেছনের গল্পটা কী।

কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের ‘মেঘে ঢাকা তারা’য় নীলকণ্ঠ বাগচীর যে চরিত্রটা—ঋত্বিক ঘটকের, সেটা যখন আমাকে করতে বলে, আমার খুব ভয় করেছিল। আমি ঋত্বিক ঘটকের নাম শুনেছি, উনার সিনেমা দেখেছি কিন্তু মানুষটাকে কোনো দিন দেখিনি। আমাকে ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’র ডিভিডি দেওয়া হয়, যাতে উনি অভিনয় করেছিলেন। সেখান থেকে আমি তোলার চেষ্টা করি, মানুষটা কীভাবে তাকাতেন, কীভাবে হাসতেন, কীভাবে বসতেন, এগুলো রপ্ত করার চেষ্টা করেছি। আমার চেহারার সঙ্গে উনার চেহারার কোনো অংশে মিল নেই। সেখানে দাঁড়িয়ে যখন আমাকে ভেঙ্কটেশ ফিল্মস আর কমলেশ্বর বলে যে তোমাকে চরিত্রটা করতে হবে; সত্যিই একটু চিন্তা হয়েছিল। থিয়েটারে আমার যিনি গুরু ছিলেন, জোছন দস্তিদার, তিনি একটা কথা আমাদের শিখিয়েছিলেন—সৃষ্টির গোড়ার কথায় শুধু সাহস। তো সাহস নিয়ে করে ফেলেছি এবং সেটা মানুষের ভালো লেগেছে।

ফেলুদার সঙ্গে তোপসে হিসেবে আপনাকে আজও মনে রেখেছে দর্শক। এ চরিত্রে আপনাকে নাকি স্বয়ং সত্যজিৎ রায় পছন্দ করেছিলেন?

আমি খুবই ভাগ্যবান। কারণ, আমাকে তোপসে মনোনীত করে গিয়েছিলেন মানিক জেঠুই (সত্যজিৎ রায়)। সেটা একটি বিয়েবাড়িতে। আমাকে বিজয়া জেঠিমা ডাকলেন, ‘এদিকে শোন, কী বলছে!’ উনি (সত্যজিৎ) তখন খাচ্ছিলেন। আমি প্রণাম করে দাঁড়ালাম। উনি বললেন, ‘তুমি খুব ভালো তোপসে হতে পারতে।’ কিন্তু উনি তখন অলরেডি ঘোষণা করে দিয়েছেন, উনি আর ফেলুদা করবেন না। আমি বললাম, আপনি তো আর করবেন না। উনি বললেন, ‘কী করে করব, সন্তোষ (সন্তোষ দত্ত, জটায়ু চরিত্রের অভিনেতা) নেই!’ মানে একজন অভিনেতার প্রতি কতটা ভালোবাসা এবং আস্থা একজন ডিরেক্টরের। জটায়ু চলে গেছে বলে ফেলুদাই আর করলেন না! তারপর উনি আমাকে বলেছিলেন, রবির (অভিনেতা রবি ঘোষ) বয়সটা একটু বাড়লে যদি বাবু (সন্দীপ রায়) কোনো দিন ফেলুদা বানায়, তুমি তোপসে করবে।

পরবর্তী সময়ে ফেলুদার অনেক গল্পে সব্যসাচী চক্রবর্তীর সঙ্গে আপনি তোপসে হয়েছেন। আপনাদের জুটি খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল...

ফেলুদার সবচেয়ে বেশি গল্প কিন্তু আমরাই করেছি—আমি আর বেনুদা (সব্যসাচী চক্রবর্তী)। আমরা বোধ হয় ১০-১২টা গল্প করেছি। আমি চার্বাকে (নাট্যদল) অভিনয় করতাম। বেনুদাও চার্বাকে অভিনয় করতেন। তোপসে যেমন ফেলুদাকে রেসপেক্ট করে, ফেলুদা তাঁর গুরু; আমার কাছেও বাস্তব জীবনে সব্যসাচী চক্রবর্তী একধরনের গুরু। কাজেই রসায়নটা খুব ইজি হয়ে গিয়েছিল।

[নানা বিষয়ে আড্ডা চলতে থাকে আরও কিছুক্ষণ। বিদায়ের আগে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘আমার খুব ইচ্ছা ছিল বাংলাদেশে গিয়ে মঞ্চনাটক দেখার। এবার সম্ভব হলো না, দেখা যাক পরে কী হয়!’]

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকদের ঢুকতে না দিয়ে পরীক্ষা নিলেন অভিভাবকেরা

এনসিপি, এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’, মুখপাত্র নাহিদ ইসলাম

সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে বাসার সামনে থেকে তুলে নিয়ে গেল ডিবি

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

বরিশালে ব্যারিস্টার ফুয়াদের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাগ্‌বিতণ্ডা, ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগানে ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কনা বললেন, মেহেদিরাঙা ছবির সঙ্গে বিয়ের কোনো সম্পর্ক নেই

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
কনা। ছবি: সংগৃহীত
কনা। ছবি: সংগৃহীত

৩ ও ৪ ডিসেম্বর সোশ্যাল মিডিয়ায় মেহেদিরাঙা হাতের দুটি ছবি শেয়ার করেন সংগীতশিল্পী কনা। এরপর গুঞ্জন ওঠে আবার বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন এই শিল্পী। গুঞ্জনের আগুনে ঘি ঢেলেছেন কনা নিজেই। ছবি পোস্ট করলেও এ নিয়ে আর কোনো কথা বলেননি তিনি। ফলে দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে কনার বিয়ের গুজব। গত শুক্রবার জানা যায়, এটি আসলে একটি গানের প্রমোশন। কারণ, ওই দিন সন্ধ্যায় প্রকাশ পায় কনার নতুন গান ‘মেহেন্দি’।

মেহেদিরাঙা হাতের ছবিটি যে বিয়ের গুঞ্জন ছড়িয়েছে তা নজরে এসেছে কনার। তবে এতটা ছড়িয়ে যাবে ভাবেননি তিনি।

আজকের পত্রিকাকে কনা বলেন, ‘মেহেন্দি শিরোনামের গানের শুটিংয়ের ছবি শেয়ার করেছিলাম ফেসবুকে। আমার হাতের মেহেদির ছবিটি দিয়ে লিখেছিলাম আমার হাতে মেহেদি। এরপর যে এমন হয়ে যাবে, সেটা বুঝতে পারিনি। অনেকেই ফোন করে জানতে চাইছিল, আসল ব্যাপারটা কী? কী বলব বুঝতে পারছিলাম না। তা ছাড়া, পরদিনই গানটা রিলিজ হওয়ার কথা। তখন এমনিতেই পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। তাই চুপ করে ছিলাম। এই ছবির সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোনো বিষয় জড়িয়ে নেই, আমার বিয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। এটা শুধু একটা গান।’

মেহেন্দি গানটি যৌথভাবে লিখেছেন বাঁধন ও জামশেদ চৌধুরী। কনার সঙ্গে এতে কণ্ঠ দিয়েছেন নিশ। গানটির সংগীত আয়োজন করেছেন সনজয়। ভিডিও নির্দেশনা দিয়েছেন চন্দন রায় চৌধুরী ও রিয়াজ আলী। মডেল হয়েছেন সুনেরাহ, মাইশা নাজিয়া, মানজিতা রায়সহ আরও কয়েকজন। ভিডিওতে দেখা গেছে কনাকেও। মেহেন্দি গানের ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে কাইনেটিক মিউজিক ইউটিউব চ্যানেলে। প্রকাশের ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ২০ লাখ ভিউ হয়েছে গানটির।

কনা জানান, গান নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। গত সপ্তাহে প্রকাশ পেয়েছে কনার গাওয়া বিকেএসপির প্রথম থিম সং। এর আগে নভেম্বরে প্রকাশ পেয়েছে ফুয়াদ আল মুক্তাদিরের সুরে কনার ‘ভিতর ও বাহিরে’ শিরোনামের গান। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সংগীতশিল্পী মুজার সঙ্গে একাধিক গান নিয়ে কাজ করছেন তিনি। গানগুলো ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ পাবে বলে জানান এই সংগীতশিল্পী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকদের ঢুকতে না দিয়ে পরীক্ষা নিলেন অভিভাবকেরা

এনসিপি, এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’, মুখপাত্র নাহিদ ইসলাম

সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে বাসার সামনে থেকে তুলে নিয়ে গেল ডিবি

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

বরিশালে ব্যারিস্টার ফুয়াদের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাগ্‌বিতণ্ডা, ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগানে ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাবেয়া খাতুনের সখিনাকে খুঁজছেন আবুল হায়াত

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আবুল হায়াত। ছবি: সংগৃহীত
আবুল হায়াত। ছবি: সংগৃহীত

অভিনয়ের পাশাপাশি নিয়ম করে লেখালেখি ও নির্দেশনার কাজ করেন অভিনেতা আবুল হায়াত। একটা সময় পর্যন্ত অভিনয়েই সময় দিয়েছেন নিয়মিত। এখন আর আগের মতো টানা অভিনয়ে সময় দিচ্ছেন না তিনি। কাজ করছেন বেছে বেছে। গল্প এবং চরিত্র ভালো লাগলে, পরিচালকের সঙ্গে আনুষঙ্গিক বিষয়ে বনিবনা হলেই অভিনয় করেন। সম্প্রতি নির্মাতা সেলিম রেজার নির্দেশনায় একটি নাটকের কাজ শেষ করেছেন। এতে তিনি অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী কেয়া পায়েলের দাদুর চরিত্রে। আগামী দুই দিন তিনি শুটিং করবেন চয়নিকা চৌধুরীর একটি নাটকের। ১০ ডিসেম্বর শুটিং করবেন আরাফাত মোহসীন নিধির ওয়েব সিরিজ ‘আৎকা’র প্রমোশনাল ভিডিওর। অভিনয়ের পাশাপাশি আগামী ঈদের জন্য নাটক নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আবুল হায়াত। নাটকের নাম ‘সখিনা’। রাবেয়া খাতুনের গল্প অবলম্বনে সখিনার চিত্রনাট্যও রচনা করছেন তিনি।

আবুল হায়াত জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই নাটকের চিত্রনাট্যের কাজ গুছিয়ে এনেছেন। এখন খুঁজছেন নাটকের নামভূমিকার অভিনেত্রীকে। গল্পটি ঠিকভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন, এমন অভিনেত্রীর সন্ধান করছেন আবুল হায়াত। একই সঙ্গে সন্ধান করছেন সখিনার সহশিল্পীকেও। চলতি মাসেই সখিনা ও তার বিপরীতে অভিনয়ের জন্য শিল্পী নির্বাচন শেষ করতে চান বলে জানালেন তিনি। এরপরেই নামবেন শুটিংয়ে।

আবুল হায়াত বলেন, ‘এখন সখিনা নিয়েই আমার ভাবনা। সখিনা চরিত্রের জন্য শিল্পী খুঁজছি। যত দ্রুত সম্ভব শিল্পী নির্বাচন শেষ করে শুটিং শুরু করতে চাই। এই মাসের শেষ প্রান্তে কিংবা আগামী মাসেই নাটকটির শুটিং শেষ করতে চাই। আগামী রোজার ঈদে সখিনা নাটকটি প্রচার করার পরিকল্পনা ঈদের টিভি আয়োজনে।’

নিজের ব্যস্ততার কথা জানিয়ে আবুল হায়াত বলেন, ‘এরই মধ্যে কয়েকটি নাটক এবং ওয়েব সিরিজে কাজ করেছি। আগের মতো টানা কাজ করছি না। বেছে বেছে যে গল্প ও চরিত্রগুলো ভালো লাগছে, সেগুলোই করার চেষ্টা করি। বাকি যে সময়টুকু থাকে, বেশির ভাগই বাসায় থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। পরিবারও চায় আমি যেন বাসায় থাকি, বিশ্রামে থাকি। তারপরও মন মানে না। অভিনয় না করলে কেমন অসহায় লাগে। দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন আমাকে সুস্থ রাখেন, ভালো রাখেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকদের ঢুকতে না দিয়ে পরীক্ষা নিলেন অভিভাবকেরা

এনসিপি, এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’, মুখপাত্র নাহিদ ইসলাম

সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে বাসার সামনে থেকে তুলে নিয়ে গেল ডিবি

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

বরিশালে ব্যারিস্টার ফুয়াদের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাগ্‌বিতণ্ডা, ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগানে ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবের বিচারক আফসানা মিমি

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আফসানা মিমি। ছবি: সংগৃহীত
আফসানা মিমি। ছবি: সংগৃহীত

আগামী বছর অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ২৪তম আসর। শুরু হবে ১০ জানুয়ারি। ৯ দিনব্যাপী উৎসবে প্রদর্শিত হবে ৯১টি দেশের পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য মিলিয়ে প্রায় ২৬৭টি চলচ্চিত্র। ‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদের উদ্যোগে হবে উৎসবটি। এখন প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন আয়োজকেরা। গতকাল ঘোষণা করা হলো দুটি বিভাগের জুরিবোর্ডের সদস্যদের নাম। বিচারকের তালিকায় আছেন অভিনেত্রী ও নির্মাতা আফসানা মিমি।

আফসানা মিমি দায়িত্ব পালন করবেন ওমেন ফিল্মমেকার বিভাগে। যেখানে শুধু নারী নির্মাতাদের নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, স্বল্পদৈর্ঘ্য ও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। এই বিভাগে সেরা পরিচালক, সেরা ডকুমেন্টারি ও সেরা ফিকশন নির্বাচিত হয় নারী নির্মাতা, শিল্পী ও সংস্কৃতি বিশেষজ্ঞ নিয়ে গঠিত স্বাধীন জুরিবোর্ডের মাধ্যমে। মিমি ছাড়া এই বিভাগের জুরিবোর্ডে আছেন যুক্তরাজ্যভিত্তিক ক্রোয়েশীয় ডকুমেন্টারি নির্মাতা ও শিক্ষাবিদ আলেকজান্দ্রা মার্কোভিচ, ইরানি-অস্ট্রেলীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা ও ভিজ্যুয়াল আর্টিস্ট রোনাক তাহের, ফিলিপাইনের খ্যাতনামা চলচ্চিত্র ও মঞ্চ অভিনেত্রী জেরাল্ডিন ভিলামিল এবং প্যারিসভিত্তিক মার্কিন শিক্ষক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা ম্যারিয়ন স্ট্যান্ডেফার।

উৎসবে আরও থাকছে চলচ্চিত্রে নারীর ভূমিকাবিষয়ক ‘টুয়েলভথ আন্তর্জাতিক উইমেন ফিল্ম মেকারস কনফারেন্স’। ১১ ও ১২ জানুয়ারি ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত এই সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নারী নির্মাতা ও গবেষকেরা অংশ নেবেন।

ওমেন ফিল্মমেকার ছাড়া ঘোষণা করা হয়েছে স্পিরিচুয়াল ফিল্মস বিভাগের জুরিদের নাম। এই বিভাগের দায়িত্বে আছেন বাংলাদেশের লেখক ও প্রযোজক তানভীর হোসেন, সুইজারল্যান্ডের প্রজেক্ট ম্যানেজার তেরেসা ভিনা, ব্রাজিলের অডিওভিজ্যুয়াল আর্টিস্ট ও ফটোগ্রাফার মিলিনা কোয়ারজ, জার্মানির নির্মাতা দারিয়া সিলফস্টিন এবং ইরানের প্রযোজক এহসান কাভেহ।

ওমেন ফিল্মমেকার ও স্পিরিচুয়াল ফিল্মসসহ এবারও মোট ১০টি বিভাগ থাকছে ঢাকা উৎসবে। অন্য বিভাগগুলো হলো বাংলাদেশ প্যানোরামা, এশিয়ান সিনেমা সেকশন, রেট্রোস্পেক্টিভ, ট্রিবিউট, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড, চিলড্রেন ফিল্মস ও শর্ট অ্যান্ড ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্মস। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তন ও আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ মিলনায়তনে দেখানো হবে সিনেমাগুলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকদের ঢুকতে না দিয়ে পরীক্ষা নিলেন অভিভাবকেরা

এনসিপি, এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’, মুখপাত্র নাহিদ ইসলাম

সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে বাসার সামনে থেকে তুলে নিয়ে গেল ডিবি

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

বরিশালে ব্যারিস্টার ফুয়াদের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাগ্‌বিতণ্ডা, ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগানে ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওয়ার্নার ব্রাদার্স কিনে সমালোচনার মুখে নেটফ্লিক্স

বিনোদন ডেস্ক
ওয়ার্নার ব্রাদার্স কিনে সমালোচনার মুখে নেটফ্লিক্স

হলিউডে এখন সবচেয়ে বড় আলোচনার বিষয় নেটফ্লিক্স এবং ওয়ার্নার ব্রস। সবচেয়ে বিতর্কের বিষয়ও। হলিউডের সবচেয়ে পুরোনো ও জনপ্রিয় স্টুডিও ওয়ার্নার ব্রাদার্সের মালিক হতে চলেছে নেটফ্লিক্স। শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে, ৭২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ওয়ার্নার ব্রাদার্স ডিসকভারির টিভি, স্টুডিও ও স্ট্রিমিং ব্যবসা কিনে নিচ্ছে নেটফ্লিক্স। এর মাধ্যমে এইচবিও এবং এইচবিও ম্যাক্সের মতো জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মও নেটফ্লিক্সের কবজায় চলে যাবে। স্ট্রিমিংয়ের দুনিয়ায় এখনই নেটফ্লিক্স সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান, এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে হলিউডে ক্ষমতার ভারসাম্য আরও বেশি ঝুঁকে পড়বে এ প্ল্যাটফর্মের দিকে।

ওয়ার্নার ব্রাদার্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আগামী বছর থেকে দুটি ভাগে ভাগ হয়ে যাবে এই সংস্থা। ওয়ার্নারের একটি ভাগ অধিগ্রহণ করবে নেটফ্লিক্স। অন্য ভাগটি অর্থাৎ ডিসকভারি গ্লোবালের অধীনে থাকবে সিএনএনসহ অন্যান্য চ্যানেল।

বিনোদন দুনিয়ায় এটি নিঃসন্দেহে বড় হাতবদলের ঘটনা। এতে সিনেমা ও টেলিভিশনের জগতে যে বিরাট পরিবর্তন আসবে, তা বলাই বাহুল্য। তবে বিষয়টিকে উদ্বেগের চোখেই দেখছেন হলিউডের নির্মাতা, চিত্রনাট্যকার, অভিনয়শিল্পী, প্রযোজক ও হলমালিকেরা। রাজনীতির অঙ্গনেও জোর চর্চা চলছে।

হলমালিক, নির্মাতা, প্রযোজক ও শিল্পীদের উদ্বেগ

এই চুক্তির খবর প্রকাশ্যে আসার আগেই গত সপ্তাহে নির্মাতা জেমস ক্যামেরন বলেছিলেন, ‘এটি বিপর্যয় সৃষ্টি করবে’। সেই উদ্বেগ ধ্বনিত হলো হলমালিক, নির্মাতা, প্রযোজক ও শিল্পীদের প্রতিক্রিয়ায়। এমনিতেই ওটিটি প্ল্যাটফর্মের বাড়বাড়ন্তে অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত সিনেমা হলের ব্যবসা। তার ওপর ওয়ার্নার ব্রসের মতো বড় স্টুডিও নেটফ্লিক্সের কবজায় চলে গেলে তা মোটেই ভালো হবে না সিনেমা হলের জন্য।

হলের মালিকেরা এই চুক্তিকে তাঁদের ব্যবসার ওপর বড় আঘাত হিসেবেই দেখছেন। ফেডারেল সরকারের প্রতি তাঁরা আহ্বান জানাচ্ছেন, যেন এই চুক্তি বাতিল করা হয়। ওয়ার্নার ব্রস থেকে প্রতিবছর ১২ থেকে ১৪টি সিনেমা মুক্তি পায় প্রেক্ষাগৃহে। নেটফ্লিক্স এই প্রতিষ্ঠান কিনে নিলে তখন ওয়ার্নার ব্রসের সিনেমাগুলো সরাসরি মুক্তি পাবে নেটফ্লিক্সে, এতে প্রেক্ষাগৃহে ভালো সিনেমার সংকট দেখা দেবে।

হলিউডের প্রযোজকদের সংগঠন প্রোডিউসারস গিল্ড অব আমেরিকা এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘প্রযোজকেরা এই চুক্তি সম্পর্কে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। আমাদের ঐতিহ্যবাহী স্টুডিওগুলো শুধু কনটেন্টের লাইব্রেরি নয়। বরং প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ধরন ও সংস্কৃতি রয়েছে।’ অভিনয়শিল্পীদের সংগঠন এসএজি-আফট্রার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিনোদনশিল্পের ভবিষ্যৎ যেদিকে যাচ্ছে, তাতে অনেক গুরুতর প্রশ্ন উঠবে। বিশেষ করে যাদের ক্যারিয়ার এর ওপর নির্ভরশীল, তাদের জন্য হুমকি। ডিরেক্টরস গিল্ড অব আমেরিকাও বিবৃতি প্রকাশ করে উদ্বেগ জানিয়েছে। শিগগিরই নেটফ্লিক্সের সঙ্গে একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন নির্মাতারা।

চুক্তি বাতিল চান লেখকেরা

নেটফ্লিক্স দাবি করেছে, এই চুক্তি শ্রমিকবান্ধব হবে। তবে ভিন্নমত হলিউডের বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের। নেটফ্লিক্স-ওয়ার্নার ব্রসের একীভূতকরণের এই প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সরব রাইটার্স গিল্ড অব আমেরিকা। ২০ হাজারের বেশি লেখক-চিত্রনাট্যকার রয়েছেন এই সংগঠনে। তাঁদের দাবি, যেকোনো মূল্যে এই চুক্তি বাতিল করতে হবে। রাইটার্স গিল্ড অব আমেরিকার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশ্বের বৃহত্তম স্ট্রিমিং কোম্পানি এখন একে একে তার প্রতিযোগীদের গিলে ফেলছে। এর ফলে কাজের সুযোগ কমে যাবে, মজুরি কমবে, বিনোদনকর্মীদের অবস্থা আরও খারাপ হবে, প্রতিযোগিতা কমবে, কনটেন্টের মান ও বৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গ্রাহকেরাও উচ্চ মূল্যে সাবস্ক্রিপশন কিনতে বাধ্য হবে।

উত্তাপ রাজনীতির অঙ্গনে

বিষয়টি নিয়ে শুধু বিনোদন অঙ্গনে নয়, যথেষ্ট উত্তাপ ছড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনেও। ম্যাসাচুসেটসের সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন এই চুক্তিকে ‘দুঃস্বপ্ন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনিসহ অনেক রাজনীতিবিদ ও আইনপ্রণেতার উদ্বেগ, ওয়ার্নার ব্রস কবজায় চলে গেলে আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে নেটফ্লিক্স। বাজারে তাদের একচেটিয়া প্রভাব তৈরি হবে।

সব মিলিয়ে নেটফ্লিক্সের এই চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের প্রতিযোগিতা নিয়ন্ত্রকদের অনুমোদন মিলবে কি না। ওয়াশিংটন ডিসিতে আইনপ্রণেতারা ইতিমধ্যেই এই চুক্তির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিযোগিতা নিয়ন্ত্রকেরা এখনো কোনো মন্তব্য না করলেও সিএনবিসিকে ট্রাম্প প্রশাসনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাঁরা নেটফ্লিক্সের প্রস্তাবটিকে ‘গভীর সন্দেহের চোখে’ দেখছেন। ফলে এই চুক্তি শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়নের মুখ দেখবে কি না, তা নিয়ে বড় প্রশ্ন থাকছে। নেটফ্লিক্সের সহপ্রধান নির্বাহী সারান্ডোস অবশ্য বিশ্বাস করেন, তাঁরা অনুমোদন পাবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকদের ঢুকতে না দিয়ে পরীক্ষা নিলেন অভিভাবকেরা

এনসিপি, এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’, মুখপাত্র নাহিদ ইসলাম

সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে বাসার সামনে থেকে তুলে নিয়ে গেল ডিবি

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

বরিশালে ব্যারিস্টার ফুয়াদের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাগ্‌বিতণ্ডা, ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগানে ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত