Ajker Patrika

গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ

দেশেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডেটা সায়েন্সে স্নাতক করার সুযোগ

ইলিয়াস শান্ত, ঢাকা
আপডেট : ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪: ২৭
দেশেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডেটা সায়েন্সে স্নাতক করার সুযোগ

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) বা এআই আধুনিক প্রযুক্তির সবচেয়ে আলোচিত এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে নকল করে কাজ সম্পাদন করাই এর প্রধান কাজ। স্বাস্থ্যসেবা, ব্যবসা, শিক্ষা, কৃষি থেকে শুরু করে সৃজনশীল শিল্প—প্রতিটি ক্ষেত্রে এআইয়ের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। বিশ্বের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এরই মধ্যে সরাসরি এআই ডিগ্রি প্রোগ্রাম চালু করেছে। দেশে প্রথমবারের মতো চার বছর মেয়াদি বিএসসি ইন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং ডেটা সায়েন্স প্রোগ্রাম চালু করেছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। ২৫ জানুয়ারি থেকে এআই প্রোগ্রামের অধীনে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রথম সেমিস্টারের শ্রেণি পাঠদান শুরু হবে।

নতুন এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিভিন্ন শাখা সম্পর্কে জানার সুযোগ পাবেন এবং আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ শিখতে পারবেন। এটি শুধু তাঁদের পেশাগত দক্ষতা বাড়াবে না, বরং প্রযুক্তিচালিত ভবিষ্যতের সঙ্গে মানিয়ে নিতে তাঁদের প্রস্তুত করবে। বর্তমানে ডেটা সায়েন্স তথ্য বিশ্লেষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হিসেবে বিকাশ ঘটছে, যা সিদ্ধান্ত গ্রহণের কৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই প্রোগ্রাম শিক্ষার্থীদের ডেটা সংগ্রহ, বিশ্লেষণ এবং সমস্যা সমাধান করতে সহায়তা করবে, ফলে তাঁরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে; যেমন ব্যবসা, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ইত্যাদিতে কাজ করার যোগ্য হয়ে উঠবেন। বিশ্ববিদ্যালয়-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তির প্রভাব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এআই এবং ডেটা সায়েন্সে দক্ষ পেশাদারদের চাহিদাও দ্রুত বাড়ছে।

এই প্রোগ্রামের বৈশিষ্ট্য

চার বছরের বিএসসি প্রোগ্রামে শিক্ষার্থীরা মেশিন লার্নিং, বিগ ডেটা অ্যানালিটিকস, নিউরাল নেটওয়ার্ক, ক্লাউড কম্পিউটিং, কম্পিউটার প্রোগ্রামিং, এআই ইথিকসসহ আধুনিক ও প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন বিষয়ের ওপর দক্ষতা অর্জন করবেন। গ্রিন ইউনিভার্সিটির উন্নত ল্যাব সুবিধা এবং হাতে-কলমে শেখার সুযোগ শিক্ষার্থীদের বাস্তব কাজের অভিজ্ঞতা দেবে, যা তাঁদের কর্মজীবনে সফল হতে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা করবে।

রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষক

বিশ্ববিদ্যালয়টি এআই কোর্সের জন্য আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষকদের নিয়োগ করেছে, যাঁরা এআই গবেষণায় সুপরিচিত এবং বাস্তব জীবনে সমস্যা সমাধানে অভিজ্ঞ। এই শিক্ষকদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা অত্যাধুনিক গবেষণা ও বৈশ্বিক প্রযুক্তিগত প্রবণতার সঙ্গে পরিচিত হবেন। প্রাথমিক পর্যায়ে চারজন শিক্ষক দিয়ে এ বিভাগের যাত্রা শুরু হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে একজন পিএইচডি ডিগ্রিধারী অধ্যাপক, একজন সহযোগী অধ্যাপক এবং দুজন লেকচারার রয়েছেন। বেশির ভাগ শিক্ষকের বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি রয়েছে।

সাশ্রয়ী খরচে এআই গ্র্যাজুয়েট

গ্রিন ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীদের জন্য উন্নত অবকাঠামো এবং সাশ্রয়ী খরচে শিক্ষার সুযোগ তৈরি করেছে। ঢাকার সন্নিকটে পূর্বাচল আমেরিকান সিটির নান্দনিক পরিবেশে স্থায়ী ক্যাম্পাস গড়ে তোলা হয়েছে, যেখানে শিক্ষার্থীরা আধুনিক সুবিধা উপভোগ করছেন। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে অর্ধশতাধিক বাস ও মাইক্রোবাসের ব্যবস্থা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এ ছাড়া সাশ্রয়ী খরচে কোর্স সম্পন্ন করার সুযোগও রয়েছে। চার বছর মেয়াদি এই কোর্স সম্পন্ন করতে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ টাকা খরচ হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালার আওতায় মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির সুবিধা দেওয়া হয়। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা তাঁদের টিউশন ফির ২৫ শতাংশ বৃত্তি হিসেবে পাবেন।

ভর্তির যোগ্যতা

এআই অ্যান্ড ডেটা সায়েন্স বিভাগের জন্য শিক্ষার্থী ভর্তিপ্রক্রিয়া ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। যেসব শিক্ষার্থীর এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় মোট জিপিএ-৮ বা তার বেশি, কেবল তারা ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন। ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে শিক্ষার্থীরা চূড়ান্তভাবে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হবেন।

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন উপাচার্য,  গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন উপাচার্য, গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ

স্নাতক শেষে কর্মসংস্থানের সুযোগ

বিশ্ববিদ্যালয়টির নতুন কোর্স বিশেষত প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করেছে। স্নাতক শেষ করার পর শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তি কোম্পানি, গবেষণাপ্রতিষ্ঠান এবং স্টার্টআপে কাজ করার জন্য প্রস্তুত থাকবেন। এ ছাড়া অনেকে এআই শিক্ষার মাধ্যমে নতুন উদ্যোগ শুরু করতে আগ্রহী হয়ে উঠবেন, যা উদ্ভাবনী প্রযুক্তির বিকাশে সহায়ক হবে। চার বছর মেয়াদি এই কোর্স শুধু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রতি আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, বরং যাঁরা প্রযুক্তির মাধ্যমে সমাজে পরিবর্তন আনতে চান, তাঁদের জন্যও একটি অমূল্য সুযোগ। নতুন এআই কোর্সটি শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিগত ভবিষ্যৎ গড়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা আগামী দিনের প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়ক হবে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ডেটা সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আবুল হাসান বলেন, ‘আমাদের পাঠদান প্রক্রিয়া স্মার্ট হবে, যেখানে তাত্ত্বিক শিক্ষা ও ল্যাবনির্ভর ব্যবহারিক শিক্ষার সমন্বয় থাকবে। উন্নত দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কারিকুলাম পর্যালোচনা করে আমরা একটি আধুনিক মডেল তৈরি করেছি, যা ইউজিসি অনুমোদন দিয়েছে। ২৫ জানুয়ারি থেকে প্রথম ব্যাচের পাঠদান শুরু করা হবে। বিভাগটি নির্ধারিতসংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি করেছে এবং ভালো রেজাল্টধারী শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপও দেওয়া হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চালু রয়েছে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগও

দেশের প্রযুক্তি খাত দিন দিন বিস্তৃত হচ্ছে। এই অগ্রগতির মূলে রয়েছে সফটওয়্যার শিল্প। এ শিল্পের বিস্তারের লক্ষ্যে গ্রিন ইউনিভার্সিটি সম্প্রতি বিএসসি ইন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রামটি চালু করেছে। এর সিলেবাস এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে গ্র্যাজুয়েটরা বিভিন্ন সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ পজিশনে ক্যারিয়ার গঠনের সুযোগ পান। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এই প্রোগ্রামের একটি বড় শক্তি হলো এর অভিজ্ঞ ও দক্ষ শিক্ষকেরা। তাঁরা শুধু তাত্ত্বিক জ্ঞানই নয়, বাস্তব জীবনের প্রকল্প এবং গবেষণায়ও যুক্ত রয়েছেন। এর ফলে শিক্ষার্থীরা আধুনিক প্রযুক্তি এবং বাস্তব জীবনের সমস্যার সমাধান সম্পর্কে ধারণা লাভের সুযোগ পাচ্ছেন।

গ্রিন ইউনিভার্সিটির সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিভাগের পাঠদান প্রক্রিয়া বিশ্বমানের; কারণ, সিলেবাস প্রণয়নে আমরা অনুসরণ করেছি প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে। এখানে কম্পিউটার সায়েন্সের পাশাপাশি সফটওয়্যারও গুরুত্ব পায়। শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট শেখানোর জন্য আমাদের আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব সুবিধা রয়েছে, যেখানে তাঁরা সফটওয়্যার-সংক্রান্ত যেকোনো টুলস ব্যবহার করতে পারেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন বলেছেন, সিএসসির বিশেষায়িত অংশ হিসেবে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং এআই অ্যান্ড ডেটা সায়েন্স বিভাগ চালু করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী ডেটার প্রসার এবং এআইয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে এসব বিভাগের প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে। সফটওয়্যার টেকনোলজি আমাদের জীবনকে প্রভাবিত করছে এবং অটোমেশন ছাড়া কিছুই সম্ভব নয়। এআই, ডেটা সায়েন্স, রোবটিকস, সফটওয়্যার—এগুলো ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভল্যুশনের অংশ। এ কারণে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ও এআই অ্যান্ড ডেটা সায়েন্স বিভাগের গুরুত্ব মেনে এসব বিভাগ চালু করেছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে স্নাতক পর্যায়ে এখন পর্যন্ত এআই অ্যান্ড ডেটা সায়েন্সের কোনো ডিপার্টমেন্ট নেই এবং এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম পদক্ষেপ। শিক্ষার্থীদের জন্য প্রাথমিকভাবে কম্পিউটার সায়েন্স, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং এআই অ্যান্ড ডেটা সায়েন্সের প্রথম দুই বছর একই হবে। থার্ড ও ফোর্থ ইয়ারে ল্যাবের প্রয়োজন হবে এবং কম্পিউটার সায়েন্সের বিভিন্ন ল্যাব এসব বিভাগের শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করতে পারবেন। এআইয়ের জন্য দুটি বিশেষায়িত ল্যাব নির্মাণাধীন রয়েছে, যা আগামী সেমিস্টার থেকে চালু হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অবসর ভাতায় অনিয়ম, ক্ষতি ১২৫০ কোটি

রাহুল শর্মা, ঢাকা 
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১: ২৭
অবসর ভাতায় অনিয়ম, ক্ষতি ১২৫০ কোটি
ছবি: সংগৃহীত

অবসর ভাতার আবেদন করতে শিক্ষক-কর্মচারীদের অবশ্যই ইনডেক্স (পরিচয় শনাক্তকারী নম্বর) থাকতে হবে। এই শর্ত ঠিক রেখেই জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া ইনডেক্সধারীদের অবসর ভাতা দেওয়া হয়েছে। এমনকি আবেদন না করেও অনেকে এই ভাতা পেয়েছেন। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের অর্থ ব্যয় এবং পরিচালনায় এমন অনেক অনিয়ম ও অসংগতি পেয়েছে শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর।

শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব অনিয়মে প্রায় ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে আইন লঙ্ঘন করে বেসরকারি ব্যাংকে রাখা আমানত ফেরত না পাওয়ায় বোর্ডের আর্থিক ক্ষতি ৬৩৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। বাংলাদেশ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের (সিএজি) অধীন শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের এই নিরীক্ষা প্রতিবেদন সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনটির সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (নিরীক্ষা ও আইন অনুবিভাগ) জহিরুল ইসলাম ১৪ ডিসেম্বর আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিরীক্ষা প্রতিবেদনটি এখনো হাতে পাননি। প্রতিবেদন পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ১৯৯০ সাল থেকে কল্যাণ ট্রাস্টের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। অবসর সুবিধা দেওয়া শুরু হয়েছে ২০০৫ সাল থেকে। এই দুই সুবিধা বাবদ শিক্ষকেরা চাকরিকাল অনুযায়ী এককালীন অর্থ পান। সারা দেশে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন ৫ লাখের বেশি।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৭৭৫টি আবেদন অনিষ্পন্ন রয়েছে। এর মধ্যে স্কুলপর্যায়ের ২৭ হাজার ৮৬২টি, কলেজের ১৭ হাজার ২৭৮টি, মাদ্রাসার ১২ হাজার ৯৬৮টি এবং কারিগরির শিক্ষকদের ৬ হাজার ৬৬৭টি।

আইন অনুযায়ী, শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও (বেতনের সরকারি অংশ) থেকে চাঁদা হিসেবে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ কেটে রাখা হয়। এর মধ্যে অবসর সুবিধা বোর্ড ৬ শতাংশ এবং কল্যাণ ট্রাস্ট ৪ শতাংশ পায়। এর বাইরে বিশেষ বা থোক বরাদ্দ এবং বিভিন্ন সময়ে সরকারের দেওয়া সিড মানি বা গচ্ছিত অর্থের লভ্যাংশ পায় সংস্থা দুটি।

শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ১৮ জন ভুয়া ইনডেক্সধারীকে বোর্ড তহবিল থেকে ১ কোটি ৪২ লাখ ৭৮ হাজার ৫৬৭ টাকা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর সুবিধা পরিশোধের আগে ইনডেক্স যাচাই আবশ্যক। অথচ ইনডেক্স যাচাই না করে ভুয়া ইনডেক্সের বিপরীতে অর্থ পরিশোধ করায় বোর্ডের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এসব অর্থ আদায় করে বোর্ডের তহবিলে জমা দেওয়ার সুপারিশ করেছে নিরীক্ষা দল।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০ জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর ভাতা প্রাপ্তির আবেদন না করলেও এবং বোর্ড থেকে ব্যাংকে কোনো অ্যাডভাইস না পাঠালেও তাঁদের অনুকূলে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৯৬ হাজার ৪৯৭ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া একই ইনডেক্সধারীকে একাধিকবার অবসর সুবিধা দেওয়ায় বোর্ডের ১ কোটি চার লাখ ৭২ হাজার ৮৬১ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

প্রতিবেদনে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাল আবেদনপত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন হিসাবে ৫৮ লাখ ৭৬ হাজার ৩৮ টাকা এবং ভুয়া ইনডেক্স নম্বর ব্যবহার করে সফটওয়্যার ভেন্ডরের মাধ্যমে ৩১ লাখ ৯০ হাজার ৭৭৫ টাকা পরিশোধের তথ্যও উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বোর্ডের আইন লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে না রেখে বেসরকারি ব্যাংকে রাখা আমানতের টাকা ফেরত না পাওয়ায় বোর্ডের আর্থিক ক্ষতি ৬৩৯ কোটি ৬০ লাখ ৬১ হাজার ৭২৫ টাকা। এসব টাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে জমা করা আবশ্যক বলে সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিবেদনে অবসর সুবিধা বোর্ডের জন্য আদায় করা ২৮ কোটি ৬৫ লাখ ৭২ হাজার ৪৪০ টাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের তহবিল থেকে অবসর সুবিধা বোর্ডের তহবিলে জমা করার সুপারিশ করা হয়েছে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমপিওর চেক নগদায়নপূর্বক নির্ধারিত সময়ে ৫২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৯৮ হাজার ৪৭৩ টাকা জমা হয়নি। স্থায়ী তহবিলের প্রাপ্ত সুদ চলতি তহবিলে জমা না দেওয়ায় ৫৬ কোটি ৭১ লাখ ২১ হাজার ৫২৮ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া তহবিল যথাযথভাবে সংরক্ষণ না হওয়ায় ৯১ লাখ ৩৫ হাজার, যথাযথ নিয়মে হিসাবভুক্ত না করায় ২৯ কোটি ২০ লাখ ৬৯ হাজার ১৫৭ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

পরামর্শক বাবদ বিল পরিশোধ করায় অনিয়মিত ব্যয় ৪৫ লাখ ৩ হাজার ৪৮০ টাকা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রাপ্যতা না থাকলেও সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ৭ লাখ ৬৭ হাজার ৬৮০ টাকা পারিতোষিক দেওয়া হয়েছে। আবার অতিরিক্ত অবসর সুবিধা পরিশোধ করায় ৫ লাখ ৭৯ হাজার ৮২৪ টাকা, ভ্যাট না কাটায় ১ লাখ ৯২ হাজার ৫৫৩ টাকা, চেকের ব্যবহার না থাকলেও এ খাতে ব্যয় দেখিয়ে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৬৫ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এসব ব্যয়কে প্রতিবেদনে আর্থিক ক্ষতি হিসেবে উল্লেখ করে এসব অর্থ আদায় করে বোর্ড তহবিলে জমা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

এ ছাড়া প্রতিবেদনে উৎসে কর না কাটায় ১ লাখ ৬ হাজার ১১ টাকা, ক্রয় সিলিং না মেনে ২৬ লাখ ১৬ হাজার ৩০৪ টাকার অতিরিক্ত ব্যয়, বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা না মেনে ১ কোটি ৮ লাখ ২৮ হাজার ৭০৭ টাকা ব্যয় এবং আর্থিক ক্রয়সীমার অতিরিক্ত ৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৪১ টাকা ব্যয়ের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে অবসর সুবিধা বোর্ডের তহবিল ব্যবস্থাপনা ও সম্পাদিত কার্যাবলির প্রতিবেদন প্রণয়ন না করা এবং অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রণয়ন বোর্ডের আইন ও প্রবিধান লঙ্ঘিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বোর্ড কর্তৃক ক্যাশবই ও স্টক রেজিস্ট্রার সংরক্ষণ করা হয়নি। তহবিল প্রাপ্তি নিশ্চিত না করে অধিক হারে পরিশোধের অঙ্গীকার করার অবসর সুবিধা বোর্ডের দায় উত্তরোত্তর বাড়ছে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনের আপত্তিগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্যসচিব (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক মো. জাফর আহম্মদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিরীক্ষার আপত্তিগুলোর জবাব দেওয়া হয়েছে। সে আলোকে মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্বাচনের পর রমজান, আগামী বছরের এসএসসি পরীক্ষা কবে?

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে শিক্ষার্থীরা।  ছবি: আজকের পত্রিকা
এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আগামী বছরের (২০২৬) মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার সময়সূচি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, গণভোট ও পবিত্র রমজান মাস বিবেচনায় নিয়ে আগামী এপ্রিল বা মে মাসে এই পাবলিক পরীক্ষা আয়োজনের চিন্তাভাবনা করছে সরকার।

আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে এমন আভাস পাওয়া গেছে। এর আগে একসময় ফেব্রুয়ারিতে পরীক্ষা শুরুর রেওয়াজ থাকলেও করোনা মহামারি ও পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে শিক্ষাপঞ্জিতে পরিবর্তন আসে।

২০২৪ সালে এসএসসি পরীক্ষাকে আবারও ফেব্রুয়ারিতে ফিরিয়ে আনা হয়। সে বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। কিন্তু এরপর ২০২৪ সালের আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানের পর রমজানের কারণে ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি শুরু করতে পারেনি শিক্ষা বোর্ডগুলো। পরে ঈদুল ফিতরের পর ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছিল ২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা।

আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালে নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে অনুষ্ঠিত হবে। তবে অনিয়মিত ও মানোন্নয়ন পরীক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসের প্রশ্নে এ পরীক্ষায় বসতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবির আজ বিকেলে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা পরীক্ষা আয়োজনের সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি, যাতে সরকার যেকোনো সময় বললে পরীক্ষা নিতে পারি। পরীক্ষার ব্যাপারে কিছু চিন্তাভাবনা, কিছু বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সরকার সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত দিলে আমরা পরীক্ষা নেব।’

এহসানুল কবির আরও বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে, এর মধ্যে কীভাবে পরীক্ষা হবে। এরপর রমজান। এসএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষা কোন সময় আয়োজিত হবে, সে সিদ্ধান্ত সরকারের। তাই পরীক্ষা কবে শুরু হতে পারে, সে বিষয়ে এখনই কিছু বলতে পারছি না।’

এ বিষয়ে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও আন্তশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার বলেন, ‘গত বছর এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল এপ্রিলে। এবার এপ্রিলেও শুরু হতে পারে, মে মাসেও শুরু হতে পারে। আবার এপ্রিল-মে মাসে ঘূর্ণিঝড়-বন্যার একটা বিষয় আছে। এসএসসি পরীক্ষা কবে হবে, সেটা সরকারের সিদ্ধান্ত। আমরা প্রস্তুতি রাখছি, সরকারের সিদ্ধান্ত পেলে পরীক্ষার আনুষ্ঠিকতা শুরু হবে।’

গত বছর ১০ এপ্রিল থেকে ১৩ মে এসএসসি ও সমমানের তত্ত্বীয় পরীক্ষা এবং ১৫ থেকে ২২ মে ব্যবহারিক পরীক্ষা আয়োজনের পরিল্পনা ছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে ১৪ ও ১৫ মের পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়। পরে তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হয় ২৮ মে। আর ২৯ মে থেকে ৪ জুন পর্যন্ত নেওয়া হয় ব্যবহারিক পরীক্ষা। এরপর ২৬ জুন থেকে শুরু হয় এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা।

এদিকে, ৩১ ডিসেম্বর থেকে এসএসসির ফরম পূরণ শুরু হবে। বিলম্ব ফি ছাড়া ফরম পূরণ চলবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত। ফি জমা দেওয়া যাবে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত। পরীক্ষার্থীপ্রতি ১০০ টাকা হারে বিলম্ব ফিসহ অনলাইনে ফরম পূরণ করা যাবে ২০২৬ সালের ১২ থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। বিলম্বসহ অনলাইনে ফি জমা দেওয়া যাবে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।

আগামী বছরের এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের সর্বোচ্চ ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৪৩৫ টাকা। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের চতুর্থ বিষয়সহ ফরম পূরণে এ ফি দিতে হবে। আর ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিকের শিক্ষার্থীদের চতুর্থ বিষয়সহ ফরম পূরণের ফি ২ হাজার ৩১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শহীদ শরিফ ওসমান হাদির হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন

ক্যাম্পাস ডেস্ক 
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৫৮
শহীদ শরিফ ওসমান হাদীর হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা: ছবি সংগৃহীত
শহীদ শরিফ ওসমান হাদীর হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা: ছবি সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদির নির্মম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে গতকাল দুপুর ১২টায় এক বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ওই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন গ্রিন ইউনিভার্সিটির প্রোক্টর অধ্যাপক ড. মো. মেহেদী হাসান, স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স ডিরেক্টর অধ্যাপক ড. মো. দেলোয়ার হোসেন, অধ্যাপক শিহাব উদ্দিন, সহকারী প্রোক্টর মনিরুল ইসলামসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে বক্তারা শহীদ শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে খুনিদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। তাঁরা বলেন, শহীদ ওসমান হাদি ন্যায়বিচার, ইনসাফ ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশের যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই আদর্শ ধারণ করেই শিক্ষার্থীদের এগিয়ে যেতে হবে।

এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে একটি সুন্দর, স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তাঁরা দেশের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনটি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়। কর্মসূচি শেষে উপস্থিত সবাই শহীদ শরিফ ওসমান হাদির আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর হত্যার সুষ্ঠু বিচারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তিন দিনে ৫ পরীক্ষা বিপাকে শিক্ষার্থীরা

  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ইউনিটের স্থগিত ভর্তি পরীক্ষা ২৭ ডিসেম্বর
  • একই দিন এমআইএসটির ‘এ’ ও ‘বি’ ইউনিটেরও পরীক্ষা আছে
  • ২৬ ডিসেম্বর হবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের পরীক্ষা
  • অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়েরও ভর্তি পরীক্ষা ২৬ ডিসেম্বর
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

তিন দিনের ব্যবধানে পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করায় বিপাকে পড়েছেন ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ, একই সময়ে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ পড়ায় অনেকে বাধ্য হয়ে একটি বা একাধিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ হারাতে পারেন।

জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের বিজ্ঞান ইউনিটের স্থগিত ভর্তি পরীক্ষার নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ৩টায়। একই দিনে সকালে মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি) এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েরও ভর্তি পরীক্ষা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র বলেছে, ২৭ ডিসেম্বর বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা হবে। এটি বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষা না হলেও একই দিনে এমআইএসটির ‘এ’ ও ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা থাকায় বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা বড় ধরনের সমস্যায় পড়েছেন। শিক্ষার্থীরা বলছেন, সকালে এমআইএসটির পরীক্ষা দিয়ে বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া অনেকের পক্ষেই কঠিন হবে। এই দিনে এমআইএসটির আর্কিটেকচার বিভাগের বিকেলের শিফটে যাঁদের পরীক্ষা রয়েছে, তাঁদেরও ভোগান্তিতে পড়তে হবে।

এর আগের দিন ২৬ ডিসেম্বর হবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান এবং লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা। এই দিনে বাংলাদেশ অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগেও ভর্তি পরীক্ষা হবে। উভয় পরীক্ষাই বিজ্ঞান বিভাগের হওয়ায় শিক্ষার্থীদের পরপর দুই দিনে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এ ছাড়া ২৮ ডিসেম্বর হবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ-জেইউ ভর্তি পরীক্ষা। এতে বিজ্ঞান বিভাগের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষার্থী অংশ নেবেন।

শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, টানা তিন দিন পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা তাঁদের ওপর বাড়তি মানসিক ও শারীরিক চাপ সৃষ্টি করবে। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার্থী মুনতাসির মাহমুদ বলেন, ‘একই দিনে একাধিক ভর্তি পরীক্ষা কোনোভাবেই দেওয়া সম্ভব নয়। যেহেতু অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষার তারিখ আগে থেকে নির্ধারিত ছিল, তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানাচ্ছি।’

তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়ক ও জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. এনামুল হক বলেন, ‘অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ে আমাদের তেমন সমস্যা নেই। শুধু এমআইএসটির পরীক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা কাজ করেছি।’

উল্লেখ্য, জুলাই যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণার কারণে ২০ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। পরে কর্তৃপক্ষ ২৭ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ৩টায় পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত