Ajker Patrika

জবি থেকে জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয়ে

আনিসুল ইসলাম নাঈম
রাশেদ হোসেন রনি
রাশেদ হোসেন রনি

রাশেদ হোসেন রনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন বদলে একসময় বিদেশে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন বোনা শুরু করেন তিনি। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে রনি সফলও হয়েছেন। ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন জার্মানির ইউনিভার্সিটি অব বনে। স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে পড়ছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির স্লেভারি স্টাডিজে। তাঁর সাফল্যের গল্প শুনেছেন আনিসুল ইসলাম নাঈম

শৈশব ও পড়াশোনা

রনির জন্ম কুমিল্লার কালীবাজার ইউনিয়নের হাতীগাড়া গ্রামে। রনির প্রাথমিকের পাঠ শুরু গ্রামের হাতীগাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। কুমিল্লার গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুল থেকে এসএসসি ও কুমিল্লা সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন তিনি। এরপর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন।

সহশিক্ষা কার্যক্রম

পড়ালেখার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন রনি। ছেলেবেলায় ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, ভলিবলসহ গ্রামীণ খেলায় আগ্রহ ছিল তাঁর। কলেজে থাকাকালীন সামাজিক সংগঠন ‘বন্ধু সমাজ’ ও ‘হ্যান্ডস ফর হিউমিনিটি’ নামের দুটি সংগঠনের সভাপতি ছিলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইটি সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটি ও কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে

দায়িত্ব পালন করেন।

স্বপ্নযাত্রা

রনির স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটার হওয়ার। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেও স্বপ্নের পিছু ছাড়েননি তিনি। ভর্তির জন্য গিয়েছিলেন ধানমন্ডির আবাহনী ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে। কিন্তু আবাসিক হলবিহীন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রনির ক্রিকেট অ্যাকাডেমির মাসিক খরচ ও প্র্যাকটিসের শিডিউল ঠিক রাখা কঠিন ছিল। তাই তখনই শেষ হয়ে যায় রনির ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে পড়ালেখায়ও মন বসছিল না তাঁর। নতুন ভাবনা ধরা দেয় বিদেশে উচ্চশিক্ষার। মনস্থির করেন যেকোনোভাবে হোক বিদেশ পাড়ি জমাবেন তিনি।

সিদ্ধান্ত নিলেন জার্মানিতে ব্যাচেলরের জন্য আবেদন করবেন। তিন-চার মাসের আইএলটিএস প্রিপারেশন নিয়ে স্কোর ওঠালেন ৫.৫। এরপর জার্মানিতে ব্যাচেলরের জন্য আবেদন শুরু করেন। রনির আবেদন জার্নির সাথি ছিলেন তাঁর বিভাগের বন্ধু আরিফ। তাঁর সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ড ও আইএলটিএস স্কোর ৬.০ থাকায় রনির আগেই জার্মানি থেকে অফার লেটার চলে আসে।

রনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত আমি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার না পেয়ে জার্মানির আশা ছেড়ে দিই। আরিফ চলে যায় জার্মানিতে। শেষে বাংলা বিভাগ থেকেই ব্যাচেলর শেষ করার সিদ্ধান্ত নিলাম। তবে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা থেমে থাকেনি। পড়ালেখার পাশাপাশি চলে আইইএলটিএস পরীক্ষার প্রিপারেশন। পড়াশোনার খরচ জোগাড়ে পার্টটাইম চাকরি করি। নিজের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। এর মাঝেই চলত বিদেশের প্রস্তুতি।’

যেভাবে ইউনিভার্সিটি অব বনে

জার্মানিতে টিউশন ফি না থাকলেও জার্মান অ্যাম্বাসি ফেস করার প্রক্রিয়া দীর্ঘ। ২০২২ সালে জার্মান অ্যাম্বাসিতে মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য একটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে রাখেন রনি। এর মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে মাস্টার্স শেষ হয় তাঁর। জার্মানিতে রনির দ্বিতীয় মাস্টার্স করার পরিকল্পনা আগে থেকে ছিল। তবে জবিতে বাংলায় পড়ার কারণে জার্মানিতে মাস্টার্সে আবেদনের জন্য রিলেটেড সাবজেক্ট পাওয়া কঠিন হয়ে ওঠে। তা ছাড়া তাঁর সিজিপিএ ছিল ২.৯৭। আবার আইইএলটিএস পরীক্ষা দিয়ে আশানুরূপ স্কোর তুলতে পারেনি।

জানতে চাইলে রনি বলেন, ‘সিজিপিএ ২.৯৭ ও আইইএলটিএস ৬.০ দিয়ে জার্মানির ৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদন করি। এর মধ্যে শুধু ইউনিভার্সিটি অব বন থেকে শেষ মুহূর্তে এসে অফার লেটার পাই। পুরো আবেদন প্রক্রিয়ায় এক বড় ভাই সব সময় পাশে ছিলেন। অফার লেটার পাওয়ার পর তিনি অনেক খুশি হন। আমার তখনকার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো ছিল না।’

পাহাড়সম বাধা

বন ইউনিভার্সিটিতে চান্স পাওয়ার পর ব্লক অ্যাকাউন্টের টাকা জোগাড় নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন রনি। টিউশন ফি না থাকলেও ১১,৯০৪ ইউরো জার্মানিতে পাঠিয়ে দিতে হয়। পরবর্তী সময়ে জার্মানি পৌঁছালে ধাপে ধাপে তা ফেরত দেওয়া হয়। তবে কারও ভিসা না হলে, সেই টাকা দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ব্লক অ্যাকাউন্টের টাকার জন্য তিনি প্রথমে তাঁর পরিবারকে জানান। রনি বলেন, ‘বাড়িতে তখন লাখ খানেক টাকাও নেই। অথচ প্রয়োজন প্রায় ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এমতাবস্থায় পরিবারের জমি বিক্রির কথাও ওঠে। আম্মা আমাদের আত্মীয়দের কাছে টাকা ধার চাওয়া শুরু করেন। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও পরিচিতজনদের থেকে ধার করে শেষ পর্যন্ত টাকা জোগাড় করতে সক্ষম হই।’

তিনি বলেন, ‘আবেদনের ২৪ মাস পর ২০২৪ সালের ৩১ আগস্ট জার্মান অ্যাম্বাসি ডকুমেন্টস সাবমিট করতে বলে। কয়েক দিন পর অ্যাম্বাসিতে ইন্টারভিউর জন্য ডাক আসে। ইন্টারভিউ খুব স্বাভাবিক ছিল। সাধারণ বিষয় ছাড়া জটিল কোনো প্রশ্ন করেনি। ৩ সেপ্টেম্বর ইন্টারভিউয়ের পর ২৯ সেপ্টেম্বরে গিয়ে পাসপোর্ট কালেকশন করি এবং আলহামদুলিল্লাহ জার্মান ভিসা পাই।’

যেভাবে আবেদন

জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের আগে নিজের স্টাডি ফিল্ড-সংশ্লিষ্ট সাবজেক্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজে বের করা জরুরি। এ জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট হলো DAAD.DE। এ ছাড়া mygermanuniversity ওয়েবসাইটিও রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও সাবজেক্ট খোঁজার পর দেখতে হবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি আবেদন করা যায়, নাকি UniAssist এর মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। UniAssist হলো একটি মাধ্যম। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীর ডকুমেন্টস যাচাই-বাছাই করে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয় আবেদন গ্রহণ করে। জার্মানিতে সামার ও উইন্টার মৌসুমে আবেদন করা যায়।

সুযোগ-সুবিধা

ইউনিভার্সিটি অব বন থেকে শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় সুবিধাটি হলো ট্রান্সপোর্টেশন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ড দিয়ে যেকোনো শিক্ষার্থী পুরো জার্মানি ঘুরতে পারবেন। শুধু বন বিশ্ববিদ্যালয় নয়, জার্মানির সব শিক্ষার্থীর জন্য এ সুযোগটি রয়েছে। তা ছাড়া জিমনেসিয়াম, খেলাধুলা কিংবা জার্মান ভাষা শেখানোসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া হয়। জার্মানিতে যেকোনো শিক্ষার্থীর পড়ালেখার পাশাপাশি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজের সুযোগ রয়েছে।

নতুনদের পরামর্শ

ইউনিভার্সিটি অব বনে পড়াশোনা করতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ভালোভাবে রিসার্চ করতে হবে। নিজের স্টাডি ফিল্ডের সঙ্গে মিল আছে এমন কোনো সাবজেক্ট পেলে সে সাবজেক্টে পড়তে হলে কী কী শর্ত পূরণ করা প্রয়োজন সেগুলো দেখে নিতে হবে। সেভাবে নিজের অ্যাকাডেমিক প্রোফাইলটি সাজাতে হবে। প্রোফাইল সাজানো হলে শুধু ইউনিভার্সিটি অব বন নয়, আরও ভালো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েও চান্স পাওয়া সম্ভব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৩৪
ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের বিজ্ঞান শাখার প্রথম বর্ষের আন্ডারগ্র‍্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। সকল জুলাই যোদ্ধা, শরিফ ওসমান হাদি ও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে আগামীকাল শনিবার অনুষ্ঠেয় এই পরীক্ষা স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আজ শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের পাঠানো এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানা গেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের অংশ হিসেবে আগামীকাল শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক দিবস পালন করা হবে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সাহসী জুলাই যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদি এবং ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সকল জুলাই যোদ্ধা ও শহীদের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে আগামীকাল ২০ ডিসেম্বর শনিবার অনুষ্ঠেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষের বিজ্ঞান ইউনিটের প্রথম বর্ষ আন্ডারগ্র‍্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। স্থগিত ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এসএসসির ফরম পূরণ শুরু ৩১ ডিসেম্বর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আগামী বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু হবে ৩১ ডিসেম্বর থেকে। যা চলবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত। ফি জমা দেওয়া যাবে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফরম পূরণের বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ থাকা সাপেক্ষে জিপিএ উন্নয়ন পরীক্ষার্থীসহ আবশ্যিক ও নৈর্বাচনিক বিষয় ও বিষয়গুলো এক থেকে চার বিষয়ে ২০২৫ সালে অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের ২০২৬ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অকৃতকার্য বিষয় ও বিষয়গুলোতে অংশ নেওয়ার জন্য নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান বরাবরে সাদা কাগজে ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে আবেদন করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নির্বাচনী পরীক্ষা নিয়ে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে ফল প্রকাশ করবে।

আরও বলা হয়, বিলম্ব ফিসহ অনলাইনে ফরম পূরণ করা যাবে ২০২৬ সালের ১২ থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। পরীক্ষার্থী প্রতি ১০০ টাকা হারে বিলম্ব ফিসহ অনলাইনে ফি জমা দেওয়া যাবে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।

আরও বলা হয়, বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন ফি (চতুর্থ বিষয় ছাড়া) ২ হাজার ৪৩৫ টাকা, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিকে ২ হাজার ৩১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের বেতন ও সেশন চার্জ হিসেবে ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিশোধ করতে হবে।কোনো শিক্ষার্থীর নবম ও দশম শ্রেণির মোট ২৪ মাসের বেশি বেতন নেওয়া যাবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিইউবিটিতে চতুর্থবারের মতো ‘আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা রিজিওনাল কনটেস্ট’ আয়োজিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বিইউবিটিতে চতুর্থবারের মতো ‘আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা রিজিওনাল কনটেস্ট’ আয়োজিত হচ্ছে। এই উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
বিইউবিটিতে চতুর্থবারের মতো ‘আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা রিজিওনাল কনটেস্ট’ আয়োজিত হচ্ছে। এই উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) স্থায়ী ক্যাম্পাসের ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স হলে গতকাল বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ‘আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা রিজিওনাল কনটেস্ট ২০২৫’ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য জাতীয় দৈনিক, টেলিভিশন চ্যানেল, অনলাইন পোর্টাল এবং ডিজিটাল মিডিয়ার সাংবাদিকেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।

বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা, যা ‘প্রোগ্রামিংয়ের অলিম্পিক’ খ্যাত—আইসিপিসির এই রিজিওনাল পর্বটি ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ বিইউবিটি ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখ্য, বিইউবিটি এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো এই মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা আয়োজন করার গৌরব অর্জন করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিইউবিটির উপাচার্য ড. এ বি এম শওকত আলী উপস্থিত সাংবাদিকদের এবং এই আয়োজনের গর্বিত স্পনসরদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, ‘এই প্রতিযোগিতার মূল লক্ষ্য হলো সারা দেশ থেকে বাংলাদেশের সেরা প্রোগ্রামারদের খুঁজে বের করা এবং তাঁদের মেধা বিকাশের মাধ্যমে বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ করে দেওয়া।’

শওকত আলী আরও জানান, এবারের আয়োজনে সারা বাংলাদেশ থেকে রেকর্ড সংখ্যক প্রতিযোগী অংশ নিচ্ছেন। মোট ৩১৩টি টিমের ৯৩৯ জন মেধাবী প্রোগ্রামার এই চূড়ান্ত পর্বে লড়বেন, যা বাংলাদেশে আইসিপিসির ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিইউবিটি ট্রাস্টি বোর্ডের সম্মানিত সদস্য মো. শামসুল হুদা এফসিএ।

এ ছাড়া সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং টেকনিক্যাল বিষয়গুলো তুলে ধরেন আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা সাইট ২০২৫-এর আরসিডি (RCD) এবং বিইউবিটির সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান মো. সাইফুর রহমান এবং আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা সাইট ২০২৫-এর অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর ও এনএসইউর ইসিই বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল লায়েস এম এস হক।

এ সময় মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস বিচারক (২০০৩-২০১৮) শাহরিয়ার মঞ্জুর এবং বিইউবিটির প্রকৌশল ও ফলিতবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মুন্সী মাহবুবুর রহমান। সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিইউবিটির সিএসই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আশরাফুল ইসলাম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচন: তিন দিনেও প্রকাশ করা হয়নি ব্যালট নম্বর, প্রচারে নেমে বিপাকে প্রার্থীরা

  জবি প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৫
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদের ‎আসন্ন নির্বাচনে ক্যাম্পাসে প্রচার শুরু হয়েছে ১৫ ডিসেম্বর থেকে। তফসিল অনুযায়ী টানা ১৩ দিন চলবে এই প্রচার। তবে প্রচার শুরুর পর তিন দিন পার হলেও প্রার্থীদের ব্যালট নম্বর প্রকাশ করেনি নির্বাচন কমিশন। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন প্রার্থীরা।

‎‎তফসিল সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনী প্রচারণার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর। প্রচারণার ১৩ দিন সময়ের ৩ দিন পেরিয়ে গেলেও ব্যালট নম্বর প্রকাশ না করায় প্রচারণায় বাধার অভিযোগ তুলেছেন প্রার্থীরা।

‎‎শিবির-সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য প্যানেল’ থেকে ভিপি প্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ব্যালট নম্বর না থাকায় প্রচার ও পেপার ছাপাতে জটিলতা তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে নাম সংশোধনের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

‎ছাত্রদল-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান প্যানেল’ থেকে জিএস প্রার্থী খাদিজাতুল কোবরা বলেন, ব্যালট নম্বর প্রকাশ না করায় প্রচার ব্যাহত হচ্ছে এবং এতে নির্বাচন কমিশনের অদক্ষতা ও স্বচ্ছতা প্রমাণিত হয়। দ্রুত ব্যালট নম্বর প্রকাশের দাবি জানান তিনি।

‎স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী চন্দন কুমার দাস বলেন, শুরু থেকেই নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা দায়িত্বহীন। প্রার্থিতা ও আচরণবিধি-সংক্রান্ত অভিযোগে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার পাশাপাশি ব্যালট নম্বর না দেওয়ায় প্রচার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যা কোনো পক্ষকে সুবিধা দেওয়ার ইঙ্গিত দেয়।

‎‎এসব অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রম চলছে। প্রার্থীদের নাম সংশোধনের জন্য আমাদের কাছে আবেদন এসেছে অনেকগুলো। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা নাম সংশোধন বা নিকনেম রাখার জন্য কাজ করছি। ফলে আমাদের কিছুটা সময় বেশি লাগছে।’

‎এর আগে ৪ ডিসেম্বর সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংশোধিত তফসিল ঘোষণা করা হয়। সেই তফসিল অনুযায়ী ৯ ও ১০ ডিসেম্বর প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট সম্পন্ন হয়। নির্ধারিত তফসিল অনুযায়ী ১১ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার, ১৪ ডিসেম্বর প্রত্যাহারকৃত তালিকা প্রকাশ করা হয়। ভোট গ্রহণের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর, ভোট গণনা ৩০ ডিসেম্বর (ভোট গ্রহণ শেষে) এবং ফলাফল ঘোষণা ৩০ অথবা ৩১ ডিসেম্বর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত