Ajker Patrika

কেন পড়বেন ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ

শাহ বিলিয়া জুলফিকার
কেন পড়বেন ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ

ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বা ‘উন্নয়ন অধ্যয়ন’ উচ্চশিক্ষায় একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি জ্ঞানের ক্ষেত্র। সামাজিক বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ সব তত্ত্ব ও প্রায়োগিক বিষয়বস্তুর অর্থবহ একত্রীকরণের মাধ্যমে এ বিষয়টি সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক বিজ্ঞানে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী বেশ জনপ্রিয়। এ বিষয়টি বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানার্জনের পাশাপাশি উন্নয়ন গবেষণাসংশ্লিষ্ট জ্ঞানার্জনেও তাই গুরুত্বপূর্ণ। প্রাথমিকভাবে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে মানবিক বিভাগ পড়ে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য হলেও বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক—তিনটি বিভাগের শিক্ষার্থীরাই বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় প্রথম দিকে থাকা শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের শীর্ষে রাখছে এ বিষয়টিকে।

যাত্রা শুরু 
ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিষয়টি বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেকটা নতুন হলেও বিশ্বে অনেক আগে থেকে এটি বিদ্যমান ছিল। মূলত ১৯৫০-এর দশকে ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এ বিষয়ে পাঠদান শুরু হয়েছিল। সময়ের পরিক্রমায় বাংলাদেশে ২০০২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেশনাল মাস্টার্স ডিগ্রি চালুর মাধ্যমে এই বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। পরে ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক পর্যায়ে প্রথমবারের মতো ভর্তির কার্যক্রম শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিভাগ। স্বায়ত্তশাসিত ও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম এ বিভাগটি চালু হলেও, পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (BUP) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ চালু করা হয়। তা ছাড়া নর্থ সাউথ, ব্র্যাক, ইস্ট ওয়েস্ট, ইনডিপেনডেন্ট ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মতো বেশ কয়েকটি স্বনামধন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও এ বিষয়ে পঠন-পাঠন চালু রয়েছে। 

যা পড়ানো হয়
ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিষয়টি এ ধারণা দেয় যে উন্নয়ন মানে শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়ন নয়, উন্নয়নের বহুমাত্রিক ধারণাকে কেন্দ্র করেই এ বিষয়টির মাঝে রাজনীতি, অর্থনীতি, পরিবেশ, সমাজবিজ্ঞান, সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা, পাবলিক পলিসি, জেন্ডার, প্রজেক্ট ব্যবস্থাপনা এবং সামাজিক গবেষণাপদ্ধতির মতো বিষয়গুলো পড়ানো হয়। সামাজিক বিজ্ঞানের তাত্ত্বিক, প্রায়োগিক ও গবেষণা শিক্ষাকে অর্থবহভাবে একত্রীকরণের মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ে এমন পরিপূর্ণ শিক্ষার সুযোগ সাধারণত অন্যান্য ডিসিপ্লিনে খুব একটা নেই। 

গবেষণা ও উচ্চশিক্ষা 
প্রায়োগিক সামাজিক বিজ্ঞানের বিষয় হিসেবে উন্নয়ন অধ্যয়ন খুবই চমকপ্রদ একটি পড়াশোনার বিষয়। উন্নয়নকর্মী বা উন্নয়ন গবেষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে চাইলে এ বিষয়ে পড়াশোনার বিকল্প নেই। ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের শিক্ষার্থীরা সরকারি ও বেসরকারি দুই খাতেই তাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাকে কাজে লাগাতে পারে অনায়াসে। এ বিষয়ের স্নাতকেরা পরে অর্থনীতি, রাজনীতি, সামাজিক উন্নয়ন, মানব উন্নয়ন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা, পাবলিক পলিসি, জেন্ডার, প্রজেক্ট ব্যবস্থাপনা, দারিদ্রতা ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়ে দেশে-বিদেশে উচ্চশিক্ষা এবং গবেষণায় নিয়োজিত হতে পারে খুব সহজেই। উপরন্তু বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন অধ্যয়ন কিংবা এ-সংশ্লিষ্ট নানান বিষয়ে বিভিন্ন বৃত্তি নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করার সুযোগ রয়েছে। সামাজিক বিজ্ঞানের অন্য সব বিষয়ের মধ্যে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি নানান বৃত্তি নিয়ে বিদেশে পড়তে যাওয়ার সুযোগ উন্নয়ন অধ্যয়ন বিষয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক বেশি। 

চাকরির সুযোগ
উন্নয়ন সম্পর্কে বহুমাত্রিক তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক জ্ঞান থাকায় উন্নয়ন অধ্যয়ন বিষয়ের শিক্ষার্থীরা সরকারি-বেসরকারি, লাভজনক-অলাভজনক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে খুব সহজেই তাদের লব্ধ জ্ঞানের সঠিক প্রয়োগ করতে পারে। উন্নয়নের নানা দিকের মধ্যে পাবলিক পলিসি, পাবলিক ফিন্যান্স, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট, অর্থনীতি, রাজনৈতিক অর্থনীতি, রাজনীতি, সরকার এবং জনপ্রশাসনসহ নানান বহুমাত্রিক বিষয়ে জ্ঞান থাকায় ‘উন্নয়ন অধ্যয়ন’ বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীরা সহজেই সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাঠপর্যায় থেকে শুরু করে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়। উল্লিখিত বিষয়গুলোর পাশাপাশি ব্যাংকিং ও ফিন্যান্স এবং এনজিও ও অলাভজনক খাত সম্পর্কে জ্ঞান থাকায় এ বিষয়ের শিক্ষার্থীরা সহজেই বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন এনজিও এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও অন্যান্য উন্নয়নমুখী প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সক্ষমতা অর্জন করে। এ ছাড়া উন্নয়ন ও সামাজিক গবেষণা বিষয়ে তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক জ্ঞান লাভের কারণে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দেশি-বিদেশি গবেষণাপ্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ লাভ করে থাকে। সর্বোপরি, বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এ বিষয়ে পড়াশোনা ও গবেষণার বিস্তর সুযোগ থাকায় তা এই বিষয়ের শিক্ষার্থীদের দেশে-বিদেশে উচ্চশিক্ষা, গবেষণা ও চাকরির ক্ষেত্রও প্রসারিত করে থাকে। 

অনুলিখন: শাহ বিলিয়া জুলফিকার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রতিষ্ঠার ১৫ বছর পর বুটেক্সে প্রথম সমাবর্তন

শেফাক মাহমুদ, বুটেক্স
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুটেক্স) অনুষ্ঠিত হলো সমাবর্তন। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং অভিভাবকদের মধ্যে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হংকং পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জুংগাই ওয়াং। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ।

সমাবর্তনে মোট ৪,১২৬ জন শিক্ষার্থীকে গ্র্যাজুয়েশন ও পোস্টগ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ৬০ জন মাস্টার্স, ১৯৪ জন এমবিএ এবং বুটেক্স অধিভুক্ত কলেজসমূহ থেকে ১,২৫০ জন গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি অর্জন করেছেন। কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য ৪১ জন শিক্ষার্থীকে গোল্ড মেডেল প্রদান করা হয়।

শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, "আজকের এই সমাবর্তন শুধু বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে নয়, দেশের বস্ত্রশিল্পের গবেষণা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রেও একটি যুগান্তকারী অর্জন। এই আয়োজনের মাধ্যমে আমরা এমন একটি প্রতিষ্ঠানের পরিপক্কতার সাক্ষী হচ্ছি, যা অল্প সময়ের মধ্যেই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে সক্ষম দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলছে। এটি কেবল শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত সাফল্য নয়; বরং ভবিষ্যতের আরও অসংখ্য তরুণকে অনুপ্রাণিত করবে।"

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, "আমাদের বৈদেশিক আয়ের বড় অংশ আসে টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল পণ্য থেকে। এই গুরুত্বপূর্ণ শিল্পের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ সরবরাহে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে। তাই মনে রাখতে হবে—দেশ ও জাতি আজ তোমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। চলার পথ সহজ নয়; সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। তবে মনে রেখো, তোমাদের প্রতিটি সিদ্ধান্ত ও কাজের প্রভাব শুধু নিজেই নয়, পরিবার, সমাজ এবং দেশের ওপরও পড়বে।"

হংকং পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ার অধ্যাপক ড. জুংগাই ওয়াং বলেন, “প্রাচীনকাল থেকে এশীয় এই উপমহাদেশ বস্ত্রশিল্পে বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত। ঢাকার মসলিন ছিল বিশ্বের সর্বোৎকৃষ্ট তুলা বস্ত্র—যার কোমলতা ও মান আজও অতুলনীয়। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় আজও বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল খাত বিশ্ববাজারে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে। দেশের ৫০ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক শিল্পের মেরুদণ্ড হিসেবে গড়ে ওঠা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের প্রতি জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। টেক্সটাইল ও অ্যাপারেলের প্রতি আগ্রহ ও নিষ্ঠা নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে এবং দেশসেবার সুযোগ তৈরি করবে। এই সমাবর্তন শুধু একটি ডিগ্রি অর্জনের অনুষ্ঠান নয়—এটি আরও বড় একটি উত্তরাধিকার বহনের আনুষ্ঠানিক সূচনা।"

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জুলহাস উদ্দিন বলেন, "মোট ৪,১২৬ জন গ্র্যাজুয়েট আজ তাদের ডিগ্রি গ্রহণ করছেন। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই সকল গ্র্যাজুয়েট দেশ ও জাতির কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন। আমাদের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে দেশের টেক্সটাইল শিল্পে দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে অবদান রেখে আসছে। এর পাশাপাশি ২৫০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে কর্মসংস্থান ও অর্থনীতিতে ভূমিকা রেখেছেন। আজকের এই সমাবর্তন শুধু একটি অর্জন নয়, বরং দায়িত্ব ও অঙ্গীকারের সূচনা। সততা, অধ্যবসায় এবং শিক্ষার ধারাবাহিক চর্চাকে জীবন ও কর্মের মূলমন্ত্র হিসেবে ধারণ করে নিজেদের জ্ঞান ও দক্ষতা দিয়ে সমাজ, দেশ ও মানবকল্যাণে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানাই।"

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মধ্য জানুয়ারির আগেই শিক্ষার্থীদের হাতে শতভাগ বই পৌঁছাবে: শিক্ষা উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কার্যালয়ে আজ রোববার আয়োজিত অনুষ্ঠান। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কার্যালয়ে আজ রোববার আয়োজিত অনুষ্ঠান। ছবি: আজকের পত্রিকা

আগামী জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের আগেই শতভাগ নতুন বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার)।

রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কার্যালয়ে আজ রোববার আয়োজিত ‘নতুন পাঠ্যবইয়ের সফট কপি অনলাইনে আপলোডকরণ উদ্বোধন’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান। সেখানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্সন বা পিডিএফ কপি প্রকাশ করা হয়।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষা কার্যক্রম আগামী বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে শুরু হবে। তার আগেই অলমোস্ট হান্ড্রেড পার্সেন্ট (প্রায় শতভাগ) বই পৌঁছে যাবে।

আগামী বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের সবাই সব বিষয়ের নতুন পাঠ্যবই হাতে পাবে না বলে সম্প্রতি কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়।

এর সমালোচনা করে সি আর আবরার বলেন, ‘এখানে পত্রপত্রিকায় বিভিন্ন সময়ে রিপোর্ট (প্রতিবেদন) হয়েছে, যথার্থ রিপোর্ট হয়েছে। আবার কিছু কিছু রিপোর্ট আমি বলব, সেগুলো খুব যে একটা সৎ উদ্দেশ্যে হয়েছিল, সেটা না।’

নতুন বই নিয়ে অভিযোগের জবাব শিক্ষা প্রশাসন কাজের মাধ্যমে দেবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, ‘বিভিন্ন রকমের স্বার্থগোষ্ঠী এখানে কাজ করেছে এবং আমরা এখানে সেগুলো সয়েছি। এগুলো আমরা কোশ্চেন করিনি, কনটেস্ট করিনি। আমরা মনে করেছি, শেষ বিচারে আমরা কতটুকু নির্ভুল ও মানসম্পন্ন বই দিতে পারব, দ্যাট উইল বি আলটিমেট টেস্ট।’

বই ছাপানোর সময় বেশি লাগার কারণও অনুষ্ঠানে ব্যাখ্যা করেন সি আর আবরার।

বিভিন্ন প্রেসে অভিযান চালিয়ে ‘মানহীন’ বই ধ্বংস করা হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের প্রক্রিয়ার মধ্যে যেন কোনো ভুল না থাকে, এ জন্য রিটেন্ডার করতে হয়েছে। বিভিন্ন রকমের চিন্তাভাবনা ছিল, সেগুলো আমাদের নিরসন করতে হয়েছে।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানাসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এনসিটিবির কর্মকর্তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সমুদ্রের বাতাসে স্বাস্থ্যের বার্তা

ক্যাম্পাস ডেস্ক 
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৪৫
সমুদ্রের বাতাসে স্বাস্থ্যের বার্তা

কক্সবাজারের সোনারপাড়া মেরিন ড্রাইভ সড়কে সম্প্রতি এক বর্ণাঢ্য ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল এবং বিদেশ থেকে মোট ৫০০ জন দৌড়বিদ এই আয়োজনে অংশ নেন।

ভোর ৬টায় উখিয়ার সোনারপাড়া বিচ পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে দৌড়টি শেষ হয় সকাল ৭টায় তারকা মানের হোটেল অর্কিড ব্লুতে। পুরুষ ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হন মোহাম্মদ সায়েদ (০১৫৯), প্রথম রানারআপ তারেক (০৪৫৬) এবং দ্বিতীয় রানারআপ আশিক (০১৬০)। নারীদের বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হন বিদেশি প্রতিযোগী জোহানা (০২৩৯), প্রথম রানারআপ আভা (০০৬৫) এবং দ্বিতীয় রানারআপ কুজো (০০৮৭)।

ম্যারাথন আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হাসিঘর ফাউন্ডেশন। অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন উপদেষ্টা এ এইচ সেলিম উল্লাহ, প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াসিন সিকদার, উখিয়া শাখার সভাপতি পিএম মোবারক, ইনস্টিটিউশনাল অ্যাফেয়ার্স উইংয়ের সিডিসিও শাইফুল ইসলাম শিহাব, উবায়েদ উল্লাহ শুভ, শাকিবুল ইসলাম, সাইয়েদ মোবারক, মেহেদী হাসান, শাহরিয়ার তানভীর রিফাত, আর জে রাফি, আবুল কাশেমসহ সংগঠনের অন্য সদস্যরা।

সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ ইয়াসিন সিকদার বলেন, ‘বিপুল সাড়া পাওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত। এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য তরুণদের মাদক থেকে দূরে রাখা এবং স্বাস্থ্যসচেতন হওয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা।’

ম্যারাথনের সমাপ্তির পর অংশগ্রহণকারীরা আরও এরূপ আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছেন। আয়োজকেরা জানান, আগামী বছরও তাঁরা একটি নতুন ম্যারাথন আয়োজনের চেষ্টা করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এআইইউবিতে সাইবার গেমিং ফেস্ট

ক্যাম্পাস ডেস্ক 
এআইইউবিতে সাইবার গেমিং ফেস্ট

আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (এআইইউবি) কম্পিউটার ক্লাবের (এসিসি) আয়োজনে এবং অফিস অব স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্সের সহযোগিতায় এআইইউবি সাইবার গেমিং ফেস্ট ২০২৫ সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। চার দিনব্যাপী এই আয়োজনে দেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু শিক্ষার্থী অংশ নেন।

উদ্বোধনী ও বিভিন্ন পর্বের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এআইইউবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মঞ্জুর এইচ খান, অফিস অব স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্সের বিশেষ সহকারী ও সহযোগী অধ্যাপক অভিজিৎ ভৌমিক, সহকারী অধ্যাপক এবং বিশেষ সহকারী মো. মাজেদ-উল-হক এবং প্রভাষক ও বিশেষ সহকারী এস এম আবদুল্লাহ শাফি।

অনলাইন ও অন-ক্যাম্পাস প্রতিযোগিতার সমন্বয়ে আয়োজিত এই উৎসবে এআইইউবি ক্যাম্পাস পরিণত হয় এক প্রাণবন্ত ও প্রতিযোগিতামূলক গেমিং অঙ্গনে। পাবজি মোবাইল প্রতিযোগিতার অনলাইন কোয়ালিফায়ার পর্বে ৫১টি দল অংশ নেয়। সেখান থেকে ৩২টি দল সেমিফাইনালে এবং পরবর্তী সময়ে ১৬টি দল ক্যাম্পাস ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়। চূড়ান্ত দিনে অনুষ্ঠিত চারটি উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ শেষে ব্ল্যাকবিয়ার্ড পাইরেটস চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।

ভ্যালোরান্ট বিভাগে অনলাইন লোয়ার-ব্র্যাকেট পর্ব ও ক্যাম্পাসে ল্যান ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। লোয়ার-ব্র্যাকেট থেকে উঠে এসে অলস্টারস দল গ্র্যান্ড ফাইনালে ন্যাক্সআর ই-স্পোর্টসের মুখোমুখি হয়। তিন ম্যাচের রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে শেষ পর্যন্ত অলস্টারস চ্যাম্পিয়নশিপ নিশ্চিত করে।

এ ছাড়া উৎসবে মোবাইল লেজেন্ডস: ব্যাঙ ব্যাঙ (এমএলবিবি), এফসি ২৫ এবং ই-ফুটবল প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হয়। এমএলবিবি বিভাগে ভাইপার স্ট্রাইকার্স, এফসি ২৫ বিভাগে নিও, ই-ফুটবল একক বিভাগে শাওন শান্ত এবং দলীয় বিভাগে পিএনজি বট চ্যাম্পিয়ন হয়।

সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এআইইউবির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মিস নাদিয়া আনোয়ার, উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান। বক্তারা আয়োজনের ব্যাপ্তি, পেশাদার ব্যবস্থাপনা এবং প্রতিযোগিতামূলক গেমিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠান শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কারের অর্থ ও ক্রেস্ট বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি তিনজন সেরা ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর এবং এআইইউবি ফটোগ্রাফি ক্লাব, এআইইউবি ই-স্পোর্টস ক্লাব ও এআইইউবি পারফর্মিং আর্টস ক্লাবকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত