Ajker Patrika

ভারতে উচ্চশিক্ষা: আইসিসিআর বৃত্তি পেতে চাইলে

আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮: ৩০
ভারতে উচ্চশিক্ষা: আইসিসিআর বৃত্তি পেতে চাইলে

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস (আইসিসিআর) ভারত সরকারের একটি স্বায়ত্তশাসিত সাংস্কৃতিক সংগঠন। বিশ্বব্যাপী সম্পর্ক বৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক বিনিময় জোরদার করতে ১৯৫০ সালে এ প্রতিষ্ঠান চালু করা হয়। এই বৃত্তির আওতায় প্রতিবছর প্রায় ৭৩টি দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভারতের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়। বিস্তারিত জানিয়েছেন কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিসিআর স্কলার মো. জুবায়েদ হোসেন

প্রতিবছর বাংলাদেশের প্রায় ২০০ জন মেধাবী শিক্ষার্থী এই বৃত্তির মাধ্যমে পড়ার সুযোগ পায়। তাঁদের মধ্যে স্নাতক পর্যায়ে ১৪০ জন, স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ৪০ জন ও পিএইচডিতে ২০ জন। ২০২২ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি অর্থাৎ ‘সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন’ অনুষ্ঠানে এসে ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘সুবর্ণজয়ন্তী স্কলারশিপ’ নামে একটি স্কিমের ঘোষণা দেন। এই স্কিমের আওতায় আরও ৫০০ আসন বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া ‘লতা মঙ্গেশকর ডান্স অ্যান্ড মিউজিক স্কলারশিপ’ নামেও একটি স্কিম রয়েছে। এই বৃত্তির আওতায় স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডির জন্য আবেদন করা যাবে। এ ছাড়া সায়েন্স, আর্টস, কমার্স, সোশ্যাল সায়েন্স ও অন্য বিষয়ের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। তবে মেডিকেল সায়েন্সের ক্ষেত্রে এই বৃত্তি দেওয়া হয় না।

বৃত্তির সুযোগ-সুবিধা

  • এই বৃত্তি পেতে আবেদন করার জন্য কোনো ফি লাগবে না
  • শিক্ষার্থীদের কোনো টিউশন ফি দিতে হবে না
  • কোর্স অনুসারে শিক্ষার্থীরা প্রতি মাসে স্টাইপেন্ড পাবেন—
    ক. স্নাতক ১৮ হাজার রুপি; 
    খ. স্নাতকোত্তর ২০ হাজার রুপি গ. পিএইচডি ২২ হাজার রুপি
  • প্রত্যেক শিক্ষার্থী মাসে তাঁর আবাসন খরচ বাবদ সর্বোচ্চ ৬,৫০০ রুপি পাবেন।
  • এ ছাড়া চিকিৎসাসহ অন্য সুবিধা পাওয়া যাবে। 

আবেদনের যোগ্যতা

  • স্নাতকে আবেদনের জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীর অবশ্যই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে ৬০ শতাংশ নম্বর থাকা লাগবে। (সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর)
  • স্নাতকোত্তরে আবেদনের জন্য একজন শিক্ষার্থীর স্নাতকে কমপক্ষে ২.৫ থাকা লাগবে। (সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪০ বছর)
  • পিএইচডির ক্ষেত্রে স্নাতকোত্তরে ভালো ফল ও স্বীকৃত জার্নালে কিছু প্রকাশনা থাকতে হবে। (সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৫০ বছর)
  • স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘স্টাডি গ্যাপ’ নিয়ে চিন্তা নেই। পিএইচডির শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ২ বছরের স্নাতকোত্তর থাকা ভালো। 

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

  • পাসপোর্ট।
  • জাতীয় পরিচয়পত্র (ইংরেজিতে)।
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি (সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড)।
  • শিক্ষার্থীর সিগনেচারের ছবি।
  • মেডিকেল ফিটনেস সনদ।
  • সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার মূল সার্টিফিকেট ও মার্কশিট।
  • ২টি রেফারেন্স লেটার।
  • ইংরেজিতে ৫০০ শব্দের একটি প্রবন্ধ।
  • পিএইচডির জন্য গবেষণা প্রস্তাবনা।
  • কোনো সনদ বাংলায় থাকলে ইংরেজিতে রূপান্তর করতে হবে।
  • নাট্যকলা, নৃত্য বা সংগীতের শিক্ষার্থীদের অভিনয় বা গান ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা ভিডিও লিংক।
  • সকল সহশিক্ষা কার্যক্রমের সনদ। 

উল্লেখ্য, সব ছবি, সনদ, ভিডিওর সাইজ আইসিসিআরের ওয়েবসাইটে দেওয়া গাইডলাইন থেকে জেনে নিতে হবে। রেফারেন্স লেটার শিক্ষার্থীর আগের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের কাছ থেকে নেওয়া উত্তম। 

মো. জুবায়েদ হোসেনআবেদন পদ্ধতি
আবেদনের জন্য আইসিসিআরের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। আবেদন ফরমে চাওয়া সকল তথ্য সতর্কতার সঙ্গে পূরণ করে পুনরায় দেখে আবেদন পাঠাতে হবে। আবেদন সফল হওয়ার সংবাদটি ই-মেইলে ও আপনার প্রোফাইল থেকে জানতে পারবেন। 

আবেদনের পরবর্তী ধাপ
প্রাথমিকভাবে আবেদন গৃহীত হলে আরও ২টি বিশেষ ধাপ থাকে। একটি হলো ‘ইপিটি টেস্ট’। এটি একটি লিখিত পরীক্ষা, যেখানে আপনার ইংরেজি দক্ষতার যাচাই হবে। ইপিটি টেস্টে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ডাকা হবে ভাইভার জন্য। যাঁরা ভাইভায় ভালো করবেন, তাঁরাই এই বৃত্তির জন্য মনোনীত হবেন। 

চূড়ান্ত মনোনয়ন ও ভর্তি কার্যক্রম
চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন পাওয়া শিক্ষার্থীরা হাইকমিশন থেকে মেইল পাবেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে জানাতে হবে যে শিক্ষার্থী এই সুযোগ নেবেন কি না। সুতরাং ভাইভার পর সব সময় পোর্টাল ও মেইলে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। অফার লেটার পেলে তা দিয়ে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। ভিসা হয়ে গেলে হাইকমিশন ও প্রতিষ্ঠানের নির্দেশনা মেনে ভারতে আসতে হবে এবং ভর্তি কার্যক্রম শুরু করতে হবে। ভারতে এসেই পাসপোর্টের মাধ্যমে একটি সিম কিনে নিতে হবে। এরপর আইসিসিআর অফিসে গিয়ে রিপোর্ট করে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে রিপোর্ট করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে HIV টেস্টের জন্য পেপার নিয়ে নির্দেশিত মেডিকেল কলেজ থেকে টেস্ট করাতে হবে।

HIV টেস্টের রেজাল্ট পজিটিভ হলে শিক্ষার্থীকে দেশে ফিরে যেতে হবে। HIV-এর রিপোর্ট, বাসা ভাড়ার অ্যাগ্রিমেন্ট পেপার, সব সনদসহ অন্যান্য কাগজপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাজে জমা দিয়ে ভর্তির কাজ শেষ করতে হবে। ভর্তির পরেই FRRO-এর আবেদন করতে হবে। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও কাগজপত্র বিশ্ববিদ্যালয় ও আইসিসিআর দেবে। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে যেহেতু একটু সময় লাগবে, তাই বাংলাদেশ থেকে আসার সময় প্রথম এক বা দুই মাসের খরচ শিক্ষার্থীকে সঙ্গে নিয়ে আসাই উত্তম। ২০২৪-২০২৫ সেশনে আবেদন শুরু হবে ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ও আবেদনের শেষ তারিখ: ৩০ এপ্রিল, ২০২৪।

অনুলিখন: আশিকুর রহমান

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচন: ৪২ জন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি

জবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ২২
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের সামনে রোববার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের সামনে রোববার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা থেকে ৪২ জন প্রার্থীকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে ছাত্রদল ও ছাত্র অধিকার পরিষদ সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেল। ‎

বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের সামনে আজ রোববার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ দাবি তোলেন প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী খাদিজাতুল কুবরা। ‎

‎তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান প্যানেলের তিন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করেছে। তাঁদের একজন সম্পাদক এবং অপর দুজন কার্যনির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী। পাশাপাশি অন্যান্য প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরও প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়নি।

খাদিজাতুল কুবরা বলেন, প্রার্থীর এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষার সনদে যে নাম আছে, এর পাশাপাশি তাঁর পরিচিত নাম প্রার্থী তালিকায় না থাকায় ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে।‎

‎প্যানেলের দাবি, অবিলম্বে ওই ৪২ প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হোক। একই সঙ্গে জকসু নির্বাচনে অংশ নেওয়া সব প্রার্থী ও প্যানেলের প্রতি সমান, নিরপেক্ষ ও ন্যায়সংগত আচরণ নিশ্চিতের দাবিও জানানো হয়। ‎

‎গত ১৭ ও ১৮ নভেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ও হল সংসদের মোট ৩৪টি পদের বিপরীতে ২৪৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। যাচাই-বাছাই শেষে ২৪ নভেম্বর প্রাথমিক তালিকায় ২৩১ জন প্রার্থীর নাম প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। ‎

এরপর ১১ ডিসেম্বর জকসুর ২১ পদে ১৫৬ জন ও হল সংসদের ১৩ পদের বিপরীতে ৩৩ জন প্রার্থীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্য দিয়ে বাদ পড়েন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ৪২ জন প্রার্থী।

৩০ ডিসেম্বর জকসু নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হবে। আর ফলাফল ঘোষণা করা হবে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কৃষি গুচ্ছের ভর্তি আবেদনের সময় বাড়ল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
কৃষি গুচ্ছের ভর্তি আবেদনের সময় বাড়ল

কৃষি গুচ্ছের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তিতে আবেদনের সময় বাড়ানো হয়েছে। ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা ১৮ ডিসেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। এর আগে আবেদনের কার্যক্রম ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল

সম্প্রতি কৃষি গুচ্ছের ওয়েবসাইটে এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, কৃষি গুচ্ছের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তিতে আবেদনের সময়সীমা ১৮ ডিসেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত বর্ধিত করা হলো। আবেদন শুরু হয় গত ২৫ নভেম্বর থেকে।

এবার কৃষি গুচ্ছের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট আসনসংখ্যা ৩ হাজার ৭০১টি। ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩ জানুয়ারি। ওই দিন বেলা ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত চলবে এই পরীক্ষা।

কৃষি গুচ্ছের আওতাধীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ২৪-এর আকাঙ্ক্ষা ধারণ করেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে: জবি উপাচার্য

জবি প্রতিনিধি 
মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জবি উপাচার্যের শ্রদ্ধাঞ্জলি। ছবি: আজকের পত্রিকা
মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জবি উপাচার্যের শ্রদ্ধাঞ্জলি। ছবি: আজকের পত্রিকা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেছেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ২৪ এর জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করেই আমাদের এ নতুন বাংলাদেশ সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।’ আজ ‎রোববার (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়ার পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। ‎

‎জবি উপাচার্য বলেন, ‘একটি বৈষম্যহীন সমাজ ও কল্যাণ রাষ্ট্রের স্বপ্নে শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধারা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। কিন্তু ৫৪ বছরে আমরা সেই লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছি, যার মূল্য দিতে হয়েছে ২৪-এর জুলাই–আগস্টে বহু ছাত্র–জনতাকে।’ ‎

তিনি আরও বলেন, ‘একটি বৈষম্যহীন সমাজ এবং বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে শহীদদের স্বপ্ন পূরণ হবে। বাংলাদেশ একটু একটু করে সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছে।’ ‎

‎এর আগে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হয়। ‎এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিনসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এআইইউবির ২৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
এআইইউবির ২৩তম সমাবর্তনে বিভিন্ন অনুষদের ১৭৬৬ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
এআইইউবির ২৩তম সমাবর্তনে বিভিন্ন অনুষদের ১৭৬৬ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এআইইউবি)-এর ২৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়।

এআইইউবির প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু মিয়া আকন্দ তুহিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মোঃ সাহাবুদ্দিনের সম্মতিক্রমে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরী সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন এবং গ্র্যাজুয়েটদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সম্মানিত সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।

এআইইউবির ২৩তম সমাবর্তনে বিভিন্ন অনুষদের মোট ১৭৬৬ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এবারের সমাবর্তনে কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক পেয়েছেন ৩ জন; সুম্মা কাম লাউড পেয়েছেন ৪৩ জন; ম্যাগনা কাম লাউড পেয়েছেন ৭৪ জন; কাম লাউড পেয়েছেন ২৬ জন; ডা. আনোয়ারুল আবেদীন লিডারশিপ পদক পেয়েছেন ১৯ জন এবং ভাইস-চ্যান্সেলর পদক পেয়েছেন ২১ জন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এআইইউবির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নাদিয়া আনোয়ার, উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম এবং উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান।

সমাবর্তনের প্রধান অতিথি ড. আবেদ চৌধুরী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, বাংলাদেশ ও বিশ্ব বর্তমানে এক বড় সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সংকট হলো ঝুঁকি এবং সম্ভাবনার সমন্বয়। স্থানীয় ও বৈশ্বিকভাবে ঝুঁকি পরিমাপ এবং সম্ভাবনা বিবেচনায় দেখা যায়, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতাই সবচেয়ে বড় শক্তি।

তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মধ্যেই সেই শিক্ষা প্রতিফলিত হয়। সংকট শনাক্ত এবং অতিক্রম করার সক্ষমতা রয়েছে তাদের এবং সংকটের বাইরে এগিয়ে যাওয়ার সামর্থ্যই দেশের ভবিষ্যৎ। ভবিষ্যৎ আপনারাই।’

স্নাতকদের অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এই মুহূর্তটি কেবল একটি সমাবর্তন নয়; এটি আপনার বহু বছরের পরিশ্রমের স্বীকৃতি। পরীক্ষা ও অ্যাসাইনমেন্টের চাপ, নির্ঘুম রাত, নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও অটল থাকা, অভিভাবকদের কষ্টার্জিত টিউশন ফি আর আপনার নিজের নিষ্ঠা ও ত্যাগ, সবকিছুরই সম্মিলিত স্বীকৃতি এটি।’

স্বাগত বক্তব্যে এআইইউবির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান নাদিয়া আনোয়ার বলেন, ‘যখন আমি আপনাদের দিকে তাকাই, তখন শত শত গল্প ভেসে ওঠে। নীরবে লড়ে যাওয়া সংগ্রামের গল্প, হৃদয়ের গভীরে লালিত স্বপ্নের গল্প। সংশয়ে ভরা অসংখ্য রাত পেরিয়ে নতুন প্রত্যয়ে জেগে ওঠা সকালের গল্প। আপনারা এই মুহূর্তে পৌঁছেছেন কোনো কাকতালীয়তায় নয়; পৌঁছেছেন নিজের শক্তি, আশার আলো এবং ভবিষ্যতের প্রতি অটল অঙ্গীকারের পথ ধরে।’

অভিভাবকদের উদ্দেশে নাদিয়া আনোয়ার বলেন, ‘আপনাদের প্রতি আমাদের ভালোবাসা, সম্মান ও কৃতজ্ঞতা—এসব শুধু শব্দ নয়; এগুলো আমাদের অন্তরের গভীর অনুভূতির প্রকাশ। আপনারা নীরবে যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, হয়তো নিজের স্বপ্ন পিছিয়ে দিয়েছেন, হয়তো নিজের ইচ্ছাগুলো সংযত রেখেছেন, সেই ত্যাগই আজকের এই সাফল্যের প্রকৃত ভিত্তি।’

সমাবর্তন বক্তা ব্রাসেলসের আইআরইজি অবজারভেটরি অন একাডেমিক র‍্যাংকিং অ্যান্ড এক্সিলেন্সের এক্সিকিউটিভ কমিটি মেম্বার অধ্যাপক ড. হাবিব ফারদৌন শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এআইইউবি’র মূলমন্ত্র ‘হোয়্যার লিডারস আর ক্রিয়েটেড’ কেবল একটি বাক্য নয়; এটি শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব এবং সমাজের প্রতি অঙ্গীকারের প্রতিফলন। যেকোনো র‍্যাংকিংয়ের চেয়েও বড় বিষয় হলো, বিশ্ব আপনাকে চিনে নেওয়ার আগেই এআইইউবি আপনার সম্ভাবনায় বিশ্বাস করেছে। আপনার সবচেয়ে বড় শক্তি হলো শিখতে থাকা, আবার নতুনভাবে শিখতে পারা। এই চলমান শিক্ষণ-প্রক্রিয়ায় একজন কৌতূহলী মানুষ সেখানে সেতু নির্মাণ করেন, যেখানে অন্যরা কেবল দেয়াল দেখতে পান। ভবিষ্যৎ হবে তাদেরই, যারা এই সেতুগুলো গড়ে তুলতে সক্ষম।

শিক্ষার্থীদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে এআইইউবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আপনি এই স্তরে পৌঁছানোর জন্য দীর্ঘ পথ অতিক্রম করেছেন। তবে এখনো আপনাকে আরও অনেক দূর যেতে হবে এবং জীবনে সফল হতে আরও অনেক প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করতে হবে। মনে রাখবেন, এটি কোনো শেষ নয়, বরং সম্ভাবনাময় একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য শুরু।’

গ্র্যাজুয়েট, অভিভাবক ও সম্মানিত অতিথিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এআইইউবি’র উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘এআইইউবি’র পক্ষ থেকে আমরা সকল গ্রাজুয়েট, অভিভাবক ও অতিথিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। আপনাদের উপস্থিতি আজকের অনুষ্ঠানে বিশেষ মর্যাদা ও গৌরব যুক্ত করেছে।’

অনুষ্ঠানে এআইইউবির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ড. হাসানুল এ. হাসান ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ইশতিয়াক আবেদীন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ছিলেন বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্যরা, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যরা, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের কর্মকর্তারা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যরা, আমন্ত্রিত অতিথিরা, এআইইউবির কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, ডিন, শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তারা, শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত