Ajker Patrika

২৬ লাখ শিক্ষার্থীর ইউনিক আইডি নিয়ে ফের জটিলতা

রাহুল শর্মা, ঢাকা
আপডেট : ০৫ জুন ২০২৩, ১০: ৩৮
২৬ লাখ শিক্ষার্থীর ইউনিক আইডি নিয়ে ফের জটিলতা

জন্মনিবন্ধন সনদের নাম অনলাইনে বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় নেই। কারও কারও ক্ষেত্রে জন্মনিবন্ধন হলেও অনলাইনে নামের ঘরে নাম লেখা নেই। এ ধরনের কিছু সমস্যার কারণে শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডি পাওয়া নিয়ে নতুন জটিলতা দেখা দিয়েছে। ফলে ২৬ লাখ শিক্ষার্থীর আইডি পাওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা।

জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক মো. শামছুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জন্মনিবন্ধন সনদে শিক্ষার্থীর নাম অনলাইনে উভয় ভাষায় (বাংলা ও ইংরেজি) না থাকায় ২৬ লাখ শিক্ষার্থীর আইডি তৈরি হচ্ছে না। সমস্যা সমাধানে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন কার্যালয়কে একাধিক প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আশা করি, শিগগির এর সমাধান হবে।’

জটিলতার বিষয়ে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অনলাইনে জন্মনিবন্ধনের সব তথ্য পরিপূর্ণভাবে না থাকলে ইউনিক আইডি তৈরি সম্ভব নয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আবেদন ছাড়া কোনো তথ্য সিস্টেমে যোগ করার সুযোগ নেই। এতে আইনি বাধা আছে। এ জন্য ২৬ লাখ শিক্ষার্থীর জন্মনিবন্ধন সনদ সংশোধনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীর জন্য একটি ইউনিক আইডি তৈরি এবং সমন্বিত শিক্ষাতথ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি প্রণয়ন করতে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে এস্টাবলিশমেন্ট অব ইন্টিগ্রেটেড এডুকেশন ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। এতে ব্যয় ধরা হয় ৩৫৩ কোটি ২১ লাখ ৪২ হাজার টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে আছে বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস)। প্রকল্পের তিন বছরের মেয়াদ শেষ হয় ২০২১ সালের ৩০ জুন।

পরে প্রকল্পের মেয়াদ দুই দফা বাড়িয়ে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু এ সময়েও শেষ হয়নি কাজ। এখন প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর মৌলিক ও শিক্ষাসংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য এক জায়গায় রাখার উদ্দেশ্যেই তৈরি করার কথা ইউনিক আইডি। শিক্ষার্থীর বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হলে এ আইডিই জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) রূপান্তরিত হবে। মূলত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী, অর্থাৎ যাদের বয়স ১৮-এর নিচে, তাদের তথ্য সিস্টেমের মধ্যে আনাই ইউনিক আইডির মুখ্য উদ্দেশ্য। আর শিক্ষাতথ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি প্রণয়নের মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সব দপ্তরকে একই সফটওয়্যারে আনার মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালনা করা হবে।

ঘোষণা ছিল, মুজিববর্ষেই (২০২২ সালের মার্চ) মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের ১ কোটি ৬০ লাখ শিক্ষার্থীর হাতে ইউনিক আইডি কার্ড তুলে দেওয়া হবে। যদিও সে ঘোষণা বাস্তবায়ন হয়নি। আর এ জন্য করোনা মহামারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা এবং জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন কার্যালয়ের কারিগরি সমস্যাকে দায়ী করছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

প্রকল্পের সর্বশেষ (২ জুন) অগ্রগতি প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ১ কোটি ৬০ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ কোটি ১০ লাখ শিক্ষার্থীর ডেটা এন্ট্রি শেষ। এর মধ্যে ৫৯ লাখ ৮৪ হাজার শিক্ষার্থীর ইউনিক আইডি সিস্টেমে তৈরি হয়েছে। আর বাকিগুলোর ডেটা এন্ট্রি কাজ চলছে। এ বিষয়ে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ কোটি ৬০ লাখ বলা হলেও তা ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি হবে না। করোনার কারণে শিক্ষার্থীর ঝরে পড়ার হার বৃদ্ধি, জাতীয় পরিচয়পত্রে অন্তর্ভুক্ত হওয়া, দ্বৈত শিক্ষার্থী থাকায় এ সংখ্যা কমেছে।

ইউনিক আইডি তৈরিতে অন্যতম দায়িত্ব পালনকারী সংস্থা জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন কার্যালয়। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন কার্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার জেনারেল মির্জা তারিক হিকমত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ইউনিক আইডি দেওয়ার অন্যতম শর্ত জন্মনিবন্ধন সনদে নাম বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় থাকতে হবে। এর ব্যতিক্রম হলে ইউনিক আইডি তৈরি হয় না। জন্মসনদ সংশোধন ছাড়া এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।

কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ইউনিক আইডি কার্ডের ডিজাইন অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, আগামী জুলাই মাস থেকে পর্যায়ক্রমে কার্ড বিতরণ করা সম্ভব হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি

প্রসেনজিৎ সেন
প্রসেনজিৎ সেন।
প্রসেনজিৎ সেন।

আসন্ন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি পরীক্ষা দুটি গ্রুপে—বাণিজ্য এবং অ-বাণিজ্য অনুষ্ঠিত হবে। বাণিজ্য গ্রুপে বাংলা থেকে ৮, ইংরেজি থেকে ২০, ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা থেকে ২০, হিসাববিজ্ঞান থেকে ২০ এবং ফাইন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা অথবা উৎপাদন ও বিপণন থেকে ১৫ নম্বরের প্রশ্ন করা হয়।

অ-বাণিজ্য গ্রুপে বাংলা থেকে ৮, ইংরেজি থেকে ২০, সাধারণ জ্ঞান থেকে ৪০ এবং আইসিটি থেকে ১২ নম্বরের প্রশ্ন থাকে। সাধারণ জ্ঞান অংশে সাধারণ গণিত, অর্থনীতি, অ্যাপটিচুড টেস্ট, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি অন্তর্ভুক্ত থাকে।

উভয় গ্রুপেই মোট ৮০টি প্রশ্নে ১০০ নম্বর নির্ধারিত থাকে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, আইবিএতে ভর্তির জন্য বাণিজ্য ও অ-বাণিজ্য উভয় গ্রুপের পরীক্ষার্থীদেরই ইংরেজিতে ২৫ নম্বরের মধ্যে ন্যূনতম ১০ অর্জন করতে হয়।

এ ক্ষেত্রে বাণিজ্য গ্রুপের পরীক্ষার্থীদের জন্য হিসাববিজ্ঞান, ইংরেজি এবং ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা—এই তিনটি বিষয়ে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। কারণ এখানে প্রতিটি বিষয় থেকেই ২০ নম্বর করে বরাদ্দ রয়েছে। ফাইন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা কিংবা উৎপাদন ও বিপণনের মধ্যে যে বিষয়ে দক্ষতা বেশি, সেটি বেছে নেওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

অ-বাণিজ্য গ্রুপের ক্ষেত্রে সাধারণ জ্ঞান অংশে সবচেয়ে বেশি নম্বর থাকায় এই অংশে ভালো প্রস্তুতি অত্যন্ত জরুরি। সাধারণ গণিতে দক্ষতা বাড়াতে বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় আসা গাণিতিক সমস্যার অনুশীলন করতে হবে। এটা প্রস্তুতি কার্যকর ভূমিকা রাখে। আইসিটির জন্য বোর্ড বইয়ের পাশাপাশি বিগত বছরের প্রশ্নগুলো ভালোভাবে অনুশীলন করা প্রয়োজন।

পাশাপাশি বাংলা ও ইংরেজি—এই দুটি বিষয় উভয় গ্রুপের জন্যই সমান গুরুত্বপূর্ণ। বাংলায় গদ্য, পদ্য, নাটক ও উপন্যাস থেকে কয়েকটি প্রশ্ন আসে। সেই সঙ্গে ব্যাকরণ থেকেও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক প্রশ্ন থাকে। ইংরেজিতে মূলত বেসিক গ্রামার ও ভোকাবুলারির ওপর জোর দেওয়া হয়। তাই বেসিক ধারণা স্পষ্ট রাখা জরুরি।

একটা কথা হলো, ভালো প্রস্তুতির কোনো বিকল্প নেই। তবে শুধু হার্ডওয়ার্ক নয়, স্মার্টওয়ার্কের সঙ্গেও ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। পরীক্ষার দিন প্রবেশপত্র ও প্রয়োজনীয় উপকরণ সঙ্গে রাখা, নির্ধারিত সময়ের আগেই কেন্দ্রে পৌঁছানো এবং পরীক্ষার হলে ঠান্ডা মাথায় প্রশ্ন বুঝে উত্তর দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সময় ব্যবস্থাপনার দিকে খেয়াল রেখে যেসব প্রশ্নের উত্তর নিশ্চিত, সেগুলোই দাগানো উচিত। কারণ ভর্তি পরীক্ষায় নেগেটিভ মার্ক রয়েছে।

অনেকে ভর্তি পরীক্ষার এ যাত্রায় প্রায়ই হতাশ হয়ে পড়েন। যেটা পরীক্ষার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তবে আমি বলব, হতাশ হওয়ার কিছু নেই। নিয়মিত অধ্যয়ন, সঠিক কৌশল এবং আত্মবিশ্বাস—এই তিনটির সমন্বয়ই রাবি ভর্তি পরীক্ষায় সফলতার মূল চাবিকাঠি। সব পরীক্ষার্থীদের জন্য রইল আন্তরিক শুভকামনা।

লেখক: শিক্ষার্থী, আইবিএ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বুয়েট ভর্তি পরীক্ষার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

শরিফুল ইসলাম শুভ
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ২০
বুয়েট ভর্তি পরীক্ষার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ভর্তি পরীক্ষার দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ভয়ভীতি ততই বাড়ছে। বিশেষত, ৩টি বিষয়ের ৬টি পত্রের সব টপিকের ওপর ৩ ঘণ্টার এই একটি পরীক্ষা যখন ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দেয়, তখন সে পরীক্ষার জন্য ভয় লাগাটাই স্বাভাবিক। মনে রাখতে হবে, এ ভয় শুধু তুমি একা পাচ্ছ না; সব পরীক্ষার্থীই কম-বেশি একই অনুভূতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এমনকি তোমার আগে যেসব সিনিয়র ভাইয়া-আপুরা চান্স পেয়েছেন, তাঁরাও এই একই অনুভূতির মধ্য দিয়ে গেছেন।

৬ পেপারের প্রস্তুতি

সাধারণত শিক্ষার্থীরা বোর্ড পরীক্ষা বা কলেজে একটি বিষয়ের একটি পত্রের পরীক্ষা দিয়ে থাকে (যেমন: পদার্থবিজ্ঞান প্রথম পত্র)। আর এ একটি পত্রের প্রস্তুতিই যেখানে বেশ কঠিন, সেখানে ৬টি পত্রের প্রস্তুতি নেওয়াটা নিশ্চয়ই আরও কঠিন। আর তাই এই কঠিন পরীক্ষার মাধ্যমেই অসংখ্য পরীক্ষার্থীর মধ্য থেকে অল্পসংখ্যককে বুয়েটে পড়াশোনার জন্য নির্বাচন করা হয়।

শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির মূল কৌশল

তোমার হাতে যখন আর অল্প ক’দিন বাকি আছে, তখন শেষ মুহূর্তে নিজের প্রস্তুতিকে শাণিত করতে কিছু বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। প্রথমত, একাডেমিক থেকে অ্যাডমিশন পর্যন্ত শেখা টপিকগুলো ভালোভাবে রিভিশন দিতে হবে। আর তা করতে হবে তোমার নিজস্ব নোটখাতা থেকে। যদি নিজের ভালোভাবে নোট করা না থাকে তবে যে বইগুলো পড়েছ, সেখান থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর ওপর চোখ বুলিয়ে নিতে হবে। থিওরির ক্ষেত্রে ডিটেইলস প্রতিপাদন বা লাইন বাই লাইন সব পড়ার দরকার নেই; বরং মূল আইডিয়াগুলো পরিষ্কারভাবে মাথায় রাখতে হবে। আর ম্যাথের ক্ষেত্রে সব ধরনের সূত্র ও প্রশ্নের টাইপ ভালোভাবে আয়ত্তে রাখতে হবে।

প্রস্তুতি যেভাবে আত্মবিশ্বাস ধরে রাখবে

দেখো, শুধু রিভিশন করলেই আত্মবিশ্বাস আসবে না। আত্মবিশ্বাস অর্জনের জন্য অবশ্যই ফাইনাল মডেল টেস্ট দিতে হবে। ফিজিকস, কেমিস্ট্রি ও ম্যাথ মিলিয়ে বুয়েট ভর্তি পরীক্ষার অনুরূপ মডেল টেস্টে অংশগ্রহণ করে এবং তাতে ধীরে ধীরে উন্নতি করার মাধ্যমেই আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে। অফলাইনে পরীক্ষা দিতে যাতায়াতে সময় অপচয় হলে বা সুবিধামতো টাইম শিডিউল না পেলে চাইলে অনলাইনেও মডেল টেস্টে অংশগ্রহণ করতে পার। বর্তমানে শিখোসহ বেশ কয়েকটি অ্যাডটেক প্ল্যাটফর্মে অনলাইনে মডেল টেস্ট দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

মডেল টেস্টে যে বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দিতে হবে

কয়েকটি ফুল মডেল টেস্ট (বুয়েট ভর্তি পরীক্ষার অনুরূপ) দেওয়ার পর তুমি বুঝতে পারবে, কিছু টপিক তুমি স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে উত্তর করতে পারছ। আবার কিছু টপিক থেকে প্রশ্ন এলে তোমার উত্তর করতে কষ্ট হচ্ছে বা মনে থাকছে না। বেছে বেছে সে টপিকগুলো ভালো করে আবার ঝালাই করে নিতে হবে।

মডেল টেস্ট দেওয়ার সময় বিশেষভাবে তিনটি বিষয় খেয়াল রাখবে। যেমন: স্পিড মেইনটেইন করা; রিভিশন দেওয়া ও সিলি মিসটেক কমানো।

আড়াই ঘণ্টার মধ্যে শেষ করার অভ্যাস করতে হবে

বুয়েট অ্যাডমিশন টেস্টের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হলো টাইম শর্টেজ। ৩ ঘণ্টায় ৬০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। তাই মডেল টেস্ট দেওয়ার সময় চেষ্টা করবে আড়াই ঘণ্টার মধ্যে লেখা শেষ করার অভ্যাস গড়ে তুলতে। এতে এক্সাম ডে-তে টাইম ম্যানেজ করা অনেক সহজ হবে। পাশাপাশি শেষে ১০-১৫ মিনিট সময় রাখতে হবে রিভিশনের জন্য। অনেক সময় মেন্টাল প্রেশারের কারণে ছোটখাটো ক্যালকুলেশন মিসটেক হয়ে যায়, যা শেষে রিভিশন দেওয়ার সময় ধরতে পারলে ওভারঅল নম্বর তথা ফলাফল অনেক ভালো হয়।

মডেল টেস্টের খাতাগুলোও রিভিশন দাও

মডেল টেস্ট দিতে গেলে দেখবে, অসংখ্য ছোট ছোট ভুল তোমার নম্বর কমিয়ে দিচ্ছে। আমার পরামর্শ হলো, পরীক্ষার আগের কয়েক দিন গত দুই বছরে তুমি যেসব পরীক্ষায় অংশ নিয়েছো, সেগুলোর মধ্যে যেসব খাতা তোমার কাছে আছে, সেগুলো একবার করে দেখে যাও। বিশেষ করে যেসব জায়গায় ভুলের কারণে নম্বর কাটা গেছে, সেগুলোর দিকে ৩০ সেকেন্ড করে ফোকাস করো। এতে ভুলের ব্যাপারে তোমার সেনসিটিভিটি বাড়বে এবং ছোট ছোট ভুল অনেক কমে যাবে।

সবশেষে বলব, প্রস্তুতি যেমনই হোক না কেন, বিশ্বাস রাখবে বুয়েট ভর্তি পরীক্ষা হবে তোমার জীবনের বেস্ট পরীক্ষা। আর এক্সাম চলাকালে যদি কোনো প্রশ্ন না পার, তখন ঘাবড়ে যাবে না; বরং ভাববে এটা শুধু আমি না, বাকিরাও সম্ভবত পারছে না। তাই ভয় না পেয়ে যেগুলো পারছ, সেগুলো ভালোভাবে করার চেষ্টা করো। তাহলেই তোমার এক্সাম ভালো হবে। আজ আর বেশি কিছু বলব না। শেষ মুহূর্তে নিজের বেস্ট এফোর্টটা দাও। ইনশা আল্লাহ, তোমার পরীক্ষা অনেক ভালো হবে।

শিক্ষার্থী, ইইই বিভাগ, ১৪ ব্যাচ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাবির ‘বি’ ইউনিটে চান্স পেতে যা করতে হবে

মো. ফাহিম ফরহাদ
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ২২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) একটি আসন বহু শিক্ষার্থীর স্বপ্ন। সবুজ ক্যাম্পাস, মানসম্মত শিক্ষা ও সীমিত আসনের কারণে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা বরাবরই প্রতিযোগিতাপূর্ণ। বিশেষ করে সমাজবিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষায় প্রতিযোগিতা আরও তীব্র হয়ে থাকে। পরীক্ষার দিন যত ঘনিয়ে আসে, ততই ভর্তি-ইচ্ছুকদের মনে তৈরি হয় দুশ্চিন্তা ও উৎকণ্ঠা। তবে সঠিক দিকনির্দেশনা, বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি ও পরিকল্পিত কৌশল অনুসরণ করলে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।

বাংলা

বাংলার ক্ষেত্রে এইচএসসির বাংলা প্রথম পত্র বইয়ের গদ্য, পদ্য, উপন্যাস ও নাটক নিয়ে ভালো ধারণা থাকতে হবে। প্রতিবছর বাংলা পাঠ্যবইয়ের কবি-লেখক পরিচিতি, শব্দার্থ এবং গদ্য-পদ্যের লাইন থেকে প্রশ্ন আসে। বাংলা ব্যাকরণের সমাস, সন্ধি, শব্দধ্বনি, বাক্য, পদ, ণ-ত্ব বিধান-ষ-ত্ব বিধান এবং মুখস্থ অংশ (বিপরীত শব্দ, পারিভাষিক শব্দ, বাগধারা) গুরুত্বসহকারে পড়তে হবে। যদি কেউ জাবির নৃবিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যয়ন করতে চায়, তাহলে অবশ্যই বাংলায় ৫০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে।

ইংরেজি

ভর্তি পরীক্ষায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ইংরেজি। প্রতিবছর অনেক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয় শুধু ইংরেজি বিষয়ে দুর্বলতার কারণে। জাবির ‘বি’ ইউনিটে প্যাসেজ থেকে প্রশ্ন হয়ে থাকে, এ ক্ষেত্রে বাসায় প্যাসেজ অনুশীলন করা জরুরি। অনেক সময় দেখা যায়, ইংরেজি প্রথম পত্র পাঠ্যবইয়ের প্যাসেজ থেকেও প্রশ্ন আসে, তাই সেগুলোও পড়া গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়াও ইংরেজি গ্রামারের পার্টস অব স্পিচ, সেন্টেন্স, নেরেশন, টেন্স, ভয়েস এ টপিকগুলো গুরুত্বসহকারে পড়তে হবে এবং ইংরেজি সাহিত্যিক পদ থেকেও প্রশ্ন আসতে দেখা যায়।

সাধারণ গণিত

জাবির ‘বি’ ইউনিটে শুধু বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ রয়েছে। তাই ‘বি’ ইউনিটে সাধারণ গণিত থেকেও ২০টি প্রশ্ন আসে। তবে ভয়ের কিছু নেই। সাধারণ গণিত থেকে আসা প্রশ্নগুলো সহজ এবং মৌলিক ধরনের হয়ে থাকে। সাধারণ গণিতে বীজগণিত (সাধারণ সূত্র, ফাংশন, সেট, সম্ভাবনা, সমীকরণ, উৎপাদক), পাটিগণিত (ধারা, ল সা গু-গ সা গু, গড়, ঐকিক নিয়ম, শতকরা, লাভ-ক্ষতি-মুনাফা) এবং জ্যামিতি (সাধারণ ধারণা, ক্ষেত্রফল, পিথাগোরাস, ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, বৃত্ত) গুরুত্বপূর্ণ।

সাধারণ জ্ঞান ও যৌক্তিক বিশ্লেষণ

সাধারণ জ্ঞানের ক্ষেত্রে প্রথমত সাময়িক সময়ের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। এ ছাড়াও সাধারণ জ্ঞানের জন্য নদী-নালা, বাংলাদেশের প্রথম ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, গুরুত্বপূর্ণ সাল, বিভিন্ন সংস্থা, পূর্বনাম, পূর্ণরূপ, সদর দপ্তর-ভাষা-মুদ্রা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, সংসদ ও সরকারব্যবস্থা, সংবিধান—এ টপিকগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়াও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অত্যাবশ্যক তথ্যগুলো মনে রাখতে হবে।

বাজারে যৌক্তিক বিশ্লেষণ বিষয়টির জন্য কিছু বই পাওয়া যায়। সেসব বই থেকে ঘড়ির সময়, বার, দিন, মাস, বছর নির্ণয়, দূরত্ব, নৌকা স্রোত, সংখ্যা সিরিজ, রক্তের সম্পর্ক, প্রতিবিম্ব, সিদ্ধান্ত গ্রহণ—এ টপিকগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে এবং অনুশীলন করতে হবে।

পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন করার জন্য প্রস্তুতি চালিয়ে যেতে হবে এবং কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। যেহেতু পরীক্ষায় ভুল উত্তরের জন্য নেতিবাচক নম্বর কাটা হবে, তাই মনোযোগসহকারে সঠিক উত্তর চিহ্নিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিযোগিতা তীব্র, তাই সঠিক প্রস্তুতি ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। শেষ পর্যন্ত হাল ছাড়া যাবে না, পরিশ্রম একদিন ফলপ্রসূ হবেই।

শিক্ষার্থী, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ, জাবি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোনাশ ইউনিভার্সিটিতে সম্পূর্ণ অর্থায়িত গবেষণা বৃত্তি

শিক্ষা ডেস্ক
মোনাশ ইউনিভার্সিটি, অস্ট্রেলিয়া। ছবি: সংগৃহীত
মোনাশ ইউনিভার্সিটি, অস্ট্রেলিয়া। ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ায় যেসব শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার স্বপ্ন দেখছেন, তাঁদের জন্য এল দারুণ সুযোগ। মোনাশ ইউনিভার্সিটি রিসার্চ স্কলারশিপ ২০২৬-এর আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থী ও অস্ট্রেলিয়ার নিজস্ব শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। বৃত্তিটিতে অর্থায়ন করবে দেশের সরকার। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা দেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন। ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষের জন্য বৃত্তিটি উন্মুক্ত।

অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্থানীয় ও বিশ্বখ্যাত উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মোনাশ ইউনিভার্সিটি অন্যতম। ১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয় অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যে অবস্থিত। গবেষণা, উদ্ভাবন ও আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষার জন্য বিশ্বজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপরিচিত রয়েছে। কিউএস ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিংসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক র‍্যাঙ্কিংয়ে মোনাশ ইউনিভার্সিটি ধারাবাহিকভাবে স্থান করে নিচ্ছে।

আর্থিক সুবিধা

এই বৃত্তিটি যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য সম্পূর্ণ অর্থায়িত একটি সুযোগ। অস্ট্রেলিয়া সরকারের তত্ত্বাবধানে প্রদত্ত এ স্কলারশিপে পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় সব খরচই বহন করা হয়। এর আওতায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ করা হবে এবং মাসিক স্টাইপেন্ড বা ভাতা দেওয়া হবে। পাশাপাশি মিলবে আন্তর্জাতিক যাতায়াতের বিমান টিকিট, নতুন দেশে গিয়ে বসবাস শুরুর জন্য রিলোকেশন অ্যালাউয়েন্স, নিয়মিত লিভিং অ্যালাউয়েন্স, বই ও কোর্স উপকরণের খরচ এবং স্বাস্থ্যসেবা ভাতা।

বৃত্তির ধরন

অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্থানীয় মোনাশ ইউনিভার্সিটিতে গবেষণাভিত্তিক উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে একাধিক মর্যাদাপূর্ণ স্কলারশিপ। এর মধ্যে রিসার্চ ট্রেনিং প্রোগ্রাম স্কলারশিপ অস্ট্রেলিয়ান সরকারের অর্থায়নে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য প্রদান করা হয়। এই বৃত্তির মোট মূল্য সর্বোচ্চ প্রায় ৩২ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার। একই পরিসরে মোনাশ গ্র্যাজুয়েট স্কলারশিপ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে গবেষণা ডিগ্রির শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়।

এ ছাড়া গবেষণায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে রয়েছে ম্যাক্সওয়েল কিং পিএইচডি স্কলারশিপ, যা পিএইচডি শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহে সহায়তা করে। এই বৃত্তির আর্থিক মূল্য সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার ৬০০ ডলার। প্রতিবছর ভিন্ন ভিন্ন অনুষদে পর্যায়ক্রমে দেওয়া হয় মোনাশ সিলভার জুবিলি পিএইচডি স্কলারশিপ। যার মূল্য সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার ডলার। মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞানে গবেষণার জন্য রয়েছে রেডন গ্র্যাজুয়েট রিসার্চ স্কলারশিপ। এই বৃত্তির মূল্য সর্বোচ্চ ২০ হাজার ডলার।

আবেদনের যোগ্যতা

দেশি ও বিদেশি উভয় ধরনের শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদনকারীদের অবশ্যই স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে। এই স্কলারশিপ মূলত প্রার্থীর একাডেমিক ফলাফল, গবেষণাকর্ম এবং পূর্ববর্তী গবেষণা অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে প্রদান করা হয়। পাশাপাশি নির্বাচিত প্রোগ্রামে ভর্তি হতে হলে ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার প্রমাণ থাকা বাধ্যতামূলক।

অধ্যয়নের ক্ষেত্রগুলো

আর্টস, ডিজাইন ও আর্কিটেকচার; হিউম্যানিটিজ এবং সোশ্যাল সায়েন্সেস; বিজনেস; এডুকেশন; ইঞ্জিনিয়ারিং; ইনফরমেশন টেকনোলজি; মেডিসিন; নার্সিং; হেলথ সায়েন্সেস; ফার্মেসি ও ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সেস এবং ল। এ বিষয়গুলোর মধ্যে শিক্ষার্থীর আগ্রহ ও যোগ্যতার ওপর ভিত্তি করে মাস্টার্স বা পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তির সুযোগ রয়েছে।

আবেদনের পদ্ধতি

আগ্রহী প্রার্থীরা এই লিংকে গিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ সময়

৩১ মার্চ, ২০২৬।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত