Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

বিশ্ববিদ্যালয় আইন দ্রুত করা প্রয়োজন

অধ্যক্ষ এ কে এম ইলিয়াস। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজ নিয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করবে সরকার। আগে এ কলেজগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর কলেজগুলোর অধিভুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত জানায় ঢাবি। এমন বাস্তবতায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগপর্যন্ত কলেজগুলোর কার্যক্রম চালিয়ে নিতে সরকার প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে। এ পদে দায়িত্ব পেয়েছেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম ইলিয়াস। গত মে মাসে তিনি প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। অধ্যাপক ইলিয়াসের নতুন দায়িত্ব গ্রহণ এবং সাত কলেজের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি আজকের পত্রিকার মুখোমুখি হয়েছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ইলিয়াস শান্ত

ইলিয়াস শান্ত
আপডেট : ১৭ জুন ২০২৫, ১৫: ০১

প্রশ্ন: আপনাকে একসঙ্গে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ও সাত কলেজের প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করতে হবে, দুটি প্রধান দায়িত্ব পালনে কোনো জটিলতা তৈরি হবে বলে মনে করেন?

অধ্যাপক ইলিয়াস: না, কোনো জটিলতা হবে বলে মনে করি না। কারণ, আমি এর আগেও বেশ কিছুদিন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব পালন করেছি। নতুন মেয়াদে সে অভিজ্ঞতা আমাকে কাজে দেবে। এ ছাড়া সাত কলেজের বাকি কলেজগুলোতে যেসব সম্মানিত অধ্যক্ষরা রয়েছেন—আমরা সবাই প্রায় কাছাকাছি সময়ে নিয়োগ পেয়েছি। আমাদের সবার সঙ্গে সবার পারস্পরিক সম্পর্ক খুবই আন্তরিক। নতুন যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে আমাদের এ সম্পর্ক ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছে। এখানে কোনো কলেজকে ভিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই। প্রত্যেক কলেজের শিক্ষার্থীদের আমরা নিজেদের শিক্ষার্থী বলে মনে করি। কলেজগুলোতে হেল্প ডেস্কের কার্যক্রম শুরু হলে আমাদের কার্যক্রমগুলো আরও সহজ ও গতিশীল হবে। নতুন প্রশাসনের কাজকে আরও কীভাবে সহজ ও গতিশীল করা যায়, সে লক্ষ্যে ঈদের পর থেকে ইউজিসির সমন্বয়ে আমরা ধারাবাহিক আলোচনা চালিয়ে যাব। এসব আলোচনার আউটপুট আমরা প্রতিনিয়ত শেয়ার করব। এতে নতুন যে বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে, সেটা সম্পর্কে সাত কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধারণা আরও স্বচ্ছ হবে।

প্রশ্ন: সাত কলেজের নতুন প্রশাসনের গঠন কেমন হবে? এ প্রশাসনের ক্ষমতা ও কার্যাবলি কী কী থাকবে?

অধ্যাপক ইলিয়াস: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে যে কাঠামো পাস হয়েছে, সেটাই আমাদের কার্যক্রমের মূল চালিকাশক্তি। নতুন প্রশাসনে ইউজিসির একজন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন প্রতিনিধি রয়েছেন। এ ছাড়া ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষসহ সাত কলেজের বাকি কলেজগুলোর অধ্যক্ষদের সমন্বয়ে এই প্রশাসন গঠিত হয়েছে। নতুন এই কাঠামোর অধীনে ভবিষ্যতে সাত কলেজের সব কার্যক্রম পরিচালিত হবে। নতুন প্রশাসন অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে পারলে সাত কলেজে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।

প্রশ্ন: নবগঠিত প্রশাসন পরিচালনায় পর্যাপ্ত জনবল রয়েছে কি?

অধ্যাপক ইলিয়াস: কিছু ক্ষেত্রে অবশ্যই জনবলের প্রয়োজন হবে। অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে নতুন প্রশাসন ঢাকা কলেজ থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ভবিষ্যতে নতুন প্রশাসনের যে কার্যক্রমগুলো হবে, সেগুলো এখান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনা-নেওয়া অথবা ঢাকা কলেজ থেকে অন্য কলেজগুলোতে পাঠানোর ক্ষেত্রে যাতে কোনো বিড়ম্বনা না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে আমাদের অতিরিক্ত জনবল প্রয়োজন হতে পারে। সেটা আমাদের ভাবনায় রয়েছে। কী পরিমাণ জনবল লাগতে পারে, সেটা আমরা পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সহায়তা করবে বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছে।

প্রশ্ন: এ প্রশাসনের মেয়াদ কত দিন হবে?

অধ্যাপক ইলিয়াস: অধ্যক্ষ পদে দুই বছরের যে মেয়াদের উল্লেখ রয়েছে, আপাতত সেটাই এ প্রশাসকের মেয়াদ। এটা এখানে কমবেশি হতে পারে। তবে এখানে যেহেতু দুই বছরের একটা লিমিটেশন দিয়ে দেওয়া হয়েছে, সে ক্ষেত্রে এখনই সেটি দুই বছরের বেশি করার সুযোগ নেই। তার আগেই যদি প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শেষ করা যায়, তাহলে হয়তো এ পদের প্রয়োজন আর নাও থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে সরকার যেটা ভালো মনে করবে, তারা সে ব্যবস্থা নেবে। তার আগে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কার্যক্রম, সেটার অগ্রগতির ওপর নির্ভর করবে এ প্রশাসনের মেয়াদ।

প্রশ্ন: প্রস্তাবিত ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় কবে থেকে পুরোদমে কাজ শুরু করতে পারে, এ বিষয়ে কোনো বার্তা পেয়েছেন কি?

অধ্যাপক ইলিয়াস: কার্যক্রমের দুইটা ধারা রয়েছে। একটা হলো আমাদের যে চলমান কাঠামো আছে, সেটাকে চালিয়ে নেওয়া। অপরটি হলো নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের জন্য যে আইনগত কার্যক্রম, সেটাকে ত্বরান্বিত করা। এই দুটি কাজ আমাদের একসঙ্গে করতে হবে। যাতে একটির জন্য অপরটি আটকে না থাকে অথবা বাধাগ্রস্ত না হয়। এ ছাড়া নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের নির্দেশনায় ইউজিসি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি কাজ করছে। তাদের কাজ শেষ হওয়ার পর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনগত ভিত্তি তৈরি হলে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় কার্যক্রম শুরু করতে পারবে।

প্রশ্ন: সাত কলেজের নিয়মিত শিক্ষার্থীরা গ্র্যাজুয়েশন শেষে ঢাবির সনদ চান না। তাঁরা নতুন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সনদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন...

অধ্যাপক ইলিয়াস: এ বিষয়ে আমাদের কিছুটা সময় দিতে হবে। আমাদের নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন পাস হলেই কেবল শিক্ষার্থীদের এ দাবির বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা দিতে পারব। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাত কলেজকে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়, তখন নিয়মিত শিক্ষার্থীরা কীভাবে সনদ পেয়েছে, সেটা আমাদের দেখতে হবে। তখন যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্র্যাজুয়েটদের সনদ দিতে পারে, আমার মনে হয়, এখন দিতেও কোনো সমস্যা হবে না। এ জন্য সবার আগে প্রয়োজন প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনগত ভিত্তি তৈরি করা। সেটা যত দ্রুত সম্ভব হবে, শিক্ষার্থীদের এ-সংক্রান্ত দাবিগুলো বাস্তবায়ন তত সহজ হবে। এ বিষয়ে আমি শিক্ষার্থীদের উদ্বিগ্ন না হতে অনুরোধ করব।

প্রশ্ন: প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে একটা শঙ্কা তৈরি হয়েছে, এ বিষয়ে কিছু বলবেন কিনা?

অধ্যাপক ইলিয়াস: সাত কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের যে কার্যক্রমটা ঘটছে, সেটা দেশের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদদের সমন্বয়ে ঘটছে। এ কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইউজিসির সম্মানিত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ। সম্মানিত সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান। আপনি জানেন, ফায়েজ স্যারের বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের ইতিহাস রয়েছে। এ রকম মানুষের ওপর আস্থা রেখেই আমরা কাজ করছি। চেয়ারম্যান স্যার সাত কলেজের এই কার্যক্রম বাস্তবায়নে স্পষ্ট বলেছেন, প্রত্যেক কলেজের স্বকীয়তা বজায় থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর হলেও বর্তমান শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদগুলো সংরক্ষণের বিষয়ে আমরা ইউজিসি থেকে আশ্বাস পেয়েছি। সুতরাং আমি আশঙ্কার বিষয়ে বলব, সেটা অমূলক। একই সঙ্গে কলেজগুলোতে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির যে পাঠদান চলছে, সেটাও থাকবে। অর্থাৎ কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর প্রক্রিয়ায় কারও কোনো কিছু হারানোর শঙ্কা নেই। দুটি বিষয়ে উইন উইন সিচুয়েশনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

প্রশ্ন: সাত কলেজের যে দুটি কলেজে উচ্চমাধ্যমিক নেই, নতুন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সঙ্গে সে কলেজগুলোতেও উচ্চমাধ্যমিক যুক্ত করা হবে বলে আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি। এ বিষয়ে আপনি জানেন কিনা?

অধ্যাপক ইলিয়াস: এখন পর্যন্ত আমাদের যে মিটিংগুলো হয়েছে, সেখানে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা বা সিদ্ধান্ত—কোনো কিছুই হয়নি।

প্রশ্ন: ঈদের আগেই প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো-মডেল প্রকাশের কথা আমরা শুনেছি। কবে এগুলো প্রকাশ হতে পারে?

অধ্যাপক ইলিয়াস: আমিও সংবাদমাধ্যমের বরাতে শুনেছি। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটির নেতাদের সঙ্গে আমার পৃথক কোনো আলোচনা হয়নি। তবে এটুকু বলতে পারি, কার্যক্রমের একটি ধারাবাহিকতা আছে। সে ক্ষেত্রে হয়তো কমিটি কোনটা আগে কোনটা পরে প্রকাশ করা যেতে পারে, সে বিষয়ে একটা ধারণা দিয়েছে। এখন যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর হচ্ছে, এটার জন্য সর্বোচ্চ সমাধান হলো বিশ্ববিদ্যালয় আইন প্রণয়ন করা। এটা আমি আগেও বলেছি, যে অধ্যাদেশটা হবে সেটা না হওয়ার আগপর্যন্ত যা কিছু প্রকাশ করি না কেন, সেটা বাস্তবসম্মত নয়। বাস্তবতা হলো আগে আইনটা হওয়া। এটা কত দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্ভুলভাবে শেষ করা যায়, সে বিষয়ে আমরা ইউজিসিকে সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়ার অঙ্গীকার করেছি।

প্রশ্ন: অধিভুক্ত থাকাকালে ঢাবি সাত কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক বিষয়ে দায়িত্ব পালন করেছে। এখন ইউজিসি, ঢাবি ও নবগঠিত প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করবে। তিনটি বডির সঙ্গে এ সমন্বয়টা কীভাবে করবেন?

অধ্যাপক ইলিয়াস: নতুন প্রশাসনের সমন্বয় কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে আছেন ইউজিসির সম্মানিত সদস্য অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান। সাত কলেজের অধ্যক্ষরাও এ কমিটিতে আছেন। এর সঙ্গে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিস, রেজিস্ট্রার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি (শিক্ষা)। এর বাইরে ভর্তির ক্ষেত্রে অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক যিনি হবেন, তিনি এ কমিটিতে যুক্ত থাকবেন। আমরা সব বডির সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করব। প্রতি সপ্তাহে হয়তো সম্ভব হবে না, মাসে অন্তত একটা হলেও মিটিং করে নতুন যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। এটা আমরা যথাযথভাবে করতে পারলে আমাদের সব কাজ সময়ের আগেই শেষ করা সম্ভব হবে।

প্রশ্ন: ঢাবি অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকে যেসব বিষয়গুলো নিয়ে শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে ছিলেন, এসব সমস্যা সমাধানে কী ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে?

অধ্যাপক ইলিয়াস: এখানে আপনাকে একটা উদাহরণ দিচ্ছি। আমাদের চলমান যে শিক্ষাবর্ষ আছে, এসবের ফাইনাল পরীক্ষার ডেটলাইন অলরেডি দিয়ে দিয়েছি। প্রতিটি কলেজের বিভাগগুলো যদি এ সময়ের মধ্যে তাদের একাডেমিক কার্যক্রম শেষ করতে পারে, তাহলে আমরা নির্ধারিত সময়ের আগেই ইয়ার কার্যক্রম শেষ করতে পারব। নিকট অতীতে বিভিন্ন কারণে ইয়ার শেষ করতে আমাদের কিছুটা বেশি সময় লেগেছিল। সেটা নিয়েও আমাদের রিকোভারি প্ল্যান রয়েছে। আমরা এখন ১২ মাসের শিক্ষাবর্ষ ৮ মাসে শেষ করছি। চলতি শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষাগুলোর বিষয়ে প্রথমে আমরা নিজেরা বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পরে ঢাবি সেটা কার্যকরে সহায়তার উদ্যোগ নিয়েছে। এভাবে শিক্ষার্থীদের আরও অন্য যেসব সমস্যা আছে, সব সমস্যা ধরে ধরে সমাধান করা হবে।

ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রশ্ন: অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে তাঁদের সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে উদ্যোগ নেবেন কি?

অধ্যাপক ইলিয়াস: শিক্ষার্থীদের এ দাবির বিষয়ে আমরা অবগত আছি। ইতিমধ্যে ফাইনাল ইয়ারের পদার্থবিজ্ঞান ও ইংরেজি বিষয়ের যেসব শিক্ষার্থীরা অধিক মাত্রায় অকৃতকার্য হয়েছেন, তাঁদের অতি দ্রুত আরেকটি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ইংরেজির একটি কোর্স ও পদার্থবিজ্ঞানের একাধিক কোর্সের শিক্ষার্থী রয়েছেন।

প্রশ্ন: সাত কলেজের প্রশ্ন প্রণয়ন, পরীক্ষা গ্রহণ পদ্ধতি, খাতা মূল্যায়ন, ফল প্রকাশ—এসব বিষয়গুলোতে এখন কেমন পরিবর্তন আসছে? এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ফি সহনীয় পর্যায়ে পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন...

অধ্যাপক ইলিয়াস: আগে যেটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় করত, এখন সেটা অন্তর্বর্তী প্রশাসন করবে। এর মাধ্যমে আমাদের কাজগুলোতে আরও অনেক বেশি গতিশীলতা আসবে। আমরা মাস্টার্স ও ডিগ্রির বিশেষ পরীক্ষা ইতিমধ্যে শেষ করেছি। দ্রুত এসব কোর্সের ফল প্রকাশিত হবে। ফল প্রকাশের বিষয়ে যদি বলি, পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর খাতা বিতরণে আমরা নতুন একটা উদ্যোগ নিয়েছি। সেটা কার্যকর করা গেলে আরও দ্রুত সময়ের মধ্যে ফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে। আরেকটা হলো, আমরা যদি অটোমেশনে যাই, তাহলে ফলটা আরও দ্রুত প্রকাশ করতে পারব। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ফি কমানোর বিষয়টিও আমরা পর্যালোচনা করছি।

প্রশ্ন: সাত কলেজের প্রতিটি ক্যাম্পাসে ‘হেল্প ডেস্ক’ স্থাপনের বিষয়ে একটি প্রস্তাব ছিল। এটার কার্যক্রম কবে থেকে দৃশ্যমান হবে?

অধ্যাপক ইলিয়াস: হেল্প ডেস্ক স্থাপনের বিষয়ে ইতিমধ্যে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ঈদের ছুটি শেষে প্রতিটি কলেজের হেল্প ডেস্ক মনিটর করা শুরু হবে। এ ডেস্কের কার্যক্রম যেন যথাযথভাবে চালু থাকে, সে জন্য আমরা এটাতে নজর রাখব। হেল্প ডেস্ক চালু হলে শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি উপকৃত হবেন। তাঁরা আগে নিজেদের যেসব সমস্যা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা শেষ করতেন, সেটা এই ডেস্কের সহায়তা নিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমাধান করতে পারবেন। প্রতিটি কলেজে হেল্প ডেস্ক পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা গেলে শিক্ষার্থীদের যেকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য নিজ ক্যাম্পাস থেকে আর বাইরে আসতে হবে না।

প্রশ্ন: ঢাবির অধীনে সাত কলেজের একটি কলেজ অন্য কলেজে গিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। শিক্ষার্থীরা এখন থেকে নিজের কলেজে পরীক্ষায় বসতে চান। শিক্ষার্থীদের এ দাবি বিবেচনা করবেন কিনা?

অধ্যাপক ইলিয়াস: আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবার এ বিষয়ে শুনেছি। এখানে এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই, এটা সমন্বিত সিদ্ধান্তের বিষয়। শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে আপনি যেটি বলেছেন, সেটা আমরা আমলে নিচ্ছি। আমাদের ফোরামে এ বিষয়ে আলোচনা হলে তখন শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে জানাতে পারব। ব্যক্তিগতভাবে যদি বলি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হলে আমাদের সেদিকেই যেতে হবে। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাই করছে।

প্রশ্ন: চলতি শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম কবে থেকে শুরু হবে, দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ রাখবেন কিনা, এসব শিক্ষার্থীরা কোন সিলেবাসের অধীনে ভর্তি হবেন?

অধ্যাপক ইলিয়াস: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শুরু হওয়া সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রায় ৩৮ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। স্থগিত হওয়া ভর্তি আবেদন চলতি মাসের মধ্যে আবার শুরু হবে। ঈদের ছুটি শেষে ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে পারব। নতুন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা পূর্বের সিলেবাসে ভর্তি হবেন। ইতিপূর্বে যাঁরা ভর্তি আবেদন করেছেন, তাঁদের আর আবেদন করতে হবে না। সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় আমরা দ্বিতীয়বার অংশগ্রহণের সুযোগ রাখতে চাই। এ বিষয়ে আমাদের একটা প্রস্তাবনা আছে।

প্রশ্ন: সাত কলেজের কিছু শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেছেন, অন্য কলেজের চেয়ে ঢাকা কলেজের প্রতি আপনার বেশি আগ্রহ থাকবে। আপনার দায়িত্ব গ্রহণের মধ্য দিয়ে অন্য কলেজের চেয়ে ঢাকা কলেজ বেশি সুবিধা পাবে। এ বিষয়ে আপনার ব্যাখ্যা জানতে চাই।

অধ্যাপক ইলিয়াস: আমি সবার উদ্দেশে বলব, ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে আমার দায়িত্ব এখান পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। কিন্তু যখন আমি প্রশাসক, তখন আমার কাছে সব কলেজের শিক্ষার্থীরা সমান মর্যাদা পাবেন। আমি এটা শুধু দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই না, এটা কার্যকর করতে চাই। অন্য কলেজের শিক্ষার্থীরা যখন কোনো বিষয়ে ঢাকা কলেজে আসবেন, তখন আমি আগে তাঁদের সঙ্গে কথা বলব। পরে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলব। এসব ক্ষেত্রে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের চেয়ে অন্য কলেজের শিক্ষার্থীরা আমার কাছে অগ্রাধিকার পাবেন। অন্য কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে আমি ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করব। আমি শুধু এটুকু বলতে চাই, এ বিষয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। বাকিটা কাজে বাস্তবায়ন করব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দেশে অণুজীববিজ্ঞান শিক্ষায় ভূমিকা রয়েছে বিএসএমের

শিক্ষা ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশে অণুজীববিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণা প্রসারে ‘বাংলাদেশ সোসাইটি অব মাইক্রোবায়োলজিস্টসের (বিএসএম)’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি ড. মুনিরুল আলম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগ ও বিএসএমের যৌথ উদ্যোগে গত ২১–২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ৩৯তম বার্ষিক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। একই সঙ্গে তিনি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অণুজীববিজ্ঞান গবেষণায় উদ্ভাবনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

দুই দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানী, গবেষক, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, ভেটেরিনারি বিশেষজ্ঞ, শিল্পখাতের প্রতিনিধি এবং শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ছিল অণুজীববিজ্ঞান ও সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোতে সাম্প্রতিক গবেষণা ও অগ্রগতি নিয়ে মতবিনিময় করা, বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা জোরদার করা এবং সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর দিকনির্দেশনা প্রদান করা। সম্মেলনে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৪০০-এর অধিক প্রতিনিধি অংশ নেন।

এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয় “Microbiomes for a Sustainable Future” সময়োপযোগী ছিল এবং মানব উন্নয়ন ও কল্যাণে অণুজীববিজ্ঞানের গুরুত্ব তুলে ধরতে সহায়ক হয়। সর্বমোট ২৮৮টি সারসংক্ষেপ (Abstract) গৃহীত হওয়ার পর সম্মেলনের ১২টি টেকনিক্যাল সেশনে ২টি প্লেনারি বক্তৃতা, ৮টি কীনোট বক্তৃতা, ৬টি আমন্ত্রিত বক্তৃতা, ৪টি ইয়াং সায়েন্টিস্ট টক, ৫৮টি মৌখিক উপস্থাপনা এবং প্রায় ২২৬টি পোস্টার উপস্থাপন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. এস. এম. এ. ফয়েজ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (একাডেমিক) প্রফেসর ডা. মামুন আহমেদ। স্বাগতিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. শাকিলা নার্গিস খান।

অনুষ্ঠানের শেষপর্বে সম্মেলন আয়োজন কমিটির চেয়ারম্যান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন সায়েন্সেসের (সিএআরএস) চিফ সায়েন্টিস্ট ডা. লতিফুল বারী ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎জকসু নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিলেন জামাল ভূঁইয়া

জবি প্রতিনিধি 
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসেছেন বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া। ‎

আজ ‎বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আসেন তিনি। এ সময় শহীদ সাজিদ ভবন, প্রক্টর অফিস ঘুরে প্রোগোজ স্কুলের মাঠে সাংবাদিক ও ফ্যানদের সঙ্গে কথা বলেন এই ফুটবলার। ‎

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎এ সময় জামাল ভূঁইয়া বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো এলাম। আমার অনেক ভালো লাগছে। এটি অনেক পুরোনো বিশ্ববিদ্যালয়। আগামী ৩০ ডিসেম্বর জকসু নির্বাচন। আপনাদের সবার প্রতি শুভকামনা। আমি আবার আসব ইনশা আল্লাহ।’ ‎

‎এ সময় জাতীয় ছাত্র শক্তি সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী মো. ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘আমরা স্পোর্টস কার্নিভালের সময় জামাল ভাইকে আমাদের ক্যাম্পাসে আসার আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু তখন শিডিউল না পাওয়ায় সম্ভব হয়নি। এই প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশ ফুটবলের প্রথম সুপারস্টার জামাল ভূঁইয়া। তাঁর মাধ্যমে বাংলাদেশ ফুটবলের এই নতুন ধারা উন্মোচিত হয়েছে।’ ‎

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎এ সময় এই সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলটির ভিপি পদপ্রার্থী কিশোয়ার আনজুম সাম্য, ক্রীড়া সম্পাদক পদপ্রার্থী ফেরদৌস হাসান সোহান, কার্যনির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী সিনহা ইসলাম অর্না এবং ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের ক্রীড়া সম্পাদক কামরুল হাছান নাফিজসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচনে ব্যতিক্রমী প্রচারণায় প্রার্থীরা

সোহানুর রহমান, জবি
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবমুখর ও প্রাণবন্ত পরিবেশ। কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর প্রথমবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনের প্রচারণায় যুক্ত হয়েছে ভিন্নমাত্রিক ও সৃজনশীল পদ্ধতি, যা শিক্ষার্থীদের মাঝে বাড়তি আগ্রহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে।

জকসু নির্বাচনের প্রার্থীরা প্রচারণায় পোস্টার ও লিফলেটের মতো প্রচলিত প্রচারসামগ্রীর বাইরে গিয়ে লাল কার্ড, রঙিন প্ল্যাকার্ড ও হাতে বহনযোগ্য নানা প্রচারসামগ্রী ব্যবহার করছেন। দেয়ালে পোস্টার সাঁটানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় আচরণবিধি মেনেই ভিন্ন কৌশলে ভোটারদের কাছে নিজেদের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁরা।

নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী ১৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রচারণার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যেই প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের মন জয় করতে ব্যবহার করছেন এরোপ্লেন আকৃতির কাগজ, প্রতীকী নোট, কাপ, বোতল, প্রজাপতি, জকসু পাসপোর্টসহ নানা অভিনব উপকরণ। আকর্ষণীয় স্লোগান ও রঙিন ডিজাইনের মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে নির্বাচনী অঙ্গীকার ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।

প্রচারণায় প্রযুক্তির ব্যবহারও চোখে পড়ার মতো। কিউআর কোড সংযুক্ত প্রচারণা সামগ্রীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোন স্ক্যান করে মুহূর্তেই প্রার্থীদের বিস্তারিত ইশতেহার ও পরিকল্পনা জানতে পারছেন।

ছাত্রদল-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী খাদিজাতুল কুবরা বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মাঝে একটি স্বতঃস্ফূর্ত ও প্রাণবন্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। শুরু থেকেই আমরা জোরালো প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানো এবং তাঁদের দৃষ্টি আকর্ষণের লক্ষ্যেই আমি ভিন্নধর্মী প্রচার কার্ড ব্যবহার করছি।’

ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেলের শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদপ্রার্থী ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘লিফলেট দিয়ে প্রচার করার ফলে ভোটাররা অতিষ্ঠ হয়ে গেছেন, তাই এবার আমাদের অন্য রকম প্রচারণা। আমাদের বার্তাটি আকর্ষণীয়ভাবে ভোটারদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম চালাচ্ছি।’

স্বতন্ত্র নির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী আল শাহরিয়ার খান বলেন, ‘নারী শিক্ষার্থীদের আগ্রহ সৃষ্টি করা এবং প্রচারসামগ্রী যেন সংরক্ষণযোগ্য হয়, এই চিন্তা থেকেই আমি বিড়ালের আদলে কার্ড তৈরি করেছি।’

ছাত্রশক্তি-সমর্থিত ‘নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কাছে ইশতেহার পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের সমস্যা ও প্রত্যাশা বোঝার চেষ্টা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎জবির ‘এ’ ও ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর

জবি প্রতিনিধি 
‎জবির ‘এ’ ও ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক (সম্মান) ও বিবিএ প্রথম বর্ষের ‘এ’ ইউনিট (বিজ্ঞান ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদ) ও ‘সি’ ইউনিটের (বাণিজ্য অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা আগামী ২৬ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ও ২৭ ডিসেম্বর (শনিবার) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। উভয় দিন পরীক্ষার সময় বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১ ঘন্টা।

‎‘এ’ ইউনিটের (বিজ্ঞান ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষায় ৮৬০টি আসনের বিপরীতে ৭২ হাজর ৪৭৪ জন আবেদন করেছে। প্রতি আসনের জন্য ৮৫ জন পরীক্ষার্থী লড়বেন। আর ‘সি’ ইউনিটে (বাণিজ্য অনুষদ) ৫২০টি আসনের বিপরীতে ২০ হাজর ৫৩৭ জন আবেদন করেছে। বিজ্ঞান অনুষদে ৮৬০ আসনের বিপরীতে ৭২ হাজর ৪৭৪ জন আবেদন করেছে। প্রতি আসনের জন্য ৪০ জন শিক্ষার্থী লড়বেন।

‎‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা মোট ১২টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ঢাকার বাহিরে তিনটি কেন্দ্র, কুমিল্লা বিশ্বিবদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা হবে। ঢাকার মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট ৯টি কেন্দ্রের মধ্যে পরীক্ষা হবে। ঢাকার ভেতরের কেন্দ্র সমূহ হলো— জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল, কে এল জুবিলি হাই স্কুল এন্ড কলেজ, বিইএএম মডেল হাই স্কুল এন্ড কলেজ।

‎‘সি’ ইউনিটে (বাণিজ্য অনুষদ) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকার মধ্যে বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গভর্মেন্ট মুসলিম হাই স্কুল কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ৷

‎মোট ১০০ মার্কের পরীক্ষায় ৭২ মার্ক এমসিকিউ ও বাকী ১৮ মার্ক থাকবে এসএসসি (সমমান) ও এইচএসসি (সমমান) ফলাফলের ওপর। ‘এ’ ইউনিটে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন গণিত অথবা জীব বিজ্ঞান বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে। ‘সি’ ইউনিটে ইংরেজি, গাণিতিক বুদ্ধিমত্তা ও হিসাব বিজ্ঞান, ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ বিষয়ে প্রশ্ন আসবে।

‎পরীক্ষার সার্বিক প্রস্তুতি বিষয়ে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. পরিমল বালা বলেন, ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের সব প্রস্তুতি আমাদের সম্পন্ন হয়েছে। এবার পরীক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে এবার ঢাকার বাহিরে খুলনা, রাজশাহী ও কুমিল্লা পরীক্ষা কেন্দ্র রাখা হয়েছে।

‎বাণিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া বলেন, আমাদের ৫২০ আসনের বিপরীতে ২০ হাজার ৫৩৭ জন আবেদন করেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকার মধ্যে আরও ৩টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকার বাহিরে কোন কেন্দ্রে পরীক্ষা হবে না।

‎এর আগে ১৩ ডিসেম্বর ‘ই’ ইউনিটের (চারুকলা অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উল্লখ্য, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ডি ইউনিটের পরীক্ষা আগামী ৯ জানুয়ারি বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। কলা ও আইন অনুষদভুক্ত বি ইউনিটের পরীক্ষা আগামী ৩০ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত