Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

বিশ্ববিদ্যালয় আইন দ্রুত করা প্রয়োজন

অধ্যক্ষ এ কে এম ইলিয়াস। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজ নিয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করবে সরকার। আগে এ কলেজগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর কলেজগুলোর অধিভুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত জানায় ঢাবি। এমন বাস্তবতায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগপর্যন্ত কলেজগুলোর কার্যক্রম চালিয়ে নিতে সরকার প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে। এ পদে দায়িত্ব পেয়েছেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম ইলিয়াস। গত মে মাসে তিনি প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। অধ্যাপক ইলিয়াসের নতুন দায়িত্ব গ্রহণ এবং সাত কলেজের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি আজকের পত্রিকার মুখোমুখি হয়েছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ইলিয়াস শান্ত

ইলিয়াস শান্ত
আপডেট : ১৭ জুন ২০২৫, ১৫: ০১

প্রশ্ন: আপনাকে একসঙ্গে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ও সাত কলেজের প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করতে হবে, দুটি প্রধান দায়িত্ব পালনে কোনো জটিলতা তৈরি হবে বলে মনে করেন?

অধ্যাপক ইলিয়াস: না, কোনো জটিলতা হবে বলে মনে করি না। কারণ, আমি এর আগেও বেশ কিছুদিন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব পালন করেছি। নতুন মেয়াদে সে অভিজ্ঞতা আমাকে কাজে দেবে। এ ছাড়া সাত কলেজের বাকি কলেজগুলোতে যেসব সম্মানিত অধ্যক্ষরা রয়েছেন—আমরা সবাই প্রায় কাছাকাছি সময়ে নিয়োগ পেয়েছি। আমাদের সবার সঙ্গে সবার পারস্পরিক সম্পর্ক খুবই আন্তরিক। নতুন যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে আমাদের এ সম্পর্ক ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছে। এখানে কোনো কলেজকে ভিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই। প্রত্যেক কলেজের শিক্ষার্থীদের আমরা নিজেদের শিক্ষার্থী বলে মনে করি। কলেজগুলোতে হেল্প ডেস্কের কার্যক্রম শুরু হলে আমাদের কার্যক্রমগুলো আরও সহজ ও গতিশীল হবে। নতুন প্রশাসনের কাজকে আরও কীভাবে সহজ ও গতিশীল করা যায়, সে লক্ষ্যে ঈদের পর থেকে ইউজিসির সমন্বয়ে আমরা ধারাবাহিক আলোচনা চালিয়ে যাব। এসব আলোচনার আউটপুট আমরা প্রতিনিয়ত শেয়ার করব। এতে নতুন যে বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে, সেটা সম্পর্কে সাত কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধারণা আরও স্বচ্ছ হবে।

প্রশ্ন: সাত কলেজের নতুন প্রশাসনের গঠন কেমন হবে? এ প্রশাসনের ক্ষমতা ও কার্যাবলি কী কী থাকবে?

অধ্যাপক ইলিয়াস: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে যে কাঠামো পাস হয়েছে, সেটাই আমাদের কার্যক্রমের মূল চালিকাশক্তি। নতুন প্রশাসনে ইউজিসির একজন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন প্রতিনিধি রয়েছেন। এ ছাড়া ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষসহ সাত কলেজের বাকি কলেজগুলোর অধ্যক্ষদের সমন্বয়ে এই প্রশাসন গঠিত হয়েছে। নতুন এই কাঠামোর অধীনে ভবিষ্যতে সাত কলেজের সব কার্যক্রম পরিচালিত হবে। নতুন প্রশাসন অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে পারলে সাত কলেজে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।

প্রশ্ন: নবগঠিত প্রশাসন পরিচালনায় পর্যাপ্ত জনবল রয়েছে কি?

অধ্যাপক ইলিয়াস: কিছু ক্ষেত্রে অবশ্যই জনবলের প্রয়োজন হবে। অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে নতুন প্রশাসন ঢাকা কলেজ থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ভবিষ্যতে নতুন প্রশাসনের যে কার্যক্রমগুলো হবে, সেগুলো এখান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনা-নেওয়া অথবা ঢাকা কলেজ থেকে অন্য কলেজগুলোতে পাঠানোর ক্ষেত্রে যাতে কোনো বিড়ম্বনা না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে আমাদের অতিরিক্ত জনবল প্রয়োজন হতে পারে। সেটা আমাদের ভাবনায় রয়েছে। কী পরিমাণ জনবল লাগতে পারে, সেটা আমরা পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সহায়তা করবে বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছে।

প্রশ্ন: এ প্রশাসনের মেয়াদ কত দিন হবে?

অধ্যাপক ইলিয়াস: অধ্যক্ষ পদে দুই বছরের যে মেয়াদের উল্লেখ রয়েছে, আপাতত সেটাই এ প্রশাসকের মেয়াদ। এটা এখানে কমবেশি হতে পারে। তবে এখানে যেহেতু দুই বছরের একটা লিমিটেশন দিয়ে দেওয়া হয়েছে, সে ক্ষেত্রে এখনই সেটি দুই বছরের বেশি করার সুযোগ নেই। তার আগেই যদি প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শেষ করা যায়, তাহলে হয়তো এ পদের প্রয়োজন আর নাও থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে সরকার যেটা ভালো মনে করবে, তারা সে ব্যবস্থা নেবে। তার আগে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কার্যক্রম, সেটার অগ্রগতির ওপর নির্ভর করবে এ প্রশাসনের মেয়াদ।

প্রশ্ন: প্রস্তাবিত ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় কবে থেকে পুরোদমে কাজ শুরু করতে পারে, এ বিষয়ে কোনো বার্তা পেয়েছেন কি?

অধ্যাপক ইলিয়াস: কার্যক্রমের দুইটা ধারা রয়েছে। একটা হলো আমাদের যে চলমান কাঠামো আছে, সেটাকে চালিয়ে নেওয়া। অপরটি হলো নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের জন্য যে আইনগত কার্যক্রম, সেটাকে ত্বরান্বিত করা। এই দুটি কাজ আমাদের একসঙ্গে করতে হবে। যাতে একটির জন্য অপরটি আটকে না থাকে অথবা বাধাগ্রস্ত না হয়। এ ছাড়া নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের নির্দেশনায় ইউজিসি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি কাজ করছে। তাদের কাজ শেষ হওয়ার পর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনগত ভিত্তি তৈরি হলে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় কার্যক্রম শুরু করতে পারবে।

প্রশ্ন: সাত কলেজের নিয়মিত শিক্ষার্থীরা গ্র্যাজুয়েশন শেষে ঢাবির সনদ চান না। তাঁরা নতুন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সনদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন...

অধ্যাপক ইলিয়াস: এ বিষয়ে আমাদের কিছুটা সময় দিতে হবে। আমাদের নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন পাস হলেই কেবল শিক্ষার্থীদের এ দাবির বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা দিতে পারব। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাত কলেজকে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়, তখন নিয়মিত শিক্ষার্থীরা কীভাবে সনদ পেয়েছে, সেটা আমাদের দেখতে হবে। তখন যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্র্যাজুয়েটদের সনদ দিতে পারে, আমার মনে হয়, এখন দিতেও কোনো সমস্যা হবে না। এ জন্য সবার আগে প্রয়োজন প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনগত ভিত্তি তৈরি করা। সেটা যত দ্রুত সম্ভব হবে, শিক্ষার্থীদের এ-সংক্রান্ত দাবিগুলো বাস্তবায়ন তত সহজ হবে। এ বিষয়ে আমি শিক্ষার্থীদের উদ্বিগ্ন না হতে অনুরোধ করব।

প্রশ্ন: প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে একটা শঙ্কা তৈরি হয়েছে, এ বিষয়ে কিছু বলবেন কিনা?

অধ্যাপক ইলিয়াস: সাত কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের যে কার্যক্রমটা ঘটছে, সেটা দেশের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদদের সমন্বয়ে ঘটছে। এ কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইউজিসির সম্মানিত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ। সম্মানিত সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান। আপনি জানেন, ফায়েজ স্যারের বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের ইতিহাস রয়েছে। এ রকম মানুষের ওপর আস্থা রেখেই আমরা কাজ করছি। চেয়ারম্যান স্যার সাত কলেজের এই কার্যক্রম বাস্তবায়নে স্পষ্ট বলেছেন, প্রত্যেক কলেজের স্বকীয়তা বজায় থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর হলেও বর্তমান শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদগুলো সংরক্ষণের বিষয়ে আমরা ইউজিসি থেকে আশ্বাস পেয়েছি। সুতরাং আমি আশঙ্কার বিষয়ে বলব, সেটা অমূলক। একই সঙ্গে কলেজগুলোতে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির যে পাঠদান চলছে, সেটাও থাকবে। অর্থাৎ কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর প্রক্রিয়ায় কারও কোনো কিছু হারানোর শঙ্কা নেই। দুটি বিষয়ে উইন উইন সিচুয়েশনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

প্রশ্ন: সাত কলেজের যে দুটি কলেজে উচ্চমাধ্যমিক নেই, নতুন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সঙ্গে সে কলেজগুলোতেও উচ্চমাধ্যমিক যুক্ত করা হবে বলে আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি। এ বিষয়ে আপনি জানেন কিনা?

অধ্যাপক ইলিয়াস: এখন পর্যন্ত আমাদের যে মিটিংগুলো হয়েছে, সেখানে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা বা সিদ্ধান্ত—কোনো কিছুই হয়নি।

প্রশ্ন: ঈদের আগেই প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো-মডেল প্রকাশের কথা আমরা শুনেছি। কবে এগুলো প্রকাশ হতে পারে?

অধ্যাপক ইলিয়াস: আমিও সংবাদমাধ্যমের বরাতে শুনেছি। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটির নেতাদের সঙ্গে আমার পৃথক কোনো আলোচনা হয়নি। তবে এটুকু বলতে পারি, কার্যক্রমের একটি ধারাবাহিকতা আছে। সে ক্ষেত্রে হয়তো কমিটি কোনটা আগে কোনটা পরে প্রকাশ করা যেতে পারে, সে বিষয়ে একটা ধারণা দিয়েছে। এখন যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর হচ্ছে, এটার জন্য সর্বোচ্চ সমাধান হলো বিশ্ববিদ্যালয় আইন প্রণয়ন করা। এটা আমি আগেও বলেছি, যে অধ্যাদেশটা হবে সেটা না হওয়ার আগপর্যন্ত যা কিছু প্রকাশ করি না কেন, সেটা বাস্তবসম্মত নয়। বাস্তবতা হলো আগে আইনটা হওয়া। এটা কত দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্ভুলভাবে শেষ করা যায়, সে বিষয়ে আমরা ইউজিসিকে সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়ার অঙ্গীকার করেছি।

প্রশ্ন: অধিভুক্ত থাকাকালে ঢাবি সাত কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক বিষয়ে দায়িত্ব পালন করেছে। এখন ইউজিসি, ঢাবি ও নবগঠিত প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করবে। তিনটি বডির সঙ্গে এ সমন্বয়টা কীভাবে করবেন?

অধ্যাপক ইলিয়াস: নতুন প্রশাসনের সমন্বয় কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে আছেন ইউজিসির সম্মানিত সদস্য অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান। সাত কলেজের অধ্যক্ষরাও এ কমিটিতে আছেন। এর সঙ্গে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিস, রেজিস্ট্রার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি (শিক্ষা)। এর বাইরে ভর্তির ক্ষেত্রে অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক যিনি হবেন, তিনি এ কমিটিতে যুক্ত থাকবেন। আমরা সব বডির সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করব। প্রতি সপ্তাহে হয়তো সম্ভব হবে না, মাসে অন্তত একটা হলেও মিটিং করে নতুন যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। এটা আমরা যথাযথভাবে করতে পারলে আমাদের সব কাজ সময়ের আগেই শেষ করা সম্ভব হবে।

প্রশ্ন: ঢাবি অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকে যেসব বিষয়গুলো নিয়ে শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে ছিলেন, এসব সমস্যা সমাধানে কী ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে?

অধ্যাপক ইলিয়াস: এখানে আপনাকে একটা উদাহরণ দিচ্ছি। আমাদের চলমান যে শিক্ষাবর্ষ আছে, এসবের ফাইনাল পরীক্ষার ডেটলাইন অলরেডি দিয়ে দিয়েছি। প্রতিটি কলেজের বিভাগগুলো যদি এ সময়ের মধ্যে তাদের একাডেমিক কার্যক্রম শেষ করতে পারে, তাহলে আমরা নির্ধারিত সময়ের আগেই ইয়ার কার্যক্রম শেষ করতে পারব। নিকট অতীতে বিভিন্ন কারণে ইয়ার শেষ করতে আমাদের কিছুটা বেশি সময় লেগেছিল। সেটা নিয়েও আমাদের রিকোভারি প্ল্যান রয়েছে। আমরা এখন ১২ মাসের শিক্ষাবর্ষ ৮ মাসে শেষ করছি। চলতি শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষাগুলোর বিষয়ে প্রথমে আমরা নিজেরা বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পরে ঢাবি সেটা কার্যকরে সহায়তার উদ্যোগ নিয়েছে। এভাবে শিক্ষার্থীদের আরও অন্য যেসব সমস্যা আছে, সব সমস্যা ধরে ধরে সমাধান করা হবে।

ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রশ্ন: অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে তাঁদের সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে উদ্যোগ নেবেন কি?

অধ্যাপক ইলিয়াস: শিক্ষার্থীদের এ দাবির বিষয়ে আমরা অবগত আছি। ইতিমধ্যে ফাইনাল ইয়ারের পদার্থবিজ্ঞান ও ইংরেজি বিষয়ের যেসব শিক্ষার্থীরা অধিক মাত্রায় অকৃতকার্য হয়েছেন, তাঁদের অতি দ্রুত আরেকটি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ইংরেজির একটি কোর্স ও পদার্থবিজ্ঞানের একাধিক কোর্সের শিক্ষার্থী রয়েছেন।

প্রশ্ন: সাত কলেজের প্রশ্ন প্রণয়ন, পরীক্ষা গ্রহণ পদ্ধতি, খাতা মূল্যায়ন, ফল প্রকাশ—এসব বিষয়গুলোতে এখন কেমন পরিবর্তন আসছে? এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ফি সহনীয় পর্যায়ে পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন...

অধ্যাপক ইলিয়াস: আগে যেটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় করত, এখন সেটা অন্তর্বর্তী প্রশাসন করবে। এর মাধ্যমে আমাদের কাজগুলোতে আরও অনেক বেশি গতিশীলতা আসবে। আমরা মাস্টার্স ও ডিগ্রির বিশেষ পরীক্ষা ইতিমধ্যে শেষ করেছি। দ্রুত এসব কোর্সের ফল প্রকাশিত হবে। ফল প্রকাশের বিষয়ে যদি বলি, পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর খাতা বিতরণে আমরা নতুন একটা উদ্যোগ নিয়েছি। সেটা কার্যকর করা গেলে আরও দ্রুত সময়ের মধ্যে ফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে। আরেকটা হলো, আমরা যদি অটোমেশনে যাই, তাহলে ফলটা আরও দ্রুত প্রকাশ করতে পারব। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ফি কমানোর বিষয়টিও আমরা পর্যালোচনা করছি।

প্রশ্ন: সাত কলেজের প্রতিটি ক্যাম্পাসে ‘হেল্প ডেস্ক’ স্থাপনের বিষয়ে একটি প্রস্তাব ছিল। এটার কার্যক্রম কবে থেকে দৃশ্যমান হবে?

অধ্যাপক ইলিয়াস: হেল্প ডেস্ক স্থাপনের বিষয়ে ইতিমধ্যে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ঈদের ছুটি শেষে প্রতিটি কলেজের হেল্প ডেস্ক মনিটর করা শুরু হবে। এ ডেস্কের কার্যক্রম যেন যথাযথভাবে চালু থাকে, সে জন্য আমরা এটাতে নজর রাখব। হেল্প ডেস্ক চালু হলে শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি উপকৃত হবেন। তাঁরা আগে নিজেদের যেসব সমস্যা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা শেষ করতেন, সেটা এই ডেস্কের সহায়তা নিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমাধান করতে পারবেন। প্রতিটি কলেজে হেল্প ডেস্ক পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা গেলে শিক্ষার্থীদের যেকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য নিজ ক্যাম্পাস থেকে আর বাইরে আসতে হবে না।

প্রশ্ন: ঢাবির অধীনে সাত কলেজের একটি কলেজ অন্য কলেজে গিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। শিক্ষার্থীরা এখন থেকে নিজের কলেজে পরীক্ষায় বসতে চান। শিক্ষার্থীদের এ দাবি বিবেচনা করবেন কিনা?

অধ্যাপক ইলিয়াস: আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবার এ বিষয়ে শুনেছি। এখানে এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই, এটা সমন্বিত সিদ্ধান্তের বিষয়। শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে আপনি যেটি বলেছেন, সেটা আমরা আমলে নিচ্ছি। আমাদের ফোরামে এ বিষয়ে আলোচনা হলে তখন শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে জানাতে পারব। ব্যক্তিগতভাবে যদি বলি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হলে আমাদের সেদিকেই যেতে হবে। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাই করছে।

প্রশ্ন: চলতি শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম কবে থেকে শুরু হবে, দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ রাখবেন কিনা, এসব শিক্ষার্থীরা কোন সিলেবাসের অধীনে ভর্তি হবেন?

অধ্যাপক ইলিয়াস: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শুরু হওয়া সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রায় ৩৮ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। স্থগিত হওয়া ভর্তি আবেদন চলতি মাসের মধ্যে আবার শুরু হবে। ঈদের ছুটি শেষে ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে পারব। নতুন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা পূর্বের সিলেবাসে ভর্তি হবেন। ইতিপূর্বে যাঁরা ভর্তি আবেদন করেছেন, তাঁদের আর আবেদন করতে হবে না। সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় আমরা দ্বিতীয়বার অংশগ্রহণের সুযোগ রাখতে চাই। এ বিষয়ে আমাদের একটা প্রস্তাবনা আছে।

প্রশ্ন: সাত কলেজের কিছু শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেছেন, অন্য কলেজের চেয়ে ঢাকা কলেজের প্রতি আপনার বেশি আগ্রহ থাকবে। আপনার দায়িত্ব গ্রহণের মধ্য দিয়ে অন্য কলেজের চেয়ে ঢাকা কলেজ বেশি সুবিধা পাবে। এ বিষয়ে আপনার ব্যাখ্যা জানতে চাই।

অধ্যাপক ইলিয়াস: আমি সবার উদ্দেশে বলব, ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে আমার দায়িত্ব এখান পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। কিন্তু যখন আমি প্রশাসক, তখন আমার কাছে সব কলেজের শিক্ষার্থীরা সমান মর্যাদা পাবেন। আমি এটা শুধু দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই না, এটা কার্যকর করতে চাই। অন্য কলেজের শিক্ষার্থীরা যখন কোনো বিষয়ে ঢাকা কলেজে আসবেন, তখন আমি আগে তাঁদের সঙ্গে কথা বলব। পরে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলব। এসব ক্ষেত্রে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের চেয়ে অন্য কলেজের শিক্ষার্থীরা আমার কাছে অগ্রাধিকার পাবেন। অন্য কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে আমি ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করব। আমি শুধু এটুকু বলতে চাই, এ বিষয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। বাকিটা কাজে বাস্তবায়ন করব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

পরীক্ষা নিয়ে স্কুলে মুখোমুখি শিক্ষক-অভিভাবকেরা

  • পিরোজপুর, পাবনায় শিক্ষকদের সঙ্গে অভিভাবকদের সংঘর্ষ।
  • অনেক জায়গায় স্কুলের তালা ভেঙে পরীক্ষা নেন অভিভাবকেরা।
  • শিক্ষকনেতাদের বদলি। প্রতিবাদে আরও কঠোর কর্মসূচির হুমকি।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪৫
তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ রেখে আন্দোলনের জেরে সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে অভিভাবকদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। গতকাল পিরোজপুরের স্বরূপকাঠী উপজেলার নেছারাবাদে। ছবি: আজকের পত্রিকা
তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ রেখে আন্দোলনের জেরে সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে অভিভাবকদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। গতকাল পিরোজপুরের স্বরূপকাঠী উপজেলার নেছারাবাদে। ছবি: আজকের পত্রিকা

তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া বন্ধ রেখে আন্দোলন করছেন সহকারী শিক্ষকেরা। পরীক্ষা বন্ধ রাখায় শিক্ষকদের ওপর ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে আন্দোলন করায় পিরোজপুর, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা ও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন অভিভাবকেরা। এ ছাড়া মৌলভীবাজারের বড়লেখা, জামালপুর সদর, শেরপুরের শ্রীবরদী, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ, পটুয়াখালীর কলাপাড়াসহ বেশ কিছু জায়গায় বিদ্যালয়ের তালা ভেঙে বার্ষিক পরীক্ষা নিয়েছেন তাঁরা।

এদিকে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য শিক্ষকদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়ার পরও কোনো কাজ না হওয়ায় গতকাল শিক্ষকনেতা মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, খাইরুন নাহার লিপিসহ একাধিক শিক্ষককে বদলি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এ নিয়ে পরবর্তী কর্মসূচি ও আন্দোলনের গতিপথ ঠিক করতে বৈঠকে বসেছেন শিক্ষকনেতারা। গতকাল রাত ৯টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাঁদের বৈঠক চলছিল।

প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি রাত ৯টার দিকে বলেন, ‘আমরা যাঁরা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছি, তাঁদের হয়রানি করার জন্য ঢালাওভাবে বদলি করা হচ্ছে। আমরা সার্বিক বিষয়ে বৈঠক করছি। আরও কঠোর কর্মসূচি আসতে পারে।’

এদিকে চতুর্থ দিনের মতো গতকাল বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করে বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকেরা। তিন দফা দাবি আদায়ে লাগাতার কর্মবিরতির কারণে দেশের প্রায় সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়েছেন অভিভাবকেরা।

পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় পরীক্ষা না নেওয়ায় বিক্ষুব্ধ অভিভাবকদের ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন এক শিক্ষক। এ ছাড়াও অনেক জায়গায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিদ্যালয়ে পরীক্ষার দায়িত্ব নিলেন অভিভাবকেরা।

বার্ষিক পরীক্ষা না নিয়ে গতকাল পিরোজপুরের নেছারাবাদে উপজেলা পরিষদের গেটের সামনে শিক্ষকেরা আন্দোলন করতে গেলে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে দুই দফায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ছাড়াও তালা ঝুলিয়ে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি করার জেরে পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় এক অভিভাবকের ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন এক সহকারী শিক্ষক। রাজিব সরকার নামের ওই শিক্ষক বনওয়ারিনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক মু. মাহবুবর রহমান জানান, যৌক্তিক দাবিতে চলমান আন্দোলনে পরীক্ষা বর্জন করেছিলেন রাজিব ও তাঁর সহকর্মীরা। অভিভাবক পরিচয়ের কিছু ব্যক্তি সেখানে গিয়ে শিক্ষকদের মারধর করেন। এতে সহকারী শিক্ষক রাজিবের মাথা ফেটে গেছে। তাঁর মাথায় চারটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন।

এ ছাড়াও কোনো কোনো জায়গায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা তালা ভেঙে স্কুলে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিয়েছেন। মৌলভীবাজারের বড়লেখায় উপজেলার ১৫১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র দু-তিনটি ছাড়া কোনোটিতেই হয়নি পরীক্ষা। গতকাল সকালে সহকারী শিক্ষকেরা প্রধান শিক্ষকদের পরীক্ষা নিতে বাধা দেন এবং শিক্ষার্থীদের স্কুলের ফটক থেকে ফিরিয়ে দেন। পরে বিভিন্ন স্কুলের কক্ষে তালা মেরে তাঁরা উপজেলা চত্বরে সমাবেশে যোগ দেন। উপজেলার ষাটমা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের তালা ভেঙে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেন অভিভাবকেরা।

একইভাবে কুষ্টিয়া শহরতলির ১৮ নম্বর লাহিনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অভিভাবকেরা শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে নিজ উদ্যোগে পরীক্ষার আয়োজন করেন। প্রশ্ন বিতরণ, খাতা সংগ্রহ, শৃঙ্খলা রক্ষা সবকিছুই সামলান তাঁরা। একপর্যায়ে অভিভাবকদের তীব্র চাপ ও বিক্ষোভের মুখে প্রায় এক ঘণ্টা পর বার্ষিক পরীক্ষা নিতে বাধ্য হন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

জামালপুর সদর উপজেলার গুয়াবাড়ীয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়, শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার শ্রীবরদী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়, পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অনেক বিদ্যালয়ে তালা ভেঙে বার্ষিক পরীক্ষা নিয়েছেন অভিভাবকেরা। কোনো কোনো জায়গায় উপজেলা প্রশাসন এ কাজে সহযোগিতা করে।

জামালপুরের গুয়াবাড়ীয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক রেনুকা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। সারা বছরের পর এই বার্ষিক পরীক্ষার অপেক্ষায় থাকি। যখন বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে, তখন সহকারী শিক্ষকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন। এটা কোনো শিক্ষকের কাজ হতে পারে? তাঁদের এই কর্মবিরতি অন্য সময়ও করতে পারতেন। তাই আমরা সব অভিভাবক মিলে প্রধান শিক্ষককে নিয়ে পরীক্ষা গ্রহণ শুরু করেছি।’

সার্বিক বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান বলেন, ‘১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। পে-কমিশনের সুপারিশ লাগবে। সেটিও চূড়ান্ত হওয়ার পথে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষকদের অপেক্ষা করা দরকার ছিল।’

দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষকেরা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন গত ৮ নভেম্বর। এই আন্দোলনে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন শিক্ষকেরা। পরদিন ৯ নভেম্বর থেকে শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি সারা দেশে সহকারী শিক্ষকেরা কর্মবিরতি পালন শুরু করেন। আন্দোলনের তৃতীয় দিন (১০ নভেম্বর) সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড নির্ধারণের আশ্বাসে অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন শিক্ষকেরা।

সরকারের এই আশ্বাসের পর নভেম্বরের শেষ নাগাদ সহকারী শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় নতুন করে গত ৩০ নভেম্বর আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দেন শিক্ষকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শাবিপ্রবির ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, আবেদন শুরু ৮ ডিসেম্বর

শিক্ষা ডেস্ক
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৫৬
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর থেকে অনলাইনে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হবে, যা চলবে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

গত রোববার (৩০ নভেম্বর) ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ‘এ-১’ (বিজ্ঞান) ইউনিটের আবেদন ফি ১ হাজার ২৫০, ‘এ-২’ (আর্কিটেকচার) ফি ১ হাজার ৪০০ এবং ‘বি’ (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য) ইউনিটের আবেদন ফি ১ হাজার ২০০ টাকা।

২০২৪ অথবা ২০২৫ সালের এইচএসসি (সাধারণ বা কারিগরি) বা আলিমবা ডিপ্লোমা ইন কমার্স বা সমমান, ২০২২ অথবা ২০২৩ সালের এসএসসি (সাধারণ বা কারিগরি) বা দাখিল বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের প্রক্রিয়া শেষে ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ১৩ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা, ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা ১৪ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে সাড়ে ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের আবেদন করার নিয়ম, বিস্তারিত তথ্য, আবেদন ফি এবং জমা দেওয়ার পদ্ধতি ভর্তি-সংক্রান্ত ওয়েবসাইট-এর ভর্তি নির্দেশিকায় পাওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্যাংকে ব্যবহৃত ১০টি ইংরেজি বাক্য: (পর্ব-১)

শিক্ষা ডেস্ক
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা

ব্যাংকিং খাতে কাজ করতে আগ্রহীদের শুধু আর্থিক জ্ঞানই নয়, প্রয়োজনীয় ইংরেজি জানাও জরুরি। নিয়মিত ব্যবহৃত ইংরেজি জানা থাকলে গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হয়। গ্রাহকদেরও কিছু সাধারণ ব্যাংকিং ইংরেজি জানা থাকলে সুবিধা হয়। আজ থাকছে ব্যাংকে নিয়মিত ব্যবহৃত এমন ১০টি ইংরেজি বাক্য। চলুন শিখে নিই—

  • Welcome to our bank. – আমাদের ব্যাংকে স্বাগতম।
  • May I have your name, please?– দয়া করে আপনার নাম বলবেন?
  • How can I assist you? – কীভাবে সাহায্য করতে পারি?
  • Please fill out this form. – দয়া করে এই ফরমটি পূরণ করুন।
  • Do you have an account with us? – আপনার আমাদের সঙ্গে কোনো অ্যাকাউন্ট আছে কি?
  • I would like to open a new account. – আমি একটি সেভিংস অ্যাকাউন্ট খুলতে চাই।
  • What type of account would you like to open? – আপনি কোন ধরনের অ্যাকাউন্ট খুলতে চান?
  • I’d like a savings account, please.– সেভিংস অ্যাকাউন্ট, অনুগ্রহ করে।
  • I want to deposit money. – আমি টাকা জমা দিতে চাই।
  • How much would you like to deposit? – কত টাকা জমা দিতে চান?
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চীনের চংকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ অর্থায়িত বৃত্তি

শিক্ষা ডেস্ক
চংকিং বিশ্ববিদ্যালয়, চীন। ছবি: সংগৃহীত
চংকিং বিশ্ববিদ্যালয়, চীন। ছবি: সংগৃহীত

চীনের সিকিউইউ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপের আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা দেশটির চংকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন। বৃত্তিটি ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রযোজ্য। চংকিং বিশ্ববিদ্যালয় চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম শীর্ষ গবেষণাবান্ধব ও সমৃদ্ধ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। ১৯২৯ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। আধুনিক ক্যাম্পাস, অত্যাধুনিক ল্যাব-সুবিধা, আন্তর্জাতিক বিনিময় কর্মসূচি এবং বৈশ্বিক মানের গবেষণা সুযোগের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টি বিশ্বজুড়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ করে।

সুযোগ-সুবিধা

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তিটি সম্পূর্ণ অর্থায়িত। বৃত্তিটিতে আবেদন করতে কোনো ফি লাগবে না। নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের শতভাগ টিউশন ফি মওকুফ করা হবে। ক্যাম্পাসের ভেতরে বিনা মূল্যে আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। এটা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বড় স্বস্তির বিষয়। জীবনযাপনের ব্যয় হিসেবে স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের ৩ হাজার আর পিএইচডি শিক্ষার্থীদের সাড়ে ৩ হাজার চায়নিজ ইউয়ান দেওয়া হবে।

আবেদনের যোগ্যতা

আবেদনকারীর অবশ্যই চীনের নাগরিকত্ব থাকা যাবে না। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। একাডেমিক যোগ্যতার ক্ষেত্রে, মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদন করতে হলে আবেদনকারীর স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে এবং বয়স ৩৫ বছরের নিচে হতে হবে। আর পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য থাকতে হবে মাস্টার্স ডিগ্রি এবং বয়স হতে হবে সর্বোচ্চ ৪০ বছর। ভাষাগত দক্ষতার ক্ষেত্রেও নির্ধারিত মানদণ্ড রয়েছে, যা সংশ্লিষ্ট প্রোগ্রামের প্রয়োজন অনুযায়ী পূরণ করতে হবে।

প্রয়োজনীয় তথ্য

প্রথমে প্রয়োজন হবে ‘চায়নিজ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ অ্যাপলিকেশন ফরম, বিস্তারিত সিভি, নোটারাইজড করা সনদ, ট্রান্সক্রিপ্ট। সঙ্গে যুক্ত করতে হবে স্টেটমেন্ট অব পারপাস (এসওপি), রিচার্জ প্রপোজাল এবং দুজন অধ্যাপকের পক্ষ থেকে রিকমেন্ডেশন লেটার। নন-ক্রিমিনাল সার্টিফিকেট, স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ, ভাষাগত দক্ষতার প্রমাণপত্রসহ যাবতীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

অধ্যয়নের ক্ষেত্রসমূহ

বিশ্ববিদ্যালয়টি ফ্যাকাল্টি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সের অধীনে রয়েছে মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান থেকে শুরু করে অর্থনীতি, ভাষা, সাংবাদিকতা, আইন, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞানসহ বিস্তৃত বিষয়ের সমাহার। পাশাপাশি ফ্যাকাল্টি অব দ্য বিল্ড এনভায়রনমেন্টের শিক্ষার্থীদের জন্য আর্কিটেকচার, আরবান প্ল্যানিং, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, পরিবেশবিজ্ঞান এবং রিয়েল এস্টেট ম্যানেজমেন্টের মতো পেশাদারি ক্ষেত্রের সুযোগ রয়েছে। প্রযুক্তিমুখী শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে সমৃদ্ধিশালী বিভিন্ন বিষয়।

আবেদন পদ্ধতি

আগ্রহী প্রার্থীরা ক্লিক করে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ সময়: আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৬।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত