Ajker Patrika

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর বিনোদনের প্রধান উৎস গেমস

জাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২৩: ৫৭
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর বিনোদনের প্রধান উৎস গেমস

২১ বছর বয়সী নিহাদ (ছদ্মনাম) নিজ কক্ষে সারা দিন একাকী থাকার চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি প্রতি নিদ চার থেকে ছয় ঘণ্টা মোবাইলে গেমস খেলেন। এতে তার মানসিকভাবে বিষণ্ন সময় কাটে। যার কারণে ইদানীং চোখে ঝাপসা দেখা ও মাথা ব্যথার মতো সমস্যাগুলো নিয়মিত অনুভব করছেন নিহাদ। বলছি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পরিসংখ্যান বিভাগের এক ছাত্রের কথা।

নিহাদের মতো বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণদের মাঝে মোবাইল গেমস আসক্তি ও এর ক্ষতিকর প্রভাব আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হাজার ১২৫ জন শিক্ষার্থীর ওপর পরিচালিত একটি গবেষণার ফলাফলে এমন তথ্য জানা যায়। এতে দেখা যায়, ছাত্রীদের তুলনায় ছাত্ররা ১ দশমিক ৩ গুন বেশি মোবাইল গেমসে আসক্ত। এ ছাড়া গবেষণায় অংশগ্রহণ করা পুরুষ শিক্ষার্থীদের ৫৬ দশমিক ৪ শতাংশ ছাত্র মাঝারি এবং ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ ছাত্র তীব্রভাবে মোবাইল গেমসে আসক্ত। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের ৬৫ দশমিক ২ শতাংশ তাঁদের বিনোদনের প্রধান উৎস হিসেবে গেমস খেলেন।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির।

গত ৬ই সেপ্টেম্বর ‘প্রিভ্যালেন্স অ্যান্ড আন্ডারলায়িং ফ্যাক্টরস অব মোবাইল গেম অ্যাডিকশন এমং ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক নিবন্ধটি ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস কর্তৃক প্রকাশিত হয়। গবেষণাটি ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গ্লোবাল মেন্টাল হেলথ’ জার্নালের অষ্টম ভলিউমের অন্তর্ভুক্ত।

গবেষণাটি পরিচালনা করেন জাবি পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন, ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক এর সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র সাব্বির রহমান রাসেল এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আবরার আহামেদ হাবিবউল্লাহ। 

গবেষক আবু সাঈদ বলেন, ‘বর্তমান প্রযুক্তির কল্যাণে দেশের কিশোর ও তরুণ শিক্ষার্থীদের মাঝে উন্নতমানের স্মার্টফোন সহজলভ্য। আমাদের এই গবেষণার উদ্দেশ্যে, স্মার্টফোন ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা কীভাবে গেমসে আসক্ত হয়ে পড়েছে এবং এর প্রভাবে তাঁদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের পরিবর্তন গুলো চিহ্নিত করা।’ 

সাব্বির রহমান রাসেল বলেন, ‘আমরা ২০২০ সালের ২৩ অক্টোবর থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের স্বনামধন্য তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হাজার ১২৫ জন শিক্ষার্থীর মাঝে অনলাইন জরিপ পরিচালনা করি। যেখানে ৭৭৭ জন ছাত্র ও ৩৪৮ জন ছাত্রী ছিলেন। তাদের গড় বয়স ছিল ২২ দশমিক ৪ বছর। তাদের মাঝে আসক্তির মাত্রা মূল্যায়নের জন্য Lemmens game addiction scale (2009) ব্যবহার করা হয়েছে।’ 

আবরার আহামেদ হাবিবউল্লাহ বলেন, ‘আমাদের গবেষণাটি আসক্তির মাত্রা অনুযায়ী তিনটি ক্যাটাগরিতে শিক্ষার্থীদের ভাগ করা। এতে হালকা, মাঝারি ও তীব্র আসক্তি অনুসারে শিক্ষার্থীদের আসক্তিকরণের প্রভাবকসমূহ বিশ্লেষণ করা হয়।’ 

গবেষণাতে উল্লেখ করা হয়, ‘৬৫ দশমিক ২ শতাংশ শিক্ষার্থীর বিনোদনের প্রধান মাধ্যম গেমস। যাদের মধ্যে ৬১ দশমিক ৩ শতাংশ মাঝারি ও ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী তীব্রভাবে আসক্ত। ছাত্রীরা ছাত্রদের তুলনায় তীব্র আসক্তির ঝুঁকিতে কম রয়েছে। সদ্য ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের তুলনায় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাবর্ষের শেষ দিকের শিক্ষার্থীদের আসক্তির মাত্রা বেশি থাকে। এ ছাড়া তদূর্ধ্ব-২৫ বছরের শিক্ষার্থীদের ৫১ দশমিক ৯ শতাংশ তীব্র আসক্তির লক্ষণ প্রকাশ করেছে। যেখানে ২২ বছরের কম বয়সীরা ৪৪ দশমিক ৭ শতাংশ এবং ২২ থেকে ২৫ বছরের মধ্যবর্তী ৬১ দশমিক ৯ শতাংশ শিক্ষার্থী মাঝারি ধরনের আসক্তি প্রকাশ করেছে।’ 

গবেষণায় বলা হয়, ‘আসক্তি বৃদ্ধির অন্যতম কারণ গেম খেলার স্থায়িত্ব। যারা দৈনিক ৪ ঘণ্টার বেশি গেমস খেলে তাঁদের প্রতি ১০ জনের ৬ জন শিক্ষার্থী তীব্রভাবে মোবাইল গেমসে আসক্ত, এবং দৈনিক ২ থেকে ৪ ঘণ্টা গেমস খেলে এমন শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রতি ৫ জনে ১ জন শিক্ষার্থী তীব্র ভাবে আসক্ত হয়ে পড়ে।’ 

উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ‘আসক্তি বৃদ্ধির প্রভাবক গুলির মধ্যে একাকিত্ববোধ অন্যতম। শিক্ষার্থীরা যখন বন্ধু-বান্ধব, পরিবার ও সামাজিক মেলামেশা থেকে বিচ্ছিন্ন তখন মোবাইল গেমসের প্রতি আসক্তি ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।’ 

গবেষণায় জানা যায়, ‘যেসব শিক্ষার্থীরা অল্প বয়সে স্মার্টফোন ব্যবহার শুরু করেছে, তাঁদের গেমসের প্রতি আসক্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। এ ছাড়া স্মার্টফোন ব্যবহারের সময়কাল যত বেশি হয়, আসক্তির মাত্রাও বাড়তে থাকে।’ 

নিবন্ধে সচেতন করা হয়, ‘মাত্রাতিরিক্ত গেম খেলার সাথে শারীরিক সমস্যা যেমন, চোখে ঝাপসা দেখা, চোখ ও কানের অস্বস্তি অনুভূত হওয়া এবং মাথা ব্যথার সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে। তীব্র আসক্ত ৩২ শতাংশ শিক্ষার্থীরা মাথা ব্যথা ও কানের অস্বস্তিবোধ জনিত সমস্যায় ভোগে এবং মাঝারি আসক্তির ৭৬ দশমিক ৭ শতাংশ শিক্ষার্থীরা ঝাপসা দেখা ও চোখের অস্বস্তি জনিত সমস্যায় ভোগে।’ 

তবে গবেষণায় জানা যায়, মোবাইল গেমসে আসক্তির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ফলাফলে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। 

সহযোগী অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সাধারণত একাকিত্ব বোধের কারণে শিক্ষার্থীদের মোবাইল গেমিংস প্ররোচিত করে। এ জন্য বন্ধু-বান্ধব, সহপাঠী, পরিবারের সদস্যদের সচেতন থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকরী হবে শিক্ষার্থীদের শারীরিক খেলাধুলা ও পাঠ্যক্রম বহির্ভূত কার্যক্রম। ফলে একাকিত্ব তথা আসক্তির মাত্রা অনেকাংশে কমে আসবে এবং বিনোদনের প্রধান উৎস হিসেবে মোবাইল ফোন পরিত্যাগ করতে হবে। এ জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের উচিত একটি সুস্থ বিনোদন মাধ্যমের ব্যবস্থা করা এবং শিক্ষার্থীদের তাতে আগ্রহী করে তোলা।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দেশে অণুজীববিজ্ঞান শিক্ষায় ভূমিকা রয়েছে বিএসএমের

শিক্ষা ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশে অণুজীববিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণা প্রসারে ‘বাংলাদেশ সোসাইটি অব মাইক্রোবায়োলজিস্টসের (বিএসএম)’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি ড. মুনিরুল আলম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগ ও বিএসএমের যৌথ উদ্যোগে গত ২১–২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ৩৯তম বার্ষিক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। একই সঙ্গে তিনি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অণুজীববিজ্ঞান গবেষণায় উদ্ভাবনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

দুই দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানী, গবেষক, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, ভেটেরিনারি বিশেষজ্ঞ, শিল্পখাতের প্রতিনিধি এবং শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ছিল অণুজীববিজ্ঞান ও সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোতে সাম্প্রতিক গবেষণা ও অগ্রগতি নিয়ে মতবিনিময় করা, বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা জোরদার করা এবং সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর দিকনির্দেশনা প্রদান করা। সম্মেলনে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৪০০-এর অধিক প্রতিনিধি অংশ নেন।

এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয় “Microbiomes for a Sustainable Future” সময়োপযোগী ছিল এবং মানব উন্নয়ন ও কল্যাণে অণুজীববিজ্ঞানের গুরুত্ব তুলে ধরতে সহায়ক হয়। সর্বমোট ২৮৮টি সারসংক্ষেপ (Abstract) গৃহীত হওয়ার পর সম্মেলনের ১২টি টেকনিক্যাল সেশনে ২টি প্লেনারি বক্তৃতা, ৮টি কীনোট বক্তৃতা, ৬টি আমন্ত্রিত বক্তৃতা, ৪টি ইয়াং সায়েন্টিস্ট টক, ৫৮টি মৌখিক উপস্থাপনা এবং প্রায় ২২৬টি পোস্টার উপস্থাপন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. এস. এম. এ. ফয়েজ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (একাডেমিক) প্রফেসর ডা. মামুন আহমেদ। স্বাগতিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. শাকিলা নার্গিস খান।

অনুষ্ঠানের শেষপর্বে সম্মেলন আয়োজন কমিটির চেয়ারম্যান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন সায়েন্সেসের (সিএআরএস) চিফ সায়েন্টিস্ট ডা. লতিফুল বারী ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎জকসু নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিলেন জামাল ভূঁইয়া

জবি প্রতিনিধি 
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসেছেন বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া। ‎

আজ ‎বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আসেন তিনি। এ সময় শহীদ সাজিদ ভবন, প্রক্টর অফিস ঘুরে প্রোগোজ স্কুলের মাঠে সাংবাদিক ও ফ্যানদের সঙ্গে কথা বলেন এই ফুটবলার। ‎

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎এ সময় জামাল ভূঁইয়া বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো এলাম। আমার অনেক ভালো লাগছে। এটি অনেক পুরোনো বিশ্ববিদ্যালয়। আগামী ৩০ ডিসেম্বর জকসু নির্বাচন। আপনাদের সবার প্রতি শুভকামনা। আমি আবার আসব ইনশা আল্লাহ।’ ‎

‎এ সময় জাতীয় ছাত্র শক্তি সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী মো. ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘আমরা স্পোর্টস কার্নিভালের সময় জামাল ভাইকে আমাদের ক্যাম্পাসে আসার আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু তখন শিডিউল না পাওয়ায় সম্ভব হয়নি। এই প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশ ফুটবলের প্রথম সুপারস্টার জামাল ভূঁইয়া। তাঁর মাধ্যমে বাংলাদেশ ফুটবলের এই নতুন ধারা উন্মোচিত হয়েছে।’ ‎

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎এ সময় এই সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলটির ভিপি পদপ্রার্থী কিশোয়ার আনজুম সাম্য, ক্রীড়া সম্পাদক পদপ্রার্থী ফেরদৌস হাসান সোহান, কার্যনির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী সিনহা ইসলাম অর্না এবং ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের ক্রীড়া সম্পাদক কামরুল হাছান নাফিজসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচনে ব্যতিক্রমী প্রচারণায় প্রার্থীরা

সোহানুর রহমান, জবি
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবমুখর ও প্রাণবন্ত পরিবেশ। কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর প্রথমবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনের প্রচারণায় যুক্ত হয়েছে ভিন্নমাত্রিক ও সৃজনশীল পদ্ধতি, যা শিক্ষার্থীদের মাঝে বাড়তি আগ্রহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে।

জকসু নির্বাচনের প্রার্থীরা প্রচারণায় পোস্টার ও লিফলেটের মতো প্রচলিত প্রচারসামগ্রীর বাইরে গিয়ে লাল কার্ড, রঙিন প্ল্যাকার্ড ও হাতে বহনযোগ্য নানা প্রচারসামগ্রী ব্যবহার করছেন। দেয়ালে পোস্টার সাঁটানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় আচরণবিধি মেনেই ভিন্ন কৌশলে ভোটারদের কাছে নিজেদের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁরা।

নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী ১৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রচারণার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যেই প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের মন জয় করতে ব্যবহার করছেন এরোপ্লেন আকৃতির কাগজ, প্রতীকী নোট, কাপ, বোতল, প্রজাপতি, জকসু পাসপোর্টসহ নানা অভিনব উপকরণ। আকর্ষণীয় স্লোগান ও রঙিন ডিজাইনের মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে নির্বাচনী অঙ্গীকার ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।

প্রচারণায় প্রযুক্তির ব্যবহারও চোখে পড়ার মতো। কিউআর কোড সংযুক্ত প্রচারণা সামগ্রীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোন স্ক্যান করে মুহূর্তেই প্রার্থীদের বিস্তারিত ইশতেহার ও পরিকল্পনা জানতে পারছেন।

ছাত্রদল-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী খাদিজাতুল কুবরা বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মাঝে একটি স্বতঃস্ফূর্ত ও প্রাণবন্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। শুরু থেকেই আমরা জোরালো প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানো এবং তাঁদের দৃষ্টি আকর্ষণের লক্ষ্যেই আমি ভিন্নধর্মী প্রচার কার্ড ব্যবহার করছি।’

ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেলের শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদপ্রার্থী ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘লিফলেট দিয়ে প্রচার করার ফলে ভোটাররা অতিষ্ঠ হয়ে গেছেন, তাই এবার আমাদের অন্য রকম প্রচারণা। আমাদের বার্তাটি আকর্ষণীয়ভাবে ভোটারদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম চালাচ্ছি।’

স্বতন্ত্র নির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী আল শাহরিয়ার খান বলেন, ‘নারী শিক্ষার্থীদের আগ্রহ সৃষ্টি করা এবং প্রচারসামগ্রী যেন সংরক্ষণযোগ্য হয়, এই চিন্তা থেকেই আমি বিড়ালের আদলে কার্ড তৈরি করেছি।’

ছাত্রশক্তি-সমর্থিত ‘নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কাছে ইশতেহার পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের সমস্যা ও প্রত্যাশা বোঝার চেষ্টা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎জবির ‘এ’ ও ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর

জবি প্রতিনিধি 
‎জবির ‘এ’ ও ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক (সম্মান) ও বিবিএ প্রথম বর্ষের ‘এ’ ইউনিট (বিজ্ঞান ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদ) ও ‘সি’ ইউনিটের (বাণিজ্য অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা আগামী ২৬ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ও ২৭ ডিসেম্বর (শনিবার) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। উভয় দিন পরীক্ষার সময় বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১ ঘন্টা।

‎‘এ’ ইউনিটের (বিজ্ঞান ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষায় ৮৬০টি আসনের বিপরীতে ৭২ হাজর ৪৭৪ জন আবেদন করেছে। প্রতি আসনের জন্য ৮৫ জন পরীক্ষার্থী লড়বেন। আর ‘সি’ ইউনিটে (বাণিজ্য অনুষদ) ৫২০টি আসনের বিপরীতে ২০ হাজর ৫৩৭ জন আবেদন করেছে। বিজ্ঞান অনুষদে ৮৬০ আসনের বিপরীতে ৭২ হাজর ৪৭৪ জন আবেদন করেছে। প্রতি আসনের জন্য ৪০ জন শিক্ষার্থী লড়বেন।

‎‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা মোট ১২টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ঢাকার বাহিরে তিনটি কেন্দ্র, কুমিল্লা বিশ্বিবদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা হবে। ঢাকার মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট ৯টি কেন্দ্রের মধ্যে পরীক্ষা হবে। ঢাকার ভেতরের কেন্দ্র সমূহ হলো— জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল, কে এল জুবিলি হাই স্কুল এন্ড কলেজ, বিইএএম মডেল হাই স্কুল এন্ড কলেজ।

‎‘সি’ ইউনিটে (বাণিজ্য অনুষদ) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকার মধ্যে বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গভর্মেন্ট মুসলিম হাই স্কুল কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ৷

‎মোট ১০০ মার্কের পরীক্ষায় ৭২ মার্ক এমসিকিউ ও বাকী ১৮ মার্ক থাকবে এসএসসি (সমমান) ও এইচএসসি (সমমান) ফলাফলের ওপর। ‘এ’ ইউনিটে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন গণিত অথবা জীব বিজ্ঞান বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে। ‘সি’ ইউনিটে ইংরেজি, গাণিতিক বুদ্ধিমত্তা ও হিসাব বিজ্ঞান, ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ বিষয়ে প্রশ্ন আসবে।

‎পরীক্ষার সার্বিক প্রস্তুতি বিষয়ে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. পরিমল বালা বলেন, ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের সব প্রস্তুতি আমাদের সম্পন্ন হয়েছে। এবার পরীক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে এবার ঢাকার বাহিরে খুলনা, রাজশাহী ও কুমিল্লা পরীক্ষা কেন্দ্র রাখা হয়েছে।

‎বাণিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া বলেন, আমাদের ৫২০ আসনের বিপরীতে ২০ হাজার ৫৩৭ জন আবেদন করেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকার মধ্যে আরও ৩টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকার বাহিরে কোন কেন্দ্রে পরীক্ষা হবে না।

‎এর আগে ১৩ ডিসেম্বর ‘ই’ ইউনিটের (চারুকলা অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উল্লখ্য, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ডি ইউনিটের পরীক্ষা আগামী ৯ জানুয়ারি বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। কলা ও আইন অনুষদভুক্ত বি ইউনিটের পরীক্ষা আগামী ৩০ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত