মন্টি বৈষ্ণব

পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তান তাসমিনা নিশাত। স্বাভাবিকভাবে ছোটবেলা থেকে পরিবারের সবার আদর ও স্নেহে বেড়ে উঠেছেন। ছোটবেলা থেকেই নিশাত নিজের কাজগুলো নিজেই করার চেষ্টা করতেন। পরিবারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, স্বতন্ত্রভাবে নিজের মতো করে কিছু করতে চেয়েছেন সব সময়ই। আর সেই অদম্য আগ্রহ ও স্বাধীন চিন্তা থেকেই অনলাইনভিত্তিক শপিং প্ল্যাটফর্ম ‘কইন্যা’-এর যাত্রা শুরু করেন।
নিশাতের জন্ম, বেড়ে ওঠা, স্কুল, কলেজ ঢাকাতেই। স্কুল মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। আর কলেজ মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। স্কুল কলেজের পাট চুকিয়ে ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে। সেখানেই অনার্স-মাস্টার্স সমাপ্ত করেন।
ছোটবেলা থেকে নিশাতের গৎবাঁধা জীবন ভালো লাগত না। তিনি এমন কিছু করতে চাইতেন, যেখানে তাঁর চিন্তার স্বাধীনতা থাকবে, ভাবনাগুলোকে নিজের মতো প্রকাশ করতে পারবেন। সেই চিন্তাই তাঁর নতুন কিছু করার উৎস। পরিবারের সবাই চাকরিজীবী হলেও নিশাত বেছে নেন ব্যতিক্রমী এ পেশা। শুরু হয় স্বপ্ন ‘কইন্যা’-এর যাত্রা।
নিশাতের ব্যবসার শুরুতে ছিল না বিশাল কোনো পুঁজি। নিজের সামান্য সঞ্চয় মাত্র ১৫০০ টাকা দিয়ে শুরু করেন কাজ। একটা শাড়ি বানিয়ে সেটা বিক্রি করেন। আবার সেই টাকা দিয়ে শুরু করেন আরেকটা নতুন কাজ। এভাবে দীর্ঘদিন যায়। নিশাতের ব্যবসার শুরুতে পরিবারের তেমন কারও সহযোগিতা না থাকলেও ধীরে ধীরে সেই আস্থাটাও অর্জন করতে সক্ষম হন।
উদ্যোক্তা হিসেবে শুরুর গল্পটা শুনতে চাইলে নিশাত বলেন, ‘কইন্যা’-এর শুরুর গল্পে বলতে হলে, ফিরে যেতে হবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সময়টাতে। আমি আর আমার বন্ধু বাঁধন মিলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সের শেষ দিকে চিন্তা করি কিছু একটা করব। সেই কিছু একটা থেকে শুরু হয় আমাদের উদ্যোগ, ‘দ্বৈত’। ২০১৪ সালে দ্বৈত ছিল আমাদের প্রথম উদ্যোগ। সেখানে আমরা নিজেরা মালা বানাতাম। প্রত্যেকটা পুঁতি বুনতাম আমরা একটা মালাতে। এভাবেই মালা, হাতের ব্রেসলেট, হাতের রিং। হাতের রিংটা আমরা বানাতাম বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে। রিং এর সঙ্গে ঝালাই করে কয়েনগুলো জোড়া লাগানো হতো। এই রিংগুলো সবাই খুব পছন্দ করেছিল। সঙ্গে মালাগুলো তো আছেই। এ ছাড়া কামিজ, পাঞ্জাবি, ফতুয়াও করেছিলাম আমরা। এভাবে সময় চলে যেতে থাকে, বাড়তে থাকে মানুষের ভালোবাসা। আমাদের মাস্টার্স শেষ হয়ে যায়। আমাকে হল ছেড়ে দিতে হয়। চলে আসি ঢাকায়। আর বাঁধন থেকে যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে ইসলামনগরে। যেহেতু দুজনের দূরত্ব বেড়ে যায়, কাজ করাও কঠিন হয়ে পড়ে। তখন আমরা চিন্তা করলাম তাঁতের শাড়ি নিয়ে কাজ করব। সেই ভাবনা থেকেই ‘কইন্যা’র যাত্রা।
নিশাত ও বাঁধন প্রথম দিকে কইন্যাতে শুধু ট্রেডিং করতেন। সহজ কথায় বলতে গেলে সোর্সিং করতেন। নিজেরা ছবি তুলে ফেসবুক পেজে দিতেন। এভাবে দুবছর কাটার পর মনে হলো একদম নিজেদের কিছু করতে হবে। যেই ভাবনা সেই কাজ। তাঁতিদের দিয়ে নিজেরা রং পছন্দ করে বুনতে শুরু করেন হাফসিল্ক শাড়ি। মানিকগঞ্জে কাজ শুরু হলো। সেই শাড়ির ওপর বসালেন নিজেদের নকশা করা ছাপ। সাড়াও পাওয়া গেল। জনপ্রিয়তা বাড়ায় কারখানা পত্তনের দরকার হয়ে পড়ে। নিশাত বলছেন, ‘আস্তে আস্তে কারখানা নিলাম। সেখানে ব্লকের পাশাপাশি স্ক্রিনপ্রিন্টের কাজ শুরু করলাম। তার পাশাপাশি শুরু হলো সেলাইয়ের কাজ। রেডি টপ্স, ম্যাটারনিটি ওয়্যার, কামিজ; এখন সবই করার চেষ্টা করছি। এভাবেই দ্বৈত থেকে কইন্যার যাত্রা শুরু হয়।’
নিশাত আর বাঁধনের প্রথম কাজ শুরু হয় তাঁতের সুতি শাড়ি ও হাফ সিল্ক শাড়ি দিয়ে। পরে সেই হাফসিল্ক প্রিন্টে যুক্ত করেন কাঠের ব্লক, স্ক্রিনপ্রিন্ট। হাফ সিল্কের মধ্যে পুঁতির কাজ, এমনকি তাঁতে মসলিন ও বুননের চেষ্টা করেছেন নিশাত ও বাঁধন। দেখা গেছে, ক্রেতারা সেগুলো পছন্দও করেছেন। শাড়ির পাশাপাশি তাঁরা আরও তৈরি করছেন আনস্টিচড-স্টিচড কুরতি, শাল (সিজনাল), এমব্রয়ডারি শাড়ি, ডেনিম (সিজনাল), ম্যাটারনিটি ওয়্যার, পালাজ্জো, টু-পিস, ব্লাউজ পিস, রেডি টপ্স, স্যান্ডেল, লেদারের ফুটওয়্যার ইত্যাদি। বর্তমানে নিশাত ও বাঁধনের অক্লান্ত চেষ্টায় ভিন্নতা ফুটে উঠেছে ‘কইন্যা’র সার্বিক কাজে।
নারী উদ্যোক্তা হওয়ার পেছনে কারও সহযোগিতা পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে নিশাত ফিরে যান তাঁর মায়ের প্রসঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার মা। মা আমাকে সব সময় মানসিকভাবে সাহস জুগিয়েছেন। কাজ শুরু করার সময় অভয় দিয়ে বলেছিলেন, “ব্যবসায় ওঠা-নামা একটা স্বাভাবিক ব্যাপার। ওঠাটা যদি তুমি মেনে নিতে পারো, নামাটাও মানতেই হবে। তবে পিছপা হওয়া যাবে না”-মায়ের এই কথাগুলো তখন অনেক অনুপ্রাণিত করেছিল, এখনো করে। আরেকজনের কথা না বললেই নয়, সে হলো আমার বন্ধু বাঁধন। সে শুধু আমার ব্যবসায়িক পার্টনার না, আমার জীবনেরও অবিচ্ছেদ্য অংশ। শতভাগ সাপোর্ট তার থেকে আমি সব সময় পেয়ে এসেছি। আমার পরিবার এখন অনেক অনেক বড়। আমি, আমার স্বামী বাঁধন ও আমাদের ২ বছরের সন্তান নির্বাণ। আর আমরা তিন বোন ও এক ভাই।’
নিশাত কইন্যাকে এমন এক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে যেতে চান, যেখানে ভোক্তারা তাঁদের সকল চাহিদা এক জায়গায় পূরণ করতে পারবেন। শিক্ষার্থী বা কর্মক্ষেত্রের জন্য যেসব নারীদের বেশ কিছু পোশাকের প্রয়োজন তাদের চাহিদা ও পছন্দ নিশ্চিত করার চেষ্টা করেন নিশাত। পাশাপাশি আরামদায়ক ও টেকসই কাপড় ক্রেতাদের হাতে তুলে দিতে 'কইন্যা' বদ্ধপরিকর। এ ছাড়া ম্যাটারনিটি ওয়্যার সেকশনটি নিয়েও বড় পরিকল্পনা আছে তাঁদের। শুধু ম্যাটারনিটি ওয়্যার নয়, মাতৃত্বকালে যে জিনিসগুলো দরকার বেশি, সেসব নিয়েও কাজ করছে 'কইন্যা'।
বর্তমানে এ দেশের নারী উদ্যোক্তারা নতুন করে নিজেদের মতো করে ভাবতে শিখেছে। নিজের ব্যবসার সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারছেন। এটা আমাদের এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজের জন্য একটা চ্যালেঞ্জও বটে। নারীরা ব্যবসার প্রয়োজনে ছুটে চলেছেন দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। নারীদের এই অদম্য সাহসিকতার বিষয়টি কেমন লাগে জানতে চাইলে 'কইন্যা' স্বত্বাধিকারী তাসমিনা নিশাত বলেন, ‘বর্তমানে এ দেশের নারীদের নিজেদের চার দেয়ালে আটকে রাখার মন-মানসিকতার পরিবর্তন হচ্ছে। এই বিষয়টা আমার ভীষণ ভালো লাগে। নারীদের স্বাবলম্বী হতে চাওয়ার ব্যাপারটা খুবই ইতিবাচক। এটি আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক দুই দিক দিকেই গুরুত্বপূর্ণ।
তবে যারা নারী উদ্যোক্তা হতে চাইছেন বা নতুন কিছু করতে চাইছেন তাঁদের বলব, আপনি যে উদ্দেশ্যে ব্যবসা শুরু করবেন, সে বিষয়ে আগে একটা স্বচ্ছ ধারণা নিন। কাজটা সত্যি করবেন কিনা, কাজের পুঁজি, শ্রম, সময় বিষয়ে নিজের একটা পরিষ্কার ধারণা রাখুন। ব্যবসার শুরুতে নিজের প্ল্যানের একটা খসড়া করুন। আপনার উদ্যোগটাকে কোথায় নিয়ে যেতে চান, সেটা ভাবুন। পাশাপাশি উদ্যোগের ধরন অনুযায়ী ভোক্তা ও বাজারের বিষয়টাও মাথায় রাখুন। এর পর কাজ শুরু করুন। এ ছাড়া আনুষঙ্গিক ব্যবসায়িক বিষয়ে জ্ঞান রাখাটা জরুরি। এর জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পড়াশোনা করাও জরুরি।’
ব্যবসার ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছেন নিশাত ও বাঁধন। তাঁদের ব্যবসার উৎপাদন ও আনুষঙ্গিক কাজের সঙ্গে যারা জড়িত, সব কর্মীদের উন্নয়নের দিকে খেয়াল রাখছেন তাঁরা। জোর দিয়েছেন কর্মসংস্থান তৈরিতে। ২০১৭ সালে ‘কইন্যা’ তাদের নিজেদের কারখানায় কাজ শুরু করে। সেখানে প্রত্যক্ষভাবে কর্মসংস্থান হয়েছে অনেক মানুষের। বর্তমানে সব মিলিয়ে ‘কইন্যা’র সার্বিক কাজে যুক্ত আছেন ১৬ জন। এই করোনা মহামারির সংকটকালেও কইন্যা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে তাদের কর্মীদের সার্বিক দেখভালের। নিশাত ও বাঁধন বিশ্বাস করেন শুধুমাত্র নিজেরা নয়, বরং সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার মধ্যেই জীবনের প্রকৃত সার্থকতা নিহিত।
নানান চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ‘কইন্যা’ স্বত্বাধিকারী তাসমিনা নিশাত এটা বুঝতে পেরেছেন যে, ব্যবসায় দিন শেষে ক্রেতাই সব। তাই ক্রেতার ভালো লাগা, মন্দ লাগাকে সবার আগে গুরুত্ব দেন তাঁরা। আর এ কারণে ‘কইন্যা’ আজ বহু মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে। নিশাতের ভাষ্যমতে, চলার পথে মানুষের জীবনে অনেক রকমের প্রতিবন্ধকতা আসবে। চ্যালেঞ্জকে আমরা স্বাভাবিকভাবেই গ্রহণ করতে শিখেছি। আশা করি সামনের দিনে আমরা আরও বড় পরিসরে ‘কইন্যা’কে নিয়ে যেতে পারব।

পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তান তাসমিনা নিশাত। স্বাভাবিকভাবে ছোটবেলা থেকে পরিবারের সবার আদর ও স্নেহে বেড়ে উঠেছেন। ছোটবেলা থেকেই নিশাত নিজের কাজগুলো নিজেই করার চেষ্টা করতেন। পরিবারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, স্বতন্ত্রভাবে নিজের মতো করে কিছু করতে চেয়েছেন সব সময়ই। আর সেই অদম্য আগ্রহ ও স্বাধীন চিন্তা থেকেই অনলাইনভিত্তিক শপিং প্ল্যাটফর্ম ‘কইন্যা’-এর যাত্রা শুরু করেন।
নিশাতের জন্ম, বেড়ে ওঠা, স্কুল, কলেজ ঢাকাতেই। স্কুল মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। আর কলেজ মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। স্কুল কলেজের পাট চুকিয়ে ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে। সেখানেই অনার্স-মাস্টার্স সমাপ্ত করেন।
ছোটবেলা থেকে নিশাতের গৎবাঁধা জীবন ভালো লাগত না। তিনি এমন কিছু করতে চাইতেন, যেখানে তাঁর চিন্তার স্বাধীনতা থাকবে, ভাবনাগুলোকে নিজের মতো প্রকাশ করতে পারবেন। সেই চিন্তাই তাঁর নতুন কিছু করার উৎস। পরিবারের সবাই চাকরিজীবী হলেও নিশাত বেছে নেন ব্যতিক্রমী এ পেশা। শুরু হয় স্বপ্ন ‘কইন্যা’-এর যাত্রা।
নিশাতের ব্যবসার শুরুতে ছিল না বিশাল কোনো পুঁজি। নিজের সামান্য সঞ্চয় মাত্র ১৫০০ টাকা দিয়ে শুরু করেন কাজ। একটা শাড়ি বানিয়ে সেটা বিক্রি করেন। আবার সেই টাকা দিয়ে শুরু করেন আরেকটা নতুন কাজ। এভাবে দীর্ঘদিন যায়। নিশাতের ব্যবসার শুরুতে পরিবারের তেমন কারও সহযোগিতা না থাকলেও ধীরে ধীরে সেই আস্থাটাও অর্জন করতে সক্ষম হন।
উদ্যোক্তা হিসেবে শুরুর গল্পটা শুনতে চাইলে নিশাত বলেন, ‘কইন্যা’-এর শুরুর গল্পে বলতে হলে, ফিরে যেতে হবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সময়টাতে। আমি আর আমার বন্ধু বাঁধন মিলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সের শেষ দিকে চিন্তা করি কিছু একটা করব। সেই কিছু একটা থেকে শুরু হয় আমাদের উদ্যোগ, ‘দ্বৈত’। ২০১৪ সালে দ্বৈত ছিল আমাদের প্রথম উদ্যোগ। সেখানে আমরা নিজেরা মালা বানাতাম। প্রত্যেকটা পুঁতি বুনতাম আমরা একটা মালাতে। এভাবেই মালা, হাতের ব্রেসলেট, হাতের রিং। হাতের রিংটা আমরা বানাতাম বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে। রিং এর সঙ্গে ঝালাই করে কয়েনগুলো জোড়া লাগানো হতো। এই রিংগুলো সবাই খুব পছন্দ করেছিল। সঙ্গে মালাগুলো তো আছেই। এ ছাড়া কামিজ, পাঞ্জাবি, ফতুয়াও করেছিলাম আমরা। এভাবে সময় চলে যেতে থাকে, বাড়তে থাকে মানুষের ভালোবাসা। আমাদের মাস্টার্স শেষ হয়ে যায়। আমাকে হল ছেড়ে দিতে হয়। চলে আসি ঢাকায়। আর বাঁধন থেকে যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে ইসলামনগরে। যেহেতু দুজনের দূরত্ব বেড়ে যায়, কাজ করাও কঠিন হয়ে পড়ে। তখন আমরা চিন্তা করলাম তাঁতের শাড়ি নিয়ে কাজ করব। সেই ভাবনা থেকেই ‘কইন্যা’র যাত্রা।
নিশাত ও বাঁধন প্রথম দিকে কইন্যাতে শুধু ট্রেডিং করতেন। সহজ কথায় বলতে গেলে সোর্সিং করতেন। নিজেরা ছবি তুলে ফেসবুক পেজে দিতেন। এভাবে দুবছর কাটার পর মনে হলো একদম নিজেদের কিছু করতে হবে। যেই ভাবনা সেই কাজ। তাঁতিদের দিয়ে নিজেরা রং পছন্দ করে বুনতে শুরু করেন হাফসিল্ক শাড়ি। মানিকগঞ্জে কাজ শুরু হলো। সেই শাড়ির ওপর বসালেন নিজেদের নকশা করা ছাপ। সাড়াও পাওয়া গেল। জনপ্রিয়তা বাড়ায় কারখানা পত্তনের দরকার হয়ে পড়ে। নিশাত বলছেন, ‘আস্তে আস্তে কারখানা নিলাম। সেখানে ব্লকের পাশাপাশি স্ক্রিনপ্রিন্টের কাজ শুরু করলাম। তার পাশাপাশি শুরু হলো সেলাইয়ের কাজ। রেডি টপ্স, ম্যাটারনিটি ওয়্যার, কামিজ; এখন সবই করার চেষ্টা করছি। এভাবেই দ্বৈত থেকে কইন্যার যাত্রা শুরু হয়।’
নিশাত আর বাঁধনের প্রথম কাজ শুরু হয় তাঁতের সুতি শাড়ি ও হাফ সিল্ক শাড়ি দিয়ে। পরে সেই হাফসিল্ক প্রিন্টে যুক্ত করেন কাঠের ব্লক, স্ক্রিনপ্রিন্ট। হাফ সিল্কের মধ্যে পুঁতির কাজ, এমনকি তাঁতে মসলিন ও বুননের চেষ্টা করেছেন নিশাত ও বাঁধন। দেখা গেছে, ক্রেতারা সেগুলো পছন্দও করেছেন। শাড়ির পাশাপাশি তাঁরা আরও তৈরি করছেন আনস্টিচড-স্টিচড কুরতি, শাল (সিজনাল), এমব্রয়ডারি শাড়ি, ডেনিম (সিজনাল), ম্যাটারনিটি ওয়্যার, পালাজ্জো, টু-পিস, ব্লাউজ পিস, রেডি টপ্স, স্যান্ডেল, লেদারের ফুটওয়্যার ইত্যাদি। বর্তমানে নিশাত ও বাঁধনের অক্লান্ত চেষ্টায় ভিন্নতা ফুটে উঠেছে ‘কইন্যা’র সার্বিক কাজে।
নারী উদ্যোক্তা হওয়ার পেছনে কারও সহযোগিতা পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে নিশাত ফিরে যান তাঁর মায়ের প্রসঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার মা। মা আমাকে সব সময় মানসিকভাবে সাহস জুগিয়েছেন। কাজ শুরু করার সময় অভয় দিয়ে বলেছিলেন, “ব্যবসায় ওঠা-নামা একটা স্বাভাবিক ব্যাপার। ওঠাটা যদি তুমি মেনে নিতে পারো, নামাটাও মানতেই হবে। তবে পিছপা হওয়া যাবে না”-মায়ের এই কথাগুলো তখন অনেক অনুপ্রাণিত করেছিল, এখনো করে। আরেকজনের কথা না বললেই নয়, সে হলো আমার বন্ধু বাঁধন। সে শুধু আমার ব্যবসায়িক পার্টনার না, আমার জীবনেরও অবিচ্ছেদ্য অংশ। শতভাগ সাপোর্ট তার থেকে আমি সব সময় পেয়ে এসেছি। আমার পরিবার এখন অনেক অনেক বড়। আমি, আমার স্বামী বাঁধন ও আমাদের ২ বছরের সন্তান নির্বাণ। আর আমরা তিন বোন ও এক ভাই।’
নিশাত কইন্যাকে এমন এক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে যেতে চান, যেখানে ভোক্তারা তাঁদের সকল চাহিদা এক জায়গায় পূরণ করতে পারবেন। শিক্ষার্থী বা কর্মক্ষেত্রের জন্য যেসব নারীদের বেশ কিছু পোশাকের প্রয়োজন তাদের চাহিদা ও পছন্দ নিশ্চিত করার চেষ্টা করেন নিশাত। পাশাপাশি আরামদায়ক ও টেকসই কাপড় ক্রেতাদের হাতে তুলে দিতে 'কইন্যা' বদ্ধপরিকর। এ ছাড়া ম্যাটারনিটি ওয়্যার সেকশনটি নিয়েও বড় পরিকল্পনা আছে তাঁদের। শুধু ম্যাটারনিটি ওয়্যার নয়, মাতৃত্বকালে যে জিনিসগুলো দরকার বেশি, সেসব নিয়েও কাজ করছে 'কইন্যা'।
বর্তমানে এ দেশের নারী উদ্যোক্তারা নতুন করে নিজেদের মতো করে ভাবতে শিখেছে। নিজের ব্যবসার সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারছেন। এটা আমাদের এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজের জন্য একটা চ্যালেঞ্জও বটে। নারীরা ব্যবসার প্রয়োজনে ছুটে চলেছেন দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। নারীদের এই অদম্য সাহসিকতার বিষয়টি কেমন লাগে জানতে চাইলে 'কইন্যা' স্বত্বাধিকারী তাসমিনা নিশাত বলেন, ‘বর্তমানে এ দেশের নারীদের নিজেদের চার দেয়ালে আটকে রাখার মন-মানসিকতার পরিবর্তন হচ্ছে। এই বিষয়টা আমার ভীষণ ভালো লাগে। নারীদের স্বাবলম্বী হতে চাওয়ার ব্যাপারটা খুবই ইতিবাচক। এটি আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক দুই দিক দিকেই গুরুত্বপূর্ণ।
তবে যারা নারী উদ্যোক্তা হতে চাইছেন বা নতুন কিছু করতে চাইছেন তাঁদের বলব, আপনি যে উদ্দেশ্যে ব্যবসা শুরু করবেন, সে বিষয়ে আগে একটা স্বচ্ছ ধারণা নিন। কাজটা সত্যি করবেন কিনা, কাজের পুঁজি, শ্রম, সময় বিষয়ে নিজের একটা পরিষ্কার ধারণা রাখুন। ব্যবসার শুরুতে নিজের প্ল্যানের একটা খসড়া করুন। আপনার উদ্যোগটাকে কোথায় নিয়ে যেতে চান, সেটা ভাবুন। পাশাপাশি উদ্যোগের ধরন অনুযায়ী ভোক্তা ও বাজারের বিষয়টাও মাথায় রাখুন। এর পর কাজ শুরু করুন। এ ছাড়া আনুষঙ্গিক ব্যবসায়িক বিষয়ে জ্ঞান রাখাটা জরুরি। এর জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পড়াশোনা করাও জরুরি।’
ব্যবসার ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছেন নিশাত ও বাঁধন। তাঁদের ব্যবসার উৎপাদন ও আনুষঙ্গিক কাজের সঙ্গে যারা জড়িত, সব কর্মীদের উন্নয়নের দিকে খেয়াল রাখছেন তাঁরা। জোর দিয়েছেন কর্মসংস্থান তৈরিতে। ২০১৭ সালে ‘কইন্যা’ তাদের নিজেদের কারখানায় কাজ শুরু করে। সেখানে প্রত্যক্ষভাবে কর্মসংস্থান হয়েছে অনেক মানুষের। বর্তমানে সব মিলিয়ে ‘কইন্যা’র সার্বিক কাজে যুক্ত আছেন ১৬ জন। এই করোনা মহামারির সংকটকালেও কইন্যা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে তাদের কর্মীদের সার্বিক দেখভালের। নিশাত ও বাঁধন বিশ্বাস করেন শুধুমাত্র নিজেরা নয়, বরং সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার মধ্যেই জীবনের প্রকৃত সার্থকতা নিহিত।
নানান চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ‘কইন্যা’ স্বত্বাধিকারী তাসমিনা নিশাত এটা বুঝতে পেরেছেন যে, ব্যবসায় দিন শেষে ক্রেতাই সব। তাই ক্রেতার ভালো লাগা, মন্দ লাগাকে সবার আগে গুরুত্ব দেন তাঁরা। আর এ কারণে ‘কইন্যা’ আজ বহু মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে। নিশাতের ভাষ্যমতে, চলার পথে মানুষের জীবনে অনেক রকমের প্রতিবন্ধকতা আসবে। চ্যালেঞ্জকে আমরা স্বাভাবিকভাবেই গ্রহণ করতে শিখেছি। আশা করি সামনের দিনে আমরা আরও বড় পরিসরে ‘কইন্যা’কে নিয়ে যেতে পারব।

বাংলাদেশকে একটি ডিজিটাল ও নগদ লেনদেনমুক্ত (ক্যাশলেস) রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বড় ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে দেশের প্রথম ‘ক্যাশলেস’ জেলা হিসেবে ঘোষণা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে
দেশের একমাত্র গাড়ি প্রস্তুত ও সংযোজনকারী রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে কর্মচারীদের গ্র্যাচুইটি ফান্ড ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘ ৩৩ মাসের অবহেলায় অন্তত ৬৫ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। অথচ এই ক্ষতির দায়ে তদারকি কর্মকর্তার কাছ থেকে জরিমানা হিসেবে আদায় করা হয়েছে মাত্র ১ লাখ টাকা।
৩ ঘণ্টা আগে
দেশের উৎপাদন শিল্পের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে ভ্যাট ও করকাঠামোকে আরও যুক্তিসংগত করার দাবি তুলেছে দেশীয় পণ্যের ব্র্যান্ডিংয়ে যুক্ত উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)।
১০ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ ও ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের যে আশঙ্কাজনক উত্থান ঘটেছে, তার সবচেয়ে গুরুতর প্রভাব পড়ছে গ্রাহকের আমানতের নিরাপত্তায়। নিরাপত্তা সঞ্চিতির (প্রভিশন) বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে প্রয়োজনীয় সঞ্চিতি রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রায় গোটা ব্যাংকিং ব্যবস্থার সুরক্ষাকাঠামোই কার্যত দুর্বল...
১০ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বাংলাদেশকে একটি ডিজিটাল ও নগদ লেনদেনমুক্ত (ক্যাশলেস) রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বড় ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে দেশের প্রথম ‘ক্যাশলেস’ জেলা হিসেবে ঘোষণা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গতকাল শনিবার চট্টগ্রামে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এই তথ্য জানান।
গভর্নর বলেন, ‘২০২৭ সালের মধ্যে দেশের অন্তত ৭৫ শতাংশ খুচরা লেনদেন ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে দেশের প্রতিটি নাগরিকের হাতে ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে স্মার্টফোন পৌঁছানো নিশ্চিত করতে হবে।’
চট্টগ্রাম অঞ্চলের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা শীর্ষক এই সভায় গভর্নর চট্টগ্রামকে দেশের ‘অর্থনৈতিক লাইফলাইন’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘প্রধান সমুদ্রবন্দর, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড), ভারী শিল্প এবং জ্বালানি অবকাঠামোর কেন্দ্রবিন্দু এই চট্টগ্রাম। সিঙ্গাপুর, দুবাই বা হংকংয়ের মতো চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সংযোগ শক্তিশালী করতে হবে। তবেই এই অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনা পুরোপুরি কাজে লাগানো সম্ভব হবে।’
আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সহজ করতে দেশের সব সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরে শিগগিরই ২৪ ঘণ্টা রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস) সিস্টেম চালু করা হবে বলে জানান গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এটি একটি তাৎক্ষণিক ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার ব্যবস্থা যা বাণিজ্যের গতি বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এ ছাড়া, তৃণমূল পর্যায়ে বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এমএমই) এবং কৃষি খাতে পর্যাপ্ত ও সহজ শর্তে ঋণ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন গভর্নর। জেলা ও তৃণমূল পর্যায়ে উৎপাদনশীল খাতের বিকাশকে ত্বরান্বিত করতে ব্যাংকগুলোকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় বিভিন্ন ব্যবসায়িক চেম্বার, ব্যাংকার, সরকারি সংস্থার প্রতিনিধি এবং শিক্ষাবিদ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশকে একটি ডিজিটাল ও নগদ লেনদেনমুক্ত (ক্যাশলেস) রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বড় ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে দেশের প্রথম ‘ক্যাশলেস’ জেলা হিসেবে ঘোষণা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গতকাল শনিবার চট্টগ্রামে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এই তথ্য জানান।
গভর্নর বলেন, ‘২০২৭ সালের মধ্যে দেশের অন্তত ৭৫ শতাংশ খুচরা লেনদেন ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে দেশের প্রতিটি নাগরিকের হাতে ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে স্মার্টফোন পৌঁছানো নিশ্চিত করতে হবে।’
চট্টগ্রাম অঞ্চলের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা শীর্ষক এই সভায় গভর্নর চট্টগ্রামকে দেশের ‘অর্থনৈতিক লাইফলাইন’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘প্রধান সমুদ্রবন্দর, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড), ভারী শিল্প এবং জ্বালানি অবকাঠামোর কেন্দ্রবিন্দু এই চট্টগ্রাম। সিঙ্গাপুর, দুবাই বা হংকংয়ের মতো চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সংযোগ শক্তিশালী করতে হবে। তবেই এই অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনা পুরোপুরি কাজে লাগানো সম্ভব হবে।’
আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সহজ করতে দেশের সব সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরে শিগগিরই ২৪ ঘণ্টা রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস) সিস্টেম চালু করা হবে বলে জানান গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এটি একটি তাৎক্ষণিক ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার ব্যবস্থা যা বাণিজ্যের গতি বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এ ছাড়া, তৃণমূল পর্যায়ে বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এমএমই) এবং কৃষি খাতে পর্যাপ্ত ও সহজ শর্তে ঋণ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন গভর্নর। জেলা ও তৃণমূল পর্যায়ে উৎপাদনশীল খাতের বিকাশকে ত্বরান্বিত করতে ব্যাংকগুলোকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় বিভিন্ন ব্যবসায়িক চেম্বার, ব্যাংকার, সরকারি সংস্থার প্রতিনিধি এবং শিক্ষাবিদ উপস্থিত ছিলেন।

নিশাতের ব্যবসার শুরুতে ছিল না বিশাল কোনো পুঁজি। নিজের সামান্য সঞ্চয় মাত্র ১৫০০ টাকা দিয়ে শুরু করেন কাজ। একটা শাড়ি বানিয়ে সেটা বিক্রি করেন। আবার সেই টাকা দিয়ে শুরু করেন আরেকটা নতুন কাজ। এখন সেই ব্যবসার পরিসর বেড়েছে। দিয়েছেন কারখানা, যেখানে কাজ করছেন ১৬ জন কর্মী।
২০ সেপ্টেম্বর ২০২১
দেশের একমাত্র গাড়ি প্রস্তুত ও সংযোজনকারী রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে কর্মচারীদের গ্র্যাচুইটি ফান্ড ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘ ৩৩ মাসের অবহেলায় অন্তত ৬৫ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। অথচ এই ক্ষতির দায়ে তদারকি কর্মকর্তার কাছ থেকে জরিমানা হিসেবে আদায় করা হয়েছে মাত্র ১ লাখ টাকা।
৩ ঘণ্টা আগে
দেশের উৎপাদন শিল্পের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে ভ্যাট ও করকাঠামোকে আরও যুক্তিসংগত করার দাবি তুলেছে দেশীয় পণ্যের ব্র্যান্ডিংয়ে যুক্ত উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)।
১০ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ ও ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের যে আশঙ্কাজনক উত্থান ঘটেছে, তার সবচেয়ে গুরুতর প্রভাব পড়ছে গ্রাহকের আমানতের নিরাপত্তায়। নিরাপত্তা সঞ্চিতির (প্রভিশন) বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে প্রয়োজনীয় সঞ্চিতি রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রায় গোটা ব্যাংকিং ব্যবস্থার সুরক্ষাকাঠামোই কার্যত দুর্বল...
১০ ঘণ্টা আগেসবুর শুভ, চট্টগ্রাম

দেশের একমাত্র গাড়ি প্রস্তুত ও সংযোজনকারী রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে কর্মচারীদের গ্র্যাচুইটি ফান্ড ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘ ৩৩ মাসের অবহেলায় অন্তত ৬৫ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। অথচ এই ক্ষতির দায়ে তদারকি কর্মকর্তার কাছ থেকে জরিমানা হিসেবে আদায় করা হয়েছে মাত্র ১ লাখ টাকা। বিশাল ক্ষতির বিপরীতে সামান্য দণ্ডে দায় নিষ্পত্তির ঘটনা প্রতিষ্ঠানটিতে প্রশ্ন ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
ফান্ড দেখভালের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সহপ্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ মিললেও তিনি শর্তসাপেক্ষে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে দায়িত্বমুক্ত হয়েছেন। ২৫ ডিসেম্বর তাঁর অবসর কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও তিনি গত ৩১ আগস্ট থেকে আগাম অবসরে যান। ২১ জুলাই শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) কাছে তিনি স্বেচ্ছায় অবসরের আবেদন করেন এবং তাঁর অবসর মঞ্জুর করা হয়।
এ বিষয়ে জসিম উদ্দিন বলেন, আমি প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এমপ্লয়িজ গ্র্যাচুইটি ফান্ড ট্রাস্টের সদস্য নই। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ফান্ডের দেখভাল করেছি। ডাবল বেনিফিট স্কিমের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর ভুলবশত তা রিনিউ করা হয়নি। দোষটা আসলে ব্যাংকের, বিষয়টি ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি। সে কারণে আমরা মুনাফা থেকে বঞ্চিত হয়েছি।
জসিম উদ্দিন আরও বলেন, গ্র্যাচুইটি ফান্ড পরিচালনার পূর্ণ দায় ট্রাস্টি বোর্ডের সাত সদস্যের। তারপরও আমার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে, আমি তা মোকাবিলা করেছি এবং ১ লাখ টাকা জরিমানাও গুনেছি। এটি অনিচ্ছাকৃত একটি ভুল।
প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ সূত্রে জানা যায়, কর্মচারীদের জন্য গঠিত ‘প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এমপ্লয়িজ গ্র্যাচুইটি ফান্ড ট্রাস্ট’-এর ২ কোটি টাকা ২০১২ সালের ২৪ জুলাই জনতা ব্যাংকের শেখ মুজিব রোড (আগ্রাবাদ) শাখায় ডাবল বেনিফিট স্কিমে জমা রাখা হয়। ছয় বছর মেয়াদি এ স্কিমে সুদের হার ছিল ১২ দশমিক ৬৩ শতাংশ। মেয়াদ শেষে ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই সুদে-আসলে টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ কোটি ৭৯ লাখ ৫৮ হাজার টাকা।
কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৩৩ মাস ওই অর্থ একইভাবে ব্যাংকে পড়ে থাকে। এ সময়ে না প্রগতি কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নেয়, না ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ফান্ডের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়। এতে সম্ভাব্য মুনাফা হারিয়ে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হয় ৯৩ লাখ ৯৪ হাজার ৬১০ টাকা।
ঘটনাটি ধরা পড়ার পর ফান্ড তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। ২০২৩ সালের ১ মার্চ দেওয়া তাঁর ব্যাখ্যা কর্তৃপক্ষ গ্রহণযোগ্য মনে করেনি। পরবর্তী সময়ে ১১ এপ্রিল প্রগতির তিন কর্মকর্তাকে নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন বিভাগীয় প্রশাসনিক প্রধান মো. নুর হোসেন। সদস্য হিসেবে ছিলেন সহপ্রধান হিসাবরক্ষক গোলাম রাব্বি মোহাম্মদ সাদাত হোসেন এবং হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. খায়রুল বাশার।
তদন্ত কমিটির সুপারিশে জনতা ব্যাংকের কাছে ৩৩ মাসের মুনাফা দাবি করা হয়। দেনদরবারের পর ব্যাংক সঞ্চয়ী বেনিফিটের আওতায় ২৮ লাখ টাকা পরিশোধ করে। জসিম উদ্দিনের কাছ থেকে আদায় করা জরিমানার ১ লাখ টাকা যোগ করে মোট উদ্ধার হয় ২৯ লাখ টাকা। ফলে এখনো অনাদায়ী থেকে যায় ৬৪ লাখ ৯৪ হাজার ৬১০ টাকা।
এ বিষয়ে জনতা ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার ব্যবস্থাপক মো. সানাউল্লাহ বলেন, ডাবল বেনিফিট স্কিমের মেয়াদ শেষে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নবায়ন হয় না। এ কারণে ওই সময়ের বেনিফিট পাওয়ার সুযোগ ছিল না। ২৮ লাখ টাকা পরিশোধের বিষয়ে তিনি জানান, বিষয়টি তাঁর আগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপকের সময়কার সিদ্ধান্ত।

দেশের একমাত্র গাড়ি প্রস্তুত ও সংযোজনকারী রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে কর্মচারীদের গ্র্যাচুইটি ফান্ড ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘ ৩৩ মাসের অবহেলায় অন্তত ৬৫ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। অথচ এই ক্ষতির দায়ে তদারকি কর্মকর্তার কাছ থেকে জরিমানা হিসেবে আদায় করা হয়েছে মাত্র ১ লাখ টাকা। বিশাল ক্ষতির বিপরীতে সামান্য দণ্ডে দায় নিষ্পত্তির ঘটনা প্রতিষ্ঠানটিতে প্রশ্ন ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
ফান্ড দেখভালের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সহপ্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ মিললেও তিনি শর্তসাপেক্ষে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে দায়িত্বমুক্ত হয়েছেন। ২৫ ডিসেম্বর তাঁর অবসর কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও তিনি গত ৩১ আগস্ট থেকে আগাম অবসরে যান। ২১ জুলাই শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) কাছে তিনি স্বেচ্ছায় অবসরের আবেদন করেন এবং তাঁর অবসর মঞ্জুর করা হয়।
এ বিষয়ে জসিম উদ্দিন বলেন, আমি প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এমপ্লয়িজ গ্র্যাচুইটি ফান্ড ট্রাস্টের সদস্য নই। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ফান্ডের দেখভাল করেছি। ডাবল বেনিফিট স্কিমের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর ভুলবশত তা রিনিউ করা হয়নি। দোষটা আসলে ব্যাংকের, বিষয়টি ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি। সে কারণে আমরা মুনাফা থেকে বঞ্চিত হয়েছি।
জসিম উদ্দিন আরও বলেন, গ্র্যাচুইটি ফান্ড পরিচালনার পূর্ণ দায় ট্রাস্টি বোর্ডের সাত সদস্যের। তারপরও আমার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে, আমি তা মোকাবিলা করেছি এবং ১ লাখ টাকা জরিমানাও গুনেছি। এটি অনিচ্ছাকৃত একটি ভুল।
প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ সূত্রে জানা যায়, কর্মচারীদের জন্য গঠিত ‘প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এমপ্লয়িজ গ্র্যাচুইটি ফান্ড ট্রাস্ট’-এর ২ কোটি টাকা ২০১২ সালের ২৪ জুলাই জনতা ব্যাংকের শেখ মুজিব রোড (আগ্রাবাদ) শাখায় ডাবল বেনিফিট স্কিমে জমা রাখা হয়। ছয় বছর মেয়াদি এ স্কিমে সুদের হার ছিল ১২ দশমিক ৬৩ শতাংশ। মেয়াদ শেষে ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই সুদে-আসলে টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ কোটি ৭৯ লাখ ৫৮ হাজার টাকা।
কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৩৩ মাস ওই অর্থ একইভাবে ব্যাংকে পড়ে থাকে। এ সময়ে না প্রগতি কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নেয়, না ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ফান্ডের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়। এতে সম্ভাব্য মুনাফা হারিয়ে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হয় ৯৩ লাখ ৯৪ হাজার ৬১০ টাকা।
ঘটনাটি ধরা পড়ার পর ফান্ড তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। ২০২৩ সালের ১ মার্চ দেওয়া তাঁর ব্যাখ্যা কর্তৃপক্ষ গ্রহণযোগ্য মনে করেনি। পরবর্তী সময়ে ১১ এপ্রিল প্রগতির তিন কর্মকর্তাকে নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন বিভাগীয় প্রশাসনিক প্রধান মো. নুর হোসেন। সদস্য হিসেবে ছিলেন সহপ্রধান হিসাবরক্ষক গোলাম রাব্বি মোহাম্মদ সাদাত হোসেন এবং হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. খায়রুল বাশার।
তদন্ত কমিটির সুপারিশে জনতা ব্যাংকের কাছে ৩৩ মাসের মুনাফা দাবি করা হয়। দেনদরবারের পর ব্যাংক সঞ্চয়ী বেনিফিটের আওতায় ২৮ লাখ টাকা পরিশোধ করে। জসিম উদ্দিনের কাছ থেকে আদায় করা জরিমানার ১ লাখ টাকা যোগ করে মোট উদ্ধার হয় ২৯ লাখ টাকা। ফলে এখনো অনাদায়ী থেকে যায় ৬৪ লাখ ৯৪ হাজার ৬১০ টাকা।
এ বিষয়ে জনতা ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার ব্যবস্থাপক মো. সানাউল্লাহ বলেন, ডাবল বেনিফিট স্কিমের মেয়াদ শেষে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নবায়ন হয় না। এ কারণে ওই সময়ের বেনিফিট পাওয়ার সুযোগ ছিল না। ২৮ লাখ টাকা পরিশোধের বিষয়ে তিনি জানান, বিষয়টি তাঁর আগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপকের সময়কার সিদ্ধান্ত।

নিশাতের ব্যবসার শুরুতে ছিল না বিশাল কোনো পুঁজি। নিজের সামান্য সঞ্চয় মাত্র ১৫০০ টাকা দিয়ে শুরু করেন কাজ। একটা শাড়ি বানিয়ে সেটা বিক্রি করেন। আবার সেই টাকা দিয়ে শুরু করেন আরেকটা নতুন কাজ। এখন সেই ব্যবসার পরিসর বেড়েছে। দিয়েছেন কারখানা, যেখানে কাজ করছেন ১৬ জন কর্মী।
২০ সেপ্টেম্বর ২০২১
বাংলাদেশকে একটি ডিজিটাল ও নগদ লেনদেনমুক্ত (ক্যাশলেস) রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বড় ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে দেশের প্রথম ‘ক্যাশলেস’ জেলা হিসেবে ঘোষণা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে
দেশের উৎপাদন শিল্পের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে ভ্যাট ও করকাঠামোকে আরও যুক্তিসংগত করার দাবি তুলেছে দেশীয় পণ্যের ব্র্যান্ডিংয়ে যুক্ত উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)।
১০ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ ও ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের যে আশঙ্কাজনক উত্থান ঘটেছে, তার সবচেয়ে গুরুতর প্রভাব পড়ছে গ্রাহকের আমানতের নিরাপত্তায়। নিরাপত্তা সঞ্চিতির (প্রভিশন) বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে প্রয়োজনীয় সঞ্চিতি রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রায় গোটা ব্যাংকিং ব্যবস্থার সুরক্ষাকাঠামোই কার্যত দুর্বল...
১০ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশের উৎপাদন শিল্পের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে ভ্যাট ও করকাঠামোকে আরও যুক্তিসংগত করার দাবি তুলেছে দেশীয় পণ্যের ব্র্যান্ডিংয়ে যুক্ত উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। পাশাপাশি, সকল শিল্প এলাকায় গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহকে নিরবচ্ছিন্ন ও টেকসই করতে আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে উৎপাদন কার্যক্রম বাধাহীনভাবে চলতে পারে।
গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত ৩৯তম বার্ষিক সাধারণ সভায় তাঁরা বলেন, উৎপাদনশীলতা বাড়ানো, শিল্পের প্রতিযোগিতা বজায় রাখা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য এই পদক্ষেপগুলো নেওয়া অত্যাবশ্যক।
সভায় বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) সভাপতির বক্তব্যে বলেন, দেশের উৎপাদনশীল শিল্পকে শক্তিশালী রাখতে সরবরাহ শৃঙ্খল ঠিক রাখা, সুষ্ঠু উৎপাদন ও কার্যক্রম নিশ্চিত করতে মসৃণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া প্রয়োজন। আয়বৈষম্য কমানো এবং টেকসই এমএসএমই খাতের উন্নয়নের জন্য সরকার, শিক্ষাবিদ ও শিল্পের যৌথ উদ্যোগ অপরিহার্য। বিসিআই সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে শিল্পের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে কাজ করছে, যাতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়, শিল্প প্রতিযোগিতামূলক থাকে এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।
সভায় ব্যবসায়ীরা বলেন, ভ্যাট ও করকাঠামো সহজ, উদ্যোক্তাবান্ধব ও উৎপাদন শিল্পের প্রবৃদ্ধিকে লক্ষ্য করেই তৈরি হওয়া উচিত। তাঁরা আরও বলেন, পণ্য টেস্টিং এবং সার্টিফিকেশন প্রক্রিয়াকে উদ্যোক্তাবান্ধব করা, নতুন উদ্যোক্তা ও স্টার্টআপের সরকারি সহায়তা নিশ্চিত করা জরুরি। এসব পদক্ষেপ দেশীয় শিল্পে নতুন বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করবে, উৎপাদনশীলতা ও প্রতিযোগিতা ধরে রাখবে।
সভায় শোকপ্রস্তাব গ্রহণ করা হয় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি, প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী এবং সাবেক সভাপতি এ টি এম ওয়াজিউল্লাহর জন্য। এক মিনিট নীরবতা পালন করে তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়। সভা পরিচালনা করেন বিসিআই সেক্রেটারি জেনারেল ড. মো. হেলাল উদ্দিন। সভার আলোচ্যসূচি অনুযায়ী, বিগত ৩৮তম সাধারণ সভার কার্যবিবরণী অনুমোদন করা হয়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বিসিআই কার্যক্রম ও দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য অডিটেড হিসাব অনুমোদন এবং নতুন অডিটর নিয়োগের বিষয়ও অনুমোদিত হয়। সভায় অংশ নেন বিসিআই সদস্য ও সাবেক নেতা শাহেদুল ইসলামসহ অন্য সদস্যরা।

দেশের উৎপাদন শিল্পের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে ভ্যাট ও করকাঠামোকে আরও যুক্তিসংগত করার দাবি তুলেছে দেশীয় পণ্যের ব্র্যান্ডিংয়ে যুক্ত উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। পাশাপাশি, সকল শিল্প এলাকায় গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহকে নিরবচ্ছিন্ন ও টেকসই করতে আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে উৎপাদন কার্যক্রম বাধাহীনভাবে চলতে পারে।
গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত ৩৯তম বার্ষিক সাধারণ সভায় তাঁরা বলেন, উৎপাদনশীলতা বাড়ানো, শিল্পের প্রতিযোগিতা বজায় রাখা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য এই পদক্ষেপগুলো নেওয়া অত্যাবশ্যক।
সভায় বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) সভাপতির বক্তব্যে বলেন, দেশের উৎপাদনশীল শিল্পকে শক্তিশালী রাখতে সরবরাহ শৃঙ্খল ঠিক রাখা, সুষ্ঠু উৎপাদন ও কার্যক্রম নিশ্চিত করতে মসৃণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া প্রয়োজন। আয়বৈষম্য কমানো এবং টেকসই এমএসএমই খাতের উন্নয়নের জন্য সরকার, শিক্ষাবিদ ও শিল্পের যৌথ উদ্যোগ অপরিহার্য। বিসিআই সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে শিল্পের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে কাজ করছে, যাতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়, শিল্প প্রতিযোগিতামূলক থাকে এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।
সভায় ব্যবসায়ীরা বলেন, ভ্যাট ও করকাঠামো সহজ, উদ্যোক্তাবান্ধব ও উৎপাদন শিল্পের প্রবৃদ্ধিকে লক্ষ্য করেই তৈরি হওয়া উচিত। তাঁরা আরও বলেন, পণ্য টেস্টিং এবং সার্টিফিকেশন প্রক্রিয়াকে উদ্যোক্তাবান্ধব করা, নতুন উদ্যোক্তা ও স্টার্টআপের সরকারি সহায়তা নিশ্চিত করা জরুরি। এসব পদক্ষেপ দেশীয় শিল্পে নতুন বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করবে, উৎপাদনশীলতা ও প্রতিযোগিতা ধরে রাখবে।
সভায় শোকপ্রস্তাব গ্রহণ করা হয় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি, প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী এবং সাবেক সভাপতি এ টি এম ওয়াজিউল্লাহর জন্য। এক মিনিট নীরবতা পালন করে তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়। সভা পরিচালনা করেন বিসিআই সেক্রেটারি জেনারেল ড. মো. হেলাল উদ্দিন। সভার আলোচ্যসূচি অনুযায়ী, বিগত ৩৮তম সাধারণ সভার কার্যবিবরণী অনুমোদন করা হয়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বিসিআই কার্যক্রম ও দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য অডিটেড হিসাব অনুমোদন এবং নতুন অডিটর নিয়োগের বিষয়ও অনুমোদিত হয়। সভায় অংশ নেন বিসিআই সদস্য ও সাবেক নেতা শাহেদুল ইসলামসহ অন্য সদস্যরা।

নিশাতের ব্যবসার শুরুতে ছিল না বিশাল কোনো পুঁজি। নিজের সামান্য সঞ্চয় মাত্র ১৫০০ টাকা দিয়ে শুরু করেন কাজ। একটা শাড়ি বানিয়ে সেটা বিক্রি করেন। আবার সেই টাকা দিয়ে শুরু করেন আরেকটা নতুন কাজ। এখন সেই ব্যবসার পরিসর বেড়েছে। দিয়েছেন কারখানা, যেখানে কাজ করছেন ১৬ জন কর্মী।
২০ সেপ্টেম্বর ২০২১
বাংলাদেশকে একটি ডিজিটাল ও নগদ লেনদেনমুক্ত (ক্যাশলেস) রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বড় ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে দেশের প্রথম ‘ক্যাশলেস’ জেলা হিসেবে ঘোষণা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে
দেশের একমাত্র গাড়ি প্রস্তুত ও সংযোজনকারী রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে কর্মচারীদের গ্র্যাচুইটি ফান্ড ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘ ৩৩ মাসের অবহেলায় অন্তত ৬৫ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। অথচ এই ক্ষতির দায়ে তদারকি কর্মকর্তার কাছ থেকে জরিমানা হিসেবে আদায় করা হয়েছে মাত্র ১ লাখ টাকা।
৩ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ ও ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের যে আশঙ্কাজনক উত্থান ঘটেছে, তার সবচেয়ে গুরুতর প্রভাব পড়ছে গ্রাহকের আমানতের নিরাপত্তায়। নিরাপত্তা সঞ্চিতির (প্রভিশন) বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে প্রয়োজনীয় সঞ্চিতি রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রায় গোটা ব্যাংকিং ব্যবস্থার সুরক্ষাকাঠামোই কার্যত দুর্বল...
১০ ঘণ্টা আগেজয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ ও ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের যে আশঙ্কাজনক উত্থান ঘটেছে, তার সবচেয়ে গুরুতর প্রভাব পড়ছে গ্রাহকের আমানতের নিরাপত্তায়। নিরাপত্তা সঞ্চিতির (প্রভিশন) বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে প্রয়োজনীয় সঞ্চিতি রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রায় গোটা ব্যাংকিং ব্যবস্থার সুরক্ষাকাঠামোই কার্যত দুর্বল হয়ে পড়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই ঘাটতি অব্যাহত থাকলে ব্যাংকিং খাতের সংকট কেবল সংখ্যার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না; বরং এর প্রভাব সরাসরি গিয়ে পড়বে সাধারণ গ্রাহকের আমানতের সুরক্ষার ওপর, যা দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য বড় ঝুঁকির বার্তা দিচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে মোট ২৪টি ব্যাংকে প্রয়োজনীয় সঞ্চিতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা। বিপরীতে এসব ব্যাংক রাখতে পেরেছে মাত্র ১ লাখ ৩০ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা। এতে সম্মিলিত সঞ্চিতি ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা।
এক বছর আগের সেপ্টেম্বরে প্রভিশন ঘাটতি ছিল ৫৬ হাজার ৩৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে মাত্র এক বছরের ব্যবধানে ঘাটতি বেড়েছে প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকা (২ লাখ ৯৩ হাজার ৮২৩ কোটি)। ব্যাংকিং খাতসংশ্লিষ্টদের মতে, এই প্রবণতা স্বাভাবিক কোনো আর্থিক চক্রের ফল নয়; এটি দীর্ঘদিন ধরে আড়াল করে রাখা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের প্রকৃত চিত্র সামনে আসার পরিণতি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকারের পালাবদলের পর ব্যাংকিং খাতে পুনর্গঠিত, পুনঃ তফসিলকৃত, অবলোপনকৃত ও আদালতে আটকে থাকা ঋণসহ মোট ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ দ্রুত বেড়েছে। বর্তমানে এসব ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের মোট অঙ্ক প্রায় সাড়ে ১০ লাখ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা এবং মন্দমানের কুঋণ ৫ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা, যার বিপরীতে শতভাগ প্রভিশন সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি মানে সরাসরি আমানতকারীর ঝুঁকি। তাঁর মতে, গ্রাহকের আমানতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই প্রভিশন রাখা বাধ্যতামূলক। কিন্তু অনেক ব্যাংক এমন অবস্থায় আছে, তারা ন্যূনতম সঞ্চিতিও গড়ে তুলতে পারছে না। এই পরিস্থিতিতে সময়মতো প্রভিশন না রাখতে পারলে সেই ব্যাংকের ঋণ কার্যক্রম সীমিত বা বন্ধ হওয়া উচিত।
ব্যাংকিং বিধি অনুযায়ী, সাধারণ শ্রেণির ঋণের বিপরীতে শূন্য দশমিক ৫ থেকে ৫ শতাংশ, নিম্নমানের খেলাপি ঋণের বিপরীতে ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক ঋণের বিপরীতে ৫০ শতাংশ এবং মন্দ বা লোকসান শ্রেণির খেলাপি ঋণের বিপরীতে শতভাগ প্রভিশন রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু ঋণ আদায়ে ব্যর্থতা, কম আমানত প্রবৃদ্ধি এবং সামগ্রিক আর্থিক সংকটে ব্যাংকগুলোর সেই সক্ষমতা ক্রমেই সংকুচিত হয়ে পড়ছে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, খেলাপি ও ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের দ্রুত বৃদ্ধিই প্রভিশন ঘাটতির মূল কারণ। সরকারের পালাবদলের পর এসব ঝুঁকি প্রকাশ্যে আসায় ব্যাংকিং খাতের ভেতরের দুর্বলতা স্পষ্ট হয়েছে।
ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতি পরিস্থিতি মোকাবিলায় এখন বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী ডাইনামিক প্রভিশনিং চালুর পরিকল্পনা নিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, এই ডাইনামিক প্রভিশনিং চালু হলে ব্যাংকের সক্ষমতা বাড়বে, মূলধনের চাপ কমবে এবং কুঋণ হ্রাস পেলে প্রভিশন ঘাটতিও কমে আসবে।

দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ ও ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের যে আশঙ্কাজনক উত্থান ঘটেছে, তার সবচেয়ে গুরুতর প্রভাব পড়ছে গ্রাহকের আমানতের নিরাপত্তায়। নিরাপত্তা সঞ্চিতির (প্রভিশন) বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে প্রয়োজনীয় সঞ্চিতি রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রায় গোটা ব্যাংকিং ব্যবস্থার সুরক্ষাকাঠামোই কার্যত দুর্বল হয়ে পড়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই ঘাটতি অব্যাহত থাকলে ব্যাংকিং খাতের সংকট কেবল সংখ্যার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না; বরং এর প্রভাব সরাসরি গিয়ে পড়বে সাধারণ গ্রাহকের আমানতের সুরক্ষার ওপর, যা দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য বড় ঝুঁকির বার্তা দিচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে মোট ২৪টি ব্যাংকে প্রয়োজনীয় সঞ্চিতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা। বিপরীতে এসব ব্যাংক রাখতে পেরেছে মাত্র ১ লাখ ৩০ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা। এতে সম্মিলিত সঞ্চিতি ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা।
এক বছর আগের সেপ্টেম্বরে প্রভিশন ঘাটতি ছিল ৫৬ হাজার ৩৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে মাত্র এক বছরের ব্যবধানে ঘাটতি বেড়েছে প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকা (২ লাখ ৯৩ হাজার ৮২৩ কোটি)। ব্যাংকিং খাতসংশ্লিষ্টদের মতে, এই প্রবণতা স্বাভাবিক কোনো আর্থিক চক্রের ফল নয়; এটি দীর্ঘদিন ধরে আড়াল করে রাখা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের প্রকৃত চিত্র সামনে আসার পরিণতি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকারের পালাবদলের পর ব্যাংকিং খাতে পুনর্গঠিত, পুনঃ তফসিলকৃত, অবলোপনকৃত ও আদালতে আটকে থাকা ঋণসহ মোট ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ দ্রুত বেড়েছে। বর্তমানে এসব ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের মোট অঙ্ক প্রায় সাড়ে ১০ লাখ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা এবং মন্দমানের কুঋণ ৫ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা, যার বিপরীতে শতভাগ প্রভিশন সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি মানে সরাসরি আমানতকারীর ঝুঁকি। তাঁর মতে, গ্রাহকের আমানতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই প্রভিশন রাখা বাধ্যতামূলক। কিন্তু অনেক ব্যাংক এমন অবস্থায় আছে, তারা ন্যূনতম সঞ্চিতিও গড়ে তুলতে পারছে না। এই পরিস্থিতিতে সময়মতো প্রভিশন না রাখতে পারলে সেই ব্যাংকের ঋণ কার্যক্রম সীমিত বা বন্ধ হওয়া উচিত।
ব্যাংকিং বিধি অনুযায়ী, সাধারণ শ্রেণির ঋণের বিপরীতে শূন্য দশমিক ৫ থেকে ৫ শতাংশ, নিম্নমানের খেলাপি ঋণের বিপরীতে ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক ঋণের বিপরীতে ৫০ শতাংশ এবং মন্দ বা লোকসান শ্রেণির খেলাপি ঋণের বিপরীতে শতভাগ প্রভিশন রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু ঋণ আদায়ে ব্যর্থতা, কম আমানত প্রবৃদ্ধি এবং সামগ্রিক আর্থিক সংকটে ব্যাংকগুলোর সেই সক্ষমতা ক্রমেই সংকুচিত হয়ে পড়ছে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, খেলাপি ও ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের দ্রুত বৃদ্ধিই প্রভিশন ঘাটতির মূল কারণ। সরকারের পালাবদলের পর এসব ঝুঁকি প্রকাশ্যে আসায় ব্যাংকিং খাতের ভেতরের দুর্বলতা স্পষ্ট হয়েছে।
ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতি পরিস্থিতি মোকাবিলায় এখন বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী ডাইনামিক প্রভিশনিং চালুর পরিকল্পনা নিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, এই ডাইনামিক প্রভিশনিং চালু হলে ব্যাংকের সক্ষমতা বাড়বে, মূলধনের চাপ কমবে এবং কুঋণ হ্রাস পেলে প্রভিশন ঘাটতিও কমে আসবে।

নিশাতের ব্যবসার শুরুতে ছিল না বিশাল কোনো পুঁজি। নিজের সামান্য সঞ্চয় মাত্র ১৫০০ টাকা দিয়ে শুরু করেন কাজ। একটা শাড়ি বানিয়ে সেটা বিক্রি করেন। আবার সেই টাকা দিয়ে শুরু করেন আরেকটা নতুন কাজ। এখন সেই ব্যবসার পরিসর বেড়েছে। দিয়েছেন কারখানা, যেখানে কাজ করছেন ১৬ জন কর্মী।
২০ সেপ্টেম্বর ২০২১
বাংলাদেশকে একটি ডিজিটাল ও নগদ লেনদেনমুক্ত (ক্যাশলেস) রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বড় ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে দেশের প্রথম ‘ক্যাশলেস’ জেলা হিসেবে ঘোষণা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে
দেশের একমাত্র গাড়ি প্রস্তুত ও সংযোজনকারী রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে কর্মচারীদের গ্র্যাচুইটি ফান্ড ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘ ৩৩ মাসের অবহেলায় অন্তত ৬৫ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। অথচ এই ক্ষতির দায়ে তদারকি কর্মকর্তার কাছ থেকে জরিমানা হিসেবে আদায় করা হয়েছে মাত্র ১ লাখ টাকা।
৩ ঘণ্টা আগে
দেশের উৎপাদন শিল্পের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে ভ্যাট ও করকাঠামোকে আরও যুক্তিসংগত করার দাবি তুলেছে দেশীয় পণ্যের ব্র্যান্ডিংয়ে যুক্ত উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)।
১০ ঘণ্টা আগে