Ajker Patrika

ফ্লোর প্রাইস উঠল ১৬৯ সিকিউরিটিজের, সতর্ক বাজারসংশ্লিষ্টরা  

আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২২, ০০: ২৮
ফ্লোর প্রাইস উঠল ১৬৯ সিকিউরিটিজের, সতর্ক বাজারসংশ্লিষ্টরা  

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১৬৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইস তুলে নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

ফ্লোর প্রাইস তোলার ক্ষেত্রে এসব সিকিউরিটিজকে বেছে নেওয়ার যে কারণ বলা হয়েছে, তাতে স্পষ্ট যে প্রভাব বুঝতে পরীক্ষামূলকভাবে এটা করা হয়েছে। তবে এই উদ্যোগের প্রভাব বাজারে সামগ্রিকভাবে কতটুকু পড়বে তা নিয়ে সতর্ক মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

আজ বুধবার বিএসইসির নিয়মিত সভায় নেওয়া এ সিদ্ধান্ত আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর করা হবে বলে এক নির্দেশনায় জানানো হয়েছে। অর্থাৎ আগামীকাল এসব সিকিউরিটিজের লেনদেনে ফ্লোর প্রাইস থাকবে না।

বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া ১৬৯টি সিকিউরিটিজের মধ্যে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পাশাপাশি মিউচুয়াল ফান্ডও রয়েছে। ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হলেও এসব শেয়ার ও ইউনিটের দাম এক দিনে আগের দিনের সমাপনী দরের চেয়ে ১ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না। তবে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে আগের সীমা বহাল আছে অর্থাৎ একদিনে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বাড়তে পারবে।

বাছাই করা ১৬৯টি সিকিউরিটিজের এ তালিকায় কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট রয়েছে। অন্য কোম্পানির শেয়ার বা ইউনিটের ক্ষেত্রে আগের মতই ফ্লোরপ্রাইস ও সার্কিট ব্রেকারের নিয়ম বহাল থাকবে।

তালিকা পর্যালোচনায় দেখা যায়, যে ১৬৯ সিকিউরিটিজের ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগ তেমন ভালো কোম্পানি নয়। এর মধ্যে বেশি আছে বস্ত্র ও ইন্সুরেন্স খাতের শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট।

কোম্পানি বাছাই নিয়ে বিএসইসির মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক গণমাধ্যমে বলেছেন, বাজারে লেনদেন কম হওয়া, লেনদেনে যাদের অংশ তুলনামূলক অনেক কম এবং ফ্লোরপ্রাইস তুলে দিলে পুঁজিবাজারে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব পড়বে না এমন ক্যাটাগরি থেকে তালিকাটি করা হয়েছে।

তবে বিএসইসির এমন সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা বুঝে উঠতে পারছেন না বাজারসংশ্লিষ্টদের অনেকে। বাজারের যেসব কোম্পানির প্রভাব নেই সেগুলোর ফ্লোর প্রাইস তুলে দিয়ে আদৌ সুফল মিলবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে।

নাম প্রকাশ না করে এক ব্রোকারেজ হাউজের এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিএসইসির এই নির্দেশনায় কোম্পানি বাছাইয়ের যৌক্তিকতা স্পষ্ট হয়নি। নির্দেশনার মধ্যে এবিষয়ে একটি ব্যাখ্যা থাকা দরকার ছিল।’

ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তের ফল ভালো না মন্দ হবে তা এই মুহূর্তে বলা আছে না। এসইসি নিজেও এখন বলতে পারবে না, তাঁরাও পরীক্ষামূলকভাবে এটা করছে। তবে দীর্ঘদিন ধরে বাজার স্থবির হয়ে আছে, লেনদেন কমে যাচ্ছে; বড় বিনিয়োগকারীরা আসছে না। এখন ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার ফলে দুই-তিন দিন দাম কমার পর বড় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার কেনার আগ্রহ তৈরি হবে। তাতে বাজারে একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।’

তবে পুঁজিবাজারে সব সময় নিয়ন্ত্রণের ফল ভালো হয় না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘নিয়ন্ত্রক সংস্থা হয়তো বাজারের ভালোর জন্যই একসময় ফ্লোর প্রাইস আরোপ করেছিল। এখন তাঁরা বুঝতে পারছেন যে এটার পরিবর্তন দরকার। তাই হয়তো এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৬৫৮টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড, ট্রেজারি বন্ড, করপোরেট বন্ড ও কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। গত ২৮ জুলাই থেকে দ্বিতীয় দফার ফ্লোর প্রাইসের কারণে এসব শেয়ারের দর এখন সর্বনিম্ন একটা সীমা পর্যন্ত নামতে পারে।

বৈশ্বিক অর্থনীতির অর্থনীতির অস্থিতিশীলতার মধ্যে পুঁজিবাজারে টানা দরপতন শুরু হলে দেশের অর্থনীতির জন্য সতর্ক পদক্ষেপ হিসেবে গত ২৮ জুলাই ফ্লোরপ্রাইস আরোপ করা হয়। এটা নিয়ে শুরু থেকেই সমালোচনা করছেন বাজারসংশ্লিষ্ট একটি অংশ। এবার তোলার সময় লেনদেন কমে যাওয়ায় প্রেক্ষাপটে তা তুলে নেওয়ার কথা বলেছেন সংস্থার কর্মকর্তারা।

করোনা মহামারী শুরু পর বাজারে ধস ঠেকাতে ২০২০ সালের ১৯ মার্চ প্রথম ফ্লোর প্রাইস চালু করা হয়। পরে তা কয়েক ধাপে তালিকা করে তুলে নেওয়া হয়।

কয়েকমাস ধরে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ সিকিউরিটিজের দর ফ্লোর প্রাইসে নেমে আসে। তাতে এসব প্রতিষ্ঠানের লেনদেন একপ্রকার বন্ধ হয়ে গিয়ে বাজারের লেনদেন কমে যায়। এমন পরিস্থিতিতে বাজারসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষ ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল। 

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যেসব সিকিউরিটিজের ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়েছে সম্মিলিতভাবে তা মোট মূলধনের ৫ শতাংশের বেশি নয়। তাই এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমলেও তার বড় ধরনের কোনো প্রভাব সূচকে পড়বে না।

ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া ১৬৯ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের তালিক দেখুন:-

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও কর্মীদের সাফল্য উদ্‌যাপনে আবুল খায়ের স্টিলের ‘একেএস-একসাথে আগামীর পথে’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ইস্পাত উৎপাদনক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান আবুল খায়ের স্টিল (একেএস) ৬ ডিসেম্বর তাদের সব কর্মীকে নিয়ে ‘একেএস-একসাথে আগামীর পথে’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। দিনব্যাপী এই উৎসবমুখর ও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে দেশের প্রতিটি স্থান থেকে আবুল খায়ের স্টিলের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।

সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। নামাজ ও খাবারের বিরতির পর একেএসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সবার উদ্দেশে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য দেন। বক্তব্যে কোম্পানির সাম্প্রতিক অর্জন ও মাইলফলকগুলো তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে—দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী রড একেএস টিএমটি বি৭০০ সি-আরের সফল উৎপাদন। বিশ্বের দ্রুততম রোলিং মিল স্থাপন। একেএস এবং কাউ ব্র্যান্ড কালার কোটেড স্টিলের মর্যাদাপূর্ণ সুপারব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন।

এই আলোচনায় প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং কর্মীদের সম্মিলিত সাফল্যের প্রতিচ্ছবিও উঠে আসে।

সন্ধ্যায় আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র‍্যাফেল ড্র পর্বটি উদ্‌যাপনকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কিংবদন্তি শিল্পী জেমসের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা ও লেজার শো উপস্থিত সবাইকে মাতিয়ে রাখে।

সমাপনী ভাষণে একেএস পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান হয়। এরপর নৈশভোজ ও ডিজে সেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা পরিষদের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার (৮ ডসিম্বের) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম জুবায়দুর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন।

সভায় এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম, এফসিএ, এফসিএস, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মাসুদ রহমান, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. আবদুল জলিল, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন, শরী’আহ সুপারভাইজরি কাউন্সলিরে সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আব্দুস সামাদ এবং কোম্পানি সেক্রেটারি মো. হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্যাংকের নিট মুনাফা ছাড়া উৎসাহ বোনাস বন্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি

কর ও সঞ্চিতি সংরক্ষণের পর নিট মুনাফা অর্জন না করলে কোনো ব্যাংকই আর উৎসাহ বোনাস দিতে পারবে না। পাশাপাশি মূলধন সংরক্ষণ ঘাটতি, প্রভিশন ঘাটতি বা পুঞ্জীভূত মুনাফা থেকেই বোনাস দেওয়ার পথও পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ-সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে সব ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে।

সার্কুলারে বলা হয়, ব্যাংকিং খাতের বর্তমান পরিস্থিতিতে আনরিয়েলাইজড বা নগদায়ন না করা আয়ের ভিত্তিতে বোনাস দেওয়া আর্থিক শৃঙ্খলা ও সুশাসনের পরিপন্থী। তাই এখন থেকে শুধু নির্ধারিত নিট মুনাফা অর্জন করতে পারলেই উৎসাহ বোনাস দেওয়ার অনুমতি পাবে ব্যাংকগুলো।

আরও বলা হয়, পুঞ্জীভূত মুনাফা থেকে কোনো ধরনের উৎসাহ বোনাস দেওয়া যাবে না। রেগুলেটরি মূলধন বা প্রভিশনের ঘাটতি থাকলে বোনাস দেওয়া নিষিদ্ধ। প্রভিশন সংরক্ষণে বাড়তি সময় পাওয়া ব্যাংকগুলোও সেই সময়কাল মুনাফা হিসাবের ক্ষেত্রে দেখাতে পারবে না। বোনাস প্রদানে ব্যাংকগুলোকে বিভিন্ন কর্মসূচির উন্নতি ও খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধারে দৃশ্যমান সাফল্য বিবেচনায় নিতে হবে।

এদিকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের ক্ষেত্রে সরকারের বিদ্যমান নির্দেশিকা কার্যকর থাকবে, যেখানে নিট মুনাফা ছাড়া বোনাস না দেওয়ার কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। তবে কোনো ব্যাংক নির্দিষ্ট সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে বিশেষ বোনাসের জন্য আবেদন করতে পারবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এক ক্লিকেই ভ্যাট পরিশোধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ০৩
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত

ভ্যাটব্যবস্থাকে পুরোপুরি ডিজিটাল ও সহজ করার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক নতুন পর্যায়ে এগোচ্ছে। মাত্র একটি ক্লিকেই ভ্যাট পরিশোধের সুযোগ ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে এবং বড় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এটি ব্যবহারও শুরু করেছে।

এনবিআর জানিয়েছে, শিগগির এ পদ্ধতি সারা দেশে চালু করা হবে, যাতে সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভ্যাটের আওতায় আসে এবং নিবন্ধন ছাড়া আর কেউ ব্যবসা চালাতে না পারে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

মো. আবদুর রহমান বলেন, দেশের বড় একটি অংশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এখনো ভ্যাট নিবন্ধনের বাইরে রয়েছে। আগামী বছর এমন একটি মেকানিজম চালু করা হবে, যার মাধ্যমে ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়া ব্যবসার সুযোগ থাকবে না। বর্তমানে নিবন্ধিত ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠান ৬ লাখ ৪৪ হাজার; লক্ষ্য আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে তা ৩০ থেকে ৪০ লাখে উন্নীত করা। শুধু চলতি মাসেই ১ লাখ নতুন প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।

এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, ভ্যাট দিবসের প্রতিপাদ্য—‘সময়মতো নিবন্ধন নিব, সঠিকভাবে ভ্যাট দিব’—ধরে আগামীকাল বুধবার সারা দেশে ভ্যাট দিবস পালিত হবে। ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর চলবে ভ্যাট সপ্তাহ। তবে নীতিমালা চূড়ান্ত না হওয়ায় এ বছরও স্থগিত থাকছে ভ্যাট পুরস্কার।

রিটার্ন জমাদানেও বড় পরিবর্তন আসছে বলে জানান মো. আবদুর রহমান খান। গত অর্থবছরে ১৭ লাখ ই-রিটার্ন জমা পড়লেও চলতি অর্থবছরে তা ৪০ লাখে পৌঁছানোর আশা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে জমা পড়েছে ২২ লাখ রিটার্ন। ভ্যাট আদায়েও গতি এসেছে—গত অর্থবছরে মোট রাজস্বের ৩৮ শতাংশ এসেছে ভ্যাট থেকে আর চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসেই ভ্যাট আদায় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ২২ শতাংশ।

করদাতাদের ঝামেলা কমাতে ই-রিটার্নে ব্যবহৃত ব্যাংকসংক্রান্ত চারটি তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাচাইয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান আবদুর রহমান।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, করদাতারা মনে করেন, রাজস্ব কর্মকর্তারা এসব তথ্য দেখতে পারবেন—এটি ভুল ধারণা।

চলতি অর্থবছরে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ৫৫ হাজার কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে কেন—এ প্রশ্নের জবাবে আবদুর রহমান বলেন, রাজস্ব আদায় বাড়ানোর বাস্তব প্রয়োজন থেকেই এ লক্ষ্য নির্ধারণ। তবে কারও ওপর হয়রানি বা অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করা হবে না; মূলত যাঁরা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেই কঠোরতা বাড়ানো হবে।

আমদানি করা মোবাইল ফোনে কর কমানোর সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এটি সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত; এককভাবে এনবিআর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এনবিআরের সদস্য (মূসক নীতি) মো. আজিজুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মকর্তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত