Ajker Patrika

ট্যারিফ নির্ধারণে ট্রাম্পের গাণিতিক সূত্রের ব্যাখ্যা, ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের শুল্ক বেশির কারণ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১: ৫৫
বুধবার হোয়াইট হাউসে পাল্টা শুল্ক ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাশে বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক। ছবি: এএফপি
বুধবার হোয়াইট হাউসে পাল্টা শুল্ক ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাশে বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক। ছবি: এএফপি

বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং মার্কিন শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যে এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

কোনো একটি দেশ মার্কিন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে যতটা শুল্ক আরোপ করে থাকে, গতকাল ২ এপ্রিল থেকে সেই দেশের পণ্যগুলোর ওপর আনুপাতিক হারে শুল্ক আরোপের কথা জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে হিসাবে বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ হয়েছে, যা আগে ১৫ শতাংশ ছিল।

এ ছাড়া ভারতীয় পণ্যে ৫২ শতাংশ, চীনের ৬৭ শতাংশ, ভিয়েতনাম ৯০ শতাংশ, তাইওয়ান ৬৪ শতাংশ, কম্বোডিয়া ৯৭ শতাংশ, পাকিস্তান ৫৮ শতাংশ, এমনকি ইসরায়েলের ওপর ৩৩ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প।

বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলে আলাদা শুল্ক আরোপ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এক্স
বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলে আলাদা শুল্ক আরোপ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এক্স

ট্রাম্প প্রশাসন এই শুল্ক নির্ধারণের আগে কোন দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে কেমন শুল্ক আরোপ করে রেখেছে সেটির একটি হিসাব বের করেছে। সেই হিসাবের ভিত্তিতেই নতুন এই শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প।

বিভিন্ন দেশের মার্কিন পণ্যে আরোপিত শুল্কের পরিমাণ নির্ধারণে মোটামুটি একটি সরল গাণিতিক সূত্র ব্যবহার করেছে হোয়াইট হাউস। সূত্রে সেই বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে সেগুলোর একটি সরল ব্যাখ্যা নিচে দেওয়া হলো:

ধরা যাক, যুক্তরাষ্ট্র i নামে একটি দেশের ওপর τ_i হারে শুল্ক আরোপ করে এবং ∆τ_i–হলো শুল্ক হারের পরিবর্তন। আরও ধরা যাক, আমদানি মূল্যের সাপেক্ষে আমদানির স্থিতিস্থাপকতা ε< 0 (শূন্যের কম), শুল্ক ও আমদানি মূল্য সমন্বয়ের হার φ> 0 (শূন্যের চেয়ে বেশি), দেশ i থেকে মোট আমদানি m_i এবং মোট রপ্তানি x_i।

তাহলে, শুল্কের পরিবর্তনের কারণে আমদানি হ্রাস হবে: ∆τ_i*ε*φ*m_i।

উল্লেখ্য, আমদানির স্থিতিস্থাপকতা বলতে বোঝায়, মূল্য, আয় বা বাণিজ্য খরচের মতো কারণগুলোর পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়ায় আমদানিকৃত পণ্যের পরিমাণের পরিবর্তন।

ধরা যাক, ভারসাম্যপূর্ণ বিনিময় হার এবং সাধারণ ভারসাম্যের প্রভাব উপেক্ষা করার মতো যথেষ্ট কম, তাহলে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ভারসাম্য শূন্যে পৌঁছাতে যে পারস্পরিক শুল্ক বা ট্রাম্পের ভাষায় রিসিপ্রোক্যাল ট্যারিফের প্রয়োজন সেটি নির্ধারণে নিচের সূত্রটি ব্যবহার করা হয়েছে:

formula

প্যারামিটার নির্বাচন

রিসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ বা পাল্টা শুল্ক গণনা করার জন্য, ২০২৪ সালের জন্য ইউএস সেন্সাস ব্যুরো থেকে আমদানি ও রপ্তানির ডেটা ব্যবহার করা হয়েছে। ε এবং φ–এর জন্য প্যারামিটার মান নির্বাচন করা হয়েছে। এখানে আমদানি চাহিদার মূল্য স্থিতিস্থাপকতার (ε) ধরা হয়েছে—৪।

আমদানি চাহিদার মূল্য স্থিতিস্থাপকতা বলতে বোঝায়, আমদানিকৃত পণ্যের দামের পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়ায় আমদানিকৃত পণ্যের চাহিদার পরিমাণ কতটা পরিবর্তিত হয় সেটি। যেমন: -০.৭৩ মানটি নির্দেশ করে যে, দাম বাড়লে আমদানি কমে যাবে।

সাম্প্রতিক তথ্য–উপাত্ত থেকে জানা যায়, দীর্ঘ মেয়াদে স্থিতিস্থাপকতা প্রায় ২, অবশ্য স্থিতিস্থাপকতার অনুমান পরিবর্তিত হয়। রক্ষণশীল হিসাবে,৩–৪–এর কাছাকাছি উচ্চ স্থিতিস্থাপকতা পাওয়া যায় এমন গবেষণাগুলো থেকে এটির মান নেওয়া হয়েছে। শুল্কের সাপেক্ষে আমদানি মূল্যের স্থিতিস্থাপকতা (φ) ধরা হয়েছে ০.২৫।

চীনের ওপর মার্কিন শুল্কের সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা থেকে যুক্তরাষ্ট্র দেখেছে, খুচরা মূল্যে শুল্ক সমন্বয়ের হার কম হয়।

ওপরের সূত্র থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, আমদানি (m_i) এবং রপ্তানি (x_i)–এর পার্থক্য অর্থাৎ বাণিজ্য ঘাটতি যত বেশি হবে, ∆τ_i বা শুল্ক হারের পরিবর্তন তত বেশি হবে। এ কারণে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আরোপিত শুল্ক হার ভারতের চেয়ে বেশি দেখাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ডেটা অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল প্রায় ৬ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। এ সময় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশে রপ্তানি ছিল ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৪ সালে যে বাণিজ্য ঘাটতির কথা বলেছে, তা ২০২৩ সালের তুলনায় ২ শতাংশ (১২৩.২ মিলিয়ন ডলার) বেশি।

এখানে,

x_i–m_i = ৬.২ (বিলিয়ন ডলার)

x_i = ২.২

m_i = ৮.৪

ε = ৪

φ = ০.২৫

এই অঙ্কগুলো সূত্রে বসালেই ৭৪ শতাংশ শুল্কের হিসাব পাওয়া যায়। হোয়াইট হাউস এই সূত্র ব্যবহার করে বলছে, বাংলাদেশ মার্কিন পণ্যে ৭৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। এর বিপরীতে ট্রাম্প পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন ৩৭ শতাংশ।

এর অর্থ হলো, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমলে, অর্থাৎ বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও বেশি পণ্য আমদানি করলে এই শুল্কের হার গাণিতিক সূত্র অনুযায়ী কমে আসবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের ওপর আরোপিত শুল্কের হারও কমিয়ে আনার শর্ত তৈরি হবে।

একই ভাবে, ২০২৪ সালে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি, যুক্তরাষ্ট্রের হিসাবে প্রায় ৪৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্র ভারত থেকে ৮৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি এবং ভারতে ৪১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে। ২০২৩ সালের তুলনায় ঘাটতি ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে (২.৪ বিলিয়ন ডলার)।

আবার ভারতের হিসাবে, ভারত যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৮১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে এবং ৪৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে। ফলে প্রায় ৩৭ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত হয়েছে তাদের।

ভারতের যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির প্রধান চালিকাশক্তি হলো পোশাক এবং টেক্সটাইল খাত। আর যুক্তরাষ্ট্রের ভারতে রপ্তানির মধ্যে রয়েছে তুলা, যন্ত্রপাতি এবং মূল্যবান পাথরের মতো পণ্য।

সূত্র অনুযায়ী, ভারত যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্ক আরোপ করেছে ৫২ শতাংশ। সেটিই উল্লেখ করেছে হোয়াইট হাউস। এর বিপরীতে ট্রাম্প ভারতের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন ২৬ শতাংশ।

এভাবে পাকিস্তান, কম্বোডিয়াসহ অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে আরোপিত শুল্কের ভিন্নতার কারণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারে। তবে এটি ধারণা করা যায় যে, বিভিন্ন দেশে শুল্কের ভিন্নতার পেছনে ওই একমাত্র গাণিতিক সূত্রই নয়, বরং এর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য ব্যবসায়িক ও কূটনৈতিক সম্পর্কেরও ভূমিকা থাকতে পারে।

লিখেছেন: জাহাঙ্গীর আলম, জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আইএমইডির নভেম্বর মাসের প্রতিবেদন: এডিপি বাস্তবায়নে বড় ধাক্কা

  • পাঁচ মাসেই ব্যয় কমেছে ৬ হাজার কোটি।
  • শুধু নভেম্বরে ব্যয় কমেছে ৪ হাজার কোটি।
  • সমন্বয় ঘাটতি, প্রশাসনিক টানাপোড়েন ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রভাবও স্পষ্ট।
  • নির্বাচন ইস্যুতে প্রকল্পের গতি আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ১৪
আইএমইডির নভেম্বর মাসের প্রতিবেদন: এডিপি বাস্তবায়নে বড় ধাক্কা

চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই সরকারের উন্নয়ন ব্যয় আশঙ্কাজনকভাবে ধীর হয়ে পড়েছে। মাঠপর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন যেমন প্রত্যাশার তুলনায় অনেক পিছিয়ে, তেমনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সমন্বয় ঘাটতি, প্রশাসনিক টানাপোড়েন ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রভাবও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার বড় হলেও বাস্তব অগ্রগতি একেবারেই হতাশাজনক।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর—এই পাঁচ মাসে উন্নয়ন ব্যয় হয়েছে ২৮ হাজার ৪৩ কোটি টাকা, যা বরাদ্দের মাত্র ১১.৭৫ শতাংশ। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ব্যয় ছিল ৩৪ হাজার ২১৫ কোটি টাকা বা ১২ দশমিক ২৯ শতাংশ। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় পিছিয়ে আছে ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর থেকে স্পষ্ট হচ্ছে, সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প যেন এগোচ্ছেই না। সরকারি তহবিল, বৈদেশিক সহায়তা ও সংস্থাগুলোর নিজস্ব অর্থায়ন—প্রকল্প বাস্তবায়নে উন্নয়ন ব্যয়ের এ তিন উৎসের প্রতিটিতেই যেন মন্থরতা লক্ষণীয়।

শুধু অর্থবছরের সার্বিক পরিস্থিতিই নয়, এডিপির মাসওয়ারি অগ্রগতি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, নভেম্বর মাসের তথ্য আরও চিন্তার। এই এক মাসে বাস্তবায়ন হয়েছে ৮ হাজার ১৬৫ কোটি টাকার মতো, যেখানে আগের বছরের নভেম্বরেই ব্যয় ছিল ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি। এক মাসেই ব্যয় কমে গেছে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে অগ্রগতির হার মাত্র ৩ দশমিক ৪২ শতাংশ। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এই ধীরগতি কোনো স্বাভাবিক মৌসুমি প্রবণতা নয়; বরং প্রকল্প ব্যবস্থাপনার ভেতরে জমে থাকা নানা অচলাবস্থার ফল।

প্রকল্প অনুমোদনে বিলম্ব, টেন্ডারপ্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়া, দক্ষ ঠিকাদারের অভাব, মাঠপর্যায়ে প্রকৌশল বিভাগগুলোর সংকোচন—এসব মিলেই উন্নয়ন ব্যয় জমে থাকছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সরকার পরিবর্তনের পর প্রশাসনে তৈরি হওয়া মন্থরতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে দ্বিধা। আইএমইডি কর্মকর্তারা বলছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময়ে পুরো প্রশাসনিক কাঠামো একধরনের অচল অবস্থায় ছিল, যার ধাক্কা এখনো পুরোপুরি কাটেনি।

মন্ত্রণালয়ভিত্তিক ব্যয়ে বৈষম্যও স্পষ্ট। বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও সংসদবিষয়ক সচিবালয় মন্ত্রণালয় পাঁচ মাসে এক টাকাও ব্যয় করতে পারেনি। কিছু বিভাগ অগ্রগতি দেখালেও, তা সমগ্র চিত্র বদলে দেওয়ার মতো নয়। বিপরীতে খাদ্য মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ ১৩২.৭৮ শতাংশ ব্যয় করেছে, যা বরাদ্দের চেয়েও বেশি ব্যয়—এটি চলমান প্রকল্পগুলোর প্রকৃত অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্য আছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আইএমইডির মতে, প্রকৃত ব্যয় ও আর্থিক প্রতিবেদনের মধ্যকার এ ধরনের ব্যবধান ভবিষ্যতে প্রকল্প মূল্যায়নকে আরও জটিল করে তুলবে।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলছেন, ‘বাস্তবায়নের হার স্পষ্টতই কম। শুধু সংখ্যা নয়, কেন এই অবস্থা, সেটাই এখন সবচেয়ে জরুরি প্রশ্ন।’ বিশেষজ্ঞদের মতে, সামনের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন থাকায় ব্যবস্থাপনায় আরও ধীরতা দেখা দিতে পারে। ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফিন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইএনএম) নির্বাহী পরিচালক মুস্তফা কে মুজেরী এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে বলেন, অর্থবছরের শুরুতে সাধারণত কিছুটা ধীরতা দেখা গেলেও এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। নির্বাচনকালীন প্রশাসন সাধারণত ঝুঁকিনির্ভর হয় না, ফলে প্রকল্পের গতি আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল।

সব মিলে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, প্রশাসনিক দ্বিধা এবং মাঠপর্যায়ে নিয়ন্ত্রণহীনতা মিলিয়ে এডিপি বাস্তবায়ন যে পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে, তা দিয়ে নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন খুব কঠিন—এমনটি ধারণা করা হচ্ছে পরিকল্পনা কমিশনের ভেতরেও।

চলতি অর্থবছরে এডিপি বরাদ্দ ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু প্রথম পাঁচ মাসে যে গতি দেখা গেছে, তাতে বছরের শেষে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন আদৌ সম্ভব হবে কি না, সে প্রশ্ন এখন আরও তীব্র হয়ে উঠছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডলারের বিপরীতে রুপির আরও দরপতন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ভারতীয় রুপি ও মার্কিন ডলার। ছবি: সংগৃহিত
ভারতীয় রুপি ও মার্কিন ডলার। ছবি: সংগৃহিত

যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মান আরও ২৩ পয়সা কমে ৯১ দশমিক ০১-এ পৌঁছেছে। ডলারের বিপরীতে এখন পর্যন্ত এটিই রুপির সর্বনিম্ন দর। ধারাবাহিক বিদেশি তহবিলের প্রস্থান, ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনায় স্থবিরতা এবং স্থায়ী ডলার ক্রয়কে এই পতনের মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, গতকাল মঙ্গলবার দিনের শুরুতে রুপি ৩৬ পয়সা কমে ৯১ দশমিক ১৪-এ পৌঁছায়, যা ইতিহাসের সর্বনিম্ন, পরে সামান্য পুনরুদ্ধার হয়। যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমেছে এবং ডলারের শক্তি কিছুটা কমেছে, তারপরও রুপির পতন অব্যাহত রয়েছে।

গত ১০টি লেনদেনের দিনে রুপি ৯০ থেকে ৯১-এর মধ্যে ওঠানামা করেছে। শুধু গত পাঁচ দিনে রুপির মান ডলারের তুলনায় ১ শতাংশ কমেছে। মুদ্রা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের বিপরীতে রুপির দাম চলতি মাসে ৯২ ছাড়িয়ে যাবে।  

আজ মঙ্গলবার আন্তব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা রুপি ৯০ দশমিক ৮৭ থেকে লেনদেন শুরু হয়। পরে ৯০ দশমিক ৭৬ থেকে ৯১ দশমিক ১৪-এর মধ্যে ওঠানামা করে। শেষে ৯১ দশমিক ০১-এ বন্ধ হয়। গত সোমবার রুপি ৯০ দশমিক ৭৮-এ বন্ধ হয়েছিল, যা আগের দিনের তুলনায় ২৯ পয়সা কম।

ফিনরেক্স ট্রেজারি অ্যাডভাইজার্সের হেড অব ট্রেজারি অনিল কুমার বানসালি বলেন, ‘ডলারের ক্রয় অব্যাহত থাকায় রুপি নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতের নতুন বাণিজ্য প্রস্তাব মেনে না নেওয়ায় চুক্তি স্থগিত রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংকিং লাইসেন্সের আবেদন করল পেপ্যাল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৫৬
যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংকিং লাইসেন্সের আবেদন করল পেপ্যাল

ডিজিটাল পেমেন্ট কোম্পানি পেপ্যাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংকিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, এটি পেপ্যাল ব্যাংক তৈরি করার জন্য ইউটাহ ডিপার্টমেন্ট অব ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস এবং ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশনে আবেদন জমা দিয়েছে।

পেপ্যালের প্রধান নির্বাহী অ্যালেক্স ক্রিস বলেন, ‘পুঁজির নিরাপত্তা ছোট ব্যবসাগুলোর বৃদ্ধি ও সম্প্রসারণের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাধা। পেপ্যাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমরা ছোট ব্যবসার উন্নয়ন এবং মার্কিন অর্থনীতিতে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করতে পারব।’

১৯৯৮ সালে ইলন মাস্ক ও পিটার থিয়েল পেপ্যাল প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৩ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী ৪ লাখ ২০ হাজারের বেশি গ্রাহককে ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে। মার্কিন ব্যাংকিং লাইসেন্স পাওয়ার পর কোম্পানি তৃতীয় পক্ষের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে গ্রাহকের আমানতকে ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশনে বিমার আওতায় আনতে পারবে।

পেপ্যালের আবেদন এসেছে এমন সময়ে, যখন একাধিক ক্রিপ্টো কোম্পানি এবং নিওব্যাংক এই বছরে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি সুবিধা নিয়ে নিয়ন্ত্রিত ব্যাংকিং খাতে প্রবেশের সুযোগ গ্রহণের চেষ্টা করছে। এ বছরের মধ্যে নুবাঙ্ক, কয়েনবেসসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ব্যাংকিং চার্টারের জন্য আবেদন করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সোনার দাম ভরিতে ১৪৭০ টাকা বাড়ল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।

স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে ১৪ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ৩ হাজার ৪৪২ টাকা এবং ১২ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ১ হাজার ৫০ টাকা। এই দাম বাড়ানোর ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে এখন আবার দাম বাড়ানো হলো।

এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৪১১ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৭ হাজার ২১১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ২৪৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৬৩ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯০০ টাকা।

বিষয়:

দামসোনা
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত