আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং মার্কিন শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যে এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
কোনো একটি দেশ মার্কিন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে যতটা শুল্ক আরোপ করে থাকে, গতকাল ২ এপ্রিল থেকে সেই দেশের পণ্যগুলোর ওপর আনুপাতিক হারে শুল্ক আরোপের কথা জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে হিসাবে বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ হয়েছে, যা আগে ১৫ শতাংশ ছিল।
এ ছাড়া ভারতীয় পণ্যে ৫২ শতাংশ, চীনের ৬৭ শতাংশ, ভিয়েতনাম ৯০ শতাংশ, তাইওয়ান ৬৪ শতাংশ, কম্বোডিয়া ৯৭ শতাংশ, পাকিস্তান ৫৮ শতাংশ, এমনকি ইসরায়েলের ওপর ৩৩ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প প্রশাসন এই শুল্ক নির্ধারণের আগে কোন দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে কেমন শুল্ক আরোপ করে রেখেছে সেটির একটি হিসাব বের করেছে। সেই হিসাবের ভিত্তিতেই নতুন এই শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প।
বিভিন্ন দেশের মার্কিন পণ্যে আরোপিত শুল্কের পরিমাণ নির্ধারণে মোটামুটি একটি সরল গাণিতিক সূত্র ব্যবহার করেছে হোয়াইট হাউস। সূত্রে সেই বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে সেগুলোর একটি সরল ব্যাখ্যা নিচে দেওয়া হলো:
ধরা যাক, যুক্তরাষ্ট্র i নামে একটি দেশের ওপর τ_i হারে শুল্ক আরোপ করে এবং ∆τ_i–হলো শুল্ক হারের পরিবর্তন। আরও ধরা যাক, আমদানি মূল্যের সাপেক্ষে আমদানির স্থিতিস্থাপকতা ε< 0 (শূন্যের কম), শুল্ক ও আমদানি মূল্য সমন্বয়ের হার φ> 0 (শূন্যের চেয়ে বেশি), দেশ i থেকে মোট আমদানি m_i এবং মোট রপ্তানি x_i।
তাহলে, শুল্কের পরিবর্তনের কারণে আমদানি হ্রাস হবে: ∆τ_i*ε*φ*m_i।
উল্লেখ্য, আমদানির স্থিতিস্থাপকতা বলতে বোঝায়, মূল্য, আয় বা বাণিজ্য খরচের মতো কারণগুলোর পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়ায় আমদানিকৃত পণ্যের পরিমাণের পরিবর্তন।
ধরা যাক, ভারসাম্যপূর্ণ বিনিময় হার এবং সাধারণ ভারসাম্যের প্রভাব উপেক্ষা করার মতো যথেষ্ট কম, তাহলে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ভারসাম্য শূন্যে পৌঁছাতে যে পারস্পরিক শুল্ক বা ট্রাম্পের ভাষায় রিসিপ্রোক্যাল ট্যারিফের প্রয়োজন সেটি নির্ধারণে নিচের সূত্রটি ব্যবহার করা হয়েছে:

প্যারামিটার নির্বাচন
রিসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ বা পাল্টা শুল্ক গণনা করার জন্য, ২০২৪ সালের জন্য ইউএস সেন্সাস ব্যুরো থেকে আমদানি ও রপ্তানির ডেটা ব্যবহার করা হয়েছে। ε এবং φ–এর জন্য প্যারামিটার মান নির্বাচন করা হয়েছে। এখানে আমদানি চাহিদার মূল্য স্থিতিস্থাপকতার (ε) ধরা হয়েছে—৪।
আমদানি চাহিদার মূল্য স্থিতিস্থাপকতা বলতে বোঝায়, আমদানিকৃত পণ্যের দামের পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়ায় আমদানিকৃত পণ্যের চাহিদার পরিমাণ কতটা পরিবর্তিত হয় সেটি। যেমন: -০.৭৩ মানটি নির্দেশ করে যে, দাম বাড়লে আমদানি কমে যাবে।
সাম্প্রতিক তথ্য–উপাত্ত থেকে জানা যায়, দীর্ঘ মেয়াদে স্থিতিস্থাপকতা প্রায় ২, অবশ্য স্থিতিস্থাপকতার অনুমান পরিবর্তিত হয়। রক্ষণশীল হিসাবে,৩–৪–এর কাছাকাছি উচ্চ স্থিতিস্থাপকতা পাওয়া যায় এমন গবেষণাগুলো থেকে এটির মান নেওয়া হয়েছে। শুল্কের সাপেক্ষে আমদানি মূল্যের স্থিতিস্থাপকতা (φ) ধরা হয়েছে ০.২৫।
চীনের ওপর মার্কিন শুল্কের সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা থেকে যুক্তরাষ্ট্র দেখেছে, খুচরা মূল্যে শুল্ক সমন্বয়ের হার কম হয়।
ওপরের সূত্র থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, আমদানি (m_i) এবং রপ্তানি (x_i)–এর পার্থক্য অর্থাৎ বাণিজ্য ঘাটতি যত বেশি হবে, ∆τ_i বা শুল্ক হারের পরিবর্তন তত বেশি হবে। এ কারণে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আরোপিত শুল্ক হার ভারতের চেয়ে বেশি দেখাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ডেটা অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল প্রায় ৬ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। এ সময় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশে রপ্তানি ছিল ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৪ সালে যে বাণিজ্য ঘাটতির কথা বলেছে, তা ২০২৩ সালের তুলনায় ২ শতাংশ (১২৩.২ মিলিয়ন ডলার) বেশি।
এখানে,
x_i–m_i = ৬.২ (বিলিয়ন ডলার)
x_i = ২.২
m_i = ৮.৪
ε = ৪
φ = ০.২৫
এই অঙ্কগুলো সূত্রে বসালেই ৭৪ শতাংশ শুল্কের হিসাব পাওয়া যায়। হোয়াইট হাউস এই সূত্র ব্যবহার করে বলছে, বাংলাদেশ মার্কিন পণ্যে ৭৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। এর বিপরীতে ট্রাম্প পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন ৩৭ শতাংশ।
এর অর্থ হলো, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমলে, অর্থাৎ বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও বেশি পণ্য আমদানি করলে এই শুল্কের হার গাণিতিক সূত্র অনুযায়ী কমে আসবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের ওপর আরোপিত শুল্কের হারও কমিয়ে আনার শর্ত তৈরি হবে।
একই ভাবে, ২০২৪ সালে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি, যুক্তরাষ্ট্রের হিসাবে প্রায় ৪৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্র ভারত থেকে ৮৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি এবং ভারতে ৪১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে। ২০২৩ সালের তুলনায় ঘাটতি ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে (২.৪ বিলিয়ন ডলার)।
আবার ভারতের হিসাবে, ভারত যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৮১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে এবং ৪৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে। ফলে প্রায় ৩৭ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত হয়েছে তাদের।
ভারতের যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির প্রধান চালিকাশক্তি হলো পোশাক এবং টেক্সটাইল খাত। আর যুক্তরাষ্ট্রের ভারতে রপ্তানির মধ্যে রয়েছে তুলা, যন্ত্রপাতি এবং মূল্যবান পাথরের মতো পণ্য।
সূত্র অনুযায়ী, ভারত যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্ক আরোপ করেছে ৫২ শতাংশ। সেটিই উল্লেখ করেছে হোয়াইট হাউস। এর বিপরীতে ট্রাম্প ভারতের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন ২৬ শতাংশ।
এভাবে পাকিস্তান, কম্বোডিয়াসহ অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে আরোপিত শুল্কের ভিন্নতার কারণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারে। তবে এটি ধারণা করা যায় যে, বিভিন্ন দেশে শুল্কের ভিন্নতার পেছনে ওই একমাত্র গাণিতিক সূত্রই নয়, বরং এর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য ব্যবসায়িক ও কূটনৈতিক সম্পর্কেরও ভূমিকা থাকতে পারে।
লিখেছেন: জাহাঙ্গীর আলম, জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা

বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং মার্কিন শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যে এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
কোনো একটি দেশ মার্কিন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে যতটা শুল্ক আরোপ করে থাকে, গতকাল ২ এপ্রিল থেকে সেই দেশের পণ্যগুলোর ওপর আনুপাতিক হারে শুল্ক আরোপের কথা জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে হিসাবে বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ হয়েছে, যা আগে ১৫ শতাংশ ছিল।
এ ছাড়া ভারতীয় পণ্যে ৫২ শতাংশ, চীনের ৬৭ শতাংশ, ভিয়েতনাম ৯০ শতাংশ, তাইওয়ান ৬৪ শতাংশ, কম্বোডিয়া ৯৭ শতাংশ, পাকিস্তান ৫৮ শতাংশ, এমনকি ইসরায়েলের ওপর ৩৩ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প প্রশাসন এই শুল্ক নির্ধারণের আগে কোন দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে কেমন শুল্ক আরোপ করে রেখেছে সেটির একটি হিসাব বের করেছে। সেই হিসাবের ভিত্তিতেই নতুন এই শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প।
বিভিন্ন দেশের মার্কিন পণ্যে আরোপিত শুল্কের পরিমাণ নির্ধারণে মোটামুটি একটি সরল গাণিতিক সূত্র ব্যবহার করেছে হোয়াইট হাউস। সূত্রে সেই বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে সেগুলোর একটি সরল ব্যাখ্যা নিচে দেওয়া হলো:
ধরা যাক, যুক্তরাষ্ট্র i নামে একটি দেশের ওপর τ_i হারে শুল্ক আরোপ করে এবং ∆τ_i–হলো শুল্ক হারের পরিবর্তন। আরও ধরা যাক, আমদানি মূল্যের সাপেক্ষে আমদানির স্থিতিস্থাপকতা ε< 0 (শূন্যের কম), শুল্ক ও আমদানি মূল্য সমন্বয়ের হার φ> 0 (শূন্যের চেয়ে বেশি), দেশ i থেকে মোট আমদানি m_i এবং মোট রপ্তানি x_i।
তাহলে, শুল্কের পরিবর্তনের কারণে আমদানি হ্রাস হবে: ∆τ_i*ε*φ*m_i।
উল্লেখ্য, আমদানির স্থিতিস্থাপকতা বলতে বোঝায়, মূল্য, আয় বা বাণিজ্য খরচের মতো কারণগুলোর পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়ায় আমদানিকৃত পণ্যের পরিমাণের পরিবর্তন।
ধরা যাক, ভারসাম্যপূর্ণ বিনিময় হার এবং সাধারণ ভারসাম্যের প্রভাব উপেক্ষা করার মতো যথেষ্ট কম, তাহলে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ভারসাম্য শূন্যে পৌঁছাতে যে পারস্পরিক শুল্ক বা ট্রাম্পের ভাষায় রিসিপ্রোক্যাল ট্যারিফের প্রয়োজন সেটি নির্ধারণে নিচের সূত্রটি ব্যবহার করা হয়েছে:

প্যারামিটার নির্বাচন
রিসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ বা পাল্টা শুল্ক গণনা করার জন্য, ২০২৪ সালের জন্য ইউএস সেন্সাস ব্যুরো থেকে আমদানি ও রপ্তানির ডেটা ব্যবহার করা হয়েছে। ε এবং φ–এর জন্য প্যারামিটার মান নির্বাচন করা হয়েছে। এখানে আমদানি চাহিদার মূল্য স্থিতিস্থাপকতার (ε) ধরা হয়েছে—৪।
আমদানি চাহিদার মূল্য স্থিতিস্থাপকতা বলতে বোঝায়, আমদানিকৃত পণ্যের দামের পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়ায় আমদানিকৃত পণ্যের চাহিদার পরিমাণ কতটা পরিবর্তিত হয় সেটি। যেমন: -০.৭৩ মানটি নির্দেশ করে যে, দাম বাড়লে আমদানি কমে যাবে।
সাম্প্রতিক তথ্য–উপাত্ত থেকে জানা যায়, দীর্ঘ মেয়াদে স্থিতিস্থাপকতা প্রায় ২, অবশ্য স্থিতিস্থাপকতার অনুমান পরিবর্তিত হয়। রক্ষণশীল হিসাবে,৩–৪–এর কাছাকাছি উচ্চ স্থিতিস্থাপকতা পাওয়া যায় এমন গবেষণাগুলো থেকে এটির মান নেওয়া হয়েছে। শুল্কের সাপেক্ষে আমদানি মূল্যের স্থিতিস্থাপকতা (φ) ধরা হয়েছে ০.২৫।
চীনের ওপর মার্কিন শুল্কের সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা থেকে যুক্তরাষ্ট্র দেখেছে, খুচরা মূল্যে শুল্ক সমন্বয়ের হার কম হয়।
ওপরের সূত্র থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, আমদানি (m_i) এবং রপ্তানি (x_i)–এর পার্থক্য অর্থাৎ বাণিজ্য ঘাটতি যত বেশি হবে, ∆τ_i বা শুল্ক হারের পরিবর্তন তত বেশি হবে। এ কারণে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আরোপিত শুল্ক হার ভারতের চেয়ে বেশি দেখাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ডেটা অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল প্রায় ৬ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। এ সময় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশে রপ্তানি ছিল ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৪ সালে যে বাণিজ্য ঘাটতির কথা বলেছে, তা ২০২৩ সালের তুলনায় ২ শতাংশ (১২৩.২ মিলিয়ন ডলার) বেশি।
এখানে,
x_i–m_i = ৬.২ (বিলিয়ন ডলার)
x_i = ২.২
m_i = ৮.৪
ε = ৪
φ = ০.২৫
এই অঙ্কগুলো সূত্রে বসালেই ৭৪ শতাংশ শুল্কের হিসাব পাওয়া যায়। হোয়াইট হাউস এই সূত্র ব্যবহার করে বলছে, বাংলাদেশ মার্কিন পণ্যে ৭৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। এর বিপরীতে ট্রাম্প পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন ৩৭ শতাংশ।
এর অর্থ হলো, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমলে, অর্থাৎ বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও বেশি পণ্য আমদানি করলে এই শুল্কের হার গাণিতিক সূত্র অনুযায়ী কমে আসবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের ওপর আরোপিত শুল্কের হারও কমিয়ে আনার শর্ত তৈরি হবে।
একই ভাবে, ২০২৪ সালে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি, যুক্তরাষ্ট্রের হিসাবে প্রায় ৪৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্র ভারত থেকে ৮৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি এবং ভারতে ৪১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে। ২০২৩ সালের তুলনায় ঘাটতি ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে (২.৪ বিলিয়ন ডলার)।
আবার ভারতের হিসাবে, ভারত যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৮১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে এবং ৪৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে। ফলে প্রায় ৩৭ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত হয়েছে তাদের।
ভারতের যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির প্রধান চালিকাশক্তি হলো পোশাক এবং টেক্সটাইল খাত। আর যুক্তরাষ্ট্রের ভারতে রপ্তানির মধ্যে রয়েছে তুলা, যন্ত্রপাতি এবং মূল্যবান পাথরের মতো পণ্য।
সূত্র অনুযায়ী, ভারত যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্ক আরোপ করেছে ৫২ শতাংশ। সেটিই উল্লেখ করেছে হোয়াইট হাউস। এর বিপরীতে ট্রাম্প ভারতের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন ২৬ শতাংশ।
এভাবে পাকিস্তান, কম্বোডিয়াসহ অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে আরোপিত শুল্কের ভিন্নতার কারণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারে। তবে এটি ধারণা করা যায় যে, বিভিন্ন দেশে শুল্কের ভিন্নতার পেছনে ওই একমাত্র গাণিতিক সূত্রই নয়, বরং এর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য ব্যবসায়িক ও কূটনৈতিক সম্পর্কেরও ভূমিকা থাকতে পারে।
লিখেছেন: জাহাঙ্গীর আলম, জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা

জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
১২ ঘণ্টা আগে
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
১ দিন আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১ দিন আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
মামলার আসামিরা হলেন এসএওসিএলের কর্মকর্তা (এইচআর) আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩৭), উপব্যবস্থাপক (হিসাব) ও ডিপো ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহমুদুল হক (৪৫), গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন গিয়াস (৪৬), আজহার টেলিকমের স্বত্বাধিকারী মো. সোহেল রানা (৪৪) এবং মেসার্স মদিনা কোয়ালিটির স্বত্বাধিকারী মো. মাসুদ মিয়া (৫১)।
দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের হিসাব থেকে প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বিভিন্নভাবে স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করেন।
এজাহার থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এসএওসিএলের এলসি-সংক্রান্ত লেনদেনের নামে প্রকৃত সরবরাহকারীর পরিবর্তে ভুয়া ও সম্পর্কহীন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে চেক ইস্যু করার বিষয় দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে। পরে এসব চেকের অর্থ বিভিন্ন ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর কিংবা নগদে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো এলসি খোলা হয়নি এবং লেনদেনগুলো কোম্পানির জেভি-০৮ ও জেনারেল লেজারে অন্তর্ভুক্তও করা হয়নি।
অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পাঁচটি চেকের মধ্যে তিনটির অর্থ গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজ, আজহার টেলিকম ও মদিনা কোয়ালিটির অ্যাকাউন্টে জমা হয় এবং বাকি দুটি চেকের অর্থ নগদে উত্তোলন করা হয়। চেক জমাদানকারী হিসেবে বারবার আব্দুল্লাহ আল মামুনের নাম পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট পেমেন্ট ভাউচারে নিরীক্ষা বিভাগের স্বাক্ষর না থাকাও অনিয়মের প্রমাণ হিসেবে উঠে এসেছে।

জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
মামলার আসামিরা হলেন এসএওসিএলের কর্মকর্তা (এইচআর) আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩৭), উপব্যবস্থাপক (হিসাব) ও ডিপো ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহমুদুল হক (৪৫), গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন গিয়াস (৪৬), আজহার টেলিকমের স্বত্বাধিকারী মো. সোহেল রানা (৪৪) এবং মেসার্স মদিনা কোয়ালিটির স্বত্বাধিকারী মো. মাসুদ মিয়া (৫১)।
দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের হিসাব থেকে প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বিভিন্নভাবে স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করেন।
এজাহার থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এসএওসিএলের এলসি-সংক্রান্ত লেনদেনের নামে প্রকৃত সরবরাহকারীর পরিবর্তে ভুয়া ও সম্পর্কহীন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে চেক ইস্যু করার বিষয় দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে। পরে এসব চেকের অর্থ বিভিন্ন ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর কিংবা নগদে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো এলসি খোলা হয়নি এবং লেনদেনগুলো কোম্পানির জেভি-০৮ ও জেনারেল লেজারে অন্তর্ভুক্তও করা হয়নি।
অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পাঁচটি চেকের মধ্যে তিনটির অর্থ গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজ, আজহার টেলিকম ও মদিনা কোয়ালিটির অ্যাকাউন্টে জমা হয় এবং বাকি দুটি চেকের অর্থ নগদে উত্তোলন করা হয়। চেক জমাদানকারী হিসেবে বারবার আব্দুল্লাহ আল মামুনের নাম পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট পেমেন্ট ভাউচারে নিরীক্ষা বিভাগের স্বাক্ষর না থাকাও অনিয়মের প্রমাণ হিসেবে উঠে এসেছে।

ট্রাম্প প্রশাসন শুল্ক নির্ধারণের আগে কোন দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে কেমন শুল্ক আরোপ করে রেখেছে সেটির একটি হিসাব বের করেছে। সেই হিসাবের ভিত্তিতেই নতুন এই শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প।
০৩ এপ্রিল ২০২৫
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
১ দিন আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১ দিন আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন এবং শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। এ ছাড়া কাউন্সিলের অন্য সদস্যবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন এবং শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। এ ছাড়া কাউন্সিলের অন্য সদস্যবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

ট্রাম্প প্রশাসন শুল্ক নির্ধারণের আগে কোন দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে কেমন শুল্ক আরোপ করে রেখেছে সেটির একটি হিসাব বের করেছে। সেই হিসাবের ভিত্তিতেই নতুন এই শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প।
০৩ এপ্রিল ২০২৫
জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
১২ ঘণ্টা আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১ দিন আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
২ দিন আগেজাহিদ হাসান, যশোর

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস। ভোরে সেই রস নামিয়ে শুরু হয় আরেক কর্মযজ্ঞ; চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির নারীরাই মূলত এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কয়েক ঘণ্টা জ্বালানোর পর তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড় ও পাটালি।
শীত মৌসুম এলেই এমন দৃশ্য দেখা যায় খেজুর গুড়ের জেলা খ্যাত যশোরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে। সম্প্রতি যশোরের খেজুর গুড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এর ঐতিহ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নতুন করে সামনে এসেছে।
উৎপাদন ও বাজারের চিত্র
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যশোরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
বর্তমানে খেজুরের কাঁচা রস প্রতি মাটির হাঁড়ি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দানা গুড় প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা এবং পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর বাড়লেও গাছিরা বলছেন, শ্রম ও ঝুঁকির তুলনায় লাভ সীমিত।
গাছির সংকট বড় চ্যালেঞ্জ
যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গাছি আজিবর প্রায় ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটছেন। তিনি বলেন, ‘আগে দেড় শ গাছ কাটতাম, এখন বয়সের কারণে ৩৫-৪০টার বেশি পারি না। রস ও গুড়ের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাটার মতো গাছ কমে গেছে। আবার গাছ থাকলেও দক্ষ গাছির অভাব। এবার বেশি শীত পড়ায় রসও ভালো নামছে, গুড়ের উৎপাদনও বেশি।’

মনিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের গাছি অতিয়ারও প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তিনি বলেন, এবার ৫০টা গাছ কাটছি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। কাজটা খুব কষ্টের। তবে শীত মৌসুমে এই আয়েই পুরো বছরের সংসার চলে।
ই-কমার্সে বাড়ছে চাহিদা
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলায় মোট খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে রস আহরণের উপযোগী গাছ রয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি।
উৎপাদিত গুড় প্রথমে স্থানীয় হাটে বিক্রি হয়, পরে পাইকারদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। যশোরের খেজুর গুড় এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক উদ্যোক্তাদের হাত ধরে গুড় ও পাটালি সরাসরি ভোক্তার ঘরে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বাজার যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।
কৃষি বিভাগের উদ্যোগ
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোরের খেজুর গুড়ের স্বাদ ও মানের কারণে চাহিদা সব সময় বেশি। এবার শীত বেশি হওয়ায় রসের পরিমাণ ও মান—দুটোই ভালো। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ কোটি টাকার রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ খেজুর রস এবং গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গাছিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস। ভোরে সেই রস নামিয়ে শুরু হয় আরেক কর্মযজ্ঞ; চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির নারীরাই মূলত এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কয়েক ঘণ্টা জ্বালানোর পর তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড় ও পাটালি।
শীত মৌসুম এলেই এমন দৃশ্য দেখা যায় খেজুর গুড়ের জেলা খ্যাত যশোরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে। সম্প্রতি যশোরের খেজুর গুড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এর ঐতিহ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নতুন করে সামনে এসেছে।
উৎপাদন ও বাজারের চিত্র
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যশোরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
বর্তমানে খেজুরের কাঁচা রস প্রতি মাটির হাঁড়ি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দানা গুড় প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা এবং পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর বাড়লেও গাছিরা বলছেন, শ্রম ও ঝুঁকির তুলনায় লাভ সীমিত।
গাছির সংকট বড় চ্যালেঞ্জ
যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গাছি আজিবর প্রায় ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটছেন। তিনি বলেন, ‘আগে দেড় শ গাছ কাটতাম, এখন বয়সের কারণে ৩৫-৪০টার বেশি পারি না। রস ও গুড়ের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাটার মতো গাছ কমে গেছে। আবার গাছ থাকলেও দক্ষ গাছির অভাব। এবার বেশি শীত পড়ায় রসও ভালো নামছে, গুড়ের উৎপাদনও বেশি।’

মনিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের গাছি অতিয়ারও প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তিনি বলেন, এবার ৫০টা গাছ কাটছি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। কাজটা খুব কষ্টের। তবে শীত মৌসুমে এই আয়েই পুরো বছরের সংসার চলে।
ই-কমার্সে বাড়ছে চাহিদা
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলায় মোট খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে রস আহরণের উপযোগী গাছ রয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি।
উৎপাদিত গুড় প্রথমে স্থানীয় হাটে বিক্রি হয়, পরে পাইকারদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। যশোরের খেজুর গুড় এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক উদ্যোক্তাদের হাত ধরে গুড় ও পাটালি সরাসরি ভোক্তার ঘরে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বাজার যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।
কৃষি বিভাগের উদ্যোগ
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোরের খেজুর গুড়ের স্বাদ ও মানের কারণে চাহিদা সব সময় বেশি। এবার শীত বেশি হওয়ায় রসের পরিমাণ ও মান—দুটোই ভালো। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ কোটি টাকার রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ খেজুর রস এবং গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গাছিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

ট্রাম্প প্রশাসন শুল্ক নির্ধারণের আগে কোন দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে কেমন শুল্ক আরোপ করে রেখেছে সেটির একটি হিসাব বের করেছে। সেই হিসাবের ভিত্তিতেই নতুন এই শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প।
০৩ এপ্রিল ২০২৫
জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
১২ ঘণ্টা আগে
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
১ দিন আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
২ দিন আগেজয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬৫ শতাংশে, আর ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি—৫৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, এই দুটি খাতেই বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি হয়ে পড়েছে। যেখানে বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপির হার ৪১ দশমিক ৯৫ ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার মাত্র ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শরিয়াহভিত্তিক ১০টি ইসলামি ব্যাংক মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, প্রতি ১০ টাকার প্রায় ৬ টাকাই এখন আদায় অনিশ্চিত। সেই তুলনায় শরিয়াহসহ দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই তুলনাতেই স্পষ্ট, খেলাপির বোঝা এককভাবে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঘাড়েই।
সরকারি ছয় ব্যাংকের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই সেখানে অনাদায়ি। ব্যাংকার ও বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাতারাতি তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে দুর্বল তদারকি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে আড়াল করার প্রবণতা ধীরে ধীরে ব্যাংকগুলোকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, খেলাপি ঋণের এত উচ্চ হার শুধু ব্যাংকিং খাতের ভেতরের সমস্যা নয়, এটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি। ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দিতে পারছে না, বিনিয়োগ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে, শিল্প-কারখানার সম্প্রসারণ থেমে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানে। তাঁর মতে, খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং ঋণ আদায়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।
ইসলামি ব্যাংকিং খাতে এস আলম, নাসা ও বেক্সিমকো গ্রুপের নাম বারবার আলোচনায় এসেছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন সরকারি মদদে এসব গ্রুপ বিপুল ঋণ নিয়ে খেলাপি হলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এখন সেই বাস্তবতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর যে অপচেষ্টা ছিল, তা এখন ভেঙে পড়েছে। সঠিক হিসাব সামনে আসায় হার ৩৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা বাস্তবতারই প্রতিফলন। তিনি আবারও শীর্ষ ১০ খেলাপির জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনালের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আগের সরকারের আমলে লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ প্রকাশ পাওয়ায় এই হার বেড়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ঋণ আদায়ে কঠোর নির্দেশনার কারণে আগের তুলনায় আদায় বেড়েছে।

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬৫ শতাংশে, আর ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি—৫৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, এই দুটি খাতেই বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি হয়ে পড়েছে। যেখানে বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপির হার ৪১ দশমিক ৯৫ ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার মাত্র ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শরিয়াহভিত্তিক ১০টি ইসলামি ব্যাংক মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, প্রতি ১০ টাকার প্রায় ৬ টাকাই এখন আদায় অনিশ্চিত। সেই তুলনায় শরিয়াহসহ দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই তুলনাতেই স্পষ্ট, খেলাপির বোঝা এককভাবে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঘাড়েই।
সরকারি ছয় ব্যাংকের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই সেখানে অনাদায়ি। ব্যাংকার ও বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাতারাতি তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে দুর্বল তদারকি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে আড়াল করার প্রবণতা ধীরে ধীরে ব্যাংকগুলোকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, খেলাপি ঋণের এত উচ্চ হার শুধু ব্যাংকিং খাতের ভেতরের সমস্যা নয়, এটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি। ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দিতে পারছে না, বিনিয়োগ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে, শিল্প-কারখানার সম্প্রসারণ থেমে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানে। তাঁর মতে, খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং ঋণ আদায়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।
ইসলামি ব্যাংকিং খাতে এস আলম, নাসা ও বেক্সিমকো গ্রুপের নাম বারবার আলোচনায় এসেছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন সরকারি মদদে এসব গ্রুপ বিপুল ঋণ নিয়ে খেলাপি হলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এখন সেই বাস্তবতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর যে অপচেষ্টা ছিল, তা এখন ভেঙে পড়েছে। সঠিক হিসাব সামনে আসায় হার ৩৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা বাস্তবতারই প্রতিফলন। তিনি আবারও শীর্ষ ১০ খেলাপির জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনালের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আগের সরকারের আমলে লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ প্রকাশ পাওয়ায় এই হার বেড়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ঋণ আদায়ে কঠোর নির্দেশনার কারণে আগের তুলনায় আদায় বেড়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসন শুল্ক নির্ধারণের আগে কোন দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে কেমন শুল্ক আরোপ করে রেখেছে সেটির একটি হিসাব বের করেছে। সেই হিসাবের ভিত্তিতেই নতুন এই শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প।
০৩ এপ্রিল ২০২৫
জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
১২ ঘণ্টা আগে
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
১ দিন আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১ দিন আগে