রোকন উদ্দীন, ঢাকা

বাংলাদেশের চামড়া খাত একসময় দেশের অর্থনীতির মূল স্তম্ভ হিসেবে পরিচিত ছিল, বর্তমানে তা গভীর সংকটে রয়েছে। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানির প্রধান বাধা হচ্ছে কমপ্লায়েন্স সমস্যা এবং আন্তর্জাতিক মানের সনদ না পাওয়া, বিশেষত এলডব্লিউজি সনদ। এই সনদ বাংলাদেশের চামড়াশিল্পের টেকসই উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক বাজারে প্রবেশের দরজা খুলে দিতে পারে।
চামড়া খাতকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় প্রধান খাত হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তবে পোশাক রপ্তানির বিপরীতে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি আয় যথেষ্ট কম। প্রতিবছর ৪৬ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় হলেও চামড়া খাত থেকে অর্জিত হয় মাত্র ১২২ কোটি ডলার। সঠিক পরিকল্পনা এবং আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করলে চামড়া খাতও পোশাকশিল্পের মতো বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে পৌঁছাতে পারে।
২০১৭ সালে হাজারীবাগ থেকে চামড়াশিল্প সাভারের হরিণধরা চামড়াশিল্প নগরীতে স্থানান্তরিত হয়। তবে সেই উদ্যোগ সফল হয়নি। সরকারের উদাসীনতা, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং অর্থায়ন সমস্যার কারণে কমপ্লায়েন্সের মান উন্নত হয়নি। ফলে ভূমিদূষণ এবং অন্যান্য পরিবেশগত সমস্যার সমাধান হয়নি। শিল্পনগরীর সিইটিপি (কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধন প্ল্যান্ট) কার্যকর না হওয়ায় সাভারে দূষণ কমানো সম্ভব হয়নি এবং এলডব্লিউজি সনদ অর্জনেও বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের সমীক্ষায় দেখা গেছে, সিইটিপি থেকে নির্গত তরল বর্জ্য এখনো প্রকৃত পরিবেশগত মানের তুলনায় বেশি। সে কারণে এলডব্লিউজি সনদ পাওয়া যাচ্ছে না। চামড়াশিল্পে বর্তমানে অস্থিরতা চলছে, লোকসান হচ্ছে এবং কোরবানির মৌসুমে চামড়ার মূল্য কম। ঋণখেলাপি সমস্যা এবং শ্রমিকদের সমস্যা আরও বিপদ বাড়াচ্ছে।
এসব সমস্যা ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে রপ্তানি করার ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে চামড়া ব্যবসায়ী মাত্র ৯০ সেন্ট থেকে ১ দশমিক ২ ডলারে চীনে রপ্তানি করতে বাধ্য হচ্ছেন, অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে এর প্রকৃত মূল্য ২ থেকে ২ দশমিক ৫ ডলার। তবে পরিবেশগত সনদ পাওয়ার পর ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে প্রকৃত দামে চামড়া বিক্রি করা সম্ভব হবে।
রপ্তানিকারকেরা আশা করছেন, সরকার যদি দ্রুত সঠিক পদক্ষেপ নেয়, বাংলাদেশের চামড়া রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে আগামী ৪-৫ বছরের মধ্যে।
বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র্যাপিড) নির্বাহী পরিচালক মো. আবু ইউসুফ আজকের পত্রিকাকে জানান, চামড়া খাতে প্রধান সমস্যা হলো বাস্তবায়নের অভাব। তিনি বলেন, সিইটিপি মেরামত করে কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত না করা গেলে চামড়া খাত থেকে সুফল পাওয়া সম্ভব হবে না। এ জন্য সরকারকে চামড়া খাতকে বিসিকের আওতা থেকে আলাদা করে একটি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অথবা বেপজার অধীনে আনার পরামর্শ দেন। পাশাপাশি ১৫-২০ জন ভালো উদ্যোক্তাকে বিশেষ ঋণ সুবিধা দেওয়ারও সুপারিশ করেন তিনি।
এলডব্লিউজি সনদ কী
২০০৫ সালে নাইকি, অ্যাডিডাস, টিম্বারল্যান্ডসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড একসঙ্গে লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ (এলডব্লিউজি) প্রতিষ্ঠা করে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো পরিবেশ সুরক্ষার সঙ্গে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য উৎপাদন নিশ্চিত করা। বর্তমানে এক হাজারের বেশি ব্র্যান্ড এবং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এর সদস্য।
এলডব্লিউজির তৈরি মানদণ্ড অনুযায়ী, তারা কারখানাগুলো নিরীক্ষা করে পরিবেশগত মানদণ্ড অনুযায়ী গোল্ড, সিলভার, ব্রোঞ্জ এবং সাধারণ—এই চার শ্রেণিতে বিভক্ত করে। পরীক্ষার ক্ষেত্রে তারা দেখে পরিবেশ ব্যবস্থাপনা, ক্ষতিকর রাসায়নিক ও বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা, জ্বালানি ও পানির দক্ষ ব্যবহার, কাঁচামালের উৎস ইত্যাদি। এলডব্লিউজির সনদ একটি কারখানার পরিবেশবান্ধব উৎপাদন সক্ষমতার প্রমাণ দেয় এবং এর মাধ্যমে কারখানাগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক হতে পারে।
কতটা পিছিয়ে
কমপ্লায়েন্সের দিক থেকে বাংলাদেশের চামড়াশিল্পের অবস্থান বিশ্বে প্রায় তলানিতে। তার নজির দেখা যায় প্রদত্ত তথ্য-উপাত্তে। বাংলাদেশে বর্তমানে ২৫০টি নিবন্ধিত ট্যানারি রয়েছে। এগুলোর মধ্যে সাভারে চামড়াশিল্প নগরীতে গেছে ১৪৯টি। এর থেকে মাত্র ৪০-৫০টি নিয়মিত উৎপাদনে রয়েছে, বাকি ট্যানারি বন্ধ অথবা অনিয়মিতভাবে উৎপাদন করছে। অন্যদিকে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনের জন্য ৩ হাজার ৫৯০টি প্রতিষ্ঠান আছে, সেগুলোর মধ্যে বড় প্রতিষ্ঠান ৯০টি। সেখানে বর্তমানে বাংলাদেশে এলডব্লিউজির সনদপ্রাপ্ত ট্যানারি মাত্র ৬টি; যার মধ্যে তিনটি দেশীয় কাঁচামাল এবং বাকি তিনটি আমদানি করা কাঁচামাল ব্যবহার করে। এলডব্লিউজির সনদপ্রাপ্ত ট্যানারির সংখ্যা ভারতে ১৩৯টি, চীনে ১০৩, ইতালিতে ৬৮, ব্রাজিলে ৬০ এবং অন্যান্য দেশেও বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি সনদপ্রাপ্ত ট্যানারি রয়েছে। অথচ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি থেকে ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার আয় করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, যার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই।
চামড়ার বহুমুখী ব্যবহার
চামড়ার নমনীয়তা, স্থায়িত্ব এবং টেকসই বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি জুতা ছাড়াও আসবাব, পোশাক, ব্যাগ, বেল্ট, গ্লাভস, ঘড়ির বেল্ট, গাড়ির অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা, ঘোড়ার বাঁধন, গৃহসজ্জার সামগ্রী এবং বিভিন্ন ফ্যাশনসামগ্রী তৈরিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। সম্প্রতি, ক্রীড়া সরঞ্জাম ও পোশাক তৈরিতে চামড়ার ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। নাইকি, অ্যাডিডাস ও পুমার মতো বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলো ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা বিবেচনা করে চামড়ার অ্যাথলেটিক সামগ্রী উৎপাদনে মনোনিবেশ করছে।
বৈশ্বিক বাজার
বিশ্বব্যাপী চামড়ার বাজারের আকার প্রায় ২৪১ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে কাঁচা চামড়ার রপ্তানি বাজার প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলার, যা মূলত কিছু বড় দেশের নিয়ন্ত্রণে। ওয়ার্ল্ড ইন্টিগ্রেটেড ট্রেড সলিউশনসের (ডব্লিউআইটিএস) তথ্য অনুযায়ী, এই বাজারের শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর রয়েছে চীন, সুইজারল্যান্ড, হংকং, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি ও ভিয়েতনাম। এই দেশগুলো চামড়া রপ্তানি ও প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক বাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। অন্যদিকে চামড়ার সবচেয়ে বড় আমদানিকারক হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো প্রথম স্থানে রয়েছে। এরপরে অবস্থান করছে চীন। এসব দেশ উচ্চমানের চামড়ার চাহিদা পূরণের জন্য বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশ থেকে কাঁচা চামড়া আমদানি করে।
বিশ্বে চামড়ার বাজারে এই প্রতিযোগিতা বাংলাদেশের জন্য বড় সুযোগ তৈরি করতে পারে, তবে সঠিক মান নিশ্চিত করা এবং আন্তর্জাতিক সনদ অর্জনের মাধ্যমে এই বাজারে প্রবেশের পথ উন্মুক্ত হবে।
দেশের বাজারের চিত্র
দেশে উৎপাদিত চামড়ার ২৫ শতাংশ স্থানীয় বাজারে ব্যবহৃত হয়, বাকি ৭৫ শতাংশ রপ্তানি করা সম্ভব। বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রতিবছর ৪০০ কোটি বর্গফুট কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করা হয়। তবে প্রায় ৫০ লাখ বর্গফুট নষ্ট হয়ে যায়। বাকি ৩৫০ কোটি বর্গফুট চামড়া প্রক্রিয়াজাত করা হয়। সরকার গত বছর কাঁচা চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৫৫-৬০ টাকা নির্ধারণ করায় এর বাজারমূল্য দাঁড়ায় প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা (১ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার)। ট্যানারিমালিকদের মতে, প্রক্রিয়াজাত চামড়ার বাজারমূল্য প্রায় ৩৭ হাজার ৮০০ কোটি টাকা (৩ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার)। বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) জানায়, দেশে চামড়ার মোট বাজার ৩ বিলিয়ন ডলার, যা প্রতিবছর ৫ শতাংশ হারে বাড়ছে। তবে খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করে ফিনিশড লেদার রপ্তানি করা গেলে এই বাজার ১০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত হতে পারত।
দেশের রপ্তানি চিত্র
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে ১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ৫৪৪ মিলিয়ন ডলার চামড়ার জুতা, ৩৫২ মিলিয়ন ডলার চামড়াজাত পণ্য, ১৪৩ মিলিয়ন ডলার ফিনিশড ও ক্রাস্ট চামড়া রপ্তানি হয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) ৩৭২ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। প্রবৃদ্ধির প্রধান কারণ চামড়ার জুতা রপ্তানি, যা গত বছরের তুলনায় ২৬ শতাংশ বেড়েছে। এ সময়ে চামড়ার জুতা রপ্তানিতে আয় হয়েছে ২২৮ দশমিক ৪৭ মিলিয়ন ডলার, যা পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ। যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে বেশি রপ্তানি হয়েছে।
আছে আমদানির বাধ্যবাধকতা
ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে এলডব্লিউজির সনদপ্রাপ্ত কারখানার চামড়া ব্যবহারের শর্ত থাকে। ফলে দেশের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো বাধ্য হয়ে বছরে প্রায় ১৫০ মিলিয়ন ডলারের চামড়া আমদানি করছে। বিটিএর সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহ জানিয়েছেন, দেশের ট্যানারিগুলো এলডব্লিউজি সনদ পেলে এই আমদানির প্রয়োজন হতো না। এতে একদিকে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হতো, অন্যদিকে রপ্তানি খাতে প্রতিযোগিতা আরও বাড়ত।
কী বলছেন উদ্যোক্তারা
বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএলএলএফইএ) সভাপতি মো. মহিউদ্দীন আহমেদ মাহিন বলেছেন, চামড়া খাত বর্তমানে সংকটে রয়েছে। এর মূল কারণ পরিবেশগত কমপ্লায়েন্সের অভাব। এলডব্লিউজির সনদ না থাকায় খাতটি চীনে ২০ শতাংশ লোকসানে চামড়া বিক্রি করছে। ফলে অনেক উদ্যোক্তা ঋণখেলাপি হয়েছে। তিনি মনে করেন, খাতটির পুনরুজ্জীবন সম্ভব; এর জন্য সিইটিপি সংস্কার এবং দীর্ঘমেয়াদি ঋণ সুবিধা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সভাপতি শাহিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বৈশ্বিক বাজারের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হলে শিল্পনগরীর সিইটিপির বিভিন্ন সমস্যা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে হবে। কিন্তু এর প্রস্তুতি নেই আমাদের।’
সরকারের বক্তব্য
শিল্প মন্ত্রণালয় বলছে, শুধু সিইটিপি সংস্কার করলেই এলডব্লিউজির সনদ পাওয়া সম্ভব হবে না। ট্যানারিমালিকদের আরও অনেক ধরনের কমপ্লায়েন্স মানতে হবে, যা তাঁরা বর্তমানে মানছেন না। আন্তর্জাতিক পরিবেশ সনদ পাওয়ার জন্য ১৭০০ মার্ক প্রয়োজন, এর মধ্যে সিইটিপির জন্য মাত্র ৩০০ মার্ক। বাকি মার্কগুলো উদ্যোক্তাদের মানতে হবে। তবে সিইটিপি পরিবেশ রক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হওয়ায় তা ধীরে ধীরে সংস্কার করা হচ্ছে এবং কোরবানির মৌসুম ছাড়া অন্য সময়ে সিইটিপি থেকে প্রায় শতভাগ পানি পরিশোধন করা হচ্ছে।
শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, চীনা কোম্পানি যখন সিইটিপি হস্তান্তর করেছে, তখন এটি ছিল অসম্পূর্ণ প্ল্যান্ট। এতে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ঠিকমতো হচ্ছিল না। তবে এখন ধীরে ধীরে এটি সংস্কার করা হচ্ছে এবং বেশির ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে ট্যানারিমালিকেরা এখনো সঠিকভাবে উৎপাদনে যাচ্ছেন না এবং হাজারীবাগ থেকে সরানোর পর থেকে তাঁদের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। এখন তাঁরা অর্থনৈতিক সমস্যার কথা বলছেন, বিশেষ করে মূলধনের সমস্যা। ফলে সিইটিপি সংস্কারের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের কমপ্লায়েন্স অনুযায়ী উৎপাদন করতে হবে।
শিল্পসচিব আরও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং তারা একটি নতুন প্রকল্প শুরু করতে চায়। কারণ, একমাত্র সিইটিপি দিয়ে দেশের সব চামড়ার বর্জ্য পরিশোধন সম্ভব নয়। তাই আরও একটি প্রকল্প নেওয়া হবে। আগামী জানুয়ারিতে তারা মূল্যায়ন প্রতিবেদন দেবে।

বাংলাদেশের চামড়া খাত একসময় দেশের অর্থনীতির মূল স্তম্ভ হিসেবে পরিচিত ছিল, বর্তমানে তা গভীর সংকটে রয়েছে। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানির প্রধান বাধা হচ্ছে কমপ্লায়েন্স সমস্যা এবং আন্তর্জাতিক মানের সনদ না পাওয়া, বিশেষত এলডব্লিউজি সনদ। এই সনদ বাংলাদেশের চামড়াশিল্পের টেকসই উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক বাজারে প্রবেশের দরজা খুলে দিতে পারে।
চামড়া খাতকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় প্রধান খাত হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তবে পোশাক রপ্তানির বিপরীতে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি আয় যথেষ্ট কম। প্রতিবছর ৪৬ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় হলেও চামড়া খাত থেকে অর্জিত হয় মাত্র ১২২ কোটি ডলার। সঠিক পরিকল্পনা এবং আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করলে চামড়া খাতও পোশাকশিল্পের মতো বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে পৌঁছাতে পারে।
২০১৭ সালে হাজারীবাগ থেকে চামড়াশিল্প সাভারের হরিণধরা চামড়াশিল্প নগরীতে স্থানান্তরিত হয়। তবে সেই উদ্যোগ সফল হয়নি। সরকারের উদাসীনতা, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং অর্থায়ন সমস্যার কারণে কমপ্লায়েন্সের মান উন্নত হয়নি। ফলে ভূমিদূষণ এবং অন্যান্য পরিবেশগত সমস্যার সমাধান হয়নি। শিল্পনগরীর সিইটিপি (কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধন প্ল্যান্ট) কার্যকর না হওয়ায় সাভারে দূষণ কমানো সম্ভব হয়নি এবং এলডব্লিউজি সনদ অর্জনেও বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের সমীক্ষায় দেখা গেছে, সিইটিপি থেকে নির্গত তরল বর্জ্য এখনো প্রকৃত পরিবেশগত মানের তুলনায় বেশি। সে কারণে এলডব্লিউজি সনদ পাওয়া যাচ্ছে না। চামড়াশিল্পে বর্তমানে অস্থিরতা চলছে, লোকসান হচ্ছে এবং কোরবানির মৌসুমে চামড়ার মূল্য কম। ঋণখেলাপি সমস্যা এবং শ্রমিকদের সমস্যা আরও বিপদ বাড়াচ্ছে।
এসব সমস্যা ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে রপ্তানি করার ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে চামড়া ব্যবসায়ী মাত্র ৯০ সেন্ট থেকে ১ দশমিক ২ ডলারে চীনে রপ্তানি করতে বাধ্য হচ্ছেন, অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে এর প্রকৃত মূল্য ২ থেকে ২ দশমিক ৫ ডলার। তবে পরিবেশগত সনদ পাওয়ার পর ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে প্রকৃত দামে চামড়া বিক্রি করা সম্ভব হবে।
রপ্তানিকারকেরা আশা করছেন, সরকার যদি দ্রুত সঠিক পদক্ষেপ নেয়, বাংলাদেশের চামড়া রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে আগামী ৪-৫ বছরের মধ্যে।
বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র্যাপিড) নির্বাহী পরিচালক মো. আবু ইউসুফ আজকের পত্রিকাকে জানান, চামড়া খাতে প্রধান সমস্যা হলো বাস্তবায়নের অভাব। তিনি বলেন, সিইটিপি মেরামত করে কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত না করা গেলে চামড়া খাত থেকে সুফল পাওয়া সম্ভব হবে না। এ জন্য সরকারকে চামড়া খাতকে বিসিকের আওতা থেকে আলাদা করে একটি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অথবা বেপজার অধীনে আনার পরামর্শ দেন। পাশাপাশি ১৫-২০ জন ভালো উদ্যোক্তাকে বিশেষ ঋণ সুবিধা দেওয়ারও সুপারিশ করেন তিনি।
এলডব্লিউজি সনদ কী
২০০৫ সালে নাইকি, অ্যাডিডাস, টিম্বারল্যান্ডসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড একসঙ্গে লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ (এলডব্লিউজি) প্রতিষ্ঠা করে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো পরিবেশ সুরক্ষার সঙ্গে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য উৎপাদন নিশ্চিত করা। বর্তমানে এক হাজারের বেশি ব্র্যান্ড এবং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এর সদস্য।
এলডব্লিউজির তৈরি মানদণ্ড অনুযায়ী, তারা কারখানাগুলো নিরীক্ষা করে পরিবেশগত মানদণ্ড অনুযায়ী গোল্ড, সিলভার, ব্রোঞ্জ এবং সাধারণ—এই চার শ্রেণিতে বিভক্ত করে। পরীক্ষার ক্ষেত্রে তারা দেখে পরিবেশ ব্যবস্থাপনা, ক্ষতিকর রাসায়নিক ও বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা, জ্বালানি ও পানির দক্ষ ব্যবহার, কাঁচামালের উৎস ইত্যাদি। এলডব্লিউজির সনদ একটি কারখানার পরিবেশবান্ধব উৎপাদন সক্ষমতার প্রমাণ দেয় এবং এর মাধ্যমে কারখানাগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক হতে পারে।
কতটা পিছিয়ে
কমপ্লায়েন্সের দিক থেকে বাংলাদেশের চামড়াশিল্পের অবস্থান বিশ্বে প্রায় তলানিতে। তার নজির দেখা যায় প্রদত্ত তথ্য-উপাত্তে। বাংলাদেশে বর্তমানে ২৫০টি নিবন্ধিত ট্যানারি রয়েছে। এগুলোর মধ্যে সাভারে চামড়াশিল্প নগরীতে গেছে ১৪৯টি। এর থেকে মাত্র ৪০-৫০টি নিয়মিত উৎপাদনে রয়েছে, বাকি ট্যানারি বন্ধ অথবা অনিয়মিতভাবে উৎপাদন করছে। অন্যদিকে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনের জন্য ৩ হাজার ৫৯০টি প্রতিষ্ঠান আছে, সেগুলোর মধ্যে বড় প্রতিষ্ঠান ৯০টি। সেখানে বর্তমানে বাংলাদেশে এলডব্লিউজির সনদপ্রাপ্ত ট্যানারি মাত্র ৬টি; যার মধ্যে তিনটি দেশীয় কাঁচামাল এবং বাকি তিনটি আমদানি করা কাঁচামাল ব্যবহার করে। এলডব্লিউজির সনদপ্রাপ্ত ট্যানারির সংখ্যা ভারতে ১৩৯টি, চীনে ১০৩, ইতালিতে ৬৮, ব্রাজিলে ৬০ এবং অন্যান্য দেশেও বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি সনদপ্রাপ্ত ট্যানারি রয়েছে। অথচ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি থেকে ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার আয় করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, যার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই।
চামড়ার বহুমুখী ব্যবহার
চামড়ার নমনীয়তা, স্থায়িত্ব এবং টেকসই বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি জুতা ছাড়াও আসবাব, পোশাক, ব্যাগ, বেল্ট, গ্লাভস, ঘড়ির বেল্ট, গাড়ির অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা, ঘোড়ার বাঁধন, গৃহসজ্জার সামগ্রী এবং বিভিন্ন ফ্যাশনসামগ্রী তৈরিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। সম্প্রতি, ক্রীড়া সরঞ্জাম ও পোশাক তৈরিতে চামড়ার ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। নাইকি, অ্যাডিডাস ও পুমার মতো বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলো ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা বিবেচনা করে চামড়ার অ্যাথলেটিক সামগ্রী উৎপাদনে মনোনিবেশ করছে।
বৈশ্বিক বাজার
বিশ্বব্যাপী চামড়ার বাজারের আকার প্রায় ২৪১ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে কাঁচা চামড়ার রপ্তানি বাজার প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলার, যা মূলত কিছু বড় দেশের নিয়ন্ত্রণে। ওয়ার্ল্ড ইন্টিগ্রেটেড ট্রেড সলিউশনসের (ডব্লিউআইটিএস) তথ্য অনুযায়ী, এই বাজারের শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর রয়েছে চীন, সুইজারল্যান্ড, হংকং, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি ও ভিয়েতনাম। এই দেশগুলো চামড়া রপ্তানি ও প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক বাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। অন্যদিকে চামড়ার সবচেয়ে বড় আমদানিকারক হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো প্রথম স্থানে রয়েছে। এরপরে অবস্থান করছে চীন। এসব দেশ উচ্চমানের চামড়ার চাহিদা পূরণের জন্য বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশ থেকে কাঁচা চামড়া আমদানি করে।
বিশ্বে চামড়ার বাজারে এই প্রতিযোগিতা বাংলাদেশের জন্য বড় সুযোগ তৈরি করতে পারে, তবে সঠিক মান নিশ্চিত করা এবং আন্তর্জাতিক সনদ অর্জনের মাধ্যমে এই বাজারে প্রবেশের পথ উন্মুক্ত হবে।
দেশের বাজারের চিত্র
দেশে উৎপাদিত চামড়ার ২৫ শতাংশ স্থানীয় বাজারে ব্যবহৃত হয়, বাকি ৭৫ শতাংশ রপ্তানি করা সম্ভব। বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রতিবছর ৪০০ কোটি বর্গফুট কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করা হয়। তবে প্রায় ৫০ লাখ বর্গফুট নষ্ট হয়ে যায়। বাকি ৩৫০ কোটি বর্গফুট চামড়া প্রক্রিয়াজাত করা হয়। সরকার গত বছর কাঁচা চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৫৫-৬০ টাকা নির্ধারণ করায় এর বাজারমূল্য দাঁড়ায় প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা (১ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার)। ট্যানারিমালিকদের মতে, প্রক্রিয়াজাত চামড়ার বাজারমূল্য প্রায় ৩৭ হাজার ৮০০ কোটি টাকা (৩ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার)। বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) জানায়, দেশে চামড়ার মোট বাজার ৩ বিলিয়ন ডলার, যা প্রতিবছর ৫ শতাংশ হারে বাড়ছে। তবে খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করে ফিনিশড লেদার রপ্তানি করা গেলে এই বাজার ১০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত হতে পারত।
দেশের রপ্তানি চিত্র
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে ১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ৫৪৪ মিলিয়ন ডলার চামড়ার জুতা, ৩৫২ মিলিয়ন ডলার চামড়াজাত পণ্য, ১৪৩ মিলিয়ন ডলার ফিনিশড ও ক্রাস্ট চামড়া রপ্তানি হয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) ৩৭২ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। প্রবৃদ্ধির প্রধান কারণ চামড়ার জুতা রপ্তানি, যা গত বছরের তুলনায় ২৬ শতাংশ বেড়েছে। এ সময়ে চামড়ার জুতা রপ্তানিতে আয় হয়েছে ২২৮ দশমিক ৪৭ মিলিয়ন ডলার, যা পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ। যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে বেশি রপ্তানি হয়েছে।
আছে আমদানির বাধ্যবাধকতা
ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে এলডব্লিউজির সনদপ্রাপ্ত কারখানার চামড়া ব্যবহারের শর্ত থাকে। ফলে দেশের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো বাধ্য হয়ে বছরে প্রায় ১৫০ মিলিয়ন ডলারের চামড়া আমদানি করছে। বিটিএর সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহ জানিয়েছেন, দেশের ট্যানারিগুলো এলডব্লিউজি সনদ পেলে এই আমদানির প্রয়োজন হতো না। এতে একদিকে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হতো, অন্যদিকে রপ্তানি খাতে প্রতিযোগিতা আরও বাড়ত।
কী বলছেন উদ্যোক্তারা
বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএলএলএফইএ) সভাপতি মো. মহিউদ্দীন আহমেদ মাহিন বলেছেন, চামড়া খাত বর্তমানে সংকটে রয়েছে। এর মূল কারণ পরিবেশগত কমপ্লায়েন্সের অভাব। এলডব্লিউজির সনদ না থাকায় খাতটি চীনে ২০ শতাংশ লোকসানে চামড়া বিক্রি করছে। ফলে অনেক উদ্যোক্তা ঋণখেলাপি হয়েছে। তিনি মনে করেন, খাতটির পুনরুজ্জীবন সম্ভব; এর জন্য সিইটিপি সংস্কার এবং দীর্ঘমেয়াদি ঋণ সুবিধা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সভাপতি শাহিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বৈশ্বিক বাজারের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হলে শিল্পনগরীর সিইটিপির বিভিন্ন সমস্যা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে হবে। কিন্তু এর প্রস্তুতি নেই আমাদের।’
সরকারের বক্তব্য
শিল্প মন্ত্রণালয় বলছে, শুধু সিইটিপি সংস্কার করলেই এলডব্লিউজির সনদ পাওয়া সম্ভব হবে না। ট্যানারিমালিকদের আরও অনেক ধরনের কমপ্লায়েন্স মানতে হবে, যা তাঁরা বর্তমানে মানছেন না। আন্তর্জাতিক পরিবেশ সনদ পাওয়ার জন্য ১৭০০ মার্ক প্রয়োজন, এর মধ্যে সিইটিপির জন্য মাত্র ৩০০ মার্ক। বাকি মার্কগুলো উদ্যোক্তাদের মানতে হবে। তবে সিইটিপি পরিবেশ রক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হওয়ায় তা ধীরে ধীরে সংস্কার করা হচ্ছে এবং কোরবানির মৌসুম ছাড়া অন্য সময়ে সিইটিপি থেকে প্রায় শতভাগ পানি পরিশোধন করা হচ্ছে।
শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, চীনা কোম্পানি যখন সিইটিপি হস্তান্তর করেছে, তখন এটি ছিল অসম্পূর্ণ প্ল্যান্ট। এতে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ঠিকমতো হচ্ছিল না। তবে এখন ধীরে ধীরে এটি সংস্কার করা হচ্ছে এবং বেশির ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে ট্যানারিমালিকেরা এখনো সঠিকভাবে উৎপাদনে যাচ্ছেন না এবং হাজারীবাগ থেকে সরানোর পর থেকে তাঁদের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। এখন তাঁরা অর্থনৈতিক সমস্যার কথা বলছেন, বিশেষ করে মূলধনের সমস্যা। ফলে সিইটিপি সংস্কারের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের কমপ্লায়েন্স অনুযায়ী উৎপাদন করতে হবে।
শিল্পসচিব আরও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং তারা একটি নতুন প্রকল্প শুরু করতে চায়। কারণ, একমাত্র সিইটিপি দিয়ে দেশের সব চামড়ার বর্জ্য পরিশোধন সম্ভব নয়। তাই আরও একটি প্রকল্প নেওয়া হবে। আগামী জানুয়ারিতে তারা মূল্যায়ন প্রতিবেদন দেবে।
রোকন উদ্দীন, ঢাকা

বাংলাদেশের চামড়া খাত একসময় দেশের অর্থনীতির মূল স্তম্ভ হিসেবে পরিচিত ছিল, বর্তমানে তা গভীর সংকটে রয়েছে। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানির প্রধান বাধা হচ্ছে কমপ্লায়েন্স সমস্যা এবং আন্তর্জাতিক মানের সনদ না পাওয়া, বিশেষত এলডব্লিউজি সনদ। এই সনদ বাংলাদেশের চামড়াশিল্পের টেকসই উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক বাজারে প্রবেশের দরজা খুলে দিতে পারে।
চামড়া খাতকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় প্রধান খাত হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তবে পোশাক রপ্তানির বিপরীতে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি আয় যথেষ্ট কম। প্রতিবছর ৪৬ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় হলেও চামড়া খাত থেকে অর্জিত হয় মাত্র ১২২ কোটি ডলার। সঠিক পরিকল্পনা এবং আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করলে চামড়া খাতও পোশাকশিল্পের মতো বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে পৌঁছাতে পারে।
২০১৭ সালে হাজারীবাগ থেকে চামড়াশিল্প সাভারের হরিণধরা চামড়াশিল্প নগরীতে স্থানান্তরিত হয়। তবে সেই উদ্যোগ সফল হয়নি। সরকারের উদাসীনতা, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং অর্থায়ন সমস্যার কারণে কমপ্লায়েন্সের মান উন্নত হয়নি। ফলে ভূমিদূষণ এবং অন্যান্য পরিবেশগত সমস্যার সমাধান হয়নি। শিল্পনগরীর সিইটিপি (কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধন প্ল্যান্ট) কার্যকর না হওয়ায় সাভারে দূষণ কমানো সম্ভব হয়নি এবং এলডব্লিউজি সনদ অর্জনেও বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের সমীক্ষায় দেখা গেছে, সিইটিপি থেকে নির্গত তরল বর্জ্য এখনো প্রকৃত পরিবেশগত মানের তুলনায় বেশি। সে কারণে এলডব্লিউজি সনদ পাওয়া যাচ্ছে না। চামড়াশিল্পে বর্তমানে অস্থিরতা চলছে, লোকসান হচ্ছে এবং কোরবানির মৌসুমে চামড়ার মূল্য কম। ঋণখেলাপি সমস্যা এবং শ্রমিকদের সমস্যা আরও বিপদ বাড়াচ্ছে।
এসব সমস্যা ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে রপ্তানি করার ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে চামড়া ব্যবসায়ী মাত্র ৯০ সেন্ট থেকে ১ দশমিক ২ ডলারে চীনে রপ্তানি করতে বাধ্য হচ্ছেন, অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে এর প্রকৃত মূল্য ২ থেকে ২ দশমিক ৫ ডলার। তবে পরিবেশগত সনদ পাওয়ার পর ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে প্রকৃত দামে চামড়া বিক্রি করা সম্ভব হবে।
রপ্তানিকারকেরা আশা করছেন, সরকার যদি দ্রুত সঠিক পদক্ষেপ নেয়, বাংলাদেশের চামড়া রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে আগামী ৪-৫ বছরের মধ্যে।
বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র্যাপিড) নির্বাহী পরিচালক মো. আবু ইউসুফ আজকের পত্রিকাকে জানান, চামড়া খাতে প্রধান সমস্যা হলো বাস্তবায়নের অভাব। তিনি বলেন, সিইটিপি মেরামত করে কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত না করা গেলে চামড়া খাত থেকে সুফল পাওয়া সম্ভব হবে না। এ জন্য সরকারকে চামড়া খাতকে বিসিকের আওতা থেকে আলাদা করে একটি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অথবা বেপজার অধীনে আনার পরামর্শ দেন। পাশাপাশি ১৫-২০ জন ভালো উদ্যোক্তাকে বিশেষ ঋণ সুবিধা দেওয়ারও সুপারিশ করেন তিনি।
এলডব্লিউজি সনদ কী
২০০৫ সালে নাইকি, অ্যাডিডাস, টিম্বারল্যান্ডসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড একসঙ্গে লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ (এলডব্লিউজি) প্রতিষ্ঠা করে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো পরিবেশ সুরক্ষার সঙ্গে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য উৎপাদন নিশ্চিত করা। বর্তমানে এক হাজারের বেশি ব্র্যান্ড এবং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এর সদস্য।
এলডব্লিউজির তৈরি মানদণ্ড অনুযায়ী, তারা কারখানাগুলো নিরীক্ষা করে পরিবেশগত মানদণ্ড অনুযায়ী গোল্ড, সিলভার, ব্রোঞ্জ এবং সাধারণ—এই চার শ্রেণিতে বিভক্ত করে। পরীক্ষার ক্ষেত্রে তারা দেখে পরিবেশ ব্যবস্থাপনা, ক্ষতিকর রাসায়নিক ও বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা, জ্বালানি ও পানির দক্ষ ব্যবহার, কাঁচামালের উৎস ইত্যাদি। এলডব্লিউজির সনদ একটি কারখানার পরিবেশবান্ধব উৎপাদন সক্ষমতার প্রমাণ দেয় এবং এর মাধ্যমে কারখানাগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক হতে পারে।
কতটা পিছিয়ে
কমপ্লায়েন্সের দিক থেকে বাংলাদেশের চামড়াশিল্পের অবস্থান বিশ্বে প্রায় তলানিতে। তার নজির দেখা যায় প্রদত্ত তথ্য-উপাত্তে। বাংলাদেশে বর্তমানে ২৫০টি নিবন্ধিত ট্যানারি রয়েছে। এগুলোর মধ্যে সাভারে চামড়াশিল্প নগরীতে গেছে ১৪৯টি। এর থেকে মাত্র ৪০-৫০টি নিয়মিত উৎপাদনে রয়েছে, বাকি ট্যানারি বন্ধ অথবা অনিয়মিতভাবে উৎপাদন করছে। অন্যদিকে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনের জন্য ৩ হাজার ৫৯০টি প্রতিষ্ঠান আছে, সেগুলোর মধ্যে বড় প্রতিষ্ঠান ৯০টি। সেখানে বর্তমানে বাংলাদেশে এলডব্লিউজির সনদপ্রাপ্ত ট্যানারি মাত্র ৬টি; যার মধ্যে তিনটি দেশীয় কাঁচামাল এবং বাকি তিনটি আমদানি করা কাঁচামাল ব্যবহার করে। এলডব্লিউজির সনদপ্রাপ্ত ট্যানারির সংখ্যা ভারতে ১৩৯টি, চীনে ১০৩, ইতালিতে ৬৮, ব্রাজিলে ৬০ এবং অন্যান্য দেশেও বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি সনদপ্রাপ্ত ট্যানারি রয়েছে। অথচ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি থেকে ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার আয় করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, যার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই।
চামড়ার বহুমুখী ব্যবহার
চামড়ার নমনীয়তা, স্থায়িত্ব এবং টেকসই বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি জুতা ছাড়াও আসবাব, পোশাক, ব্যাগ, বেল্ট, গ্লাভস, ঘড়ির বেল্ট, গাড়ির অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা, ঘোড়ার বাঁধন, গৃহসজ্জার সামগ্রী এবং বিভিন্ন ফ্যাশনসামগ্রী তৈরিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। সম্প্রতি, ক্রীড়া সরঞ্জাম ও পোশাক তৈরিতে চামড়ার ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। নাইকি, অ্যাডিডাস ও পুমার মতো বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলো ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা বিবেচনা করে চামড়ার অ্যাথলেটিক সামগ্রী উৎপাদনে মনোনিবেশ করছে।
বৈশ্বিক বাজার
বিশ্বব্যাপী চামড়ার বাজারের আকার প্রায় ২৪১ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে কাঁচা চামড়ার রপ্তানি বাজার প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলার, যা মূলত কিছু বড় দেশের নিয়ন্ত্রণে। ওয়ার্ল্ড ইন্টিগ্রেটেড ট্রেড সলিউশনসের (ডব্লিউআইটিএস) তথ্য অনুযায়ী, এই বাজারের শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর রয়েছে চীন, সুইজারল্যান্ড, হংকং, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি ও ভিয়েতনাম। এই দেশগুলো চামড়া রপ্তানি ও প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক বাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। অন্যদিকে চামড়ার সবচেয়ে বড় আমদানিকারক হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো প্রথম স্থানে রয়েছে। এরপরে অবস্থান করছে চীন। এসব দেশ উচ্চমানের চামড়ার চাহিদা পূরণের জন্য বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশ থেকে কাঁচা চামড়া আমদানি করে।
বিশ্বে চামড়ার বাজারে এই প্রতিযোগিতা বাংলাদেশের জন্য বড় সুযোগ তৈরি করতে পারে, তবে সঠিক মান নিশ্চিত করা এবং আন্তর্জাতিক সনদ অর্জনের মাধ্যমে এই বাজারে প্রবেশের পথ উন্মুক্ত হবে।
দেশের বাজারের চিত্র
দেশে উৎপাদিত চামড়ার ২৫ শতাংশ স্থানীয় বাজারে ব্যবহৃত হয়, বাকি ৭৫ শতাংশ রপ্তানি করা সম্ভব। বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রতিবছর ৪০০ কোটি বর্গফুট কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করা হয়। তবে প্রায় ৫০ লাখ বর্গফুট নষ্ট হয়ে যায়। বাকি ৩৫০ কোটি বর্গফুট চামড়া প্রক্রিয়াজাত করা হয়। সরকার গত বছর কাঁচা চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৫৫-৬০ টাকা নির্ধারণ করায় এর বাজারমূল্য দাঁড়ায় প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা (১ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার)। ট্যানারিমালিকদের মতে, প্রক্রিয়াজাত চামড়ার বাজারমূল্য প্রায় ৩৭ হাজার ৮০০ কোটি টাকা (৩ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার)। বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) জানায়, দেশে চামড়ার মোট বাজার ৩ বিলিয়ন ডলার, যা প্রতিবছর ৫ শতাংশ হারে বাড়ছে। তবে খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করে ফিনিশড লেদার রপ্তানি করা গেলে এই বাজার ১০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত হতে পারত।
দেশের রপ্তানি চিত্র
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে ১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ৫৪৪ মিলিয়ন ডলার চামড়ার জুতা, ৩৫২ মিলিয়ন ডলার চামড়াজাত পণ্য, ১৪৩ মিলিয়ন ডলার ফিনিশড ও ক্রাস্ট চামড়া রপ্তানি হয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) ৩৭২ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। প্রবৃদ্ধির প্রধান কারণ চামড়ার জুতা রপ্তানি, যা গত বছরের তুলনায় ২৬ শতাংশ বেড়েছে। এ সময়ে চামড়ার জুতা রপ্তানিতে আয় হয়েছে ২২৮ দশমিক ৪৭ মিলিয়ন ডলার, যা পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ। যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে বেশি রপ্তানি হয়েছে।
আছে আমদানির বাধ্যবাধকতা
ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে এলডব্লিউজির সনদপ্রাপ্ত কারখানার চামড়া ব্যবহারের শর্ত থাকে। ফলে দেশের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো বাধ্য হয়ে বছরে প্রায় ১৫০ মিলিয়ন ডলারের চামড়া আমদানি করছে। বিটিএর সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহ জানিয়েছেন, দেশের ট্যানারিগুলো এলডব্লিউজি সনদ পেলে এই আমদানির প্রয়োজন হতো না। এতে একদিকে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হতো, অন্যদিকে রপ্তানি খাতে প্রতিযোগিতা আরও বাড়ত।
কী বলছেন উদ্যোক্তারা
বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএলএলএফইএ) সভাপতি মো. মহিউদ্দীন আহমেদ মাহিন বলেছেন, চামড়া খাত বর্তমানে সংকটে রয়েছে। এর মূল কারণ পরিবেশগত কমপ্লায়েন্সের অভাব। এলডব্লিউজির সনদ না থাকায় খাতটি চীনে ২০ শতাংশ লোকসানে চামড়া বিক্রি করছে। ফলে অনেক উদ্যোক্তা ঋণখেলাপি হয়েছে। তিনি মনে করেন, খাতটির পুনরুজ্জীবন সম্ভব; এর জন্য সিইটিপি সংস্কার এবং দীর্ঘমেয়াদি ঋণ সুবিধা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সভাপতি শাহিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বৈশ্বিক বাজারের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হলে শিল্পনগরীর সিইটিপির বিভিন্ন সমস্যা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে হবে। কিন্তু এর প্রস্তুতি নেই আমাদের।’
সরকারের বক্তব্য
শিল্প মন্ত্রণালয় বলছে, শুধু সিইটিপি সংস্কার করলেই এলডব্লিউজির সনদ পাওয়া সম্ভব হবে না। ট্যানারিমালিকদের আরও অনেক ধরনের কমপ্লায়েন্স মানতে হবে, যা তাঁরা বর্তমানে মানছেন না। আন্তর্জাতিক পরিবেশ সনদ পাওয়ার জন্য ১৭০০ মার্ক প্রয়োজন, এর মধ্যে সিইটিপির জন্য মাত্র ৩০০ মার্ক। বাকি মার্কগুলো উদ্যোক্তাদের মানতে হবে। তবে সিইটিপি পরিবেশ রক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হওয়ায় তা ধীরে ধীরে সংস্কার করা হচ্ছে এবং কোরবানির মৌসুম ছাড়া অন্য সময়ে সিইটিপি থেকে প্রায় শতভাগ পানি পরিশোধন করা হচ্ছে।
শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, চীনা কোম্পানি যখন সিইটিপি হস্তান্তর করেছে, তখন এটি ছিল অসম্পূর্ণ প্ল্যান্ট। এতে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ঠিকমতো হচ্ছিল না। তবে এখন ধীরে ধীরে এটি সংস্কার করা হচ্ছে এবং বেশির ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে ট্যানারিমালিকেরা এখনো সঠিকভাবে উৎপাদনে যাচ্ছেন না এবং হাজারীবাগ থেকে সরানোর পর থেকে তাঁদের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। এখন তাঁরা অর্থনৈতিক সমস্যার কথা বলছেন, বিশেষ করে মূলধনের সমস্যা। ফলে সিইটিপি সংস্কারের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের কমপ্লায়েন্স অনুযায়ী উৎপাদন করতে হবে।
শিল্পসচিব আরও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং তারা একটি নতুন প্রকল্প শুরু করতে চায়। কারণ, একমাত্র সিইটিপি দিয়ে দেশের সব চামড়ার বর্জ্য পরিশোধন সম্ভব নয়। তাই আরও একটি প্রকল্প নেওয়া হবে। আগামী জানুয়ারিতে তারা মূল্যায়ন প্রতিবেদন দেবে।

বাংলাদেশের চামড়া খাত একসময় দেশের অর্থনীতির মূল স্তম্ভ হিসেবে পরিচিত ছিল, বর্তমানে তা গভীর সংকটে রয়েছে। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানির প্রধান বাধা হচ্ছে কমপ্লায়েন্স সমস্যা এবং আন্তর্জাতিক মানের সনদ না পাওয়া, বিশেষত এলডব্লিউজি সনদ। এই সনদ বাংলাদেশের চামড়াশিল্পের টেকসই উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক বাজারে প্রবেশের দরজা খুলে দিতে পারে।
চামড়া খাতকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় প্রধান খাত হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তবে পোশাক রপ্তানির বিপরীতে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি আয় যথেষ্ট কম। প্রতিবছর ৪৬ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় হলেও চামড়া খাত থেকে অর্জিত হয় মাত্র ১২২ কোটি ডলার। সঠিক পরিকল্পনা এবং আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করলে চামড়া খাতও পোশাকশিল্পের মতো বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে পৌঁছাতে পারে।
২০১৭ সালে হাজারীবাগ থেকে চামড়াশিল্প সাভারের হরিণধরা চামড়াশিল্প নগরীতে স্থানান্তরিত হয়। তবে সেই উদ্যোগ সফল হয়নি। সরকারের উদাসীনতা, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং অর্থায়ন সমস্যার কারণে কমপ্লায়েন্সের মান উন্নত হয়নি। ফলে ভূমিদূষণ এবং অন্যান্য পরিবেশগত সমস্যার সমাধান হয়নি। শিল্পনগরীর সিইটিপি (কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধন প্ল্যান্ট) কার্যকর না হওয়ায় সাভারে দূষণ কমানো সম্ভব হয়নি এবং এলডব্লিউজি সনদ অর্জনেও বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের সমীক্ষায় দেখা গেছে, সিইটিপি থেকে নির্গত তরল বর্জ্য এখনো প্রকৃত পরিবেশগত মানের তুলনায় বেশি। সে কারণে এলডব্লিউজি সনদ পাওয়া যাচ্ছে না। চামড়াশিল্পে বর্তমানে অস্থিরতা চলছে, লোকসান হচ্ছে এবং কোরবানির মৌসুমে চামড়ার মূল্য কম। ঋণখেলাপি সমস্যা এবং শ্রমিকদের সমস্যা আরও বিপদ বাড়াচ্ছে।
এসব সমস্যা ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে রপ্তানি করার ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে চামড়া ব্যবসায়ী মাত্র ৯০ সেন্ট থেকে ১ দশমিক ২ ডলারে চীনে রপ্তানি করতে বাধ্য হচ্ছেন, অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে এর প্রকৃত মূল্য ২ থেকে ২ দশমিক ৫ ডলার। তবে পরিবেশগত সনদ পাওয়ার পর ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে প্রকৃত দামে চামড়া বিক্রি করা সম্ভব হবে।
রপ্তানিকারকেরা আশা করছেন, সরকার যদি দ্রুত সঠিক পদক্ষেপ নেয়, বাংলাদেশের চামড়া রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে আগামী ৪-৫ বছরের মধ্যে।
বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র্যাপিড) নির্বাহী পরিচালক মো. আবু ইউসুফ আজকের পত্রিকাকে জানান, চামড়া খাতে প্রধান সমস্যা হলো বাস্তবায়নের অভাব। তিনি বলেন, সিইটিপি মেরামত করে কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত না করা গেলে চামড়া খাত থেকে সুফল পাওয়া সম্ভব হবে না। এ জন্য সরকারকে চামড়া খাতকে বিসিকের আওতা থেকে আলাদা করে একটি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অথবা বেপজার অধীনে আনার পরামর্শ দেন। পাশাপাশি ১৫-২০ জন ভালো উদ্যোক্তাকে বিশেষ ঋণ সুবিধা দেওয়ারও সুপারিশ করেন তিনি।
এলডব্লিউজি সনদ কী
২০০৫ সালে নাইকি, অ্যাডিডাস, টিম্বারল্যান্ডসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড একসঙ্গে লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ (এলডব্লিউজি) প্রতিষ্ঠা করে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো পরিবেশ সুরক্ষার সঙ্গে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য উৎপাদন নিশ্চিত করা। বর্তমানে এক হাজারের বেশি ব্র্যান্ড এবং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এর সদস্য।
এলডব্লিউজির তৈরি মানদণ্ড অনুযায়ী, তারা কারখানাগুলো নিরীক্ষা করে পরিবেশগত মানদণ্ড অনুযায়ী গোল্ড, সিলভার, ব্রোঞ্জ এবং সাধারণ—এই চার শ্রেণিতে বিভক্ত করে। পরীক্ষার ক্ষেত্রে তারা দেখে পরিবেশ ব্যবস্থাপনা, ক্ষতিকর রাসায়নিক ও বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা, জ্বালানি ও পানির দক্ষ ব্যবহার, কাঁচামালের উৎস ইত্যাদি। এলডব্লিউজির সনদ একটি কারখানার পরিবেশবান্ধব উৎপাদন সক্ষমতার প্রমাণ দেয় এবং এর মাধ্যমে কারখানাগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক হতে পারে।
কতটা পিছিয়ে
কমপ্লায়েন্সের দিক থেকে বাংলাদেশের চামড়াশিল্পের অবস্থান বিশ্বে প্রায় তলানিতে। তার নজির দেখা যায় প্রদত্ত তথ্য-উপাত্তে। বাংলাদেশে বর্তমানে ২৫০টি নিবন্ধিত ট্যানারি রয়েছে। এগুলোর মধ্যে সাভারে চামড়াশিল্প নগরীতে গেছে ১৪৯টি। এর থেকে মাত্র ৪০-৫০টি নিয়মিত উৎপাদনে রয়েছে, বাকি ট্যানারি বন্ধ অথবা অনিয়মিতভাবে উৎপাদন করছে। অন্যদিকে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনের জন্য ৩ হাজার ৫৯০টি প্রতিষ্ঠান আছে, সেগুলোর মধ্যে বড় প্রতিষ্ঠান ৯০টি। সেখানে বর্তমানে বাংলাদেশে এলডব্লিউজির সনদপ্রাপ্ত ট্যানারি মাত্র ৬টি; যার মধ্যে তিনটি দেশীয় কাঁচামাল এবং বাকি তিনটি আমদানি করা কাঁচামাল ব্যবহার করে। এলডব্লিউজির সনদপ্রাপ্ত ট্যানারির সংখ্যা ভারতে ১৩৯টি, চীনে ১০৩, ইতালিতে ৬৮, ব্রাজিলে ৬০ এবং অন্যান্য দেশেও বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি সনদপ্রাপ্ত ট্যানারি রয়েছে। অথচ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি থেকে ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার আয় করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, যার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই।
চামড়ার বহুমুখী ব্যবহার
চামড়ার নমনীয়তা, স্থায়িত্ব এবং টেকসই বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি জুতা ছাড়াও আসবাব, পোশাক, ব্যাগ, বেল্ট, গ্লাভস, ঘড়ির বেল্ট, গাড়ির অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা, ঘোড়ার বাঁধন, গৃহসজ্জার সামগ্রী এবং বিভিন্ন ফ্যাশনসামগ্রী তৈরিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। সম্প্রতি, ক্রীড়া সরঞ্জাম ও পোশাক তৈরিতে চামড়ার ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। নাইকি, অ্যাডিডাস ও পুমার মতো বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলো ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা বিবেচনা করে চামড়ার অ্যাথলেটিক সামগ্রী উৎপাদনে মনোনিবেশ করছে।
বৈশ্বিক বাজার
বিশ্বব্যাপী চামড়ার বাজারের আকার প্রায় ২৪১ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে কাঁচা চামড়ার রপ্তানি বাজার প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলার, যা মূলত কিছু বড় দেশের নিয়ন্ত্রণে। ওয়ার্ল্ড ইন্টিগ্রেটেড ট্রেড সলিউশনসের (ডব্লিউআইটিএস) তথ্য অনুযায়ী, এই বাজারের শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর রয়েছে চীন, সুইজারল্যান্ড, হংকং, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি ও ভিয়েতনাম। এই দেশগুলো চামড়া রপ্তানি ও প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক বাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। অন্যদিকে চামড়ার সবচেয়ে বড় আমদানিকারক হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো প্রথম স্থানে রয়েছে। এরপরে অবস্থান করছে চীন। এসব দেশ উচ্চমানের চামড়ার চাহিদা পূরণের জন্য বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশ থেকে কাঁচা চামড়া আমদানি করে।
বিশ্বে চামড়ার বাজারে এই প্রতিযোগিতা বাংলাদেশের জন্য বড় সুযোগ তৈরি করতে পারে, তবে সঠিক মান নিশ্চিত করা এবং আন্তর্জাতিক সনদ অর্জনের মাধ্যমে এই বাজারে প্রবেশের পথ উন্মুক্ত হবে।
দেশের বাজারের চিত্র
দেশে উৎপাদিত চামড়ার ২৫ শতাংশ স্থানীয় বাজারে ব্যবহৃত হয়, বাকি ৭৫ শতাংশ রপ্তানি করা সম্ভব। বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রতিবছর ৪০০ কোটি বর্গফুট কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করা হয়। তবে প্রায় ৫০ লাখ বর্গফুট নষ্ট হয়ে যায়। বাকি ৩৫০ কোটি বর্গফুট চামড়া প্রক্রিয়াজাত করা হয়। সরকার গত বছর কাঁচা চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৫৫-৬০ টাকা নির্ধারণ করায় এর বাজারমূল্য দাঁড়ায় প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা (১ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার)। ট্যানারিমালিকদের মতে, প্রক্রিয়াজাত চামড়ার বাজারমূল্য প্রায় ৩৭ হাজার ৮০০ কোটি টাকা (৩ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার)। বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) জানায়, দেশে চামড়ার মোট বাজার ৩ বিলিয়ন ডলার, যা প্রতিবছর ৫ শতাংশ হারে বাড়ছে। তবে খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করে ফিনিশড লেদার রপ্তানি করা গেলে এই বাজার ১০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত হতে পারত।
দেশের রপ্তানি চিত্র
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে ১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ৫৪৪ মিলিয়ন ডলার চামড়ার জুতা, ৩৫২ মিলিয়ন ডলার চামড়াজাত পণ্য, ১৪৩ মিলিয়ন ডলার ফিনিশড ও ক্রাস্ট চামড়া রপ্তানি হয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) ৩৭২ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। প্রবৃদ্ধির প্রধান কারণ চামড়ার জুতা রপ্তানি, যা গত বছরের তুলনায় ২৬ শতাংশ বেড়েছে। এ সময়ে চামড়ার জুতা রপ্তানিতে আয় হয়েছে ২২৮ দশমিক ৪৭ মিলিয়ন ডলার, যা পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ। যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে বেশি রপ্তানি হয়েছে।
আছে আমদানির বাধ্যবাধকতা
ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে এলডব্লিউজির সনদপ্রাপ্ত কারখানার চামড়া ব্যবহারের শর্ত থাকে। ফলে দেশের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো বাধ্য হয়ে বছরে প্রায় ১৫০ মিলিয়ন ডলারের চামড়া আমদানি করছে। বিটিএর সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহ জানিয়েছেন, দেশের ট্যানারিগুলো এলডব্লিউজি সনদ পেলে এই আমদানির প্রয়োজন হতো না। এতে একদিকে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হতো, অন্যদিকে রপ্তানি খাতে প্রতিযোগিতা আরও বাড়ত।
কী বলছেন উদ্যোক্তারা
বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএলএলএফইএ) সভাপতি মো. মহিউদ্দীন আহমেদ মাহিন বলেছেন, চামড়া খাত বর্তমানে সংকটে রয়েছে। এর মূল কারণ পরিবেশগত কমপ্লায়েন্সের অভাব। এলডব্লিউজির সনদ না থাকায় খাতটি চীনে ২০ শতাংশ লোকসানে চামড়া বিক্রি করছে। ফলে অনেক উদ্যোক্তা ঋণখেলাপি হয়েছে। তিনি মনে করেন, খাতটির পুনরুজ্জীবন সম্ভব; এর জন্য সিইটিপি সংস্কার এবং দীর্ঘমেয়াদি ঋণ সুবিধা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সভাপতি শাহিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বৈশ্বিক বাজারের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হলে শিল্পনগরীর সিইটিপির বিভিন্ন সমস্যা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে হবে। কিন্তু এর প্রস্তুতি নেই আমাদের।’
সরকারের বক্তব্য
শিল্প মন্ত্রণালয় বলছে, শুধু সিইটিপি সংস্কার করলেই এলডব্লিউজির সনদ পাওয়া সম্ভব হবে না। ট্যানারিমালিকদের আরও অনেক ধরনের কমপ্লায়েন্স মানতে হবে, যা তাঁরা বর্তমানে মানছেন না। আন্তর্জাতিক পরিবেশ সনদ পাওয়ার জন্য ১৭০০ মার্ক প্রয়োজন, এর মধ্যে সিইটিপির জন্য মাত্র ৩০০ মার্ক। বাকি মার্কগুলো উদ্যোক্তাদের মানতে হবে। তবে সিইটিপি পরিবেশ রক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হওয়ায় তা ধীরে ধীরে সংস্কার করা হচ্ছে এবং কোরবানির মৌসুম ছাড়া অন্য সময়ে সিইটিপি থেকে প্রায় শতভাগ পানি পরিশোধন করা হচ্ছে।
শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, চীনা কোম্পানি যখন সিইটিপি হস্তান্তর করেছে, তখন এটি ছিল অসম্পূর্ণ প্ল্যান্ট। এতে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ঠিকমতো হচ্ছিল না। তবে এখন ধীরে ধীরে এটি সংস্কার করা হচ্ছে এবং বেশির ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে ট্যানারিমালিকেরা এখনো সঠিকভাবে উৎপাদনে যাচ্ছেন না এবং হাজারীবাগ থেকে সরানোর পর থেকে তাঁদের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। এখন তাঁরা অর্থনৈতিক সমস্যার কথা বলছেন, বিশেষ করে মূলধনের সমস্যা। ফলে সিইটিপি সংস্কারের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের কমপ্লায়েন্স অনুযায়ী উৎপাদন করতে হবে।
শিল্পসচিব আরও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং তারা একটি নতুন প্রকল্প শুরু করতে চায়। কারণ, একমাত্র সিইটিপি দিয়ে দেশের সব চামড়ার বর্জ্য পরিশোধন সম্ভব নয়। তাই আরও একটি প্রকল্প নেওয়া হবে। আগামী জানুয়ারিতে তারা মূল্যায়ন প্রতিবেদন দেবে।

দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
শেভরন বাংলাদেশের সহায়তায় বাস্তবায়িত এসএমআইএল প্রকল্পের আওতায় ‘রিস্টোরিং মোবিলিটি: আর্টিফিশিয়াল লিম্ব সাপোর্ট’ উদ্যোগের সমাপনী অনুষ্ঠান সম্প্রতি গ্র্যান্ড সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সিলেট ও নবীগঞ্জ উপজেলার ৬০ শারীরিক প্রতিবন্ধী উপকারভোগীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ (প্রোস্থেটিক) ও অর্থোটিক...
৪ ঘণ্টা আগে
দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলো থেকে অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করেছে। আজ সোমবার ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার (১৪১.৫ মিলিয়ন) কেনা হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
বাজার সহনীয় করতে পেঁয়াজের আমদানি আরও বাড়িয়েছে সরকার। আজ সোমবার থেকে দৈনিক ১৭ হাজার ২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে; যা আগে ছিল ৬ হাজার টন করে।
৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।
স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে ১৪ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ৩ হাজার ৪৪২ টাকা এবং ১২ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ১ হাজার ৫০ টাকা। এই দাম বাড়ানোর ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে এখন আবার দাম বাড়ানো হলো।
এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৪১১ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৭ হাজার ২১১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ২৪৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৬৩ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯০০ টাকা।

দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।
স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে ১৪ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ৩ হাজার ৪৪২ টাকা এবং ১২ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ১ হাজার ৫০ টাকা। এই দাম বাড়ানোর ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে এখন আবার দাম বাড়ানো হলো।
এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৪১১ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৭ হাজার ২১১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ২৪৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৬৩ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯০০ টাকা।

বাংলাদেশের চামড়া খাত একসময় দেশের অর্থনীতির মূল স্তম্ভ হিসেবে পরিচিত ছিল, বর্তমানে তা গভীর সংকটে রয়েছে। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানির প্রধান বাধা হচ্ছে কমপ্লায়েন্স সমস্যা এবং আন্তর্জাতিক মানের সনদ না পাওয়া, বিশেষত এলডব্লিউজি সনদ। এই সনদ বাংলাদেশের চামড়াশিল্পের টেকসই উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক বাজারে...
০৮ ডিসেম্বর ২০২৪
শেভরন বাংলাদেশের সহায়তায় বাস্তবায়িত এসএমআইএল প্রকল্পের আওতায় ‘রিস্টোরিং মোবিলিটি: আর্টিফিশিয়াল লিম্ব সাপোর্ট’ উদ্যোগের সমাপনী অনুষ্ঠান সম্প্রতি গ্র্যান্ড সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সিলেট ও নবীগঞ্জ উপজেলার ৬০ শারীরিক প্রতিবন্ধী উপকারভোগীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ (প্রোস্থেটিক) ও অর্থোটিক...
৪ ঘণ্টা আগে
দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলো থেকে অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করেছে। আজ সোমবার ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার (১৪১.৫ মিলিয়ন) কেনা হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
বাজার সহনীয় করতে পেঁয়াজের আমদানি আরও বাড়িয়েছে সরকার। আজ সোমবার থেকে দৈনিক ১৭ হাজার ২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে; যা আগে ছিল ৬ হাজার টন করে।
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

শেভরন বাংলাদেশের সহায়তায় বাস্তবায়িত এসএমআইএল (SMILE) প্রকল্পের আওতায় ‘রিস্টোরিং মোবিলিটি: আর্টিফিশিয়াল লিম্ব সাপোর্ট’ উদ্যোগের সমাপনী অনুষ্ঠান সম্প্রতি গ্র্যান্ড সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সিলেট ও নবীগঞ্জ উপজেলার ৬০ শারীরিক প্রতিবন্ধী উপকারভোগীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ (প্রোস্থেটিক) ও অর্থোটিক ডিভাইস বিতরণ করা হয়।
দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে পুনর্বাসন ও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত থাকা এই উপকারভোগীরা কৃত্রিম অঙ্গ পেয়ে নতুন জীবন ফিরে পেলেন। জালালাবাদ ডিজেবল্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালের (জেডিআরসিএইচ) সহযোগিতায় এই উদ্যোগ পরিচালিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সমন্বয় ও মনিটরিং উইংয়ের সচিব মো. আবদুল মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শেভরন বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার, করপোরেট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক মুহাম্মদ ইমরুল কবির, সোশ্যাল ইনভেস্টমেন্ট প্রধান এ কে এম আরিফ আক্তার, সুইসকন্টাক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন এবং জেডিআরসিএইচ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান রোটারিয়ান পিপি ইঞ্জিনিয়ার শোয়াইব আহমেদ মতিন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘কৃত্রিম অঙ্গ সহায়তা শুধু চিকিৎসা নয়, এটি প্রতিবন্ধী মানুষের জীবনযাত্রায় মৌলিক পরিবর্তন আনে। শেভরন বাংলাদেশ, সুইসকন্টাক্ট ও জেডিআরসিএইচের যৌথ উদ্যোগ চলাচল সক্ষমতা ফিরিয়ে এনে উপকারভোগীদের জীবনে নতুন আশার দ্বার খুলে দিয়েছে।’
শেভরন বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার বলেন, ‘বিশ্বের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ এ ধরনের বিশেষায়িত পুনর্বাসন সেবার পর্যাপ্ত সুযোগ পায় না। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যক্তিকেন্দ্রিক সেবা পৌঁছে দিতে পারা আমাদের জন্য গর্বের। উপকারভোগীদের প্রতিটি অগ্রযাত্রাই একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের দিকে দৃঢ় পদক্ষেপ।’
সুইসকন্টাক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন বলেন, ‘এই প্রকল্প কেবল চলাচল সক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়নি; এটি উপকারভোগীদের কর্মজীবনে ফেরা, শিক্ষা চালিয়ে যাওয়া এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করেছে—যা সমাজে অন্তর্ভুক্তি আরও সুদৃঢ় করেছে।’
করপোরেট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক মুহাম্মদ ইমরুল কবির বলেন, ‘শেভরন তিন দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের বিশ্বস্ত জ্বালানি অংশীদার। আমাদের অঙ্গীকার কেবল জ্বালানি সরবরাহেই সীমাবদ্ধ নয়। এসএমআইএল প্রকল্পের মতো উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা চলাচল সক্ষমতা ও মানবিক মর্যাদা পুনরুদ্ধারে কাজ করছি। বাংলাদেশে আমাদের সামাজিক বিনিয়োগ কার্যক্রম জাতিসংঘ ঘোষিত ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের মধ্যে ৯টির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’
অনুষ্ঠানে উপকারভোগীরা তাঁদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, কৃত্রিম অঙ্গ পাওয়ার ফলে তাঁরা আবার স্বাভাবিক চলাচল, আত্মনির্ভরতা ও আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছেন। এই ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রভাব পরিবার ও সমাজেও ছড়িয়ে পড়ছে।
গৃহস্থালি আয় স্থিতিশীল হওয়া ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির ফলে এর ইতিবাচক প্রভাব পরিবার ও সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে—যা কমিউনিটির স্থিতিশীলতা ও সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে। এ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় শেভরন বাংলাদেশ ও সুইসকন্টাক্ট এসএমআইএল প্রকল্পের মাধ্যমে টেকসই ও প্রভাবশালী উন্নয়ন উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে তারা অর্থোটিক ও প্রোস্থেটিক সহায়তা প্রয়োজন, এমন মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বাস্তব ও পরিমাপযোগ্য পরিবর্তন নিশ্চিত করছে।

শেভরন বাংলাদেশের সহায়তায় বাস্তবায়িত এসএমআইএল (SMILE) প্রকল্পের আওতায় ‘রিস্টোরিং মোবিলিটি: আর্টিফিশিয়াল লিম্ব সাপোর্ট’ উদ্যোগের সমাপনী অনুষ্ঠান সম্প্রতি গ্র্যান্ড সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সিলেট ও নবীগঞ্জ উপজেলার ৬০ শারীরিক প্রতিবন্ধী উপকারভোগীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ (প্রোস্থেটিক) ও অর্থোটিক ডিভাইস বিতরণ করা হয়।
দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে পুনর্বাসন ও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত থাকা এই উপকারভোগীরা কৃত্রিম অঙ্গ পেয়ে নতুন জীবন ফিরে পেলেন। জালালাবাদ ডিজেবল্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালের (জেডিআরসিএইচ) সহযোগিতায় এই উদ্যোগ পরিচালিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সমন্বয় ও মনিটরিং উইংয়ের সচিব মো. আবদুল মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শেভরন বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার, করপোরেট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক মুহাম্মদ ইমরুল কবির, সোশ্যাল ইনভেস্টমেন্ট প্রধান এ কে এম আরিফ আক্তার, সুইসকন্টাক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন এবং জেডিআরসিএইচ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান রোটারিয়ান পিপি ইঞ্জিনিয়ার শোয়াইব আহমেদ মতিন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘কৃত্রিম অঙ্গ সহায়তা শুধু চিকিৎসা নয়, এটি প্রতিবন্ধী মানুষের জীবনযাত্রায় মৌলিক পরিবর্তন আনে। শেভরন বাংলাদেশ, সুইসকন্টাক্ট ও জেডিআরসিএইচের যৌথ উদ্যোগ চলাচল সক্ষমতা ফিরিয়ে এনে উপকারভোগীদের জীবনে নতুন আশার দ্বার খুলে দিয়েছে।’
শেভরন বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার বলেন, ‘বিশ্বের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ এ ধরনের বিশেষায়িত পুনর্বাসন সেবার পর্যাপ্ত সুযোগ পায় না। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যক্তিকেন্দ্রিক সেবা পৌঁছে দিতে পারা আমাদের জন্য গর্বের। উপকারভোগীদের প্রতিটি অগ্রযাত্রাই একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের দিকে দৃঢ় পদক্ষেপ।’
সুইসকন্টাক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন বলেন, ‘এই প্রকল্প কেবল চলাচল সক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়নি; এটি উপকারভোগীদের কর্মজীবনে ফেরা, শিক্ষা চালিয়ে যাওয়া এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করেছে—যা সমাজে অন্তর্ভুক্তি আরও সুদৃঢ় করেছে।’
করপোরেট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক মুহাম্মদ ইমরুল কবির বলেন, ‘শেভরন তিন দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের বিশ্বস্ত জ্বালানি অংশীদার। আমাদের অঙ্গীকার কেবল জ্বালানি সরবরাহেই সীমাবদ্ধ নয়। এসএমআইএল প্রকল্পের মতো উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা চলাচল সক্ষমতা ও মানবিক মর্যাদা পুনরুদ্ধারে কাজ করছি। বাংলাদেশে আমাদের সামাজিক বিনিয়োগ কার্যক্রম জাতিসংঘ ঘোষিত ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের মধ্যে ৯টির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’
অনুষ্ঠানে উপকারভোগীরা তাঁদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, কৃত্রিম অঙ্গ পাওয়ার ফলে তাঁরা আবার স্বাভাবিক চলাচল, আত্মনির্ভরতা ও আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছেন। এই ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রভাব পরিবার ও সমাজেও ছড়িয়ে পড়ছে।
গৃহস্থালি আয় স্থিতিশীল হওয়া ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির ফলে এর ইতিবাচক প্রভাব পরিবার ও সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে—যা কমিউনিটির স্থিতিশীলতা ও সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে। এ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় শেভরন বাংলাদেশ ও সুইসকন্টাক্ট এসএমআইএল প্রকল্পের মাধ্যমে টেকসই ও প্রভাবশালী উন্নয়ন উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে তারা অর্থোটিক ও প্রোস্থেটিক সহায়তা প্রয়োজন, এমন মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বাস্তব ও পরিমাপযোগ্য পরিবর্তন নিশ্চিত করছে।

বাংলাদেশের চামড়া খাত একসময় দেশের অর্থনীতির মূল স্তম্ভ হিসেবে পরিচিত ছিল, বর্তমানে তা গভীর সংকটে রয়েছে। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানির প্রধান বাধা হচ্ছে কমপ্লায়েন্স সমস্যা এবং আন্তর্জাতিক মানের সনদ না পাওয়া, বিশেষত এলডব্লিউজি সনদ। এই সনদ বাংলাদেশের চামড়াশিল্পের টেকসই উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক বাজারে...
০৮ ডিসেম্বর ২০২৪
দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলো থেকে অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করেছে। আজ সোমবার ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার (১৪১.৫ মিলিয়ন) কেনা হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
বাজার সহনীয় করতে পেঁয়াজের আমদানি আরও বাড়িয়েছে সরকার। আজ সোমবার থেকে দৈনিক ১৭ হাজার ২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে; যা আগে ছিল ৬ হাজার টন করে।
৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলো থেকে অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করেছে। আজ সোমবার ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার (১৪১.৫ মিলিয়ন) কেনা হয়েছে। ডলারের বিনিময়হার ছিল ১২২ দশমিক ২৯ থেকে ১২২ দশমিক ৩০ টাকা আর কাট-অফ রেট ছিল ১২২ দশমিক ৩০ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, ১১ ডিসেম্বর ১৬টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৫ কোটি ডলার (১৪৯ মিলিয়ন) কেনা হয়েছিল। এ সময় প্রতি ডলারের বিনিময়হার ছিল ১২২ টাকা ২৫ পয়সা থেকে ১২২ টাকা ২৯ পয়সা। আর কাট-অফ রেট ছিল ১২২ টাকা ৯ পয়সা। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত নিলামপদ্ধতিতে মোট ২৮০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার (২.৮০ বিলিয়ন) সংগ্রহ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জানান, আজ ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার কেনা হয়েছে।

দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলো থেকে অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করেছে। আজ সোমবার ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার (১৪১.৫ মিলিয়ন) কেনা হয়েছে। ডলারের বিনিময়হার ছিল ১২২ দশমিক ২৯ থেকে ১২২ দশমিক ৩০ টাকা আর কাট-অফ রেট ছিল ১২২ দশমিক ৩০ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, ১১ ডিসেম্বর ১৬টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৫ কোটি ডলার (১৪৯ মিলিয়ন) কেনা হয়েছিল। এ সময় প্রতি ডলারের বিনিময়হার ছিল ১২২ টাকা ২৫ পয়সা থেকে ১২২ টাকা ২৯ পয়সা। আর কাট-অফ রেট ছিল ১২২ টাকা ৯ পয়সা। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত নিলামপদ্ধতিতে মোট ২৮০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার (২.৮০ বিলিয়ন) সংগ্রহ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জানান, আজ ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার কেনা হয়েছে।

বাংলাদেশের চামড়া খাত একসময় দেশের অর্থনীতির মূল স্তম্ভ হিসেবে পরিচিত ছিল, বর্তমানে তা গভীর সংকটে রয়েছে। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানির প্রধান বাধা হচ্ছে কমপ্লায়েন্স সমস্যা এবং আন্তর্জাতিক মানের সনদ না পাওয়া, বিশেষত এলডব্লিউজি সনদ। এই সনদ বাংলাদেশের চামড়াশিল্পের টেকসই উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক বাজারে...
০৮ ডিসেম্বর ২০২৪
দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
শেভরন বাংলাদেশের সহায়তায় বাস্তবায়িত এসএমআইএল প্রকল্পের আওতায় ‘রিস্টোরিং মোবিলিটি: আর্টিফিশিয়াল লিম্ব সাপোর্ট’ উদ্যোগের সমাপনী অনুষ্ঠান সম্প্রতি গ্র্যান্ড সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সিলেট ও নবীগঞ্জ উপজেলার ৬০ শারীরিক প্রতিবন্ধী উপকারভোগীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ (প্রোস্থেটিক) ও অর্থোটিক...
৪ ঘণ্টা আগে
বাজার সহনীয় করতে পেঁয়াজের আমদানি আরও বাড়িয়েছে সরকার। আজ সোমবার থেকে দৈনিক ১৭ হাজার ২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে; যা আগে ছিল ৬ হাজার টন করে।
৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বাজার সহনীয় করতে পেঁয়াজের আমদানি আরও বাড়িয়েছে সরকার। আজ সোমবার থেকে দৈনিক ১৭ হাজার ২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে; যা আগে ছিল ৬ হাজার টন করে।
আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে কৃষি মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
জানা যায়, চলতি মাসের শুরু থেকে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। তিন দিনের ব্যবধানে ১২০ টাকার পেঁয়াজের দাম বেড়ে ১৫০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৭ ডিসেম্বর থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া শুরু করে কৃষি মন্ত্রণালয়। শুরুতে প্রতিদিন ৫০ জন আমদানিকারককে ৩০ টন করে মোট ১ হাজার ৫০০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। দীর্ঘ তিন মাস পর এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
তবে এরপরও বাজারে দাম না কমলে আমদানির অনুমতির পরিমাণ বাড়ানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমদানি আরও বাড়ানো হয়। ১৩ ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিন ২০০ জনকে ৩০ টন করে ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়, যা আজ থেকে আরও বাড়িয়ে ১৭ হাজার ২৫০ টন করা হয়।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আজ বলা হয়, পেঁয়াজের বাজার সহনীয় রাখতে ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর দুই দিনের জন্য প্রতিদিন ৫৭৫টি করে আইপি (আমদানি অনুমতি) ইস্যু করা হবে। প্রতিটি আইপিতে আগের ন্যায় সর্বোচ্চ ৩০ টন পেঁয়াজের অনুমোদন দেওয়া হবে। আবেদনের বিষয় আগের ন্যায় বলবৎ থাকবে। অর্থাৎ গত ১ আগস্ট থেকে যেসব আমদানিকারক আমদানি অনুমতির জন্য আবেদন করেছেন, তাঁরাই কেবল এই দুই দিন আবেদন পুনরায় দাখিল করতে পারবেন। একজন আমদানিকারক একবারের জন্য আবেদনের সুযোগ পাবেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইংয়ের অতিরিক্ত উপপরিচালক (আমদানি) বনি আমিন খান বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের পর আজ আমরা ৫৭৫ জনকে আমদানির অনুমোদন দিয়েছি। অনুমোদন নিয়ে এ দিন আমদানিকারকেরা ঋণপত্র খুলতে পেরেছেন। যদিও দুই দিনের কথা বলা হয়েছে, তবে সরকার প্রয়োজন মনে করলে সময় আরও বাড়বে। এর আগে গত শনিবার থেকে প্রতিদিন ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দিয়ে আসছিলাম আমরা।’
দেশে সাধারণত প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা। সে হিসাবে যেদিন ঋণপত্র খোলেন, সেদিনই আমদানি করতে পারেন।

বাজার সহনীয় করতে পেঁয়াজের আমদানি আরও বাড়িয়েছে সরকার। আজ সোমবার থেকে দৈনিক ১৭ হাজার ২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে; যা আগে ছিল ৬ হাজার টন করে।
আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে কৃষি মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
জানা যায়, চলতি মাসের শুরু থেকে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। তিন দিনের ব্যবধানে ১২০ টাকার পেঁয়াজের দাম বেড়ে ১৫০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৭ ডিসেম্বর থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া শুরু করে কৃষি মন্ত্রণালয়। শুরুতে প্রতিদিন ৫০ জন আমদানিকারককে ৩০ টন করে মোট ১ হাজার ৫০০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। দীর্ঘ তিন মাস পর এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
তবে এরপরও বাজারে দাম না কমলে আমদানির অনুমতির পরিমাণ বাড়ানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমদানি আরও বাড়ানো হয়। ১৩ ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিন ২০০ জনকে ৩০ টন করে ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়, যা আজ থেকে আরও বাড়িয়ে ১৭ হাজার ২৫০ টন করা হয়।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আজ বলা হয়, পেঁয়াজের বাজার সহনীয় রাখতে ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর দুই দিনের জন্য প্রতিদিন ৫৭৫টি করে আইপি (আমদানি অনুমতি) ইস্যু করা হবে। প্রতিটি আইপিতে আগের ন্যায় সর্বোচ্চ ৩০ টন পেঁয়াজের অনুমোদন দেওয়া হবে। আবেদনের বিষয় আগের ন্যায় বলবৎ থাকবে। অর্থাৎ গত ১ আগস্ট থেকে যেসব আমদানিকারক আমদানি অনুমতির জন্য আবেদন করেছেন, তাঁরাই কেবল এই দুই দিন আবেদন পুনরায় দাখিল করতে পারবেন। একজন আমদানিকারক একবারের জন্য আবেদনের সুযোগ পাবেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইংয়ের অতিরিক্ত উপপরিচালক (আমদানি) বনি আমিন খান বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের পর আজ আমরা ৫৭৫ জনকে আমদানির অনুমোদন দিয়েছি। অনুমোদন নিয়ে এ দিন আমদানিকারকেরা ঋণপত্র খুলতে পেরেছেন। যদিও দুই দিনের কথা বলা হয়েছে, তবে সরকার প্রয়োজন মনে করলে সময় আরও বাড়বে। এর আগে গত শনিবার থেকে প্রতিদিন ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দিয়ে আসছিলাম আমরা।’
দেশে সাধারণত প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা। সে হিসাবে যেদিন ঋণপত্র খোলেন, সেদিনই আমদানি করতে পারেন।

বাংলাদেশের চামড়া খাত একসময় দেশের অর্থনীতির মূল স্তম্ভ হিসেবে পরিচিত ছিল, বর্তমানে তা গভীর সংকটে রয়েছে। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানির প্রধান বাধা হচ্ছে কমপ্লায়েন্স সমস্যা এবং আন্তর্জাতিক মানের সনদ না পাওয়া, বিশেষত এলডব্লিউজি সনদ। এই সনদ বাংলাদেশের চামড়াশিল্পের টেকসই উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক বাজারে...
০৮ ডিসেম্বর ২০২৪
দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
শেভরন বাংলাদেশের সহায়তায় বাস্তবায়িত এসএমআইএল প্রকল্পের আওতায় ‘রিস্টোরিং মোবিলিটি: আর্টিফিশিয়াল লিম্ব সাপোর্ট’ উদ্যোগের সমাপনী অনুষ্ঠান সম্প্রতি গ্র্যান্ড সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সিলেট ও নবীগঞ্জ উপজেলার ৬০ শারীরিক প্রতিবন্ধী উপকারভোগীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ (প্রোস্থেটিক) ও অর্থোটিক...
৪ ঘণ্টা আগে
দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলো থেকে অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করেছে। আজ সোমবার ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার (১৪১.৫ মিলিয়ন) কেনা হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে