Ajker Patrika

এফবিসিসিআইয়ের সংস্কার: পরপর দুইবার নির্বাচিত কর্মকর্তাকে অন্তত একবার বিরতির তাগিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
এফবিসিসিআইয়ের সংস্কার: পরপর দুইবার নির্বাচিত কর্মকর্তাকে অন্তত একবার বিরতির তাগিদ

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সংস্কারের দাবি তুলেছে সংগঠনটির সদস্যদের একাংশের মোর্চা বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ। এ লক্ষ্যে জোটের পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি ৮টি সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে। 

ব্যবসায়ীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে এফবিসিসিআই নির্বাচনের আগে নতুন করে সব অ্যাসোসিয়েশন ও চেম্বারের নির্বাচন করা, মনোনীত পরিচালক প্রথা বাতিল, পরিচালনা পর্ষদ ছোট করা ইত্যাদি। 

এছাড়া এফবিসিসিআইয়ের সব অ্যাসোসিয়েশন ও চেম্বারে পরপর দুইবার নির্বাচিত কর্মকর্তাকে কমপক্ষে একবার বিরতি গ্রহণের নিয়ম করার তাগিদ দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ। 

গতকাল রোববার সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এ সময় লিখিত বক্তব্য দেন বৈষম্য-বিরোধী সংস্কার পরিষদের সমন্বয়ক জাকির হোসেন নয়ন। 

এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি ও জোটের সমন্বয়ক আবুল কাসেম হায়দার, সমন্বয়ক গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী খোকন ও জাকির হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন। 

জাকির হোসেন নয়ন বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে এফবিসিসিআইয়ের কার্যক্রম ব্যবসা, শিল্প, বাণিজ্য ও সেবা খাতের স্বার্থে সার্বিকভাবে পরিচালিত হয়নি। বরং, অনির্বাচিত, একদলীয় স্বৈরাচারী সরকারের তোষামদি, ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলসহ রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে তৎপর ছিল। 

গত দেড় দশকে এফবিসিসিআইয়ের উদাসীনতার কারণে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে বলে জানান জাকির হোসেন নয়ন। তিনি বলেন, এফবিসিসিআই থেকে বাজার নিয়ন্ত্রণে উদাসীনতা এবং ব্যর্থতার কারণে বাজার সিন্ডিকেটের প্রভাবে অনেক নিত্যপণ্য ও ভোগ্যপণ্যের বাজারমূল্য দ্বিগুণ বা তিনগুণ বাড়িয়ে একটি মহল রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে। 

নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে এফবিসিসিআইয়ের ভূমিকার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জাকির হোসেন নয়ন বলেন, এফবিসিসিআইয়ের বাজার মনিটরিং সেল এর দায় এড়াতে পারে না। তারা তখন কার্যকরী ভূমিকা পালন করেনি। যে কারণে একটি সিন্ডিকেট বিভিন্ন পণ্যের দাম ধাপে ধাপে বাড়িয়ে জনসাধারণের নাগালের বাইরে নিয়ে গিয়েছিল। 

জাকির হোসেন নয়ন আরও বলেন, গণভবনে তোষামোদকারী সুবিধাবাদী চক্র দলীয় ক্যাডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে দীর্ঘ ১৫ বছর জবাবদিহি ছাড়াই এফবিসিসিআই এবং এর অধীনস্থ চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনগুলোকে পকেট সংগঠন হিসেবে নিয়ন্ত্রণ করেছিল। 

এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনের আগে অধিভুক্ত সব অ্যাসোসিয়েশন ও চেম্বারের নির্বাচনের দাবি জানিয়ে জাকির হোসেন নয়ন বলেন, এর কারণ হলো, গত ১৫ বছরে অধিকাংশ চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনে সীমাহীন দলীয়করণ করা হয়েছে। অধিকাংশ সংগঠনের নেতারা ছাত্র-গণহত্যার সহযোগী হিসেবে বিভিন্ন মামলার আসামি এবং অনেকেই পলাতক অবস্থায় রয়েছেন। ফলে বাণিজ্য সংগঠনগুলোতে এক ধরনের শূন্যতা বিরাজ করছে। 

মনোনীত পরিচালক প্রথা সম্পূর্ণ বাতিলের দাবি জানিয়ে জাকির হোসেন নয়ন বলেন, এই প্রথার কারণে ১৫ বছরে রাজনৈতিক প্রভাব খাঁটিয়ে অনেক অ-ব্যবসায়ী, অযোগ্য লোক পরিচালনা পর্ষদে ঢুকে পড়েন। তারা এফবিসিসিআইয়ের বিভিন্ন কার্যক্রমে আদৌ সম্পৃক্ত হন না। বোর্ড মিটিংয়েও অনুপস্থিত থাকেন। সিআপিসহ অন্য সুবিধা গ্রহণ ও প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গী হওয়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন। 

সভাপতি, সহসভাপতি এবং পরিচালক পদে সরাসরি নির্বাচনের সুপারিশ করে সমন্বয়ক জাকির হোসেন বলেন, বিদ্যমান ব্যবস্থায় ওই পদে আসীন ব্যক্তিদের সাধারণ পরিষদের কাছে কোনো জবাবদিহিতা বা দায়বদ্ধতা নেই। এতে করে তাঁরা স্বৈরাচারী মনোভাব ধারণ করেন। 

এফবিসিসিআইয়ের পরিচালনা পর্ষদ ছোট করতে হবে বলে মনে করে বৈষম্য-বিরোধী সংস্কার পরিষদ। জোটের পক্ষে নয়ন বলেন, ৮০ জন পরিচালক নিয়ে এফবিসিসিআইয়ের পরিচালনা পর্ষদ সত্যিকার অর্থেই একটি মাথাভারী প্রশাসন। 

সহসভাপতি পদে ৭ জনের পরিবর্তে ৩ জন রাখার সুপারিশ করে সংস্কার জোট। সমন্বয়ক নয়ন বলেন, সহসভাপতির কাজ সভাপতির অবর্তমানে দায়িত্ব পালন করা। কেবলমাত্র রাজনৈতিক বিবেচনায় চাপ সৃষ্টির কারণে অতীতে ৭ জন সহসভাপতি পদ তৈরি করা হয়েছে। সারা বিশ্বে এমন নজির নেই। বিষয়টি হাস্যকরও বটে। 

পরিচালনা পর্ষদ ছোট করে চেম্বার গ্রুপ থেকে ১৫ জন পরিচালক এবং অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে ২৫ জন পরিচালক নির্ধারণের জন্য সুপারিশ করে জাকির হোসেন নয়ন বলেন, অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সংখ্যা চেম্বারের সদস্য সংখ্যার প্রায় ৫ গুণ। অ্যাসোসিয়েশনের দেওয়া চাঁদার পরিমাণ চেম্বারের চেয়ে প্রায় ৪ গুণ বেশি। সুতরাং, অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ ও চেম্বার গ্রুপ হতে সমান সংখ্যক পরিচালক নিয়ে বোর্ড গঠন করা অযৌক্তিক এবং একটি বিশাল বৈষম্য। 

এফবিসিসিআইয়ের সব অ্যাসোসিয়েশন ও চেম্বারে পরপর দুইবার নির্বাচিত কর্মকর্তাকে কমপক্ষে একবার বিরতি গ্রহণের নিয়ম করার তাগিদ দিয়ে বৈষম্য বিরোধী সংস্কার পরিষদ বলছে, একই ব্যক্তি অপকৌশলে একাধিক মেয়াদে নির্বাচিত হয়ে আসছেন। তাঁরা একধরনের সিন্ডিকেট তৈরি করে তরুণ সৎ, শিক্ষিত, যোগ্য ও মেধাবীদের নেতৃত্বে আসার জন্য বিশাল প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছেন। 

নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পরে সাধারণ ভোটারদের কোনো উপহার বা উপঢৌকন প্রদান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে দেওয়ার দাবি জানিয়ে জাকির হোসেন নয়ন বলেন, উপহার দেওয়া হলে জরিমানাসহ আজীবন সদস্যপদ বাতিলের মতো কঠোর শাস্তির বিধান করতে হবে। 

জোটের সম্পর্কে জানতে চাইলে জাকির হোসেন নয়ন বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছরে এফবিসিসিআইয়ে যে প্রাতিষ্ঠানিক বিপর্যয় হয়েছে, আমরা তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছি। আমাদের নির্বাচন করার কোনো ইচ্ছে নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থীদের ই-রিটার্ন দাখিলে এনবিআরের হেল্প ডেস্ক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণেচ্ছুক প্রার্থীদের সুবিধার্থে ছুটির দিনে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর। আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।

এনবিআর জানায়, নির্বাচনে অংশগ্রহণেচ্ছুক প্রার্থীদের অনলাইনে রিটার্ন দাখিল সহজীকরণে এনবিআরের উদ্যোগে ই-ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের সহযোগিতায় ই-ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট ইউনিটস্থ কার্যালয়ে ‘হেল্পডেস্ক’ চালু করা হয়েছে।

রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এ ই-ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের হেল্পডেস্ক থেকে আগামী শুক্রবার দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা ও শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অনলাইনে রিটার্ন দাখিল সংক্রান্ত সেবা প্রদান করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আকাশপথে পণ্য পরিবহনে অফডক চান ব্যবসায়ীরা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১: ১০
গ্রাফিকস: আজকের পত্রিকা
গ্রাফিকস: আজকের পত্রিকা

আকাশপথে আমদানি-রপ্তানি ব্যবস্থার দুর্বলতা নতুন করে সামনে এনেছে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ড। ওই ঘটনায় কয়েক দিনের জন্য কার্গো কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ায় ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েন। এই প্রেক্ষাপটে আকাশপথে পণ্য পরিবহনকে নিরবচ্ছিন্ন, দ্রুত ও সংকটসহনীয় করতে বিমানবন্দরের বাইরে অফডকভিত্তিক এয়ার কার্গো ব্যবস্থা চালুর দাবি জোরালো হয়েছে। সেই সঙ্গে দ্রুত এয়ার কার্গো অপারেটরস স্টেশন (এসিওএস) নীতিমালা চূড়ান্ত ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারকেরা। তাঁরা বলছেন, অফডকভিত্তিক এয়ার কার্গো অপারেশন চালু না হলে যেকোনো সংকটে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।

অফডক হলো বন্দর বা বিমানবন্দরের মূল এলাকার বাইরে অবস্থিত এমন নির্ধারিত স্থাপনা, যেখানে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের খালাস, সংরক্ষণ, পরীক্ষা ও হ্যান্ডলিং করা হয়। সহজভাবে বলা যায়, বন্দরের ভেতরে সব কাজ না করে বন্দরের বাইরে আলাদা জায়গায় কার্গোর কাজ করা, এটাই অফডক।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের মতো আকাশপথেও অফডক ব্যবস্থা চালু করা যায় বলে মনে করেন নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমানে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কার্গো হ্যান্ডলিং সেবা মূলত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস দিয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে তাদের সক্ষমতা খুবই সীমিত। অনেক সময় পণ্য খালাসে অতিরিক্ত দুই থেকে তিন দিন সময় লেগে যায়। এতে রপ্তানি ও আমদানি উভয় ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়েন।

অফডক চালু হলে এ ধরনের জটিলতা থাকবে না জানিয়ে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, এতে পণ্য খালাস দ্রুত হবে এবং সামগ্রিকভাবে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য আরও সহজ ও গতিশীল হবে।

অফডক দরকার কেন

সংশ্লিষ্টরা জানান, অফডক ব্যবস্থা চালু হলে বেসরকারি উদ্যোগে একাধিক অপারেটর থাকবে। ফলে কার্গো আমদানি-রপ্তানি পরিবহনে টার্মিনাল হ্যান্ডলিং, কার্গো হ্যান্ডলিং, স্ক্যানিং চার্জসহ অন্যান্য ফি নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামূলক বাজারব্যবস্থা সৃষ্টি হবে। একই সঙ্গে সেবার মানও বাড়বে।

তথ্যমতে, বর্তমানে আকাশপথে প্রতি কেজি পণ্য রপ্তানিতে প্রায় ২৬ টাকা সার্ভিস চার্জ নেয় বিমান বাংলাদেশ ও সিভিল এভিয়েশন। একই সেবা পেতে ব্যাংককে প্রতি কেজিতে ৬.৪২ টাকা, কলকাতায় ৪.৮৮ টাকা এবং দিল্লিতে ৬.১০ টাকা দিতে হয়। এতে করে আকাশপথে পণ্য পরিবহন খরচ কয়েক গুণ বেড়ে যাচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা মনে করেন, দেশে এয়ার কার্গো অপারেশনে অফডক পদ্ধতি চালু হলে অধিকতর কার্গো নিরাপত্তার সঙ্গে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে। ইলেকট্রনিক কার্গো ট্র্যাকিং সিস্টেম (ইসিটিএস) চালু হবে। ফলে সহজে কার্গোর অবস্থান জানা যাবে। দ্রুত পণ্য খালাসে সুবিধা পাবে এবং জট কমবে। ওষুধের কাঁচামাল, জরুরি গার্মেন্টস পণ্যের নমুনাসহ আনুষঙ্গিক পণ্য সহজে পরিবহন করা যাবে। এতে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য ত্বরান্বিত হবে।

ই-কমার্স ব্যবসায়ীরা এর সুফল ভোগ করতে পারবেন। বিশ্বের অনেক দেশে অফডক ব্যবস্থা চালু আছে। যেমন সিঙ্গাপুর, দুবাই, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, জাপান, ভারত, হংকং, ইউএসএ। সেখানে এই ব্যবস্থার ফলে কার্গো পরিবহনে সময়ের সাশ্রয় ও পণ্য খালাসে জটিলতা নেই বললেই চলে।

ব্যবসায়ীরা জানান, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে দীর্ঘদিন ধরে অফডক ব্যবস্থা চালু আছে এবং তা সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। একই ধরনের ব্যবস্থা ঢাকার বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকায় চালু করা গেলে আকাশপথে পণ্য পরিবহন আরও সহজ হবে।

এদিকে এয়ার কার্গো অপারেটরস স্টেশন (এসিওএস) নীতিমালা চূড়ান্ত ও বাস্তবায়ন চেয়ে ২৩ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে চিঠি দিয়েছে তৈরি পোশাক খাতের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ। সংগঠনটি বলছে, ঢাকা বিমানবন্দর এবং এর আশপাশে অফডক সুবিধা চালু হলে আমদানি প্রক্রিয়া সহজ হবে এবং রপ্তানির গতি বাড়বে। তবে অফডকের জন্য লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে কম খরচে ভালো সেবা নিশ্চিত করতে স্পষ্ট শর্ত থাকা প্রয়োজন।

বিজিএমইএ আরও জানিয়েছে, বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস বিমানবন্দরের কার্গো হ্যান্ডলিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে। তাই অফডক ব্যবস্থায় বিমানের সঙ্গে সমন্বয় ও চুক্তির বিষয়টি নীতিমালায় স্পষ্ট থাকা জরুরি।

জানতে চাইলে বিজিএমইএর পরিচালক ফয়সাল সামাদ বলেন, অফডক চালু হলে ডিএইচএল বা ফেডেক্সের মতো কুরিয়ার কোম্পানিগুলো বন্ড লাইসেন্স নিয়ে এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করার পরে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে সরাসরি ডেলিভারি করতে পারবে। তখন আর বিমানের ওপর নির্ভর করতে হবে না। ফলে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে।

১০ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ‘এয়ার এক্সপ্রেস সার্ভিস ডেলিভারি’ বিষয়ক একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ—বিডা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, কাস্টমস এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনসহ আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে জড়িত দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, ইতিমধ্যে এয়ার কার্গো কার্যক্রমকে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আওতায় আনতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) কাস্টমস ও মূল্য সংযোজন কর বিভাগ থেকে ‘এয়ার কার্গো অপারেটরস স্টেশন (এসিওএস) স্থাপন, ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা, তদারকি ও কাস্টমস নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, ২০২৫ ’-এর খসড়াও প্রণয়ন করা হয়েছে।

এয়ার কার্গো অপারেটর’স স্টেশন নীতিমালা চূড়ান্ত ও বাস্তবায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে আইআরডি সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, ‘অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে যত দ্রুত সম্ভব বিধিমালা চূড়ান্ত করে তা বাস্তবায়ন করতে চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আইএফআইসি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের জন্য মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি তাদের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের জন্য অ্যান্টি মানি লন্ডারিং (এএমএল) ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ (সিএফটি) সংক্রান্ত এক সচেতনতামূলক কর্মশালার আয়োজন করেছে। গত ২১ ডিসেম্বর ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এই কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।

ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. মেহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে পরিচালনা পর্ষদের সকল সদস্য এই কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।

এএমএল ও সিএফটি কমপ্লায়েন্স নিশ্চিতকরণে পরিচালনা পর্ষদের ভূমিকা এবং প্রাসঙ্গিক নিয়ন্ত্রক নির্দেশনা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিই ছিল এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য। কর্মশালায় আলোচিত প্রধান বিষয় ছিল—ব্যাংকিং খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে এবং মানি লন্ডারিং তদারকিতে পরিচালনা পর্ষদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) কর্তৃক বিভিন্ন সময় সিস্টেম চেক পরিদর্শন থেকে প্রাপ্ত পর্যবেক্ষণসমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা। দেশের সাম্প্রতিক মানি লন্ডারিং পরিস্থিতি এবং রিপোর্টিং সংস্থা হিসেবে ব্যাংকের করণীয়।

কর্মশালায় রিসোর্স পারসন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএফআইইউর অতিরিক্ত পরিচালক রেজওয়ানুর রহমান ও যুগ্ম পরিচালক জুয়াইরিয়া হক।

এ ছাড়া ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মো. এবতাদুল ইসলাম, কাজী মো. মাহবুব কাশেম এফসিএ, মো. গোলাম মোস্তফা ও মুহাম্মদ মনজুরুল হক উপস্থিত ছিলেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মনসুর মোস্তফা, উপব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এই সচেতনতামূলক সেশনে অংশ নেন।

আইএফআইসি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, ব্যাংকিং কার্যক্রমে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে এ ধরনের কর্মশালা নিয়মিত আয়োজন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএসআরএম স্টিলসের ২৩তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ০৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশের শীর্ষস্থানীয় ইস্পাত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিএসআরএম স্টিলস লিমিটেডের ২৩তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশিকা অনুযায়ী ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় শেয়ারহোল্ডাররা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ঘোষিত ৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ (ক্যাশ ডিভিডেন্ড) সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন করেছেন। কোম্পানির চেয়ারম্যান আলী হোসেন আকবরআলী এফসিএ সভায় সভাপতিত্ব করেন।

সভায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের নিরীক্ষিত হিসাব বিবরণী এবং পরিচালকমণ্ডলীর প্রতিবেদন অনুমোদিত হয়। শেয়ারহোল্ডাররা ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য কোম্পানির পরিচালক পুনর্নিয়োগ এবং নিরীক্ষক নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন করেন।

কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমীর আলীহোসেন পরিচালকমণ্ডলীর বিবরণী উপস্থাপন করেন এবং কোম্পানির ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে শেয়ারহোল্ডারদের অবহিত করেন।

বিপুলসংখ্যক শেয়ারহোল্ডার নিজ নিজ বিও (BO) আইডি ব্যবহার করে ওয়েব লিংকের মাধ্যমে এই ভার্চুয়াল সভায় সরাসরি অংশ নেন। নিরীক্ষিত হিসাব বিবরণীসহ বিভিন্ন বিষয়ে শেয়ারহোল্ডারদের প্রশ্নের উত্তর দেন কোম্পানি সচিব।

শেয়ারহোল্ডাররা তাঁদের মন্তব্যে কোম্পানির বর্তমান ব্যবস্থাপনা ও পরিচালকমণ্ডলীর প্রতি গভীর আস্থা ও নির্ভরতার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

সভায় কোম্পানির পরিচালকবৃন্দ, কোম্পানি সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে কোম্পানির ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত