Ajker Patrika

বদল সামান্য, সবই আগের মতো

  • বাজেটের আকার (কোটি টাকায়) ৭,৯০,০০০
  • রাজস্ব আয় ৫,৬৪,০০০
  • বাজেটে ঘাটতি ২,২৬,০০০
শাহ আলম খান, ঢাকা 
আপডেট : ০৩ জুন ২০২৫, ০৯: ৫৫
বদল সামান্য, সবই আগের মতো

দেশের ভেঙে পড়া অর্থনীতি সামলাতে মাত্র কয়েক মাস সময় পেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। দু-একটি খাতে কিছুটা স্থিতিশীলতা এসেছে। গন্তব্য তাই এখনো অনেক দূর। কঠিন কাজটি করতে সামনে আছে নানা চ্যালেঞ্জ।

সেই বাস্তবতা মেনে নিয়ে আর মনে করিয়ে দিয়ে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য বাজেট দিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। গতকাল সোমবার তিনি ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন। টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেছেন, ‘বৈষম্যহীন ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ার প্রত্যয় নিয়ে আমরা এগোচ্ছি।’

এই একটি মন্তব্যেই যেন উঠে আসে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় চিত্র—কীভাবে এক গভীর সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই চলছে, আর কেন এই যাত্রাপথ এখনো দীর্ঘ।

তবে এই কঠিন বাস্তবতা মোকাবিলায় অর্থ উপদেষ্টা বাজেট যেভাবে সাজালেন, তার খুব প্রশংসা করতে পারছেন না অর্থনীতিবিদ, বিশ্লেষক এবং রাজনৈতিক দলগুলো। তারা বলছে, এই বাজেট যেন আগের সরকারেরই ধারাবাহিকতা। এতে সেই অর্থে পরিবর্তন আছে খুবই সামান্য। শুধু এই খাতে কিছু কম, ওই খাতে কিছু বেশি।

তবে বাজেট বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, সংকটের দিকগুলোতে সরকারের চোখ খোলা আছে। তিনি জানান, সরকার কাজ করছে তিনটি ‘শূন্য’ লক্ষ্য নিয়ে—শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য কার্বন। লক্ষ্য—এমন একটি সমাজ গড়া, যেখানে সবাই সুন্দর জীবন পাবে এবং বৈষম্য থেকে মুক্ত থাকবে।

প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ৩ দশমিক ৬ শতাংশ।

তবে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বাজেটের রাজস্ব পদক্ষেপকে ‘সাহসী’ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর মতে, এবার আয়কর অব্যাহতির ক্ষেত্রে যাদের সাধারণত ধরা যায় না, তাদেরও করের আওতায় আনার চেষ্টা করা হয়েছে। ভ্যাট অব্যাহতিও ব্যাপকভাবে কমানো হয়েছে। অন্যদিকে, দেশীয় শিল্পের সুরক্ষার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আমদানি প্রতিযোগিতা মোকাবিলায় যেভাবে উদ্যোক্তারা আগে শুল্ক-ভ্যাটের মাধ্যমে সুরক্ষা পেতেন, তা-ও কমানো হয়েছে। ফলে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে সরকার কিছু কঠিন কিন্তু স্পষ্ট পদক্ষেপ নিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, দেশের উদ্যোক্তারা এসব পরিবর্তনে কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখান।

সবকিছু মিলিয়ে এখনো পক্ষাঘাতগ্রস্তই বলা যায় দেশের অর্থনীতিকে। সরকারের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার জায়গা এখনো মূল্যস্ফীতি; যা কিছুটা কমলেও নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক চাপ আর বাজারভিত্তিক ডলার বিনিময় হারের প্রভাব নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন অনিশ্চয়তা।

রেমিট্যান্স ছাড়া প্রায় সব অর্থনৈতিক সূচকই দুর্বল। কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না, বিনিয়োগে নেই আস্থা। আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতিও অনুকূল নয়। সাধারণ মানুষের আয় বাড়ছে না, অথচ ব্যয় লাগামহীন। দেশের ৮০ শতাংশ সম্পদ মাত্র ১০ শতাংশ মানুষের হাতে। ফলে প্রবৃদ্ধির সুফলও পৌঁছায় না সবার কাছে। আর এখন তো সেই প্রবৃদ্ধিও নিম্নমুখী।

চলমান বাস্তবতার প্রতিফলনেই এবারের বাজেট কিছুটা ভিন্ন ধাঁচের। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রস্তাবিত বাজেট আগের বছরের তুলনায় ছোট; এবং প্রবৃদ্ধি নয়, এবার জোর দেওয়া হয়েছে মানুষের সামগ্রিক কল্যাণে। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব—জীবিকার নিরাপত্তা, শিক্ষা-স্বাস্থ্য, সুশাসন, কর্মসংস্থান ও নাগরিক সুবিধা—এই বাজেটের কেন্দ্রে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, জলবায়ু পরিবর্তন এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ-সুযোগ সামাল দেওয়ার প্রস্তুতির কথাও এসেছে বাজেটে। পাশাপাশি জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং ভেঙে পড়া নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কারকেই দেওয়া হয়েছে অগ্রাধিকার।

তাই এবারের বাজেট শুধু আয়-ব্যয়ের হিসাব নয়, বরং এটি সরকারের জন্য একধরনের কৌশলগত রূপরেখা। মূল লক্ষ্য—সংযমী ব্যয়, কাঠামোগত সংস্কার এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। সরকার চাইছে সাম্প্রতিক চাপ মোকাবিলা করে, আইএমএফের প্রতিশ্রুতি পালন করে এবং দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার চালিয়ে একটি টেকসই ও স্থিতিশীল ভবিষ্যতের ভিত্তি তৈরি করতে।

এটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম এবং দেশের ৫৫তম বাজেট। ৮৮ পৃষ্ঠার বক্তব্যে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার ব্যয় পরিকল্পনার মাধ্যমে সংকটময় অর্থনীতি থেকে উত্তরণ এবং জনজীবনে স্বস্তি ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে তিনি ব্যবসা এবং সাধারণ মানুষের ওপর বাড়তি চাপের ইঙ্গিতও দিয়েছেন। মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য থাকলেও তার বাস্তবায়ন কৌশল ছিল খুবই সাধারণ ও পুরোনো ধারার। আয় বাড়াতে গ্রামীণ কর্মসংস্থানের কথা বলা হলেও সার্বিক কর্মসংস্থান বা বিনিয়োগে গতি আনতে বড় কোনো কর্মসূচি দেওয়া হয়নি। করমুক্ত আয়সীমাও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে ভবিষ্যৎ সরকারের বিবেচনায় ছেড়ে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মাদ আবদুল মজিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিশেষ সময়ে বিশেষ সরকার বিশেষ বাজেট দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের নিজস্ব কোনো অ্যাজেন্ডা নেই। এ জন্য তারা অসুস্থ অর্থনীতিকে সুস্থ ধারায় ফেরাতে বাজেট দিয়েছে।

কালোটাকা ও অপ্রদর্শিত অর্থের বিষয়ে হঠাৎ কড়া অবস্থানের আভাস মিললেও বাজেটে আগের মতোই আবাসনসহ কয়েকটি খাতে এসব অর্থ ব্যবহারের সুযোগ বহাল রাখা হয়েছে। স্বচ্ছতা নিশ্চিতে জমি-ফ্ল্যাটের নিবন্ধন বাজারমূল্য অনুযায়ী নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয়া হলেও এতে করহার কমানোর কথা বলা হয়েছে, যা খাতটিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং কালোটাকার প্রবাহ বাড়াবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

অন্যদিকে, বাজেটে ঘাটতি ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা বা জিডিপির ৩.৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে, যার বড় অংশ ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা—তোলা হবে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে। এর মধ্যে ব্যাংক খাত থেকেই নেওয়া হবে ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা। এতে বিনিয়োগ সংকোচন ও সুদহার বৃদ্ধির ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। পাশাপাশি বৈদেশিক ঋণনির্ভরতা অব্যাহত থাকায় বছরে সুদ-আসলে সরকারের ব্যয় দাঁড়াবে প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকা।

বাজেট ছোট করা হলেও সরকারের পরিচালন ব্যয় আগের তুলনায় বেড়েছে। পরিচালন ব্যয়ের ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে সামাজিক সুরক্ষা ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা, সুদ পরিশোধ খাতে ১ লাখ ২২ হাজার কোটি, ভর্তুকি ৮৯ হাজার ১৬২ কোটি, বেতন-ভাতায় ৯৭ হাজার কোটি এবং অন্যান্য খাতে ১ লাখ ৩৫ হাজার ১০৭ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা।

বাজেটে মানবসম্পদ উন্নয়ন ও তরুণ উদ্যোক্তা তৈরিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সফল যুব উদ্যোক্তাদের ঋণসীমা বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, পাশাপাশি তরুণদের জন্য প্রথমবারের মতো ১০০ কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠনের প্রস্তাব এসেছে। একই উদ্দেশ্যে ‘তারুণ্যের উৎসব’ আয়োজনে আরও ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের জন্য আত্মকর্মসংস্থান প্রকল্পসহ ৪০৫ কোটি টাকার আলাদা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিজ্ঞানভিত্তিক ও কর্মমুখী শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষায় ৩৫ হাজার ৪০৩ কোটি, মাধ্যমিক-উচ্চশিক্ষায় ৪৭ হাজার ৫৬৩ কোটি এবং কারিগরি ও মাদ্রাসাশিক্ষায় ১২ হাজার ৬৭৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে ৪১ হাজার ৯০৮ কোটি এবং কৃষি ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। দরিদ্রদের স্বাস্থ্যসেবা, টিকাদান ও সামাজিক সুরক্ষা জোরদারেও বরাদ্দ বেড়েছে।

সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় ভাতার পরিমাণ এবং উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছে। বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ বিভিন্ন ভাতা মাসিক ৫০-১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে মাথাপিছু সহায়তা বাড়ানো হয়েছে। স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডের আওতায় ৫৭ লাখ পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মেয়াদ ছয় মাসে উন্নীত করারও প্রস্তাব রয়েছে।

বিদেশি বিনিয়োগে গতি আনতে বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি থেকে প্রকৃত বিনিয়োগে রূপান্তরের জন্য একটি ট্র্যাকিং সিস্টেম চালুর কথা বলা হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) প্রকল্প বাস্তবায়নে ৫ হাজার ৪০ কোটি টাকার বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

এ ছাড়া শুল্ককাঠামোয় পরিবর্তন এনে স্থানীয় শিল্প সুরক্ষা ও আমদানিনির্ভর পণ্যের ওপর নির্ভরতা কমানোর উদ্যোগ থাকলেও এতে কিছু গোষ্ঠীর সুবিধা এবং বাজারে মূল্য অস্থিরতার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সিপিডির মতে, বাজেটটি অন্তর্বর্তী এবং সংযত ধারায় প্রণয়ন করা হলেও বাস্তবায়ন নির্ভর করবে অর্থনীতির গতি ও প্রবৃদ্ধির বাস্তবতায়।

যেসব খাতে করের চাপ বাড়ছে

কর আদায়ে চাপ বাড়ানো হয়েছে বিভিন্ন খাতে। ‘এম এস প্রোডাক্ট’ উৎপাদনে সুনির্দিষ্ট কর প্রায় ২০% বাড়ানো হয়েছে। নির্মাণসেবায় ভ্যাট ৭.৫% থেকে বাড়িয়ে ১০%, অনলাইন পণ্য বিক্রয়ের কমিশনে ভ্যাট ৫% থেকে ১৫%, কটন সুতা ও কৃত্রিম আঁশের ইয়ার্ন উৎপাদনে সুনির্দিষ্ট কর ৩ টাকা থেকে ৫ টাকা, প্লাস্টিক টেবিলওয়্যার, কিচেনওয়্যার, টয়লেট্রিজে ভ্যাট ৭.৫% থেকে ১৫%, ব্লেড উৎপাদনে ভ্যাট ৫% থেকে ৭.৫% সেলফ কপি ও ডুপ্লেক্স বোর্ডে ভ্যাট ৭.৫% থেকে ১৫% করা হয়েছে। এ ছাড়া ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ১০% সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

ভ্যাট অব্যাহতি: কিছু স্বস্তি, কিছু ধাক্কা

ভোক্তাদের স্বস্তির জন্য কিছু পণ্যে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যেমন ব্যাংকে ১ লাখ টাকার স্থলে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত স্থিতির ওপর আবগারি শুল্ক থাকবে না। এলএনজি আমদানিতে ভ্যাট অব্যাহতি, স্যানিটারি ন্যাপকিন, তরল দুধ, বলপয়েন্ট, ২২ ইঞ্চির বদলে ৩০ ইঞ্চি পর্যন্ত কম্পিউটার মনিটরের উৎপাদন ও ব্যবসা, আইসক্রিমের সম্পূরক শুল্ক ১০% থেকে কমিয়ে ৫% করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে শুক্রবার দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তেল-পেঁয়াজে দাম বাড়তি, সবজিতে ফিরছে স্বস্তি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪০
টাটকা সবজি কিনছেন একজন। গতকাল রাজধানীর হাতিরপুল কাঁচাবাজারে।
টাটকা সবজি কিনছেন একজন। গতকাল রাজধানীর হাতিরপুল কাঁচাবাজারে।

বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।

ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজ ছাড়া বাজারে সবজি, ডিম, মুরগি, আটা, চিনিসহ প্রায় অধিকাংশ পণ্যের দাম কমেছে। বিশেষ করে সবজির বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, রামপুরাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে মানভেদে দাম ছিল ১১০-১২০ টাকা কেজি। নতুন পেঁয়াজের দাম অবশ্য তুলনামূলক কম। খুচরায় পাতাসহ নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি।

জানতে চাইলে রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবার পেঁয়াজ আমদানি না করেই বাজারের চাহিদা মিটে গেছে। এখন আগের মৌসুমের পেঁয়াজের মজুত একেবারেই শেষের দিকে। এই সময় পুরোনো পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেশিই থাকে। তবে এটা বেশি দিন থাকবে না। বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। চাহিদা অনুসার পেঁয়াজ রয়েছে।’

বেড়েছে ভোজ্যতেলের দামও। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯৮ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮৯ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫-১৭৯ টাকা লিটার, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭১-১৭৪ টাকা লিটার।

বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানিগুলো গত এক সপ্তাহে ধীরে ধীরে বাজারে বাড়তি দামে তেল সরবরাহ করেছে। এখনো অনেক দোকানে আগের দামের তেল পাওয়া যায়। তবে বাজারের অধিকাংশ দোকানেই বাড়তি দামের তেল রয়েছে।

গত সপ্তাহ পর্যন্ত খুচরায় কাঁচা মরিচ বিক্রি হতো ১২০-১৫০ টাকা কেজি, তবে চলতি সপ্তাহে দাম কমে ৭০-১০০ টাকা কেজিতে নেমেছে। এ ছাড়া শীতের সবজি হলেও শিমের দাম হঠাৎ বেড়ে ১৫০ টাকার ওপরে উঠেছিল।

সেই শিম এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। ফুলকপি, বাঁধাকপির দাম কমেছে প্রতিটিতে ১০ টাকা। দুই ধরনের কপিই পাওয়া যাচ্ছে ৩০ টাকায়। তবে ভালো মানের ফুলকপি ৫০ টাকা। গত সপ্তাহে একটি কপি কিনতে ৪০-৬০ টাকা লেগেছিল।

দাম কমেছে টমেটোরও। মান ও বাজারভেদে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৪০ টাকা।

দেশি গাজরের সরবরাহ ব্যাপক বেড়েছে বাজারে, এতে দামও কমেছে। প্রতি কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা। তবে আমদানির গাজর আগের মতোই ১২০-১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে বেগুন বিক্রি হয়েছিল ৮০-১০০ টাকা কেজি, যা চলতি সপ্তাহে কমে ৭০-৮০ টাকায় নেমেছে। বাজারে আলুর দাম আগের মতোই প্রতি কেজি ২৫ টাকা রয়েছে।

আমিষের সবচেয়ে বড় উৎস ডিমের দাম আরও কমেছে। ফার্মের মুরগির সাদা ও বাদামি ডিমের দাম কমে ১১০ থেকে ১২৫ টাকা ডজনে নেমেছে। গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৩০ টাকা।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তথ্য বলছে, গত বছর এই সময় ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছিল ১৪০-১৫০ টাকা ডজন। টিসিবি বলছে, গত বছরের তুলনায় ডিমের দাম ৩৫ শতাংশ কমেছে।

ডিমের সঙ্গে কমেছে ফার্মের মুরগির দামও। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম কমে ১৫০-১৭০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০-১৮০ টাকা কেজি।

সেগুনবাগিচা বাজারের ডিম বিক্রেতা নূর ই আলম বলেন, ‘ডিম ও মুরগির বাজার স্বাভাবিক আচরণ করছে না। হঠাৎ দামের এত পতন হচ্ছে কেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। বর্তমানে ডিমের যে দাম, তা গত কয়েক বছরের তুলনায় সবচেয়ে কম।’

ডিম-মুরগির সঙ্গে কিছুটা কমেছে রুই-কাতলা মাছের দামও। বাজারে চাষের এই মাছগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩২০-৪৫০ টাকা কেজি।

মুদিপণ্যের মধ্যে চিনির দাম আগে থেকেই কমেছে। খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা কেজি। চলতি সপ্তাহে নতুন করে কমেছে আটা, মসুর ডাল, ছোলার দাম। খোলা আটার দাম ২-৩ টাকা কমে ৪৫-৪৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ৪৮-৫০ টাকা কেজি। কেজিপ্রতি বড় দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৯৫-১০৫ টাকা। ছোলার দামও কেজিপ্রতি ৫ টাকা কমে ৯৫-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের মামা-ভাগনে মুদিদোকানের বিক্রেতা হারুনুর রশিদ বলেন, রমজান উপলক্ষে পণ্যের আমদানি ব্যাপক বেড়েছে। তাই প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম কমছে। তবে ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজের বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে শুক্রবার দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উত্তরা ব্যাংকের ২৫০তম শাখার উদ্বোধন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল হাসান।

এ ছাড়া অনুষ্ঠানে মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. রবিউল হাসান এবং উপমহাব্যবস্থাপক ও আঞ্চলিক প্রধান (কুমিল্লা অঞ্চল) মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে শুক্রবার দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

টানা চার মাস কমল রপ্তানি আয়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। অর্থাৎ মাসওয়ারি হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানি আয় কমেছে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ, টাকার অঙ্কে এই হ্রাসকৃত রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়ায় ২২ কোটি ৮১ লাখ ডলার।

এবারই প্রথম নয়, আগস্ট থেকে শুরু হওয়া নিম্নমুখী ধারা নভেম্বরে এসে চতুর্থ মাসে পা দিল। জুলাইয়ের শক্তিশালী সূচনার পর রপ্তানি খাত যে ধারাবাহিক গতি অর্জন করেছিল, সেই গতি আগস্টেই থমকে যায়। ওই মাসে আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি কমে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমে আসে। সেপ্টেম্বরেও পতন গভীর হয়—৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। অক্টোবরে সেই হার আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশে।

জুলাইয়ের ব্যতিক্রমী সাফল্যের পর পরবর্তী চার মাস যেন একটানা ঢালু পথ। সেই জুলাইয়ে রপ্তানি আয় ছিল ৪৭৭ কোটি ৫ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি প্রায় ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। কিন্তু এরপর প্রতি মাসেই কমতে কমতে নভেম্বরে এসে রপ্তানি আয়ের ব্যবধান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

সার্বিক চিত্রটি বলছে, অর্থবছরের শুরুতে পাওয়া জোয়ারটি এখন চার মাসের টানা ভাটার মুখে দাঁড়িয়ে।

আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ইপিবির তথ্য পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মিলিয়ে পাঁচ মাসে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ২০০২ কোটি ৮৫ লাখ ডলার; যা আগের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি ঘটেছে মাত্র দশমিক ৬২ শতাংশ। অর্থাৎ পাঁচ মাসের সার্বিক রপ্তানি আয়ের চিত্রও নামমাত্র।

নভেম্বরের সবচেয়ে বড় আঘাত লেগেছে পোশাক খাতে, যেটি দেশের রপ্তানির প্রধান ভরসা। ওই মাসে পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ৩১৪ কোটি ৯ লাখ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। এ সময় নিটওয়্যার খাতে আয় নেমেছে ১৬১ কোটি ৮৪ লাখ ডলারে, আর ওভেনে এসেছে ১৫২ কোটি ২৪ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে নিটওয়্যার আয় ছিল ১৭৩ কোটি ৮২ লাখ ডলার এবং ওভেন ১৫৬ কোটি ৯২ লাখ ডলার।

পোশাকের বাইরে কৃষিপণ্যে রপ্তানি কমেছে ২৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্যে কমেছে ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এ ছাড়া রপ্তানি পতনের তালিকায় রয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত সামগ্রী, হোম টেক্সটাইলস, ফার্মাসিউটিক্যালস, জাহাজ, চিংড়ি ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং। এর মানে হচ্ছে, প্রচলিত এসব খাতেও মন্থরতা স্পষ্ট।

তবে সব বাজারে একই চিত্র নয়। কিছু গন্তব্যে বিপরীত প্রবণতা দেখা গেছে, যা সামগ্রিক মন্দার মধ্যেও আশার সঞ্চার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে ৪ দশমিক ২০ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। উদীয়মান বাজারগুলোর মধ্যেও ইতিবাচক প্রবণতা স্পষ্ট—চীনে রপ্তানি বেড়েছে ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ, পোল্যান্ডে ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ, সৌদি আরবে ১১ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং স্পেনে ১০ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ প্রবণতা সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যেন অনেকটাই ব্যতিক্রমী সাফল্য।

সব মিলিয়ে চিত্রটি দ্বিমুখী। একদিকে ঐতিহ্যগত প্রধান খাতগুলোতে পতন; অন্যদিকে কিছু নতুন বাজারে ইতিবাচক ইঙ্গিত। তবে বড় প্রশ্ন রয়ে যায়, এই বাজার বৃদ্ধি কি পোশাকসহ প্রধান খাতের ধারাবাহিক মন্দাকে সামাল দিতে পারবে?

বর্তমান বাস্তবতা বলছে, বৈচিত্র্য বাড়ানোর পথে অনেক দূর যেতে হবে। উৎপাদন প্রতিযোগিতা, মূল্যের চাপ, বৈদেশিক অর্ডার সংকোচন এবং বিশ্ববাজারের অনিশ্চয়তা, সব মিলিয়ে রপ্তানি খাতে সামনের পথ সহজ নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে শুক্রবার দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিল সিগারেট কোম্পানি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪৮
৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিল  সিগারেট কোম্পানি

পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।

এনবিআর জানায়, তামাক ও তামাকজাত পণ্যের অবৈধ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধে সম্প্রতি কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে এনবিআর। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রের ভিত্তিতে এনবিআরের ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একটি দল ঈশ্বরদীতে অবস্থিত ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।

গোয়েন্দা দলের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ করলেও দীর্ঘদিন ধরে আনুষ্ঠানিক উৎপাদন কার্যক্রম প্রদর্শন না করে গোপনে সিগারেট উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। অভিযানে ৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫৯০ শলাকা জাল ব্যান্ডরোলযুক্ত সিগারেট জব্দ করা হয়, যার বাজারমূল্য ৩৮ লাখ টাকারও বেশি। এসব সিগারেটের বিপরীতে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ২৯ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।

এ ছাড়া ১০ লাখ ২৯ হাজারটি অব্যবহৃত জাল ব্যান্ডরোল বা স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়, যা ব্যবহার করা হলে অতিরিক্ত ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকারও বেশি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া সম্ভব ছিল। প্রতিষ্ঠানটি ৩ লাখ ২২ হাজার ৫০০টি বৈধ ব্যান্ডরোল সংগ্রহ করলেও তা ব্যবহার না করে জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে সিগারেট উৎপাদন ও বিক্রি করছিল।

এনবিআর জানিয়েছে, সব সিগারেট ও উপকরণ আইনানুগভাবে জব্দ করা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনিপ্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। অভিযানে উদ্ধার করা দলিলাদির ভিত্তিতে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটকে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ও বিক্রি কার্যক্রমের ওপর কঠোর নজরদারির জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে শুক্রবার দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত