Ajker Patrika

দুর্নীতি প্রতিরোধের মাধ্যমে চার হাজার কোটি টাকার সাশ্রয় করা হয়েছে: কৃষিসচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
দুর্নীতি প্রতিরোধের মাধ্যমে চার হাজার কোটি টাকার সাশ্রয় করা হয়েছে: কৃষিসচিব

অর্থ ব্যয়ে অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি প্রতিরোধের মাধ্যমে কৃষি খাতে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিসচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান। আজ বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে চার দিনব্যাপী ‘কৃষি ও খাদ্যে রাজনৈতিক অঙ্গীকার’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্ভোধনী সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিসচিব এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরাম (বিএজেএফ) এ সম্মেলনের আয়োজন করে। প্রথম দিনের সেমিনারের শিরোনাম ছিল—‘কৃষির রূপান্তর: দেশীয় উপযোগী কৃষিযন্ত্র ও কৃষিপণ্য রপ্তানি চ্যালেঞ্জ’। বিএজেএফের সাধারণ সম্পাদক আবু খালিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সভাপতি সাহানোয়ার সাইদ শাহীন।

কৃষিসচিব বলেন, ‘অর্থ ব্যয় নিয়ে অব্যবস্থাপনা সম্পর্কে মানুষের মধ্যে যে কানাঘুষা আছে, সেগুলো কিছুটা হলেও দূর করতে পেরেছি। আমরা এমনভাবে পরিকল্পনা নিচ্ছি, যাতে সারের খরচে বছরে দুই থেকে তিন হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়। ইতিমধ্যে সারে চলতি বছরে এক হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি।’

ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, ‘যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের ৬০০ কোটি টাকা সরকারকে ফেরত দেওয়া হয়েছে। কেবল ২০ কোটি টাকা দিয়ে প্রকল্পটি শেষ করা হয়েছে। প্রকল্পে দুর্নীতি কমাতে সার্বিক কৃষিতে বরাদ্দের সাড়ে ছয় হাজারের মধ্যে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। এভাবে গত বছরে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা হয়েছে।’

কৃষির জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার কথা জানিয়ে সচিব বলেন, দেশের কৃষি খাতে সামগ্রিক উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণ নিশ্চিত করতে আগামী ২৫ বছরের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হচ্ছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এ পরিকল্পনার চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তুত করা হবে।

কৃষিসচিব আরও বলেন, ‘সবজির দাম ১০০ টাকা হলেও সেটি সবাই স্বাভাবিকভাবেই নেয়; কিন্তু পেঁয়াজের কেজি ১০০ টাকা হলেই সেটা নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়। কৃষককে কি পেঁয়াজের দাম দিতে হবে না? আগামী তিন বছরের মধ্যে আদা ও পেঁয়াজে বাংলাদেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে চাই।’

একই সঙ্গে আলুর দাম না পেয়ে কৃষকের আত্মহত্যা করার ঘটনায় আক্ষেপ প্রকাশ করে এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, ‘আলুর দাম কমে গেছে, আমার খুব কষ্ট হয়।’

বিএজেএফ সভাপতি সাহানোয়ার সাইদ শাহীন বলেন, ‘কৃষক ও কৃষির স্বার্থ সুরক্ষায় রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রয়োজন। প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে এ বিষয়ে স্পষ্ট ও দীর্ঘমেয়াদি কৌশল থাকতে হবে। আমাদের লক্ষ্য হলো—কৃষিকে টেকসই করতে রাজনীতির সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন করা। কৃষির রূপান্তর টেকসই করতে উন্নত প্রযুক্তি ও কৃষকবান্ধব নীতি প্রণয়ন করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) যান্ত্রিক পদ্ধতিতে ধান চাষাবাদ প্রকল্পের পরিচালক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম। এ সময় তিনি বলেন, ‘কৃষি যান্ত্রিকীকরণের ধারায় ‘‘মেড ইন বাংলাদেশ’’ বাস্তবায়নে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। শ্রীলঙ্কা, জাপানসহ বিভিন্ন দেশের প্রযুক্তিগত সহযোগিতায় স্থানীয়ভাবে মানসম্পন্ন কৃষিযন্ত্র উৎপাদন এখন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে, যা দেশের কৃষিতে সময় সাশ্রয়, ব্যয় হ্রাস ও নতুন শিল্প তৈরিতে বড় ভূমিকা রাখবে। দেশের কৃষিযন্ত্র বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়—এমন পরিস্থিতি পরিবর্তন করে স্থানীয়ভাবে মানসম্পন্ন যন্ত্র তৈরির সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ব্রি বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে দেশের মাটিতে প্রযুক্তি বানানোর সক্ষমতা অর্জনই এখন মূল লক্ষ্য।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ব্রির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা দুরুল হুদা বলেন, দেশে আধুনিক কৃষিযন্ত্র উৎপাদনের সবচেয়ে বড় বাধা লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতের অদক্ষতা ও অবকাঠামোগত দুর্বলতা। কম্বাইন হারভেস্টার ও রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টারের মতো অত্যাধুনিক কৃষিযন্ত্র ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ হিসেবে তৈরি হওয়ার পথে বড় বাধা তৈরি হচ্ছে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশে কোনো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি, যেখানে ইঞ্জিন তৈরি হয়। অতীতে যেগুলো ছিল—মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি, ডিজেল প্ল্যান্ট বা চট্টগ্রাম স্টিল মিল—সেগুলো পরিচালনায় ব্যর্থ হওয়ায় শিল্পভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। বেসরকারি খাতেও সক্ষমতা বাড়েনি। ফলে আধুনিক কৃষিযন্ত্র, বিশেষত কম্বাইন হারভেস্টার ও রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার উৎপাদনে দেশ পিছিয়ে আছে।

আরও এক বিশেষ অতিথি পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের বলেন, শুধু উৎপাদন নয়, কৃষিকে একটি লাভজনক, শিক্ষিত ও ডিগনিফায়েড পেশা হিসেবে গড়ে তোলাই এখন প্রধান উদ্দেশ্য। পিকেএসএফ মূলত সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে কাজ করছে। বর্তমান সময়ে ওই সংস্থাগুলো বছরে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা মাঠপর্যায়ে বিতরণ করছে, যার প্রায় ৪০ শতাংশই কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহার হয়। বাংলাদেশের মোট কৃষি অর্থায়নের প্রায় ৮৫ শতাংশ এমএফআই (ক্ষুদ্রঋণদাতা প্রতিষ্ঠান) সেক্টর দিয়ে হচ্ছে, তাই ক্ষেত্রটি এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

আরও এক বিশেষ অতিথি ব্রির মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান বলেন, ব্রির মূল ম্যান্ডেট হচ্ছে ধানভিত্তিক সব ধরনের গবেষণা এগিয়ে নেওয়া। দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই গবেষণাকাজ কয়েক দশক ধরে অব্যাহত রয়েছে। স্বাধীনতার পর দেশের প্রধান চাহিদা ছিল খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সে সময় প্রতি হেক্টরে দেড় থেকে দুই টন ধান উৎপাদন হতো, সেখানে এখন আধুনিক জাত ও প্রযুক্তির কারণে অনেক জায়গায় ৮ থেকে ১০ টন পর্যন্ত উৎপাদন হচ্ছে। হাইব্রিড ধানের জাত উদ্ভাবনে জোর দেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে ধানের গড় ফলন হেক্টরে ১০ টনের ওপরে যাবে।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল বলেন, বিশ্ব অ্যাগ্রো প্রসেসিং বাজার ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের হলেও বাংলাদেশের অংশ মাত্র ১ বিলিয়ন ডলার। এখানে বড় সম্ভাবনা রয়েছে। তবে খাতে ভ্যারাইটি ও মানের ঘাটতি আছে, ৪০০ প্রতিষ্ঠান থাকলেও সবাই উন্নতমানের পণ্য উৎপাদন করতে পারছে না। কৃষিপণ্য রপ্তানিতে ১৮টি দপ্তরের অনুমতির জটিলতা সময় ও খরচ বাড়ায়, তাই ওয়ান স্টপ সার্ভিস ও কান্ট্রি ব্র্যান্ডিং জরুরি। কোয়ালিটি কন্ট্রোল ও আন্তর্জাতিক মানের ল্যাবের সংকট রয়েছে, অনেক পরীক্ষা বিদেশে করাতে হয় এবং বিএসটিআইয়ের মান সব দেশে গ্রহণযোগ্য নয়। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে গ্রামপর্যায় থেকেই কাজ শুরু করার তাগিদ দেন তিনি।

প্রবন্ধ উপস্থাপন করে রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, গত পাঁচ বছরে আম রপ্তানি বেড়েছে তিন গুণ। আর এই সময়ে আম আমদানি শূন্যে নেমেছে। বর্তমানে ৩৮টি দেশে আম রপ্তানি হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি আম রপ্তানি হচ্ছে যুক্তরাজ্যে। আম রপ্তানিতে ইউরোপের বাজার দখলের সুযোগ রয়েছে। তবে পরিবহন ও বিমানভাড়ার কারণে সেভাবে আম রপ্তানি বাড়ানো যাচ্ছে না। অনেক সময় বেশি ভাড়া দিলেও বিমানে জায়গা পাওয়া যায় না। কৃষিপণ্য রপ্তানিতে বিমানে নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দ থাকা উচিত।

বিএজেএফের চার দিনের এ সম্মেলনে কো-স্পন্সর হিসেবে রয়েছে আস্থা ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এ ছাড়া সহযোগিতায় রয়েছে এসিআই অ্যাগ্রিবিজনেসেস, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, লাল তীর সিডস লিমিটেড, ওয়ার্ল্ড পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন—বাংলাদেশ ব্র্যাঞ্চ, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বন অধিদপ্তর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মৎস্য অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ছয় মাসে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি

ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে জানান, ডিসেম্বর মাসে কেনা ডলারের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ৯২ কোটি ডলার এবং চলতি অর্থবছর ধরে মোট কেনা হয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাইয়ে প্রথম ডলার কেনা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার, আগস্টে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ, সেপ্টেম্বরেই তা বেড়ে ৯২ কোটি ৯০ লাখে পৌঁছায়। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বরে অবশ্য অনেকটাই কমে ১৪ কোটি ২০ লাখ এবং ৫ কোটি ৪০ লাখে নেমে আসে। ডিসেম্বরেই তার বড় উল্লম্ফন ঘটে, কেনার পরিমাণ দাঁড়ায় ৯২ কোটি ১০ লাখ ডলারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং চ্যানেলের শক্তিশালীকরণ এবং অনলাইনে আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার মনিটরিংয়ের ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। এ ছাড়া ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ হওয়ায় ব্যবসার আড়ালে ডলার পাচার কমেছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতে জমে থাকা অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

আগের অর্থবছরগুলোর সঙ্গে তুলনায় এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেতার ভূমিকায়, যেখানে অতীতের বছরগুলোতে বড় অঙ্কে বিক্রি হতো। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি হয়েছিল ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন, ২০২২-২৩ এ ছিল ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন, ২০২৩-২৪ এ ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন এবং ২০২৪-২৫ এ ১ দশমিক ১২৪ বিলিয়ন ডলার। এই পরিবর্তন বাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

বর্তমান খোলাবাজারে ডলারের দর ১২৪-১২৫ টাকার মধ্যে, যেখানে গত বছরের এই সময়ে তা ছিল ১৩১ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পণ্য আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ কম। অনলাইনে বাজার নজরদারি এবং ওভার/আন্ডার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণে আসায় পণ্যের আড়াল থেকে ডলার পাচারও অনেক কমেছে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার ক্রয় বাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এর ফলে আমদানি, বিনিয়োগ ও বাজার ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে।’

সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, পাচার কমে আসা—সব মিলিয়ে ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ডলার বিক্রেতা নয়; বরং ক্রেতার ভূমিকায়, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এনবিআর কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে টাকা দাবি, সতর্কবার্তা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরের ব্যক্তিগত সহকারী মো. কাউসারের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দিয়েছে এনবিআর।

এনবিআর জানায়, প্রতারকেরা মিথ্যা পরিচয় ব্যবহার করে ফোন, মেসেজসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। তবে মো. কাউসারের সঙ্গে এ কর্মকাণ্ডের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সর্বসাধারণকে এই প্রতারক চক্র সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। কেউ এ ধরনের ফোনকল বা বার্তার সম্মুখীন হলে নিকটস্থ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

জিডিতে মো. কাউসার উল্লেখ করেন, ২৩ ডিসেম্বর এনবিআরের উপ-কর কমিশনার রইসুন নেসা (বর্তমানে যুগ্ম কর কমিশনার) তাঁকে জানান, কাউসারের নাম ব্যবহার করে ০১৭০১৮৯০৩৮৭ নম্বর থেকে কল করে তাঁর বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ আছে’ উল্লেখ করে টাকা দাবি করা হয়। বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয় ০১৩২৮০৮৩২১৬ নম্বরে। পরে দেখা যায়, একই চক্র আরও অনেক কর্মকর্তার কাছ থেকে একই কৌশলে অর্থ আদায় করার চেষ্টা করেছে। পরে কাউসার জানতে পারেন আরও অনেক কর্মকর্তার কাছ থেকে একই নম্বর থেকে টাকা দাবি করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা কে বা কারা তাঁর পরিচয় দিয়ে অজ্ঞাতসারে বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে, তা জানা নেই বলে উল্লেখ করেন কাউসার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর অঞ্চল-কুষ্টিয়ার পরিদর্শী রেঞ্জ-৪-এর যুগ্ম কর কমিশনার রইসুন নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাকে কাউসারের নামেই ফোন করে। আমি বিষয়টি কাউসারকে জানাই। পরে আর ফোন করেনি। কোনো কথাও হয়নি।’

জানতে চাইলে মো. কাউসার বলেন, কোনো একটা চক্র এটা করছে। এর আগে চেয়ারম্যান স্যারের হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করে টাকা চেয়েছিল বিভিন্নজনের কাছ থেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুক্তরাষ্ট্র থেকে এল আরও ৫৭ হাজার টন গম

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জি-টু-জি চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
জি-টু-জি চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম নিয়ে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। আজ রোববার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় নগদ ক্রয় চুক্তির মাধ্যমে এই গম আমদানি করা হয়েছে। জি-টু-জি চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রথম চালানে ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম দেশে এসেছে। এর মধ্যে ৩৪ হাজার ১৩৪ টন চট্টগ্রাম বন্দরে এবং অবশিষ্ট ২২ হাজার ৭৫৬ টন মোংলা বন্দরে খালাস করা হবে।

খাদ্য মন্ত্রণালয় জানায়, জাহাজে রক্ষিত গমের নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। গমের নমুনা পরীক্ষা শেষে দ্রুত গম খালাসের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর আগে আরেক চুক্তিতে (জি-টু-জি) এরই মধ্যে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানি সম্পন্ন হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে ওয়ালটন পণ্যের ক্রেতাদের হাতে উপহার হস্তান্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ওয়ালটন পণ্য কিনে ফ্রিজ, টিভি উপহার পাওয়া ক্রেতাদের সঙ্গে চিত্রনায়ক ও ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিন খান। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
ওয়ালটন পণ্য কিনে ফ্রিজ, টিভি উপহার পাওয়া ক্রেতাদের সঙ্গে চিত্রনায়ক ও ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিন খান। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

ইলেকট্রনিকস ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স খাতের সুপারব্র্যান্ড ওয়ালটনের চলমান ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-২৩-এ দেশজুড়ে ওয়ালটন পণ্য কিনে গ্রাহকেরা পাচ্ছেন সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সাইড বাই সাইড ফ্রিজসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য ফ্রি ও নিশ্চিত উপহার। গত ২৫ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই ক্যাম্পেইনে প্রতিদিন অসংখ্য ক্রেতার হাতে উপহারের পণ্য তুলে দিচ্ছে ওয়ালটন।

এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলের ওয়ালটন প্লাজা ও ডিস্ট্রিবিউটর শোরুম থেকে ফ্রিজ ও টিভি কিনে ফ্রি পাওয়া সাইড বাই সাইড ফ্রিজ ও স্মার্ট টিভি ৯ ক্রেতার হাতে তুলে দিয়েছে ওয়ালটন। পণ্য ফ্রি পাওয়া ক্রেতারা হচ্ছেন—পটিয়ার সাজ্জাদ হোসেন, বাঁশখালীর রহিমা আক্তার, ফটিকছড়ির জহির উদ্দীন, রাউজানের অরুন কান্তি দাস, লক্ষ্মীপুর রামগঞ্জের কবির হোসেন, মিরসরাইয়ের মো. আছলাম, রাঙামাটির যতিন চাকমা, দোহাজারীর জাকির হোসেন ও সীতাকুণ্ডের মো. জোবায়ের।

গত মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বন্দর নগরীর একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সৌভাগ্যবান ক্রেতাদের হাতে উপহার তুলে দেন জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ও ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিন খান। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের চিফ ডিভিশনাল অফিসার ইমরোজ হায়দার খান।

উপহারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে চিত্রনায়ক আমিন খান বলেন, দেশের কোটি কোটি গ্রাহকের, ক্রেতার আস্থা ও ভালোবাসায়ই ওয়ালটন দেশের শীর্ষ ও টেক জায়ান্ট হয়ে উঠেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে ইলেকট্রনিকস খাতের আমদানিনির্ভরতা ব্যাপক হারে হ্রাস পেয়ে সাশ্রয় হচ্ছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। সমৃদ্ধ হয়েছে দেশীয় শিল্প খাতের। দেশীয় অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করতে সবাইকে দেশীয় পণ্য ক্রয় ও ব্যবহারের আহ্বান জানান তিনি।

আমিন খান জানান, ওয়ালটনের গুণগতমানের পণ্য শুধু দেশীয় ক্রেতাদেরই নয়; বৈশ্বিক ক্রেতাদেরও আস্থা ও মন জয় করে নিতে সক্ষম হচ্ছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত ওয়ালটন ব্র্যান্ডের পণ্য এখন বিশ্বের ৫০টির বেশি দেশে রপ্তানি ও বাজারজাত করা হচ্ছে। বিশ্বের শতাধিক দেশে ব্র্যান্ড বিজনেস সম্প্রসারণের টার্গেট নিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে ওয়ালটন।

অনুষ্ঠানে সাধারণ ক্রেতাদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী উপহারের পণ্য তুলে দেওয়ায় ওয়ালটনকে ধন্যবাদ জানান বিজয়ীরা।

কর্মকর্তারা জানান, সিজন-২৩-এর আওতায় ক্রেতারা দেশের যেকোনো ওয়ালটন প্লাজা, পরিবেশক শোরুম কিংবা অনলাইনে ই-প্লাজা থেকে ফ্রিজ, টিভি, এসি, ওয়াশিং মেশিন ও বিএলডিসি ফ্যান কেনার পর পণ্যটির ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করা হচ্ছে। এরপর ক্রেতাদের মোবাইলে ওয়ালটন থেকে উপহার পাওয়ার এসএমএস পাঠানো হচ্ছে। পাশাপাশি ওয়ালটনের ক্রেতাদের জন্য তৈরি ‘আমার আওয়াজ’ মোবাইল অ্যাপ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারী ক্রেতাদের জন্যও এবারের ক্যাম্পেইনে বাড়তি সুবিধা রয়েছে। আগামী ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ওয়ালটন পণ্য ক্রয়ে ক্রেতাদের জন্য এই বিশেষ সুবিধা থাকছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত