Ajker Patrika

পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা: শর্তের জালে মার্কিন চাপ

  • ভূরাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য চাপ তৈরির অস্ত্র পাল্টা শুল্ক।
  • যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈরী দেশগুলোর সম্পর্কে প্রভাব পড়ার ঝুঁকি।
  • দর-কষাকষিতে লুকোচুরির অভিযোগ।
সাহিদুল ইসলাম চৌধুরী, ঢাকা 
আপডেট : ১৯ জুলাই ২০২৫, ১৮: ৪২
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের মধ্যে দ্বিতীয় দফা বৈঠক হয়। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের মধ্যে দ্বিতীয় দফা বৈঠক হয়। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ

রপ্তানি পণ্যে আরোপ করা পাল্টা শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চলছে বাংলাদেশের। এই আলোচনায় দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের দিকগুলো বড় আকারে সামনে এলেও বিষয়টিকে দেশটি ভূরাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য চাপ তৈরির একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে পর্যবেক্ষণ সরকারি ও বেসরকারি বিশ্লেষকদের।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাংলাদেশের জন্য মেনে নেওয়া প্রায় অসম্ভব, এটা বুঝেই যুক্তরাষ্ট্র রপ্তানির ক্ষেত্রে পাল্টা শুল্কের নামে ৩৭ শতাংশ সম্পূর্ণ নতুন শুল্ক আরোপের কথা জানায়। এই প্রস্তাবকে বড় মনস্তাত্ত্বিক চাপ হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২ এপ্রিল অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান মুহাম্মদ ইউনূসকে দেওয়া চিঠিতে পাল্টা শুল্কের বিষয়টি জানান। একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেন, একটি দেশের সরকারপ্রধানকে প্রেসিডেন্টের লেখা চিঠি হোয়াইট হাউস সামাজিক মাধ্যমে দিয়ে দিচ্ছে। এতে ট্রাম্প মার্কিন সমাজে প্রশংসিত হলেও যে দেশের জন্য শুল্কের প্রস্তাব করা হয়েছে, সেখানে মনস্তাত্ত্বিক ও রাজনৈতিক চাপ তৈরি হচ্ছে।

পাল্টা শুল্ক নিয়ে দর-কষাকষির ভিত্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরের (ইউএসটিআর) ২১ মের চিঠির ছত্রে ছত্রে যেসব শর্ত রাখা হয়েছে, তাতেও নানামুখী চাপ তৈরির উপকরণ দেখছেন বিশ্লেষকেরা। যুক্তরাষ্ট্রের শর্তে বাণিজ্য, জাতীয় নিরাপত্তা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, বিভিন্ন পণ্য এবং সেবার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের মান ও সনদ বিনা প্রশ্নে মেনে নেওয়া, কিছু ক্ষেত্রে আমদানির অনুমতি চাওয়ার ক্ষেত্রে আপত্তি, মার্কিন ব্যবসায়ীদের চাহিদামতো অনাপত্তিপত্র দেওয়ার বাধ্যবাধকতা চালু করাসহ এমন অনেক বিষয় আছে, যেগুলো অনেক দেশের জন্যই মেনে নেওয়া কঠিন।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে সামরিক যন্ত্রপাতি, উড়োজাহাজ, জ্বালানি ও ভোজ্যতেল, গম বিক্রি ব্যাপকভাবে বাড়াতে চায়। এটা তারা চাইতেই পারে। কিন্তু একই সঙ্গে চীনসহ অন্য দেশ থেকে একই পণ্য আমদানি কমানোর দাবি; যুক্তরাষ্ট্রকে যে পণ্যে শুল্কছাড় দেওয়া হবে, একই পণ্যে অন্য দেশকে শুল্কছাড় না দেওয়ার শর্ত; যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার অজুহাতে বাংলাদেশের বন্দর, জেটি ও জাহাজে চীনের তৈরি বিশেষ ধরনের সরঞ্জাম ব্যবহার নিষিদ্ধ করা; বিভিন্ন ব্যবসা ও পেশার ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ আরোপ প্রস্তাব; অনেক ক্ষেত্রে আমদানি-রপ্তানির তথ্য মার্কিন কর্তৃপক্ষকে দেওয়া, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি সই করে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাকে (ডব্লিউটিও) জানানোসহ বহু শর্ত দিয়েছে দেশটি।

শুল্ক নিয়ে আলোচনার মাঝপথে প্রধান উপদেষ্টাকে ফোন করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি শুল্কের আলোচনায় গতি আনা এবং বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে দ্রুত গণতন্ত্রে ফেরার তাগিদ দেন। এসবের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা সংলাপসহ বিভিন্ন পর্যায়ের আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় মিয়ানমারের রাখাইনের সঙ্গে স্থল অথবা জলপথে ‘মানবিক চ্যানেল’ চালু করাসহ কৌশলগত স্বার্থের নানা দিকও টেনে আনছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে ‘চাপ’ তৈরির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকায় দেশটির দূতাবাসের মুখপাত্র আজকের পত্রিকাকে বুধবার বলেন, ‘চলমান দ্বিপক্ষীয় দর-কষাকষির বিষয়ে দূতাবাস কোনো মন্তব্য করে না।’

কী চায় যুক্তরাষ্ট্র

সরকারি কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র শুল্কের বিষয়টি সামনে রেখে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের নামে একটি ব্যাপকভিত্তিক কাঠামোগত চুক্তি চায়। এর মাধ্যমে নিজের আয় বাড়ানোর পাশাপাশি এমন একটি ব্যবস্থা চালু করতে চায়, যার মাধ্যমে দেশটি অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া ও আমদানি-রপ্তানি প্রবাহ এবং কৌশলগত কেনাকাটার ওপর নজরদারি করার সুযোগ পেতে পারে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সার্বভৌম এখতিয়ার লঙ্ঘনের ঝুঁকি দেখছেন স্থানীয় বিশ্লেষকেরা। তাঁরা বলছেন, কাঠামোগত চুক্তিতে এমন ধারা যুক্ত হলে দেশটি ভূরাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের বৈরী মনোভাব আছে, এমন দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ওপর দেশটি ভবিষ্যতে নিয়ন্ত্রণ আরোপের সুযোগ নিতে পারে। এতে চীন ও রাশিয়ার মতো দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা আছে।

আলোচনায় লুকোচুরির অভিযোগ

অংশীজন, বিশ্লেষক এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এমন একটি বহুমুখী, গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল কূটনৈতিক বিষয়কে শুরুতে আর দশটি সাধারণ আন্তর্জাতিক বিষয়ের মতো সামাল দিতে চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের দুই প্রভাবশালী ব্যক্তি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এ ধরনের জটিল বাণিজ্যিক বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় দর-কষাকষির মূল দায়িত্ব থাকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তাদের ওপর; আর রাজনৈতিক ও কৌশলগত দিক দেখে থাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় শুরুতে এ দুটি মন্ত্রণালয়কেই ‘পাল্টা শুল্কের’ আলোচনা থেকে দূরে রাখে। সরকারি পর্যায়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ছাড়াই এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রে যান প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ সহকারী লুৎফে সিদ্দিকী। তাঁর নেতৃত্বে মার্কিনদের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিনসহ অন্যরা। এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার গোপনীয়তা বজায় রাখতে ‘নন-ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট’ (এনডিএ) সইয়ের জন্য চাপ দেয়। এনডিএ সই হয় ১২ জুন। কিন্তু পাল্টা শুল্কের আলোচনা কিছুতেই না এগোনোয় অবস্থা বেগতিক দেখে এই প্রক্রিয়ায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে যুক্ত করা হয় ট্রাম্পের চিঠি আসার আড়াই মাস পর। ইউএসটিআর প্রথমবারের মতো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অনলাইনে সভা করে ১৭ জুন। কিন্তু ২৬ জুন ওয়াশিংটনে মুখোমুখি আলোচনার বিষয়টি সামনে এলে পাঠানো হয় প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানকে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও গত ৩০ জুন মুহাম্মদ ইউনূসকে ফোন করে বাণিজ্যের আলোচনায় গতি আনার তাগিদ দেন। পাশাপাশি বাংলাদেশে দ্রুততম সময়ে জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফেরার ওপরও তিনি জোর দেন। বর্তমান স্থানীয় রাজনৈতিক বাস্তবতায় দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আলোচনার সঙ্গে দ্রুত নির্বাচনের তাগিদ যুক্ত করাকে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ হিসেবে দেখছেন কূটনীতিকেরা।

রুবিওর তাগিদের পর ৩ জুলাই খলিলুর রহমানের সঙ্গে ওয়াশিংটনের বৈঠকে যোগ দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। খলিলুর রহমান আলোচনা ‘ভালোভাবে’ এগোনোর দাবি করলেও বিষয়টি যে আসলে তেমন ছিল না, তা স্পষ্ট হয়ে যায় তিনি ওয়াশিংটনে থাকা অবস্থায়ই মুহাম্মদ ইউনূসকে দেওয়া ট্রাম্পের দ্বিতীয় চিঠিতে। ৮ জুলাইয়ের এই চিঠিতে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বর্তমানে কার্যকর (১৫ শতাংশ) শুল্কের অতিরিক্ত ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আগামী ১ আগস্ট থেকে আরোপ করার কথা জানান ট্রাম্প।

এরপর ৯ জুলাই থেকে আনুষ্ঠানিক আলোচনার দ্বিতীয় পর্যায়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তবে বহুমুখী এই দর-কষাকষির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তথ্য, বিভিন্ন সরকারি কর্তৃপক্ষের মতামত নেওয়া এবং অংশীজনদের সঙ্গে বোঝাপড়ার মারাত্মক ঘাটতির মুখে বাণিজ্য উপদেষ্টাকে আলোচনা অসমাপ্ত রেখে পরামর্শের জন্য ঢাকায় ফিরে আসতে হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের তোলা বিভিন্ন বিষয়ে সবার সঙ্গে আলোচনার পর দেশের একটি ‘অবস্থানপত্র’ আগামী সপ্তাহের শুরুতে তৈরি করার কথা বলছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তৃতীয় দফা বৈঠকের সম্মতি মিললে তাঁর আগামী সপ্তাহেই সেখানে যাওয়ার কথা রয়েছে। বাংলাদেশ চায় চলতি জুলাইয়ের মধ্যে বিষয়টির ফয়সালা করতে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে গত মঙ্গলবারের পরামর্শমূলক সভায় যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান। তিনি বলেন, এনডিএর অজুহাত দেখিয়ে অংশীজনসহ কারও সঙ্গে কথা না বলে সরকার দুই দফা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করেছে। এখন তৃতীয় দফা বৈঠকের আগে পরামর্শের জন্য সভা ডাকা হলেও খোলাখুলি বলছে না, তাদের কোন বিষয়ে কী ধরনের পরামর্শ দরকার। এমন অবস্থায় বিশেষজ্ঞ ও অংশীজনদের ধারণা করে কথা বলতে হচ্ছে।

আলোচনায় বাংলাদেশের মৌলিক নীতিগত অবস্থান কী, এমন প্রশ্নে এক সরকারি কর্মকর্তা বাণিজ্য উপদেষ্টার একটি মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি করেন। উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি নত হতে রাজি। কিন্তু কতটা নত হলে ভেঙে পড়ব না, সেটা তো বুঝতে হবে।’

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আনা পণ্যে বাংলাদেশ বর্তমানে গড়ে ৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। এই শুল্ক প্রায় পুরোপুরি তুলে দেওয়া হতে পারে। সরকারের হিসাব অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রকে শুল্কছাড় দেওয়া হলে রাজস্ব যে পরিমাণ কমবে, তার চেয়ে ‘পাল্টা শুল্ক’ অন্তত অর্ধেকে নামিয়ে এনে দেশটিতে বাজার ধরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। এর বাইরে সরকারিভাবে গম, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি), উড়োজাহাজ ও এর যন্ত্রাংশ, ভোজ্যতেল এবং তুলা আমদানি বাড়ানোর কথা বিবেচনা করছে সরকার।

বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের একজন সদস্য আজকের পত্রিকাকে বলেন, ইউএসটিআরের সঙ্গে আলোচনায় উভয় পক্ষ একমত হলেও সেটাই চূড়ান্ত ধরে নেওয়ার সুযোগ সম্ভবত নেই। বিষয়টি হোয়াইট হাউসে যাবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঠিক করবেন, বাংলাদেশের জন্য ‘চূড়ান্ত পাল্টা শুল্ক’ ঠিক কত হবে।

টার্গেট চীন

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কী উদ্দেশ্যে এত দেশের সঙ্গে শুল্ক-যুদ্ধ শুরু করেছে, এর কৌশলগত দিকগুলো কী, সম্ভবত অন্তর্বর্তী সরকার তা শুরুতে ধরতে পারেনি। ট্রাম্প শুল্ক বাড়িয়ে নিজ দেশের আয় বাড়ানোর কথা বললেও আসলে তারা আরও দুটি উদ্দেশ্য আছে—প্রথমত, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) ভিত্তিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে অকার্যকর করে দেওয়া। এতে ট্রাম্প নিজের শর্তে বাংলাদেশের মতো অর্থনৈতিক ও কৌশলগত দিক থেকে নাজুক অবস্থানে থাকা দেশগুলোসহ পুরো বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার সুযোগ দেখছেন।

চলমান আলোচনায় লিখিতভাবে দেওয়া যেসব প্রস্তাব নিয়ে কথা হচ্ছে, সেগুলোর বাইরেও ডালপালা ছড়াতে পারে, এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট হুমায়ুন কবির বলেন, রুলস অব অরিজিনে যুক্তরাষ্ট্রমুখী পণ্যে বাংলাদেশে ৪০ শতাংশ মূল্য সংযোজনের যে শর্ত দেওয়া হয়েছে, তা চীনকে আটকানোর একটি উপায়। একই উপায়ে অনেকগুলো দেশে চীনের রপ্তানিতে লাগাম টেনে দেশটিকে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল করা গেলে যুক্তরাষ্ট্র ভবিষ্যতে কৌশলগত দিক থেকেও দীর্ঘমেয়াদি নানা রকম সুবিধা পেতে পারে।

সাবেক এই কূটনীতিক আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবারকার আলোচনায় যেসব বিষয় তুলছে, সেগুলোতে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংস্কার, শ্রমমান, মৌলিক অধিকার রক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা দরকার হতে পারে। এমন ব্যাপক সংস্কারের প্রস্তুতি ও শক্তি—কোনোটাই দেশের নেই। তিনি বলেন, ‘অন্তত আগামী ২০ বছরের মধ্যে পরিবর্তন আনার একটি বিশ্বাসযোগ্য পরিকল্পনা এবং পথরেখা দেওয়া গেলে হয়তো যুক্তরাষ্ট্র কিছুটা সুযোগ দেবে। কিন্তু সরকারের মেয়াদ আছে আর মাত্র কয়েক মাস। এই নিশ্চয়তা কে দেবে?’

আলোচনার শুরুতে বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দূরে রাখা প্রসঙ্গে হুমায়ুন কবির সরকারের কাজকর্মে কৌশলগত স্বচ্ছতার অভাবের কথা বলেন। দুই মন্ত্রণালয়কে দূরে রাখা ‘মারাত্মক ভুল’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে পরবর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলো থেকে আসার কথা। কিন্তু সরকার তাদের সঙ্গেও পরামর্শ করা দরকার মনে করছে না। এতে বড় ধরনের তালগোল পাকিয়ে ফেলার ঝুঁকি আছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দর-কষাকষিতে সুবিধা পাওয়ার মতো বড় কোনো উপায় (লিভারেজ) হাতে না থাকায় আলোচনায় শেষ পর্যন্ত কী মিলবে, সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা দেখছেন বিশ্লেষকেরা। প্রস্তুতির ঘাটতি থাকায় এ ক্ষেত্রে কিছুটা ‘ভাগ্যের’ ওপর নির্ভর করতে হতে পারে, এমনটা মনে করছেন তাঁরা।

দীর্ঘ মেয়াদে বিপুল নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা

স্থানীয় বিশ্লেষকেরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ‘পাল্টা শুল্কের’ বিষয়ে যে সিদ্ধান্তই নিন না কেন, তা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিকসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে বড় রকম প্রভাব ফেলতে পারে। বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে দেওয়া শুল্ক ভিয়েতনাম (২০ শতাংশ), ইন্দোনেশিয়া (১৯ শতাংশ) এবং ভারতের মতো প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বেশি হলে এখানে রপ্তানি আয় বেশ কমতে পারে।

বিজিএমইএর প্রেসিডেন্ট মাহমুদ হাসান খান ও স্থানীয় বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান আলোচনায় ভালো ফল না এলে দেশের পুরো অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার ঝুঁকি আছে। অনেক শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে বহু শ্রমিকের বেকার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এর পরিণতিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ নানা রকম সামাজিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ভারতের সঙ্গে একই বিষয়ে ভূরাজনৈতিক মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা চলছে। চীনের সঙ্গে দুই দেশেরই বৈরিতার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের জন্য পাল্টা শুল্কের যে হার ঠিক করবে, বাংলাদেশের হার তার চেয়ে বেশি হলে স্থানীয় শিল্প ও রপ্তানি বাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন গত বুধবার বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। দেশটির দূতাবাসের ফেসবুক পোস্ট অনুযায়ী তাঁদের আলোচনার প্রসঙ্গ ছিল দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ ও আনুষঙ্গিক বিষয়।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ প্রায় ২৫০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। রপ্তানি করেছে ৮৭৬ কোটি ডলারের পণ্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নতুন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুব কর্মসংস্থানে ১৮৩৯ কোটি টাকা ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান ও আয়ের সুযোগ বাড়াতে বাংলাদেশকে ১৫ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার ঋণ অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১ হাজার ৮৩৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা। নারী এবং জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী নিম্ন আয়ের যুবক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দিয়ে এই অর্থ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

আজ বুধবার বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। অনানুষ্ঠানিক খাত কর্মসংস্থান পুনরুদ্ধার ও অগ্রগতি প্রকল্পের আওতায় এ ঋণ দেওয়া হবে।

বিশ্বব্যাংক জানায়, এই প্রকল্পের মাধ্যমে নতুন করে প্রায় ১ লাখ ৭৬ হাজার যুবকের জন্য কর্মসংস্থান ও আয়ের সুযোগ তৈরি হবে। এর আগে প্রকল্পটির আওতায় ২ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ সুবিধা পেয়েছেন। নতুন অর্থায়নের ফলে অংশগ্রহণকারীরা দক্ষতা প্রশিক্ষণ, শিক্ষানবিশ কর্মসূচি, উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং ক্ষুদ্রঋণের সুযোগসহ বিভিন্ন সহায়তা পাবেন। এতে তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা কর্মসংস্থান ও ব্যবসা সম্প্রসারণে বিদ্যমান বাধা অতিক্রম করতে পারবেন।

প্রকল্পটির একটি বড় অংশ নারীর ক্ষমতায়ন ও জলবায়ু সহনশীল জীবিকার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে মানসম্মত ও সাশ্রয়ী শিশু যত্নসেবার সুযোগ, পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সম্প্রদায়ভিত্তিক জীবিকা সহায়তা।

বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, ‘একটি ভালো চাকরি একটি জীবন, একটি পরিবার এবং একটি সম্প্রদায়কে বদলে দিতে পারে। কিন্তু প্রতিবছর শ্রমবাজারে প্রবেশ করা অনেক তরুণ বাংলাদেশি কাজ খুঁজে পায় না। কাজের মান, দক্ষতার ঘাটতি ও দক্ষতার অমিল বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে আছে।’

তিনি আরও জানান, নতুন এই অর্থায়ন বিশেষ করে নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর তরুণদের বাজার–প্রাসঙ্গিক দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ অর্জনে সহায়তা করবে।

বিশ্বব্যাংক আরও জানায়, অতিরিক্ত অর্থায়নের ফলে প্রকল্পটির কার্যক্রম শহরের বাইরে গ্রামীণ এলাকাতেও সম্প্রসারিত হবে। এতে প্রান্তিক যুবক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা লক্ষ্যভিত্তিক সহায়তা পাবেন। পাশাপাশি নারীদের প্রশিক্ষণ ও স্টার্টআপ অনুদানের মাধ্যমে গৃহভিত্তিক শিশু যত্নসেবা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে, যা নারী শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ বাড়াবে এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র সামাজিক সুরক্ষা অর্থনীতিবিদ ও প্রকল্পের টিম লিডার আনিকা রহমান বলেন, ‘এই নতুন অর্থায়নের মাধ্যমে প্রমাণিত উদ্যোগগুলো সম্প্রসারণ, ক্ষুদ্রঋণের সুযোগ বাড়ানো এবং শিশু যত্নের মতো উদ্ভাবনী সমাধান চালু করা সম্ভব হবে। এতে আরও বেশি তরুণ ও নারী তাদের সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে একটি স্থিতিশীল ভবিষ্যৎ গড়তে পারবেন।’

বিশ্বব্যাংক জানায়, প্রকল্পটি ইতিমধ্যেই ইতিবাচক ফল দেখিয়েছে। শিক্ষানবিশ কর্মসূচি সম্পন্ন করা অংশগ্রহণকারীদের ৮০ শতাংশের বেশি তিন মাসের মধ্যেই কর্মসংস্থান নিশ্চিত করেছেন। একই সঙ্গে তরুণ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা আয় ও ব্যবসা পরিচালনায় উন্নতির কথা জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নতুন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রমজান উপলক্ষে খেজুর আমদানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক হ্রাস

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৩৯
দীর্ঘ সময় রোজা রাখার পর পর দুটি বা তিনটি খেজুর শরীরে দ্রুত শক্তি এবং প্রাকৃতিক শর্করা জোগায়। ছবি: ভিজিট সৌদি ডট কম
দীর্ঘ সময় রোজা রাখার পর পর দুটি বা তিনটি খেজুর শরীরে দ্রুত শক্তি এবং প্রাকৃতিক শর্করা জোগায়। ছবি: ভিজিট সৌদি ডট কম

রমজান মাস উপলক্ষে খেজুর আমদানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক কমিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আজ বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।

এনবিআর জানায়, ধর্মপ্রাণ জনগণের আবেগের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে খেজুরের মূল্য সাধারণের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসার লক্ষ্যে আসন্ন রমজান মাস উপলক্ষে খেজুর আমদানিতে বিদ্যমান আমদানি শুল্ক ৪০ শতাংশ কমানো হয়েছে।

এনবিআর আরও জানায়, পবিত্র রমজান মাসে খেজুরের সরবরাহ ও বাজারমূল্য স্বাভাবিক রাখার উদ্দেশ্যে খেজুর আমদানিতে কাস্টমস ডিউটি ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করে গতকাল মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। এই অব্যাহতি আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

এ ছাড়া বিগত বাজেটে আমদানি পর্যায়ে অগ্রিম আয়কর-সংক্রান্ত বিধিমালা সংশোধন করে খেজুরসহ সব ফল আমদানির ওপর প্রযোজ্য অগ্রিম আয়কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। খেজুর ও অন্যান্য ফল আমদানিতে গত বছর অগ্রিম আয়করে যে ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছে, তা এ বছরও বহাল আছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রত্যাশা, খেজুর আমদানিতে আমদানি শুল্ক এবং অগ্রিম আয়করে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ছাড় দেওয়ার কারণে আসন্ন রমজান মাসে খেজুরের সরবরাহ এবং বাজারমূল্য সাধারণ ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নতুন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাড়ল মেট্রোরেলের টিকিটে ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ০৮
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর ভ্যাট অব্যাহতির সময়সীমা বেড়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) মেট্রোরেল সেবার ওপর ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) অব্যাহতির মেয়াদ আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়িয়েছে। মঙ্গলবার এনবিআর এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।

এনবিআর জানায়, মেট্রোরেল সেবার ওপর মূল্য সংযোজন করের বিদ্যমান অব্যাহতি চালু রাখার জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে জনস্বার্থে এই অব্যাহতির মেয়াদ ৩০ জুন ২০২৬ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।

মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হবে ৩১ ডিসেম্বর।

ভ্যাট আইন অনুযায়ী, যেকোনো শীতাতপনিয়ন্ত্রিত রেলের টিকিটে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের বিধান আছে। পুরোপুরি শীতাতপনিয়ন্ত্রিত এবং গণপরিবহন হওয়ায় মেট্রোরেলের ওপরও এই ভ্যাট আরোপিত হয়। তবে মেট্রোরেল চালুর শুরু থেকেই এর মালিক কোম্পানি ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) অনুরোধে এই সেবার ওপর ভ্যাট আরোপ করা হয়নি।

এর আগে ১১ ডিসেম্বর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নতুন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইবিএলের ‘এক্সিলেন্স ইন বিজনেস অ্যাওয়ার্ড’ পেল ফার্স্টট্রিপ

বিজ্ঞপ্তি
ইবিএলের ‘এক্সিলেন্স ইন বিজনেস অ্যাওয়ার্ড’ পেল ফার্স্টট্রিপ

দেশের অন্যতম সেরা বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) কাছ থেকে এক্সিলেন্স ইন বিজনেস অ্যাওয়ার্ডস জিতল ফার্স্টট্রিপ। ইস্টার্ন ব্যাংকের গত এক বছরে প্রবৃদ্ধি ও ডিজিটাল রূপান্তর-যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ‘এক্সিলেন্স ইন অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি’ পুরস্কার অর্জন করে ফার্স্টট্রিপ।

এক্সিলেন্স ইন বিজনেস ইমার্জিং ক্যাটাগরিতে অনলাইন ট্রাভেল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ফার্স্টট্রিপের অগ্রগতি ও উদ্ভাবনের স্বীকৃতি হিসেবেই এই সম্মান দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর ইউনাইটেড কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত এক জমকালো অনুষ্ঠানে তাদের শীর্ষ পার্টনার ও মার্চেন্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্মাননা জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় অনলাইন ট্রাভেল প্ল্যাটফর্ম ফার্স্টট্রিপ সব সময় চায় গ্রাহকদের ভ্রমণ হোক সাশ্রয়ী, সহজ ও আনন্দদায়ক। ফার্স্টট্রিপ ইতিমধ্যে নিজেদের একটা রিলায়েবল মডার্ন আর ফিউচার রেডি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে।

ফার্স্টট্রিপের হেড অব অপারেশন (বি-টু-সি) মীর তাজমুল হোসেনের হাতে ইবিএল আয়োজিত ‘স্কাইস্ফিয়ার: ডিজিটাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ অনুষ্ঠানে পুরস্কার তুলে দেন ইবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রেজা ইফতেখার।

ফার্স্টট্রিপের জন্য এই স্বীকৃতি একটি বড় মাইলস্টোন। ইনোভেশন এবং সঠিক পার্টনারশিপের মাধ্যমে ফার্স্টট্রিপ বাংলাদেশের ট্রাভেল খাতে নিজেদের অবস্থান শক্ত করেছে। এই পুরস্কারের পেছনে ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসির সঙ্গে ফার্স্টট্রিপের শক্তিশালী পার্টনারশিপের বড় ভূমিকা রয়েছে। দুই প্রতিষ্ঠানের প্রচেষ্টায় ফার্স্টট্রিপ গ্রাহকদের জন্য পেমেন্ট সলিউশনকে করে তুলেছে স্মার্ট ও সহজ।

ফার্স্টট্রিপের প্রতিনিধিরা এই অর্জনে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, এই সাফল্য পুরো টিম এবং পার্টনারদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল। বিশেষ করে ইবিএলের সহযোগিতা আমাদের ডিজিটাল যাত্রাকে আরও মসৃণ করেছে। ইনোভেশন ও গ্রাহকের আস্থাকে পুঁজি করে ফার্স্টট্রিপ বাংলাদেশের ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রিতে আরও বড় লক্ষ্য অর্জন করতে চায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নতুন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত