Ajker Patrika

রাজশাহীতে দাবি আদায়ে আন্দোলনে আইএইচটির শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮: ৪৩
রাজশাহীতে দাবি আদায়ে আন্দোলনে আইএইচটির শিক্ষার্থীরা

ঝোপঝাড়ে ভরপুর গোটা ক্যাম্পাস। ল্যাব আছে কিন্তু যন্ত্রপাতি নেই। তাই হাতেকলমে কিছু শেখার সুযোগ নেই শিক্ষার্থীদের। মেয়েদের জন্য নেই কমনরুম কিংবা আলাদা শৌচাগার। ক্লাস কখন হবে তার কোনো রুটিন নেই। আগের রাতে মেসেঞ্জারে শিক্ষার্থীদের জানানো হয় ক্লাসের সময়। শিক্ষকেরা ক্যাম্পাসে আসেন যখন যার খুশি। এভাবেই দিনের পর দিন চলছে রাজশাহীর ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি)।

এ সব বিশৃঙ্খলার প্রতিবাদে হঠাৎ ফুঁসে উঠেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নগরীর লক্ষ্মীপুর টিবিপুকুর এলাকায় প্যারামেডিকেল নামে পরিচিত এই প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেন। আন্দোলনে সব বিভাগের প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী অংশ নেন। 

তারা ১১ দফা দাবি জানান। এই আন্দোলন করতে গিয়ে হঠাৎ দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ছাত্রলীগের মধ্যস্থতায় শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের সঙ্গে বসে কিছু দাবি আদায় করেন। বাকি দাবিগুলোও পূরণে অধ্যক্ষ চেষ্টা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, এখানে ৭টি বিভাগে প্রায় ১ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন। এ ছাড়া বিএসসি ইন মেডিকেল টেকনোলজির শিক্ষার্থীরাও পড়াশোনা করেন। কিন্তু ল্যাবে তেমন যন্ত্রপাতি নেই। এক্স-রেসহ কিছু যন্ত্রপাতি থাকলেও তা রাখার জায়গা নেই। ফলে এসব ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা হাতেকলেম শেখার সুযোগ পায় না। এক ঘণ্টা পর পর ক্লাস হয়। ঝোপঝাড়ে ভরা এই ক্যাম্পাসে এক ঘণ্টা শিক্ষার্থীরা কোথায় বসবেন সে জায়গা নেই। মেয়েদের কমন রুমও নেই। নেই আলাদা শৌচাগার। ফলে তারা সমস্যায় পড়েন।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, এই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষসহ অন্যান্য শিক্ষকেরা কখন আসেন কখন যান তার কোনো ঠিক নেই। ক্লাসের ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের আগে থেকে কোনো রুটিন দেওয়া হয় না। আগের রাতে মেসেঞ্জার গ্রুপে ক্লাসের সময় জানান শিক্ষক। তারা ইচ্ছেমতো ক্লাস নেন। কারও মোবাইল ফোন নষ্ট কিংবা ইন্টারনেট না থাকলে ওই শিক্ষার্থী ক্লাস মিস করেন। এই সব অনিয়মের বিরুদ্ধে তারা আন্দোলন করেন। বিএসসি পর্বের শিক্ষার্থীরাও তাদের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়েছেন। 

আন্দোলন চলাকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন রেডিওলজি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রুবাইদা তন্দ্রা ও ডেন্টাল বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বীথি খাতুন। এ সময় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।

পরে দুপুর ২টার দিকে শিক্ষার্থীদের এসব দাবি-দাওয়া নিয়ে আইএইচটির অধ্যক্ষ ডা. ফারহানা হকের সঙ্গে বসেন মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম ও সাধারণ সম্পাদক ডা. সিরাজুম মুবীন সবুজ। এ সময় আইএইচটি ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরাও ছিলেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী তারা অধ্যক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন।

এরপর তাৎক্ষণিকভাবে কর্মচারীদের একটি শৌচাগারকে শুধু ছাত্রীদের জন্য বরাদ্দ করা হয়। পড়ে থাকা একটি কক্ষকে মেয়েদের কমন রুম হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের আগেই ক্লাস রুটিন দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে সিটি করপোরেশনের সহায়তা চাইবেন বলে জানান অধ্যক্ষ। তিনি বলেন, প্রশাসনিক বিষয়গুলো তিনি দেখে দ্রুতই সমাধান করবেন। আর অবকাঠামোগত যে উন্নয়ন দরকার তার জন্য রাজশাহীর জনপ্রতিনিধি এবং গণপূর্তের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। অধ্যক্ষের এসব আশ্বাসের প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করেন।

আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকারাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. সিরাজুম মুবীন সবুজ বলেন, ‘রাজশাহীতে এটি খুবই বড় একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু পড়াশোনার মান ভালো না। শিক্ষার্থীরা এখানে দক্ষ হয়ে উঠতে পারে না। অথচ চিকিৎসা ব্যবস্থায় তাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আমি নিজে একজন ডাক্তার। রোগী এলেই আগে বলি এটা-ওটা টেস্ট করে আনেন। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট হিসেবে এই টেস্টগুলো করেন আইএইচটি থেকে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীরাই। তাই তাদেরও দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা দরকার। তা না হলে রিপোর্ট ভালো হবে না। চিকিৎসা ভালো হবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আজকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য এসেছিলাম। অধ্যক্ষ তিনটি দাবি তাৎক্ষণিকভাবে মেনে নিয়েছেন। অন্যগুলো বাস্তবায়নের জন্য যা করা দরকার তিনি করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি রাজশাহীর সিটি মেয়র ও সংসদ সদস্যের সঙ্গে বসবেন বলেছেন।’

আইএইচটির ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী ইসরাইল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা মোট ১১টি দাবি জানিয়েছি। কয়েকটা ইতিমধ্যে পূরণ হয়েছে। বাকিগুলো পূরণের ব্যাপারে অধ্যক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা কিছুদিন অপেক্ষা করব। তারপর সব দাবি পূরণ না হলে আবার আন্দোলন করব।’

অধ্যক্ষ ডা. ফারহানা হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এসেছিলেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের নেগোসিয়েশন হয়ে গেছে। এখন কোনো সমস্যা নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হবিগঞ্জে রত্না বেইলি সেতু ভেঙে ট্রাক আটকা, দুর্ভোগে যাত্রীরা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

হবিগঞ্জ-বানিয়াচং আঞ্চলিক সড়কের রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে ওই পথে সব ধরনের যান চলাচল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শতাধিক যাত্রী ও ওই পথে চলাচলকারীরা। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, জাফলং থেকে ছেড়ে আসা বানিয়াচংগামী পাথরবোঝাই একটি ট্রাক ব্রিজের ওপর ওঠামাত্রই ব্রিজের দুটি পাটাতন ভেঙে যায়। মুহূর্তেই ট্রাকের পেছনের দুটি চাকা ধসে পড়ে এবং পুরো ট্রাকটি ব্রিজে আটকে যায়।

এতে দীর্ঘ লাইনে আটকা পড়ে যাত্রীবাহী বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, টমটম, প্রাইভেট কারসহ অসংখ্য যানবাহন। বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, রোগী এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ব্যবসায়ীরা।

দুর্ঘটনার পর ব্রিজের একপাশ থেকে অন্যপাশে যাওয়ার জন্য যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে ভাঙা অংশ অতিক্রম করছে। এতে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘ট্রাকটি ব্রিজে উঠতেই জোরে শব্দ হয়। একটু পরই দেখি পাটাতন নিচে ধসে গেছে। ভাগ্য ভালো যে ট্রাকটি পুরোপুরি নিচে পড়ে যায়নি। তবে এখন তো ও পথে চলাচলকারীরা আটকা পড়ে আছে।’

যাত্রীরা জানান, রত্না বেইলি ব্রিজটি বহুদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভারী যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের কারণে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে—এমন আশঙ্কা দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। এদিকে যাত্রীদের দাবি, এখানে যেন বেইলি ব্রিজের পরিবর্তে দ্রুত স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়, যাতে প্রতিদিনের এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ‘ব্রিজটি দ্রুত মেরামত করার কাজ চলছে। পাথরবোঝাই ট্রাকটিতে বেশি লোড থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

নরসিংদী প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে আব্দুর রশিদ (৪০) নামের এক অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

আব্দুর রশিদ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি ছিলেন অটোরিকশাচালক; তবে নিয়মিত আড়িয়াল খাঁ নদে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করা ছিল তাঁর নেশা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৬টার দিকে ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর পাড়ে রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। লাশের পাশেই মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি ছিল। পরে স্বজনেরা এসে লাশ শনাক্ত করেন। আব্দুর রশিদের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, তিনি দুষ্কৃতকারীর হামলার শিকার হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির ভাই কাজল মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১১-১২টা পর্যন্ত অটোরিকশা চালিয়ে তারপর নদীর পাড়ে বসে মাছ শিকার করে বাড়ি ফিরত ভাই। কিন্তু গতকাল রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। সকালে খবর পেয়ে নদীর পাড়ে এসে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই।’

নিহত ব্যক্তির ছেলে হৃদয় বলেন, ‘রাতে বাড়ি না ফেরায় কল দিলে ফোন বন্ধ পাই। সকালে খবর শুনে নদীর পাড়ে এসে বাবার মরদেহ, মোবাইল ও অটোরিকশা পড়ে থাকতে দেখি।’

বেলাব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি পিবিআইকে জানানো হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬৭ বছর পর রামেক হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অবশেষে ৬৮ বছরে পা দিতে চলা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে এলেও ভর্তির সুযোগ ছিল না। গুরুতর রোগীদের কিছু ক্ষেত্রে মেডিসিন বিভাগে রাখা হলেও, পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ডের অভাবে এতদিন অনেককেই ফিরিয়ে দিতে হতো।

হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর এই প্রথম ২৫ শয্যার একটি সুসজ্জিত মনোরোগ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই নতুন ওয়ার্ডটি গড়ে তোলা হয়েছে।

এই ওয়ার্ডে রোগী ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট বিন্যাস রাখা হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য ৭ টি, শিশু-কিশোরদের জন্য ৫টি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য ৩টি শয্যা সংরক্ষিত রয়েছে। এ ছাড়া রোগীদের চিকিৎসার সুবিধার জন্য থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।

এই ওয়ার্ডটি চালুর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ ছিল কলেজের স্বীকৃতি বজায় রাখা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চ মাসেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধি দল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। পরিদর্শনকালে মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমে যাওয়ার এবং অ্যাক্রিডিটেশনে বড় ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এতে করে এই কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা বা পড়াশোনা করার সুযোগ কমে যেত। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এমন একটি ওয়ার্ড জরুরি ছিল।

কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুরোধ শুনে সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ দ্রুত এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন এবং গত বুধবার এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটি সত্যিই অবাক হওয়ার মতো বিষয়। আমরা প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও উন্নত চিকিৎসা নিতে পারবেন।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর উদ্যোগেগত ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করা হয়।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে একজনও সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হয়নি, যেখানে আগে প্রায় প্রতিদিনই এই রোগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটতো। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত