Ajker Patrika

নেত্রকোনায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে বোরো ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে ২ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান নষ্ট হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ সময় ঝড়ে বাড়িঘর বিধ্বস্তের খবর পাওয়া গেছে। গাছপালা উপড়ে পড়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

আজ শনিবার উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ফসলের ক্ষতি নিরূপণে কাজ চলছে। এর আগে গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে হঠাৎ করে ঝড় ও শিলাবৃষ্টি শুরু হয়।

স্থানীয় কৃষকেরা জানান, উপজেলায় কাঁচা-পাকা অবস্থায় থাকা বোরো ধান জমিতে পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক জমিতে ধানের শীষ ভেঙে পড়ায় কৃষকদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। বিশেষ করে, উপজেলার লেংগুরা, চেংনী, গোড়াগাঁও, চৈতানগর, খারনৈ, বিশ্বনাথপুর, সেনপাড়া, বামনগাঁও, বাউশাম, উত্তর রানিগাও, গোবিন্দপুর, সুন্দরীঘাট, রামপুরসহ প্রায় ২৩টি গ্রামের তিন হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ঝড়ের কারণে কয়েকটি কাঁচাঘর ও টিনের চাল উড়ে গিয়ে ঘরবাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে।

উপজেলার খারনৈ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওবায়দুল হক বলেন, ‘আমরা ধানগুলো কাটার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। গত রাতের ৩০ মিনিটের ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে সব শেষ হয়ে গেছে।’

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে প্রায় ২ হাজার হেক্টর বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি নিরূপণে মাঠপর্যায়ে কাজ করছে উপজেলা কৃষি অফিসের লোকজন। খুব দ্রুত ক্ষতির তালিকা তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিস্ফোরক মামলায় আওয়ামী ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জেলে

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি 
গ্রেপ্তার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবীর উদ্দিন মোল্লা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবীর উদ্দিন মোল্লা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনার চাটমোহরে আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে চাটমোহর থানার পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ও রাতে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আজ শুক্রবার দুপুরে বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবীর উদ্দিন মোল্লা (৭০) এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও পৌর সদরের মধ্য শালিখা মহল্লার বাসিন্দা মনোয়ার হোসেন (৫৪)।

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল আলম গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল বেলা সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের বামনগ্রাম নিজ বাড়ি থেকে আওয়ামী লীগ নেতা নবীর উদ্দিন মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ছাড়া একই দিন রাতে মধ্য শালিখা মহল্লার নিজ বাড়ি থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই দুজনের বিরুদ্ধে চাটমোহর থানায় বিস্ফোরক মামলা রয়েছে। আজ সকালে তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রামেকে মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। অনেকের ক্ষেত্রে ভর্তি রাখার প্রয়োজন থাকলেও সেটি সম্ভব হতো না। কিছু কিছু রোগী রাখা হতো মেডিসিন বিভাগেই।

এবার প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর হাসপাতালটিতে পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। এ ওয়ার্ডে ২৫টি শয্যা আছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য সাতটি, শিশু-কিশোরদের জন্য পাঁচটি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য তিনটি শয্যা সংরক্ষিত। এ ছাড়া রোগীদের থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার সৃষ্টি করা হয়েছে এ ওয়ার্ডে।

রামেক হাসপাতালের সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদের উদ্যোগে হাসপাতালের পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই ওয়ার্ড করা হয়েছে। গত বুধবার তিনি এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধিদল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। তারা মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমবে। এ ছাড়া মেডিকেল কলেজের অ্যাক্রেডিটেশনেও সমস্যা হতে পারে। তখন এ কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে পড়াশোনা করতে যাওয়ার সুযোগ কমবে। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এই ওয়ার্ডটি জরুরি ছিল।

তাই রাজশাহী মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে এই ওয়ার্ড চালু করার জন্য হাসপাতাল পরিচালকের কাছে অনুরোধ করা হয়। সবকিছু শুনে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন। ওয়ার্ডে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্স দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এ হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটিই অবাক করার বিষয়। প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও চিকিৎসা নিতে পারবে।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহাম্মদ রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি। এরপর তিনি হাসপাতাল ও রোগীদের কল্যাণে নতুন অনেক উদ্যোগ নিয়ে বাস্তবায়ন করেছেন। হাসপাতালকে করে তুলেছেন রোগীবান্ধব। বাড়িয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার মান। বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।

মানসিক রোগীদের জন্য নতুন ওয়ার্ড চালুর আগে গেল ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য হাসপাতালে বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করেন শামীম আহাম্মদ। এরপর এখন পর্যন্ত হাসপাতালে একজন সাপে কাটা রোগীরও মৃত্যু হয়নি। আগে প্রায় প্রতিদিনই সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হতো এ হাসপাতালে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মান্নাকে ৩৮ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ পরিশোধে ‘কলব্যাক নোটিশ’

শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ২০
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ফাইল ছবি
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ফাইল ছবি

আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার বিরুদ্ধে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা খেলাপি ঋণ পরিশোধে ‘কলব্যাক নোটিশ’ জারি করেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, বগুড়া শাখা। গত বুধবার ইসলামী ব্যাংক, বগুড়া শাখার প্রধান মো. তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরে এ নোটিশ ইস্যু করা হয়।

নোটিশে বলা হয়েছে, ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করা হলে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। ব্যাংকের নোটিশ অনুযায়ী, ২০১০ সালে ২২ কোটি টাকার বিনিয়োগ অনুমোদন করা হলেও মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা পরিশোধ না করায় বর্তমানে মোট বকেয়া দাঁড়িয়েছে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। নোটিশে বলা হয়, আফাকু কোল্ড স্টোরেজ একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও মান্না ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণ পরিশোধ করেননি। বারবার নোটিশ দেওয়া হলেও টাকা পরিশোধের কোনো চেষ্টাও করেননি তিনি।

গত বুধবার ইসলামী ব্যাংক, বগুড়া শাখার প্রধান মো. তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরে এই নোটিশ ইস্যু করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
গত বুধবার ইসলামী ব্যাংক, বগুড়া শাখার প্রধান মো. তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরে এই নোটিশ ইস্যু করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়া শাখাপ্রধান তৌহিদ রেজা স্বাক্ষরিত নোটিশে আরও বলা হয়, ‘মঞ্জুরিপত্রের নিয়মানুযায়ী প্রতিটি ডিলে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে কিস্তির টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও আপনাকে/আপনাদেরকে মৌখিকভাবে, ব্যক্তিগতভাবে ও মোবাইল ফোনে বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও আপনি/আপনারা তা পরিশোধ করেননি। ইতিপূর্বে আপনাকে লিখিতভাবে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে, তবুও বিনিয়োগের দায় পরিশোধ করেননি। আপনার/আপনাদের লেনদেনের পরিস্থিতি দেখে আমাদের কাছে অনুমিত হচ্ছে যে, আপনার/আপনাদের সঙ্গে আমাদের আর ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অতএব, আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বিনিয়োগের সমুদয় দায় ৩৮৪.৭৬ মিলিয়ন টাকা পরিশোধ করে হিসাবসমূহ নিষ্পত্তি করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য থাকবে।’

এদিকে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসন থেকে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। কিন্তু গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) তৃতীয় অধ্যায় (নির্বাচন) ১২(১)(ঠ) ধারা অনুসারে কোনো ঋণগ্রহীতা খেলাপি হলে তিনি নির্বাচনে অযোগ্য বিবেচিত হবেন।

এ বিষয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ আছে, এটা সঠিক। তবে চিঠির বিষয়ে এখনো কিছু জানি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফরিদপুরে পাইলিংয়ের সময় ধসে পড়ল পাশের ভবন

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ১০
একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা
একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়েছে। এতে ভবনটিসহ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভবনে অবস্থিত আরএফএল কোম্পানির বেস্ট বাই শোরুম। তবে প্রাণে বেঁচে গেছেন সেখানে কর্মরতরা। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনমালিকের অভিযোগ, নিরাপত্তাব্যবস্থার জন্য নির্মাণাধীন ভবনমালিকদের বলা হলেও কর্ণপাত না করে নিয়মবহির্ভূতভাবে কাজ করে যাচ্ছিলেন। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট পৌর কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।

আজ শুক্রবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শহরের প্রাণকেন্দ্র নিলটুলি স্বর্ণকারপট্টির মুজিব সড়ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের একাধিক টিম।

সরেজমিন দেখা গেছে, একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ চলছিল। নির্মাণাধীন এই ভবনের মালিক স্থানীয় সঞ্জয় কর্মকার, অজয় কর্মকার ও সেলিম নামে আরেক ব্যক্তি। পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পার্শ্ববর্তী ভবনসংলগ্ন কোনো নিরাপত্তাব্যবস্থা বা প্যারাসাইলিং ব্যবস্থা ছিল না। এই অবস্থায় পাইলিংয়ের (নিচের অংশ) কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন নির্মাণশ্রমিকেরা। হঠাৎ করেই ভবনটির একাংশ ধসে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে সেখান থেকে দৌড়ে সরে পড়েন নির্মাণশ্রমিক ও শোরুমটির কর্মচারীরা।

বেস্ট বাইয়ের কর্মীরা জানান, তারা সকালে এসে ফ্লোরের টাইলসে ফাটল দেখতে পান। ফাটল ধীরে ধীরে বড় হতে থাকলে ক্যাশ কাউন্টার টেবিলটা সরিয়ে ফেলেন, এর মধ্যেই ধসে পড়ে ভবনের এক পাশ।

ধসে পড়া ভবন ও বেস্ট বাই ফ্রাঞ্চাইজের মালিক মনিরা খাতুনের দাবি, এ ঘটনায় তাঁর ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে এবং তিনি এর বিচার দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘বারবার নির্মাণাধীন ভবনমালিকদের সতর্ক করা হয়েছে এবং নিয়ম মেনে কাজ করতে বলেছি। কিন্তু তাঁরা রাতের আঁধারে আমার ভবনের নিচের মাটি সরিয়ে ফেলেছে, যার কারণে আজকের এই দুর্ঘটনা। পৌরসভার নিয়ম অনুযায়ী ৩ ফুট দূরত্ব রেখে কাজ করার কথা থাকলেও নিয়মের তোয়াক্কা না করেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। আজ সকালে উল্টো আমার কর্মচারীদের হুমকি-ধমকিও দেওয়া হয়।’

একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা
একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঘটনাস্থলে ছুটে আসা শহরের বাসিন্দা ও জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মোজাফফর আলী মুসা পৌরসভা কর্তৃপক্ষের গাফিলতি রয়েছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘ভবন নির্মাণ করতে হলে পৌরসভার অনুমোদনের প্রয়োজন হয় এবং তা সঠিকভাবে তদারকির দায়িত্ব তাদের। যদি সঠিকভাবে তদারকি হতো তাহলে এমন দুর্ঘটনা না-ও ঘটতে পারত।’

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ভবনমালিকদের একজন সঞ্জয় সাহার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ঘটনাস্থলে আসা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক মাসুদ আলম জানান, খবর পেয়ে তাঁরা এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। তবে কোনো অভিযোগ পায়নি পুলিশ। অভিযোগ পেলে সেটা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে পৌরসভার প্রশাসক ও ফরিদপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. সোহরাব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনাটি আমার জানা নেই, খোঁজ নিয়ে বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত