Ajker Patrika

অনলাইনে ভুয়া তথ্য, সাতক্ষীরায় অস্তিত্বহীন ১১টি স্কুলের সরকারিকরণের চেষ্টা

আবুল কাশেম, সাতক্ষীরা
অনলাইনে ভুয়া তথ্য, সাতক্ষীরায় অস্তিত্বহীন ১১টি স্কুলের সরকারিকরণের চেষ্টা

ভুয়া তথ্য দিয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার অস্তিত্বহীন ১১টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণের পাঁয়তারা চলছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রাইমারি এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের (পিমিএমআইএস) অনলাইনে এসব ভুয়া তথ্য সংযোজন করা হয়েছে। অনলাইনে এসব ভুয়া তথ্য থাকা সত্ত্বেও সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে প্রতি বছর তা নবায়ন করছেন। এ ঘটনার সঙ্গে সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল গণি জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। 

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নির্ধারিত কোড নম্বর দিয়ে নির্দিষ্ট অনলাইনে তার বিদ্যালয়ের তথ্য হালনাগাদ করবেন। পরে তিনি হালনাগাদ তথ্য উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর পাঠাবেন। তিনি যাচাই-বাছাই করে একই প্রক্রিয়ায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে ওই বিদ্যালয়ের তথ্য পাঠাবেন। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা যাচাই-বাছাই শেষে তথ্য সরাসরি আপডেট করে থাকেন। 

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ৭ মে তৎকালীন জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোসেন হাওলাদার অধিদপ্তরে পাঠানো এক চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ৬১টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ওই তালিকায় এই ১১টি বিদ্যালয়ের নাম ছিল না। 

অনলাইনে এসব ভুয়া তথ্য সংযোজন করে অস্তিত্বহীন ১১টি বেসরকারি স্কুলকে সরকারিকরণ করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছেনাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শিক্ষা অফিসের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, এই ১১টি বিদ্যালয়ের নাম ও তথ্য অনলাইনে সংযোজন করা হয়েছে ২০২১ সালে। এসব বিদ্যালয়ের প্রত্যেকটিতে একতলা ভবন, নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থী, শিক্ষক, জমি ও ব্যাংক হিসাবের তথ্য দিয়ে অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবরে আব্দুল গণি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করার পর এসব তথ্য সংযোজন করা হয়েছে। জেনেশুনে এসব ভুয়া তথ্য হালনাগাদ করেছেন তিনি। 

সরেজমিনে ওই সব বিদ্যালয়ে খোঁজ নিতে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আটটি বিদ্যালয়ের কোনো অস্তিত্ব নেই। তিনটির অস্তিত্ব রয়েছে ছিটেফোঁটা। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগড়দাড়ী ইউনিয়নের নেহা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চারটি ছোট ছোট কক্ষ রয়েছে। বাঁশের বেড়া ও অ্যাসবেস্টস দিয়ে ছাউনির এসব ঘরে সাতটি বেঞ্চ, দুইটি টেবিল ও তিনটি চেয়ার রয়েছে। 

স্থানীয় জোবায়দা খাতুন জানান, বছর দুযেক আগে তাঁদের গ্রামের এ বিদ্যালয়টি করা হয়েছে। কিন্তু এখানে কেউ পড়তে আসে না। 

বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের ফরিদউদ্দিন এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দাবি করে বলেন, ‘বিদ্যালয়টি সরকারিকরণের জন্য আমি ৭ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তবে স্কুল জাতীয়করণ হয়নি।’ 
 
তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয়টি ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত করা হয়। করোনার আগে ৬৯ জন শিক্ষার্থী ছিল। তবে করোনার পরে কেউ বিদ্যালয়ে আসে না। টাফরারডাঙি বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ঘর থাকলেও তার কোনো কার্যক্রম নেই। 

বাঁশদহা ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, একটি ঘর রয়েছে। ওই বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা তহিদুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়টি ২০১৮ সালের দিকে প্রতিষ্ঠা করা হয়। স্থানীয় আব্দুল মান্নান নামে একজনের বাড়িতে মাস দু-এক এর কার্যক্রম ছিল। ৭ মাস আগে আব্দুল মান্নান ১৭ শতক জমি কিনে তাতে একটি ৩০ ফুট লম্বা ও ১২ ফুট চওড়া একটি টিনের শেড ঘর বানিয়েছেন। ওই বিদ্যালয়ে আব্দুল মান্নান, স্ত্রী, তাঁর ভাইয়ের মেয়ে ও ভাইয়ের স্ত্রীকে শিক্ষক হিসেবে দেখানো হয়েছে। 

দক্ষিণ হাওয়ালখালী গ্রামের যুবক মো. মরিজ্জামান বলেন, ‘আমাদের গ্রামে দক্ষিণ হাওয়ালখালী বালিয়ডাঙ্গা নামে কোনো বেসরকারি-সরকারি বিদ্যালয় নেই।’ 

বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের ফরিদউদ্দিন বলেন, ‘কাওনডাঙ্গা মিয়ারাজ উদ্দীন বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোনো অস্তিত্ব নেই।’ 

অনলাইনে হালনাগাদ করা পিমিএমআইএস অনুযায়ী, দত্তবাগ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কানিজ ফাতেমা। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিদ্যালয় সম্পর্কে আমি কিছু জানি না।’ 

খেজুরডাঙ্গা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেব নাম থাকা সমীরণ কুমার সরকার বলেন, ‘এক সময় একটি ঘর তোলা হয়েছিল, তবে বর্তমানে কোনো অস্তিত্ব নেই।’ 

অনলাইনে নাম থাকা ফুলবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নাম থাকা রোমানা সুলতানা বলেন, এক সময় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল স্কুল করার। পরে আর আগানো হয়নি। 

পূর্ব কুশখালি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী হিসেবে নাম থাকা জিতেন্দ্র নাথদাস জানান, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার জন্য হয়তো শিক্ষক হিসেবে তাঁর নাম দেওয়া হয়েছিল। তবে এ সম্পর্কে এখন কিছু জানেন না বলে জানান তিনি। 

এদিকে সরেজমিনে গিয়ে বালিথা পশ্চিমপাড়া ও বঙ্গবন্ধু শিমুলবাড়িয়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরও অস্তিত্ব মেলেনি। অস্তিত্বহীন এসব বিদ্যালয়ের মধ্যে চারটি বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি দেখানো হয়েছে বাঁশদহা গ্রামের সোহরাব হোসেনকে। 

অভিযোগের বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল গণি পিমিএমআইএস অনলাইনে ভুয়া তথ্য সম্পর্কে বলেন, ‘ওই বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো সরকারি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমি সাতক্ষীরায় যোগদান করার আগে অধিদপ্তরের সফটওয়্যারে ওইগুলো দাখিল করা ছিল। তবে করছি, করব বলে সেগুলো সরানো হয়নি। এবার আমি ওয়েবসাইট থেকে নামিয়ে ফেলব।’ 

সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে ইয়াসমিন করিমি বলেন, ‘আমি কয়েক মাস মাত্র যোগ দিয়েছি। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আনিস আলমগীর, শাওনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে থানায় অভিযোগ

আজকের রাশিফল: ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঠকানোর চেষ্টা করবে, সঙ্গী ঘরের কাজ করিয়ে নেবে

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

হাদির জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায়, সিঙ্গাপুরে যাত্রা দুপুরে

ইডেনের সেই ছাত্রীকে বিয়ের ছয় মাস পর নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চার্জশিট

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কেরানীগঞ্জে সড়কের পাশ থেকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির লাশ উদ্ধার

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন শাক্তা ইউনিয়নের পুরাতন ভারালিয়া গ্রামে সড়কের পাশ থেকে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আজ সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা দেড়টার দিকে খোলামোড়া-আটিবাজার সড়কের ওপর আসলাম মিয়ার বাড়ির সামনে লাশটি পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা ৯৯৯ নম্বরে খবর দেন। পরে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা-পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে।

পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, চোর সন্দেহে তাঁকে মারধর করে এখানে ফেলে গেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে মৃত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম জানান, লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত শেষে ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড ) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আনিস আলমগীর, শাওনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে থানায় অভিযোগ

আজকের রাশিফল: ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঠকানোর চেষ্টা করবে, সঙ্গী ঘরের কাজ করিয়ে নেবে

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

হাদির জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায়, সিঙ্গাপুরে যাত্রা দুপুরে

ইডেনের সেই ছাত্রীকে বিয়ের ছয় মাস পর নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চার্জশিট

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৪২
সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে আজ সোমবার বিকেলে আদালতে তোলা হয়। ছবি: ফোকাস বাংলা
সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে আজ সোমবার বিকেলে আদালতে তোলা হয়। ছবি: ফোকাস বাংলা

রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে আজ সোমবার বিকেলে আদালতে তোলা হয়। এ সময় রিমান্ড শুনানিতে তিনি আদালতকে বলেন, ‘ড. ইউনূস যদি চায়, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাবে, বানাতে পারে।’

ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলামের আদালতে আনিস আলমগীরকে হাজির করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। সন্ধ্যার পর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে তাঁকে এজলাসে তোলা হয়।

আনিস আলমগীরের রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নাজনীন নাহার। তাঁর সঙ্গে মোরশেদ শাহীন আসলাম মিয়াসহ আরও আইনজীবী শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। তিনি আদালতকে বলেন, আনিস আলমগীর আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছেন। নির্বাচন যাতে অনুষ্ঠিত না হতে পারে সে জন্য তিনি টকশোতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে কথা বলছেন। তিনি উসকানি দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন। তাঁর পেছনে কারা আছে তা জানার জন্য রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

নাজনীন নাহার আনিস আলমগীরের পক্ষে বলেন, ‘আনিস আলমগীর একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক। তিনি সরকার উৎখাতের কোনো ষড়যন্ত্র বা নির্বাচন বানচালের কোনো ষড়যন্ত্রে জড়িত নন। টকশোতে তিনি যে কথা বলেছেন সেটা তাঁর স্বাধীন মতপ্রকাশ। এই ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হওয়াটা মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ।’

একপর্যায়ে আনিস আলমগীর আদালতের অনুমতি নিয়ে বলেন, ‘আমাকে যারা নির্দিষ্ট দলের গোলাম বানাতে চায়, এটা তাদের সমস্যা।’

আদালতে আনিস আলমগীর বলেন, ‘আমি সাংবাদিক। আমি ক্ষমতাকে প্রশ্ন করি। দুই যুগ ধরে আমি এটা করে এসেছি। আমার জব (কাজ) কারও কাছে নতজানু হওয়া না। আমাকে যারা নির্দিষ্ট দলের গোলাম বানাতে চায়, এটা তাদের সমস্যা।’

আনিস আলমগীর আরও বলেন, ‘আমার ফেসবুকে আমি সব বক্তব্য দিই। এখানে অপ্রকাশিত নেই কোনো কিছু। আমি ইউনূসের (প্রধান উপদেষ্টা) বাড়ি আক্রমণের কথা বলেছি। কিন্তু কোন কারণে বলেছি, ৩২–এ আক্রমণ এটা প্রতিহিংসার রাজনীতি। এটা ফিরে আসবে। সেটা বলেছি। জুলাইয়ের স্পিরিট কীভাবে বাড়বে, আমরা সেটা বলেছি। এখানে আমার ভুল কী হয়েছে, আমি জানি না। আমার সঙ্গে কারও যোগসূত্র নেই। ড. ইউনূস যদি চায়, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাবে, বানাতে পারে।’

আনিস আলমগীর বলেন, ‘আমার সঙ্গে কেউ নেই। এই মামলায় আরও যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের মধ্যে শাওন আফরোজকে আমি চিনি। কিন্তু তাঁর সঙ্গে আমার কখনো দেখাই হয়নি। অন্য দুজনের সঙ্গে আমার পরিচয় নেই। কাজেই সবাই মিলে কীভাবে ষড়যন্ত্র করলাম সেই প্রশ্ন থাকল আমার।’

আনিস আলমগীর বলেন, ‘আমি টকশোতে বলেছি, নির্বাচন হতেই হবে। কোনো কারণে নির্বাচন যদি বাতিল হয় বা নির্বাচন যদি না হয় তাহলে এদেশ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নির্বাচনের পক্ষে কথা বলেছি সব সময়। তবুও আমাকে কেন নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের জন্য মামলায় আসামি করা হলো তা বোধগম্য নয়।’

আনিস আলমগীর আরও বলেন, ‘জুলাই স্পিরিট কীভাবে বাড়বে আমি সব সময় তাই বলে এসেছি। অনেক ক্ষেত্রে সমালোচনা করেছি সেটা জুলাই স্পিড ধারণ করার জন্য বাড়ানোর জন্য। আমি কোনো দলের পক্ষে কখনো কথা বলিনি।’

এরপর আনিস আলমগীর আরও কথা বলতে চান। এ সময় আদালতের মধ্যে উপস্থিত আইনজীবীরা তাঁকে থামতে বলেন। কয়েকজন ধমক দিয়ে বলেন, ‘আর কথা নয়’। এ সময় আনিস আলমগীরের পক্ষের আইনজীবীরা কথা বলতে গেলে তাঁদেরকেও চুপচুপ বলতে থাকেন। পরে আদালত আদেশ দেন। ৫ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আনিস আলমগীর কাঠগড়ায় কেঁদেছেন:

সন্ধ্যার পরে আদালতের কাঠগড়ায় তোলার পরে তাঁর পক্ষের আইনজীবীরা তাঁকে ঘিরে ধরেন। এ সময় তিনি আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন। কথা বলার একপর্যায়ে তিনি কেঁদে ফেলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আনিস আলমগীর, শাওনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে থানায় অভিযোগ

আজকের রাশিফল: ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঠকানোর চেষ্টা করবে, সঙ্গী ঘরের কাজ করিয়ে নেবে

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

হাদির জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায়, সিঙ্গাপুরে যাত্রা দুপুরে

ইডেনের সেই ছাত্রীকে বিয়ের ছয় মাস পর নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চার্জশিট

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চবি উপ-উপাচার্যের পদে থাকার নৈতিক অধিকার নেই: নাছির উদ্দীন

নিজস্ব প্রতিবেদক সিলেট 
শাবিপ্রবিতে ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের ঘোষণা। ছবি: আজকের পত্রিকা
শাবিপ্রবিতে ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের ঘোষণা। ছবি: আজকের পত্রিকা

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের হত্যা নিয়ে বক্তব্য দেওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপ-উপাচার্যের তাঁর পদে থাকার নৈতিক অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।

আজ সোমবার সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) শাখা ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (শাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেল ঘোষণা করতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

নাছির উদ্দীন বলেন, ‘আপনারা দেখবেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজাকারদের প্রতীকী ঘৃণাস্তম্ভ অস্থায়ীভাবে তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিবিরের নেতৃবৃন্দ বাধা দিয়েছেন এবং জগন্নাথ হলে একটি প্রতিকৃত স্থাপন করা হয়েছিল চিহ্নিত যারা আত্মস্বীকৃত রাজাকার, তাদের। এই প্রতিকৃতি কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজ উদ্যোগ মুছে দিয়েছে।’

নাছির বলেন, ‘আপনি যদি দেখেন, বুদ্ধিজীবী দিবস বা বিজয় দিবস পালনের যে আবহ থাকে, জুলাই অভ্যুত্থানের পরে সেই আবহ কিন্তু বাংলাদেশের বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বুদ্ধজীবী দিবস স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালন হয়নি। বিজয় দিবস পালনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যে স্বতঃস্ফূর্ততা, তা কিন্তু আমরা এখানে লক্ষ করছি না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও আমরা দেখছি না।’

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘চবির উপ-উপাচার্য যে বক্তব্য দিয়েছেন, এর প্রতিবাদে ছাত্রদল গতকালই সেখানে মিছিল করেছে। আমরা মনে করি, উনার এই বক্তব্যের পরে এই পদে থাকার নৈতিক অধিকার নেই। উনার বিরুদ্ধে অবশ্যই ফৌজদারি মামলা হওয়া উচিত।’

মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ তুলে নাছির উদ্দীন বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের আগে নিশ্চিত পরাজয় জেনে রাজাকার, আল-বদর, আল-শামসদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক–বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে পাক বাহিনী।

‘শুধু বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতেই পাক হানাদার বাহিনী এই কাজ করেছে। এটি হয়েছে রাজাকার, আল-বদর, আল-শামসদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায়, তা ইতিহাসের মাধ্যমে প্রমাণিত। আপনারা লক্ষ করবেন, গত কয়েক দিনের আলাপ-আলোচনায় তা ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।’

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন উপ-উপাচার্য কীভাবে এমন একটি বক্তব্য দিয়ে থাকেন। আমরা শুনেছি, অতীতে তিনি ছাত্রশিবিরের রাজনীতি করেছেন। জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রামের বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। এটাই স্বাভাবিক যে, জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির, তারা কখনো স্বাধীনতার স্পিরিটকে ধারণ করে নাই। তারা মুক্তিযুদ্ধের ঘোর বিরোধী ছিল।’

নাছির উদ্দীন আরও বলেন, ‘চবির উপ-উপাচার্য যে বক্তব্য দিয়েছেন, এটা খুবই স্বাভাবিক। কারণ, তিনি এটা ধারণ করেন, জামায়াতে ইসলামীকে শুধু ধারণ করেন। বিগত পাঁচ দশকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেভাবে দিবসগুলো পালন করা হয়েছিল, এবার কিন্তু সেভাবে পালন করা হচ্ছে না।

‘এটির একটিই কারণ, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার যাদের উপাচার্য, সহউপাচার্য অথবা রেজিস্ট্রার নিয়োগ দিয়েছে, তারা একটি রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামের ম্যান্ডেটকে গ্রহণ করে। শুধু সেই ম্যান্ডেট অনুসারে তারা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আনিস আলমগীর, শাওনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে থানায় অভিযোগ

আজকের রাশিফল: ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঠকানোর চেষ্টা করবে, সঙ্গী ঘরের কাজ করিয়ে নেবে

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

হাদির জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায়, সিঙ্গাপুরে যাত্রা দুপুরে

ইডেনের সেই ছাত্রীকে বিয়ের ছয় মাস পর নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চার্জশিট

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

স্ত্রীকে ‘ভাবি’ বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলন, ছেলেকে বানিয়েছেন ভাতিজা

পটিয়া (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা
মাহাবুব আলম ও রাশু আক্তার। ছবি: সংগৃহীত
মাহাবুব আলম ও রাশু আক্তার। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় মাহাবুব আলম নামের এক ব্যক্তি নিজের স্ত্রীকে মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা বড় ভাইয়ের স্ত্রী সাজিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সে সঙ্গে নিজের ছেলেকে সেই বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাইয়ের ছেলে দেখিয়ে ভুয়া উত্তরাধিকার সনদ সংগ্রহ করেছেন তিনি। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় কর্তৃপক্ষ ভাতা বন্ধ করেছে। তবে এখন পর্যন্ত ভুয়া উত্তরাধিকার সনদ বাতিল কিংবা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

অভিযুক্ত মাহাবুব আলম উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর শ্রীমাই এলাকার বাসিন্দা।

জানা গেছে, উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর শ্রীমাই এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম ২০২১ সালে অবিবাহিত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর পর ছোট ভাই মাহাবুব আলম ভুয়া কাবিননামা বানিয়ে নিজের স্ত্রী রাশু আক্তারকে বড় ভাই আবুল কালামের স্ত্রী হিসেবে দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলন শুরু করেন। সে সঙ্গে তিনি নিজের ছেলে জিহাদুল আলমকে মৃত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দেখিয়ে ভুয়া উত্তরাধিকার সনদ সংগ্রহ করেন। চলতি বছর শফি উদ্দীন নামের এক বাসিন্দা এলাকাবাসীর পক্ষে পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানুর রহমানের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। এতে আত্মসাৎ করা সরকারি অর্থ ফেরত আনা এবং প্রতারণার দায়ে মাহাবুব আলম ও রাশু আক্তারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করা হয়।

পটিয়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনকে এ বিষয়ে তদন্তের দায়িত্ব দেন ইউএনও। প্রাথমিক তদন্ত শেষে তিনি অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সমাজসেবা কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন ইউএনওর কাছে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে ইউএনও ফারহানুর রহমান বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি তাদের এখতিয়ার।

অভিযোগকারী শফি উদ্দীন বলেন, ভাতা বন্ধ হওয়াটা স্বস্তির হলেও এখন পর্যন্ত প্রতারকদের বিরুদ্ধে কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ভুয়া উত্তরাধিকার সনদ বাতিল না হওয়ায় তাঁরা এখনো পার পেয়ে যাচ্ছেন।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে মাহাবুব আলমের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আনিস আলমগীর, শাওনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে থানায় অভিযোগ

আজকের রাশিফল: ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঠকানোর চেষ্টা করবে, সঙ্গী ঘরের কাজ করিয়ে নেবে

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

হাদির জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায়, সিঙ্গাপুরে যাত্রা দুপুরে

ইডেনের সেই ছাত্রীকে বিয়ের ছয় মাস পর নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চার্জশিট

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত