Ajker Patrika

শুল্ক বাড়ানোর প্রতিবাদে বেনাপোল বন্দরে ৩ দিন ধরে পণ্য খালাস বন্ধ

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ জুন ২০২৪, ১৬: ৪৩
শুল্ক বাড়ানোর প্রতিবাদে বেনাপোল বন্দরে ৩ দিন ধরে পণ্য খালাস বন্ধ

মাছ, ফল ও সবজিজাতীয় পণ্য আমদানিতে শুল্ক বাড়ানোর প্রতিবাদে বেনাপোল বন্দরে তিন দিন ধরে অর্ধশতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক খালাস বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। তাতে সরকার যেমন রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি আটকে থাকা পণ্য পচে ব্যবসায়ীদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এদিকে এনবিআরের নতুন নির্দেশনায় বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতি এবং দেশের বাজার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। ক্ষোভ জানিয়ে নতুন নীতিমালা বাতিলের দাবিতে ইতিমধ্যে বিক্ষোভ করেছেন তাঁরা। তবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে, এনবিআরের আদেশ তারা পালন করছে কেবল। ব্যবসায়ীদের দাবি নিয়ে আগামীকাল রোববার আলোচনায় বসবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে যেসব পণ্য আমদানি হয়, তার বড় একটি অংশ ফল, মাছ ও সবজিজাতীয় পণ্য। সাধারণত পণ্যের পরিমাপ ও সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে আমদানি শুল্ককর আদায় করা হয়ে থাকে। কিন্তু এনবিআর ফল, সবজি ও মাছের ক্ষেত্রে কত চাকার ট্রাকের পণ্য আসছে তার ওপর ভিত্তি করে পণ্যের শুল্ককর আদায় করে। গত ২৩ জুন আবার নতুন করে ট্রাকের চাকা অনুপাতে পণ্যের ওজন বাড়িয়ে শুল্ককর নির্ধারণ করে চিঠি দেয় এনবিআর। তাতে প্রতি ট্রাকে অতিরিক্ত ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা গুনতে হয়। তাতে লোকসানে পড়ে পণ্য খালাস বন্ধ রাখেন ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া নতুন করে চাপিয়ে দেওয়া শুল্ককর প্রত্যাহারে কাস্টমসের সামনে বিক্ষোভ করা হয়। তবে কোনো সমাধান না হওয়ায় চালান আটকে থেকে গরমে পণ্য নষ্ট হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এ নিয়মে পণ্য আমদানি যেমন কমবে, তেমনি সরকার রাজস্বও হারাবে।

আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে শতাধিক ট্রাক মাছ, ফল ও সবজিজাতীয় পণ্য আমদানি হয়। খালাস বন্ধ থাকায় তিন দিনে সরকারের ৫০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় কমেছে। তিনি আরও বলেন, এনবিআরের নির্দেশনাপত্রে বলা হয়েছে, ছয় চাকার ট্রাকে কমলা, মালটার জন্য ১৮ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১০ চাকার ট্রাকে থাকা পণ্যে ২০ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১২ চাকার ট্রাকে থাকা পণ্যের জন্য ২২ টনের ডিউটি দিতে হবে। ১৪ চাকার ক্ষেত্রে ২৫ টনের ডিউটি এবং ১৬ বা তার বেশি চাকার গাড়িতে থাকা পণ্যে ২৬ টনের শুল্ককর দিতে হবে।

ছয় চাকার ট্রাকে থাকা আঙুরের জন্য ১৯ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১০ চাকার ট্রাকে থাকা পণ্যে ২০ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১২ চাকার ট্রাকে থাকা পণ্যের জন্য ২২ টনের ডিউটি দিতে হবে। ১৪ চাকার ক্ষেত্রে ২৪ টনের ডিউটি এবং ১৬ বা তার বেশি চাকার গাড়িতে থাকা পণ্যের জন্য ২৬ টনের শুল্ককর দিতে হবে।

ছয় চাকার ট্রাকে থাকা আনারের জন্য ২৩ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১০ চাকার ট্রাকে থাকা পণ্যে ২৬ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১২ চাকার ট্রাকে থাকা পণ্যের জন্য ২৭ টনের ডিউটি দিতে হবে। ১৪ চাকার ক্ষেত্রে ২৮ টনের ডিউটি এবং ১৬ বা তার বেশি চাকার গাড়িতে থাকা পণ্যে ২৯ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ছয় চাকার ট্রাকে থাকা আপেলের জন্য ২১ টনের শুল্ককর, ১০ চাকার ট্রাকের জন্য ২২ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১২ চাকার ট্রাকে থাকা পণ্যের জন্য দিতে হবে ২৩ টনের ডিউটি। ১৪ চাকার ক্ষেত্রে ২৫ টনের ডিউটি এবং ১৬ বা তার বেশি চাকার গাড়িতে থাকা পণ্যের জন্য ২৬ টনের শুল্ককর দিতে হবে।

এ ছাড়া ছয় চাকার ট্রাকে থাকা হিমায়িত মাছের জন্য ছয় টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১০ চাকার ট্রাকের জন্য ১০ টনের শুল্ককর, ১২ চাকার ট্রাকের জন্য ১৩ টনের শুল্ককর। ১৪ চাকার ক্ষেত্রে ১৮ টনের ডিউটি এবং ১৬ বা তার বেশি চাকার গাড়িতে থাকা পণ্যের জন্য ২০ টনের শুল্ককর দিতে হবে।

বেনাপোল বন্দরে আটকে থাকা পণ্য। ছবি: আজকের পত্রিকাবরফ ছাড়া মাছের ছয় চাকার ট্রাকের ১৫ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১০ চাকার ট্রাকের ১৮ টনের শুল্ককর; ১২ চাকার ট্রাকে ২০ টনের শুল্ককর; ১৪ চাকার ক্ষেত্রে ২১ টনের এবং ১৬ বা তার বেশি চাকার গাড়িতে থাকা পণ্যে ২২ টনের শুল্ককর দিতে হবে।

শুঁটকি মাছের ক্ষেত্রে ছয় চাকার ট্রাকের জন্য ১৬ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১০ চাকার ট্রাকে থাকা পণ্যের জন্য ১৮ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১২ চাকার ট্রাকে থাকা পণ্যের জন্য ২০ টনের ডিউটি দিতে হবে। ১৪ চাকার ক্ষেত্রে ২২ টনের ডিউটি এবং ১৬ বা তার বেশি চাকার গাড়িতে থাকা পণ্যের জন্য ২৪ টনের শুল্ককর দিতে হবে।

টমেটোয় ছয় চাকার ট্রাকের জন্য ১৮ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১০ চাকার ট্রাকে থাকা পণ্যের জন্য ২০ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১২ চাকার ট্রাকে থাকা পণ্যের জন্য ২৪ টনের ডিউটি দিতে হবে। ১৪ চাকার ক্ষেত্রে ২৮ টনের ডিউটি এবং ১৬ বা তার বেশি চাকার গাড়িতে থাকা পণ্যের জন্য ৩০ টনের শুল্ককর দিতে হবে।

পানের ক্ষেত্রে ছয় চাকার ট্রাকের জন্য ছয় টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১০ চাকার ট্রাকে থাকা পণ্যের ৯ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১২ চাকার ট্রাকে থাকা পণ্যের জন্য ১১ টনের ডিউটি দিতে হবে। ১৪ চাকার ক্ষেত্রে ১২ টনের ডিউটি এবং ১৬ বা তার বেশি চাকার গাড়িতে থাকা পণ্যের জন্য ১৩ টনের শুল্ককর দিতে হবে।

বন্দরে মাছ নিয়ে আটকে থাকা ট্রাকচালক মহিদুর রহমান বলেন, কাস্টমস ছাড়পত্র না দেওয়ায় তিন দিন আটকে থেকে পণ্য নষ্ট হচ্ছে। একই কথা বলেন সবজি বহনকারী ভারতীয় ট্রাকচালক উত্তম।

আমদানি-রপ্তানিকারক উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, এনবিআর নির্দেশনায় বলেছে, কোনো পণ্যবাহী ট্রাকে পণ্যের ওজন কম-বেশি হলে তা শতভাগ ওজন করে খালাস দেওয়া যাবে। তবে কাস্টমস এই শর্ত মানছে না।

আমদানিকারক আবুল হোসেন বলেন, পণ্য খালাস বন্ধ থাকায় কেবল ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েনি, তাতে আমদানি কমে যাওয়ায় সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা জাহিদ হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এনবিআরের নতুন আদেশ তাঁরা কার্যকর করছেন কেবল। তবে কয়েকজন আমদানিকারক অভিযোগ জানিয়ে পণ্য খালাস নিচ্ছেন না, আবার কেউ খালাস নিয়েছেন। তবে যাঁরা পণ্য খালাস নেননি, তাঁদের বিষয়ে আগামীকাল রোববার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বাজপেয়ির ‘সেই বক্তব্য’ সামনে আনলেন শশী থারুর

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ভারতে তেল দিয়ে ফেরার পথে বিধ্বস্ত রুশ জাহাজ—প্রতিশোধের হুমকি পুতিনের

হাদির মৃত্যু ঘিরে নৈরাজ্য নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপি নেতার ঘরে আগুন লাগানোর অভিযোগ, শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ তিন

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
আগুনে জ্বলছে ঘর। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগুনে জ্বলছে ঘর। ছবি: আজকের পত্রিকা

লক্ষ্মীপুরে বেলাল হোসেন নামের এক বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে পেট্রল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জের চরমনসা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আগুনে আয়েশা বেগম (৭) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ হয়েছেন বেলাল হোসেন এবং তাঁর আরও দুই শিশুসন্তান।

বেলাল হোসেন সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক। তাঁকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দগ্ধ দুই শিশু বীথি আক্তার ও স্মৃতি আক্তারের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। দগ্ধ শিশুদের বয়স ১২ থেকে ১৪ বছর।

বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, ভবানীগঞ্জের চরমনসা এলাকায় নিজের ঘরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন বেলাল হোসেন। গভীর রাতে ঘরের দরজায় তালা লাগিয়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দৃর্বৃত্তরা। মুহূর্তের মধ্যে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ঘুমন্ত শিশু আয়েশা দগ্ধ হয়ে মারা যায়। দগ্ধ হন বেলাল হোসেন এবং তাঁর আরও দুই মেয়ে। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তিনজনকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রনজিত কুমার দাস বলেন, এক শিশুকে মৃত এবং অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর।

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা অরূপ পাল বলেন, বেলাল হোসেনের শরীরের ২০ শতাংশ পুড়ে গেছে। দুই শিশুর শরীর ৭০ থেকে ৮০ শাতংশ পুড়ে গেছে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়াহিদ পারভেজ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। অগ্নিদগ্ধ হয়ে এক শিশু মারা গেছে। আরও তিনজন অগ্নিদগ্ধ। তবে আগুনের বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এটি পরিকল্পিতভাবে নাশকতা কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বাজপেয়ির ‘সেই বক্তব্য’ সামনে আনলেন শশী থারুর

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ভারতে তেল দিয়ে ফেরার পথে বিধ্বস্ত রুশ জাহাজ—প্রতিশোধের হুমকি পুতিনের

হাদির মৃত্যু ঘিরে নৈরাজ্য নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সড়কে ঝরল খালা-ভাগনের প্রাণ

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৫
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

পাবনার ঈশ্বরদীতে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নারীসহ দুজন নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঈশ্বরদী শহরের স্কুলপাড়ায় ঈশ্বরদী-লালপুর-বাঘা-বানেশ্বর আঞ্চলিক মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার সাড়া ইউনিয়নের ঝাউদিয়া এলাকার মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে শাকিব হোসেন (২২) এবং শহরের পিয়ারাখালী এলাকার রফিকুল ইসলামের স্ত্রী শিরিনা বেগম (৪৫)। নিহত ব্যক্তিরা সম্পর্কে খালা ও ভাগনে ছিলেন। তাঁরা দুজনই অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, গতকাল বিকেলে লালপুর থেকে যাত্রী নিয়ে একটি অটোরিকশা ঈশ্বরদী শহরে আসছিল। অটোরিকশাটি শহরের স্কুলপাড়ার মহাসড়কে এলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজি অটোরিকশার দুই যাত্রী গুরুতর আহত হন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুজ্জামান বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তবে অটোরিকশার চালক পালিয়েছেন। এ ব্যাপারে মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বাজপেয়ির ‘সেই বক্তব্য’ সামনে আনলেন শশী থারুর

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ভারতে তেল দিয়ে ফেরার পথে বিধ্বস্ত রুশ জাহাজ—প্রতিশোধের হুমকি পুতিনের

হাদির মৃত্যু ঘিরে নৈরাজ্য নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শরীয়তপুরে এনসিপির মশাল মিছিল

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪৩
শরীয়তপুর জেলা শহরে এনসিপির মশাল মিছিল
শরীয়তপুর জেলা শহরে এনসিপির মশাল মিছিল

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যার প্রতিবাদে শরীয়তপুর জেলা শহরে মশাল মিছিল করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ চত্বর থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শরীয়তপুর-ঢাকা সড়কের চৌরঙ্গী মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে প্রায় আধা ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন দলটির নেতা-কর্মীরা। এ সময় হাদি হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন তাঁরা।

এনসিপির শরীয়তপুর জেলার সদস্যসচিব সবুজ তালুকদার বলেন, ‘হাদি হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ভিন্নমত দমন ও রাজনৈতিক কণ্ঠরোধের ধারাবাহিকতারই অংশ এই হত্যাকাণ্ড। দিনদুপুরে খুনিরা গুলি করে কীভাবে পালিয়ে গেল? এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও খুনিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আমরা অবিলম্বে এই হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত, প্রকৃত খুনিদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আমিন মোহাম্মদ জিতু বলেন, ‘এটি শুধু একজন ব্যক্তির হত্যাকাণ্ড নয়, এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত। এই হত্যার বিচার না হলে তরুণ সমাজ রাজপথে আবারও দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।’

বিক্ষোভে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বাজপেয়ির ‘সেই বক্তব্য’ সামনে আনলেন শশী থারুর

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ভারতে তেল দিয়ে ফেরার পথে বিধ্বস্ত রুশ জাহাজ—প্রতিশোধের হুমকি পুতিনের

হাদির মৃত্যু ঘিরে নৈরাজ্য নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাণিজ্য থমকে আছে রেললাইনের অভাবে

  • ২০১৩ সালে সম্ভাব্যতা যাচাই করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেয় অস্ট্রেলিয়ার কোম্পানি
  • সম্ভাব্যতা ম্যাপে ৯৮ কিলোমিটার রেললাইনে ৮টি স্টেশনের প্রস্তাব রাখা হয়
আবুল কাসেম, সাতক্ষীরা 
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ১২
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সাতক্ষীরার বহুল প্রতীক্ষিত রেললাইনের নির্মাণকাজ এগোচ্ছে কচ্ছপগতিতে। এক যুগ আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর গেল মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

সাতক্ষীরাবাসী বলছে, শত বছরের প্রতীক্ষিত রেললাইন নির্মিত হলে একদিকে যেমন সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটন বিকশিত হবে, অন্যদিকে পণ্য পরিবহনে খরচ কমায় ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও অন্যান্য সূত্রে জানা যায়, ১৯১৪ সালে ব্রিটিশ ভাইসরয় সাতক্ষীরাকে রেললাইনে সংযুক্ত করে সুন্দরবন পর্যন্ত সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই নির্দেশনা বাস্তবায়িত হয়নি। ১৯৫৮ সালে সাতক্ষীরা-ভেটখালি সড়ক নির্মাণের সময় জমি অধিগ্রহণ করেও নির্মিত হয়নি রেললাইন।

দীর্ঘকাল পরে ২০১০ সালে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে এক জনসভায় তৎকালীন সরকারপ্রধান নাভারণ-সাতক্ষীরা-মুন্সিগঞ্জ রেললাইন নির্মাণের ঘোষণা দেন। ২০১৩ সালে সম্ভাব্যতা যাচাই করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেয় অস্ট্রেলিয়ার ক্যানারেইল কোম্পানি লিমিটেড। সম্ভাব্যতা যাচাই করতে খরচ হয় ১১ কোটি টাকা। সম্ভাব্যতা ম্যাপে ৯৮ কিলোমিটার রেললাইনে ৮টি স্টেশনের প্রস্তাব রাখা হয়।

এরপর আবারও থেমে যায় রেললাইন নির্মাণের উদোগ। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রেললাইন স্থাপনের দাবিতে সাতক্ষীরায় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে আন্দোলন শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নাভারণ-সাতক্ষীরা রেললাইন স্থাপনের উদ্যোগের অংশ হিসেবে যশোর রেলওয়ের পক্ষ থেকে সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়। এরপর গত মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত ৫টি স্টেশনযুক্ত ৪২ কিলোমিটার রেললাইনের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র।

সাতক্ষীরার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শেষ জেলা সাতক্ষীরায় ২২ লাখের বেশি মানুষের বাস। এ জেলা থেকে দেশের অন্যান্য স্থানে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম সড়কপথ। সুন্দরবন, চিংড়ি, আম ও ভোমরা বন্দরের কারণে অর্থনৈতিকভাবে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠায় সাতক্ষীরায় রেললাইন নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।

জেলা চিংড়ি চাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম বাবলা বলেন, নৌপথ ও আকাশপথে যাতায়াতের কোনো সুযোগ নেই জেলাবাসীর। রেললাইন নির্মিত হলে মৎস্য খাতের নতুন দিকের সূচনা হবে।

সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী নূর খান বাবুল বলেন, ‘সাতক্ষীরা থেকে আমরা যে পরিমাণ রাজস্ব সরকারকে দিই, সে ধরনের উন্নয়ন চোখে পড়ে না।’

ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা বলেন, কলকাতা থেকে ভোমরা স্থলবন্দরের দূরত্ব মাত্র ৬০ কিলোমিটার। তাই রেললাইন হলে ভোমরায় ব্যবসা-বাণিজ্যের চিত্র পাল্টে যাবে।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আফরোজা আখতার বলেন, ‘জিআই পণ্য আম, চিংড়ি এবং ভোমরা স্থলবন্দরের পণ্য পরিবহনের জন্য সাতক্ষীরায় রেললাইন নির্মাণ জরুরি। আমি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রেললাইন নির্মাণের জন্য যত প্রচেষ্টা রয়েছে, সেটা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বাজপেয়ির ‘সেই বক্তব্য’ সামনে আনলেন শশী থারুর

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ভারতে তেল দিয়ে ফেরার পথে বিধ্বস্ত রুশ জাহাজ—প্রতিশোধের হুমকি পুতিনের

হাদির মৃত্যু ঘিরে নৈরাজ্য নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত