Ajker Patrika

পোশাকশ্রমিকদের ব্যবহার করে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করেছে বিএনপি, পুলিশের দাবি 

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ১৮: ৫৬
পোশাকশ্রমিকদের ব্যবহার করে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করেছে বিএনপি, পুলিশের দাবি 

সরকারবিরোধী আন্দোলনকে প্রভাবিত করতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য বিএনপি গাজীপুরে পোশাকশ্রমিকদের ব্যবহার করে কারখানা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছেন গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব আলম। 

আজ মঙ্গলবার গাজীপুর মহানগর পুলিশ সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন। এর আগে পোশাক কারখানা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনায় ছাত্রদলের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

গ্রেপ্তার মো. মোশারফ হোসেন রিপন ওরফে মো. রিপন হোসেন ওরফে রিপন মাহমুদ (২৭)। তিনি কালিয়াকৈর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক এবং একই উপজেলার বড়ইছুটি গ্রামের মো. সুরুজ আল মামুনের ছেলে। 

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ছাত্রদলের নেতা রিপন জানান, চলমান বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলনকে প্রভাবিত করতে দলের নেতাদের নির্দেশে পোশাকশ্রমিকদের আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। তারই অংশ হিসেবে শ্রমিকদের আন্দোলনকে ব্যবহার করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির লক্ষ্যে কারখানায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন।’ 

তিনি বলেন, গত ৩১ অক্টোবর গাজীপুরে বিভিন্ন পোশাক কারখানা, স্থাপনা, হাসপাতাল ও যানবাহনে দুষ্কৃতকারীরা অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় ১ নভেম্বর জিএমপির পুলিশ কমিশনার, শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি, গাজীপুর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন পোশাক কারখানা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনের সময় কারখানা কর্তৃপক্ষ ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার বর্ণনা দেন। তখন পুলিশ কমিশনার মহোদয় ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষকে আশ্বস্ত করেন, পুঙ্খানুপুঙ্খ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে অগ্নিসংযোগকারী ও ভাঙচুরে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। 

পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, তদন্তকালে বিভিন্ন পোশাক কারখানার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করা হয়। ভিডিও ফুটেজ ও স্থির চিত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গাজীপুরের সফিপুর লিডা ও ফর্টিস গার্মেন্টসের ভেতরে ঢুকে দুষ্কৃতকারীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে গাড়ি ভাঙচুর ও দাহ্য পদার্থ ঢেলে অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ, প্রত্যক্ষদর্শী এবং স্থানীয়দের শনাক্ত মতে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে নেতৃত্বদানকারী মো. রিপন হোসেন নামের এক যুবককে চিহ্নিত করা হয়। 

মাহবুব হোসেন বলেন, ঘটনার পরপরই রিপন হোসেন এলাকা থেকে পালিয়ে যায় এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরটি বন্ধ করে রাখে। রিপনের পরিচয় শনাক্ত করার পর গাজীপুর মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা (দক্ষিণ) বিভাগের একটি দল রিপনকে গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করে গত ৬ নভেম্বর তাকে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকা হতে গ্রেপ্তার করা হয়। 

তিনি বলেন, গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে, সেসহ তার সহযোগীরা রাজনৈতিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দলীয় আন্দোলনকে প্রভাবিত করার জন্য উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে শ্রমিকদের আন্দোলনে যোগ দেয়। কালিয়াকৈর লিডা, ফর্টিস গার্মেন্টস এবং কোনাবাড়ী এবিএম ফ্যাশন কারখানায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে।

মহানগর পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, রিপনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় আগে আরও চারটি মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আজ মঙ্গলবার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে তাকে আদালতে পাঠানো হবে বলে পুলিশ কমিশনার জানান।

সংবাদ সম্মেলনে গত ৩০ অক্টোবর গাজীপুরের কোনাবাড়ী এবিএম ফ্যাশন কারখানায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের সিসিটিভি ফুটেজ প্রদর্শন করা হয়। তাতে গ্রেপ্তার মো. রিপন হোসেনকে গাড়ি ভাঙচুর ও গাড়িতে দাহ্য পদার্থ ঢেলে অগ্নিসংযোগ করতে দেখা যায়। এ সময় কারখানার ভেতরে একজন শ্রমিক দগ্ধ হয়ে মারা যান। 

এ সময় জিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সদর ও অর্থ) জিয়াউল হক, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আহসান উজ্জামান, গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম ও উপপুলিশ কমিশনার (ডিবি ও মিডিয়া) মোহাম্মদ ইব্রাহীম খান উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...