Ajker Patrika

খিরু-লবলঙ্গ শুধু নামেই নদ

রাতুল মণ্ডল, শ্রীপুর (গাজীপুর)  
আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৮: ৫৭
দূষণে কালো কুচকুচে খিরু নদের পানি। ছবি: আজকের পত্রিকা
দূষণে কালো কুচকুচে খিরু নদের পানি। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরের বুক চিরে বয়ে গেছে স্বল্প দৈর্ঘ্যের কয়েকটি নদ-নদী। একসময় সেগুলো ব্যবসা-বাণিজ্য ও কৃষি উৎপাদনে সহায়ক ভূমিকা রাখত; বর্তমানে দখল আর দূষণে শুধু নামেমাত্র। বর্ষাকালে পানি থাকলেও বছরের বেশির ভাগ সময় থাকে যৎসামান্য পানি। দূষণে পানি কুচকুচে কালো হয়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্য, বহু বছর ধরে দেখা মেলে না স্বচ্ছ জলের। ক্ষতিকর কেমিক্যালযুক্ত পানি কৃষিকাজে ব্যবহারও করা যাচ্ছে না। নদ-নদীতে এখন মাছ তো দূরের কথা, কোনো জলজ প্রাণীও বেঁচে নেই।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বুক চিরে বয়ে যাওয়া শীতলক্ষ্যা, সুতিয়া, খিরু, মাটিকাটা, লবলঙ্গ ও পারুলী—এই ছয় নদ-নদীর মধ্যে চারটি ব্যাপকভাবে দখল আর দূষণের কবলে। সবচেয়ে বেশি দখল-দূষণের শিকার লবলঙ্গ। এরপরই দূষণের শিকার খিরু, মাটিকাটা ও সুতিয়া। উপজেলার গাজীপুর মাওনা ও পৌরসভার বেশ কিছু অংশ নিয়ে বয়ে গেছে লবলঙ্গ। দখল-দূষণের ফলে নদী থেকে খাল এবং বর্তমানে খাল থেকে নালায় পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের থাবায় এটি নামমাত্র নদ। এতে একসময় বড় বড় জাহাজ চলাচল করত; এখন নৌকাও চলাচল করে না। বিভিন্ন কারখানার কেমিক্যালযুক্ত পানি সরাসরি নদীতে পড়ে এটি মারাত্মক দূষণের শিকার হয়েছে।

উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে খিরু নদ। একসময় এটি ছিল বাণিজ্যের এক অপার সম্ভাবনার মাধ্যম। এখন দখল-দূষণের শিকার। বর্ষাকালে মাসখানেক নৌকা চলাচল করে। পার্শ্ববর্তী ভালুকা উপজেলার বেশ কয়েকটি কারখানা কেমিক্যালযুক্ত পানি সরাসরি খিরুতে পড়ায় মারাত্মক দূষণের শিকার হয়েছে খিরু। এখন মাছ তো দূরের কথা, কোনো জলজ প্রাণী বেঁচে নেই।

নদীপারের লোকজন জানান, দূষণের শিকার নদীর পানির দুর্গন্ধ ছড়িয়ে যায় কয়েক কিলোমিটার। নদীর পানি কৃষিজমিতে সেচ দেওয়া যায় না। এই পানি কৃষিজমিতে দিলে ফসল নষ্ট হয়। গবাদিপশু গোসল করালে চর্মরোগ দেখা দেয়। গরু-মহিষের শরীরে ফোসকা পড়ে।

কাওরাইদ ইউনিয়নের হয়দেবপুর গলদাপাড়া, ধামলই, সোনাব, লাকচতল, ভিটিপাড়া বরকুল গ্রামের বুক চিরে বয়ে গেছে মাটিকাটা নদী। খিরুর দূষিত পানি এসে মারাত্মক দূষণে পড়েছে মাটিকাটা। এর ফলে কৃষি উৎপাদনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া সোনাব, কাওরাইদ, বেইলদিয়া, বাপ্তা, নান্দিয়া সাঙ্গুন গ্রামের বুক চিরে বয়ে গেছে সুতিয়া নদী। ভালুকা উপজেলা কারখানার দূষিত কেমিক্যালযুক্ত পানি সুতিয়া নদীতে পড়ে এটি দূষণের শেষ প্রান্তে। একইভাবে রাজাবাড়ি প্রহলাদপুর ইউনিয়নের বুক চিরে বয়ে যাওয়া পারুলী নদী দূষণের শিকার হয়েছে শিল্পকারখানার দূষিত কেমিক্যালযুক্ত পানিতে। শীতলক্ষ্যাও দূষণে ধুঁকছে।

লবলঙ্গপারের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘লবলঙ্গ তো এখন গল্প। এখন তো নালা হয়ে গেছে। বাপ-দাদারা বলতেন, লবলঙ্গে জাহাজ চলাচল করত। আমরা তো এখন নৌকা চলতেও দেখি না। এর পানি যেন বিষের নহর। কালো কুচকুচে।’

নদী পরিব্রাজক দল শ্রীপুর শাখার সভাপতি সাঈদ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দাবি, নদীগুলো দূষণমুক্ত করা হোক। আমরা চাই, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সর্বোচ্চ হস্তক্ষেপে যেন নদীগুলো আবার স্বচ্ছ জলের নদীতে পরিণত হয়।’

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজীব আহমেদ বলেন, নদ-নদীগুলোর দূষণ রোধে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কিছুদিন আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সচিব দূষণের শিকার লবলঙ্গ পরিদর্শন করে সব ধরনের পদক্ষেপ দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন।

গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আরেফিন বাদল বলেন, ‘শ্রীপুরের চারটি নদ-নদী মারাত্মক দূষণের শিকার; যা মনুষ্যসৃষ্ট। এটি প্রাকৃতিক দূষণ নয়। পরিবেশ উপদেষ্টার নির্দেশনায় এরই মধ্যে লবলঙ্গ দূষণ রোধে কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে লবলঙ্গের পানি পরীক্ষা করা হচ্ছে। পাশাপাশি যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান দূষণের সঙ্গে জড়িত, সেসব কারখানার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আশা করি, শিগগির নদ-নদীগুলো দূষণের হাত থেকে রক্ষা পাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার রেকর্ড ৩৫ বস্তা টাকা, চলছে গণনা

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
চলছে টাকা গননা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চলছে টাকা গননা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কিশোরগঞ্জের আলোচিত পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে এবার ৩৫ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে, যেগুলোর গণনা চলছে। জেলা শহরের ঐতিহাসিক মসজিদটিতে ১৩ টি দানবাক্স আছে, যেগুলো সাধারণত তিন মাস পরপর খোলা হয়। এবার খোলা হয়েছে ৩ মাস ২৭ দিন পর। ধারণা করা হচ্ছে অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে এবার।

শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল ৭টায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক মো. এরশাদুল আহমেদের তত্ত্বাবধানে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আসলাম মোল্লা ও পুলিশ সুপার (এসপি) ড. এস এম ফরহাদ হোসেনের উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়।

এর আগে চলতি বছরের ৩০ আগস্ট মসজিদের ১৩ টি দানবাক্স খুলে পাওয়া যায় ৩২ বস্তা টাকা। তখন ৪ মাস ১৮ দিনে এই পরিমাণ টাকা জমা পড়েছিল দানবাক্সগুলোতে।

দিনভর গুনে দেখা গেছে, সেখানে জমা পড়েছে ১২ কোটি ৯ লাখ ৩৭ হাজার ২২০ টাকা। এ ছাড়াও পাওয়া গেছে বৈদেশিক মুদ্রা, সোনা ও রুপা।

পাগলা মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানায়, টাকা গণনায় অংশ নেয় পাগলা মসজিদ সংলগ্ন মাদ্রাসার ১১০ জন ও আল-জামিয়াতুল ইমদাদিয়া মাদ্রাসার ২৫০ জন ছাত্র, পাগলা মসজিদের ৩৩ জন স্টাফ, রূপালী ব্যাংকের ১০০ জন কর্মকর্তা, এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অর্ধশতাধিক সদস্য গণনায় অংশ নিয়েছেন।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আসলাম মোল্লা জানান, পাগলা মসজিদের দানবাক্স খোলে এবার ৩৫ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। এখন চলছে গণনার কাজ। তিনি আরও জানান, কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদকেন্দ্রিক একটি ইসলামি কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হবে। ভবনটি হবে ১০ তলাবিশিষ্ট এবং এখানে বহুমুখী কাজ করা হবে। এখানে অনাথ–এতিমদের জন্য লেখাপড়ার ব্যবস্থা, ধর্মীয় শিক্ষা, মাদ্রাসাশিক্ষা, একটি সমৃদ্ধ পাঠাগার, ক্যাফেটেরিয়া ও আইটি সেকশনও থাকবে।

তিনি বলেন, এই মসজিদের বর্তমান আয়তন ৫ দশমিক ৫ একর। ১০ তলাবিশিষ্ট আধুনিক ভবনের জন্য আরও কিছু জায়গা কেনা হবে। এই মুহূর্তে পাগলা মসজিদের অ্যাকাউন্টে মানুষের দানের ১০৪ কোটি টাকা জমা আছে।

তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে মসজিদ কমপ্লেক্সের জন্য নকশা জমা দিয়েছে ১২টি প্রতিষ্ঠান। রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ দল পরীক্ষা করে একটি প্রতিষ্ঠানকে মনোনয়ন দিয়েছে। জেলা প্রশাসন ও মসজিদ কমিটি দ্রুত কার্যাদেশ দেবে এবং কাজ শুরু হয়ে যাবে।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন বলেন, দানবাক্স খোলা থেকে শুরু করে বস্তায় ভরা এবং গণনা শেষে ব্যাংক পর্যন্ত সব টাকা নিরাপদে পৌঁছাতে সার্বিক নিরাপত্তার কাজে তিনিসহ তাঁর পুলিশ সদস্যরা যথাযথ দায়িত্ব পালন করছেন।

দানবাক্স খোলার পর গণনা দেখতে মসজিদের আশপাশে ভিড় করেন উৎসুক জনতা। মসজিদটিতে নিয়মিত হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগলের পাশাপাশি নানা ধরনের জিনিসপত্র দান করেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মানুষ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দানের সিন্দুক থেকে টাকা প্রথমে বস্তায় ভরা হয়। এরপর টাকা গণনার জন্য বস্তাগুলো মসজিদের দোতলায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বস্তা থেকে টাকা মেঝেতে ঢেলে দেওয়ার পর শুরু হয় গণনার কাজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির কবর জিয়ারতে আসবেন তারেক রহমান, ইনকিলাব মঞ্চের অবস্থান পরিবর্তন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ১৯
শাহবাগ মোড়ে অবস্থানরত ইনকিলাব মঞ্চ তাদের অবস্থান কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন করেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
শাহবাগ মোড়ে অবস্থানরত ইনকিলাব মঞ্চ তাদের অবস্থান কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন করেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির কবর জিয়ারত করতে আজ শনিবার সকাল ১১টায় আসবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এদিকে তারেক রহমানের কবর জিয়ারতের কর্মসূচির কারণে শাহবাগ মোড়ে অবস্থানরত ইনকিলাব মঞ্চ তাদের অবস্থান কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন করেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ইনকিলাব মঞ্চের প্রকাশনা সম্পাদক ফাহিম আবদুল্লাহ জানান, হাদি হত্যার বিচার চেয়ে বেলা ১২টায় শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেবে ইনকিলাব মঞ্চ।

শাহবাগ মোড়ে অবস্থানরত ইনকিলাব মঞ্চ তাদের অবস্থান কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন করেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
শাহবাগ মোড়ে অবস্থানরত ইনকিলাব মঞ্চ তাদের অবস্থান কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন করেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সারারাত জেগে হাদি হত্যার বিচার চেয়ে শাহবাগে অবস্থান নিয়েছি। তারেক রহমান সকাল ১১টায় হাদির কবর জিয়ারত করতে আসবেন, সেজন্য আমরা ১২টায় শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেব।’

শাহবাগ মোড়ে অবস্থানরত ইনকিলাব মঞ্চ তাদের অবস্থান কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন করেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
শাহবাগ মোড়ে অবস্থানরত ইনকিলাব মঞ্চ তাদের অবস্থান কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন করেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

অবস্থানকারীরা জানায়, হাদি হত্যার বিচার চেয়ে শাহবাগ মোড়ের পশ্চিম দিকে তাঁরা অবস্থান নিয়েছেন। বিএনপি নেতা তারেক রহমানের হাদির কবর জিয়ারত শেষ হলে তাঁরা আবারও আজ ১২টায় শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ট্রাকের পেছনে বাসের ধাক্কা, নারীসহ আহত ৬

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪৫
শ্রীনগরে গতকাল রাতে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দিলে বাসের সামনের অংশ মুচড়ে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
শ্রীনগরে গতকাল রাতে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দিলে বাসের সামনের অংশ মুচড়ে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকের পেছনে সজোরে ধাক্কা লেগে বাসটির নারী যাত্রীসহ অন্তত ছয়জন আহত হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে জেলার শ্রীনগর উপজেলার ছনবাড়ি এলাকায় এক্সপ্রেসওয়ের মাওয়ামুখী লেনে এই দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার গাউস শিকদারের ছেলে নিয়ামত, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার রম্বু খলিফার ছেলে ইয়াছিন, বাগেরহাটের মোল্লারহাট উপজেলার আবেদ আলীর ছেলে হায়দার আলী, একই উপজেলার সোনা মিয়ার ছেলে আমেদ মিয়া, আসাদুজ্জামানের স্ত্রী জুলেখা আক্তার ও মাসুদ মিয়ার ছেলে রিজভী মিয়া।

শ্রীনগরে গতকাল রাতে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দিলে বাসের সামনের অংশ মুচড়ে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
শ্রীনগরে গতকাল রাতে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দিলে বাসের সামনের অংশ মুচড়ে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার দেওয়ান আজাদ হোসেন জানান, আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। পরে কয়েকজনের অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের ঢাকায় পাঠানো হয়। দুর্ঘটনার কারণে এক্সপ্রেসওয়েতে কিছু সময় যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। তবে দুর্ঘটনার সঠিক কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

দুর্ঘটনাকবলিত ‘টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস’ বাসটি হাসাড়া হাইওয়ে থানায় রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর ট্রাকটি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাত পেরিয়ে সকাল, শাহবাগ ছাড়েননি হাদি হত্যার বিচার দাবিতে বিক্ষোভকারীরা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ০২
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে আজ শনিবার সকালেও অবস্থান করতে দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের। গতকাল থেকে শুরু হওয়া এই অবরোধে সেখানে রাতভর অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বিক্ষোভকারীরা। সকালেও সেখানে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন তাঁরা।

গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ শিক্ষার্থী-জনতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাহবাগে এসে অবস্থান নেন। এ সময় তাঁরা সড়ক অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ করে দেন।

চারদিকে কুয়াশা আর হাড়কাঁপানো ঠান্ডার মধ্যেও শাহবাগ মোড় আন্দোলনের উত্তাপে সরব। হাদি হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের।

জাবের বলেন, ওসমান হাদি হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার এবং বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বেন না তাঁরা। সরকারের উপদেষ্টারা জনগণের সামনে এসে না দাঁড়ানো পর্যন্ত তাঁরা শাহবাগ ছাড়বেন না। হত্যার পরিকল্পনাকারী, হত্যাকারী ও তাঁদের ভারতে পালাতে সহায়তাকারীরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা রাজপথে অবস্থান চালিয়ে যাবেন।

ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের বিচারে সরকারের আগ্রহ নেই। হত্যার বিচার না হলে যমুনা ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।

ওমর বিন হাদি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ওপর চাপ থাকলে বা তাঁকে দেশের গোয়েন্দা সংস্থা সাহায্য না করলে আন্তর্জাতিক তদন্ত সংস্থাকে নিযুক্ত করতে হবে।

শরিফ ওসমান হাদি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে প্রচার চালাচ্ছিলেন। ১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের কিছু পর রাজধানীর পুরানা পল্টনের কালভার্ট রোডে মোটরসাইকেল থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। তাঁকে মাথায় গুলি করার পর আততায়ীরা মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে ১৮ ডিসেম্বর মারা যান তিনি।

এই ঘটনায় গত মঙ্গলবার ‘শহীদি শপথ’ নেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যরা। ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ওসমান হাদি হত্যার বিচার সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত