Ajker Patrika

শিক্ষার্থীর সংকট সরকারি স্কুলে

আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা
আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০: ০০
একই কক্ষে পাশাপাশি দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস। সম্প্রতি গাইবান্ধা শহরের কেএন রোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা
একই কক্ষে পাশাপাশি দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস। সম্প্রতি গাইবান্ধা শহরের কেএন রোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাইবান্ধা শহরের ভিএইড সড়কে অবস্থিত কেএন রোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ৬৩ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টির আশপাশে ঘনবসতি। সে হিসেবে শ্রেণিকক্ষগুলো শিক্ষার্থীতে ঠাসা থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। শিশুশ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মাত্র ৪০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে এই বিদ্যালয়ে।

শ্রেণি অনুযায়ী শিক্ষার্থীর সংখ্যা হলো শিশু শ্রেণিতে ১১, প্রথম শ্রেণিতে ৭, দ্বিতীয়তে ৪, তৃতীয়তে ৫, চতুর্থে ৪ ও পঞ্চম শ্রেণিতে ৫ জন। অথচ স্কুলটিতে ৬ জন শিক্ষক ও ২ জন কর্মচারী আছেন। শিক্ষার্থী প্রায় শূন্য হয়ে গেলেও শিক্ষকের সংকট নেই। তবে শিক্ষকেরা এ বিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি নন। তাঁদের ভাষ্য, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস অবগত আছে, এ বিষয়ে শিক্ষকদের কিছু করার নেই।

প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, পৌর শহরের ১৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি আছে ৩ হাজার ৭০৪ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে নিয়মিত শিক্ষার্থী ২ হাজার ৫০০। তার মধ্যে গোটা ছয়েক স্কুল ছাড়া বাকিগুলোতে শিক্ষার্থী নেই বললেই চলে। তবে পর্যাপ্ত শিক্ষক রয়েছেন।

অন্যদিকে শহরের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোয় বিপরীত চিত্র। ১২টি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। উপস্থিতির হার ৯৮ শতাংশ। তার মধ্যে শাহ আহম্মেদ উদ্দিন শিশুনিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষার্থী প্রায় ২ হাজার ১০০। জিইউকে রেসিডেনসিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিশুশ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৪০০ শিক্ষার্থী। আর এসকেএস স্কুল অ্যান্ড কলেজে একই পর্যায়ে শিক্ষার্থী ৫২৬ জন।

সম্প্রতি কেএন রোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়টির পর্যাপ্ত অবকাঠামো আছে। অফিসরুমসহ মোট সাতটি কক্ষ। এর মধ্যে ছয়টি শ্রেণিকক্ষ। তার পরও দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একই কক্ষে পাশাপাশি বসিয়ে ক্লাস নিচ্ছিলেন দুই শিক্ষক। অনিমা বেগম পড়াচ্ছেন দ্বিতীয় শ্রেণির গণিত আর রাজিয়া সুলতানা পড়াচ্ছেন তৃতীয় শ্রেণির ইংরেজি। জানতে চাইলে শিক্ষকেরা বলেন, ‘ক্লাসে শিক্ষার্থী একেবারে কম, তাই দুজন মিলে পাশাপাশি ক্লাস নিচ্ছি।’

স্থানীয়দের অভিযোগ, ৬৩ বছর ধরে বিদ্যালয়টি কখনো ভালো ফলাফল করতে পারেনি। অথচ শিক্ষকেরা কর্তাব্যক্তিদের ‘ম্যানেজ’ করে ভুয়া প্রতিবেদন দিয়ে চাকরি করছেন। স্থানীয় হুমায়ুন সরকার বলেন, ‘অনিয়মের পাশাপাশি পড়াশোনার পরিবেশও নেই। তাই কেউ ভর্তি করে না। শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা সব জেনেও চুপ।’ স্থানীয়রা বলছেন, তাঁরা পড়াশোনার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বাড়ি বাড়ি ঘুরেছেন; কিন্তু ফল মেলেনি। শিক্ষার্থী না পাওয়ায় তাঁরাও হতাশ।

জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. ওয়াহিদা শিরিন বলেন, ‘বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবাই জানেন। শিক্ষার্থী বাড়ানোর চেষ্টা করছি।’ একই কক্ষে দুই বিষয়ে ক্লাস নেওয়ার প্রশ্নে অসুস্থতার কথা বলে তিনি এড়িয়ে যান।

একইভাবে পিটিআই-সংলগ্ন পরীক্ষণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি ২০৩ শিক্ষার্থী। তার মধ্যে নিয়মিত ক্লাস করে ১৬০ জন। উত্তরপাড়া ২ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি ১৬০, নিয়মিত ১২০ জন। এভাবে শহরের বেশির ভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একই অবস্থা। পর্যাপ্ত শিক্ষক আছেন; কিন্তু শিক্ষার্থী নেই।

অভিভাবকেরা বলছেন, তাঁরা সরকারি বিদ্যালয়ের চেয়ে সন্তানের ভর্তিতে বেশি ঝুঁকছেন কিন্ডারগার্টেন ও এনজিও পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে। এসব প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো, প্রচার-প্রচারণা ও নামের কারণে অভিভাবকেরা সেখানে সন্তান ভর্তি করছেন।

আসাদুজ্জামান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরে এল নাজমা শাকিল বলেন, ‘শিক্ষার্থী না পাওয়া আমাদের ব্যর্থতা। অভিভাবকদের বোঝাতে পারিনি যে, সরকারি বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেও ভালো ফল করা যায়। অভিভাবকদের অনীহার কারণে সরকারি বিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীর সংকটে ভুগছে।’

অভিভাবক ঈসমাইল হোসেন বলেন, ‘সরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষার মান খারাপ। শিক্ষকেরা নিয়মিত ক্লাস নেন না। তাই আমার মতো অনেক অভিভাবক সন্তানকে সরকারি স্কুলে পড়াতে চান না।’

জানতে চাইলে পলাশবাড়ী আদর্শ কলেজের অধ্যাপক ফেরদৌস আলম বলেন, ‘শিক্ষার্থী ফিরিয়ে আনতে হলে সরকারি বিদ্যালয়গুলোকে প্রমাণ করতে হবে, তারা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ভালো ফল করতে পারে। অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে। প্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা স্কুল ফাঁকি দিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসে গিয়ে অযথা সময় কাটান, এসব বন্ধ করতে হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লক্ষ্মণ কুমার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শহরের বেশ কয়েকটি স্কুলে শিক্ষার্থীর সংকট রয়েছে। জেলাসহ উপজেলা পর্যায়ে যেসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী কম, সেখানে ভর্তির সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘আয়নাঘর থেকে নির্বাচনী মাঠে ফেরা আমার নতুন জীবন’

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি 
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগ‌ঞ্জ উপ‌জেলার সোহাগী ইউনিয়নে বিএনপির কর্মী সম্মেলনে দলের এমপি প্রার্থী প্রকৌশলী লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বাবু। ছবি: আজকের পত্রিকা
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগ‌ঞ্জ উপ‌জেলার সোহাগী ইউনিয়নে বিএনপির কর্মী সম্মেলনে দলের এমপি প্রার্থী প্রকৌশলী লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বাবু। ছবি: আজকের পত্রিকা

আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী প্রকৌশলী লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বাবু বলেছেন, ‘যতবার এই দেশ স্বৈরাচারের কবলে পড়েছে, যতবার এই দেশের মানুষ বিপদগ্রস্ত হয়েছে; একজন মানুষ মমতা দিয়ে এই দেশকে আগলে রেখেছেন—তিনি হলেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আমরা তাঁর দল করি। ১৭ বছর প্রবাসে থেকে যিনি তৃণমূলকে সংগঠিত করে এই দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, আপনারা তাঁর দল করেন, দেশনায়ক তারেক রহমানের দল করেন।’

বুধবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগ‌ঞ্জ উপ‌জেলার সোহাগী ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কর্মী সম্মেলনে এসব কথা বলেন মাজেদ বাবু।

ধানের শীষ প্রতীকে ভোট চেয়ে মাজেদ বলেন, ‘আমি রাজনীতিতে এসেছি আপনাদের সঙ্গে নিয়ে মানুষকে আলো জ্বালাতে। দল আমার ওপর আস্থা রেখেছে। সেই আস্থার প্রতিদানস্বরূপ আমরা একটি ঝোড়ো বাতাসের মোমবাতি হতে চাই, যে মোমবাতি আস্তে আস্তে জ্বালিয়ে একটি শিক্ষিত মূল্যবোধের প্রজন্ম তৈরি করতে চাই।’

মাজেদ বাবু আরও বলেন, ‘আয়নাঘর থেকে নির্বাচনী মাঠে ফেরা আমার নতুন জীবন। মামলা, হামলা ও আয়নাঘরে নির্যাতিত হয়েও শহীদ জিয়ার আদর্শ থেকে কখনো বিচ্যুত হইনি। রাজনীতি করে আমার নেওয়ার কিছু নেই। আমার লক্ষ্য একটি শিক্ষিত সমাজ গড়ে ঈশ্বরগঞ্জকে আধুনিক ও সমৃদ্ধশালী উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলা।’

উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব আমিরুল ইসলাম ভূঁইয়া মনির সঞ্চালনায় কর্মী সম্মেলনে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কেরানীগঞ্জে বিএনপির মিছিল থেকে ফাঁকা গুলির অভিযোগ

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ঢাকার কেরানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের লকডাউন কর্মসূচির প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষোভ-মিছিল থেকে এক যুবদল নেতার বাড়িতে ফাঁকা গুলিবর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নের পশ্চিমদী এলাকায় ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে।

অভিযোগকারী সাবেক যুবদল নেতা রিফাত মোল্লা বলেন, ‘ধানের শীষের একটি মিছিল থেকে আমার বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়েছে। এর আগেও ৯ নভেম্বর তারা আমার বাড়ির সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।’

রিফাত মোল্লার অভিযোগ, নিপুণ রায়ের সমর্থক ঢাকা জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক জুয়েল মোল্লা ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম মোল্লা এই মিছিলের নেতৃত্ব দেন।

কেরানীগঞ্জ থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম মোল্লা বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের লকডাউন কর্মসূচির প্রতিবাদে আমরা বিক্ষোভ-মিছিল নিয়ে প্রয়াত চেয়ারম্যান লুৎফর মোল্লার বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম, এ সময় বাড়ির ভেতর থেকে একটি গুলি করা হয়, এতে নেতা-কর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।’ তিনি দাবি করেন, প্রয়াত চেয়ারম্যানের ছেলে রিফাত মোল্লা বাড়ির ভেতর থেকে গুলি করেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, দুই পক্ষই বিএনপির সমর্থক, একে অপরকে দোষারোপ করায় দায়দায়িত্ব বিএনপির ওপরেই বর্তায়, ঘটনার তদন্তে আসল সত্য বেরিয়ে আসবে বলে তাঁরা মনে করেন।

এ ব্যাপারে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ মোহাম্মদ আক্তার হোসেন বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গুলির একটি খোসা উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বকশীগঞ্জে বিদ্যুতায়িত হয়ে গৃহবধূর মৃত্যু

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি    
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নে রাইস কুকারে রান্না করতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার (১২ নভেম্বর) সকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের সূর্যনগর গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মৃত গৃহবধূর নাম সুরুজা বেগম (৪৫)। তিনি সূর্যনগর গ্রামের আব্দুর রশিদের স্ত্রী।

মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সকালে সুরুজা বেগম রাইস কুকারে ভাত রান্না করছিলেন। একপর্যায়ে তিনি বিদ্যুতের সুইচ বন্ধ না করেই কুকারটি নামাতে গেলে বিদ্যুতায়িত হয়ে গুরুতর আহত হন। পরিবারের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মির্জা সোহেল জানান, রান্নার সময় অসাবধানতাবশত বিদ্যুতায়িত হয়ে সুরুজা বেগমের মৃত্যু হয়েছে।

বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ বলেন, পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাবেক এমপি নিক্সনের গানম্যানের নেতৃত্বে ভাঙ্গায় বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক বানানো হচ্ছিল: পুলিশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২২: ৫৮
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল। ছবি: আজকের পত্রিকা
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে পেট্রলবোমা ও ককটেল বানানোর সময় তিন যুবককে আটক করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, সাবেক সংসদ সদস্য ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর গানম্যান মুরাদ খানের নেতৃত্বে এসব বিস্ফোরক বানানো হচ্ছিল। আজ বুধবার রাতে ভাঙ্গা থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল এ কথা বলেন।

অভিযুক্ত মুরাদ খান মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার উতরাইল নয়াবাজার এলাকার বাসিন্দা।

আজ বেলা ২টায় উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণপাড়া গ্রামের সৌদিপ্রবাসী টিটু সরদারের পরিত্যক্ত টিনের ঘরে অভিযান চালায় পুলিশ। সেখানে বিস্ফোরক বানানোর সময় তিন যুবককে আটক করা হয়। এ সময় ২৩টি পেট্রলবোমা, বেশ কয়েকটি ককটেল, বারুদ, গান পাউডার, পেট্রল, অকটেনসহ বিস্ফোরক বানানোর উপকরণ জব্দ করে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, আটক হওয়া তিন যুবক ভবঘুরে এবং তাঁরা ঢাকার মিরপুরে থাকেন। আটক ব্যক্তিরা হলেন হুসাইন রাজ (২৫), আহমেদুল রশিদ রাকিব (২৪) ও জিয়াউর রহমান (২৮)।

পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল বলেন, ‘আগামীকাল মানবতাবিরোধী ট্রাইব্যুনালের একটি রায়কে কেন্দ্র করে কার্যক্রম নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগের কর্মসূচি বাস্তবায়নে অরাজকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এই বাড়িতে বিস্ফোরক দ্রব্য তৈরি করা হচ্ছিল। মুরাদ খান নামের যুবলীগের এক কর্মীর নেতৃত্বে এগুলো তৈরি করা হয়। এই মুরাদ এই আসনের (ফরিদপুর-৪) এমপি মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর গানম্যান ছিল বলে আমরা জানতে পেরেছি এবং রাজিব নামের আরেক যুবলীগ নেতার নিকট থেকে এগুলো আনা হয়। তাদেরও আমরা গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।’

পুলিশ সুপার বলেন, ভাঙ্গা গোলচত্বর ঘিরে আজ থেকেই ফোর্স ও গোয়েন্দা সদস্য মোতায়েন রয়েছে এবং চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এ ছাড়া আগামীকাল ভোর ৫টা থেকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সতর্ক অবস্থানে থাকবে।

ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে দৌড়ে পালাতে গেলে তিনজনকেই আটক করতে সক্ষম হই। তাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত