Ajker Patrika

রাজনৈতিক বিশ্বাসের জায়গায় থেকে বিচ্যুত হননি সাহাবুদ্দীন আহমদ: আসাদুজ্জামান নূর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২২, ১৩: ৫৩
রাজনৈতিক বিশ্বাসের জায়গায় থেকে বিচ্যুত হননি সাহাবুদ্দীন আহমদ: আসাদুজ্জামান নূর

সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহদ রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, বিশ্বাস ও নীতিবোধের জায়গা থেকে কখনো বিচ্যুত হননি। অনেক সময় অনেক সমালোচনার মুখেও হয়তো পড়েছিলেন, কিন্তু তার পরেও তিনি বিচ্যুত হননি।

আজ রোববার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের জাতীয় ঈদগাহে সাহাবুদ্দীন আহমদের জানাজার আগে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর।

আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি ও বিচার বিভাগে সাহাবুদ্দিন আহমদ যে ভূমিকা পালন করেছিলেন, তা দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নিয়ে তাঁকে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়েছিল। কারণ তখন অনেকগুলো রাজনৈতিক দল একসঙ্গে ছিল। তাদের মধ্যে মতপার্থক্যও ছিল। সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে, সবাইকে সফলতার সঙ্গে একটা জার্নিতে নিয়ে যাওয়া কঠিন কাজ ছিল। সেটা তিনি দক্ষতার সঙ্গে করেছিলেন বলে আমি মনে করি।’ 

আসাদুজ্জামান নূর আরও বলেন, ‘সংসদীয় গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে তাঁর ভূমিকা ছিল কঠোর। সেই সময় দুটি প্রস্তাব ছিল—একটি রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসনব্যবস্থা, আরেকটি হলো সংসদীয় সরকার। উনি দৃঢ়ভাবে সংসদীয় সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। উনি বিশ্বাস করতেন যে সংসদীয় গণতন্ত্র ছাড়া আমাদের দেশে রাজনীতিতে কোনো বিকল্প নেই। এখানে যেকোনো রাষ্ট্রপতি, যেকোনো মুহূর্তে স্বৈরশাসকে পরিণত হতে পারেন। কিন্তু সংসদীয় গণতন্ত্রে সেই সুযোগ নেই। 

প্রসঙ্গত, সাহাবুদ্দীন আহমদ সম্পর্কে আসাদুজ্জামান নূরের ভাইয়ের শ্বশুর। আত্মীয়তার সম্পর্ক কখনোই কর্মজীবনে প্রভাব পড়েনি বলে জানান নূর। একটি ঘটনার স্মৃতিচারণ করে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘তিনি যখন প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন আমার মাকে ফোন করে বলেছিলেন, আমি যেন তাদের বাসভবনে যাওয়া-আসা না করি। যেহেতু আমি রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত।’ 

সাবেক এই সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমার পক্ষে তাঁর সম্পর্কে বলা কঠিন। কারণ আমরা ঘনিষ্ঠ পরিবেশে তাঁকে দেখেছি। সেক্ষেত্রে মূল্যায়ন কঠিন কাজ। আমি তাঁকে যেহেতু পারিবারিকভাবে দেখেছি। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে যদি বলি, তিনি একজন সরল, সহজ, স্বচ্ছ, সৎ ও নির্ভীক মানুষ ছিলেন। আমরা যারা আত্মীয়স্বজন ছিলাম।’ 

সাহাবুদ্দীন আহমদের ছোট ছেলে সোহেল আহমদ বলেন, ‘বাবা তাঁর কর্মজীবনের অধিকাংশ সময়ই এই ভবনে (সুপ্রিম কোর্ট) ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে উনি মনেপ্রাণে একজন বিচারক ছিলেন। ওনার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন, সন্তান ও অধীনস্থ কর্মচারীদের সঙ্গে ব্যবহারে তাই মনে হয়েছে। তিনি সবার সঙ্গে সমান ব্যবহার করতেন।’ 

সাহাবুদ্দীন আহমদ গত ১২ ফেব্রুয়ারি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি হয়েছিলেন বলে জানান সোহেল আহমদ। তিনি বলেন, ‘ওই সময় থেকেই মহামান্য রাষ্ট্রপতি ব্যক্তিগতভাবে খোঁজখবর নিয়েছিলেন, শেষ দিন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছিল। এ জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। প্রধান বিচারপতিও গত এক মাস ধরে আমাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। চিকিৎসার ব্যাপারে সব সহযোগিতা করা হয়েছিল। সরকারের পক্ষ থেকেও নিয়মিত খোঁজখবর রাখা হয়েছিল। সে জন্য আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেটে জুয়া খেলা অবস্থায় আটক ৭

সিলেট প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সিলেটে জুয়া খেলা অবস্থায় ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

পুলিশ জানায়, বুধবার বিকেলে সিলেটের কোতোয়ালি মডেল থানাধীন কানিশাইল ১ নম্বর রোডের মারুফ টি স্টল নামক দোকানে অভিযান পরিচালনা করে তির শিলং-জাতীয় জুয়া খেলা অবস্থায় তাঁদের আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন সিলেটের কোতোয়ালি মডেল থানাধীন কানিশাইলের সজীব মিয়ার কলোনির রমিজ আলীর ছেলে তাহের মিয়া (৩০), উসমান মিয়ার ছেলে শামীম (২০), ইমন মিয়ার কলোনির মো. আব্দুল করিম তালুকদারের ছেলে মো. স্বপন মিয়া (৫৫), রঙ্গ মিয়ার ছেলে জসিম (৪৫), জামাল উদ্দিনের ছেলে আল আমিন (২৭), আব্দুর রশিদের ছেলে মো. বাদল (৩৮) এবং আবুল কালামের ছেলে সুজাত মিয়া (৩৫)।

মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনায় মা হত্যায় ছেলে গ্রেপ্তার

খুলনা প্রতিনিধি
মো. রিয়াদ খান।  ছবি: সংগৃহীত
মো. রিয়াদ খান। ছবি: সংগৃহীত

খুলনায় শিউলী বেগম হত্যা মামলায় ছেলে মো. রিয়াদ খানকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তাঁকে খুলনা র‌্যাব-৬ এবং ৭-এর যৌথ অভিযানে ফেনী জেলার সদর থানা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার রিয়াদ শিউলী বেগমের একমাত্র ছেলে। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ২ লাখ ৫ হাজার ৮০ টাকা, দুটি আইফোন, একটি স্মার্টফোন ও একটি এয়ারপড জব্দ করা হয়।

র‌্যাবের পাঠানো বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানা গেছে, নিহত শিউলি বেগম সৌদি আরবপ্রবাসী ছিলেন। গত ২৭ অক্টোবর দুই মাসের ছুটিতে বাংলাদেশে আসেন। পরে নগরীর ট্যাংক রোডের বাসিন্দা রবিউল ইসলামের বাড়ির নিচতলায় ছেলে রিয়াদ খান এবং দ্বিতীয় স্বামী সাগরকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন।

দেশে আসার ১০-১২ দিন পরে উত্তরা ব্যাংক খুলনা শাখা থেকে পৌনে ৭ লাখ টাকা উত্তোলন করে আলমারিতে রেখে দেন।

৯ ডিসেম্বর রাতে শিউলী বেগমের বড় মেয়ে রুবিনা আক্তার এবং তাঁর স্বামী রাজিব রাতের খাবার খেয়ে বাড়িতে চলে যান। ১০ ডিসেম্বর সকাল থেকে শিউলী বেগমকে ফোনে না পেয়ে রুবিনা আক্তারকে খোঁজ নিতে বলেন তাঁর স্বামী।

কিন্তু খোঁজ নিয়ে তাঁর সন্ধান না পেয়ে ওই দিন রাতে স্থানীয়দের সহায়তায় তালা ভেঙে ঘর থেকে শিউলী বেগমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পরে তাঁর ঘর থেকে পৌনে ৭ লাখ টাকা উধাও হয়ে যায়। শিউলী বেগম হত্যার পর থেকে একমাত্র ছেলে রিয়াদ খানেরও কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই রায়হান গাজী বাদী হয়ে শিউলী বেগমের ছেলে রিয়াদ খানকে আসামি করে মামলা করেন। উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় র‌্যাব খুলনা-৬ ও ৭-এর একটি দল তাঁকে ফেনী সদর থেকে গ্রেপ্তার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নরসিংদীতে তিন চোখ ও দুই মুখের বাছুরের জন্ম, এলাকায় চাঞ্চল্য

নরসিংদী প্রতিনিধি
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীতে অদ্ভুত আকৃতির বাছুরের জন্ম হয়েছে। বাছুরটির রয়েছে দুটি মুখ, দুটি জিহ্বা, দুটি কান ও তিনটি চোখ। এর মধ্যে একটি চোখ বাছুরের কপালের মাঝখানে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

২৩ ডিসেম্বর রাতে শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের পুবেরগাঁও গ্রামে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাশেম খানের খামারে বাছুরটির জন্ম।

খামারমালিক কাশেম খান বলেন, বাছুরটি জন্মের পর থেকেই অসুস্থ। স্বাভাবিকভাবে দুধ পান করতে না পারায় ফিডারের মাধ্যমে দুধ খাওয়াতে হচ্ছে।

তিনি জানান, তাঁর খামারের একটি গাভি বাছুরটির জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেন, এর আগেও গাভিটির বাছুর হয়েছে। কিন্তু এবারের মতো এমন অদ্ভুদ বাছুর আগে কখনো হয়নি।

ঘটনাটি জানাজানির পর থেকেই বাছুরটিকে একনজর দেখতে আশপাশের কৌতূহলী মানুষ খামারে আসছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল জলিল বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকে গরু-ছাগল দেখছি। কিন্তু তিন চোখ আর দুই মুখের বাছুর এই প্রথম দেখলাম। খবর পেয়ে দূর থেকে এসেছি।’

আরেক স্থানীয় নারী জরিনা বেগম বলেন, ‘বাছুরটা দেখতে অদ্ভুত লাগলেও মায়া হচ্ছে। বাছুরটির স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। অনেকেই দ্রুত প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসকের পরামর্শ ও চিকিৎসা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিচ্ছেন।’

এর আগে এ ধরনের বাছুর জন্মের বিষয়ে প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাধারণত জেনেটিকস ডিফেক্টের কারণে গাভির এমন ত্রুটিপূর্ণ বাচ্চার জন্ম হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজীপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ নিহত ৩

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের কালীগঞ্জে রেললাইন দিয়ে হাঁটার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ তিন নারী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে টঙ্গী-ভৈরব রেলপথের আড়িখোলা রেলস্টেশনসংলগ্ন টেকপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নারীরা হলেন কালীগঞ্জ পৌরসভার দেওয়ালেরটেক গ্রামের মোবারক হোসেনের স্ত্রী সাদিয়া বেগম (২৪), একই এলাকার বাবু মিয়ার মেয়ে অনাদি আক্তার (১৩) এবং নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার মরজাল এলাকার বাসিন্দা কমলা বেগম (৫৫)। নিহত কমলা বেগম ও অনাদি আক্তার সম্পর্কে নানি-নাতনি এবং সাদিয়া বেগম তাঁদের প্রতিবেশী ছিলেন।

স্থানীয়রা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আড়িখোলা রেলব্রিজ এলাকায় রেললাইনের ওপর দিয়ে তিনজন হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নোয়াখালীগামী ‘উপকূল এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি চলে আসে। এ সময় তাঁরা রেলব্রিজের ওপর থাকায় সেখান থেকে দ্রুত সরে যাওয়ার সুযোগ পাননি। পরে ট্রেনটি তাঁদের ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই কমলা বেগম ও সাদিয়া বেগমের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় অনাদি আক্তারকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জিয়াউর রহমান জানান, অনাদি আক্তারকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওবায়দুল হক জানান, এটি রেলওয়ের আওতাধীন দুর্ঘটনা হওয়ায় রেলওয়ে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।

রেলওয়ে নরসিংদী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) দিলীপ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল সম্পন্ন করেছি। নিহত নারীদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বিনা ময়নাতদন্তে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত