Ajker Patrika

ক্যামেরার লেন্সে বৈমানিকের চোখ, শিকদার আহমেদের আলোকচিত্র প্রদর্শনী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ০১: ৫৭
ক্যামেরার লেন্সে বৈমানিকের চোখ, শিকদার আহমেদের আলোকচিত্র প্রদর্শনী

ছিলেন বৈমানিক। ঘুরেছেন দেশে দেশে। উড়োজাহাজ নিয়ে গেছেন ৬০টি দেশের দেড় শ গন্তব্যে। অন্যদের মতো হোটেলে অলস সময় না কাটিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন ক্যামেরা নিয়ে, তুলেছেন ছবি। শখের বশে তোলা সেসব ছবি নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন শিকদার আহমেদ। আজ শুক্রবার বিকেলে আর্মি গলফ ক্লাবে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন। 

সদরঘাটের নৌকা, ইতালির ভেনিস, বগুড়ার লাল আলু, রাতের আইফেল টাওয়ার, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলের খরা, প্যারিসের এয়ার শো, কেনিয়ার বাঘ থেকে শুরু করে বাংলাদেশের ধানের চাতাল, কুমোর বাড়ির হাঁড়ির ছবিসহ ৬০টি ছবি নিয়ে চলছে প্রদর্শনী। ‘যেখানে পূর্ব মিলিত হয়েছে পশ্চিমে’ শিরোনাম ছবির প্রদর্শনী আগামীকাল শনিবার বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। 

প্রদর্শনীর উদ্বোধন করে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ছবিগুলো অভূতপূর্ব। এসব ছবির মূল্য অনেক। ছবিগুলো আসলেই ইউনিক। ছবিগুলো দেখার পর মনে হয়েছে আপনি (শিকদার আহমেদ) পৃথিবীর যে কোনো ফটোগ্রাফারের সমতুল্য। শুধু অভাব হচ্ছে আপনাকে তুলে ধরা। আজ থেকে ইউএস-বাংলায় সব প্রতিষ্ঠানের ক্যালেন্ডার আপনার ছবি দিয়ে করা হবে।’ 

প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন। ছবি: আজকের পত্রিকাইয়াঙ্গুন করপোরেশনে চাকরি করার সময় ছবি তোলা শুরু করেন জানিয়ে শিকদার আহমেদ বলেন, ‘ইয়াঙ্গুনের চেয়ারম্যান অর্ডার শেষ হওয়ার পর বায়ারদের সঙ্গে দেখা করতে যেতাম। সে সময় আমাকে বিশ্বের ১৬০টি গন্তব্যে যেতে হয়েছে। হোটেল বসে না থেকে আমি ক্যামেরা নিয়ে বের হতাম। ফটোগ্রাফি এবং পাইলট কম্বিনেশনটা কেমন যেন মনে হতো। অনেক সময় ল্যান্ড করার পর সবাই যখন হোটেলে গেছে তখন আমি ক্যামেরার ব্যাগ নিয়ে ছবি তোলার জন্য বের হয়েছি। এমন করে করেই ছবিগুলো তুলেছি। আমি রং ভালোবাসি, ছবিতেও তার প্রতিফলন আছে। আমি ছবি সম্পাদনা করি না। ফটোগ্রাফি বেশ কষ্টের ব্যাপার। সারা দিন ছবি তুলে, সারা রাত ট্রাভেল করে আবার অফিস করেছি। বাংলাদেশকে কালারফুল হিসেবে তুলে ধরতে চাই।’ 

ইউএস-বাংলার এমডি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড ফটোগ্রাফি ডে-তে দেখলাম গত দুই দশকে বাংলাদেশের ৯০০ আলোকচিত্রী আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছে। আরেকটা দুর্ভাগ্যজনক জিনিস—বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি মিলে ১২০টি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। ভুটান, নেপাল বাদে দক্ষিণ এশিয়ায় যাদের বেশি সংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয় আছে তার মধ্যে আমাদের এখানে (ফটোগ্রাফি নিয়ে) কোনো ব্যাচেলর ডিগ্রি পড়ানো হয় না। গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে তিন মাসের কোর্স করাতে পারি। আপনার মধ্যে যে জ্ঞান আছে সেটা মানুষের মধ্যে দিয়ে দেবেন।’ 

 ‘করোনার সময় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের আমি আর আহমেদ ভাই (শিকদার আহমেদ) মিলে যুদ্ধ করেছি। বাংলাদেশের বাইরে চেন্নাই, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনামে বিভিন্ন কারণে হাজার হাজার মানুষ আটকে ছিল। তার নেতৃত্বে আমরা তাদের বাংলাদেশে নিয়ে এসেছি। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস দক্ষিণ এশিয়ার সব থেকে উদীয়মান এয়ারলাইনস, এর পথিকৃৎ তিনি। আমি শুধু মালিক হিসেবে তাঁকে নির্দেশনা দেই।’ 

উড়োজাহাজ নিয়ে ৬০টি দেশের দেড়শ গন্তব্যে গেছেন শিকদার আহমেদ, তুলেছেন অসাধারণ সব ছবি। ছবি: আজকের পত্রিকাইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসকে প্রতিষ্ঠিত করতে কীভাবে কাজ করেছেন, সে বিষয়েও কথা বলেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি বলেন, ‘সাধারণত আমার খুব বদনাম, আমাকে কেউ দাওয়াত দিলে আমি যাই না। এটার কারণ আছে, কারণ হচ্ছে আমি মনে করি এই পাঁচটা ঘণ্টা আমার প্রয়োজন, আমি যদি আমার প্রতিষ্ঠানে পাঁচ ঘণ্টা সময় দেই তাহলে হয়ত ১৫ জন মানুষের চাকরি হবে বা আরেকটি নতুন প্রতিষ্ঠান দাঁড়াবে। আসলে আমার নেশা কাজ করা।’ 

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে শিকদার আহমেদের মা হাসিনা শিকদার বলেন, ‘আপনারা আমার ছেলেকে যে সম্মান দিয়েছেন সে জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সন্তানদের সঙ্গে এখন যুক্তরাষ্ট্রে থাকছেন শিকদার আহমেদ। গত বছর নিউইয়র্কে এবং গত মাসে নেপালে নিজের ছবির প্রদর্শনী করেছেন।’ 

দুই দিনের প্রদর্শনীতে পৃষ্ঠপোষকতা করছে লুবনান। লুবনান ট্রেড কনসোর্টিয়াম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হক খান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। আজকের পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কামরুল হাসান ছাড়াও শিকদার আহমেদের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনেরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সংস্কৃতির ওপর আঘাত মানে নতুন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষাকে ব্যাহত করা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনের সামনে সংস্কৃতির ওপর আক্রমণের প্রতিবাদ সমাবেশ করেন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানটির কর্মী ও সদস্যরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনের সামনে সংস্কৃতির ওপর আক্রমণের প্রতিবাদ সমাবেশ করেন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানটির কর্মী ও সদস্যরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাঙালি সংস্কৃতি বা সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ওপর আঘাত মানে গণ-অভ্যুত্থানের নতুন বাংলাদেশের যে আকাঙ্ক্ষা বা স্বপ্ন সেটিকে ব্যাহত করা বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠান ‘ছায়ানট’-এর কর্মীরা। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনের সামনে সংস্কৃতির ওপর আক্রমণের প্রতিবাদ সমাবেশে এ কথা বলেন ছায়ানট সংস্কৃতিকর্মীরা।

এ সময় গানে গানে সংহতি সমাবেশের আয়োজনের মাধ্যমে সংস্কৃতি স্থাপনার ওপর আক্রমণের প্রতিবাদ জানানো হয়। প্রতিবাদ ও সংহতি সমাবেশে এক হাজারের বেশি সংস্কৃতিকর্মী অংশগ্রহণ করেছেন জানান পার্থ তানভীর।

ছায়ানটের প্রাক্তন শিক্ষার্থী কৃষ্ণকলি ইসলাম বলেছেন, ‘আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, আমরা এটা কখনো মেনে নিতে পারি না। শত শত, হাজার হাজার সংস্কৃতি ব্যক্তি এখান থেকে শিখে বের হয়েছেন, যা দেশের সংস্কৃতি চর্চা ছড়িয়ে দিয়েছেন। এই আক্রমণ জাতি হিসেবে লজ্জার। ’২৪-এর জুলাইয়ের ৫ আগস্টের পর নতুন বাংলাদেশের যে আকাঙ্ক্ষা বা স্বপ্ন ছিল মানুষের, সেই আকাঙ্ক্ষা বেহাত হয়েছে।’

তৃষ্ণা রানী শীল বলেন, ‘আমরা নতুন পরিবর্তন আশা করেছিলাম। কিন্তু এমন পরিবর্তন সবার জন্য দুঃখজনক, যা কাম্য ছিল না। যা হয়েছে সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার হোক। সংস্কৃতি ছাড়া সুষ্ঠু বাংলা গড়তে পারব না। আমরা সামনের নতুন বছর নতুনভাবে শুরু করতে চাই সংস্কৃতি মনপ্রবণ নিয়ে। যত দিন সংস্কৃতি থাকবে ছায়ানট থাকবে।’

ছায়ানটের শিক্ষার্থী মো. জাবির মুনতাসির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যারা এই ঘৃণিত কাজটি করেছে ঠিক করেনি। শিল্পীদের প্রিয় জায়গা হচ্ছে ছায়ানট। এখানে সবাই গান শেখে, আমিও শিখি। ছুটির দিনে শুক্রবার আনন্দের সঙ্গে গান শিখতে এসে দেখি কিছু অসভ্য লোকেরা নাকি ছায়ানটে হামলা করেছে। সভ্য মানুষ হলে বাংলার বুকে এভাবে আঘাত হানতে পারত না।’

নাজিয়া হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মনুষ্যত্বপূর্ণ মানুষ হয়ে দেখাতে হবে। আমরা যে নতুন প্রজন্ম, সুস্থ মনস্তাত্ত্বিক ভাবনা নিয়ে বেড়ে উঠছি সেটাকে আঘাত করা হয়েছে বলে মনে করছি। এটা শুধু সংস্কৃতির ওপর আঘাত নয়, এটা আমাদের বেড়া ওঠার বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি।’

ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ছায়ানটের মতো একটা বৃহৎ সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠান, যেটা কিংবদন্তি। সেই কিংবদন্তি স্থাপনার ওপর হামলা মেনে নেওয়া যায় না। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, মুক্তিযোদ্ধা, অভ্যুত্থান সবকিছুতে সংস্কৃতিতে এই গান অগ্রভাগে ছিল, আছেই। যুগ যুগ ধরে গান শুনিয়ে দেশপ্রেমিক মানুষকে সাহস ও অনুপ্রাণিত করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরে এমন একটা ঘটনা কীভাবে ঘটাল, এটা আমরা মেনে নিতে পারি না। এই স্থাপনার ওপর হামলা মানে বাঙালির জাতিসত্তার ওপর হামলা। আমরা এই হামলার সুষ্ঠু তদন্ত চেয়ে বিচার চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভাড়াটে চোরদের নিয়ে ষাঁড় চুরি করছিলেন স্ত্রী, বাধা দেওয়ায় স্বামীকে হত্যা: পুলিশ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
হেলাল উদ্দিন হত্যারকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলে লোকজনের ভিড়। ছবি: ফাইল ফটো
হেলাল উদ্দিন হত্যারকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলে লোকজনের ভিড়। ছবি: ফাইল ফটো

কয়েকজনের কাছ থেকে এক লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন বেদেনা আক্তার (৪০)। টাকা পরিশোধ করতে পাওনাদাররা তাঁকে চাপ দিচ্ছিলেন। তাই নিজের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে একটি ষাঁড় স্বামীকে না জানিয়ে বিক্রির পরিকল্পনা করেন তিনি। এ জন্য বাবার বাড়ির এলাকা থেকে চোর ভাড়া করেন বেদেনা আক্তার। গত শনিবার রাতে ভাড়া করা চোরদের নিয়ে ষাঁড় চুরি করছিলেন তিনি। কিন্তু চুরির ঘটনা টের পেয়ে যান বেদেনার স্বামী হেলাল উদ্দিন। তিনি ষাঁড় চুরিতে বাধা দিতে গেলে স্ত্রীসহ পাঁচজন মিলে হেলালকে মুখ ও হাত-পা বেঁধে গলা কেটে হত্যা করেন। নেত্রকোনা সদর উপজেলার কৃষক হেলাল উদ্দিনকে (৫৮) হত্যায় আদালতে জবানবন্দিতে তাঁর স্ত্রী বেদেনা আক্তার এসব কথা জানিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নেত্রকোনা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) চম্পক দাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে গত রোববার ভোরে সদর উপজেলার নাড়িয়াপাড়া গ্রামে নিজ ঘর থেকে কৃষক হেলাল উদ্দিনের হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত হেলাল উদ্দিন সদর উপজেলার নাড়িয়াপাড়া গ্রামের মৃত আশ্রাব আলীর ছেলে। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার দুপুরে নিহত হেলালের ছোট ভাই রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরে হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী বেদেনা আক্তারসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার অন্য দুজন হলেন সদর উপজেলার নাড়িয়াপাড়া এলাকার রিয়েল মিয়া (৪০) ও বারহাট্টা উপজেলার সেমিয়া দুধকুড়া গ্রামের লিটন মিয়া (৫০)।

পুলিশ জানায়, গতকাল বিকেলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর স্ত্রী বেদেনা আক্তারকে আটক করার পর তিনি হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। এ বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নেত্রকোনা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) চম্পক দাম জানান, আদালতে বেদেনা আক্তার জবানবন্দিতে বলেছেন, তিনি বিভিন্ন সময়ে কয়েকজনের কাছ থেকে এক লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন। পাওনাদারেরা এখন টাকার জন্য তাঁকে তাগাদা দিচ্ছেন। তাই তাঁর বাবার বাড়ি বারহাট্টা উপজেলার সেমিয়া দুধকুড়া গ্রামের লিটন মিয়ার সঙ্গে চুরি করে তাঁর স্বামী হেলাল উদ্দিনের ষাঁড় নিয়ে বিক্রি করার জন্য চুক্তি করেন। গত শনিবার রাতে লিটন মিয়া, নাড়িয়াপাড়া গ্রামের রিয়েল মিয়াসহ চারজন মিলে গরু চুরি করতে গেলে হেলাল উদ্দিন টের পেয়ে যান। তিনি ষাঁড় চুরিতে বাধা দিতে গেলে স্ত্রীসহ পাঁচজন মিলে হেলালকে মুখ ও হাত-পা বেঁধে গলা কেটে হত্যা করেন।

পুলিশ কর্মকর্তা চম্পক দাম বলেন, বেদেনা আক্তারের তথ্য অনুযায়ী গতকাল রাতে অভিযান চালিয়ে লিটন মিয়া ও রিয়েল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। লিটন মিয়ার বিরুদ্ধে থানায় পাঁচটি চুরির মামলা রয়েছে।

নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল মামুন সরকার বলেন, ‘অল্প সময়ে হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ উদ্‌ঘাটনসহ জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। নিহত ব্যক্তির স্ত্রী বেদেনা আক্তারসহ তিনজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িত অন্য দুজনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলার মামলায় ১১ জন কারাগারে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলার মামলায় ১১ জন কারাগারে

দৈনিক‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎ প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার ১১ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জামসেদ আলম আজ মঙ্গলবার পৃথক আদেশে তেজগাঁও থানায় প্রথম আলোর করা মামলায় দুজনকে ও দ্য ডেইলি স্টারের করা মামলায় ৯ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগরের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী।

প্রথম আলোর মামলায় যাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে তাঁরা হলেন–মোহাম্মদ ইয়াসিন (৩৯) ও মো. হাশেম (২৪)।

এ মামলায় গতকাল সোমবার ১৫ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়।

একই থানায় দ্য ডেইলি স্টারের করা মামলায় কারাগারে পাঠানো ব্যক্তিরা হলেন মো. মাইনুল ইসলাম (২২), জুলফিকার আলী সৌরভ (২২), মো. আলমাস আলী (৩২), মো. জুবায়ের হোসেন (২১), আয়নুল হক কাশেমী (৩০), আব্দুর রহমান পলাশ (৩০), মো. জান্নাতুল নাঈম (২১), মো. কারী মুয়াজবীন আ. রহমান (৩৪) ও মো. ফয়সাল আহমেদ (২৪)।

আজ সন্ধ্যার আগে দুই মামলার এই ১১ আসামিকে আদালতে হাজির করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। তদন্ত কর্মকর্তারা তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।

তবে পুলিশ প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ভবিষ্যতে রিমান্ডে নেওয়ার প্রয়োজন হবে। আপাতত তাঁদের কারাগারে আটক রাখা দরকার।

শুনানি শেষে আদালত সবাইকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গত বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক সোয়া ১১টার দিকে কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ের সামনে কয়েক শ মানুষ জড়ো হয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে হামলা চালায় এবং অগ্নিসংযোগ করে।

এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তারা পুলিশের ওপর মারমুখী আচরণ করে। পরে আরো পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ফায়ার সার্ভিসও ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোসহ ভবনে আটকা পড়াদের উদ্ধার করে।

পরে হামলাকারীরা দ্য ডেইলি স্টারে একইভাবে হামলা করে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে।

এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৩৫০ থেকে ৪৫০ জনকে আসামি করে গত রোববার মামলা করেন প্রথম আলোর হেড অব সিকিউরিটি মেজর অবসরপ্রাপ্ত মো. সাজ্জাদুল কবির। পরদিন পত্রিকাটির হেড অব অপারেশন মিজানুর রহমানও বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় মামলা করেন।

দুই মামলায় অভিযোগ করা হয়, হামলাকারীরা হত্যার উদ্দেশ্যে প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়, ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে, ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করে এবং মূল্যবান জিনিসপত্র নষ্ট করে।

এতে প্রথম আলোর ৩২ কোটি টাকা ক্ষতি হয়। দ্য ডেইলি স্টারের ক্ষতির পরিমাণ ৪০ কোটি টাকা।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ধারা ছাড়াও উভয় মামলায় দণ্ডবিধি, সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ এবং ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ধারাও যোগ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চুরির স্বর্ণালংকার বিক্রির টাকায় রয়েল এনফিল্ড মোটরসাইকেল, গ্রেপ্তার ৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম নগরের একটি বাসা থেকে চুরি করা স্বর্ণালংকার বিক্রির টাকায় কেনা মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রাম নগরের একটি বাসা থেকে চুরি করা স্বর্ণালংকার বিক্রির টাকায় কেনা মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রাম নগরের একটি বাসা থেকে ২০ ভরি স্বর্ণালংকার ও টাকা চুরির মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে একজন চুরি করা সোনা বিক্রির টাকা দিয়ে রয়েল এনফিল্ড ব্র্যান্ডের একটি নতুন মোটরসাইকেল কিনেছেন। মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি–পশ্চিম) অভিযানে ওই মোটরসাইকেল ও ৬০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) সহকারী কমিশনার আমিনুর রশিদ এসব তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে গতকাল সোমবার মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে নগর ও আনোয়ারা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় ডিবি।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. জসিম (৪৩), মোস্তাকিন হোসেন মিঠু (৪২), সেতু দাস ওরফে সালাহ উদ্দিন (৩২) ও মো. ইসমাইল (৩০)। তাঁদের মধ্যে সেতু দাস ওরফে সালাহ উদ্দিন চোরাই স্বর্ণালংকার বিক্রির টাকায় রয়েল এনফিল্ড ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল কেনেন।

গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ৫ ডিসেম্বর কোতোয়ালি থানার আসকার দীঘির পূর্বপাড়া এলাকার একটি বাসায় দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পূরবী বিশ্বাস ১৬ ডিসেম্বর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। এজাহারে তিনি ২০ ভরি স্বর্ণালংকার, টাকা ও ল্যাপটপ চুরির অভিযোগ করেন। এরপর ডিবির (পশ্চিম) একটি দল তদন্ত করে কয়েকজনের সম্পৃক্ততার তথ্য পায়। তাঁদের গ্রেপ্তারে গতকাল নগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়।

অভিযানের শুরুতে জসিম ও মোস্তাকিন হোসেন মিঠুকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা স্বীকার করেন, তাঁদের সহযোগী সেতু দাস ওরফে সালাহ উদ্দিন এই চুরির পরিকল্পনা করেন। এরপর জসিমের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে চুরি করা একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, জসিম ও মিঠুর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জেলার আনোয়ারা উপজেলায় অভিযান চালিয়ে সেতু দাস ওরফে সালাহ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন, চুরির স্বর্ণালংকার বিক্রির টাকায় তিনি একটি নতুন রয়েল এনফিল্ড ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল কিনেছেন এবং ৬০ হাজার টাকা তাঁর হেফাজতে রেখেছেন। পরে নগরের নিউমার্কেট এলাকা থেকে চোর চক্রটির আরেক সদস্য ইসমাইলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি চুরির স্বর্ণালংকার উদ্ধারের জন্য একটি দোকানের ঠিকানা দেন। তবে তাঁর কথামতো অভিযানে গেলে দোকানি পালিয়ে যান।

সিএমপির সহকারী কমিশনার আমিনুর রশিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, অভিযানে আটক ব্যক্তিদের ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া চোরাই স্বর্ণালংকার উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত