Ajker Patrika

পাঠ্যবইয়ে গণ–অভ্যুত্থানের কনটেন্ট নগণ্য, দায়সারা: সেমিনারে বক্তারা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সেমিনারে উপস্থিত বক্তারা।  ছবি: আজকের পত্রিকা
সেমিনারে উপস্থিত বক্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাঠ্যবইয়ে যথাযথভাবে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান তুলে ধরতে বই পরিমার্জনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজনেরা। তাঁদের মতে, ২০২৫ সালের পাঠ্যবইয়ে জুলাই অভ্যুত্থানের প্রতিফলন না হওয়া, ইতিহাস বিকৃতি, ব্যবহৃত ছবি নিয়ে প্রশ্ন ও মানহীনতা, বইয়ের অপ্রাসঙ্গিক প্রচ্ছদ এবং বিষয়বস্তু যথার্থভাবে উঠে না আসা পরিলক্ষিত হয়েছে।

শিশু অধিকার সংসদের আয়োজনে ‘২০২৫ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবইয়ে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান পর্যালোচনা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ মতামত তুলে ধরেন।

আজ শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ব্যবসা শিক্ষা অনুষদের ড. আবদুল্লাহ ফারুক সম্মেলনকক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা অধিকার সংসদের আহ্বায়ক ও নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির প্রফেসরিয়াল ফেলো অধ্যাপক ড. নিয়াজ আসাদুল্লাহ।

পর্যালোচনা উপস্থাপন করেন শিক্ষা অধিকার সংসদের সদস্যসচিব ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহনেওয়াজ খান চন্দন।

অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক এবং কারিকুলাম কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্য ড. সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া, ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মনিনুর রশিদ ও অধ্যাপক ড. আহসান হাবীব, জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ ও শিক্ষা সেলের পরিচালক ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের মা সানজিদা খান দীপ্তি, শহীদ ইকরামুল হক সাজিদের বোন ফারজানা হক, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদি, জুলাই বিপ্লব পরিষদের আহ্বায়ক সৌরভ ফাহিম প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে নগণ্য কনটেন্ট যুক্ত হলেও সেগুলোয় ভুল থাকাসহ এমন দায়সারাভাবে সেগুলো এসেছে, এগুলো ইতিহাসের বিচারে বেশি দিন টিকবে না। তার দায় এনসিটিবির দায়িত্বশীল ও পরিমার্জনকারীরা এড়াতে পারে না।

অধ্যাপক ড. নিয়াজ আসাদুল্লাহ বলেন, ‘পাঠ্যপুস্তকে অসংগতির বহুমাত্রিক দিক উঠে এসেছে। এটা নতুন নয়। ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ের শিক্ষার সংকট এখনো কাটেনি। যে ধরনের পরিবর্তন দরকার, সেভাবে হচ্ছে না। শিক্ষার দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাহলে তাঁরা কী করছেন? এখানে নীতির সমস্যা নাকি নেতৃত্বের সমস্যা? আজকের মতো এ ধরনের অনেক আলোচনা হচ্ছে; কিন্তু বাস্তবায়ন নাই। অন্তর্ভুক্তিমূলক পাঠ্যক্রমের জন্য নেতৃত্বের পরিবর্তন জরুরি।’

ড. সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া বলেন, ‘কারিকুলামের কমিটিতে আমাদের একটি মিটিং হয়েছে। আমরা কীভাবে পরিবর্তন আনব? যাঁরা লিখবেন, রিভিউ করবেন, তাঁদেরই মূল দায়িত্ব। তা ছাড়া শিক্ষা কমিশন গঠন করা জরুরি। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পাঠ্যপুস্তকেও আনতে চাই; কিন্তু সেটা কত শতাংশ? চব্বিশের ঘটনার গুরুত্ব দিতে হবে। কিন্তু ধারণা থাকতে হবে, কীভাবে আমরা একে সঠিকভাবে করব। ২০১২ সালের পাঠ্যপুস্তকে যে ফিরে গেলাম, তার মানে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। এখন নতুন বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পাঠ্যপুস্তক করতে হবে।’

সেমিনারে আহসান হাবীব বলেন, ‘অনেক দেশে পাঠ্যপুস্তকই নেই। স্কুলেই পাঠ্যপুস্তক থাকে। এত বই ছাপানোরও দরকার পড়ে না। তা ছাড়া আমাদের যে ট্রেন্ড, এখানে প্রতিবছর পাঠ্যবই ছাপানোরও দরকার নেই। ভালো কাগজে প্রকাশ করলে কয়েক বছর ব্যবহার করা যাবে। শিক্ষাকে মেগা প্রজেক্ট হিসেবে নিতে হবে।’

ড. মনিনুর রশিদ বলেন, ‘পাঠ্যবই শতভাগ সঠিক ছাপানো কঠিন। এখানে ক্রিটিসিজম থাকবে, সেগুলো মেনে নেওয়ার মানসিকতা থাকা দরকার। আমি নিজেও একটা কমিটির সদস্য, সেখানে বলা হয়েছে, যাতে শহীদের বিষয় সঠিকভাবে ডকুমেন্টেড করা হয়। কিন্তু সেভাবে হয়নি। বাংলাদেশের প্রতিটি শহীদই গুরুত্বপূর্ণ। শহীদদের মধ্যে যেন বৈষম্য না হয়। যখন যারা ক্ষমতায়, তখন তারা ভুলে যায়। অনেক সংস্কার কমিটি হয়েছে; কিন্তু শিক্ষা সংস্কার কমিটি হয়নি কেন?’ তিনি আরও বলেন, ‘কারিকুলাম এক দিনে হবে না, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যথাযথভাবে করতে সময় লাগে।’

সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা অধিকার সংসদের অ্যাডভোকেসি কো-অর্ডিনেটর মিসবাহুর রহমান আসিম, মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর মাহফুজুর রহমান মানিক ও অফিস কো-অর্ডিনেটর মিনহাজুল আবেদিন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

র‍্যাব সদস্যের স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা

সরিষাবাড়ী ও জামালপুর প্রতিনিধি
লিপি আক্তার। ছবি: সংগৃহীত
লিপি আক্তার। ছবি: সংগৃহীত

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ঘর থেকে লিপি আক্তার (৩০) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাতে পৌরসভার গণময়দান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতের স্বামী মহর উদ্দিন ঢাকার মোহাম্মদপুরে র‍্যাবের এএসআই পদে কর্মরত

বৃহস্পতিবার সকালে লিপি আক্তারের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার গণময়দান এলাকার মৃত সিরাজুল ইসলামের বাসায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন লিপি। গভীর রাতে ওই বাসায় এক চোর ঢোকে। বিষয়টি টের পেয়ে যান লিপি। ধারণা করা হচ্ছে, চোরকে চিনে ফেলায় ওই নারীকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় লিপি আক্তারের মেয়ে মিথিলা (৯) ঘুম থেকে জেগে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এসে পুলিশে খবর দেয়।

নিহতের ভাই সোলায়মান হোসেন জানান, তাঁর বোন ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। বুধবার রাতে ওই ঘরে চোর ঢুকে পড়ে। চোরকে চিনে ফেলায় চোর তাঁর বোনের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে।

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাচ্চু মিয়া বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, চুরি করতে এসে লিপি আক্তারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জামালপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: গলার পোড়া দাগেই শনাক্ত হন গৃহকর্মী আয়েশা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪৯
পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার আয়েশা আক্তার । ছবি: সংগৃহীত
পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার আয়েশা আক্তার । ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে হত্যার পর গৃহকর্মী আয়েশাকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের ভাষায়, আয়েশার চুরির অভ্যাস নতুন নয়, গত জুলাইয়েও কাছের আরেকটি বাসায় আট হাজার টাকা চুরি করায় তাঁর বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছিল। সেই পুরোনো অভিযোগই শেষ পর্যন্ত হত্যার রহস্য উন্মোচনের সূত্র হয়ে দাঁড়ায়।

মোহাম্মদপুরের বাবর রোড এলাকায় নতুন একটি বাসায় গৃহকর্মীর কাজ শুরু করেছিলেন আয়েশা। মাত্র চার দিন পরই সেখানে নৃশংসভাবে খুন হন গৃহকর্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) এবং তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫)।

শুরু থেকেই আয়েশাকে সন্দেহ করা হলেও তাঁর পরিচয় ও ঠিকানা নিয়ে পুলিশ ছিল অন্ধকারে। কাজে যাতায়াতের সময় মুখ ঢেকে রাখায় সিসিটিভিতেও দেখা যায়নি তাঁর স্পষ্ট চেহারা; কেবল গলার এক পাশে পোড়া দাগ—এই সামান্য সূত্রেই এগোয় তদন্ত।

আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা জানায় অতিরিক্ত কমিশনার এস এন মো. নজরুল ইসলাম।

মো. নজরুল ইসলাম জানান, আগের একটি জিডির নথি ঘেঁটে পুলিশ জানতে পারে, জেনেভা ক্যাম্প এলাকায় এমন এক গৃহকর্মী থাকেন, যার গলায় পোড়া দাগ রয়েছে। সেখান থেকেই পাওয়া যায় একটি পুরোনো মোবাইল নম্বর, যার সূত্রে সামনে আসে জামাল সিকদার রাব্বি নামের একজন যুবক। ফোনের মাধ্যমে রাব্বির দেওয়া তথ্য মিলিয়ে দেখা যায়—তাঁর স্ত্রীই আয়েশা, যিনি গৃহকর্মীর কাজ করেন এবং জেনেভা ক্যাম্পে ভাড়া বাসায় থাকেন। এই সূত্র ধরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নিশ্চিত হয় পুলিশের সন্দেহ।

পুলিশ জানায়, আয়েশা ও তাঁর স্বামী রাব্বির সম্ভাব্য অবস্থান ধরে হেমায়েতপুর, দুমকি হয়ে শেষ পর্যন্ত ঝালকাঠির নলছিটিতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। উদ্ধার হয় খোয়া যাওয়া ল্যাপটপও।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তারা।

পুলিশের ভাষ্য, বাসায় কাজ শুরুর দ্বিতীয় দিন তিনি দুই হাজার টাকা চুরি করেন। এ নিয়ে গৃহকর্ত্রীর সঙ্গে তাঁর তর্ক-বিতর্ক হয়; পুলিশের কাছে দেওয়ার হুমকিও পান আয়েশা। চতুর্থ দিন কাজে যাওয়ার সময় তিনি সঙ্গে করে নেন একটি সুইচগিয়ার চাকু। আবারও ঝগড়া বাধতেই ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে লায়লা আফরোজকে ছুরিকাঘাত করেন আয়েশা; মেয়ে নাফিসা এগিয়ে এলে তাকেও আঘাত করা হয়।

ঘটনার পর নিজের রক্তাক্ত পোশাক বদলে নাফিসার স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে বেরিয়ে যান আয়েশা। পরে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে গিয়ে পোশাক পরিবর্তন করে সাভারের দিকে পালিয়ে যান। পথে সিঙ্গাইর ব্রিজ থেকে ফেলে দেন রক্তমাখা কাপড় ও চুরি করা মোবাইল ফোন সেট।

তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান বলেন, ঘটনার সময় নাফিসা ঘুমাচ্ছিল। ধস্তাধস্তির শব্দে জেগে গিয়ে সিকিউরিটিকে জানাতে ইন্টারকম ধরতেই তাকে আগে আক্রমণ করেন আয়েশা।

পুলিশের ধারণা, কেবল দুই হাজার টাকার বিষয় নয়; আগে থেকেই আয়েশার ছিল চুরির পরিকল্পনা, আর ধরা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কাই ঘটিয়ে ফেলেন জোড়া খুন।

পুলিশ বলছে, আয়েশার স্বামী রাব্বিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁকে পালাতে সহায়তা করার অভিযোগে। গৃহকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে পরিচয়পত্র, ছবি এবং বিশ্বাসযোগ্য দু-একজনের যোগাযোগ নম্বর সংরক্ষণে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ৩ গর্ত, শাস্তি চান সাজিদের মা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
সেচের জন্য গভীর নলকূপ বসাতে খনন করা হয়েছিল এসব গভীর গর্ত। ছবি: আজকের পত্রিকা
সেচের জন্য গভীর নলকূপ বসাতে খনন করা হয়েছিল এসব গভীর গর্ত। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর তানোর উপজেলার কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা কছির উদ্দিন সেচের জন্য গভীর নলকূপ বসাতে পরপর তিনটি স্থান খনন করেছিলেন। কিন্তু কোথাও পানি না পেয়ে নলকূপ বসাতে পারেননি। পরিত্যক্ত অবস্থায় গর্তগুলো ফেলে রেখেছিলেন। এর একটিতে পড়ে গেছে ২ বছরের শিশু সাজিদ। ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও ফায়ার সার্ভিস তাকে উদ্ধার করতে পারেনি।

কছিরের জমির পাশেই সাজিদের বাবা রাকিবুল ইসলামের বাড়ি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ি গিয়ে দেখা গেছে, সাজিদের মা রুনা খাতুনকে নিয়ে বসে আছেন তাঁর মা শেফালী বেগম। শেফালী বেগম সাজিদের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে বললেন, ‘সবাই আমাদের ছোট বাচ্চাটার জন্য দোয়া করেন, যাতে তাকে আমরা ফেরত পাই।’

সাজিদের মা রুনা খাতুন কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ‘৩ জায়গা খুঁড়েছিল। ২ বছর ধরে বন্ধ না করে গর্তগুলো এভাবে ফেলে রেখেছিল। কেন ফেলে রেখেছিল? আমি কছিরের শাস্তি চাই, তার বিচার চাই।’ রুনা জানান, ঘটনার পর কছির একবার দেখতে এসেছিলেন। তারপর আর আসেননি। তিনি পালিয়ে গেছেন।

এ বিষয়ে তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীনুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে কছিরের দেখা হয়নি। আমরা তাকে পাইনি।’ তাঁকে আটক করা হবে কি না, জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘তদন্ত চলছে। আমরা এটা দেখছি।’

উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার দুপুর থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ৪২ ফুট পর্যন্ত খনন করেও সাজিদের সন্ধান পাননি। বরেন্দ্র এলাকায় সাধারণত ১০০ থেকে ১৮০ ফুট পর্যন্ত এমন বোরিং করা হয় পানির সন্ধানে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সড়কে পড়ে ছিল যুবকের মাথা থেঁতলানো লাশ

দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে অজ্ঞাত গাড়িচাপায় আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩২) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার পুটিয়া ইউটার্ন-সংলগ্ন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত মামুন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার চর কৃষ্ণপুর গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে। তিনি সড়কটি দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

স্থানীয়রা জানান, মহাসড়কের দক্ষিণমুখী লেনে মোটরসাইকেলটি স্বাভাবিক গতিতে চলছিল। হঠাৎ একটি দ্রুতগতির গাড়ি পেছন দিক থেকে সজোরে ধাক্কা দিলে বাইকচালক রাস্তার ওপর ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। দুর্ঘটনার পর প্রায় আধা ঘণ্টা মরদেহটি রাস্তায় পড়ে থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে পথচারীরা ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে।

ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ঘটনাস্থলে এসে মরদেহটি উদ্ধার করি। মোটরসাইকেলের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অজ্ঞাত গাড়িটি বাইকচালকের মাথার ওপর দিয়ে উঠেই যাওয়ায় ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মরদেহটি দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।’

ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি নিহত বাইকচালক রাস্তার ওপর পড়ে আছে। তাঁর মাথার ওপর দিয়ে অজ্ঞাত গাড়ি উঠে যাওয়ায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু ঘটে। তাঁর কাছে থাকা মোবাইল ও মানিব্যাগ থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত