Ajker Patrika

কাপ্তাইয়ে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে ভোগান্তি

কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধি
বিদ্যুৎ না থাকায় দোকানে নেই ক্রেতাদের আনাগোনা। অলস সময় পার করছেন ব্যবসায়ীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিদ্যুৎ না থাকায় দোকানে নেই ক্রেতাদের আনাগোনা। অলস সময় পার করছেন ব্যবসায়ীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ বাসিন্দারা। দেশের একমাত্র হাইড্রোলিক পাওয়ার স্টেশন রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় অবস্থিত। ২৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিট থেকে চারটি ইউনিটে বর্ষা মৌসুমে গড়ে ১৭২ থেকে ১৮২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। যেকোনো মুহূর্তে পাঁচটি ইউনিট চালু হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ২৩০ মেগাওয়াটের কাছাকাছি যাবে বলে বিদ্যুৎ উৎপাদন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। অথচ যে উপজেলায় বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়, সেখানে আট-নয়বার করে বিদুৎ চলে যায়। ভ্যাপসা গরমে বাসিন্দারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন থাকছেন। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে কাপ্তাইয়ে সরকারি, বেসরকারি, শিল্প-কলকারখানা, ব্যাংকের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কাপ্তাইয়ের অনেক বাসিন্দা সরব হয়েছেন। কেউ বলেছেন, ঝড় নেই বৃষ্টি নেই, তবুও বিদ্যুৎ নেই; আবার কেউ বলেছেন, বাতির নিচে অন্ধকার।

কাপ্তাই নতুন বাজার বণিক কল্যাণ সমবায় সমিতির সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন জানান, গত বছরের চেয়ে এবার লোডশেডিং বেশি হচ্ছে। ৪ নম্বর কাপ্তাই ইউনিয়নের আপস্ট্রিম জেটিঘাটে সাপ্তাহিক শনিবার পাহাড়ি-বাঙালি হাটবার বসে। ওই দিন কোটি টাকার কেনাবেচা হয়ে থাকে। কিন্তু বিদ্যুৎ সময়মতো না থাকায় ব্যবসায়ীরা বড়ধরনের একটা লোকসানে পড়েন।

বাংলাদেশ-সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ রূপক কান্তি বিশ্বাস জানান, গত শুক্রবার তাঁদের প্রতিষ্ঠানে একটি বৃত্তিমূলক সেমিনার ছিল। দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা থেকে সেমিনারে প্রায় ২০০ জন প্রতিষ্ঠানপ্রধানেরা অংশ নেনে। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমিন। সেমিনার শুরু হওয়ার সময় দুবার বিদ্যুৎ চলে যায়। গরমে সবাই বিরক্ত হয়ে যান। সেমিনারের কার্যক্রমেও ব্যাঘাত ঘটে। এ ছাড়া বারবার বিদ্যুৎ যাওয়া-আসা করার ফলে তাঁর প্রতিষ্ঠানে ইলেকট্রনিকসের বিভিন্ন কাজে সমস্যা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন জানান, বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে একাধিকবার উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় আলোচনা হয়েছে। বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে বলা হলে বিদ্যুৎ বিভাগ তাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানায়।

এ ব্যাপারে কাপ্তাই বিদ্যুৎ সরবরাহ বিভাগের আবাসিক প্রকৌশলী শামসুল আরেফিন জানান, কাপ্তাই ৩৩ কেভি বিদ্যুৎ সংযোগ (লাইন)। পাহাড়ি পথে বিদ্যুৎ লাইন গেছে ২০ কিলোমিটার। বিদ্যুৎ তারের প্রায় ৩০ থেকে ৫০ ফুট ওপরে পাহাড়ি পথে গাছ। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে গাছ ও ডালপালা ভেঙে তারের ওপর পড়ে এবং সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ চলে যায়। এটা কোনো লোডশেডিং নয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ সমস্যা। বিদ্যুৎ তারের ওপর গাছ ও ডালপালা ভেঙে পড়ায় তা খুঁজে বের করা এবং আবার সংযোগ দিতে সময় লেগে যায়। তিনি আরও জানান, রাজস্থলী, বিলাইছড়ি ও কাপ্তাই উপজেলা তাঁদের দেখতে হচ্ছে। এর মধ্যে জনবল সংকটও রয়েছে। কাপ্তাই উপজেলার শিলছড়ি ও রাজস্থলী উপজেলায় আরও দুটি সাবস্টেশন স্থাপন করা হবে। বিদ্যুৎ বিভাগ বছরের শেষে আরও একটি বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বিদ্যুৎ ট্রান্সমিটার স্থাপন করা হলে বিদ্যুতের সমস্যায় আর লোকজনকে পড়তে হবে না বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চায়ের দোকানে চলে একটি বাতি-ফ্যান, বিদ্যুৎ বিল এল সাড়ে ৫৫ হাজার টাকা

টঙ্গিবাড়ী (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি 
বিদ্যুৎ বিলের কাগজ হাতে লিটুখান বাজারের দুই দোকানদার। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিদ্যুৎ বিলের কাগজ হাতে লিটুখান বাজারের দুই দোকানদার। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাজারে ছোট একটি চায়ের দোকান চালান বাদশা ব্যাপারী। দোকানে কেবল একটি বাতি ও একটি ফ্যান চালানো হয়। সাধারণত তাঁর মাসিক বিল ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে আসে। কিন্তু চলতি মাসে তাঁর হাতে এসেছে ৫৫ হাজার ৫৫০ টাকার বিদ্যুৎ বিল। বিল হাতে পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।

মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার দিঘিরপাড় ইউনিয়নের লিটুখান বাজারের দোকানদার বাদশা ব্যাপারী। বিদ্যুৎ বিলের ব্যাপারে বাদশা বলেন, ‘এটা অসম্ভব। আমার দোকানে এত বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগই নেই। বিলের নম্বরে ফোন করলে শুধু অফিসে যেতে বলে।’

এমন ‘ভুতুড়ে’ বিদ্যুৎ বিল পেয়েছেন লিটুখান বাজারের আরেক দোকানদার শহীদ খান। বাজারে খাবারের দোকান রয়েছে তাঁর। দোকানে দুটি বাতি, একটি ফ্যান ও একটি ছোট ফ্রিজ ব্যবহার করা হয়। প্রতি মাসে যেখানে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা বিল দিতেন, সেখানে এবার বিল এসেছে ২৪ হাজার ২১৬ টাকা। শহীদ বলেন, ‘বিলটা দেখে দাঁড়াতেই পারছিলাম না। এমন বিল হলে দোকান চালানোই কঠিন হয়ে যাবে।’

বাজারের অন্য ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, কয়েক মাস ধরে এলাকায় এমন অস্বাভাবিক বিল আসছে। তাঁদের ধারণা, মিটার রিডিং অথবা বিলিং পদ্ধতিতে গুরুতর ত্রুটি রয়েছে। দ্রুত তদন্ত করে সঠিক হিসাব ঠিক করার পাশাপাশি দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

বিল প্রস্তুতকারী কর্মী সুমি রানী দাস বলেন, সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের অফিসে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘তারা অফিসে এলে আমরা সরেজমিন যাচাই করে বিল পুনরায় বিবেচনা করব।’

টঙ্গিবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. আব্দুস ছালাম বলেন, ‘মিটার রিডিং বা বিলিং সিস্টেমে ত্রুটি থাকতে পারে। আমরা সরেজমিন যাচাই করে দ্রুত সমাধানের পদক্ষেপ নেব। ভোক্তাদের অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাসার বাথরুমে পড়ে ছিল নারী প্রভাষকের লাশ, মাথায় আঘাতের চিহ্ন

বগুড়া প্রতিনিধি
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার এক বাসা থেকে ফাবিয়া তাসনিম সিধি (২৯) নামের এক প্রভাষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

মৃত ফাবিয়া বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক। বছর দেড়েক আগে তিনি কলেজটিতে যোগদান করেন।

এই তথ্য নিশ্চিত করে বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান জানান, ফাবিয়া অবিবাহিত। তিনি বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ডা. রাশেদুল হাসানের বাড়ির তিনতলায় ভাড়া বাসায় তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকতেন। কয়েক দিন আগে তাঁর মা গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে যান। গতকাল দুপুরের পর থেকে মেয়েকে ফোনে না পাওয়ায় তাঁর মা রাত ১০টার দিকে বগুড়া আসেন। অনেক ডাকাডাকি করে দরজা না খোলায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে বাসার বাথরুমে ফাবিয়ার লাশ দেখতে পায়।

পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল এবং মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন ছাড়াও জিবে দাঁত দিয়ে কামড় দেওয়া ছিল। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অটোরিকশাকে চাপা দিল বাস, প্রাণ গেল তিনজনের

ফরিদপুর প্রতিনিধি
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাসের চাপায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় শিশুসহ আরও চারজন আহত হয়। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী ও একজন পুরুষ। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালান। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।  

হাইওয়ে থানার এসআই সোহেল মিয়া বলেন, অটোরিকশাটি ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাটের উদ্দেশে যাচ্ছিল। কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা নিউ মডার্ন পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এই ঘটনায় বাসটি আটক করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত