Ajker Patrika

কক্সবাজারে বিমানঘাঁটিতে গুলি: যা বলছে আইএসপিআর, নিহতের মা-বাবা ও স্থানীয়রা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­কক্সবাজার প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯: ০৮
হামলার পর স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বিমানবাহিনীর সদস্যদের পাল্টাপাল্টির ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলির শব্দ শোনা যায়। ঘটনায় মারা যান এক তরুণ। গতকাল দুপুরে কক্সবাজার সদরের সমিতিপাড়ায়। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
হামলার পর স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বিমানবাহিনীর সদস্যদের পাল্টাপাল্টির ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলির শব্দ শোনা যায়। ঘটনায় মারা যান এক তরুণ। গতকাল দুপুরে কক্সবাজার সদরের সমিতিপাড়ায়। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

কক্সবাজারে নির্মাণাধীন বিমানঘাঁটিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গুলিতে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। হামলায় বিমানবাহিনীর চারজন সদস্য আহত হন। আজ সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। তরুণ নিহতের ওই ঘটনার বিচার চেয়ে রাতে মশাল মিছিল করেছেন কক্সবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা।

নিহত ওই তরুণের নাম শিহাব কবির নাহিদ (৩০)। তিনি বিমানবাহিনীর ঘাঁটির পাশে সমিতিপাড়ার বাসিন্দা কক্সবাজার পিটিআইয়ের সাবেক সুপার মো. নাছির উদ্দিনের ছেলে। নাহিদের মা আমেনা খাতুন কক্সবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক। তাঁদের একমাত্র ছেলে নাহিদ। নাহিদ বিবাহিত। তাঁর স্ত্রী ও চার বছরের ছেলে আছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) বলেছে, দুর্বৃত্তদের ছোড়া ইটের আঘাতে শিহাব কবির নাহিদ গুরুতর আহত হন। বিমানবাহিনীর গাড়িতে করে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান। তবে নিহত নাহিদের বাবা নাছির উদ্দিন অভিযোগ করেছেন, বিমানবাহিনীর সদস্যের ছোড়া গুলিতে তাঁর ছেলে নিহত হয়েছেন।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সুবক্তগীন মাহমুদ বলেন, এক যুবককে হাসপাতালে আনার পরপরই মৃত্যু হয়েছে। তাঁর মাথার পেছনের অংশ (খুলি) উড়ে গেছে। গুলিতে, নাকি ইটপাটকেলের আঘাতে মাথায় জখম হয়েছে, তা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলেই নিশ্চিত হওয়া যাবে।

কক্সবাজারের ঘটনার পর আইএসপিআর জানায়, কক্সবাজারে বিয়াম স্কুলের পাশে বিমানবাহিনীর চেকপোস্টে স্থানীয় একজনের মোটরসাইকেলের কাগজপত্র না থাকায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘাঁটির ভেতরে নেওয়া হয়। এ সময় সমিতিপাড়ার দুই শতাধিক মানুষ বিমানবাহিনীর ঘাঁটির কাছে আসে।

বিমানবাহিনীর সদস্যরা তাদের বাধা দেন। পরে স্থানীয় লোকজনের সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। এ সময় বিমানবাহিনীর সদস্য ও সমিতিপাড়ার কিছু দুষ্কৃতকারীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দুর্বৃত্তরা বিমানবাহিনীর সদস্যদের ওপর ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় দুর্বৃত্তের ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে কয়েকজন আহত হন। তাঁদের মধ্যে বিমানবাহিনীর চারজন সদস্য রয়েছেন। ইটের আঘাতে শিহাব কবির নাহিদ নামের এক যুবক গুরুতর আহত হন। বিমানবাহিনীর গাড়িতে করে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

আইএসপিআর আরও জানায়, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষার্থে বিমানবাহিনীর সদস্যরা নিয়ম অনুযায়ী ফাঁকা গুলি ছোড়েন। তবে স্থানীয় জনসাধারণের ওপর কোনো তাজা গুলি ছোড়া হয়নি।

আইএসপিআর বলেছে, একটি কুচক্রী মহল বিমানবাহিনীর গুলিতে যুবক নিহত হয়েছেন বলে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে, যা সত্যি নয়। এ ক্ষেত্রে প্রচারিত গুলির খোসার ছবিটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, খোসাটি ফাঁকা গুলির, যা প্রাণঘাতী নয় এবং শুধু শব্দ তৈরি করে। যুবক নিহতের ঘটনায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনী গভীর শোক ও পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করছে।

যা বলছেন স্থানীয়রা

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিমানবন্দর সম্প্রসারণ ও বিমানঘাঁটির জন্য ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে কয়েক দিন ধরে উচ্ছেদ-আতঙ্ক বিরাজ করছে। গতকাল দুপুরে এ নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বিমানবাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং এলাকাবাসীর প্রতিনিধিদের বৈঠক নির্ধারিত ছিল। এ লক্ষ্যে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এলাকার প্রতিনিধি জাহেদসহ কয়েকজন ইজিবাইকে করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আসছিলেন। তাঁদের বহনকারী গাড়িটি ডায়াবেটিক পয়েন্ট এলাকায় বিমানবাহিনীর চেকপোস্টে পৌঁছালে থামানো হয়। এ সময় বিমানবাহিনীর সদস্যরা জাহেদ ও মুজাহিদকে গাড়ি থেকে নামতে বলেন। একপর্যায়ে তাঁরা তর্কে জড়ান। পরে তাঁদের নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে খবর পেয়ে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে জড়ো হয়। এলাকাবাসী জাহেদকে নিয়ে যেতে বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে বিমানবাহিনীর সদস্যরা এলাকাবাসীকে ছত্রভঙ্গ করতে ফাঁকা গুলি করেন। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন। পরে বিমানবাহিনীর গাড়িতে করে স্থানীয়রা কয়েকজনকে উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক নাহিদকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে আইএসপিআরের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে গতকাল সন্ধ্যায় কক্সবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয়রা। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন স্থানীয় জনসাধারণের প্রতিনিধি ফুরকানুর রশিদ, এম এজাজ উল্লাহ কুতুবী, ছাবের আহাম্মদ, সৈয়দ আলম এবং ছাত্র প্রতিনিধি সাগর। সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিআরের বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করার পাশাপাশি গণমাধ্যমগুলোকে স্থানীয় লোকজনকে ‘দুর্বৃত্ত’ অভিহিত করার জন্য ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেন, দেশকে অস্থিতিশীল করতে একটি পক্ষ পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। স্থানীয়দের ওপর নির্বিচার গুলি চালিয়েছেন বিমানবাহিনীর সদস্যরা। এতে একজন নিহত ও ১৪ জন আহত হয়েছে।

এ বিষয়ে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, ঘটনার সূত্রপাত কীভাবে, তা উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে জানানো হবে।

নাহিদের মা-বাবা যা বলছেন

নাহিদের মা আমেনা খাতুন বলেন, ‘ঘটনার সময় নাহিদ বাড়িতে ছিল। হইচই, গোলাগুলির শব্দ শুনে ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ একটি গুলি এসে তার মাথায় লাগে। গুলিতে মাথার খুলি উপড়ে মগজ বেরিয়ে আসে। হাসপাতালে নিতে নিতেই আমার ছেলের জীবন শেষ হয়ে গেল।’

বাবা নাছির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলেকে বিমানবাহিনী গুলি করে হত্যা করেছে। আমি হত্যার বিচার চাই।’

নাহিদ কক্সবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। গতকাল রাতে নাহিদের হত্যার বিচার চেয়ে মিছিল করেন এই বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা। মিছিল শেষে তাঁরা শহীদ মিনারে গিয়ে সভা করেন। সেখান থেকে নাহিদের হত্যার বিচারের দাবি জানানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ। ছবি: সংগৃহীত
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ। ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচল ঘন কুয়াশার কারণে বন্ধ করেছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টা থেকে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয় বলে জানান বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন।

সালাহউদ্দিন বলেন, সন্ধ্যার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত সাড়ে ১০টার সময় নদীপথ অস্পষ্ট হয়ে যায়। সে সময় নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই নৌ-রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় কিছু যানবাহন আটকা পড়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আরও বলেন, কুয়াশা কেটে গেলে ফেরি চলাচল শুরু হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার: বিএনপিএস

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে বসবাস করা ৫৫ শতাংশ নারী ও কন্যা শিশু প্রতিনিয়ত সুরক্ষা, শিক্ষা, পুষ্টি ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, আশ্রয়শিবিরগুলোয় ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠকে এ তথ্য তুলে ধরে সংস্থাটি।

বিএনপিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সাল থেকে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে তারা কক্সবাজারের ৩৩টি শিবিরে বসবাস করছে, যা বিশ্বে বৃহত্তম শরণার্থী আশ্রয়স্থলগুলোর একটি। এই জনগোষ্ঠীর ৫২ শতাংশের বেশি নারী ও কন্যা।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে আট বছরেরও বেশি সময়ে কক্সবাজারের প্রায় ৫ লাখ মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের প্রভাবে স্থানীয় জনগোষ্ঠী জীবিকা, মজুরি, বন ও জলসম্পদ, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সংহতির ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েছে। ফলে এটি শুধু শরণার্থী সংকট নয়; এটি মানবিকতা, উন্নয়ন এবং শান্তির এক যৌথ চ্যালেঞ্জ।

‘শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অধিকার ও দায়িত্ব’ শীর্ষক এ গোল টেবিল বৈঠক সঞ্চালনা করেন বিএনপিএসের উপপরিচালক নাসরিন বেগম। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ শামসুদ্দৌজা নয়ন। এ ছাড়া শরণার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এম এ সানোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ পরিবশে আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য হুমায়রা বেগমসহ সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আন্তর্জাতিক অর্থ সহায়তা কমে এসেছে। এর ফলে সামাজিক নিরাপত্তা সংকট তৈরি হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নারীরা।

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তা, খাদ্য, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং ও সহিংসতা থেকে সুরক্ষার অধিকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কাঠামোর অধীনে নিশ্চিত করা নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব। একইভাবে, আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়েরও টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ সুরক্ষা, সম্মানজনক কাজ এবং জনসেবায় ন্যায্য প্রবেশাধিকারের জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যবিপ্রবির প্রথম উপাচার্য রফিকুল ইসলাম মারা গেছেন

­যশোর প্রতিনিধি
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার মারা গেছেন (ইন্না...রাজিউন)। আজ বুধবার সকালে ঢাকার নিজ বাসা থেকে বের হয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে একটি বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার যবিপ্রবি স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক। পরবর্তীতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। সেখানে তিনি কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি কৃষিবিদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও যবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এ ছাড়া তিনি একজন কৃষি বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলী হিসেবে দেশের কৃষি খাতের যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিকায়নে দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে কৃতিত্বের সঙ্গে অবদান রেখেছেন।

এদিকে, ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হোসেন আল মামুন, রিজেন্টবোর্ড সদস্যবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।

এক শোক বার্তায় যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ বলেন, রফিকুল ইসলাম সরকার ছিলেন একজন সৎ, মানবিক, ধর্মভীরু ও দায়িত্বশীল মানুষ। যবিপ্রবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ অবধি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতিতে নিরলস পরিশ্রম করেছেন।

তিনি ছিলেন একজন দক্ষ প্রশাসক এবং বরেণ্য কৃষি বিজ্ঞানী। যবিপ্রবির সূচনালগ্নে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দূরদর্শী পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আজকের এই অবস্থানে পৌঁছাতে ভিত গড়ে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে তিনি শূন্য থেকে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন, তা যবিপ্রবি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ২৪
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে কাঁচপুর সেতু থেকে লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত ১০ কিলোমাটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে একটি ট্রাক দুর্ঘটনার পর দীর্ঘ সময় সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় এ যানজট তৈরি হয়।

এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থেকে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, ব্যক্তিগত যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লাঙ্গলবন্দ ব্রিজ এলাকায় একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর রেলিংয়ে সজোরে আঘাত করে। ট্রাকটিতে প্রায় ২৭ টন মালামাল বোঝাই ছিল। দুর্ঘটনায় সেতুর রেলিং ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিনি আরও জানান, ট্রাকটিতে অতিরিক্ত মালামাল থাকায় রেকার দিয়ে সরানো সম্ভব হয়নি। ফলে প্রথমে অন্য একটি ট্রাকে মালামাল স্থানান্তরের কাজ শুরু করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় লাগায় দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি বিকেলের আগে সরানো যায়নি। এর ফলে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

পণ্যবাহী ট্রাকচালক শাহ আলম জানান, দুর্ঘটনার কারণে রাস্তা বন্ধ ছিল বুঝতে পারছি। কিন্তু এত সময় লাগবে ভাবিনি। মালামাল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে।

আরেক যাত্রী আক্তার হোসেন বলেন, আমি চট্টগ্রামে যাচ্ছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু তিন ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় আটকে আছি। ছোট বাচ্চা নিয়ে খুব বিপদে পড়েছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করে। বিকেল নাগাদ মালামাল সরিয়ে ট্রাকটি সড়ক থেকে অপসারণ করা হলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। টানা তিন দিনের ছুটি থাকায় মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত