Ajker Patrika

অশান্ত পাহাড়

খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারার মধ্যে হামলায় নিহত ৩

  • সেনাবাহিনীর মেজরসহ ১৩ সদস্য, ওসিসহ আহত অর্ধশত।
  • আগুন দেওয়া হয়েছে দোকানপাটে।
  • ৩ জেলায় অনির্দিষ্টকাল অবরোধ। বন্ধ পর্যটন।
  • পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাখাগড়াছড়ি ও রামগড় প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২: ২৪
খাগড়াছড়িতে গতকাল ১৪৪ ধারার মধ্যেই গুইমারা উপজেলায় ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে বিভিন্ন দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। গতকাল গুইমারা উপজেলার রামসু বাজারে।	ছবি: আজকের পত্রিকা
খাগড়াছড়িতে গতকাল ১৪৪ ধারার মধ্যেই গুইমারা উপজেলায় ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে বিভিন্ন দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। গতকাল গুইমারা উপজেলার রামসু বাজারে। ছবি: আজকের পত্রিকা

কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে অবরোধ এবং ১৪৪ ধারার মধ্যে খাগড়াছড়ির গুইমারায় গতকাল রোববার হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ১৩ সেনাসদস্য, সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। এ সময় আগুন দেওয়া হয়েছে একটি বাজারের দোকানপাটে। এ ঘটনার জন্য ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ও এর অঙ্গসংগঠনগুলো দায়ী বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।

খাগড়াছড়ি জেলা সিভিল সার্জন মো. সাবের জানান, গুইমারা থেকে তিনজন পুরুষের মরদেহ এনে জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। সোমবার (আজ) সকালে ময়নাতদন্ত করা হবে। এ ছাড়া গুইমারা থেকে আহত অবস্থায় চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

খাগড়াছড়ির ঘটনার বিষয়ে গতকাল বিবৃতি দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে বলা হয়, গুইমারা উপজেলায় দুষ্কৃতকারীদের হামলায় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর তিনজন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজরসহ ১৩ জন সদস্য, গুইমারা থানার ওসি, তিনজন পুলিশ সদস্যসহ অনেকে আহত হয়েছেন।

বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শিগগির তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনো অপরাধীকেই ছাড় দেওয়া হবে না। ততক্ষণ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধৈর্য ধারণ করে শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

অবরোধ বাড়ল, পর্যটন বন্ধ

গতকাল রাতে এক বিবৃতিতে ৮ দফা দাবি জানিয়েছে জুম্ম ছাত্র-জনতা। তারা ঘোষণা দিয়েছে, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবরোধের আওতা বাড়িয়ে তিন পার্বত্য জেলায় করা হয়েছে এবং সেটা চলবে অনির্দিষ্টকালের জন্য। এ সময় সব পর্যটন কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

জুম্ম ছাত্র-জনতার ৮ দফা দাবির মধ্যে আছে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার ও বিচার; আন্দোলনের সময় হামলার ঘটনার তদন্ত ও বিচার; আটক করা সব জুম্ম ছাত্র-জনতাকে অবিলম্বে ও নিঃশর্ত মুক্তি।

গুইমারায় হামলা-আগুন

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলা সদরের সিঙ্গিনালা এলাকায় অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ওই দিন রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় একটি খেত থেকে তাকে উদ্ধার করেন স্বজনেরা। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁকে ছয় দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) গতকাল রাতে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শনিবার খাগড়াছড়ি পৌরসভায় দাঙ্গা সৃষ্টির অপচেষ্টা করা হলে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সারা রাত ধৈর্য ও সংযমের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দাঙ্গা বাধাতে ব্যর্থ হলে ইউপিডিএফ ও তাদের অঙ্গসংগঠন রোববার সকাল থেকে গুইমারা উপজেলার রামসু বাজার এলাকায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সাধারণ মানুষকে উসকে দিয়ে রাস্তা অবরোধ করে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ইউপিডিএফ কর্মীরা স্থানীয় বাঙালি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় লিপ্ত হয়।

এ সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গেলে তাঁদের ওপর দেশীয় অস্ত্র, ইটপাটকেল, গুলতি ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালানো হয়। এতে তিনজন অফিসারসহ ১০ জন সেনাসদস্য আহত হন। একই সময়ে রামগড় এলাকায় বিজিবির গাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং কয়েকজন বিজিবি সদস্য আহত হন।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সংঘর্ষ চলাকালে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রামসু বাজারের পশ্চিমের একটি উঁচু পাহাড় থেকে ইউপিডিএফ (মূল) সশস্ত্র দলের সদস্যরা ৪-৫ দফা অটোমেটিক অস্ত্র ব্যবহার করে আনুমানিক ১০০-১৫০টি গুলি ছোড়ে। এতে পাহাড়ি ও বাঙালি সাধারণ মানুষসহ সেনাসদস্যরা গুলিবিদ্ধ হন। পরে সেনাবাহিনীর টহল দল দ্রুত সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ধাওয়া দেয়। সেনাবাহিনীর তৎপরতায় সশস্ত্র দলটি এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান, অবরোধকারীরা সকালে উপজেলার খাদ্যগুদামের সামনে জড়ো হয়ে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় দোকানপাটে অগ্নিসংযোগও করা হয়। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে গেলে উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরা তাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সশস্ত্র হামলা করে। এ সময় গুলিতে নিহত হন তিনজন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় জানা যায়নি।

স্থানীয় লোকজন বলেছেন, সেনাবাহিনীর ওপর প্রথমে অতর্কিত হামলা হয়। এতে কয়েকজন সেনাসদস্য ও স্থানীয় অনেকজন আহত হন। পরবর্তী সময়ে স্থানীয়রা অবরোধকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুললে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

সেনাবাহিনীর সিন্দুকছড়ি জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর মো. মাজহার হোসেন রাব্বানী বলেন, ‘১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে অবরোধকারীরা সড়কে বিক্ষোভ ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ করে। আমরা পরিস্থিতি শান্ত করতে গেলে তারা সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে আমাদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এতে আমিসহ আমাদের ১১ জন সেনাসদস্য আহত হয়েছেন।’

মেজর মাজহার আরও বলেন, ‘অবরোধকারীরা প্রথমে সংখ্যায় ২০-২৫ জন ছিল। সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী পেছন দিক থেকে কয়েক শ লোক এসে আমাদের ওপর সশস্ত্র হামলা করে।’

সংঘর্ষে হামলার শিকার হন দায়িত্ব পালনরত সাংবাদিকেরাও। বিজয় টিভির জেলা প্রতিনিধি এম সাইফুর রহমান গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক চৌধুরী গতকাল রাতে জানান, পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি এখনো উত্তপ্ত, বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

গুইমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আইরিন আক্তার বলেন, পরিস্থিতি থমথমে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।

খাগড়াছড়ি সদরেও গতকাল অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও জানমালের নিরাপত্তায় খাগড়াছড়ি পৌর শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েন ছিল সেনাবাহিনী ও পুলিশের পাশাপাশি এপিবিএন। এ ছাড়া খাগড়াছড়িতে জেলা সদরে মোতায়েন করা হয় সাত প্লাটুন বিজিবি। তবে সকাল থেকে জেলা সদরে কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

সকাল থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে চলাচলকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। বন্ধ ছিল শহরের দোকানপাট। গত রাতে সাজেকে আটকা পড়া দুই হাজারের বেশি পর্যটককে সেনা নিরাপত্তায় গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়।

জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বহাল থাকবে এবং স্থিতিশীল পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে।

আইএসপিআরের বিবৃতিতে জানানো হয়, ২০২৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে মোটরসাইকেলচালক মামুন হত্যাকে কেন্দ্র করে ইউপিডিএফ ও এর অঙ্গসংগঠনগুলো দীঘিনালা ও রাঙামাটিতে সাম্প্রদায়িক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। বিবৃতিতে বলা হয়, ওই ঘটনার এক বছর পূর্তিতে ইউপিডিএফ এবং এর সহযোগীরা চলতি বছর পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ মিছিল আয়োজন করে এবং অনুরূপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি করার চেষ্টা চালায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফরিদপুরে পাইলিংয়ের সময় ধসে পড়ল পাশের ভবন

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ১০
একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা
একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়েছে। এতে ভবনটিসহ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভবনে অবস্থিত আরএফএল কোম্পানির বেস্ট বাই শোরুম। তবে প্রাণে বেঁচে গেছেন সেখানে কর্মরতরা। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনমালিকের অভিযোগ, নিরাপত্তাব্যবস্থার জন্য নির্মাণাধীন ভবনমালিকদের বলা হলেও কর্ণপাত না করে নিয়মবহির্ভূতভাবে কাজ করে যাচ্ছিলেন। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট পৌর কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।

আজ শুক্রবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শহরের প্রাণকেন্দ্র নিলটুলি স্বর্ণকারপট্টির মুজিব সড়ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের একাধিক টিম।

সরেজমিন দেখা গেছে, একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ চলছিল। নির্মাণাধীন এই ভবনের মালিক স্থানীয় সঞ্জয় কর্মকার, অজয় কর্মকার ও সেলিম নামে আরেক ব্যক্তি। পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পার্শ্ববর্তী ভবনসংলগ্ন কোনো নিরাপত্তাব্যবস্থা বা প্যারাসাইলিং ব্যবস্থা ছিল না। এই অবস্থায় পাইলিংয়ের (নিচের অংশ) কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন নির্মাণশ্রমিকেরা। হঠাৎ করেই ভবনটির একাংশ ধসে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে সেখান থেকে দৌড়ে সরে পড়েন নির্মাণশ্রমিক ও শোরুমটির কর্মচারীরা।

বেস্ট বাইয়ের কর্মীরা জানান, তারা সকালে এসে ফ্লোরের টাইলসে ফাটল দেখতে পান। ফাটল ধীরে ধীরে বড় হতে থাকলে ক্যাশ কাউন্টার টেবিলটা সরিয়ে ফেলেন, এর মধ্যেই ধসে পড়ে ভবনের এক পাশ।

ধসে পড়া ভবন ও বেস্ট বাই ফ্রাঞ্চাইজের মালিক মনিরা খাতুনের দাবি, এ ঘটনায় তাঁর ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে এবং তিনি এর বিচার দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘বারবার নির্মাণাধীন ভবনমালিকদের সতর্ক করা হয়েছে এবং নিয়ম মেনে কাজ করতে বলেছি। কিন্তু তাঁরা রাতের আঁধারে আমার ভবনের নিচের মাটি সরিয়ে ফেলেছে, যার কারণে আজকের এই দুর্ঘটনা। পৌরসভার নিয়ম অনুযায়ী ৩ ফুট দূরত্ব রেখে কাজ করার কথা থাকলেও নিয়মের তোয়াক্কা না করেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। আজ সকালে উল্টো আমার কর্মচারীদের হুমকি-ধমকিও দেওয়া হয়।’

একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা
একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঘটনাস্থলে ছুটে আসা শহরের বাসিন্দা ও জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মোজাফফর আলী মুসা পৌরসভা কর্তৃপক্ষের গাফিলতি রয়েছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘ভবন নির্মাণ করতে হলে পৌরসভার অনুমোদনের প্রয়োজন হয় এবং তা সঠিকভাবে তদারকির দায়িত্ব তাদের। যদি সঠিকভাবে তদারকি হতো তাহলে এমন দুর্ঘটনা না-ও ঘটতে পারত।’

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ভবনমালিকদের একজন সঞ্জয় সাহার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ঘটনাস্থলে আসা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক মাসুদ আলম জানান, খবর পেয়ে তাঁরা এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। তবে কোনো অভিযোগ পায়নি পুলিশ। অভিযোগ পেলে সেটা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে পৌরসভার প্রশাসক ও ফরিদপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. সোহরাব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনাটি আমার জানা নেই, খোঁজ নিয়ে বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাবিতে শেখ পরিবারের নামে থাকা ৪ হলের নাম পরিবর্তন

জাবি প্রতিনিধি 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শেখ হাসিনা ও তাঁর স্বজনদের নামে থাকা চারটি আবাসিক হলের নাম পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আজ শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এ বি এম আজিজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আজিজুর রহমান বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় শেখ পরিবারের নামে থাকা চারটি হলের নাম পরিবর্তন করে নতুন নামকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

এসব হলের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে রাখ হয়েছে ‘শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক হল’, শেখ রাসেল হলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘নবাব সলিমুল্লাহ হল’। এ ছাড়া শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন করে ‘জুলাই চব্বিশ জাগরণী হল’ এবং বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম পরিবর্তন করে ‘শহীদ ফেলানী খাতুন হল’ নাম রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হবিগঞ্জে রত্না বেইলি সেতু ভেঙে ট্রাক আটকা, দুর্ভোগে যাত্রীরা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

হবিগঞ্জ-বানিয়াচং আঞ্চলিক সড়কের রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে ওই পথে সব ধরনের যান চলাচল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শতাধিক যাত্রী ও ওই পথে চলাচলকারীরা। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, জাফলং থেকে ছেড়ে আসা বানিয়াচংগামী পাথরবোঝাই একটি ট্রাক ব্রিজের ওপর ওঠামাত্রই ব্রিজের দুটি পাটাতন ভেঙে যায়। মুহূর্তেই ট্রাকের পেছনের দুটি চাকা ধসে পড়ে এবং পুরো ট্রাকটি ব্রিজে আটকে যায়।

এতে দীর্ঘ লাইনে আটকা পড়ে যাত্রীবাহী বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, টমটম, প্রাইভেট কারসহ অসংখ্য যানবাহন। বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, রোগী এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ব্যবসায়ীরা।

দুর্ঘটনার পর ব্রিজের একপাশ থেকে অন্যপাশে যাওয়ার জন্য যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে ভাঙা অংশ অতিক্রম করছে। এতে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘ট্রাকটি ব্রিজে উঠতেই জোরে শব্দ হয়। একটু পরই দেখি পাটাতন নিচে ধসে গেছে। ভাগ্য ভালো যে ট্রাকটি পুরোপুরি নিচে পড়ে যায়নি। তবে এখন তো ও পথে চলাচলকারীরা আটকা পড়ে আছে।’

যাত্রীরা জানান, রত্না বেইলি ব্রিজটি বহুদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভারী যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের কারণে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে—এমন আশঙ্কা দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। এদিকে যাত্রীদের দাবি, এখানে যেন বেইলি ব্রিজের পরিবর্তে দ্রুত স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়, যাতে প্রতিদিনের এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ‘ব্রিজটি দ্রুত মেরামত করার কাজ চলছে। পাথরবোঝাই ট্রাকটিতে বেশি লোড থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

নরসিংদী প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে আব্দুর রশিদ (৪০) নামের এক অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

আব্দুর রশিদ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি ছিলেন অটোরিকশাচালক; তবে নিয়মিত আড়িয়াল খাঁ নদে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করা ছিল তাঁর নেশা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৬টার দিকে ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর পাড়ে রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। লাশের পাশেই মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি ছিল। পরে স্বজনেরা এসে লাশ শনাক্ত করেন। আব্দুর রশিদের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, তিনি দুষ্কৃতকারীর হামলার শিকার হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির ভাই কাজল মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১১-১২টা পর্যন্ত অটোরিকশা চালিয়ে তারপর নদীর পাড়ে বসে মাছ শিকার করে বাড়ি ফিরত ভাই। কিন্তু গতকাল রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। সকালে খবর পেয়ে নদীর পাড়ে এসে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই।’

নিহত ব্যক্তির ছেলে হৃদয় বলেন, ‘রাতে বাড়ি না ফেরায় কল দিলে ফোন বন্ধ পাই। সকালে খবর শুনে নদীর পাড়ে এসে বাবার মরদেহ, মোবাইল ও অটোরিকশা পড়ে থাকতে দেখি।’

বেলাব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি পিবিআইকে জানানো হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত