রয়টার্সের প্রতিবেদন
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

২০২৫ সালের ৬ জানুয়ারি। ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলের প্রধান মারিয়া কোরিনা মাচাদোর দলের চারজন প্রতিনিধি ক্যাপিটল হিল অফিসের সোফায় বসেন। বৈঠক চলছে মাইক ওয়াল্টজের সঙ্গে, যিনি কিছুদিন পরই আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে যাওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক হতে যাচ্ছেন। ভেনেজুয়েলায় তাঁর গোপন আস্তানা থেকে মাচাদো বৈঠকে ভিডিও কলে অল্প কিছু সময়ের জন্য যোগ দেন।
ডেভিড স্মোলানস্কি, যিনি ওয়াশিংটনে মাচাদোর অফিসটা চালান, তিনি বৈঠকে ব্যাখ্যা করলেন, কীভাবে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো আসলে দেশটির সশস্ত্র সংগঠন ত্রেন দে আরাগাকে (টিডিএ) নিয়ন্ত্রণ করেন।
বৈঠকে উপস্থিত অন্তত দুজনের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। সেই দুজনই জানিয়েছেন, বৈঠকে ওয়াল্টজ পুরোটা সময় নোট নিয়েছেন।
এর আগে কখনো এই বৈঠকের ভেতরের খবর সংবাদমাধ্যমে আসেনি। বৈঠকটি মাচাদোর দিক থেকে একটি ‘ঝুঁকি যেমন, তেমন লাভ’ পরিকল্পনার অংশ ছিল। কিছুদিন আগে শান্তিতে নোবেলজয়ী মাচাদোর দিক থেকে ওই বৈঠক ছিল ট্রাম্পের দলের উচ্চপদস্থদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও উন্নত করার একটি মাধ্যম। ট্রাম্পের নীতিনির্ধারণী দল মনে করে, অপরাধী চক্রগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা মাদুরো যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটি বড় ঝুঁকি। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে (ট্রাম্পের দলের) এমন ধারণার ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে।
রয়টার্স ৫০টির বেশি ‘সূত্রে’র সঙ্গে কথা বলেছে, যেগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ও বর্তমান উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলের সদস্য, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে তথ্য সরবরাহকারীসহ অনেকে আছেন। মাচাদোর দল কীভাবে ভেনেজুয়েলারই সরকারের বিরুদ্ধে বয়ান তৈরি করে ট্রাম্প প্রশাসনকে আগ্রাসী পদক্ষেপ নিতে উদ্বুদ্ধ করেছে, সেটা ওই ‘সূত্রগুলোর’ সঙ্গে রয়টার্সের আলোচনায় উঠে এসেছে। এমনকি ট্রাম্পের কঠোর পদক্ষেপের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করা ভেনেজুয়েলান অভিবাসীদের ওপর ধাক্কা আসার শঙ্কাও পাত্তা পায়নি মাচাদোর দলের কাছে।
ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার আগে ও পরে মাচাদোর নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলের নেতারা বেশ কয়েকবার ট্রাম্পের নীতিনির্ধারণী দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল, যাতে মাদুরোর ওপর চাপ বাড়ে। মাদুরোর বিরোধিতায় মাচাদোর সঙ্গী দলগুলোও মাচাদোর দলের পেশ করা বক্তব্য ও প্রতিবেদনের নেপথ্যের গবেষণায় হাত লাগিয়েছেন। সূত্রকে উৎস জানিয়ে রয়টার্স লিখেছে, মাদুরো এবং এই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ব্যাপারে অনেক তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা এজেন্সিগুলোকে জানিয়েছেন মাচাদোর দলের সদস্যরা।
মাচাদো ও অন্য বিরোধী দলগুলোর সাহায্যে বানানো প্রতিবেদন দেখে বোঝা যায়, মাদুরোই ত্রেন দে আরাগাকে নিয়ন্ত্রণ করেন—এই ধারণাকে বৈধতা দিতে সাহায্য করেছে মাচাদোর নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলো। ট্রাম্প প্রশাসন ও তাঁদের স্বার্থ একই জায়গায় মিলছে দেখে গোপনে এবং প্রকাশ্যে এই ধারণার প্রচারও চালিয়েছে তারা। তবে ভেনেজুয়েলা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বর্তমান কৌশলের নেপথ্যে তাদের প্রচারণার সম্পর্ক কতটা, সেটা রয়টার্স পুরোপুরি নিশ্চিত করতে পারেনি।
জানুয়ারিতে ওয়াল্টজের সঙ্গে মাচাদোর দলের বৈঠকের পর ওয়াশিংটন ত্রেন দে আরাগাকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ বলে ঘোষণা করে। মাদুরো এই সংগঠন নিয়ন্ত্রণ করে বলেও জানায় ওয়াশিংটন; পাশাপাশি মাদুরোকে গ্রেপ্তারের পুরস্কার হিসেবে ৫ কোটি ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে।
ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে নৌবাহিনীর দাপট বাড়ানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ভেনেজুয়েলার উপকূলে অন্তত আটটি নৌকায় হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা। নৌকাগুলো মাদকদ্রব্য পরিবহনের সঙ্গে জড়িত ছিল বলে দাবি তাদের। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তথ্য অনুযায়ী, পাচার হয়ে যে পরিমাণ কোকেন যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকে, তার খুবই সামান্য অংশই ভেনেজুয়েলা হয়ে আসে।
ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় নিহত ১১ জন ত্রেন দে আরাগার সদস্য, যদিও তাদের সদস্য থাকার কোনো প্রমাণ হাজির করা হয়নি। এর আগে এই মাসের শুরুর দিকে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি ভেনেজুয়েলায় যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর গোপন কার্যক্রমের অনুমোদন দিয়েছেন। এ-ও বলেছিলেন, ভেনেজুয়েলার সীমানার ভেতরে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
ট্রাম্পের তেমন কৌশলেও অকুণ্ঠ সমর্থন মাচাদোর। তাঁর কথা, পরিস্থিতি তেমন হতে দিতে না চাইলে মাদুরোর পদত্যাগ করা উচিত।
রয়টার্সের এই প্রতিবেদনের জন্য মন্তব্যের আবেদনে অবশ্য ‘না’ জানিয়ে দিয়েছেন মাচাদো। আর ৬ জানুয়ারির বৈঠক নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দেননি ওয়াল্টজ, যিনি এখন জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাম্বাসেডর। সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে মাদুরোর সম্পর্ক নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, সে ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি ভেনেজুয়েলার তথ্য মন্ত্রণালয়।
হুগো শাভেজের মৃত্যুর পর মাদুরো ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট বনে যান ২০১৩ সালে। এরপর থেকে তাঁর শাসনামলে ভেনেজুয়েলা অর্থনৈতিক দুরবস্থা দেখেছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দেখেছে, দুর্নীতি ও রাজনৈতিক দমন-পীড়নের অভিযোগও আছে মাদুরোর বিরুদ্ধে। ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাচাদোর নেতৃত্বাধীন বিরোধী দল ৭০ শতাংশ ভোট নিয়ে জিতেছে, সেই নির্বাচন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও পেয়েছে, তবু সেনাবাহিনীর সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকা মাদুরো চেয়ার ছাড়েননি। পশ্চিমের নানা নিষেধাজ্ঞা, অনেক আলাপ-আলোচনা ও অপরাধের অভিযোগও তাঁকে টলাতে পারেনি।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় আবিষ্কৃত তেলের মজুত ভেনেজুয়েলায়। সে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্রের মিলিটারির হস্তক্ষেপ করা উচিত কি না—এই প্রশ্নটা মাচাদোকে করা হয় ১০ অক্টোবর, তিনি শান্তিতে নোবেল জেতার পর। উত্তরে মাচাদো বলেছেন, ‘আপনি যখন একটা অপরাধী প্রশাসনের সঙ্গে লড়ছেন, তখন শক্তির প্রয়োগ ছাড়া তো স্বাধীনতা আসবে না।’ শান্তিতে নোবেল জয়ের পর সেটি ভেনেজুয়েলার জনগণের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উৎসর্গ করেছিলেন মাচাদো।
এর আগে সেপ্টেম্বরে ট্রাম্পকে একটি চিঠি লিখেছিলেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো। চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন, তাঁর সরকারের সঙ্গে মাদক ব্যবসায়ী গোষ্ঠীগুলোর সম্পর্কের অভিযোগ ‘পুরোপুরি মিথ্যা’। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা মানবাধিকার লঙ্ঘনের দাবিও অসত্য জানিয়ে মাদুরো বলেছেন, ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র কার্যকর।
মূলত ভেনেজুয়েলায় জেলে থাকা কয়েকজনের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী ত্রেন দে আরাগা এখন লাতিন আমেরিকায় বিভিন্ন দেশেই নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে। লাতিন দেশগুলোর সরকার ত্রেন দে আরাগাকে তাদের দেশের জন্য বড় হুমকি মনে করে। তবে তারা যুক্তরাষ্ট্রে ‘হামলা চালানো’র পরিকল্পনা করছে—এমন দাবি নাকচ করে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আপিল আদালত। ট্রাম্প প্রশাসন পাইকারি হারে ভেনেজুয়েলান অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশ থেকে বের করে দেওয়ার কৌশল নেওয়ার পর ‘আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ)’ আপিল আদালতে অভিযোগ করে, সে মামলার শুনানিতেই কথাটা বলেছিলেন আদালত।
এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স কাউন্সিলের ফাঁস হয়ে যাওয়া এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ত্রেন দে আরাগার সঙ্গে ভেনেজুয়েলার সরকারের সম্পর্ক নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছে, ভেনেজুয়েলান প্রশাসনের অল্প কয়েকজন কর্মকর্তা ‘অর্থের বিনিময়ে টিডিএকে সাহায্য করে থাকতে পারেন।’ তবে মাদুরো এই গ্রুপের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নন।
উভয়সংকট
তবে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে মাচাদোর আঁতাতকে ‘সমাধান-অসাধ্য উভয়সংকট’ জানিয়ে মাচাদোরই দলের কেউ কেউ এর বিরোধিতা করছেন। টিডিএর কারণে মাদুরোর প্রশাসনের ওপর ট্রাম্প যে চাপ তৈরি করেছেন, সেটা মাদুরোর বিরোধী পক্ষের অনেক দিনের চাওয়া। কিন্তু এর পাশাপাশি নিজের অভিবাসনবিরোধী কৌশলের অংশ হিসেবে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী ভেনেজুয়েলানদেরও টিডিএর সদস্য বলে বিপদের মুখে ফেলছেন।
ট্রাম্প যখন হাজারো ভেনেজুয়েলান অভিবাসীর অধিকার কেড়ে নিয়েছেন, শত শত ভেনেজুয়েলান অভিবাসীকে তাঁদের দেশে ফেরত পাঠিয়েছেন, টিডিএর সঙ্গে সম্পর্ক আছে বলে অভিযুক্তদের এল সালভাদরের জেলে পাঠিয়েছেন, মাচাদো তেমন কিছুই বলেননি। সম্প্রতি মাদক বহনের অভিযোগ তুলে ভেনেজুয়েলার উপকূলে বেশ কয়েকটি নৌকায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় অনেকে যখন মারা গেলেন, সেটা বিচারবহির্ভূত হত্যার সংজ্ঞায় পড়লেও মাচাদো এর সমর্থনে বলেছেন, এটা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা-সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত।
মাচাদোর দল এটা বুঝতে পারছে যে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে তাদের আঁতাতের কৌশলে বড় ঝুঁকি আছে। ভেনেজুয়েলার সাধারণ মানুষ তাঁদের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ তুলতে পারে—এই ঝুঁকি তো আছেই। তবে বিরোধী দলের দুটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে আঁতাতই ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ফেরানোর সবচেয়ে সেরা উপায়। সম্ভাব্য ফাঁদ থাকা সত্ত্বেও মাদুরোকে সরানোই তাদের ‘বড় লক্ষ্য’ বলে জানিয়েছেন ওই দুজনের একজন।
তুলান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেনেজুয়েলা বিশেষজ্ঞ ডেভিড স্মিলড রয়টার্সকে বলেছেন, যদি এতে কাজ হয়, তাহলে ‘তিনি (মাচাদো) বনে যাবেন ভেনেজুয়েলার রক্ষাকর্তা।’ কিন্তু কিছু না হলে, এত বছরে বিরোধী দলগুলোর নেতাদের মিথ্যা আশ্বাস দেখে বিরক্ত এবং পরিবর্তনের আশায় মরিয়া ভেনেজুয়েলার সাধারণ মানুষের সমর্থন হারাবেন তিনি। আর যদি মাদুরোর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের হামলা থেকে কোনো যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যায়, তাহলে দেশের ভেতরে ধ্বংসযজ্ঞের দায় পড়বে তাঁর (মাচাদো) ঘাড়েই। এই পুরো কৌশলটাই ‘ঝুঁকিও বেশি, লাভও বেশি’ কৌশল।
যোগাযোগের পথটা মসৃণ
২০ জানুয়ারি ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার আগেই মাচাদোর দলের প্রতিনিধিরা ফ্লোরিডার রিপাবলিকানদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, যাঁদের মধ্যে সে সময়ের সিনেটর মার্কো রুবিও ছিলেন। ওয়াল্টজ পদত্যাগ করার পর থেকে রুবিওই ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক। ২০১৮ সালেই তিনি বলেছিলেন, ভেনেজুয়েলায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা হামলা করলে সেটা অন্যায্য হবে না। একসময়ে ট্রাম্পের কড়া সমালোচক থেকে এখন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী বনে যাওয়া রুবিও যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতিমালা; বিশেষ করে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বৈদেশিক নীতিমালা প্রণয়নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের একজন।
ওই বৈঠকগুলোর কারণে টিডিএর সঙ্গে মাদুরোর সম্পর্ক, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য টিডিও এবং আরেকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী কার্তেল দে লস সোলেস কতটা হুমকির—এসব ব্যাপারে ট্রাম্প প্রশাসনের নেতিবাচক ধারণা আরও পোক্ত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র টমি পিগট অবশ্য রুবিওর সঙ্গে ভেনেজুয়েলার বিরোধীদের নিয়মিত যোগাযোগের ব্যাপারটি জোরালোভাবে অস্বীকার করেছেন। তাঁদের কারণে টিডিএর ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল বদলেছে, এমন ধারণাও অস্বীকার করেছেন।
ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলগুলোর প্রতি রুবিওর সমর্থন অবশ্য অনেক পুরোনো এবং সেটা জনসমক্ষেও বলেছেন রুবিও। ২০১৯ সালে মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রচেষ্টার সময় বিরোধী পক্ষের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের পক্ষে কথা বলেছিলেন রুবিও।
মাচাদোকে শান্তিতে নোবেলের জন্য মনোনীত করে ২০২৪ সালে এক চিঠিতে রুবিও এবং ওয়াল্টজ—দুজনই সই করেছেন। গত এপ্রিলে টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত ‘প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বে’র তালিকায় মাচাদোর নাম থাকায় তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করে রুবিও লিখেছেন, এক দশক আগে তাঁদের পরিচয় হয়েছিল।
২০২৪ সালে নির্বাচনী প্রচারণায় টিডিএর ব্যাপারে ট্রাম্পের আলোচনার আগেও, মাচাদোর দলের ‘বৈশ্বিক নিরাপত্তা পরামর্শক’ ইভান সিমোনোভিস সংবাদমাধ্যমে এসে বলেছিলেন, এই সশস্ত্র গোষ্ঠীকে মাদুরোই পাঠিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্য নিয়ে, যদিও এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ তিনি দেননি। পরে ট্রাম্পও টিডিএর সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগে অনেক ভেনেজুয়েলানকে দেশে ফেরত পাঠানোর সময় মাদুরোর সংশ্লিষ্টতার কথা বলেছেন, যদিও তিনিও কোনো প্রমাণ দেননি। ভেনেজুয়েলান পুলিশের সাবেক প্রধান সিমোনোভিচ রয়টার্সকে বলেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর কাছে তথ্য ও যোগাযোগের সূত্র দিয়েছেন। এই তথ্যগুলো ভেনেজুয়েলার নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে পাওয়া বলেও জানিয়েছেন। যদিও রয়টার্সকে এমন কারও সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার অনুরোধে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন সিমোনোভিচ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের তৃতীয় আরেকজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ২০০২৪ সালের শেষ অংশে ভেনেজুয়েলার নির্বাসিত সাবেক কর্নেল গুস্তাভো আরোচা, যিনি কিনা মাচাদোর দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ, তিনি এই টিডিএর ব্যাপারে গবেষণার তথ্য মাচাদোর দলকে দিয়েছেন। সঙ্গে ডানপন্থী থিংকট্যাংক দ্য হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের একটা গবেষণাপত্রও দিয়েছেন, যেখানে দাবি করা হয়েছে, এই টিডিএ গ্যাং আসলে মাদুরোরই একটা প্রক্সি।
জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে মাচাদোর দল অন্তত আটবার ওয়াল্টজ, রুবিও, সে সময়ের বিশেষ পরামর্শক মরিসিও ক্লাভের-কারোন, ডেপুটি সেক্রেটারি অব স্টেট ক্রিস্টফার লানডাউয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে বৈঠকগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চারটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে। ক্লাভের-কারোনও রুবিওর মতোই একজন কিউবান-আমেরিকান, যিনিও ভেনেজুয়েলার ওপর মার্কিন মিলিটারি হামলাকে সমর্থন করেন। ভেনেজুয়েলা কিউবার কমিউনিস্ট পদ্ধতিতে সহায়তা করে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ভেনেজুয়েলান বিরোধী দলের দুটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, এই আটটি বৈঠকের তিনটিতে তাঁরা কার্তেল দে লস সোলেসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করার ব্যাপারে তাগিদ দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, মাদুরো কার্তেল দে লস সোলেসেরও নিয়ন্ত্রক। গত জুলাইয়ে এই সংগঠনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সে সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট বলেছে, এই গ্রুপ ত্রেন দে আরাগার সঙ্গে মিলে মাদকদ্রব্যকে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একটা অস্ত্র হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে। যদিও এরও কোনো প্রমাণ তারা হাজির করেনি।
ট্রাম্প প্রশাসনের অনেকে অবশ্য মাদুরোর বিরুদ্ধে যুদ্ধের পক্ষে নন। এই মাসের শুরুতে ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগের পথ বন্ধ করে দেওয়ার আগে মার্কিন দূত রিচার্ড গ্রেনেল বলে এসেছেন, যুদ্ধের বদলে তেল নিয়ে ভেনেজুয়েলার সঙ্গে চুক্তিতে যাওয়া উচিত। প্রসঙ্গত, ভেনেজুয়েলার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মার্কিন কোম্পানি শেভরনের ভেনেজুয়েলায় তেলের উৎপাদন ও বিক্রির লাইসেন্স আছে। এ চুক্তি থেকে আর্থিক লাভ হয় ভেনেজুয়েলার। চুক্তিটিতে বড় অবদান আছে গ্রেনেলের। চুক্তিটি অনুমোদন করেছেন ট্রাম্পও।
তবে কট্টরপন্থী মাচাদোর সঙ্গে ট্রাম্পের মিত্র ব্রাজিলের ডানপন্থী নেতা জইর বলসোনারো এবং আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেইয়ের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। মাচাদো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ক্ষমতায় গেলে তিনি ভেনেজুয়েলার তেলশিল্পকে দ্রুত বেসরকারীকরণ করবেন এবং যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য বিনিয়োগকারীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেবেন।
২০২৩ সাল পর্যন্ত ভেনেজুয়েলায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করা জিমি স্টোরি রয়টার্সকে বলেছেন, ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলের নেতাদের হাতে মাদুরোকে সরানোর পরিকল্পনায় ট্রাম্পের সাহায্য চাওয়া ছাড়া আর কোনো রাস্তা নেই। ‘ওরা প্রতিবাদ করেছে, এ কারণে মারাও পড়েছে। আমরা তাদের (বিরোধীদের) আলোচনায় যেতে বলেছি, তারা আলোচনার টেবিলে গেছে। নির্বাচনে যেতে বলেছি, তারা নির্বাচনে গেছে। নির্বাচনে জিতেছেও। কিন্তু এরপরও সে (মাদুরো) চেয়ার ছাড়বে না। এরপর এটা (যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল) সমর্থন করা ছাড়া আর কী করার আছে তাদের সামনে?’

২০২৫ সালের ৬ জানুয়ারি। ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলের প্রধান মারিয়া কোরিনা মাচাদোর দলের চারজন প্রতিনিধি ক্যাপিটল হিল অফিসের সোফায় বসেন। বৈঠক চলছে মাইক ওয়াল্টজের সঙ্গে, যিনি কিছুদিন পরই আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে যাওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক হতে যাচ্ছেন। ভেনেজুয়েলায় তাঁর গোপন আস্তানা থেকে মাচাদো বৈঠকে ভিডিও কলে অল্প কিছু সময়ের জন্য যোগ দেন।
ডেভিড স্মোলানস্কি, যিনি ওয়াশিংটনে মাচাদোর অফিসটা চালান, তিনি বৈঠকে ব্যাখ্যা করলেন, কীভাবে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো আসলে দেশটির সশস্ত্র সংগঠন ত্রেন দে আরাগাকে (টিডিএ) নিয়ন্ত্রণ করেন।
বৈঠকে উপস্থিত অন্তত দুজনের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। সেই দুজনই জানিয়েছেন, বৈঠকে ওয়াল্টজ পুরোটা সময় নোট নিয়েছেন।
এর আগে কখনো এই বৈঠকের ভেতরের খবর সংবাদমাধ্যমে আসেনি। বৈঠকটি মাচাদোর দিক থেকে একটি ‘ঝুঁকি যেমন, তেমন লাভ’ পরিকল্পনার অংশ ছিল। কিছুদিন আগে শান্তিতে নোবেলজয়ী মাচাদোর দিক থেকে ওই বৈঠক ছিল ট্রাম্পের দলের উচ্চপদস্থদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও উন্নত করার একটি মাধ্যম। ট্রাম্পের নীতিনির্ধারণী দল মনে করে, অপরাধী চক্রগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা মাদুরো যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটি বড় ঝুঁকি। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে (ট্রাম্পের দলের) এমন ধারণার ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে।
রয়টার্স ৫০টির বেশি ‘সূত্রে’র সঙ্গে কথা বলেছে, যেগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ও বর্তমান উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলের সদস্য, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে তথ্য সরবরাহকারীসহ অনেকে আছেন। মাচাদোর দল কীভাবে ভেনেজুয়েলারই সরকারের বিরুদ্ধে বয়ান তৈরি করে ট্রাম্প প্রশাসনকে আগ্রাসী পদক্ষেপ নিতে উদ্বুদ্ধ করেছে, সেটা ওই ‘সূত্রগুলোর’ সঙ্গে রয়টার্সের আলোচনায় উঠে এসেছে। এমনকি ট্রাম্পের কঠোর পদক্ষেপের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করা ভেনেজুয়েলান অভিবাসীদের ওপর ধাক্কা আসার শঙ্কাও পাত্তা পায়নি মাচাদোর দলের কাছে।
ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার আগে ও পরে মাচাদোর নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলের নেতারা বেশ কয়েকবার ট্রাম্পের নীতিনির্ধারণী দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল, যাতে মাদুরোর ওপর চাপ বাড়ে। মাদুরোর বিরোধিতায় মাচাদোর সঙ্গী দলগুলোও মাচাদোর দলের পেশ করা বক্তব্য ও প্রতিবেদনের নেপথ্যের গবেষণায় হাত লাগিয়েছেন। সূত্রকে উৎস জানিয়ে রয়টার্স লিখেছে, মাদুরো এবং এই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ব্যাপারে অনেক তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা এজেন্সিগুলোকে জানিয়েছেন মাচাদোর দলের সদস্যরা।
মাচাদো ও অন্য বিরোধী দলগুলোর সাহায্যে বানানো প্রতিবেদন দেখে বোঝা যায়, মাদুরোই ত্রেন দে আরাগাকে নিয়ন্ত্রণ করেন—এই ধারণাকে বৈধতা দিতে সাহায্য করেছে মাচাদোর নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলো। ট্রাম্প প্রশাসন ও তাঁদের স্বার্থ একই জায়গায় মিলছে দেখে গোপনে এবং প্রকাশ্যে এই ধারণার প্রচারও চালিয়েছে তারা। তবে ভেনেজুয়েলা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বর্তমান কৌশলের নেপথ্যে তাদের প্রচারণার সম্পর্ক কতটা, সেটা রয়টার্স পুরোপুরি নিশ্চিত করতে পারেনি।
জানুয়ারিতে ওয়াল্টজের সঙ্গে মাচাদোর দলের বৈঠকের পর ওয়াশিংটন ত্রেন দে আরাগাকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ বলে ঘোষণা করে। মাদুরো এই সংগঠন নিয়ন্ত্রণ করে বলেও জানায় ওয়াশিংটন; পাশাপাশি মাদুরোকে গ্রেপ্তারের পুরস্কার হিসেবে ৫ কোটি ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে।
ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে নৌবাহিনীর দাপট বাড়ানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ভেনেজুয়েলার উপকূলে অন্তত আটটি নৌকায় হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা। নৌকাগুলো মাদকদ্রব্য পরিবহনের সঙ্গে জড়িত ছিল বলে দাবি তাদের। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তথ্য অনুযায়ী, পাচার হয়ে যে পরিমাণ কোকেন যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকে, তার খুবই সামান্য অংশই ভেনেজুয়েলা হয়ে আসে।
ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় নিহত ১১ জন ত্রেন দে আরাগার সদস্য, যদিও তাদের সদস্য থাকার কোনো প্রমাণ হাজির করা হয়নি। এর আগে এই মাসের শুরুর দিকে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি ভেনেজুয়েলায় যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর গোপন কার্যক্রমের অনুমোদন দিয়েছেন। এ-ও বলেছিলেন, ভেনেজুয়েলার সীমানার ভেতরে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
ট্রাম্পের তেমন কৌশলেও অকুণ্ঠ সমর্থন মাচাদোর। তাঁর কথা, পরিস্থিতি তেমন হতে দিতে না চাইলে মাদুরোর পদত্যাগ করা উচিত।
রয়টার্সের এই প্রতিবেদনের জন্য মন্তব্যের আবেদনে অবশ্য ‘না’ জানিয়ে দিয়েছেন মাচাদো। আর ৬ জানুয়ারির বৈঠক নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দেননি ওয়াল্টজ, যিনি এখন জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাম্বাসেডর। সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে মাদুরোর সম্পর্ক নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, সে ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি ভেনেজুয়েলার তথ্য মন্ত্রণালয়।
হুগো শাভেজের মৃত্যুর পর মাদুরো ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট বনে যান ২০১৩ সালে। এরপর থেকে তাঁর শাসনামলে ভেনেজুয়েলা অর্থনৈতিক দুরবস্থা দেখেছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দেখেছে, দুর্নীতি ও রাজনৈতিক দমন-পীড়নের অভিযোগও আছে মাদুরোর বিরুদ্ধে। ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাচাদোর নেতৃত্বাধীন বিরোধী দল ৭০ শতাংশ ভোট নিয়ে জিতেছে, সেই নির্বাচন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও পেয়েছে, তবু সেনাবাহিনীর সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকা মাদুরো চেয়ার ছাড়েননি। পশ্চিমের নানা নিষেধাজ্ঞা, অনেক আলাপ-আলোচনা ও অপরাধের অভিযোগও তাঁকে টলাতে পারেনি।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় আবিষ্কৃত তেলের মজুত ভেনেজুয়েলায়। সে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্রের মিলিটারির হস্তক্ষেপ করা উচিত কি না—এই প্রশ্নটা মাচাদোকে করা হয় ১০ অক্টোবর, তিনি শান্তিতে নোবেল জেতার পর। উত্তরে মাচাদো বলেছেন, ‘আপনি যখন একটা অপরাধী প্রশাসনের সঙ্গে লড়ছেন, তখন শক্তির প্রয়োগ ছাড়া তো স্বাধীনতা আসবে না।’ শান্তিতে নোবেল জয়ের পর সেটি ভেনেজুয়েলার জনগণের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উৎসর্গ করেছিলেন মাচাদো।
এর আগে সেপ্টেম্বরে ট্রাম্পকে একটি চিঠি লিখেছিলেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো। চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন, তাঁর সরকারের সঙ্গে মাদক ব্যবসায়ী গোষ্ঠীগুলোর সম্পর্কের অভিযোগ ‘পুরোপুরি মিথ্যা’। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা মানবাধিকার লঙ্ঘনের দাবিও অসত্য জানিয়ে মাদুরো বলেছেন, ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র কার্যকর।
মূলত ভেনেজুয়েলায় জেলে থাকা কয়েকজনের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী ত্রেন দে আরাগা এখন লাতিন আমেরিকায় বিভিন্ন দেশেই নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে। লাতিন দেশগুলোর সরকার ত্রেন দে আরাগাকে তাদের দেশের জন্য বড় হুমকি মনে করে। তবে তারা যুক্তরাষ্ট্রে ‘হামলা চালানো’র পরিকল্পনা করছে—এমন দাবি নাকচ করে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আপিল আদালত। ট্রাম্প প্রশাসন পাইকারি হারে ভেনেজুয়েলান অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশ থেকে বের করে দেওয়ার কৌশল নেওয়ার পর ‘আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ)’ আপিল আদালতে অভিযোগ করে, সে মামলার শুনানিতেই কথাটা বলেছিলেন আদালত।
এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স কাউন্সিলের ফাঁস হয়ে যাওয়া এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ত্রেন দে আরাগার সঙ্গে ভেনেজুয়েলার সরকারের সম্পর্ক নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছে, ভেনেজুয়েলান প্রশাসনের অল্প কয়েকজন কর্মকর্তা ‘অর্থের বিনিময়ে টিডিএকে সাহায্য করে থাকতে পারেন।’ তবে মাদুরো এই গ্রুপের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নন।
উভয়সংকট
তবে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে মাচাদোর আঁতাতকে ‘সমাধান-অসাধ্য উভয়সংকট’ জানিয়ে মাচাদোরই দলের কেউ কেউ এর বিরোধিতা করছেন। টিডিএর কারণে মাদুরোর প্রশাসনের ওপর ট্রাম্প যে চাপ তৈরি করেছেন, সেটা মাদুরোর বিরোধী পক্ষের অনেক দিনের চাওয়া। কিন্তু এর পাশাপাশি নিজের অভিবাসনবিরোধী কৌশলের অংশ হিসেবে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী ভেনেজুয়েলানদেরও টিডিএর সদস্য বলে বিপদের মুখে ফেলছেন।
ট্রাম্প যখন হাজারো ভেনেজুয়েলান অভিবাসীর অধিকার কেড়ে নিয়েছেন, শত শত ভেনেজুয়েলান অভিবাসীকে তাঁদের দেশে ফেরত পাঠিয়েছেন, টিডিএর সঙ্গে সম্পর্ক আছে বলে অভিযুক্তদের এল সালভাদরের জেলে পাঠিয়েছেন, মাচাদো তেমন কিছুই বলেননি। সম্প্রতি মাদক বহনের অভিযোগ তুলে ভেনেজুয়েলার উপকূলে বেশ কয়েকটি নৌকায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় অনেকে যখন মারা গেলেন, সেটা বিচারবহির্ভূত হত্যার সংজ্ঞায় পড়লেও মাচাদো এর সমর্থনে বলেছেন, এটা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা-সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত।
মাচাদোর দল এটা বুঝতে পারছে যে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে তাদের আঁতাতের কৌশলে বড় ঝুঁকি আছে। ভেনেজুয়েলার সাধারণ মানুষ তাঁদের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ তুলতে পারে—এই ঝুঁকি তো আছেই। তবে বিরোধী দলের দুটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে আঁতাতই ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ফেরানোর সবচেয়ে সেরা উপায়। সম্ভাব্য ফাঁদ থাকা সত্ত্বেও মাদুরোকে সরানোই তাদের ‘বড় লক্ষ্য’ বলে জানিয়েছেন ওই দুজনের একজন।
তুলান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেনেজুয়েলা বিশেষজ্ঞ ডেভিড স্মিলড রয়টার্সকে বলেছেন, যদি এতে কাজ হয়, তাহলে ‘তিনি (মাচাদো) বনে যাবেন ভেনেজুয়েলার রক্ষাকর্তা।’ কিন্তু কিছু না হলে, এত বছরে বিরোধী দলগুলোর নেতাদের মিথ্যা আশ্বাস দেখে বিরক্ত এবং পরিবর্তনের আশায় মরিয়া ভেনেজুয়েলার সাধারণ মানুষের সমর্থন হারাবেন তিনি। আর যদি মাদুরোর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের হামলা থেকে কোনো যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যায়, তাহলে দেশের ভেতরে ধ্বংসযজ্ঞের দায় পড়বে তাঁর (মাচাদো) ঘাড়েই। এই পুরো কৌশলটাই ‘ঝুঁকিও বেশি, লাভও বেশি’ কৌশল।
যোগাযোগের পথটা মসৃণ
২০ জানুয়ারি ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার আগেই মাচাদোর দলের প্রতিনিধিরা ফ্লোরিডার রিপাবলিকানদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, যাঁদের মধ্যে সে সময়ের সিনেটর মার্কো রুবিও ছিলেন। ওয়াল্টজ পদত্যাগ করার পর থেকে রুবিওই ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক। ২০১৮ সালেই তিনি বলেছিলেন, ভেনেজুয়েলায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা হামলা করলে সেটা অন্যায্য হবে না। একসময়ে ট্রাম্পের কড়া সমালোচক থেকে এখন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী বনে যাওয়া রুবিও যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতিমালা; বিশেষ করে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বৈদেশিক নীতিমালা প্রণয়নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের একজন।
ওই বৈঠকগুলোর কারণে টিডিএর সঙ্গে মাদুরোর সম্পর্ক, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য টিডিও এবং আরেকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী কার্তেল দে লস সোলেস কতটা হুমকির—এসব ব্যাপারে ট্রাম্প প্রশাসনের নেতিবাচক ধারণা আরও পোক্ত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র টমি পিগট অবশ্য রুবিওর সঙ্গে ভেনেজুয়েলার বিরোধীদের নিয়মিত যোগাযোগের ব্যাপারটি জোরালোভাবে অস্বীকার করেছেন। তাঁদের কারণে টিডিএর ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল বদলেছে, এমন ধারণাও অস্বীকার করেছেন।
ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলগুলোর প্রতি রুবিওর সমর্থন অবশ্য অনেক পুরোনো এবং সেটা জনসমক্ষেও বলেছেন রুবিও। ২০১৯ সালে মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রচেষ্টার সময় বিরোধী পক্ষের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের পক্ষে কথা বলেছিলেন রুবিও।
মাচাদোকে শান্তিতে নোবেলের জন্য মনোনীত করে ২০২৪ সালে এক চিঠিতে রুবিও এবং ওয়াল্টজ—দুজনই সই করেছেন। গত এপ্রিলে টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত ‘প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বে’র তালিকায় মাচাদোর নাম থাকায় তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করে রুবিও লিখেছেন, এক দশক আগে তাঁদের পরিচয় হয়েছিল।
২০২৪ সালে নির্বাচনী প্রচারণায় টিডিএর ব্যাপারে ট্রাম্পের আলোচনার আগেও, মাচাদোর দলের ‘বৈশ্বিক নিরাপত্তা পরামর্শক’ ইভান সিমোনোভিস সংবাদমাধ্যমে এসে বলেছিলেন, এই সশস্ত্র গোষ্ঠীকে মাদুরোই পাঠিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্য নিয়ে, যদিও এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ তিনি দেননি। পরে ট্রাম্পও টিডিএর সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগে অনেক ভেনেজুয়েলানকে দেশে ফেরত পাঠানোর সময় মাদুরোর সংশ্লিষ্টতার কথা বলেছেন, যদিও তিনিও কোনো প্রমাণ দেননি। ভেনেজুয়েলান পুলিশের সাবেক প্রধান সিমোনোভিচ রয়টার্সকে বলেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর কাছে তথ্য ও যোগাযোগের সূত্র দিয়েছেন। এই তথ্যগুলো ভেনেজুয়েলার নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে পাওয়া বলেও জানিয়েছেন। যদিও রয়টার্সকে এমন কারও সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার অনুরোধে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন সিমোনোভিচ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের তৃতীয় আরেকজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ২০০২৪ সালের শেষ অংশে ভেনেজুয়েলার নির্বাসিত সাবেক কর্নেল গুস্তাভো আরোচা, যিনি কিনা মাচাদোর দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ, তিনি এই টিডিএর ব্যাপারে গবেষণার তথ্য মাচাদোর দলকে দিয়েছেন। সঙ্গে ডানপন্থী থিংকট্যাংক দ্য হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের একটা গবেষণাপত্রও দিয়েছেন, যেখানে দাবি করা হয়েছে, এই টিডিএ গ্যাং আসলে মাদুরোরই একটা প্রক্সি।
জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে মাচাদোর দল অন্তত আটবার ওয়াল্টজ, রুবিও, সে সময়ের বিশেষ পরামর্শক মরিসিও ক্লাভের-কারোন, ডেপুটি সেক্রেটারি অব স্টেট ক্রিস্টফার লানডাউয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে বৈঠকগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চারটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে। ক্লাভের-কারোনও রুবিওর মতোই একজন কিউবান-আমেরিকান, যিনিও ভেনেজুয়েলার ওপর মার্কিন মিলিটারি হামলাকে সমর্থন করেন। ভেনেজুয়েলা কিউবার কমিউনিস্ট পদ্ধতিতে সহায়তা করে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ভেনেজুয়েলান বিরোধী দলের দুটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, এই আটটি বৈঠকের তিনটিতে তাঁরা কার্তেল দে লস সোলেসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করার ব্যাপারে তাগিদ দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, মাদুরো কার্তেল দে লস সোলেসেরও নিয়ন্ত্রক। গত জুলাইয়ে এই সংগঠনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সে সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট বলেছে, এই গ্রুপ ত্রেন দে আরাগার সঙ্গে মিলে মাদকদ্রব্যকে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একটা অস্ত্র হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে। যদিও এরও কোনো প্রমাণ তারা হাজির করেনি।
ট্রাম্প প্রশাসনের অনেকে অবশ্য মাদুরোর বিরুদ্ধে যুদ্ধের পক্ষে নন। এই মাসের শুরুতে ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগের পথ বন্ধ করে দেওয়ার আগে মার্কিন দূত রিচার্ড গ্রেনেল বলে এসেছেন, যুদ্ধের বদলে তেল নিয়ে ভেনেজুয়েলার সঙ্গে চুক্তিতে যাওয়া উচিত। প্রসঙ্গত, ভেনেজুয়েলার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মার্কিন কোম্পানি শেভরনের ভেনেজুয়েলায় তেলের উৎপাদন ও বিক্রির লাইসেন্স আছে। এ চুক্তি থেকে আর্থিক লাভ হয় ভেনেজুয়েলার। চুক্তিটিতে বড় অবদান আছে গ্রেনেলের। চুক্তিটি অনুমোদন করেছেন ট্রাম্পও।
তবে কট্টরপন্থী মাচাদোর সঙ্গে ট্রাম্পের মিত্র ব্রাজিলের ডানপন্থী নেতা জইর বলসোনারো এবং আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেইয়ের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। মাচাদো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ক্ষমতায় গেলে তিনি ভেনেজুয়েলার তেলশিল্পকে দ্রুত বেসরকারীকরণ করবেন এবং যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য বিনিয়োগকারীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেবেন।
২০২৩ সাল পর্যন্ত ভেনেজুয়েলায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করা জিমি স্টোরি রয়টার্সকে বলেছেন, ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলের নেতাদের হাতে মাদুরোকে সরানোর পরিকল্পনায় ট্রাম্পের সাহায্য চাওয়া ছাড়া আর কোনো রাস্তা নেই। ‘ওরা প্রতিবাদ করেছে, এ কারণে মারাও পড়েছে। আমরা তাদের (বিরোধীদের) আলোচনায় যেতে বলেছি, তারা আলোচনার টেবিলে গেছে। নির্বাচনে যেতে বলেছি, তারা নির্বাচনে গেছে। নির্বাচনে জিতেছেও। কিন্তু এরপরও সে (মাদুরো) চেয়ার ছাড়বে না। এরপর এটা (যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল) সমর্থন করা ছাড়া আর কী করার আছে তাদের সামনে?’

গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
৩ দিন আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
৪ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
৪ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৯ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

২০২৫ সালের ৬ জানুয়ারি। ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলের প্রধান মারিয়া কোরিনা মাচাদোর দলের চারজন প্রতিনিধি ক্যাপিটল হিল অফিসের সোফায় বসেন। বৈঠক চলছে মাইক ওয়াল্টজের সঙ্গে, যিনি কিছুদিন পরই আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে যাওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক হতে যাচ্ছেন।
২৯ অক্টোবর ২০২৫
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
৪ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
৪ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৯ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

২০২৫ সালের ৬ জানুয়ারি। ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলের প্রধান মারিয়া কোরিনা মাচাদোর দলের চারজন প্রতিনিধি ক্যাপিটল হিল অফিসের সোফায় বসেন। বৈঠক চলছে মাইক ওয়াল্টজের সঙ্গে, যিনি কিছুদিন পরই আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে যাওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক হতে যাচ্ছেন।
২৯ অক্টোবর ২০২৫
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
৩ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
৪ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৯ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

২০২৫ সালের ৬ জানুয়ারি। ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলের প্রধান মারিয়া কোরিনা মাচাদোর দলের চারজন প্রতিনিধি ক্যাপিটল হিল অফিসের সোফায় বসেন। বৈঠক চলছে মাইক ওয়াল্টজের সঙ্গে, যিনি কিছুদিন পরই আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে যাওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক হতে যাচ্ছেন।
২৯ অক্টোবর ২০২৫
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
৩ দিন আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
৪ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৯ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

২০২৫ সালের ৬ জানুয়ারি। ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলের প্রধান মারিয়া কোরিনা মাচাদোর দলের চারজন প্রতিনিধি ক্যাপিটল হিল অফিসের সোফায় বসেন। বৈঠক চলছে মাইক ওয়াল্টজের সঙ্গে, যিনি কিছুদিন পরই আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে যাওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক হতে যাচ্ছেন।
২৯ অক্টোবর ২০২৫
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
৩ দিন আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
৪ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
৪ দিন আগে