জন বোল্টন

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি অভিযান পরিচালনার পর এখনো কিয়েভ দখল কিংবা ভলোদিমির জেলেনস্কিকে হত্যা বা উৎখাত করে সমস্ত ইউক্রেন দখল করতে না পারায় রাশিয়ার যে ব্যর্থতা, তা ভবিষ্যতের রাজনৈতিক ও সামরিক কৌশলবিদদের জন্য একটি যুগান্তকারী গবেষণার বিষয় হয়ে থাকবে। ফলে রাশিয়ার পরবর্তী সিদ্ধান্ত ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মতো আক্রমণাত্মক লড়াইয়ের মাধ্যমে বিশেষত পূর্ব ইউক্রেনে প্রতিদিন কয়েক মাইল করে নতুন নতুন অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া।
এই যুদ্ধের পরবর্তী পর্ব হবে গ্রীষ্ম শেষের সঙ্গে সঙ্গে। এই সবকিছু সামরিক বিষয়ের চেয়ে রাজনৈতিক কৌশলের ওপর বেশি নির্ভর করবে বলে মনে হচ্ছে। নিঃসন্দেহে এই সামরিক পরিস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ ও পরিবর্তনশীল। আসন্ন মাসগুলোতে যুদ্ধের পরিস্থিতি কী হবে, তা অস্পষ্ট। এ নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করাও কঠিন। কারণ অনেক রাজনৈতিক ইস্যু তখন নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে পারে।
হিসাব অনুযায়ী, ন্যাটো ও ইউক্রেনের অন্য সমর্থকদের উচিত কূটনৈতিকভাবে এই পরিস্থিতির সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ করা থেকে মস্কোকে বিরত রাখার উপায় খুঁজে বের করা। এটি অবশ্য তাদের অনেক আগেই ভেবে রাখা উচিত ছিল। এই সংঘাতকে কোনো শর্তসাপেক্ষে সাময়িকভাবে স্থগিত করাটা অন্তত জরুরি। আগামী নব্বই দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য। কারণ, দেশটির প্রতিনিধি পরিষদের নির্বাচন আগামী ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।
রাশিয়া পূর্ব ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চলে এখনো ধীরগতিতে অভিযান চালাচ্ছে। আগামী নব্বই দিন এই পরিস্থিতির নাটকীয় কোনো পরিবর্তন হবে না। এর মধ্যে রাশিয়া ধ্বংসাত্মক কোনো আক্রমণ করবে না। নতুন করে কোনো বিমান হামলা করবে না। এমনকি সীমানা ডিঙিয়ে নতুন কোনো অঞ্চলে অনুপ্রবেশেরও চেষ্টা তারা করবে না। ফুটবলে এই কৌশলকে ‘ছোট ছোট পাসে খেলা’ বলে। একবারে লম্বা পাস দিয়ে আগ্রাসী হওয়ার চেয়ে এভাবে চাপ জিইয়ে রাখাটা ফুটবলে জনপ্রিয় কৌশল। মস্কোর অভিযানে যখন হতাহতের সংখ্যা বেশি হচ্ছিল, তখন অভ্যন্তরীণ জনমতে মিশ্র প্রভাব পড়ছিল। এটি দীর্ঘ মেয়াদে সমরশক্তি ও সেনাক্ষয়ও করে। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাগুলো মস্কোর যুদ্ধ প্রচেষ্টায় চাপ সৃষ্টি করছিল, যদিও এর প্রভাব দৃশ্যমান ছিল না।
এদিকে ইউক্রেন খেরসন পুনরুদ্ধারে এবং বিদ্যমান সীমানায় প্রভাব বিস্তার করে কৃষ্ণসাগরের পাশে ম্যাইকোলেইভে পৌঁছানোর জন্য একটি ‘দক্ষিণ কৌশল’ ঠিক করেছে বলে মনে হচ্ছে। যেন দনবাস থেকে ক্রিমিয়া পর্যন্ত অঞ্চলগুলোতে সরাসরি রুশ অনুপ্রবেশ ঠেকানো যায়। ইউক্রেনের সম্মুখযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ন্যাটোর অন্য সদস্যদের দেওয়া ভারী অস্ত্র উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ব্যবহার করা হচ্ছে, যদিও তা কিয়েভের সামরিক বাহিনী যে পরিমাণে ও যে সময়ের মধ্যে চেয়েছিল, সেই সময়ে আসেনি। ইউক্রেন তার সামরিক হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা ভালোভাবেই চেপে গেছে। কিন্তু জনপ্রিয় পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোয় যে সংখ্যা প্রকাশ পেয়েছে, তার চেয়ে সেই সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত বেসামরিক জনসংখ্যার মধ্যে হতাহতের সংখ্যা এবং সর্বাধিক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অঞ্চলে যে সম্পত্তি ও অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে (যার পরিমাণ খুব একটা উল্লেখ করা হয় না), তাও অজ্ঞাত।
শেষ পর্যন্ত সম্ভবত এই যুদ্ধ শেষ হবে কোনো বোধগম্য উপসংহার ছাড়াই। এই সমাপ্তি আগামী ৯০ দিনের মধ্যে হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। যা হোক, এবার রাশিয়ার রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশের নিষ্পত্তি হতে পারে। এই যুদ্ধের আগে ও যুদ্ধ চলাকালে পশ্চিমারা রাশিয়ার দীর্ঘমেয়াদি সংকল্প, এর লাভ-ক্ষতির বিশ্লেষণকে অবমূল্যায়ন করেছে বারবার। ‘পুতিনের ব্যক্তিগত যুদ্ধ’ আখ্যা দিয়ে এই সংঘাতকে রাশিয়ায় অজনপ্রিয় হিসেবে দেখাতে গিয়ে ভুল করেছেন। ‘ইউক্রেনসহ সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রগুলোকে অবৈধভাবে মাতৃভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল’—এমন অনুভূতি রুশদের মধ্যে কতটা বিস্তৃত ও গভীর, তা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন তাঁরা। ২০০৫ সাল থেকে পুতিনের দৃষ্টিভঙ্গি দেখতে দেখতে মানুষ ক্লান্ত হয়ে যেতে পারে; কিন্তু পুতিন সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনকে শতাব্দীর সবচেয়ে বড় ভূরাজনৈতিক বিপর্যয় হিসেবেই বিশ্বাস করেন।
‘ঐতিহাসিক রাশিয়ার’ ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে মস্কো প্রয়োজনে ক্ষতির শিকার হতেও রাজি। অথচ এই মনোভাবকেই বিদেশি পর্যবেক্ষকেরা অনেক ক্ষতির বিনিময়ে তুলনামূলক কম অঞ্চলের অধিকার আদায় বিবেচনায় ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ’ হিসেবে দেখছে। এটি থেকে সহজেই ব্যাখ্যা করা যায় যে, কেন এই যুদ্ধ মস্কোতে গ্রহণযোগ্য হলেও পশ্চিমে নয়। আমেরিকার গৃহযুদ্ধেও ১৮৬৪-৬৫ সালে উত্তর ভার্জিনিয়ার রবার্ট ই লির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে চালানো অভিযানের জন্য ইউলিসিস এস গ্রান্ট কঠোরভাবে সমালোচিত। এ জন্য কেউ কেউ তো তাঁকে ‘কসাই’ বলে ডাকেন। ঠিক উইলিয়াম টেকুমসেহ শেরম্যান ১৮৬৪ সালে আটলান্টা থেকে সাভানা পর্যন্ত সমুদ্রমুখী অভিযানের জন্য সমালোচিত। লির বিরুদ্ধে গ্রান্টের যুদ্ধ এবং শেরম্যানের ধ্বংসলীলা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের চূড়ান্ত পরাজয়ের দিকে নিয়ে গিয়েছিল। একইভাবে ১৯৩৯-১৯৪০ সালের ফিনল্যান্ডের সঙ্গে ‘শীতকালীন যুদ্ধে’ মস্কোও প্রচুর রক্তপাত করেছিল; এবং বিজয় অর্জন করেছিল।
সুতরাং এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, রাশিয়া তার সংকল্প থেকে পিছু হটেনি। যা হোক, পুতিন এটুকু ঝুঁকি ঠিকই বুঝতে পারছেন যে, ইউক্রেনের হাতে ন্যাটোর কাছ থেকে পর্যাপ্ত অত্যাধুনিক অস্ত্র ও অন্যান্য যুদ্ধসামগ্রী পৌঁছালে রুশ বাহিনীর এত দিনের অর্জন বিপন্ন হবে। তিনি এ-ও জানেন, ন্যাটোর নেতারা ইউক্রেনের প্রতি ইউরোপের সমর্থনের কথা যেমনটা বলেন তেমনটা নয়, বিশেষ করে ফ্রান্স ও জার্মানির ক্ষেত্রে। এই যুদ্ধের সময় প্রেসিডেন্ট বাইডেন যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা তাঁর নিজের করা গভীর সংকল্পের সঙ্গে মেলে না। এর মধ্যেই ইউক্রেনের রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে মতানৈক্যের বিভিন্ন লক্ষণ এখন দেখা যাচ্ছে, যা রোধ করা দূরের কথা, বরং দিনদিন আরও প্রকাশ্যে আসছে।
এখন রাশিয়াকে একটি কঠিন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পুতিন ইউক্রেনের আরও কিছু অঞ্চল পুনরুদ্ধারের সুযোগ হারাতে চাইবেন না, বিশেষত যেহেতু তিনি তাঁর প্রাথমিক লক্ষ্যগুলো থেকে এখনো অনেক দূরে আছেন। এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, এখন পিছু হটে রুশ বাহিনীর সঙ্গে তিনি ধরা পড়তে চান না। কারণ, এ ধরনের যেকোনো কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকেই এখন দুর্বলতার লক্ষণ হিসেবে ধরা হবে। পশ্চিমাদের মধ্যে যাঁরা মনে করেন, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী মানসিকভাবে ও বৈষয়িকভাবে যে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, সে সম্পর্কে পুতিন ভালো করে জানেন না, তাঁরা বোকামো করছেন। কারণ পুতিন ভালো করেই জানেন, এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতে তাঁর একটি মোক্ষম সুযোগ দরকার এবং সেই সুযোগ নিজের নির্ধারিত শর্তেই তাঁকে পেতে হবে।
এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার সেরা বিকল্প হতে পারে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে, ‘স্পষ্ট মিথ্যা’ হলেও ‘ক্রেমলিন লক্ষ্য অর্জন করেছে’ বলে ঘোষণা দেওয়া। এর পরিপ্রেক্ষিতেই পুতিনকে আক্রমণাত্মক সামরিক অভিযান বন্ধের নির্দেশ দিয়ে ইউক্রেনের কাছেও একই দাবি তুলতে হবে। একই সঙ্গে উভয় বাহিনীর মধ্যে একটি নিয়ন্ত্রণরেখা নির্ধারণের লক্ষ্যে যুদ্ধবিরতির আলোচনার ডাক দিতে হবে তাঁকে। যদিও এসব করতে পুতিন নাখোশ হবেন। কিন্তু তিনি ভালো করেই জানেন যে, এই মুহূর্তে যুদ্ধবিরতি রাশিয়াকে তার সামরিক বাহিনী পুনর্গঠন করতে, অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করতে এবং সম্ভবত বেলারুশ থেকে মধ্য এশিয়া পর্যন্ত রুশ সাম্রাজ্যের দুর্বল অংশগুলোকে পুনরায় আয়ত্তে নিতে কিছুটা সময় দেবে।
মস্কো এখন হিসোব কষবে কীভাবে কিয়েভকে অতর্কিতে করায়ত্ত করা যায়। স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছ, এখনো ইউক্রেনের ২৫ শতাংশ ভূখণ্ড রাশিয়ার দখলে থাকা অবস্থায় জেলেনস্কি এভাবে সংঘাত থামানোর বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করবেন। কারণ তিনি ভালো করেই জানেন, এখন ‘যুদ্ধবিরতি’ মানে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে নতুন সীমান্ত নির্ধারণ। দুর্ভাগ্যবশত, জেলেনস্কি স্নেক আইল্যান্ড নিয়ে সংঘাতের সময়কার মতো প্রতিক্রিয়া দেখানোর অবস্থানে নেই।
ন্যাটোর সঙ্গে আগাম কূটনৈতিক কৌশল নির্ধারণ না করায় এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান সদস্যদের রাজনৈতিক দুর্বলতার কারণে জেলেনস্কি যে এখন রাজনৈতিকভাবে ঝুঁকিতে আছেন, পুতিন তা জানেন। এবং জেলেনস্কির এই ঝুঁকি কাজে লাগাতেও পুতিন প্রস্তুত। এদিকে শীত আসছে। জার্মানিসহ ইউরোপের বেশির ভাগ দেশ জ্বালানি সরবরাহ নিয়ে রাশিয়ার সুবিধাজনক অবস্থানের কারণে উদ্বিগ্ন। আর সত্যি কথা হচ্ছে, পশ্চিম ইউরোপের অনেক দেশ এরই মধ্যে এই যুদ্ধ নিয়ে ক্ষুব্ধ। ধারাবাহিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা, মুদ্রাস্ফীতি বা মন্দা বা উভয়ের কারণে তাদের ক্ষোভ বাড়ছে। তাদের মনে হচ্ছে মাত্র ছয়-নয় মাসের মধ্যে এটি এক ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ হয়ে উঠেছে, যা শেষ হওয়া দরকার। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তার কথা ঘোষণা করে, রাশিয়ার সঙ্গে ২৪ ফেব্রুয়ারির আগের সম্পর্কে ফিরে যেতে তারা ‘যুদ্ধবিরতির’ সুযোগকেই ব্যবহার করবে।
ইউক্রেন ও ন্যাটোর মধ্যে এখন এই রুশ ‘চক্রান্তের’ বিরুদ্ধে কূটনৈতিক চুক্তির প্রয়োজন। যুদ্ধের ময়দানে যা-ই ঘটুক না কেন, এই উদ্যোগ শুরু হতে পারে। আগামী সপ্তাহগুলোতে উল্লেখযোগ্য আরও সামরিক লাভের সম্ভাবনা কমার কারণে রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার প্রবণতা বাড়বে।
পশ্চিমাদের পাল্টা কৌশলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হবে এটা একবারে স্পষ্ট করে দেওয়া যে, ইউক্রেনের ভূখণ্ড থেকে রুশ বাহিনী সম্পূর্ণ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত রাশিয়ার বিরুদ্ধে সমস্ত নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। এখন রুশদের প্রত্যাশার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এই নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার, যাতে অর্থনীতি ও সামরিক বাহিনীকে তারা পুনরুজ্জীবিত করতে পারে। কারণ, শত্রুতা তো চাইলে যেকোনো সময় শুরু করা যাবে। ইউক্রেনীয় সার্বভৌমত্ব পুরোপুরি পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত এসব নিষেধাজ্ঞা কার্যকরভাবে স্থায়ী বলে মনে হলে পুতিন প্রথমেই বাধার মুখে পড়বেন। ক্ষতিপূরণ, যুদ্ধবন্দী ও দায়বদ্ধতাসহ অন্য অনেক বিষয়ও সমাধান করা প্রয়োজন। তবে মূল বিষয় হলো রাশিয়াকে একতরফা ‘যুদ্ধবিরতির’ মাধ্যমে তার দখল করা অঞ্চলগুলো ধরে রাখতে না দেওয়া।
ফ্রান্স ও জার্মানি কি এমন পাল্টা কৌশলে রাজি হবে? বাইডেন কি নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের আগে এতটাই দুর্বল হবেন যে, তিনি ৮ নভেম্বর দলের জয়ের সম্ভাবনা বাড়াতে একটি কূটনৈতিক ‘জয়’ করার সুযোগ পেয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বেন? পশ্চিমকে বিভক্ত করে ইউক্রেনকে বিপদে ফেলতে রুশ প্রচেষ্টা ঠেকাতে যে জোরদার রাজনৈতিক অবস্থানের প্রয়োজন, তার জন্য ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে নিবিড় ঐক্যের দরকার। সেই ঐক্য অর্জনে ন্যাটোকেই যথেষ্ট ভার বইতে হবে। এখন সময় তা শুরু করার।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের লেখাটি আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য অনুবাদ করেছেন তুষার পাল

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি অভিযান পরিচালনার পর এখনো কিয়েভ দখল কিংবা ভলোদিমির জেলেনস্কিকে হত্যা বা উৎখাত করে সমস্ত ইউক্রেন দখল করতে না পারায় রাশিয়ার যে ব্যর্থতা, তা ভবিষ্যতের রাজনৈতিক ও সামরিক কৌশলবিদদের জন্য একটি যুগান্তকারী গবেষণার বিষয় হয়ে থাকবে। ফলে রাশিয়ার পরবর্তী সিদ্ধান্ত ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মতো আক্রমণাত্মক লড়াইয়ের মাধ্যমে বিশেষত পূর্ব ইউক্রেনে প্রতিদিন কয়েক মাইল করে নতুন নতুন অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া।
এই যুদ্ধের পরবর্তী পর্ব হবে গ্রীষ্ম শেষের সঙ্গে সঙ্গে। এই সবকিছু সামরিক বিষয়ের চেয়ে রাজনৈতিক কৌশলের ওপর বেশি নির্ভর করবে বলে মনে হচ্ছে। নিঃসন্দেহে এই সামরিক পরিস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ ও পরিবর্তনশীল। আসন্ন মাসগুলোতে যুদ্ধের পরিস্থিতি কী হবে, তা অস্পষ্ট। এ নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করাও কঠিন। কারণ অনেক রাজনৈতিক ইস্যু তখন নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে পারে।
হিসাব অনুযায়ী, ন্যাটো ও ইউক্রেনের অন্য সমর্থকদের উচিত কূটনৈতিকভাবে এই পরিস্থিতির সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ করা থেকে মস্কোকে বিরত রাখার উপায় খুঁজে বের করা। এটি অবশ্য তাদের অনেক আগেই ভেবে রাখা উচিত ছিল। এই সংঘাতকে কোনো শর্তসাপেক্ষে সাময়িকভাবে স্থগিত করাটা অন্তত জরুরি। আগামী নব্বই দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য। কারণ, দেশটির প্রতিনিধি পরিষদের নির্বাচন আগামী ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।
রাশিয়া পূর্ব ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চলে এখনো ধীরগতিতে অভিযান চালাচ্ছে। আগামী নব্বই দিন এই পরিস্থিতির নাটকীয় কোনো পরিবর্তন হবে না। এর মধ্যে রাশিয়া ধ্বংসাত্মক কোনো আক্রমণ করবে না। নতুন করে কোনো বিমান হামলা করবে না। এমনকি সীমানা ডিঙিয়ে নতুন কোনো অঞ্চলে অনুপ্রবেশেরও চেষ্টা তারা করবে না। ফুটবলে এই কৌশলকে ‘ছোট ছোট পাসে খেলা’ বলে। একবারে লম্বা পাস দিয়ে আগ্রাসী হওয়ার চেয়ে এভাবে চাপ জিইয়ে রাখাটা ফুটবলে জনপ্রিয় কৌশল। মস্কোর অভিযানে যখন হতাহতের সংখ্যা বেশি হচ্ছিল, তখন অভ্যন্তরীণ জনমতে মিশ্র প্রভাব পড়ছিল। এটি দীর্ঘ মেয়াদে সমরশক্তি ও সেনাক্ষয়ও করে। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাগুলো মস্কোর যুদ্ধ প্রচেষ্টায় চাপ সৃষ্টি করছিল, যদিও এর প্রভাব দৃশ্যমান ছিল না।
এদিকে ইউক্রেন খেরসন পুনরুদ্ধারে এবং বিদ্যমান সীমানায় প্রভাব বিস্তার করে কৃষ্ণসাগরের পাশে ম্যাইকোলেইভে পৌঁছানোর জন্য একটি ‘দক্ষিণ কৌশল’ ঠিক করেছে বলে মনে হচ্ছে। যেন দনবাস থেকে ক্রিমিয়া পর্যন্ত অঞ্চলগুলোতে সরাসরি রুশ অনুপ্রবেশ ঠেকানো যায়। ইউক্রেনের সম্মুখযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ন্যাটোর অন্য সদস্যদের দেওয়া ভারী অস্ত্র উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ব্যবহার করা হচ্ছে, যদিও তা কিয়েভের সামরিক বাহিনী যে পরিমাণে ও যে সময়ের মধ্যে চেয়েছিল, সেই সময়ে আসেনি। ইউক্রেন তার সামরিক হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা ভালোভাবেই চেপে গেছে। কিন্তু জনপ্রিয় পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোয় যে সংখ্যা প্রকাশ পেয়েছে, তার চেয়ে সেই সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত বেসামরিক জনসংখ্যার মধ্যে হতাহতের সংখ্যা এবং সর্বাধিক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অঞ্চলে যে সম্পত্তি ও অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে (যার পরিমাণ খুব একটা উল্লেখ করা হয় না), তাও অজ্ঞাত।
শেষ পর্যন্ত সম্ভবত এই যুদ্ধ শেষ হবে কোনো বোধগম্য উপসংহার ছাড়াই। এই সমাপ্তি আগামী ৯০ দিনের মধ্যে হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। যা হোক, এবার রাশিয়ার রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশের নিষ্পত্তি হতে পারে। এই যুদ্ধের আগে ও যুদ্ধ চলাকালে পশ্চিমারা রাশিয়ার দীর্ঘমেয়াদি সংকল্প, এর লাভ-ক্ষতির বিশ্লেষণকে অবমূল্যায়ন করেছে বারবার। ‘পুতিনের ব্যক্তিগত যুদ্ধ’ আখ্যা দিয়ে এই সংঘাতকে রাশিয়ায় অজনপ্রিয় হিসেবে দেখাতে গিয়ে ভুল করেছেন। ‘ইউক্রেনসহ সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রগুলোকে অবৈধভাবে মাতৃভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল’—এমন অনুভূতি রুশদের মধ্যে কতটা বিস্তৃত ও গভীর, তা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন তাঁরা। ২০০৫ সাল থেকে পুতিনের দৃষ্টিভঙ্গি দেখতে দেখতে মানুষ ক্লান্ত হয়ে যেতে পারে; কিন্তু পুতিন সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনকে শতাব্দীর সবচেয়ে বড় ভূরাজনৈতিক বিপর্যয় হিসেবেই বিশ্বাস করেন।
‘ঐতিহাসিক রাশিয়ার’ ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে মস্কো প্রয়োজনে ক্ষতির শিকার হতেও রাজি। অথচ এই মনোভাবকেই বিদেশি পর্যবেক্ষকেরা অনেক ক্ষতির বিনিময়ে তুলনামূলক কম অঞ্চলের অধিকার আদায় বিবেচনায় ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ’ হিসেবে দেখছে। এটি থেকে সহজেই ব্যাখ্যা করা যায় যে, কেন এই যুদ্ধ মস্কোতে গ্রহণযোগ্য হলেও পশ্চিমে নয়। আমেরিকার গৃহযুদ্ধেও ১৮৬৪-৬৫ সালে উত্তর ভার্জিনিয়ার রবার্ট ই লির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে চালানো অভিযানের জন্য ইউলিসিস এস গ্রান্ট কঠোরভাবে সমালোচিত। এ জন্য কেউ কেউ তো তাঁকে ‘কসাই’ বলে ডাকেন। ঠিক উইলিয়াম টেকুমসেহ শেরম্যান ১৮৬৪ সালে আটলান্টা থেকে সাভানা পর্যন্ত সমুদ্রমুখী অভিযানের জন্য সমালোচিত। লির বিরুদ্ধে গ্রান্টের যুদ্ধ এবং শেরম্যানের ধ্বংসলীলা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের চূড়ান্ত পরাজয়ের দিকে নিয়ে গিয়েছিল। একইভাবে ১৯৩৯-১৯৪০ সালের ফিনল্যান্ডের সঙ্গে ‘শীতকালীন যুদ্ধে’ মস্কোও প্রচুর রক্তপাত করেছিল; এবং বিজয় অর্জন করেছিল।
সুতরাং এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, রাশিয়া তার সংকল্প থেকে পিছু হটেনি। যা হোক, পুতিন এটুকু ঝুঁকি ঠিকই বুঝতে পারছেন যে, ইউক্রেনের হাতে ন্যাটোর কাছ থেকে পর্যাপ্ত অত্যাধুনিক অস্ত্র ও অন্যান্য যুদ্ধসামগ্রী পৌঁছালে রুশ বাহিনীর এত দিনের অর্জন বিপন্ন হবে। তিনি এ-ও জানেন, ন্যাটোর নেতারা ইউক্রেনের প্রতি ইউরোপের সমর্থনের কথা যেমনটা বলেন তেমনটা নয়, বিশেষ করে ফ্রান্স ও জার্মানির ক্ষেত্রে। এই যুদ্ধের সময় প্রেসিডেন্ট বাইডেন যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা তাঁর নিজের করা গভীর সংকল্পের সঙ্গে মেলে না। এর মধ্যেই ইউক্রেনের রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে মতানৈক্যের বিভিন্ন লক্ষণ এখন দেখা যাচ্ছে, যা রোধ করা দূরের কথা, বরং দিনদিন আরও প্রকাশ্যে আসছে।
এখন রাশিয়াকে একটি কঠিন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পুতিন ইউক্রেনের আরও কিছু অঞ্চল পুনরুদ্ধারের সুযোগ হারাতে চাইবেন না, বিশেষত যেহেতু তিনি তাঁর প্রাথমিক লক্ষ্যগুলো থেকে এখনো অনেক দূরে আছেন। এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, এখন পিছু হটে রুশ বাহিনীর সঙ্গে তিনি ধরা পড়তে চান না। কারণ, এ ধরনের যেকোনো কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকেই এখন দুর্বলতার লক্ষণ হিসেবে ধরা হবে। পশ্চিমাদের মধ্যে যাঁরা মনে করেন, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী মানসিকভাবে ও বৈষয়িকভাবে যে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, সে সম্পর্কে পুতিন ভালো করে জানেন না, তাঁরা বোকামো করছেন। কারণ পুতিন ভালো করেই জানেন, এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতে তাঁর একটি মোক্ষম সুযোগ দরকার এবং সেই সুযোগ নিজের নির্ধারিত শর্তেই তাঁকে পেতে হবে।
এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার সেরা বিকল্প হতে পারে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে, ‘স্পষ্ট মিথ্যা’ হলেও ‘ক্রেমলিন লক্ষ্য অর্জন করেছে’ বলে ঘোষণা দেওয়া। এর পরিপ্রেক্ষিতেই পুতিনকে আক্রমণাত্মক সামরিক অভিযান বন্ধের নির্দেশ দিয়ে ইউক্রেনের কাছেও একই দাবি তুলতে হবে। একই সঙ্গে উভয় বাহিনীর মধ্যে একটি নিয়ন্ত্রণরেখা নির্ধারণের লক্ষ্যে যুদ্ধবিরতির আলোচনার ডাক দিতে হবে তাঁকে। যদিও এসব করতে পুতিন নাখোশ হবেন। কিন্তু তিনি ভালো করেই জানেন যে, এই মুহূর্তে যুদ্ধবিরতি রাশিয়াকে তার সামরিক বাহিনী পুনর্গঠন করতে, অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করতে এবং সম্ভবত বেলারুশ থেকে মধ্য এশিয়া পর্যন্ত রুশ সাম্রাজ্যের দুর্বল অংশগুলোকে পুনরায় আয়ত্তে নিতে কিছুটা সময় দেবে।
মস্কো এখন হিসোব কষবে কীভাবে কিয়েভকে অতর্কিতে করায়ত্ত করা যায়। স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছ, এখনো ইউক্রেনের ২৫ শতাংশ ভূখণ্ড রাশিয়ার দখলে থাকা অবস্থায় জেলেনস্কি এভাবে সংঘাত থামানোর বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করবেন। কারণ তিনি ভালো করেই জানেন, এখন ‘যুদ্ধবিরতি’ মানে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে নতুন সীমান্ত নির্ধারণ। দুর্ভাগ্যবশত, জেলেনস্কি স্নেক আইল্যান্ড নিয়ে সংঘাতের সময়কার মতো প্রতিক্রিয়া দেখানোর অবস্থানে নেই।
ন্যাটোর সঙ্গে আগাম কূটনৈতিক কৌশল নির্ধারণ না করায় এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান সদস্যদের রাজনৈতিক দুর্বলতার কারণে জেলেনস্কি যে এখন রাজনৈতিকভাবে ঝুঁকিতে আছেন, পুতিন তা জানেন। এবং জেলেনস্কির এই ঝুঁকি কাজে লাগাতেও পুতিন প্রস্তুত। এদিকে শীত আসছে। জার্মানিসহ ইউরোপের বেশির ভাগ দেশ জ্বালানি সরবরাহ নিয়ে রাশিয়ার সুবিধাজনক অবস্থানের কারণে উদ্বিগ্ন। আর সত্যি কথা হচ্ছে, পশ্চিম ইউরোপের অনেক দেশ এরই মধ্যে এই যুদ্ধ নিয়ে ক্ষুব্ধ। ধারাবাহিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা, মুদ্রাস্ফীতি বা মন্দা বা উভয়ের কারণে তাদের ক্ষোভ বাড়ছে। তাদের মনে হচ্ছে মাত্র ছয়-নয় মাসের মধ্যে এটি এক ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ হয়ে উঠেছে, যা শেষ হওয়া দরকার। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তার কথা ঘোষণা করে, রাশিয়ার সঙ্গে ২৪ ফেব্রুয়ারির আগের সম্পর্কে ফিরে যেতে তারা ‘যুদ্ধবিরতির’ সুযোগকেই ব্যবহার করবে।
ইউক্রেন ও ন্যাটোর মধ্যে এখন এই রুশ ‘চক্রান্তের’ বিরুদ্ধে কূটনৈতিক চুক্তির প্রয়োজন। যুদ্ধের ময়দানে যা-ই ঘটুক না কেন, এই উদ্যোগ শুরু হতে পারে। আগামী সপ্তাহগুলোতে উল্লেখযোগ্য আরও সামরিক লাভের সম্ভাবনা কমার কারণে রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার প্রবণতা বাড়বে।
পশ্চিমাদের পাল্টা কৌশলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হবে এটা একবারে স্পষ্ট করে দেওয়া যে, ইউক্রেনের ভূখণ্ড থেকে রুশ বাহিনী সম্পূর্ণ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত রাশিয়ার বিরুদ্ধে সমস্ত নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। এখন রুশদের প্রত্যাশার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এই নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার, যাতে অর্থনীতি ও সামরিক বাহিনীকে তারা পুনরুজ্জীবিত করতে পারে। কারণ, শত্রুতা তো চাইলে যেকোনো সময় শুরু করা যাবে। ইউক্রেনীয় সার্বভৌমত্ব পুরোপুরি পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত এসব নিষেধাজ্ঞা কার্যকরভাবে স্থায়ী বলে মনে হলে পুতিন প্রথমেই বাধার মুখে পড়বেন। ক্ষতিপূরণ, যুদ্ধবন্দী ও দায়বদ্ধতাসহ অন্য অনেক বিষয়ও সমাধান করা প্রয়োজন। তবে মূল বিষয় হলো রাশিয়াকে একতরফা ‘যুদ্ধবিরতির’ মাধ্যমে তার দখল করা অঞ্চলগুলো ধরে রাখতে না দেওয়া।
ফ্রান্স ও জার্মানি কি এমন পাল্টা কৌশলে রাজি হবে? বাইডেন কি নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের আগে এতটাই দুর্বল হবেন যে, তিনি ৮ নভেম্বর দলের জয়ের সম্ভাবনা বাড়াতে একটি কূটনৈতিক ‘জয়’ করার সুযোগ পেয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বেন? পশ্চিমকে বিভক্ত করে ইউক্রেনকে বিপদে ফেলতে রুশ প্রচেষ্টা ঠেকাতে যে জোরদার রাজনৈতিক অবস্থানের প্রয়োজন, তার জন্য ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে নিবিড় ঐক্যের দরকার। সেই ঐক্য অর্জনে ন্যাটোকেই যথেষ্ট ভার বইতে হবে। এখন সময় তা শুরু করার।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের লেখাটি আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য অনুবাদ করেছেন তুষার পাল

গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
১ দিন আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
২ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
২ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

ইউক্রেনে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যকার এই সংকট এখন গোটা বিশ্বের সংকটে পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফে নিবন্ধ লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন। আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য সেই লেখা বাংলায় অনুবাদ
৩১ আগস্ট ২০২২
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
২ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
২ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

ইউক্রেনে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যকার এই সংকট এখন গোটা বিশ্বের সংকটে পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফে নিবন্ধ লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন। আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য সেই লেখা বাংলায় অনুবাদ
৩১ আগস্ট ২০২২
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
১ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
২ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

ইউক্রেনে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যকার এই সংকট এখন গোটা বিশ্বের সংকটে পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফে নিবন্ধ লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন। আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য সেই লেখা বাংলায় অনুবাদ
৩১ আগস্ট ২০২২
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
১ দিন আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
২ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

ইউক্রেনে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যকার এই সংকট এখন গোটা বিশ্বের সংকটে পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফে নিবন্ধ লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন। আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য সেই লেখা বাংলায় অনুবাদ
৩১ আগস্ট ২০২২
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
১ দিন আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
২ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
২ দিন আগে