সেলিম জাহান, অর্থনীতিবিদ

সংখ্যার প্রতি আমার আগ্রহ এবং অনুরাগ সেই ছোটবেলা থেকেই। অঙ্ক আমি ভালোবাসতাম। সেই আসক্তি আর ভালোবাসা বাড়িয়ে দিলেন বাবার বন্ধু ও বরিশাল বিএম কলেজে বাবার সহকর্মী অঙ্কশাস্ত্রের অধ্যাপক, অঙ্কের জাদুকর সুখেন্দু সোম। আমার বয়স তখন ১০-১২ বছর হবে। আমাদের বাড়িতে এলেই সুখেন্দুবাবু অঙ্ক আর আমাকে নিয়ে পড়তেন। অঙ্কের নানান খেলা আর ধাঁধা শেখাতেন।
এই যেমন প্রমাণ করে দিতেন যে, ১ আর ২ সমান কিংবা ৯-এর নামতা দিয়ে দেখিয়ে দিতেন যে প্রতিটি সংখ্যার গুণের ফলাফল যোগ করলে ৯ই হবে। এই যেমন ৯×৪ = ৩৬। ৩ আর ৬ যোগ করলে ৯ হয়। কিংবা ৯×৮ = ৭২। ৭ আর ২ যোগ করলে ৯ হয়। আমি হতবাক হয়ে যেতাম দশমবর্ষীয় একটি বালকের জন্য এ এক বিস্ময়! কবুল করি, বহু বছর বাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতাকালে ওইসব ধাঁধা দেখিয়ে আমার শিক্ষার্থীদের আমি হতবাক করেছি।
বিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে কলেজজীবনে অধ্যাপক সুখেন্দু সোমকে আমি আমার অঙ্কের শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলাম। ঝড়ের বেগে অঙ্ক করাতেন, সংখ্যারা যেন দৌড়ে চলত কালো বোর্ডের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্তে—আমরা টুকবার আগেই তারা উধাও হয়ে যেত। ‘অঙ্ক কষানো’ কথাটি তাঁর ক্ষেত্রে সর্বতোভাবে প্রযোজ্য—ঘোড়াকে যেমন চাবুক কষানো হয়, তেমনি অঙ্ককে তিনি কষাতেন তাঁর জ্ঞানের চাবুকে।
সংখ্যাতত্ত্বের সঙ্গে আমার পরিচয় বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে আসা, অর্থনীতিতে অনার্স—সুতরাং খুব স্বাভাবিকভাবেই আমার ঐচ্ছিক বিষয় দুটো হলো অঙ্ক ও সংখ্যাতত্ত্ব। শহীদ মিনারের উল্টো দিকে অ্যানেক্স ভবনে আমাদের ক্লাস হয়—কলাভবনে অর্থনীতির ক্লাস করেই ছুটতাম অঙ্ক আর পরিসংখ্যানের ক্লাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, শিববাড়ীকে কাটিয়ে।
সংখ্যাতত্ত্বের ক্লাসে শিক্ষক হিসেবে পেয়েছি বিভাগীয় প্রধান শহীদ অধ্যাপক মুনীরুজ্জামান, অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা, অধ্যাপক মাহবুব আহমেদ ও অধ্যাপক আবদুল্লাহকে—অসাধারণ সব শিক্ষক। খুব নমিত হয়ে বলি, ১৯৭২ সালে পুরো কলা ও বাণিজ্য অনুষদে একমাত্র আমিই অঙ্ক ও সংখ্যাতত্ত্বে ৮৯ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে ডিস্টিংশন পেয়েছিলাম। এমএ ক্লাসেও আমার একটি বিষয় ছিল অঙ্কমিতি (Econometrics)।
সত্তরের দশকে উচ্চশিক্ষার্থে কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে গেলে সংখ্যাতত্ত্বের সঙ্গে আমার সখ্য আরও নিবিড় হয়ে ওঠে। আমার গবেষণার ও অভিসন্দর্ভের জন্য আমি যে বিষয় ও কাঠামো বেছে নিই, সেটা ছিল সম্পূর্ণভাবেই অঙ্কমিতিভিত্তিক একটি সামষ্টিক মডেল। প্রায় তিন বছর ধরে সংখ্যার সঙ্গে আমার ছিল নিত্য বসবাস। মডেল, উপাত্ত, কম্পিউটার আমার জীবনের বিরাট অংশ হয়ে ওঠে।
আশির দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষকতার কালে গবেষণাকাজের জন্য সংখ্যা, উপাত্ত পরিসংখ্যানের সঙ্গে আমার নিবিড়তা আরও গভীর হয়। এ প্রসঙ্গে দুটো কথা বলা প্রয়োজন। প্রথমত, সে সময়টাতে প্রায়ই আমি নিউমার্কেটের বইয়ের দোকান মহীউদ্দীন ও সন্সে যেতাম। আমার কাজই ছিল বাংলাদেশের নানান উপাত্ত ও পরিসংখ্যানের জন্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর নানান প্রকাশনা কেনা। সেসব প্রকাশনা ঘাঁটতে ঘাঁটতে উপাত্ত ও নানান সংখ্যাকে আমি চিনতে শুরু করি, তাদের নানান মাত্রিকতাও আমার সামনে পরিস্ফুট হয়ে ওঠে। দ্বিতীয়ত, আশির দশকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও আমি জড়িয়ে পড়ি। তাদের নানান পর্ষদে আমি উপদেষ্টা ও সদস্য হই। আশির দশকের শেষের দিকে বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের উপদেষ্টা নিযুক্ত হলে ব্যুরোর সঙ্গে আমার যোগাযোগ আরও নিবিড় হয়।
সে সময়কালে তাত্ত্বিক গবেষণার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের নানান উন্নয়ন সমস্যার প্রায়োগিক গবেষণার দিকেও ঝুঁকে পড়ি। ফলে দেশি-বিদেশি নানান গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমার সংযোগ গড়ে ওঠে। গবেষণার কাজে গবেষণা দল নিয়ে বাংলাদেশের নানান অঞ্চলে আমাকে যেতে হয়—হাতেনাতে, একেবারে মাঠপর্যায়ের সমীক্ষা-তথ্য থেকে গড়ে নিতে হয় বিশ্বাসযোগ্য উপাত্ত এ পরিসংখ্যান। নতুন করে পরিচয় ঘটে সংখ্যা ও উপাত্তের বাস্তবতা।
তবে প্রায়োগিক গবেষণার খোলনলচে আমাকে শিখিয়েছিলেন আমার প্রয়াত শিক্ষক ও সহকর্মী অধ্যাপক মুশাররফ হোসেন। গ্রামীণ বাংলার দারিদ্র্য, পুষ্টি বিষয়ে তাঁর অগাধ জ্ঞানে যেমন বিমোহিত হতাম, তেমনি সেসব বিষয়ে নানান পরিসংখ্যানের ব্যাপারে অনুভবের ক্ষমতায় হতবাক হতাম। সংখ্যা ও উপাত্তেরা যেন তাঁর সঙ্গে কথা কইতো। আঙুল দিয়ে দিয়ে তিনি আমাকে উপাত্তের ভাষা শেখাতেন, সেসব সংখ্যা কী বলছে, তার দিকে আমার মনোযোগ আকর্ষণ করতেন। তাঁর কাছ থেকেই আমি সংখ্যাকে ব্যাখ্যা করতে শিখেছি, উপসংহার টানতে শিখেছি এবং সংখ্যাকে নীতিমালার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে শিখেছি।
সংখ্যার সঙ্গে আমার সখ্য চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেল, যখন নব্বইয়ের দশকে আমি জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন দপ্তরে যোগদান করি। ড. মাহবুবুল হকের নেতৃত্বে গঠিত লেখক ও গবেষক দলের সদস্য হিসেবে প্রতিবেদনের জন্য তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ, উপাত্তকাঠামো গঠন ও নীতিমালা প্রণয়নই ছিল আমার কাজ। সে কাজের অংশ হিসেবে প্রায় ১৮৮ দেশের জন্য উপাত্ত সারণি গঠন ও মানব উন্নয়ন সূচকের মতো একটি সমন্বিত সূচক তৈরিতে আমরা ব্যাপৃত ছিলাম।
এসব কাজ করতে গিয়ে আমি ক্রমান্বয়ে বুঝতে পারছিলাম যে পরিসংখ্যান ও উপাত্ত ব্যাপারটি শুধু তাত্ত্বিক বা প্রায়োগিক ব্যাপার নয়, এটি একটি উচ্চস্তরের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক ব্যাপারও। মানব উন্নয়ন প্রতিবেদনের উপাত্তগুলোকে নানান দেশ রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত থেকে দেখত। তারা নানান সংখ্যাকে পরিবর্তনের জন্য চাপ দিত, যাতে তাদের চালচিত্র আরও ভালো দেখা যায়। এ ব্যাপারে তাদের মূল লক্ষ্য ছিল মানব উন্নয়ন সূচক এবং সে সূচক মাত্রায় তাদের অবস্থান উন্নীত করার জন্য দেশগুলো তাদের পরিসংখ্যান কৃত্রিমভাবে স্ফীত করত। এসব ক্ষেত্রে দেশগুলোর স্পর্শকাতরতা ছিল উচ্চাঙ্গের।
প্রায় ১৯০ দেশের এতসব কাণ্ডকীর্তি ধারণ করা বড় একটা সহজ কাজ ছিল না। এসব ক্ষেত্রে ড. মাহবুবুল হককে আমার সংখ্যার জাদুকর বলে মনে হতো। তাঁর সামনে উপস্থাপিত তাড়া তাড়া পরিসংখ্যান ও উপাত্তমালার দিকে তিনি স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতেন। তারপর হঠাৎ করে একটি উপাত্তের ওপর আঙুল রেখে তিনি বলতেন, ‘এ সংখ্যাটি ঠিক নয়’, কিংবা ‘এ উপাত্তটি রাজনৈতিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে’। আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে তিনি সর্বদাই সঠিক ছিলেন।
অত্যন্ত নমিত হয়ে বলি, মাহবুবুল হকের এ নৈপুণ্যটি আমি কিছুটা হলেও আয়ত্ত করতে পেরেছিলাম। আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে সংখ্যার প্রতি ভালেবাসা ও অঙ্গীকার এবং বহুকাল ধরে উপাত্ত নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করলে এ-জাতীয় দক্ষতা অর্জন করা যায়। তাই পরবর্তী সময়ে জাতিসংঘের মানব উন্নয়নের কর্ণধার হয়ে এ কাজটি আমি করতাম। কখনো-সখনো আমার সহকর্মীরা আমাকে পরীক্ষা করার জন্য বহু সংখ্যার মাঝে দু-একটি ভুল উপাত্ত ঢুকিয়ে দিতেন। কিন্তু আমি সেই বিভ্রান্তকারী উপাত্তগুলো চিহ্নিত করতে পারতাম। আমার সহকর্মীরা অবাক হতেন।
সংখ্যার ক্ষেত্রে দুই রকমের শিক্ষা আমি পেয়েছিলাম অধ্যাপক অমর্ত্য সেন এবং মাহবুবুল হকের কাছ থেকে। অধ্যাপক সেন উপাত্তের তাত্ত্বিক শুদ্ধতার ওপরে গুরুত্ব দিতেন আর মাহবুবুল হক জোর দিতেন উপাত্তের প্রায়োগিক ব্যবহারের দিকে। দুটো দিকই গুরুত্বপূর্ণ এবং দুটোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষাই বড় কথা।
পেশাগত জীবন থেকে অবসর গ্রহণের পরেও সংখ্যার সঙ্গে আমার সখ্য মোটেও কমেনি। গত পাঁচ বছরে তিনটি জাতীয় মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন রচনা করেছি—নেপাল, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং বাংলাদেশের জন্য। দারিদ্র্যবিমোচন কর্মসূচিপত্র রচনা করেছি মোজাম্বিক ও সোমালিয়ার জন্য। ১৫ বছরের জন্য প্রেক্ষিত পরিকল্পনা তৈরি করেছি সেইন্ট কিটস ও নেভিসের জন্য।
এসব কর্মকাণ্ডে পরিচিত হয়েছি বিভিন্ন পরিসংখ্যান কাঠামোর সঙ্গে—সেগুলো জোগানের প্রক্রিয়ার সঙ্গে, সেগুলোর উপস্থাপনের সঙ্গে, সেগুলোর বিশ্লেষণের সঙ্গে। নানান দেশের পরিসংখ্যানবিদদের সঙ্গে সংযোগ গড় তুলেছি, ঋদ্ধ হয়েছি তাঁদের সঙ্গে আলোচনায়, বুঝতে পেরেছি তাঁদের পরিসংখানের পরিপ্রেক্ষিত। সেসবের তুলনামূলক বিচার করে বহু কিছু আত্মস্থ করতে পেরেছি।
আমার দীর্ঘ পেশাগত জীবনে নানান পরিপ্রেক্ষিতে সংখ্যার সঙ্গে সখ্যের কারণে কটি উপলব্ধি আমার হয়েছে পরিসংখ্যান ও উপাত্ত বিষয়ে। প্রথমত, সব উপাত্তকাঠামোরই একটি শক্ত তাত্ত্বিক ভিত্তি থাকা প্রয়োজন। উপাত্ত শুধু সংখ্যা নয়, তার পেছনে তত্ত্বও থাকে।
দ্বিতীয়ত, উপাত্তের শুদ্ধতা ও সত্যতা অশেষ গুরুত্বপূর্ণ দুটো কারণে—এক, সঠিক উপসংহারে পৌঁছানোর জন্য এবং দুই, জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য। জনগণের কাছে যে উপাত্তের বিশ্বাসযোগ্যতা নেই, তার উপযোগিতাও নেই। উপাত্তকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে এবং সব উপাত্তকেই সবার কাছে লভ্য করে দিতে হবে। এ জন্য একটি ‘উপাত্ত লভ্যতা ও দৃশ্যমানতা’ আইন থাকা দরকার।
তৃতীয়ত, উপাত্ত দুইভাবে ব্যবহৃত হওয়া উচিত—গণসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এবং নীতিমালা প্রণয়নের জন্য। উভয় ক্ষেত্রেই ঐতিহাসিক উপাত্তের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নীতিমালা প্রণয়নের জন্য দেশের নীতিনির্ধারকদের ‘উপাত্ত স্বাক্ষরতা’ প্রয়োজন, সে সঙ্গে প্রয়োজন উপাত্তের গুরুত্ব সম্পর্কে তাঁদের সম্যক উপলব্ধি।
চতুর্থত, রাজনীতিকেরা তাঁদের রাজনৈতিক বক্তব্য ও অবস্থান শক্ত করার জন্য অবশ্যই উপাত্ত ব্যবহার করবেন, কিন্তু উপাত্ত গঠন ও দেশের পরিসংখ্যান সংস্থাকে রাজনীতির বাইরে রাখা দরকার। সেই সঙ্গে এমন একটি সংস্থাকে স্বায়ত্তশাসিত সংগঠনের মর্যাদা দেওয়া উচিত, যাতে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। সেই সঙ্গে এ রকম সংস্থার প্রয়োজনীয় বিকেন্দ্রীয়করণ দরকার।
পঞ্চমত, যতটা সম্ভব, বিভাজিত উপাত্ত সংগ্রহের দিকে মনোযোগ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। সামগ্রিক উপাত্তে অসাম্য বা বৈষম্য প্রতিফলিত হয় না। একমাত্র বিভাজিত উপাত্তেই এটা ধরা পড়ে। এই প্রসঙ্গে নারী-পুরুষের মধ্যকার অসমতা আর বৈষম্যের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ্য।
ষষ্ঠত, বর্তমান সময়ের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে উপাত্ত সংগ্রহ ও সংরক্ষণকে যতটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া যায়, ততই মঙ্গল। এ জন্য প্রয়োজনীয় অর্থায়ন, প্রশিক্ষণ ও অবকাঠামো গঠনের দিকে দৃষ্টি দেওয়া দরকার। পরিসংখ্যান বিষয়ে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই।
সপ্তমত, একটি পরিসংখ্যানকাঠামো বা সংস্থা স্থবির হতে পারে না, তাকে গতিময় হতে হবে। সে পরিপ্রেক্ষিতে গবেষণা, নতুন জ্ঞান ও প্রক্রিয়ার সঙ্গে পরিচিতি, অভিজ্ঞতার আদান-প্রদান অত্যন্ত জরুরি। একটি পরিসংখ্যান সংস্থার সঙ্গে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের সংযোগ অপরিহার্য।
পরিশেষে বলা প্রয়োজন যে, সংখ্যা হচ্ছে একটি শক্তি। সেই সঙ্গে সংখ্যারা কথা বলে। তবে সে কথা সত্য কথা না মিথ্যা কথন, তা নির্ভর করে উপস্থাপিত উপাত্ত সঠিকভাবে, সৎভাবে এবং বস্তুনিষ্ঠভাবে তৈরি হয়েছে কি না। অনেক সময় রাজনৈতিক বিবেচনায়, রাজনৈতিক চাপে কিংবা রাজনৈতিক কাঠামোকে তুষ্ট করার জন্য উপাত্তকে প্রভাবিত করা হয়। কিন্তু এটা করা হলে পরিসংখ্যানের যে একটি সৎ উদ্দেশ্য থাকে, তা বিনষ্ট হয়।
সংখ্যার সঙ্গে আমার দীর্ঘ সখ্যে সেই সত্যটিই আমি বারবার উপলব্ধি করেছি।

সংখ্যার প্রতি আমার আগ্রহ এবং অনুরাগ সেই ছোটবেলা থেকেই। অঙ্ক আমি ভালোবাসতাম। সেই আসক্তি আর ভালোবাসা বাড়িয়ে দিলেন বাবার বন্ধু ও বরিশাল বিএম কলেজে বাবার সহকর্মী অঙ্কশাস্ত্রের অধ্যাপক, অঙ্কের জাদুকর সুখেন্দু সোম। আমার বয়স তখন ১০-১২ বছর হবে। আমাদের বাড়িতে এলেই সুখেন্দুবাবু অঙ্ক আর আমাকে নিয়ে পড়তেন। অঙ্কের নানান খেলা আর ধাঁধা শেখাতেন।
এই যেমন প্রমাণ করে দিতেন যে, ১ আর ২ সমান কিংবা ৯-এর নামতা দিয়ে দেখিয়ে দিতেন যে প্রতিটি সংখ্যার গুণের ফলাফল যোগ করলে ৯ই হবে। এই যেমন ৯×৪ = ৩৬। ৩ আর ৬ যোগ করলে ৯ হয়। কিংবা ৯×৮ = ৭২। ৭ আর ২ যোগ করলে ৯ হয়। আমি হতবাক হয়ে যেতাম দশমবর্ষীয় একটি বালকের জন্য এ এক বিস্ময়! কবুল করি, বহু বছর বাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতাকালে ওইসব ধাঁধা দেখিয়ে আমার শিক্ষার্থীদের আমি হতবাক করেছি।
বিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে কলেজজীবনে অধ্যাপক সুখেন্দু সোমকে আমি আমার অঙ্কের শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলাম। ঝড়ের বেগে অঙ্ক করাতেন, সংখ্যারা যেন দৌড়ে চলত কালো বোর্ডের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্তে—আমরা টুকবার আগেই তারা উধাও হয়ে যেত। ‘অঙ্ক কষানো’ কথাটি তাঁর ক্ষেত্রে সর্বতোভাবে প্রযোজ্য—ঘোড়াকে যেমন চাবুক কষানো হয়, তেমনি অঙ্ককে তিনি কষাতেন তাঁর জ্ঞানের চাবুকে।
সংখ্যাতত্ত্বের সঙ্গে আমার পরিচয় বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে আসা, অর্থনীতিতে অনার্স—সুতরাং খুব স্বাভাবিকভাবেই আমার ঐচ্ছিক বিষয় দুটো হলো অঙ্ক ও সংখ্যাতত্ত্ব। শহীদ মিনারের উল্টো দিকে অ্যানেক্স ভবনে আমাদের ক্লাস হয়—কলাভবনে অর্থনীতির ক্লাস করেই ছুটতাম অঙ্ক আর পরিসংখ্যানের ক্লাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, শিববাড়ীকে কাটিয়ে।
সংখ্যাতত্ত্বের ক্লাসে শিক্ষক হিসেবে পেয়েছি বিভাগীয় প্রধান শহীদ অধ্যাপক মুনীরুজ্জামান, অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা, অধ্যাপক মাহবুব আহমেদ ও অধ্যাপক আবদুল্লাহকে—অসাধারণ সব শিক্ষক। খুব নমিত হয়ে বলি, ১৯৭২ সালে পুরো কলা ও বাণিজ্য অনুষদে একমাত্র আমিই অঙ্ক ও সংখ্যাতত্ত্বে ৮৯ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে ডিস্টিংশন পেয়েছিলাম। এমএ ক্লাসেও আমার একটি বিষয় ছিল অঙ্কমিতি (Econometrics)।
সত্তরের দশকে উচ্চশিক্ষার্থে কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে গেলে সংখ্যাতত্ত্বের সঙ্গে আমার সখ্য আরও নিবিড় হয়ে ওঠে। আমার গবেষণার ও অভিসন্দর্ভের জন্য আমি যে বিষয় ও কাঠামো বেছে নিই, সেটা ছিল সম্পূর্ণভাবেই অঙ্কমিতিভিত্তিক একটি সামষ্টিক মডেল। প্রায় তিন বছর ধরে সংখ্যার সঙ্গে আমার ছিল নিত্য বসবাস। মডেল, উপাত্ত, কম্পিউটার আমার জীবনের বিরাট অংশ হয়ে ওঠে।
আশির দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষকতার কালে গবেষণাকাজের জন্য সংখ্যা, উপাত্ত পরিসংখ্যানের সঙ্গে আমার নিবিড়তা আরও গভীর হয়। এ প্রসঙ্গে দুটো কথা বলা প্রয়োজন। প্রথমত, সে সময়টাতে প্রায়ই আমি নিউমার্কেটের বইয়ের দোকান মহীউদ্দীন ও সন্সে যেতাম। আমার কাজই ছিল বাংলাদেশের নানান উপাত্ত ও পরিসংখ্যানের জন্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর নানান প্রকাশনা কেনা। সেসব প্রকাশনা ঘাঁটতে ঘাঁটতে উপাত্ত ও নানান সংখ্যাকে আমি চিনতে শুরু করি, তাদের নানান মাত্রিকতাও আমার সামনে পরিস্ফুট হয়ে ওঠে। দ্বিতীয়ত, আশির দশকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও আমি জড়িয়ে পড়ি। তাদের নানান পর্ষদে আমি উপদেষ্টা ও সদস্য হই। আশির দশকের শেষের দিকে বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের উপদেষ্টা নিযুক্ত হলে ব্যুরোর সঙ্গে আমার যোগাযোগ আরও নিবিড় হয়।
সে সময়কালে তাত্ত্বিক গবেষণার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের নানান উন্নয়ন সমস্যার প্রায়োগিক গবেষণার দিকেও ঝুঁকে পড়ি। ফলে দেশি-বিদেশি নানান গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমার সংযোগ গড়ে ওঠে। গবেষণার কাজে গবেষণা দল নিয়ে বাংলাদেশের নানান অঞ্চলে আমাকে যেতে হয়—হাতেনাতে, একেবারে মাঠপর্যায়ের সমীক্ষা-তথ্য থেকে গড়ে নিতে হয় বিশ্বাসযোগ্য উপাত্ত এ পরিসংখ্যান। নতুন করে পরিচয় ঘটে সংখ্যা ও উপাত্তের বাস্তবতা।
তবে প্রায়োগিক গবেষণার খোলনলচে আমাকে শিখিয়েছিলেন আমার প্রয়াত শিক্ষক ও সহকর্মী অধ্যাপক মুশাররফ হোসেন। গ্রামীণ বাংলার দারিদ্র্য, পুষ্টি বিষয়ে তাঁর অগাধ জ্ঞানে যেমন বিমোহিত হতাম, তেমনি সেসব বিষয়ে নানান পরিসংখ্যানের ব্যাপারে অনুভবের ক্ষমতায় হতবাক হতাম। সংখ্যা ও উপাত্তেরা যেন তাঁর সঙ্গে কথা কইতো। আঙুল দিয়ে দিয়ে তিনি আমাকে উপাত্তের ভাষা শেখাতেন, সেসব সংখ্যা কী বলছে, তার দিকে আমার মনোযোগ আকর্ষণ করতেন। তাঁর কাছ থেকেই আমি সংখ্যাকে ব্যাখ্যা করতে শিখেছি, উপসংহার টানতে শিখেছি এবং সংখ্যাকে নীতিমালার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে শিখেছি।
সংখ্যার সঙ্গে আমার সখ্য চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেল, যখন নব্বইয়ের দশকে আমি জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন দপ্তরে যোগদান করি। ড. মাহবুবুল হকের নেতৃত্বে গঠিত লেখক ও গবেষক দলের সদস্য হিসেবে প্রতিবেদনের জন্য তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ, উপাত্তকাঠামো গঠন ও নীতিমালা প্রণয়নই ছিল আমার কাজ। সে কাজের অংশ হিসেবে প্রায় ১৮৮ দেশের জন্য উপাত্ত সারণি গঠন ও মানব উন্নয়ন সূচকের মতো একটি সমন্বিত সূচক তৈরিতে আমরা ব্যাপৃত ছিলাম।
এসব কাজ করতে গিয়ে আমি ক্রমান্বয়ে বুঝতে পারছিলাম যে পরিসংখ্যান ও উপাত্ত ব্যাপারটি শুধু তাত্ত্বিক বা প্রায়োগিক ব্যাপার নয়, এটি একটি উচ্চস্তরের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক ব্যাপারও। মানব উন্নয়ন প্রতিবেদনের উপাত্তগুলোকে নানান দেশ রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত থেকে দেখত। তারা নানান সংখ্যাকে পরিবর্তনের জন্য চাপ দিত, যাতে তাদের চালচিত্র আরও ভালো দেখা যায়। এ ব্যাপারে তাদের মূল লক্ষ্য ছিল মানব উন্নয়ন সূচক এবং সে সূচক মাত্রায় তাদের অবস্থান উন্নীত করার জন্য দেশগুলো তাদের পরিসংখ্যান কৃত্রিমভাবে স্ফীত করত। এসব ক্ষেত্রে দেশগুলোর স্পর্শকাতরতা ছিল উচ্চাঙ্গের।
প্রায় ১৯০ দেশের এতসব কাণ্ডকীর্তি ধারণ করা বড় একটা সহজ কাজ ছিল না। এসব ক্ষেত্রে ড. মাহবুবুল হককে আমার সংখ্যার জাদুকর বলে মনে হতো। তাঁর সামনে উপস্থাপিত তাড়া তাড়া পরিসংখ্যান ও উপাত্তমালার দিকে তিনি স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতেন। তারপর হঠাৎ করে একটি উপাত্তের ওপর আঙুল রেখে তিনি বলতেন, ‘এ সংখ্যাটি ঠিক নয়’, কিংবা ‘এ উপাত্তটি রাজনৈতিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে’। আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে তিনি সর্বদাই সঠিক ছিলেন।
অত্যন্ত নমিত হয়ে বলি, মাহবুবুল হকের এ নৈপুণ্যটি আমি কিছুটা হলেও আয়ত্ত করতে পেরেছিলাম। আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে সংখ্যার প্রতি ভালেবাসা ও অঙ্গীকার এবং বহুকাল ধরে উপাত্ত নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করলে এ-জাতীয় দক্ষতা অর্জন করা যায়। তাই পরবর্তী সময়ে জাতিসংঘের মানব উন্নয়নের কর্ণধার হয়ে এ কাজটি আমি করতাম। কখনো-সখনো আমার সহকর্মীরা আমাকে পরীক্ষা করার জন্য বহু সংখ্যার মাঝে দু-একটি ভুল উপাত্ত ঢুকিয়ে দিতেন। কিন্তু আমি সেই বিভ্রান্তকারী উপাত্তগুলো চিহ্নিত করতে পারতাম। আমার সহকর্মীরা অবাক হতেন।
সংখ্যার ক্ষেত্রে দুই রকমের শিক্ষা আমি পেয়েছিলাম অধ্যাপক অমর্ত্য সেন এবং মাহবুবুল হকের কাছ থেকে। অধ্যাপক সেন উপাত্তের তাত্ত্বিক শুদ্ধতার ওপরে গুরুত্ব দিতেন আর মাহবুবুল হক জোর দিতেন উপাত্তের প্রায়োগিক ব্যবহারের দিকে। দুটো দিকই গুরুত্বপূর্ণ এবং দুটোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষাই বড় কথা।
পেশাগত জীবন থেকে অবসর গ্রহণের পরেও সংখ্যার সঙ্গে আমার সখ্য মোটেও কমেনি। গত পাঁচ বছরে তিনটি জাতীয় মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন রচনা করেছি—নেপাল, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং বাংলাদেশের জন্য। দারিদ্র্যবিমোচন কর্মসূচিপত্র রচনা করেছি মোজাম্বিক ও সোমালিয়ার জন্য। ১৫ বছরের জন্য প্রেক্ষিত পরিকল্পনা তৈরি করেছি সেইন্ট কিটস ও নেভিসের জন্য।
এসব কর্মকাণ্ডে পরিচিত হয়েছি বিভিন্ন পরিসংখ্যান কাঠামোর সঙ্গে—সেগুলো জোগানের প্রক্রিয়ার সঙ্গে, সেগুলোর উপস্থাপনের সঙ্গে, সেগুলোর বিশ্লেষণের সঙ্গে। নানান দেশের পরিসংখ্যানবিদদের সঙ্গে সংযোগ গড় তুলেছি, ঋদ্ধ হয়েছি তাঁদের সঙ্গে আলোচনায়, বুঝতে পেরেছি তাঁদের পরিসংখানের পরিপ্রেক্ষিত। সেসবের তুলনামূলক বিচার করে বহু কিছু আত্মস্থ করতে পেরেছি।
আমার দীর্ঘ পেশাগত জীবনে নানান পরিপ্রেক্ষিতে সংখ্যার সঙ্গে সখ্যের কারণে কটি উপলব্ধি আমার হয়েছে পরিসংখ্যান ও উপাত্ত বিষয়ে। প্রথমত, সব উপাত্তকাঠামোরই একটি শক্ত তাত্ত্বিক ভিত্তি থাকা প্রয়োজন। উপাত্ত শুধু সংখ্যা নয়, তার পেছনে তত্ত্বও থাকে।
দ্বিতীয়ত, উপাত্তের শুদ্ধতা ও সত্যতা অশেষ গুরুত্বপূর্ণ দুটো কারণে—এক, সঠিক উপসংহারে পৌঁছানোর জন্য এবং দুই, জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য। জনগণের কাছে যে উপাত্তের বিশ্বাসযোগ্যতা নেই, তার উপযোগিতাও নেই। উপাত্তকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে এবং সব উপাত্তকেই সবার কাছে লভ্য করে দিতে হবে। এ জন্য একটি ‘উপাত্ত লভ্যতা ও দৃশ্যমানতা’ আইন থাকা দরকার।
তৃতীয়ত, উপাত্ত দুইভাবে ব্যবহৃত হওয়া উচিত—গণসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এবং নীতিমালা প্রণয়নের জন্য। উভয় ক্ষেত্রেই ঐতিহাসিক উপাত্তের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নীতিমালা প্রণয়নের জন্য দেশের নীতিনির্ধারকদের ‘উপাত্ত স্বাক্ষরতা’ প্রয়োজন, সে সঙ্গে প্রয়োজন উপাত্তের গুরুত্ব সম্পর্কে তাঁদের সম্যক উপলব্ধি।
চতুর্থত, রাজনীতিকেরা তাঁদের রাজনৈতিক বক্তব্য ও অবস্থান শক্ত করার জন্য অবশ্যই উপাত্ত ব্যবহার করবেন, কিন্তু উপাত্ত গঠন ও দেশের পরিসংখ্যান সংস্থাকে রাজনীতির বাইরে রাখা দরকার। সেই সঙ্গে এমন একটি সংস্থাকে স্বায়ত্তশাসিত সংগঠনের মর্যাদা দেওয়া উচিত, যাতে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। সেই সঙ্গে এ রকম সংস্থার প্রয়োজনীয় বিকেন্দ্রীয়করণ দরকার।
পঞ্চমত, যতটা সম্ভব, বিভাজিত উপাত্ত সংগ্রহের দিকে মনোযোগ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। সামগ্রিক উপাত্তে অসাম্য বা বৈষম্য প্রতিফলিত হয় না। একমাত্র বিভাজিত উপাত্তেই এটা ধরা পড়ে। এই প্রসঙ্গে নারী-পুরুষের মধ্যকার অসমতা আর বৈষম্যের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ্য।
ষষ্ঠত, বর্তমান সময়ের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে উপাত্ত সংগ্রহ ও সংরক্ষণকে যতটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া যায়, ততই মঙ্গল। এ জন্য প্রয়োজনীয় অর্থায়ন, প্রশিক্ষণ ও অবকাঠামো গঠনের দিকে দৃষ্টি দেওয়া দরকার। পরিসংখ্যান বিষয়ে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই।
সপ্তমত, একটি পরিসংখ্যানকাঠামো বা সংস্থা স্থবির হতে পারে না, তাকে গতিময় হতে হবে। সে পরিপ্রেক্ষিতে গবেষণা, নতুন জ্ঞান ও প্রক্রিয়ার সঙ্গে পরিচিতি, অভিজ্ঞতার আদান-প্রদান অত্যন্ত জরুরি। একটি পরিসংখ্যান সংস্থার সঙ্গে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের সংযোগ অপরিহার্য।
পরিশেষে বলা প্রয়োজন যে, সংখ্যা হচ্ছে একটি শক্তি। সেই সঙ্গে সংখ্যারা কথা বলে। তবে সে কথা সত্য কথা না মিথ্যা কথন, তা নির্ভর করে উপস্থাপিত উপাত্ত সঠিকভাবে, সৎভাবে এবং বস্তুনিষ্ঠভাবে তৈরি হয়েছে কি না। অনেক সময় রাজনৈতিক বিবেচনায়, রাজনৈতিক চাপে কিংবা রাজনৈতিক কাঠামোকে তুষ্ট করার জন্য উপাত্তকে প্রভাবিত করা হয়। কিন্তু এটা করা হলে পরিসংখ্যানের যে একটি সৎ উদ্দেশ্য থাকে, তা বিনষ্ট হয়।
সংখ্যার সঙ্গে আমার দীর্ঘ সখ্যে সেই সত্যটিই আমি বারবার উপলব্ধি করেছি।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

সংখ্যার প্রতি আমার আগ্রহ এবং অনুরাগ সেই ছোটবেলা থেকেই। অঙ্ক আমি ভালোবাসতাম। সেই আসক্তি আর ভালোবাসা বাড়িয়ে দিলেন বাবার বন্ধু ও বরিশাল বিএম কলেজে বাবার সহকর্মী অঙ্কশাস্ত্রের অধ্যাপক, অঙ্কের জাদুকর সুখেন্দু সোম। আমার বয়স তখন ১০-১২ বছর হবে। আমাদের বাড়িতে এলেই সুখেন্দুবাবু অঙ্ক আর আমাকে নিয়ে পড়তেন।
১১ অক্টোবর ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

সংখ্যার প্রতি আমার আগ্রহ এবং অনুরাগ সেই ছোটবেলা থেকেই। অঙ্ক আমি ভালোবাসতাম। সেই আসক্তি আর ভালোবাসা বাড়িয়ে দিলেন বাবার বন্ধু ও বরিশাল বিএম কলেজে বাবার সহকর্মী অঙ্কশাস্ত্রের অধ্যাপক, অঙ্কের জাদুকর সুখেন্দু সোম। আমার বয়স তখন ১০-১২ বছর হবে। আমাদের বাড়িতে এলেই সুখেন্দুবাবু অঙ্ক আর আমাকে নিয়ে পড়তেন।
১১ অক্টোবর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

সংখ্যার প্রতি আমার আগ্রহ এবং অনুরাগ সেই ছোটবেলা থেকেই। অঙ্ক আমি ভালোবাসতাম। সেই আসক্তি আর ভালোবাসা বাড়িয়ে দিলেন বাবার বন্ধু ও বরিশাল বিএম কলেজে বাবার সহকর্মী অঙ্কশাস্ত্রের অধ্যাপক, অঙ্কের জাদুকর সুখেন্দু সোম। আমার বয়স তখন ১০-১২ বছর হবে। আমাদের বাড়িতে এলেই সুখেন্দুবাবু অঙ্ক আর আমাকে নিয়ে পড়তেন।
১১ অক্টোবর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

সংখ্যার প্রতি আমার আগ্রহ এবং অনুরাগ সেই ছোটবেলা থেকেই। অঙ্ক আমি ভালোবাসতাম। সেই আসক্তি আর ভালোবাসা বাড়িয়ে দিলেন বাবার বন্ধু ও বরিশাল বিএম কলেজে বাবার সহকর্মী অঙ্কশাস্ত্রের অধ্যাপক, অঙ্কের জাদুকর সুখেন্দু সোম। আমার বয়স তখন ১০-১২ বছর হবে। আমাদের বাড়িতে এলেই সুখেন্দুবাবু অঙ্ক আর আমাকে নিয়ে পড়তেন।
১১ অক্টোবর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫