Ajker Patrika

ফাস্ট ফ্যাশনের প্রাণভোমরা বাংলাদেশের সামনে টালমাটাল ভবিষ্যৎ

আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩: ৫৬
ফাস্ট ফ্যাশনের প্রাণভোমরা বাংলাদেশের সামনে টালমাটাল ভবিষ্যৎ

বিশ্বের ফাস্ট ফ্যাশন ব্যবসায়ের প্রাণভোমরা বাংলাদেশ। এই দেশের পোশাক শ্রমিকদের হাতে তৈরি পোশাক না পেলে এইচঅ্যান্ডএম, গ্যাপ ও জারার মতো বিশ্বসেরা ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোর শো-রুম ভরে না। সস্তা শ্রমের কারণে দ্রুত বিকশিত এই তৈরি পোশাক শিল্পের কল্যাণেই বাংলাদেশ তিন দশকের মধ্যে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলেছে, গত আগস্টের শুরুতে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর চলমান অস্থিরতা ৫৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের সামনে এক টালমাটাল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। বিক্ষোভের সময় সময় ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের কারণে রপ্তানিকারকরা যখন সংকটের মধ্যে ছিলেন, তখন অন্তত ৪টি কারখানায় আগুন দেওয়া হয়েছিল। এমন প্রেক্ষাপটে ডিজনি, ওয়ালমার্টসহ অন্তত তিনটি বড় ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠান পরবর্তী মৌসুমের জন্য অন্য বিকল্প রপ্তানিকারক দেশের খোঁজ করছে।

এমন সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশের পোশাক খাতের অব্যাহত উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। মজুরিসহ বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে ঢাকার আশপাশে গত তিন দিন ধর পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ চলছে। গতকাল বুধবার গাজীপুর ও ঢাকার আশুলিয়ায় শ্রমিক বিক্ষোভের মুখে শতাধিক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার নাগাদ ঢাকার বাইরে অন্তত ৬০টি কারখানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে বিবিসির ধারণা।

বাংলাদেশের গার্মেন্টস উৎপাদক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বিবিসিকে বলেন, ‘সাম্প্রতিক ঘটনাবলি ক্রেতাদের আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরাবে। এবং সম্ভবত তারা (ক্রেতারা) অন্য সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার কথাও ভাবতে পারে।’

এই ক্ষেত্রে আমদানির বিকল্প উৎস ব্র্যান্ডগুলো স্বভাবতই ভিয়েতনামকে বিবেচনা করতে পারেন বলেও তিনি মনে করেন।

একই ধরনের কথা বলছেন বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাকারী কিয়াও সেইন থাই। তাঁর মতে, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশের ফাস্ট ফ্যাশন পণ্যের রপ্তানি ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে। তো যে দেশের ৮০ শতাংশ রপ্তানি আয় আসে এই খাত থেকে সেখানে এই পরিমাণ রপ্তানি কমে যাওয়া মোটেও সুখকর বিষয় নয়।

তবে শেখ হাসিনার পতনের আগেও যে এই খাতের পরিস্থিতি ভালো ছিল তা নয়। সামগ্রিকভাবেই বাংলাদেশের অর্থনীতি ভালো অবস্থানে ছিল না। শিশু শ্রম কেলেঙ্কারি, ভয়াবহ দুর্ঘটনা এবং কোভিড-১৯ শাটডাউনের কারণে এই খাত দীর্ঘদিন ধরেই ধুঁকছে। এরই মধ্যে কাঁচামালের ঊর্ধ্বগতির কারণে উৎপাদন খরচ আরও বেড়ে যায়। এই বিষয়গুলো তাও মানা যায়, কিন্তু ক্রেতাদের আগ্রহ কমে যাওয়া মানে রপ্তানি কমে যাওয়া। এটি বাংলাদেশের মতো রপ্তানিমুখী দেশের জন্য খুবই খারাপ। কারণ, রপ্তানি থেকে আয় কমলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও কমে যাবে।

এসবের বাইরেও অন্যান্য সমস্যা আছে। বিশেষ করে লোক দেখানো বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্পে বিপুল অর্থ ব্যয় সরকারি তহবিলকে ফোকলা করে দিয়েছে। ব্যাপক স্বজনপ্রীতি দেশের ব্যাংক ব্যবস্থাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ক্ষমতাধর ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের সম্পর্ক থাকায় অনেকেই ঋণ পরিশোধ করেননি।

এই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নবনিযুক্ত গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছিলেন, ‘এটি কোনো নির্দোষ অবহেলা নয় বরং অর্থব্যবস্থায় পরিকল্পিত ডাকাতি।’ তিনি বলেন, এই বিষয়টি ঠিক করাকেই আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি। তবে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এ ক্ষেত্রে কয়েক বছর সময় লেগে যেতে পারে এবং আইএমএফের ঋণসহ আরও আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আরও বলেন, ‘আমরা বর্তমানে কঠিন একটা অবস্থায় আছি এবং আমরা আমাদের বৈদেশিক দাতাদের দেওয়া ঋণের শর্তাবলি মেনে চলতে চাই। তবে আপাতত আমাদের একটু মুক্তভাবে নড়াচড়ার জায়গা প্রয়োজন।’

সোনিয়া গ্রুপের কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকার বিষয়টি ক্রেতাদের আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরানোর জন্য যথেষ্ট। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ডলার না থাকলে আমরা ভারত ও চীন থেকে সুতা আমদানির জন্য কীভাবে অর্থ প্রদান করব তা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। তাদের মধ্যে অনেকেই ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স না পাওয়ার কারণে নতুন অর্ডার দেওয়ার জন্য আর বাংলাদেশে আসতে পারছেন না।’

বাংলাদেশের সামনে একটি বড় সমস্যা আছে। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলন মূলত শুরুই হয়েছিল ভালো বেতনের চাকরি এবং সুযোগের অভাবে হতাশ তরুণ-যুবাদের দ্বারা। যদিও পোশাক কারখানাগুলো লাখ লাখ কর্মসংস্থান তৈরি করেছে, তবে সেখানে ভালো বেতন দেওয়া হয় না। কারখানার শ্রমিকদের অনেকেই জানিয়েছেন, তারা মজুরি দেশের জাতীয় ন্যূনতম মজুরির অর্ধেক। ফলে তারা তাদের সন্তানদের ভরণ-পোষণের জন্য ঋণ নিতে বাধ্য হন।

এই শ্রমিকদের অনেকেই ছাত্রদের আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন মূলত ভালো মজুরি ও অন্যান্য সুবিধার আশায়। এ বিষয়ে শ্রমিক ইউনিয়নের নেত্রী মারিয়া বলেন, ‘আমাদের মজুরি দ্বিগুণ বাড়ানো না হলে অন্য কিছুতেই আমরা মানব না। মজুরিতে আমাদের জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়টি প্রতিফলিত হতে হবে।’

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেওয়াদের কয়েকজন হলেন—আবু তাহির, মোহাম্মদ জামান, মোহাম্মদ জাইদুল এবং সরদার আরমান। তাদের প্রায় সবাই বিগত ২ থেকে ৫ বছর ধরে বেকার। তাঁরা জানান, তাঁরা বেসরকারি খাতেও কাজ করতে আগ্রহী। কিন্তু যেসব কাজ পাওয়া যায়, তা তাদের যোগ্যতার বাইরে।

জাইদুল বলেন, ‘ (আমার বাবা-মা) বুঝতেই চান যে, দেশের চাকরির বাজার কতটা প্রতিযোগিতামূলক। আমার বেকারত্ব আমার পরিবারের জন্য একটি বাড়তি চাপ। আমরা শুধু ডিগ্রি পাই, কোনো ধরনের সঠিক দক্ষতা আমরা অর্জন করতে পারি না।’ ড. ইউনূসের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আমাদের নতুন উপদেষ্টা নিজেও একজন উদ্যোক্তা, তাই আমরা সবাই আশাবাদী যে তিনি এই বিষয়ে কিছু করবেন।’

বাংলাদেশি থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগে ড. ফাহমিদা খাতুন উল্লেখ করেন, শিক্ষিত তরুণদের আকাঙ্ক্ষা পূরণে অর্থনীতির বৈচিত্র্যকরণ গুরুত্বপূর্ণ। তিনি যুক্তি দেন, এতে অর্থনীতির জন্য খারাপ কিছু হবে না। তিনি বলেন, ‘কেবল একটি খাতের ওপর ভিত্তি করে কোনো দেশ দীর্ঘকাল টিকে থাকতে পারে না। এটা আপনাকে একটা নির্দিষ্ট বিন্দু পর্যন্ত নিয়ে যাবে। দেশের অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনার কথা বলা হয়েছে, তবে সেটা কেবল কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ।’

রাজধানী ঢাকার বাইরে অব্যবহৃত একটি প্রযুক্তি পার্ক এর প্রমাণ। ২০১৫ সালে উদ্বোধন করা হয়েছিল উচ্চ বেতনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং পোশাক রপ্তানির ওপর বাংলাদেশের নির্ভরতা হ্রাস করার লক্ষ্যে একটি দেশব্যাপী উদ্যোগের অংশ হিসেবে। কিন্তু সেই উদ্যোগ কাজে আসেনি। পার্কটি এখন পড়ে আছে শেখ হাসিনা সরকারের অর্থনৈতিক ব্যর্থতার নমুনা হয়ে।

সফটওয়্যার উদ্যোক্তা রাসেল আহমেদ বলেন, ‘এই শিল্পে কী প্রয়োজন এবং সরকার যা দিয়েছে তার মধ্যে ব্যবধানের এটি নিখুঁত উদাহরণ এটি।’ তিনি বলেন, ‘কেউ আমাদের জিজ্ঞাসা করেনি যে, আমাদের এই পার্কগুলোর প্রয়োজন আছে কি না। বাংলাদেশ ভৌত অবকাঠামোতে বিনিয়োগ করছে, কিন্তু মানবিক অবকাঠামোতে আমরা কতটা বিনিয়োগ করেছি? অথচ, এটাই এই শিল্পের কাঁচামাল।’

আগামী দিনে করণীয় কি এই বিষয়ে ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, নতুন সরকারকে যা করতে হবে তা হলো—বিদেশি ও বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে দুর্নীতি ও লাল ফিতার বাধা দূর করা। ড. ইউনূস দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক সংস্কার আনার অঙ্গীকার করেছেন এবং গত কয়েক বছরে ‘পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস’ করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঠিক করার কথা বলেছেন। তবে তাঁর সামনে আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে—অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেওয়া এবং সরকারের নীতিনির্ধারণকে স্বার্থান্বেষী ব্যক্তিদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়া থেকে বিরত রাখা।

এসবের বাইরে, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বৈশ্বিক চাহিদা হ্রাস পাওয়া, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং ঘূর্ণিঝড়-বন্যার প্রকোপ মোকাবিলার মতো চ্যালেঞ্জগুলোও ড. ইউনূসের সরকারকে মোকাবিলা করতে হবে। এসব চ্যালেঞ্জ হয়তো অনেক কঠিন কিন্তু ড. ইউনূসের ওপর দেশের মানুষের যে আশা তা আরও অনেক বেশি।

অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিল নগদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে নগদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে নগদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

সারা দেশের সাত হাজার ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সের মধ্য থেকে সেরা পারফরম্যান্সের জন্য ৭০ জনকে বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে ডাক বিভাগের ডিজিটাল আর্থিক লেনদেন সেবা নগদ।

রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ‘নগদ ফিল্ড চ্যাম্পিয়ন ২০২৫’ নামের এই সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠান চলাকালে ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সদের পারফরম্যান্সের জন্য বিশেষ বোনাসের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ ব্যাংকনিযুক্ত নগদের প্রশাসক মো. মোতাছিম বিল্লাহ। ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ৭০ জনের নগদ অ্যাকাউন্টে চলে যায় এই অর্থ।

দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে ঢাকায় আসা-যাওয়া, খাওয়া, হোটেলে অবস্থানসহ অন্য সব খরচ নগদের পক্ষ থেকে বহন করা হয়।

সেরা পারফর্মারদের অভিনন্দন জানিয়ে নগদের প্রশাসক মো. মোতাছিম বিল্লাহ বলেন, অনেক চ্যালেঞ্জের মাঝেও বাজারে নগদ একটা ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছে। বাংলাদেশে ক্যাশলেস লেনদেনের আরও প্রসার ঘটাতে নগদ ভূমিকা রাখবে বলে সরকারের নীতিনির্ধারকদের প্রত্যাশা রয়েছে। সুতরাং, যত অপপ্রচারই নগদকে নিয়ে হোক না কেন, সেসবে কান না দিয়ে নগদের সাফল্যের জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।

নগদের সেবার প্রসার ঘটাতে এ সময় মোতাছিম বিল্লাহ ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সদের কাছ থেকে নগদ বিষয়ে পরামর্শ ও সুপারিশ জানতে চান। তাঁদের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে নগদ প্রশাসক বলেন, অল্প সময়ের ভেতরই সেবার কলেবর আরও বাড়বে নগদে। ফলে লেনদেনের অঙ্ক যেমন অনেক গুণ বাড়বে, একই সঙ্গে গ্রাহকেরাও অনেক বেশি উপকৃত হবেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকনিযুক্ত নগদের জ্যেষ্ঠ সহযোগী প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান, ডাক বিভাগনিযুক্ত নগদের জ্যেষ্ঠ সহযোগী প্রশাসক মো. আবু তালেব, নগদের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার মোহাম্মদ শাহীন সারওয়ার ভূঁইয়া বক্তব্য দেন।

বক্তারা বলেন, আগামী বছরে বিদেশ থেকে আসা রেমিট্যান্স, বাংলা কিউআর, সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের জন্য আন্তসংযোগ গেম চেঞ্জারের ভূমিকা পালন করবে নগদ। ফলে ২০২৬ সাল নগদের সেরা সাফল্যের বছর হবে বলেও মনে করেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করল ডিএসই

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করেছে ডিএসই। ছবি: সংগৃহীত
ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করেছে ডিএসই। ছবি: সংগৃহীত

তথ্যসেবা আরও সহজ ও কার্যকর করার লক্ষ্যে ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক স্থাপন করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আসাদুর রহমান এই ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএসইর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ড. আসিফুর রহমান, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা মো. ছামিউল ইসলাম, প্রধান রেগুলেটরি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়াসহ ডিএসইর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় মোহাম্মদ আসাদুর রহমান বলেন, ইনফরমেশন হেল্প ডেস্কের মাধ্যমে পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট তথ্য প্রদান আরও সহজ হবে এবং বিনিয়োগকারী ও অন্য অংশীজনদের বিভিন্ন জিজ্ঞাসার দ্রুত ও কার্যকর সমাধান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এর ফলে ডিএসইর সেবার মান আরও গ্রাহকবান্ধব ও স্বচ্ছ হবে।

ডিএসইর এমডি আশা প্রকাশ করেন, এই হেল্প ডেস্ক ডিএসইর বাজার অংশগ্রহণকারীদের আস্থা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

পুঁজিবাজারসংক্রান্ত সব ধরনের তথ্যের জন্য +৮৮-০২-৪১০৪০১৮৯, ০৯৬৬৬৭০২০৭০ নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ট্রাভেল ও ট্যুরিজম অ্যাওয়ার্ড: লিড স্পনসর ‘গ্যালাক্সি’, হসপিটালিটি পার্টনার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
ট্রাভেল ও ট্যুরিজম অ্যাওয়ার্ড: লিড স্পনসর ‘গ্যালাক্সি’, হসপিটালিটি পার্টনার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা

দেশের অন্যতম ভ্রমণ ও পর্যটনবিষয়ক প্রকাশনা বাংলাদেশ মনিটর আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ট্রাভেল, ট্যুরিজম ও হসপিটালিটি অ্যাওয়ার্ড (BTTHA) ২০২৫’-এর লিড স্পনসর হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে দেশের ভ্রমণশিল্পের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান গ্যালাক্সি গ্রুপ।

একই সঙ্গে পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা এই আয়োজনের হসপিটালিটি পার্টনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।

দেশের ভ্রমণ, পর্যটন ও আতিথেয়তা শিল্পে একমাত্র স্বীকৃত এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানটি এবার দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

গতকাল বুধবার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট চুক্তিসমূহ স্বাক্ষরিত হয়।

বাংলাদেশ মনিটরের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম। গ্যালাক্সি গ্রুপের পক্ষে লিড স্পনসর চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ। অন্যদিকে ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার পক্ষে হসপিটালিটি পার্টনার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন হোটেলটির জেনারেল ম্যানেজার ডেভিড ও’ হ্যানলন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, গ্যালাক্সি ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার সম্পৃক্ততায় অ্যাওয়ার্ড প্রোগ্রামের মর্যাদা ও পরিসর আরও বৃদ্ধি পাবে। এর মাধ্যমে দেশের ভ্রমণ ও আতিথেয়তা শিল্পে উৎকর্ষতা অর্জন এবং উত্তম চর্চা উৎসাহিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

গ্যালাক্সি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ বলেন, পর্যটন ও আতিথেয়তা খাতে উদ্ভাবন, সেবার মান এবং টেকসই উন্নয়নকে স্বীকৃতি প্রদানকারী একটি মহতী উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে তারা গর্বিত।

ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার জেনারেল ম্যানেজার ডেভিড ও’ হ্যানলন বিশ্বমানের আতিথেয়তা প্রদানের পাশাপাশি অসাধারণ অর্জনকে স্বীকৃতি দেওয়ার লক্ষ্যে এমন একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

চলতি বছর ২৫টি ক্যাটাগরিতে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। শুধু আবেদনকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিত্বকারী অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিচারক প্যানেল বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়ন এবং পাবলিক ভোটিংয়ের ভিত্তিতে বিজয়ীদের চূড়ান্ত করবেন।

এবার নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে দুটি বিশেষ ক্যাটাগরি—সর্বাধিক পর্যটনবান্ধব বিদেশি গন্তব্য, বাংলাদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় পর্যটন স্পট। এই দুটি ক্যাটাগরির বিজয়ী সরাসরি পাবলিক ভোটিংয়ের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।

বাংলাদেশের পর্যটন ইকোসিস্টেমের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা জানানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ মনিটর ২০২৪ সালে প্রথমবারের মতো এই পুরস্কারের প্রবর্তন করে।

প্রথম আসরের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এ বছর আরও বৃহৎ পরিসরে এই আয়োজন করা হচ্ছে, যেখানে অংশগ্রহণের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দৃশ্যমানতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচল নজরদারি করবে এনবিআর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচল আরও স্বচ্ছ ও প্রযুক্তিনির্ভর করতে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে ‘ট্রাক মুভমেন্ট’ নামে নতুন একটি সাব-মডিউল চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর মাধ্যমে প্রতিটি ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাকের প্রবেশ, অবস্থানকাল এবং খালি ট্রাকের ফেরত-সংক্রান্ত তথ্য ইলেকট্রনিকভাবে সংরক্ষণ করা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় এনবিআর।

এনবিআর জানায়, প্রাথমিকভাবে যশোরের বেনাপোল কাস্টম হাউসে ১৫ ডিসেম্বর থেকে এই সাব-মডিউলের পাইলট কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর আগে ট্রাক প্রবেশ ও বহির্গমনের তথ্য ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হতো, যা সময়সাপেক্ষ ও ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার ঝুঁকি ছিল।

নতুন মডিউল চালুর ফলে ভারতীয় প্রতিটি ট্রাকের আগমন ও বহির্গমনের প্রকৃত তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংরক্ষিত থাকবে। এতে ট্রাকের অবস্থানকাল নির্ধারণ, সীমান্ত এলাকায় ট্রাক চলাচল কার্যকরভাবে মনিটরিং এবং রিয়েল-টাইম রিপোর্ট তৈরি করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি তথ্য ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বাড়বে, রাজস্বহানি রোধে সহায়ক হবে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে বলে জানিয়েছে এনবিআর।

এনবিআরের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সীমান্ত বাণিজ্য ব্যবস্থাপনায় এই ডিজিটাল উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ট্রাক চলাচলের নির্ভুল তথ্য থাকায় শুল্ক ও কর ব্যবস্থাপনায় নজরদারি জোরদার হবে, একই সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষাও বাড়বে।

খুব শিগগির দেশের সব স্থলবন্দরে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের ‘ট্রাক মুভমেন্ট’ সাব-মডিউলটি লাইভ অপারেশনে আনার পরিকল্পনা রয়েছে এনবিআরের। এতে স্থলবন্দরভিত্তিক আমদানি কার্যক্রম আরও গতিশীল ও আধুনিক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত