Ajker Patrika

আপনারা তো এমনিতেই ফেল: রংপুরে নেতা-কর্মীদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

রংপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ জুলাই ২০২৪, ২২: ১৪
আপনারা তো এমনিতেই ফেল: রংপুরে নেতা-কর্মীদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

কোটা সংস্কার আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নেওয়ার পর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্যর্থ হওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। 

আজ বৃহস্পতিবার রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন মন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য দেওয়ার সময় নেতা-কর্মীরা হইচই শুরু করলে রেগে যান মন্ত্রী। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা হইচই করছেন কেন? আপনারা তো এমনিতে ফেল। আপনারা নেতারা কোমরে হাত গুটিয়ে বসে ছিলেন কেন? আমি যেটা বলছি, শোনেন। আপনারা যেটা করার কথা ছিল সেটা করেননি। সে জায়গায় আপনারা ফেল করেছেন। শুধু আপনারাই নয়, আমরাও ফেল করেছি।’ 

সভায় আরও বক্তব্য দেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও এমপি টিপু মুনশি, এমপি নাছিমা জামান ববি ও মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান। এ সময় রংপুরে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের প্রামাণ্যচিত্র উপস্থাপন করেন ডিসি মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান। 

নেতা-কর্মীরা হইচই করলে রেগে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা হইচই করবেন, নাকি অন্য কিছু করবেন। আমাকে কথা বলতে দেবেন, নাকি হইচই করবেন। হইচই করছেন কেন? আপনারা তো এমনিতে ফেল। আপনারা তো ফেল করেছেন, তারপরেও এত হইচই কেন? শোনেন সব ঠিক আছে, আপনারা নেতারা বসে ছিলেন কেন? আপনারা নেতারা কোমরে হাত গুটিয়ে বসে ছিলেন কেন?’ 

মন্ত্রী বলেন, ‘ভাই, আমি যেটা বলছি শোনেন। ধৈর্য ধরেন, আপনারা যেটা করার কথা ছিল সেটা করেননি। সে জায়গায় আপনারা ফেল করেছেন। শুধু আপনারাই নয়, আমরাও ফেল করেছি। আমরা ফেল করেছি। উনি (মেয়র) তো একা সবকিছু করতে পারেন নাই। আমরা সবাই মিলে সবকিছু করতে পারলে উনি কিছু করতে পারতেন। আমরা ফেল করেছি। কাজেই এই প্রসঙ্গ তুলে আর লাভ নাই।’ 

তিনি বলেন, ‘আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঘটনাস্থলগুলো পরিদর্শন করছি। আপনারা হইচই করছেন কেন? আপনাদের পার্টি অফিসে যখন ভাঙচুর করল, আপনাদের তো ঘুরে দাঁড়াতে হবে। আপনারা এটা ভুলে গেলেন কেমনে, আমরা বীরের জাতি, আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। অস্ত্র ছিল না আমাদের হাতে, শুধু জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে স্বাধীন করেছি। পকেটে হাত দিয়ে যদি আমরা ঘুমিয়ে থাকি, তাহলে আমাদের ঘরে ঘরে ঢুকে এরা মেরে ফেলবে। এটারই প্রমাণ আপনারা পেয়েছেন।’ 

বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের প্রতিরোধের প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বলছি, ঢাকায় কীভাবে ফেস করেছি। আমার ছাত্রলীগের অন্তত ৮-১০ জন শাহাদতবরণ করেছে, আওয়ামী লীগেরও শাহাদতবরণ করেছে। আপনারা জানেন, গণভবন আক্রমণ (অ্যাটাক) করেছিল। বঙ্গভবনে চতুর্দিকে ঘেরাও করতে ছিল, সচিবালয় অ্যাটাক করতে ছিল। সেখানে কত ভয়ংকর সিচুয়েশন তৈরি হয়েছিল সেটা আপনাদের জানা উচিত। সেটা কীভাবে মোকাবিলা করা হলো সেটাও জানা উচিত।’ 

এটা কোনো দিন ছাত্র আন্দোলন হতে পারে না উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ছাত্ররা যারা লেখাপড়া শিখতে ইউনিভার্সিটি, কলেজে আসছে। তারা এই আন্দোলন করতে পারে না। যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে, তারা সবাই একটি মহলের দ্বারা পরিচালিত। আমাদের কাছে যে সংবাদ আছে, আমরা তা দেখছি। পাশাপাশি এতটুকু বলতে চাই, রোকেয়া ইউনিভার্সিটির ভিসি মহোদয়কে যেভাবে আক্রমণ করেছিল, আমাদের বীর পুলিশ-বিজিবি সদস্যরা যদি তাঁকে রেসকিউ না করত, তাহলে হয়তো তাঁর পরিবারসহ তাঁকে পুড়িয়ে মারত। আপনারা সেই দৃশ্য দেখেছেন। কাজেই এটা ছাত্র আন্দোলন নয়।’ 

তিনি বলেন, ‘আমি আবারও আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই। যারা এই সম্পদ বিনষ্ট করেছে, থানা লুট করেছে, ভার্সিটির সম্পদ নষ্ট করেছে, আমাদের ভিসিকে হত্যার চেষ্টা করেছে, সবগুলোকে আমরা চিহ্নিত করব। যে অর্থের জোগান দিয়েছে, সহযোগিতা করছে, তাকেও আমরা চিহ্নিত করব। আমরা তাদের বিচারের ব্যবস্থা করব। আপনাদের সহযোগিতা লাগবে। কিন্তু আপনারা ইমোশনাল হয়ে হইচই করলে এই যড়যন্ত্র থামানো যাবে না। আপনারা শান্ত হয়ে যার কাছে যা ইনফরমেশন আছে, আমাদের কাছে জানাবেন। আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। আপনারা যেগুলো বলেছেন, আমি শুনে গেলাম। আপনাদের ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানাই।’ 

মন্ত্রী বলেন, ‘এমন নৃশংসতা আমরা পার করে আসছি। আমরা দেশ স্বাধীন করেছি যুদ্ধ করে। আমরা চৌদ্দ সালে অগ্নি-সন্ত্রাস দেখেছি। নিরানব্বইতে দেখেছি। আমরা জঙ্গি উত্থান দেখেছি। এসব আমাদের দেশপ্রেমিক নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা জীবন দিয়ে জনগণকে সেফ করেছেন। আজকেও তাঁরা জীবন দিয়ে জনগণকে রক্ষা করার জন্য ঘুরে দাঁড়িয়েছেন।’ 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ছাত্রদের বিপদে ফেলার জন্য তাদের সামনে রেখে এগুলো কারা করছে, আপনাদের কাছে সবই পরিষ্কার। এরা স্বাধীনতার সময় বিরোধিতা করেছিল, এরা সব সময় পরাজিত হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ এদের কখনো আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় নাই, পছন্দ করে না। আপনাদের কোনো ভয় নেই, সাহস করে দাঁড়িয়ে থাকুন। দেখেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সব কাটিয়ে আবার আমরা সুন্দর বাংলাদেশ গড়ব।’ 

সভায় আরও বক্তব্য দেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি, নাছিমা জামান ববি এমপি ও মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান। এ সময় রংপুরে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের প্রামাণ্যচিত্র উপস্থাপন করেন ডিসি মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান। 

এর আগে দুপুরে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে নগরীর সিও বাজার এলাকায় বিজিবির সদরদপ্তরে পৌঁছান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। পরে সার্কিট হাউসে গার্ড অব অনার নিয়ে তিনি পরিদর্শন করেন দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়ে যাওয়া তাজহাট থানা, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির বাংলো, মহানগর ডিবি অপরাধ কার্যালয়, নবাবগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়, পরিবার পরিকল্পনা ভবন। 

এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পরে শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে মতবিনিময় সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শান্তিরক্ষা মিশনে দক্ষিণ সুদানে যাত্রা করলেন নৌবাহিনীর ৭১ সদস্য

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
‘বাংলাদেশ ফোর্স মেরিন ইউনিট-১১’-এর দ্বিতীয় গ্রুপের ৭১ নৌসদস্য। ছবি: আইএসপিআর
‘বাংলাদেশ ফোর্স মেরিন ইউনিট-১১’-এর দ্বিতীয় গ্রুপের ৭১ নৌসদস্য। ছবি: আইএসপিআর

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন ‘ইউনাইটেড নেশনস মিশন ইন সাউথ সুদান’ (আনমিস)-এ নিয়োজিত ‘বাংলাদেশ ফোর্স মেরিন ইউনিট-১১’-এর দ্বিতীয় গ্রুপের ৭১ জন নৌসদস্য আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দক্ষিণ সুদানের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে তাঁরা দক্ষিণ সুদানের উদ্দেশে রওনা হন। এই কন্টিনজেন্ট সেখানে আগে থেকে কর্মরত ‘বাংলাদেশ ফোর্স মেরিন ইউনিট-১০’-এর স্থলাভিষিক্ত হবে। এর আগে ৯ ডিসেম্বর প্রথম গ্রুপে ৯৯ জন নৌসদস্য এই মিশনে যোগ দিতে দেশ ছাড়েন।

দক্ষিণ সুদানের প্রতিকূল ও দুর্গম এলাকায় বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও মানবিক দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁদের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে—নীল নদের নৌপথে নিত্যপ্রয়োজনীয় জ্বালানি, খাদ্যসামগ্রী, ওষুধ ও মানবিক সাহায্য বহনকারী বার্জসমূহের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করা। নৌপথে জলদস্যুতা পর্যবেক্ষণ ও তা কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা। স্থানীয় জনগণের অগ্নিনির্বাপণে সহায়তা এবং বেসামরিক নাবিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজ উদ্ধার এবং মিশনে নিয়োজিত সামরিক-বেসামরিক সদস্যদের রসদসামগ্রী দুর্গম স্থানে পৌঁছে দেওয়া।

এই কন্টিনজেন্ট সুদানে আগে থেকে কর্মরত ‘বাংলাদেশ ফোর্স মেরিন ইউনিট-১০’-এর স্থলাভিষিক্ত হবে। ছবি: আইএসপিআর
এই কন্টিনজেন্ট সুদানে আগে থেকে কর্মরত ‘বাংলাদেশ ফোর্স মেরিন ইউনিট-১০’-এর স্থলাভিষিক্ত হবে। ছবি: আইএসপিআর

গত তিন দশকের বেশি সময় ধরে বিশ্বের বিভিন্ন যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরা নিষ্ঠা ও দক্ষতার পরিচয় দিয়ে আসছেন। নীল নদের ১ হাজার ৩১১ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এখন পর্যন্ত ৭১টি লজিস্টিক অপারেশন (অপারেশন লাইফ লাইন) সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন নৌসদস্যরা।

দক্ষিণ সুদান ছাড়াও লেবাননের ভূমধ্যসাগরে উপমহাদেশের একমাত্র মেরিটাইম টাস্কফোর্সের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘বানৌজা সংগ্রাম’ নিয়োজিত রয়েছে। নৌবাহিনীর এই গৌরবময় অংশগ্রহণ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও সুনাম উজ্জ্বল করছে।

উল্লেখ্য, ১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই-তে সন্ত্রাসী কর্তৃক ইউএন ঘাঁটি আক্রমণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী নিহত ও আটজন আহত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জানুয়ারির মাঝামাঝি সাংবাদিকদের মহাসম্মেলনের ঘোষণা নোয়াব সভাপতির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ২৩
‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই যৌথ প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখছেন সভাপতি এ কে আজাদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই যৌথ প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখছেন সভাপতি এ কে আজাদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

আগামী জানুয়ারির মাঝামাঝিতে সাংবাদিকদের মহাসম্মেলন আয়োজন করার ঘোষণা দিয়েছেন সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নোয়াবের সভাপতি এ কে আজাদ।

তিনি জানিয়েছেন, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, আগুন এবং সম্পাদক পরিষদের সভাপতি নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে হেনস্তা করার প্রতিবাদে সারা দেশের সাংবাদিকদের নিয়ে এ মহাসম্মেলন করা হবে। সেখান থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

আজ সোমবার প্রতিবাদ সভায় এ কে আজাদ এ কথা বলেন। রাজধানীর একটি হোটেলে ‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই যৌথ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদ ও মালিকদের সংগঠন নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (নোয়াব)।

সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নোয়াবের সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, দেশের শীর্ষস্থানীয় দুটি গণমাধ্যমের কার্যালয়ে যখন হামলা হলো, তখন ডেইলি স্টার সম্পাদক সরকারের সব সংস্থাকে অনুনয় করেছিলেন নিরাপত্তা দিতে। কিন্তু কারও সাহায্য তিনি পাননি।

সভায় নোয়াব সভাপতি বলেন, আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতে হবে। প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলার ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রথম আলোতে প্রথম আগুন দেওয়া হয়। তখনই ডেইলি স্টার সম্পাদক আশঙ্কা করেছিলেন এরপরে হামলাকারীরা ডেইলি স্টারে যাবে। তখন তিনি সরকারের এমন কোনো সংস্থা নাই, এমন কোনো ব্যক্তি নাই, যাকে অনুরোধ, অনুনয়-বিনয় করেন নাই যে আপনারা ডেইলি স্টারের সামনে ‘প্রোটেকশন’ দেন। কিন্তু তিনি কোনো সাহায্য সাড়া পাননি। যখন পেয়েছেন পোড়ার পরে পেয়েছেন।

সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এ কে আজাদ আরও বলেন, ডেইলি স্টার সম্পাদক যখন অসহায়ের মতো নিচে দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁর সামনে দিয়ে লুটকারীরা কম্পিউটার, চেয়ার, মাথায় করে নিয়ে যাচ্ছে। ওখানে তখন আইনশৃঙ্খলার সমস্ত বাহিনী ছিল। কিন্তু বাহিনীগুলোর কেউ একটা প্রতিবাদ করেনি।

নোয়াব সভাপতি আরও বলেন, সেই রাতে ডেইলি সম্পাদক তাঁকে জানান, ভবনটিতে ২৮ থেকে ২৯ জন আটকা পড়েছিল। আর ১৫ মিনিট আগুন জ্বললে তাদের অনেকেই সেই ধোঁয়ায় নিশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যেত।

একে আজাদ বলেন, আমরা এভাবে মারা যেতে চাই না। এভাবে আমাদের কণ্ঠকে স্তব্ধ করা যাবে না।

প্রতিবাদ সভায় জানানো হয়, সাংবাদিকদের মতামতের ভিত্তিতে সারা দেশের সাংবাদিকদের নিয়ে জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে মহাসম্মেলন আয়োজন করা হবে। প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, উদীচী, ছায়ানটে যারা আগুন দিয়েছে যত দিন তাদের বিচার না হবে, সাংবাদিকেরা যত দিন মত প্রকাশের স্বাধীনতা না পাবে, তত দিন পর্যন্ত এই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।

প্রতিবাদ সভায় সংহতি জানিয়ে দেওয়া বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে শুধু প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার নয়, আজকে গণতন্ত্রের ওপর আঘাত এসেছে। তাই গণতন্ত্রী সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে।

ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম বলেন, ডেইলি স্টার, প্রথম আলোর সাংবাদিকদের হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ওই দিন ২৬-২৭ জন স্টাফ ভবনের ভেতরে আটকে ছিল, ফায়ার সার্ভিসকে যেতে দেওয়া হয়নি। তাদের উদ্দেশ্য শুধু ভবনে আগুন দেওয়া ছিল না, হত্যা করার উদ্দেশ্য ছিল।

প্রতিবাদ সভায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, পেশাজীবী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত হয়ে মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে তাঁদের শক্ত অবস্থান ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়ার প্রতিশ্রুতি দেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাংলাদেশ-ভারত উত্তেজনা আর বাড়তে না দেওয়ার আহ্বান রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের

বাসস, ঢাকা  
ঢাকায় নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার গ্রিগোরিয়েভিচ খোজিন সোমবার দূতাবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকায় নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার গ্রিগোরিয়েভিচ খোজিন সোমবার দূতাবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার গ্রিগোরিয়েভিচ খোজিন দুই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিরাজমান উত্তেজনা নিরসনের আহ্বান জানিয়েছেন। আজ সোমবার ঢাকায় রাশিয়ান ফেডারেশনের দূতাবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান।

রুশ রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যকার বর্তমান উত্তেজনা যত দ্রুত সম্ভব নিরসন করা প্রয়োজন। তবে তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, রাশিয়া দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করবে না। খোজিন বলেন, ‘প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হওয়া উচিত।’ বর্তমান পরিস্থিতিকে আর বাড়তে না দেওয়ার বিষয়েও তিনি সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে সতর্ক করেন।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলকে স্বাগত জানিয়েছে রাশিয়া। রাষ্ট্রদূত খোজিন আশা প্রকাশ করেন, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত সময়েই বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি নির্বাচনের আগে দেশে একটি অনুকূল ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে।’

সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত জানান, রাশিয়া এ বিষয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। বাংলাদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠানোর জন্য তারা এখন কমিশনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণের অপেক্ষায় রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হজ প্যাকেজের অবশিষ্ট টাকা জমা দিতে হবে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
হজ প্যাকেজের অবশিষ্ট টাকা জমা দিতে হবে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে

২০২৬ সালের হজে সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমে প্রাথমিক নিবন্ধনকারীদের আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে হজ প্যাকেজের অবশিষ্ট টাকা জমা দিতে নির্দেশনা দিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবুবকর সিদ্দীক স্বাক্ষরিত হজ-১ শাখা থেকে জারিকৃত পত্রে বলা হয়েছে, ‘হজ ২০২৬-এর সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমের হজযাত্রীদের তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা জমাদানপূর্বক প্রাথমিক নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। হজ প্যাকেজ ও গাইডলাইন ২০২৬ অনুযায়ী প্রত্যেক হজযাত্রীকে প্যাকেজ মূল্যের সমুদয় অর্থ ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখের মধ্যে আবশ্যিকভাবে জমা প্রদানের নির্দেশনা রয়েছে। বর্ণিতাবস্থায়, হজ ২০২৬ এর যে সকল হজযাত্রী নির্বাচিত প্যাকেজের সম্পূর্ণ অর্থ জমা প্রদান করেননি তাদের আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখের মধ্যে অবশিষ্ট সমুদয় অর্থ জমা প্রদান নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করা হলো।’

এ সময়ের মধ্যে কোনো নিবন্ধিত হজযাত্রী প্যাকেজের অবশিষ্ট টাকা জমা না দিলে সেই হজযাত্রীর হজে গমন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বলে জানিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত