
আজকের পত্রিকা: দেশের শিক্ষাব্যবস্থার মূল সংকট কী?
শহিদুল ইসলাম: প্রত্যেক মানুষের ভেতর সুপ্ত প্রতিভা লুকিয়ে থাকে, তাকে জাগিয়ে তোলার কাজটা করে থাকে শিক্ষা। কিন্তু একটু গভীরে গেলে বোঝা যায়, শুধু আমাদের দেশে নয়, সমগ্র বিশ্বের শিক্ষাব্যবস্থা মানুষকে প্রকৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। আমাদের দেশে আমরা যত বেশি শিক্ষিত হচ্ছি, তত বেশি দৈহিক পরিশ্রম থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। দৈহিক পরিশ্রমের প্রতি আমাদের একটা অনীহা। শিক্ষা-সংকটের কথা বলতে গেলে, ডারউইনের কথা বলতে হবে। তাঁর মানুষের ক্রমবিকাশ তত্ত্বের কথা আমরা জানি। তাঁর কিন্তু একটা শিক্ষাভাবনাও আছে। সেই শিক্ষাভাবনাটাও কিন্তু ক্রমবিকাশ তাত্ত্বিক। তিনি বলেছেন, জন্মের পর থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত, অর্থাৎ স্কুলে যাওয়ার আগপর্যন্ত শিশুরা শিক্ষাটা প্রকৃতি ও পরিবারের কাছ থেকে পেয়ে থাকে। সেই পর্যায়ের শিক্ষাটা তারা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পায় না। এই পাঁচ বছরে তারা কত কিছু যে শেখে। সেভাবে রিকশাওয়ালা, কৃষক বা নৌকার মাঝির সন্তানেরাও পরিবারের কাছ থেকে শিক্ষা পায়। পৃথিবীর এমন দেশও আছে, যেখানে মাটি নেই। পুরো ছোট্ট দেশটা পানির ওপরে ভাসমান। সেখানে দেখা যায়, দুই বছরের শিশুও সাঁতার জানে।
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা শিশুদের ধীরে ধীরে প্রকৃতি থেকে দূরে সরিয়ে নেয়। এরপর তাদের পুতুল হিসেবে তৈরি করে। কেউ হয়তো বিরাট একটা পুতুল হিসেবে নাম করে আর কেউ হয়তো সেভাবে নাম করতে পারে না। এভাবে আমরা প্রকৃতি তত্ত্ব থেকে জানা বা কার্যকর করার ক্ষমতা থেকে দূরে সরে যাই। এটা হলো আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার সাধারণ সংকট। এই সংকটটা তৈরি হয়েছে স্বাধীনতাহীনতা থেকে। আমরা মনে করি, একটা স্বাধীন দেশে বাস করছি। কিন্তু সত্যিকার অর্থে আমাদের কোনো স্বাধীনতা নেই।
পাকিস্তান আমলে ১৯৬১ সালে গঠিত শরীফ কমিশনের বক্তব্য ছিল, ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা ছাত্রদের জন্য পজিটিভ কাজ ছিল। এখন তো পাকিস্তান হয়েছে। আমরা তো স্বাধীন। তাহলে এখন কেন ছাত্ররা আন্দোলন করবে? বাংলাদেশের শাসকশ্রেণিও এখন তা-ই বলছে। আমাদের দেশটা এখন স্বাধীন। তাহলে ছাত্ররা কেন আন্দোলন করবে? এখন তো তারা শুধু পড়াশোনা করবে—মানে স্বাধীনতা আমাদের একটা ক্ষুদ্র গণ্ডিবদ্ধতার মধ্যে বেঁধে ফেলেছে।
শিক্ষাব্যবস্থার প্রথম সংকট হলো, আমাদের জীবন থেকে স্বাধীনতা, গণতন্ত্রের বোধ শেষ করে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন এলেই শুধু গণতন্ত্রের একটা ঝোঁক আসে আর নির্বাচনের পর নেতারা গণতন্ত্রকে একটা ঘরের মধ্যে বন্দী করে রাখেন। এটা শুধু স্বাধীনতার সংকট নয়, শিক্ষা থেকে শুরু করে আমাদের জীবনের সবকিছুরই সংকট।
আজকের পত্রিকা: শিক্ষা মৌলিক অধিকার। রাষ্ট্র সবার জন্য সেটা করছে না; বরং এটাকে সুযোগ ভাবতে শেখাচ্ছে। আপনি কী বলেন?
শহিদুল ইসলাম: ১৯৪৮ সালে ইউনেসকো সিদ্ধান্ত নেয়, শিক্ষা হলো মানুষের মৌলিক অধিকার। প্রতিটি শিশুর শিক্ষা অর্জনের অধিকার আছে। সেটা হবে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক। এতে স্বাক্ষর করেছিল তৎকালীন পাকিস্তান সরকার। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ হওয়ার পর এই সর্বজনীন সিদ্ধান্তকে কোনো সরকারই মানেনি।
আর বলা হয়েছিল, শিক্ষা খাতে মূল জাতীয় বাজেটের ৭ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত এই বরাদ্দ ২ শতাংশের আশপাশে ঘুরছে। গতবারের বাজেটে কিন্তু শিক্ষা খাত থেকে কর্তন করা হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এর মানে আমাদের মৌলিক অধিকারের কথা শাসকশ্রেণি শুধু মুখে বলে, কিন্তু তারা সেটা চায় না। তা চায় না কেন, সেটা তলস্তয়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও বলেছেন। আর সত্যজিৎ রায় তাঁর ‘হীরক রাজার দেশে’ সিনেমায় আরও স্পষ্ট করে তুলে ধরেছেন। মানুষকে যত অন্ধকারে রাখা যায়, তত শাসকশ্রেণির শাসন করতে সুবিধা হয়। এ জন্য সক্রেটিস গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, যে জনগণ নিজেকেই চেনে না, তার ভোটে আমি কীভাবে নির্বাচিত হব? সে জন্য আমি এটা মানি না।
আজকের পত্রিকা: ২০১০ সালে একটা শিক্ষানীতি হয়েছিল। আবার নতুন পাঠ্যক্রম নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। এ রকম হওয়ার কারণ কী?
শহিদুল ইসলাম: কুদরাত-এ-খুদা কমিশন ছিল সত্যিকার অর্থে একটা শিক্ষা কমিশন। অনেক দিন ধরে নানা পেশার লোকের মতামত নিয়ে এটা করা হয়েছিল। কিন্তু সেটা সেভাবে বাস্তবায়ন করা হয়নি। এরপর যত কমিশন হয়েছে, তার কোনোটাই বাস্তবায়ন করা হয়নি। আমি কোনো বিশেষ দলের কথা বলছি না, শাসকশ্রেণির যে দলই ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করে এবং তারা যখন ক্ষমতায় যায়, আসলে ক্ষমতায় গিয়ে তারা একটা বিশেষ শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করে—এটা পরিষ্কার করে তলস্তয় তাঁর একটা বইয়ে বলেছেন। বার্ট্রান্ড রাসেল তাঁর ছেলেমেয়েদের প্রচলিত স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াননি। তিনি তাঁর নিজের বাড়িতে একটি স্কুল করে বন্ধুবান্ধবসহ তাদের সন্তানদের পড়িয়েছেন।
আজকের পত্রিকা: মেধাবী শিক্ষার্থীরা দেশে থাকছে না। এর কারণ কী বলে আপনি মনে করেন?
শহিদুল ইসলাম: বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এ পর্যন্ত যত সরকার এসেছে, এ ব্যর্থতা তাদের সবার। বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়কে আইন করে স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হয়েছিল। ১৯৫৪ সালের ২১ দফার মধ্যে এ বিষয়ে একটা দাবি ছিল। ১৯৬৯ সালে ছাত্রদের ১১ দফার মধ্যে এ বিষয়ে একটা দফা ছিল। স্বাধীনতার পরে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি বঙ্গবন্ধুকে চাপ দিতে থাকে এবং দুই-তিন বছর পর তিনি সব বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বায়ত্তশাসন দিয়েছিলেন। এটা আমাদের প্রাণের দাবি ছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে দেখা গেল, উপাচার্য থেকে সবকিছু দলীয়করণ হয়ে গেল। স্বায়ত্তশাসিত চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন ভিসি নিয়োগের প্রক্রিয়া চালু করা গেল না?সেখানে দীর্ঘদিন ধরে সিনেটের অধিবেশন হয় না। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচজন ছাত্র সিনেটে নির্বাচিত হয়। ১৯৮০, ৮৯ ও ৯০ সালে সিনেটের নির্বাচন হয়েছে। সিনেট নির্বাচন এখন আর হয় না। এভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার আইন অকার্যকর করা হয়েছে। এটা রাজনৈতিকভাবে করা হয়েছে।
সরকারের পরিচালনায় এখন যেসব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় চলে, তার আইনে চাকরির শর্ত হিসেবে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, তাঁরা কোনো রাজনৈতিক মতবাদ ধারণ করতে পারবেন, কিন্তু তা প্রকাশ করতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে উপাচার্য মনে করলে যে কারও চাকরি খেয়ে নিতে পারেন। কিন্তু তিয়াত্তর সালের আইনে সেটা নেই। সেটা অনেক বেশি গণতান্ত্রিক ছিল। এখন দলীয় বিবেচনা ছাড়া কোথাও উপাচার্য নিয়োগ হয় না। মেধাবী শিক্ষার্থীরা এসব কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পাচ্ছে না। আমি একটা উদাহরণ দিতে পারি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের ছেলে তাঁর বিভাগে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছিলেন। দ্বিতীয় স্থান অধিকারীর সঙ্গে তাঁর নম্বরের পার্থক্য ছিল ৯২। এত ভালো রেজাল্ট করার পরেও বিএনপির আমলে তাঁকে কিন্তু চাকরি দেওয়া হয়নি। শেষে আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর তিনি নিয়োগ পান। এটা আমার নিজের দেখা। তিনি সম্প্রতি ইউজিসি থেকে শ্রেষ্ঠ গবেষকের পুরস্কার পেয়েছেন। এমনিভাবে এখনো বর্তমান সরকারদলীয় সমর্থক না হওয়ার কারণে অনেকে নিয়োগ পাচ্ছে না।
আজকের পত্রিকা: প্রথম প্রশ্নের সূত্র ধরে বলতে চাই, প্রকৃতিগত শিক্ষা আবার আমরা কীভাবে শুরু করতে পারি?
শহিদুল ইসলাম: ১৮৩৫ সালে যে কাঠামোটা ইংরেজরা মেকলের মাধ্যমে চালু করল, এখন আমরা সে অবস্থায় ইচ্ছে করলেও ফিরে যেতে পারব না। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কেন ‘শান্তিনিকেতন’ প্রতিষ্ঠা করলেন? তিনি নিজেও কেন স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করলেন না? রবীন্দ্রনাথও চেয়েছিলেন প্রকৃতির কাছ থেকে শিক্ষা নিতে। ছোটবেলায় আমি নিজেও পুকুর-নদীতে জাল দিয়ে মাছ ধরেছি, লাঙল দিয়ে জমি চাষ করেছি। এটা আমি আমার বাবার কাছ থেকে পেয়েছি। যেহেতু তিনি কৃষক ছিলেন। এখনকার ছেলেরা নিশ্চয় সেটা পারবে না।
আদিম বা শিকারি যুগে যারা বাস করছিল, তাদের সন্তানেরা কিন্তু বড়দের অনুকরণ করেছে। অনুকরণ করা শিশুদের মস্ত বড় একটা চরিত্র। তারা কিন্তু অনুকরণ করা থেকে শেখে। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আমি আমার ছেলেমেয়ের ক্ষেত্রে না বুঝলেও আমার নাতির কাছ থেকে বুঝি, সে কীভাবে জিনিসগুলো শিখে ফেলছে। এখনকার শিশুরা মোবাইল ও ইউটিউব থেকে অনেক কিছু শিখছে।
৬ কোটি বছর পৃথিবীতে দাপিয়ে বেড়িয়েছে ডাইনোসর। এরপর ৩০০ থেকে ৪০০ বছর পর তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল। কিন্তু মনুষ্য সভ্যতার বয়স এখনো দেড় লাখ বছরও হয়নি। আমি এখানে আধুনিক বা হোমো সেপিয়েন্সের কথা বলছি। তার মধ্যে ১২ হাজার বছর আগে আমরা সভ্যতা শুরু করলাম। তার আগে আমরা ছিলাম বন্য। আদিম সমাজের লেখক মর্গানের বই পড়লে জানা যায় মানুষের সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের ইতিহাসের কালপর্ব। কীভাবে মানুষ লড়াই করে এ অবস্থায় পৌঁছাল। সেখানে তো প্রকৃতির পাঠই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার ছিল।
আজকের পত্রিকা: সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
শহিদুল ইসলাম: আপনাদেরও ধন্যবাদ।

আজকের পত্রিকা: দেশের শিক্ষাব্যবস্থার মূল সংকট কী?
শহিদুল ইসলাম: প্রত্যেক মানুষের ভেতর সুপ্ত প্রতিভা লুকিয়ে থাকে, তাকে জাগিয়ে তোলার কাজটা করে থাকে শিক্ষা। কিন্তু একটু গভীরে গেলে বোঝা যায়, শুধু আমাদের দেশে নয়, সমগ্র বিশ্বের শিক্ষাব্যবস্থা মানুষকে প্রকৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। আমাদের দেশে আমরা যত বেশি শিক্ষিত হচ্ছি, তত বেশি দৈহিক পরিশ্রম থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। দৈহিক পরিশ্রমের প্রতি আমাদের একটা অনীহা। শিক্ষা-সংকটের কথা বলতে গেলে, ডারউইনের কথা বলতে হবে। তাঁর মানুষের ক্রমবিকাশ তত্ত্বের কথা আমরা জানি। তাঁর কিন্তু একটা শিক্ষাভাবনাও আছে। সেই শিক্ষাভাবনাটাও কিন্তু ক্রমবিকাশ তাত্ত্বিক। তিনি বলেছেন, জন্মের পর থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত, অর্থাৎ স্কুলে যাওয়ার আগপর্যন্ত শিশুরা শিক্ষাটা প্রকৃতি ও পরিবারের কাছ থেকে পেয়ে থাকে। সেই পর্যায়ের শিক্ষাটা তারা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পায় না। এই পাঁচ বছরে তারা কত কিছু যে শেখে। সেভাবে রিকশাওয়ালা, কৃষক বা নৌকার মাঝির সন্তানেরাও পরিবারের কাছ থেকে শিক্ষা পায়। পৃথিবীর এমন দেশও আছে, যেখানে মাটি নেই। পুরো ছোট্ট দেশটা পানির ওপরে ভাসমান। সেখানে দেখা যায়, দুই বছরের শিশুও সাঁতার জানে।
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা শিশুদের ধীরে ধীরে প্রকৃতি থেকে দূরে সরিয়ে নেয়। এরপর তাদের পুতুল হিসেবে তৈরি করে। কেউ হয়তো বিরাট একটা পুতুল হিসেবে নাম করে আর কেউ হয়তো সেভাবে নাম করতে পারে না। এভাবে আমরা প্রকৃতি তত্ত্ব থেকে জানা বা কার্যকর করার ক্ষমতা থেকে দূরে সরে যাই। এটা হলো আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার সাধারণ সংকট। এই সংকটটা তৈরি হয়েছে স্বাধীনতাহীনতা থেকে। আমরা মনে করি, একটা স্বাধীন দেশে বাস করছি। কিন্তু সত্যিকার অর্থে আমাদের কোনো স্বাধীনতা নেই।
পাকিস্তান আমলে ১৯৬১ সালে গঠিত শরীফ কমিশনের বক্তব্য ছিল, ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা ছাত্রদের জন্য পজিটিভ কাজ ছিল। এখন তো পাকিস্তান হয়েছে। আমরা তো স্বাধীন। তাহলে এখন কেন ছাত্ররা আন্দোলন করবে? বাংলাদেশের শাসকশ্রেণিও এখন তা-ই বলছে। আমাদের দেশটা এখন স্বাধীন। তাহলে ছাত্ররা কেন আন্দোলন করবে? এখন তো তারা শুধু পড়াশোনা করবে—মানে স্বাধীনতা আমাদের একটা ক্ষুদ্র গণ্ডিবদ্ধতার মধ্যে বেঁধে ফেলেছে।
শিক্ষাব্যবস্থার প্রথম সংকট হলো, আমাদের জীবন থেকে স্বাধীনতা, গণতন্ত্রের বোধ শেষ করে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন এলেই শুধু গণতন্ত্রের একটা ঝোঁক আসে আর নির্বাচনের পর নেতারা গণতন্ত্রকে একটা ঘরের মধ্যে বন্দী করে রাখেন। এটা শুধু স্বাধীনতার সংকট নয়, শিক্ষা থেকে শুরু করে আমাদের জীবনের সবকিছুরই সংকট।
আজকের পত্রিকা: শিক্ষা মৌলিক অধিকার। রাষ্ট্র সবার জন্য সেটা করছে না; বরং এটাকে সুযোগ ভাবতে শেখাচ্ছে। আপনি কী বলেন?
শহিদুল ইসলাম: ১৯৪৮ সালে ইউনেসকো সিদ্ধান্ত নেয়, শিক্ষা হলো মানুষের মৌলিক অধিকার। প্রতিটি শিশুর শিক্ষা অর্জনের অধিকার আছে। সেটা হবে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক। এতে স্বাক্ষর করেছিল তৎকালীন পাকিস্তান সরকার। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ হওয়ার পর এই সর্বজনীন সিদ্ধান্তকে কোনো সরকারই মানেনি।
আর বলা হয়েছিল, শিক্ষা খাতে মূল জাতীয় বাজেটের ৭ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত এই বরাদ্দ ২ শতাংশের আশপাশে ঘুরছে। গতবারের বাজেটে কিন্তু শিক্ষা খাত থেকে কর্তন করা হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এর মানে আমাদের মৌলিক অধিকারের কথা শাসকশ্রেণি শুধু মুখে বলে, কিন্তু তারা সেটা চায় না। তা চায় না কেন, সেটা তলস্তয়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও বলেছেন। আর সত্যজিৎ রায় তাঁর ‘হীরক রাজার দেশে’ সিনেমায় আরও স্পষ্ট করে তুলে ধরেছেন। মানুষকে যত অন্ধকারে রাখা যায়, তত শাসকশ্রেণির শাসন করতে সুবিধা হয়। এ জন্য সক্রেটিস গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, যে জনগণ নিজেকেই চেনে না, তার ভোটে আমি কীভাবে নির্বাচিত হব? সে জন্য আমি এটা মানি না।
আজকের পত্রিকা: ২০১০ সালে একটা শিক্ষানীতি হয়েছিল। আবার নতুন পাঠ্যক্রম নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। এ রকম হওয়ার কারণ কী?
শহিদুল ইসলাম: কুদরাত-এ-খুদা কমিশন ছিল সত্যিকার অর্থে একটা শিক্ষা কমিশন। অনেক দিন ধরে নানা পেশার লোকের মতামত নিয়ে এটা করা হয়েছিল। কিন্তু সেটা সেভাবে বাস্তবায়ন করা হয়নি। এরপর যত কমিশন হয়েছে, তার কোনোটাই বাস্তবায়ন করা হয়নি। আমি কোনো বিশেষ দলের কথা বলছি না, শাসকশ্রেণির যে দলই ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করে এবং তারা যখন ক্ষমতায় যায়, আসলে ক্ষমতায় গিয়ে তারা একটা বিশেষ শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করে—এটা পরিষ্কার করে তলস্তয় তাঁর একটা বইয়ে বলেছেন। বার্ট্রান্ড রাসেল তাঁর ছেলেমেয়েদের প্রচলিত স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াননি। তিনি তাঁর নিজের বাড়িতে একটি স্কুল করে বন্ধুবান্ধবসহ তাদের সন্তানদের পড়িয়েছেন।
আজকের পত্রিকা: মেধাবী শিক্ষার্থীরা দেশে থাকছে না। এর কারণ কী বলে আপনি মনে করেন?
শহিদুল ইসলাম: বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এ পর্যন্ত যত সরকার এসেছে, এ ব্যর্থতা তাদের সবার। বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়কে আইন করে স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হয়েছিল। ১৯৫৪ সালের ২১ দফার মধ্যে এ বিষয়ে একটা দাবি ছিল। ১৯৬৯ সালে ছাত্রদের ১১ দফার মধ্যে এ বিষয়ে একটা দফা ছিল। স্বাধীনতার পরে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি বঙ্গবন্ধুকে চাপ দিতে থাকে এবং দুই-তিন বছর পর তিনি সব বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বায়ত্তশাসন দিয়েছিলেন। এটা আমাদের প্রাণের দাবি ছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে দেখা গেল, উপাচার্য থেকে সবকিছু দলীয়করণ হয়ে গেল। স্বায়ত্তশাসিত চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন ভিসি নিয়োগের প্রক্রিয়া চালু করা গেল না?সেখানে দীর্ঘদিন ধরে সিনেটের অধিবেশন হয় না। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচজন ছাত্র সিনেটে নির্বাচিত হয়। ১৯৮০, ৮৯ ও ৯০ সালে সিনেটের নির্বাচন হয়েছে। সিনেট নির্বাচন এখন আর হয় না। এভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার আইন অকার্যকর করা হয়েছে। এটা রাজনৈতিকভাবে করা হয়েছে।
সরকারের পরিচালনায় এখন যেসব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় চলে, তার আইনে চাকরির শর্ত হিসেবে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, তাঁরা কোনো রাজনৈতিক মতবাদ ধারণ করতে পারবেন, কিন্তু তা প্রকাশ করতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে উপাচার্য মনে করলে যে কারও চাকরি খেয়ে নিতে পারেন। কিন্তু তিয়াত্তর সালের আইনে সেটা নেই। সেটা অনেক বেশি গণতান্ত্রিক ছিল। এখন দলীয় বিবেচনা ছাড়া কোথাও উপাচার্য নিয়োগ হয় না। মেধাবী শিক্ষার্থীরা এসব কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পাচ্ছে না। আমি একটা উদাহরণ দিতে পারি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের ছেলে তাঁর বিভাগে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছিলেন। দ্বিতীয় স্থান অধিকারীর সঙ্গে তাঁর নম্বরের পার্থক্য ছিল ৯২। এত ভালো রেজাল্ট করার পরেও বিএনপির আমলে তাঁকে কিন্তু চাকরি দেওয়া হয়নি। শেষে আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর তিনি নিয়োগ পান। এটা আমার নিজের দেখা। তিনি সম্প্রতি ইউজিসি থেকে শ্রেষ্ঠ গবেষকের পুরস্কার পেয়েছেন। এমনিভাবে এখনো বর্তমান সরকারদলীয় সমর্থক না হওয়ার কারণে অনেকে নিয়োগ পাচ্ছে না।
আজকের পত্রিকা: প্রথম প্রশ্নের সূত্র ধরে বলতে চাই, প্রকৃতিগত শিক্ষা আবার আমরা কীভাবে শুরু করতে পারি?
শহিদুল ইসলাম: ১৮৩৫ সালে যে কাঠামোটা ইংরেজরা মেকলের মাধ্যমে চালু করল, এখন আমরা সে অবস্থায় ইচ্ছে করলেও ফিরে যেতে পারব না। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কেন ‘শান্তিনিকেতন’ প্রতিষ্ঠা করলেন? তিনি নিজেও কেন স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করলেন না? রবীন্দ্রনাথও চেয়েছিলেন প্রকৃতির কাছ থেকে শিক্ষা নিতে। ছোটবেলায় আমি নিজেও পুকুর-নদীতে জাল দিয়ে মাছ ধরেছি, লাঙল দিয়ে জমি চাষ করেছি। এটা আমি আমার বাবার কাছ থেকে পেয়েছি। যেহেতু তিনি কৃষক ছিলেন। এখনকার ছেলেরা নিশ্চয় সেটা পারবে না।
আদিম বা শিকারি যুগে যারা বাস করছিল, তাদের সন্তানেরা কিন্তু বড়দের অনুকরণ করেছে। অনুকরণ করা শিশুদের মস্ত বড় একটা চরিত্র। তারা কিন্তু অনুকরণ করা থেকে শেখে। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আমি আমার ছেলেমেয়ের ক্ষেত্রে না বুঝলেও আমার নাতির কাছ থেকে বুঝি, সে কীভাবে জিনিসগুলো শিখে ফেলছে। এখনকার শিশুরা মোবাইল ও ইউটিউব থেকে অনেক কিছু শিখছে।
৬ কোটি বছর পৃথিবীতে দাপিয়ে বেড়িয়েছে ডাইনোসর। এরপর ৩০০ থেকে ৪০০ বছর পর তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল। কিন্তু মনুষ্য সভ্যতার বয়স এখনো দেড় লাখ বছরও হয়নি। আমি এখানে আধুনিক বা হোমো সেপিয়েন্সের কথা বলছি। তার মধ্যে ১২ হাজার বছর আগে আমরা সভ্যতা শুরু করলাম। তার আগে আমরা ছিলাম বন্য। আদিম সমাজের লেখক মর্গানের বই পড়লে জানা যায় মানুষের সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের ইতিহাসের কালপর্ব। কীভাবে মানুষ লড়াই করে এ অবস্থায় পৌঁছাল। সেখানে তো প্রকৃতির পাঠই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার ছিল।
আজকের পত্রিকা: সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
শহিদুল ইসলাম: আপনাদেরও ধন্যবাদ।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রথম পরিচালক। সমাজ ও রাজনীতিসচেতন এই শিক্ষাবিদ শিক্ষার সমস্যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন, লিখেছেন শিক্ষা এবং বিজ্ঞান দর্শন নিয়ে।
২৮ এপ্রিল ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রথম পরিচালক। সমাজ ও রাজনীতিসচেতন এই শিক্ষাবিদ শিক্ষার সমস্যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন, লিখেছেন শিক্ষা এবং বিজ্ঞান দর্শন নিয়ে।
২৮ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রথম পরিচালক। সমাজ ও রাজনীতিসচেতন এই শিক্ষাবিদ শিক্ষার সমস্যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন, লিখেছেন শিক্ষা এবং বিজ্ঞান দর্শন নিয়ে।
২৮ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রথম পরিচালক। সমাজ ও রাজনীতিসচেতন এই শিক্ষাবিদ শিক্ষার সমস্যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন, লিখেছেন শিক্ষা এবং বিজ্ঞান দর্শন নিয়ে।
২৮ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫