Ajker Patrika

চবির শাটল ট্রেনে ১৫ শিক্ষার্থী আহত: গুরুতর তিন জন আইসিইউতে

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২০: ৪৮
চবির শাটল ট্রেনে ১৫ শিক্ষার্থী আহত: গুরুতর তিন জন আইসিইউতে

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাটল ট্রেনের ছাদে দুর্ঘটনায় ১৫ জন শিক্ষার্থী আহতের ঘটনায় ক্যাম্পাসে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। হেলে পড়া গাছের সঙ্গে ধাক্কায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৯টার দিকে ক্যান্টনমেন্টের চৌধুরীহাট এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটে। এতে চবি শিক্ষার্থী ছাড়াও আরও অনেকে আহত হন। 

আহতদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে। আইসিইউতে নেওয়া ৩ জনের মধ্যে ১ জন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বলে জানা গেছে। তার নাম অং সু ইং মারমা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ছাত্র। 

জানা গেছে, গতকাল রাতে এ ঘটনার পরে চবি উপাচার্যের বাসভবন, বাসসহ বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুরের ঘটনায় তিনটি পৃথক মামলা দায়ের করবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 

আজ শুক্রবার বিকেলে উপাচার্যের দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে মামলা করার বিষয়টি জানান উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। 

তিনি বলেন, একটি দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে এমন ন্যাক্করজনক ঘটনা আমাদের কাছে খুব অবাক লাগলো। এটা ছাত্রসুলভ আচরণ নয়। এই ঘটনায় পৃথক তিনটা মামলা করা হচ্ছে। আমরা তদন্ত কমিটিও গঠন করব।

এ দিকে শাটল ট্রেনে আহত ৯ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা অবনতির দিকে যাওয়ায় আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে। 

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শাটল ট্রেনে আহত হয়ে ১৭ জন এখানে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। বর্তমানে ৯ জন চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা অবনতির দিকে যাওয়ায় আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে আহতদের সবাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নন।’ 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নাজিমুল আলম মুরাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আইসিইউতে থাকা তিনজনের মধ্যে একজন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তার নাম অং সু ইং মারমা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ছাত্র।’ 

শিক্ষক সমিতির উদ্বেগ, আহতদের সুচিকিৎসার দাবি
এ দিকে শাটল ট্রেন দুর্ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। পাশাপাশি সংগঠনটি আহত শিক্ষার্থীদের জরুরি ভিত্তিতে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানিয়েছে। 

আজ শুক্রবার বিকেলে সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকি ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল হক সই করা এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনের মান এবং বগির সংখ্যা বৃদ্ধিসহ ট্রেন লাইনের মান ও ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন যাবত প্রশাসনের নিকট দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যাপারে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করার পাশাপাশি অনেক বহিরাগত লোকজন শাটল ট্রেনের আসনসমূহে বসে অবাধে চলাচলের সুযোগ থাকায় প্রতিনিয়ত বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদেরকে ট্রেনের ছাদে চড়ে কিংবা দরজায় ঝুলে যাতায়াত করতে হয়, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। 

ট্রেনের বগির সংখ্যা বৃদ্ধি, লাইন সংস্কার এবং যাত্রী পরিবহন ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই উদাসীনতা এবং এর ফলে সংঘটিত দুর্ঘটনার জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি গভীর উদ্বেগ এবং ক্ষোভ প্রকাশ করছে। শিক্ষক সমিতি আশা করে এই দুর্ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো গাফিলতি করবে না এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম গৌরবময় ঐতিহ্য ও শিক্ষা-কার্যক্রমের অপরিহার্য অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচিত এই শাটল ট্রেনের মানোন্নয়নপূর্বক এর ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান নৈরাজ্য বন্ধে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শিক্ষক সমিতি অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে যে, এই ট্রেন দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু শিক্ষার্থী অসংখ্য বাস বাঙচুরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক সম্পদ-হানিমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে যার জন্য শিক্ষক সমিতি তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে এবং অবিলম্বে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছে।

আরও পড়ুন—

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিজয় দিবসের নাটকে নারী নির্যাতনের দৃশ্যে পাঞ্জাবি-টুপি নিয়ে জামায়াত নেতাদের আপত্তি, উত্তেজনা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
নারী নির্যাতনের দৃশ্যে পাঞ্জাবি-টুপি পরিহিত রাজাকার দেখানো নিয়ে জামায়াত নেতাদের আপত্তি নিয়ে উত্তেজনা। ছবি: স্ক্রিনশট
নারী নির্যাতনের দৃশ্যে পাঞ্জাবি-টুপি পরিহিত রাজাকার দেখানো নিয়ে জামায়াত নেতাদের আপত্তি নিয়ে উত্তেজনা। ছবি: স্ক্রিনশট

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘মুক্তিযুদ্ধের গল্পে রাজাকারের পাঠ’ শীর্ষক নাটক মঞ্চায়ন নিয়ে তীব্র উত্তেজনা ছড়ালো লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায়। নাটকে রাজাকারের চরিত্রে অভিনেতাদের পাঞ্জাবি ও টুপি পরিধান এবং নারী নির্যাতনের দৃশ্য প্রদর্শিত হওয়ায় জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় নেতারা বাধা দেন। তাঁদের অভিযোগ, এই পোশাকে অভিনয় করা ‘মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ করেছে।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে উপজেলার আলেকজান্ডার আ স ম আবদুর রব সরকারি কলেজ মাঠে কুচকাওয়াজের পর এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই এর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শী এবং ভিডিও ফুটেজ সূত্রে জানা যায়, কলেজটির ১২ থেকে ১৫ জন শিক্ষার্থী নাটকটিতে অংশ নেন, যেখানে মুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকারের মধ্যকার সংঘাতময় চিত্র তুলে ধরা হয়। রাজাকারের ভূমিকায় কয়েকজন শিক্ষার্থী পাঞ্জাবি-টুপি পরে অভিনয় করছিলেন। এই দৃশ্যে নারী নির্যাতনের অংশ থাকাকালীন উপজেলা জামায়াতের আমির আবদুর রহিম এবং পৌর আমির আবুল খায়ের মঞ্চে এসে আপত্তি তোলেন। তাঁরা দাবি করেন, এই পোশাকে রাজাকারের চরিত্র চিত্রায়ণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানছে। তাঁরা তাৎক্ষণিকভাবে কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মাদ আশরাফ উদ্দিনের কাছে এর ব্যাখ্যা দাবি করেন।

এতে দুই পক্ষের মধ্যে মঞ্চেই শুরু হয় তীব্র বাগ্বিতণ্ডা। পরিস্থিতি যখন উত্তপ্ত হয়ে উঠছিল, তখন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিলুফা ইয়াসমিন এবং রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। দ্রুত তাঁরা হস্তক্ষেপে করলে পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হয়।

উপজেলা জামায়াতের আমির আবদুর রহিম তাঁর আপত্তির কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘পাঞ্জাবি-টুপি পরে অভিনয় করায় একজন মুসলমান হিসেবে আমি এটি মেনে নিতে পারিনি। তাই আমরা প্রতিবাদ জানিয়ে এর ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছিলাম। পরে ইউএনও ও ওসি সাহেবের মধ্যস্থতায় বিষয়টির সমাধান হয়েছে।’

কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মাদ আশরাফ উদ্দিন এই ঘটনাকে ‘ভুল–বোঝাবুঝি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, পরে সংশ্লিষ্ট সবাই মিলে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে।

রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান ঘটনাটি নিশ্চিত করে বলেন, অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে নাটক চলাকালে পাঞ্জাবি-টুপি ব্যবহার নিয়ে এক পক্ষ আপত্তি তোলায় কিছুটা কথা-কাটাকাটি হয়েছিল। তবে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে দ্রুতই বিষয়টির সমাধান করা হয় এবং কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চাটমোহরে সমতল জমিতে কমলা চাষে সম্ভাবনা, সফল কৃষক খয়বর

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি 
নিজ বাগানের গাছে ফলন দেখাচ্ছেন চাটমোহরের আগশোয়াইল গ্রামের কৃষক খয়বর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিজ বাগানের গাছে ফলন দেখাচ্ছেন চাটমোহরের আগশোয়াইল গ্রামের কৃষক খয়বর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

সমতল ভূমিতে কমলা চাষ সাধারণত অপ্রচলিত হলেও পাবনার চাটমোহরে এর বাণিজ্যিক চাষের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। শখের বসে করা কৃষক খয়বর রহমানের কমলাবাগান এখন বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। প্রথম বছরেই আশানুরূপ ফলন পাওয়ায় কৃষক যেমন সফলতার স্বপ্ন দেখছেন, তেমনি কৃষি বিভাগও আশা করছে তাঁর দেখানো পথে কমলা চাষের বিস্তার ঘটবে।

সাইট্রাসজাতীয় ফল মাল্টা ও কমলা মূলত পাহাড়ি অঞ্চলের হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চাটমোহরে মাল্টা চাষের প্রসার ঘটেছে। তবে কমলা চাষ এত দিন শখের ছাদবাগানেই সীমাবদ্ধ ছিল। কাঙ্ক্ষিত সফলতা না পাওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষ তেমন বিস্তার লাভ করেনি। এই অবস্থায় কৃষক খয়বর রহমানের বাণিজ্যিক চাষে সফলতা অন্য কৃষকদের কমলা চাষে উদ্বুদ্ধ করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের আগশোয়াইল গ্রামের কৃষক খয়বর রহমান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও দেখে কমলা চাষে আগ্রহী হন। পরে কৃষি বিভাগের পরামর্শে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার এক কৃষকের কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করে তিনি ২১ শতক জমিতে কমলার বাগান গড়ে তোলেন। ২০২২ সালে ৫০টি চারা দিয়ে বাগান শুরু করেন তিনি। উপজেলা কৃষি অফিসের তত্ত্বাবধান ও পরামর্শে চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো তাঁর বাগানে ফুল আসে। পরীক্ষামূলকভাবে কিছু গাছে ফল রাখলে সেগুলো পরিপক্ব হয়।

কমলাচাষি খয়বর রহমান জানান, তাঁর বাগানের ১১টি গাছে বর্তমানে ১০০ কেজির বেশি কমলা রয়েছে। শুরুতে নিছক শখের বসে বাগান করলেও এখন এটি লাভজনক হবে বলে আশা করছেন তিনি। চলতি মৌসুমে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার কমলা বিক্রি করতে পারবেন বলে ধারণা তাঁর। আগামী বছর পূর্ণমাত্রায় ফলন এলে বিক্রি ১ লাখ টাকার বেশি হবে বলে আশা করছেন।

উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইদুর রহমান সাঈদ বলেন, চাটমোহরে কমলা চাষ একেবারেই নতুন উদ্যোগ। খয়বর রহমানের বাগানে উৎপাদিত কমলার মান ও গুণগত বৈশিষ্ট্য বাজারে পাওয়া কমলার মতোই ভালো। প্রতিটি গাছে যে পরিমাণ ফল এসেছে, তাতে বাগানটি লাভজনক হবে বলে মনে করছেন তিনি। এই সাফল্য অন্য কৃষকদেরও অনুপ্রাণিত করবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কুন্তলা ঘোষ বলেন, অপ্রচলিত কমলা প্রথমবারের মতো চাষ করে খয়বর রহমান যে সাফল্য পেয়েছেন, তা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে কমলা চাষকে বাণিজ্যিকভাবে রূপ দিতে উদ্যোগ নেওয়া হবে। তাঁর সাফল্য দেখে আরও অনেক কৃষক কমলা চাষে আগ্রহী হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইসলামপুরে পুলিশের অভিযানে আওয়ামী লীগের তিন নেতা আটক

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি  
আটক করা আওয়ামী লীগের তিন নেতা। ছবি: সংগৃহীত
আটক করা আওয়ামী লীগের তিন নেতা। ছবি: সংগৃহীত

জামালপুরের ইসলামপুরে পুলিশের বিশেষ অভিযানে আওয়ামী লীগের তিন নেতাকে আটক করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন পলবান্ধা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আক্রাম হোসেন মাস্টার, কুলকান্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসমত আলী সরদার এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোনাহার সরকার।

এ বিষয়ে ইসলামপুর থানার ডিউটি অফিসার ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) অমৃত চন্দ্র সেন বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা হাসমত আলী সরদারকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের শাখা-২ (ডিবি) সদস্যরা আটক করে মঙ্গলবার রাতে থানায় হস্তান্তর করেন। এ ছাড়া একই দিন রাতে পৃথক অভিযানে আক্রাম হোসেন মাস্টার ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সোনাহার সরকারকে আটক করা হয়েছে।

অমৃত চন্দ্র সেন আরও বলেন, আটক তিনজনের বিরুদ্ধে ইসলামপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা রয়েছে। ওই মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে জামালপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপির দলীয় স্লোগান, নিষেধ করায় তোপের মুখে ইউএনও

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি হোসেনপুর সংবাদদাতা
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০১
ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে মহান বিজয় দিবস ২০২৫ উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে দলীয় স্লোগান নিষিদ্ধ করাকে কেন্দ্র করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাহিদ ইভাকে তোপের মুখে পড়তে হয়েছে। এই ঘটনায় অনুষ্ঠানে কিছু সময়ের জন্য উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের আগে একটি মিছিলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ‘স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া—লও লও লও সালাম’ স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় মঞ্চের একপাশ থেকে ইউএনও কাজী নাহিদ ইভা রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে দলীয় স্লোগান না দিতে নির্দেশ দেন।

ইউএনওর এই নির্দেশে বিএনপির নেতা-কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে তাঁরা ইউএনওকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে হট্টগোল শুরু করেন। এতে অনুষ্ঠানের স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যাহত হয়। পরিস্থিতির একপর্যায়ে ইউএনওর বদলির দাবিও তোলেন বিএনপির কিছু নেতা-কর্মী।

ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। উত্তেজনার কারণে কিছু সময়ের জন্য অনুষ্ঠান স্থগিত থাকে। পরে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এরপর বাকি অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মাজহারুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল হক রাজন, যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক হোসেনপুর পৌর মেয়র মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক সাহেদল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসিম সবুজসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতা-কর্মীকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীদের আমরাই মাঠের ভেতরে আর মিছিল করতে নিষেধ করতে ছিলাম। তবু ইউএনও মহোদয় রেগে এসে এখানে কোনো দলীয় স্লোগান হবে না বলে স্লোগান বন্ধ করতে নিষেধ করেন। তাঁর আচরণটা রূঢ় ছিল, যা আমরা একজন প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছ থেকে প্রত্যাশা করি না। দলীয় লোকজন তো তখন এমনিতেই স্লোগান বন্ধ করে অনুষ্ঠান স্থলে বসে পড়ত। আমরাও তো অনুষ্ঠান উপভোগ করতে গিয়েছিলাম।’ তিনি আরও বলেন, ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় বিষয়টি বড় আকার ধারণ করেছে।

উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল হক রাজন বলেন, ইউএনওর আচরণ তাঁদের কাছে ভালো মনে হয়নি। এ বিষয়ে পরে কথা বলবেন বলে তিনি আর মন্তব্য করতে চাননি।

ইউএনও কাজী নাহিদ ইভার বক্তব্য জানতে তাঁর সরকারি নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহসী মাসনাদ বলেন, রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে দলীয় স্লোগান কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি প্রশাসনকে হেয় করার শামিল। এটি রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ বিভাজনের ফলও হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত