Ajker Patrika

পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ৪০ হাজার টন কয়লা আমদানির ঋণপত্র: প্রথম ইউনিট চলবে ৬ দিনের কিছু বেশি

সাজ্জাদ হোসেন, ঢাকা
আপডেট : ১৩ জুন ২০২৩, ১৯: ০৮
পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ৪০ হাজার টন কয়লা আমদানির ঋণপত্র: প্রথম ইউনিট চলবে ৬ দিনের কিছু বেশি

বন্ধ থাকা পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন পুনরায় শুরু করতে ৪০ হাজার টন কয়লা আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছে। তিন দিন আগে কয়লা আমদানির জন্য এ ঋণপত্র খোলা হয়েছে বলে আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন বিদ্যুৎকেন্দ্রটির এক শীর্ষ কর্মকর্তা। 

বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ অর্থায়নে নির্মিত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটির চীনা অংশীদার চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কোম্পানি (সিএমসি) এই কয়লা আমদানির ঋণপত্র খোলে। নতুন ঋণপত্রে আমদানি করা এই কয়লা আগামী ২৪-২৫ তারিখের দিকে পায়রা বন্দরে আসতে পারে বলে জানা গেছে। ইন্দোনেশিয়া থেকে এ কয়লা আমদানি করা হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়ার বালিকপাপান বন্দর থেকে কয়লাবোঝাই জাহাজ সরাসরি পায়রা বন্দরে নোঙর করবে। 

পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্ল্যান্ট ম্যানেজার শাহ আব্দুল মাওলা গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘৪০ হাজার টন কয়লার একটি ঋণপত্র তিন দিন আগে চীনা প্রতিষ্ঠান সিএমসি খুলেছে। আগামী ২৪-২৫ তারিখের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লাবাহী প্রথম জাহাজ পায়রা বন্দরে পৌঁছাবে।’ 

এই মাসের ২৫ তারিখ কয়লা বন্দরে পৌঁছালে উৎপাদনে যেতে আরও দুই থেকে তিন দিন সময় লাগবে বলে জানান বিদ্যুৎকেন্দ্রটির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। 
ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কয়লা পায়রা বন্দর থেকে কাস্টম ক্লিয়ারেন্স করতে এক দিনের মতো সময় লাগে। বিদ্যুৎকেন্দ্র দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে পুনরায় চালু করার আগে যন্ত্রপাতির কিছু মেনটেন্যান্স করতে হয়। একই সঙ্গে বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্রের নতুন করে সংযোগ স্থাপনেও সময় লাগে। 

এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে  ২৭-২৮ তারিখের দিকে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ৬৬০ মেগাওয়াট পুনরায় উৎপাদন শুরু করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান এক কর্মকর্তা। 

কবে নাগাদ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুনরায় সচল করা যাবে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শাহ আব্দুল মাওলা বলেন, ‘আমাদের আশা, কয়লা পায়রা বন্দরে আসার দুই-তিন দিনের মধ্যে প্রথম ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করার।’ 

১৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন সক্ষমতার এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিট আছে। প্রতিটির উৎপাদন সক্ষমতা ৬৬০ মেগাওয়াট। 

বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তারা আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, ৬৬০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট পূর্ণ সক্ষমতায় চালালে প্রতিদিন সাড়ে ৬ হাজার টনের মতো কয়লা লাগে। সেই হিসাবে নতুন আমদানি করা এই কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট পূর্ণ সক্ষমতায় ছয় দিনের একটু বেশি চালানো যাবে। 

তবে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্ল্যান্ট ম্যানেজার জানিয়েছেন, ‘আপাতত ৪০ হাজার টনের একটি কয়লার জাহাজের ঋণপত্র খোলা হলেও পর্যায়ক্রমে আরও ঋণপত্র খোলা হবে। সে জাহাজগুলোও পর্যায়ক্রমে চলে আসবে। আশা করি সামনের দিনগুলোতে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন থাকবে।’ 

এর আগে ৭ জুন শাহ আব্দুল মাওলা আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পূর্ণ সক্ষমতায় ১৩২০ মেগাওয়াটে চালানোর জন্য চার লাখ টন কয়লা আমদানির ঋণপত্র প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। 

কয়লার মজুত শেষ হয়ে যাওয়ায় পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র ৫ জুন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এতে দেশব্যাপী ব্যাপক লোডশেডিং শুরু হয়। এর আগে গত ২৫ মে থেকে বন্ধ হয়ে যায় পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের উৎপাদন। 

পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিন বছর আগে উৎপাদনে আসার পর এই প্রথম ৫ জুন কয়লা সংকটের কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়েছিল। 

এর আগে ডলারের সংকটে কয়লা আমদানি করতে না পারার কারণে দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বেশ কয়েকবার। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র গত ১৫ মে থেকে আংশিক চালু হলেও কয়লার অভাবে পূর্ণ সক্ষমতায় এখনো চালানো যাচ্ছে না। 

বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিপিসিএল) বা পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খোরশেদুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, কয়লা সরবরাহকারীর বকেয়া সাড়ে ৩০০ মিলিয়ন ডলার বাকি থাকায় তারা কয়লা সরবরাহ করতে অস্বীকৃতি জানায়। যার ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। 

অনেক দেন-দরবারের পর বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কয়লা সরবরাহকারী সিএমসিকে ১০০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করে। এরপর এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের অন্যতম অংশীদার সিএমসি কয়লা আমদানির জন্য ঋণপত্র খুলতে সম্মত হয়। 

বাংলাদেশ ও চীনের অর্থায়নে নির্মিত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কোম্পানির ৫০ শতাংশ শেয়ার আছে। বাকি ৫০ শতাংশ শেয়ারের মালিক বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। 

পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ গত ২৭ এপ্রিল বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে জানায়, চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কোম্পানি (সিএমএস) কয়লার আমদানির বকেয়া পরিশোধ না করা পর্যন্ত আর কয়লা সরবরাহ করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

ভারতে নিকাব বিতর্ক: কাজে যোগ দেননি সেই নারী চিকিৎসক

ভোট চুরির এমপি হতে চাই না: অ্যাটর্নি জেনারেল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: চিকিৎসায় শিক্ষার্থীপ্রতি বরাদ্দ মাত্র ১২৫ টাকা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে ভারতীয় ভিসা সেন্টার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট ঝুঁকির কারণে চট্টগ্রামে ভারতীয় ভিসা আবেদনকেন্দ্র পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার (আইভ্যাক) বাংলাদেশের ওয়েবসাইটে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

নির্দেশনায় বলা হয়, চট্টগ্রামের ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনে (এএইচসিআই) সাম্প্রতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে চট্টগ্রাম আইভিএসি বা আইভ্যাকে ভারতীয় ভিসা কার্যক্রম আজ রোববার অর্থাৎ ২১ ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে তবেই ভিসা সেন্টার পুনরায় খোলার ঘোষণা দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

ভারতে নিকাব বিতর্ক: কাজে যোগ দেননি সেই নারী চিকিৎসক

ভোট চুরির এমপি হতে চাই না: অ্যাটর্নি জেনারেল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: চিকিৎসায় শিক্ষার্থীপ্রতি বরাদ্দ মাত্র ১২৫ টাকা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দক্ষিণ সুদানে নিহত ৬ শান্তিরক্ষীর জানাজা সম্পন্ন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৫১
রোববার ঢাকা সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে ৬ শান্তিরক্ষীর জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত
রোববার ঢাকা সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে ৬ শান্তিরক্ষীর জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ সুদানে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত বাংলাদেশি ছয় সেনাসদস্যের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার সকাল সোয়া ৯টার পর ঢাকা সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে তাঁদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

নিহত ছয় শান্তিরক্ষী হলেন নাটোরের বাসিন্দা করপোরাল মো. মাসুদ রানা, কুড়িগ্রামের বাসিন্দা সৈনিক মো. মমিনুল ইসলাম ও সৈনিক শান্ত মণ্ডল, রাজবাড়ীর বাসিন্দা সৈনিক শামীম রেজা, কিশোরগঞ্জের বাসিন্দা মেস ওয়েটার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং গাইবান্ধার বাসিন্দা লন্ড্রি কর্মচারী মো. সবুজ মিয়া।

জানাজার আগে নিহত সেনাসদস্যদের জীবনবৃত্তান্ত পড়ে শোনানো হয়। পাশাপাশি তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।

জানাজায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান ও বিমানবাহিনীন প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁনসহ সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় নিহত শান্তিরক্ষীদের পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

জানাজার পর নিহত শান্তিরক্ষীদের কফিনে রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর তিন বাহিনীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে ছয় সেনাসদস্যের মরদেহ হেলিকপ্টারে করে তাঁদের নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়।

১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিকস বেসে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীর ড্রোন হামলায় দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী নিহত হন। আহত হন আরও ৯ শান্তিরক্ষী। তাঁরা হলেন কুষ্টিয়ার বাসিন্দা লেফটেন্যান্ট কর্নেল খোন্দকার খালেকুজ্জামান, দিনাজপুরের বাসিন্দা সার্জেন্ট মো. মোস্তাকিম হোসেন, ঢাকার বাসিন্দা করপোরাল আফরোজা পারভিন ইতি, বরগুনার বাসিন্দা ল্যান্স করপোরাল মহিবুল ইসলাম, কুড়িগ্রামের বাসিন্দা সৈনিক মো. মেজবাউল কবির, রংপুরের বাসিন্দা সৈনিক মোসা. উম্মে হানি আক্তার, মানিকগঞ্জের বাসিন্দা সৈনিক চুমকি আক্তার এবং নোয়াখালীর বাসিন্দা সৈনিক মো. মানাজির আহসান।

গতকাল শনিবার সকালে ছয় শান্তিরক্ষীর মরদেহ বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় আনা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

ভারতে নিকাব বিতর্ক: কাজে যোগ দেননি সেই নারী চিকিৎসক

ভোট চুরির এমপি হতে চাই না: অ্যাটর্নি জেনারেল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: চিকিৎসায় শিক্ষার্থীপ্রতি বরাদ্দ মাত্র ১২৫ টাকা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মানবতাবিরোধী অপরাধ

শেখ হাসিনা ও ১০ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ আজ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০৬
গুম-নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় অভিযুক্ত ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ হাজির করা হয়। এ সময় হাইকোর্ট এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।	ছবি: আজকের পত্রিকা
গুম-নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় অভিযুক্ত ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ হাজির করা হয়। এ সময় হাইকোর্ট এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেলে (টিএফআই) গুম-নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার ১০ সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশের দিন নির্ধারণ রয়েছে আজ রোববার।

আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই আদেশ দেবেন। ফলে আসামিদের বিচার শুরু হবে কি না, তা জানা যাবে।

এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট আসামি ১৭ জন। এর মধ্যে গ্রেপ্তার ১০ সেনা কর্মকর্তা হলেন র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে), র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।

শেখ হাসিনা ছাড়াও এই মামলায় পলাতক অন্য আসামিরা হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র‍্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ ও র‍্যাবের সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মো. খায়রুল ইসলাম।

১৪ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার তিন আসামির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ ও সাতজনের হয়ে লড়েন তাবারক হোসেন। এ ছাড়া আসাদুজ্জামান খানসহ তিনজনের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী এম হাসান ইমাম, তিনজনের পক্ষে সুজাদ মিয়া ও শেখ হাসিনার হয়ে লড়েন আইনজীবী মো. আমির হোসেন।

প্রত্যেকেই শুনানিতে আলাদা আলাদা কারণ (গ্রাউন্ড) এনে নিজেদের মক্কেলের অব্যাহতি চেয়েছেন। তবে প্রসিকিউশনের পক্ষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আবেদন করেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।

৩ ডিসেম্বর অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। শুনানিতে টিএফআই সেলের বীভৎসতা তুলে ধরার পাশাপাশি গুমের অন্ধকার পেরিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এক নতুন বাংলাদেশ উদিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। গুম হওয়া ব্যক্তিদের ভাগ্য দুভাবে নির্ধারণ হতো বলেও উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে ভাগ্য ভালো হলে গুমের শিকার ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হতো। দ্বিতীয়ত সাত-আট বছর গুম রাখার পর ফেলে রাখা হতো অজানা কোনো স্থানে।

চলতি বছরের ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা ১০ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১। একই সঙ্গে পলাতক আসামিদের হাজিরে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়।

তবে নির্ধারিত তারিখে হাজির না হওয়ায় তাঁদের পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেন আদালত। ৮ অক্টোবর এই মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। পরে অভিযোগ আমলে নিয়ে ১৭ জনের বিরুদ্ধেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

ভারতে নিকাব বিতর্ক: কাজে যোগ দেননি সেই নারী চিকিৎসক

ভোট চুরির এমপি হতে চাই না: অ্যাটর্নি জেনারেল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: চিকিৎসায় শিক্ষার্থীপ্রতি বরাদ্দ মাত্র ১২৫ টাকা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জানাজায় লাখো মানুষ: বিদ্রোহী কবির পাশে চিরঘুমে বিপ্লবী হাদি

  • জানাজায় সংসদ ভবন এলাকা লোকে লোকারণ্য
  • হাদির দেওয়া মন্ত্র মানুষ ভুলতে পারবে না: ড. ইউনূস
  • তদন্তের বিষয়ে জানাতে সময় বেঁধে দিল ইনকিলাব মঞ্চ
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ৪৮
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির জানাজায় লাখো মানুষের ঢল। অশ্রুসিক্ত হয়ে তাঁকে বিদায় জানান সতীর্থ, অনুসারীরা। গতকাল সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির জানাজায় লাখো মানুষের ঢল। অশ্রুসিক্ত হয়ে তাঁকে বিদায় জানান সতীর্থ, অনুসারীরা। গতকাল সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

চব্বিশের অভ্যুত্থানের পর তারুণ্যদীপ্ত প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে পরিচিতি পাওয়া জুলাই যোদ্ধা শরিফ ওসমান বিন হাদি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের পাশে চিরঘুমে শায়িত হয়েছেন। সামাজিক-রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ‘ইনকিলাব মঞ্চ’-এর মুখপাত্র হাদি আঞ্চলিক আধিপত্যবাদ ও প্রথাগত রাজনীতির নেতিবাচক দিকগুলোর বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ ছিলেন। আততায়ীর হাতে তাঁর গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা দেশজুড়ে আলোড়ন তোলে।

গতকাল শনিবার জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার সামনে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে জানাজার পর তাঁকে দাফন করা হয়। অশ্রুসিক্ত চোখে তাঁকে বিদায় জানান সতীর্থ, অনুসারী ও শুভানুধ্যায়ীরা। ‘বিদ্রোহী কবি’ হিসেবে পরিচিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অনুরাগী ছিলেন শরিফ ওসমান হাদি। মিছিল-সমাবেশে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে নজরুলের ‘বিদ্রোহী’ কবিতা থেকে উদ্ধৃত করতেন তিনি। কিন্তু ‘রণক্লান্ত’ হওয়ার আগেই ঘাতকের গুলিতে অকালে নিভে গেল তাঁর প্রাণপ্রদীপ। হাদির বয়স হয়েছিল ৩২ বছর। প্রসঙ্গত, নজরুলপ্রীতির সূত্রে হাদির পরিবার চেয়েছিল তাঁর শেষ শয্যা হোক কবির সমাধির পাশে।

হাদির জানাজায় অংশ নিতে গতকাল বেলা ১১টার পর থেকেই মানুষ জড়ো হতে থাকেন জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার সামনের মাঠে। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ-সংলগ্ন সংসদ ভবনের ১১ ও ১২ নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশ করেন মানুষ। নিরাপত্তার জন্য ছিল দুই স্তরের তল্লাশি। নিরাপত্তার কারণে মাঠের চারপাশে দেওয়া হয়েছিল বাঁশের ব্যারিকেড। এই ব্যারিকেডের সামনেই মরদেহ রাখা হয়েছিল।

জানাজার নির্ধারিত সময় বেলা ২টা হলেও দুপুর সাড়ে ১২টার পরই মাঠ মানুষে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এ সময় মাইকে ঘোষণা করা হয়, প্রয়োজনে পেছনের মাঠে জানাজা পড়া যাবে। জানাজার মাঠ ছাড়িয়ে সংসদ ভবনে প্রবেশের মূল সড়কেও ছিল মানুষের সারি। পরে পেছনের মাঠের অধিকাংশ জায়গাজুড়ে অবস্থান নেন মানুষ। দেড়টার দিকে আসা লোকজন ভেতরে ঢুকতে না পেরে অবস্থান নেন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে। তবে জনারণ্য ছাড়িয়ে যায় খামারবাড়ির মোড় হয়ে বিজয় সরণির দিকেও। মাঠেই জোহরের নামাজ পড়েন অনেকে।

প্রধান উপদেষ্টা ছাড়াও জানাজায় উপস্থিত উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, ড. আসিফ নজরুল, মো. তৌহিদ হোসেন, আদিলুর রহমান খান, আলী ইমাম মজুমদার, ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার, মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, ফারুক ই আজম, ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, শেখ বশিরউদ্দীন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, বিশেষ সহকারী অধ্যাপক আলী রীয়াজ, বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান প্রমুখ। রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে জানাজায় অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীসহ দলগুলোর আরও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা।

সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁনও জানাজায় অংশ নেন। পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আল সিয়ামের সঙ্গে একাধিক কূটনীতিককে জানাজায় অংশ নিতে দেখা গেছে। আরও শরিক হয়েছিলেন রাষ্ট্রচিন্তক ও কবি ফরহাদ মজহার, সম্প্রতি পদত্যাগকারী দুই উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

জানাজায় আরও অংশ নেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টু, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম, জিএস এস এম ফরহাদসহ কয়েকজন ছাত্রনেতা।

১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনে নির্বাচনী প্রচারণার সময় মোটরসাইকেল আরোহী আততায়ীর গুলিতে গুরুতর আহত হন শরিফ ওসমান হাদি। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয় তাঁকে। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁর অবস্থা ওঠানামা করছিল। বৃহস্পতিবার আরেক দফা অস্ত্রোপচারের পর মৃত্যুবরণ করেন হাদি। শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর মরদেহ বাংলাদেশে আসে।

হাদির মরদেহ শুক্রবার রাতে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘরে রাখা হয়েছিল। দাফনের আগে গতকাল সকালে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে তাঁর মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়।

বক্তব্যে দ্রুত বিচারের দাবি

বেলা ২টার দিকে শরিফ ওসমান হাদির লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়ি জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় পৌঁছায়। এ সময় উপস্থিত জনতার স্লোগানে প্রকম্পিত হয় পুরো এলাকা। হাদির জাতীয় পতাকায় মোড়ানো কফিন রাখা হয় মঞ্চে। এরপর জানাজায় অংশ নিতে উপস্থিত হন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় হাদির জীবনী তুলে ধরেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।

ইনকিলাব মঞ্চর পক্ষ থেকে সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘খুনি, খুনের পরিকল্পনাকারী, সহায়তাকারী এবং পুরো চক্রকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং সহকারী উপদেষ্টা (প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী) খোদা বখস চৌধুরী জনতার সম্মুখে এসে এই খুনের ব্যাপারে গত এক সপ্তাহে তাঁরা কী পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা জানাতে হবে। যদি তাঁরা জানাতে না পারেন, তবে তাঁদের পদত্যাগের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’

এরপর বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। হাদির অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।

পরে জানাজা পড়ান শরিফ ওসমান হাদির বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক। জানাজা শেষে হাদির কফিন নিয়ে সবাই রওনা হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার দিকে। বেলা ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ এলাকায় পৌঁছায় কফিন। তার অদূরেই জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধি প্রাঙ্গণ। সেখানে হাদির কবরের বন্দোবস্ত আগেই করে রাখা হয়েছিল। সব প্রক্রিয়া শেষে সেই কবরে শায়িত করা হয় হাদিকে। পরে মোনাজাত করেন বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক।

দাফন শেষে ইনকিলাব মঞ্চ ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষ শাহবাগ মোড়ে জড়ো হন। তাঁদের উদ্দেশে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের বলেন, ‘আমরা সার্বক্ষণিক এখানে থাকব। কিন্তু আপনাদের একটু রেস্ট (বিশ্রাম) দিতে চাই। আপনারা আজকের জন্য বাসায় যান। আগামীকাল বিকেল সোয়া ৫টার মধ্যে যদি সরকারের পক্ষ থেকে কোনো জবাব না আসে, আমরা আবার এখানে আসব। অনেক ছাড় দিয়েছি, আর ছাড় দেব না।’

জাবেরের এ কথার পর অনেকেই শাহবাগ মোড় ছেড়ে যান। সড়ক দিয়ে ধীরে কিছু কিছু গাড়ি চলতে শুরু করে। তবে অনেক নেতা-কর্মী শাহবাগে অবস্থান করে স্লোগান দিতে থাকেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

ভারতে নিকাব বিতর্ক: কাজে যোগ দেননি সেই নারী চিকিৎসক

ভোট চুরির এমপি হতে চাই না: অ্যাটর্নি জেনারেল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: চিকিৎসায় শিক্ষার্থীপ্রতি বরাদ্দ মাত্র ১২৫ টাকা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত